সিপিডি
দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতি ১৪ হাজার ৪২১ কোটি টাকা: সিপিডি
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যায় ১৪ হাজার ৪২১ কোটি টাকার সম্পদের ক্ষতি হয়েছে।
রবিবার ধানমন্ডিতে সিপিডি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।
কুমিল্লা, ফেনী, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলাসহ দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ক্ষয়ক্ষতি ও পুনর্বাসন প্রক্রিয়া নিয়েও কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: ভর্তুকি ও মূল্য বাড়ানো সত্ত্বেও ২০২৫ সালে বাড়বে পিডিবির লোকসান: সিপিডি
ফাহমিদা বলেন, সম্প্রতি দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ভয়াবহ বন্যায় ১৪ হাজার ৪২১ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে, যা জিডিপির ২৬ শতাংশ। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কৃষি ও বন খাত, যা ৫ হাজার ১৬৯ কোটি টাকার সমান।
তিনি আরও জানান, অবকাঠামো খাতে ৪ হাজার ৬৫৩ কোটি টাকার এবং আবাসন খাতে ২ হাজার ৪০৭ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
ফাহমিদা আরও বলেন, নোয়াখালী জেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ৪ হাজার ১৯১ কোটি টাকা, কুমিল্লা জেলায় ক্ষতি হয়েছে ৩ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা।
আরও পড়ুন: বাজেটে চলমান অর্থনৈতিক সংকটের প্রতিফলন নেই: সিপিডি
২ মাস আগে
ভর্তুকি ও মূল্য বাড়ানো সত্ত্বেও ২০২৫ সালে বাড়বে পিডিবির লোকসান: সিপিডি
সরকারের অব্যবস্থাপনার কারণে ২০২৫ সালের মধ্যে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) চলমান লোকসান ১৯৬ শতাংশ বেড়ে ১৮ হাজার কোটি টাকা হবে বলে মনে করছে গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।
এছাড়াও বিদ্যুতের দাম ও সরকারি ভর্তুকি বাড়ানোর পরও পিডিবি বিপুল ক্ষতির মুখে পড়বে বলে মনে করছে সিপিডি।
রবিবার (২৩ জুন) রাজধানীর মহাখালীতে ব্র্যাকে 'জাতীয় বাজেট ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত, চ্যালেঞ্জ ও প্রস্তাবিত করণীয়' শীর্ষক উপস্থাপনায় এসব কথা তুলে ধরেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।
আরও পড়ুন: ট্যানারি শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২২৭৭৬ টাকা করার সুপারিশ সিপিডির
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে ড. মোয়াজ্জেম বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সরকারের পরিকল্পনা অত্যন্ত উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা। সেসময় ২৫ শতাংশ বাড়তি মজুদ থাকলেও সর্বোচ্চ ৩৫ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎই যথেষ্ট।
তিনি আরও বলেন, অতিরিক্ত সক্ষমতার কারণে জ্বালানি সংকট এবং বিতরণ ও সঞ্চালন লাইনের সীমাবদ্ধতা থাকায় চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না। ফলে উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ সক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও লোডশেডিং হচ্ছে।
ড. মোয়াজ্জেম বলেন, আবার বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য বিপুল পরিমাণ ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হয়। ফলে পিডিবির লোকসান বাড়ছেই। এর প্রভাবে গ্রাহকপর্যায়ে বিদ্যুতের দামও বাড়ছে।
সভায় বক্তারা বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন না করলেও সরকার ১৬ হাজার মেগাওয়াটের বেশি বিদ্যুতের অতিরিক্ত খরচ (ক্যাপাসিটি চার্জ) বহন করছে। এই সক্ষমতা দেশের অর্থনীতির জন্য মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সিপিডির গবেষণা পরিচালক মোয়াজ্জেম বলেন, দেশের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো উৎপাদন না করলেও তাদের ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হয়। এই চার্জের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা এখন সরকারি তহবিল থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা এখন ৩০ হাজার ৭৩৮ মেগাওয়াট। কিন্তু উৎপাদন হচ্ছে ১৪ হাজার মেগাওয়াট। ব্যবহার না করা হলেও উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানো হচ্ছে কেন?
সিপিডির গবেষণা পরিচালক আরও বলেন, সরকার এখন যে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা তৈরি করেছে তা ২০৩০ সালেও প্রয়োজন হবে না। আজ থেকে ৬ বছরের মধ্যে চাহিদা ১৯৪০০ মেগাওয়াটে পৌঁছাতে পারে। ২৫ শতাংশ মজুদ বিবেচনায় নিলে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা প্রয়োজন ২৩ হাজার ২৫২ মেগাওয়াট।
তিনি আরও বলেন, সক্ষমতা বাড়লেও দেশে লোডশেডিং হচ্ছে। গ্রীষ্মে গড় লোডশেডিং হয় ১১০০ মেগাওয়াট। বাজেটে বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাত নিয়ে স্পষ্ট কিছু নেই। এ খাত নিয়ে সরকার কী করবে সে বিষয়ে সবাই অন্ধকারে।
সেমিনারে আরও বক্তব্য রাখেন স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য এ কে আজাদ।
নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও গ্যাস সরবরাহ দাবি করে দাম বাড়ানো হলেও লোডশেডিং কমেনি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এ কে আজাদ আরও বলেন, ‘৭-৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। সিএনজি স্টেশন থেকে গ্যাস এনে ডিজেল দিয়ে কারখানা চালাতে হয়। এতে খরচ বেড়েছে। অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।’
সভায় আরও ছিলেন- বুয়েটের পেট্রোলিয়াম ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অধ্যাপক ড. এম তামিম, বাংলাদেশ পাওয়ার ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের রেক্টর মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন, ভোক্তা অধিকার সংস্থা ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শামসুল আলম।
আরও পড়ুন: বাজেটে চলমান অর্থনৈতিক সংকটের প্রতিফলন নেই: সিপিডি
আর্থিক অভিজাতদের সহায়তা করতে সাংবাদিকদের ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের নিষেধাজ্ঞা: সিপিডি
৫ মাস আগে
বাংলাদেশের রাজস্ব আয়ের ৩৩ শতাংশ ঋণ পরিশোধে ব্যয় হয়: ড. দেবপ্রিয়
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেছেন, বাংলাদেশ একটি অনিশ্চিত আর্থিক অবস্থার মধ্যে রয়েছে, যেখানে রাজস্বের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ ঋণ পরিশোধে ব্যয় করা হয়।
ড. ভট্টাচার্যের মতে, সরকারের মোট ঋণের দুই-তৃতীয়াংশ অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে আসে, যার ফলে মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ প্রায় ৮৫০ ডলারে পৌঁছায়।
বৃহস্পতিবার(৪ এপ্রিল) রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে এশিয়া ফাউন্ডেশন-বাংলাদেশের অংশীদারিত্বে সিপিডি আয়োজিত 'বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ ও ঋণ পরিশোধের পরিস্থিতি: উদ্বিগ্ন হওয়ার কি কোনো কারণ আছে?' শীর্ষক সেমিনারে তিনি এ কথা বলেন।
ড. দেবপ্রিয় বাংলাদেশের ঋণ কাঠামোর জটিলতার ওপর আলোকপাত করেন সেমিনারে।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান।
ড. দেবপ্রিয় পরিস্থিতির গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, 'জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশের রাজস্ব ব্যয়ের ৩৪ শতাংশ ঋণ পরিশোধে বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
তিনি উল্লেখ করেন, এই পরিসংখ্যানে অভ্যন্তরীণ ঋণের জন্য ২৮ শতাংশ এবং বৈদেশিক ঋণের জন্য ৫ শতাংশ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা মাত্র তিন বছরে ২৬ শতাংশ থেকে ৩৪ শতাংশে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে।
আরও পড়ুন: এমপিদের সম্পদের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি তদন্ত করতে হবে: সিপিডির মুস্তাফিজুর রহমান
কোভিড-১৯ মহামারি এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ২০১৮-১৯ সাল থেকে ঋণ গ্রহণের প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, রাজস্ব বাজেট এখন এতটাই টানাটানি যে, উন্নয়ন প্রকল্পে এক পয়সাও অর্থায়ন করা সম্ভব নয়।
ঋণ পরিশোধের বৃহত্তর প্রভাব তুলে ধরে ড. দেবপ্রিয় অর্থনীতিবিদদের সতর্কবাণীর প্রতি নীতিনির্ধারকদের প্রত্যাখ্যানমূলক মনোভাবের সমালোচনা করেন। তিনি ২০২৪ সালে বাংলাদেশের সামনে চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে দুই বছর আগে করা নিজের ভবিষ্যদ্বাণীর কথা উল্লেখ করেন। ২০২৫ সাল থেকে শুরু করে ২০২৬ সালে ঋণ পরিশোধে প্রত্যাশিত অস্বস্তির ওপর জোর দেন তিনি।
আরও পড়ুন: আ.লীগ ছাড়া সবাই বিদ্যুৎ খাতে ক্যাপাসিটি পেমেন্ট বন্ধ করতে চায়: সিপিডি
তিনি বেসরকারি খাতের ঋণের তাৎপর্য তুলে ধরে বলেন, মোট ঋণের ৮০ শতাংশই সরকারি ঋণ, বাকি ২০ শতাংশ বেসরকারি খাত। তিনি দেশের দায় ও বিনিময় খাতে বেসরকারি খাতের ঋণের প্রভাবের ওপর জোর দিয়ে ব্যক্তিগত ঋণ এবং এর ব্যবহার দেশে বা বিদেশে যেখানেই হোক না কেন, অধিকতর যাচাই-বাছাইয়ের আহ্বান জানান।
বৈদেশিক ও অভ্যন্তরীণ ঋণ একত্রিত করে ড. ভট্টাচার্য মাথাপিছু দায়বদ্ধতার বোঝার উপর জোর দিয়েছিলেন, যা কেবল বৈদেশিক ঋণের জন্য ৩১০ ডলারে দাঁড়িয়েছে এবং অভ্যন্তরীণ ঋণের ক্ষেত্রে প্রায় ৮৫০ ডলারে উন্নীত হয়। বাংলাদেশের ঋণ পরিস্থিতির এই সামগ্রিক বিশ্লেষণ সামনের চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় রাজস্বের ক্ষেত্রে বিচক্ষণতা ও কৌশলগত পরিকল্পনার জরুরি প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করে।
আরও পড়ুন: এক সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার-সোনালির দাম বেড়েছে ১০-৩০ টাকা
৮ মাস আগে
আ.লীগ ছাড়া সবাই বিদ্যুৎ খাতে ক্যাপাসিটি পেমেন্ট বন্ধ করতে চায়: সিপিডি
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ছাড়া বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দল বিদ্যুৎ খাতে ক্যাপাসিটি পেমেন্ট থেকে বেরিয়ে আসতে চায় বলে একটি বিশ্লেষণ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি)।
বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টার ইন মিলনায়তনে 'বাংলাদেশে জ্বালানি রূপান্তরের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা: একটি নাগরিক ইশতেহার' শীর্ষক সেমিনারে গবেষণা প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হয়।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুনের সভাপতিত্বে সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম।
আরও পড়ুন: বিদ্যুৎ উৎপাদনের জ্বালানি আমদানিতে বছরে ১০ বিলিয়ন ডলার প্রয়োজন বাংলাদেশের: সিপিডি
তিনি বলেন, ৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ঘোষিত আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা কমানোর বিষয়টি রাখা হয়নি।
গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, আওয়ামী লীগ ছাড়া বাংলাদেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ক্যাপাসিটি চার্জ প্রদান, বিদ্যমান জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক জ্বালানি ব্যবস্থার অতি আধিপত্যের অবসান, জ্বালানি মিশ্রণ ও বহুমুখীকরণ এবং বিদ্যুৎ আমদানির ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে সম্মত হয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে তা অনুপস্থিত।
সেমিনারে বক্তব্য দেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য তানভীর শাকিল জয়, বিদ্যুৎ বিভাগের পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন, বুয়েটের কেমিক্যাল অ্যান্ড ম্যাটেরিয়ালস ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের অধ্যাপক ও ডিন এবং প্রধান উপদেষ্টার সাবেক বিশেষ সহকারী ড. এম তামিম; সেন্টার ফর এনার্জি রিসার্চ (সিইআর), ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ইউআইইউ) পরিচালক শাহরিয়ার আহমেদ চৌধুরী; কোস্টাল লাইভলিহুড অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল অ্যাকশন নেটওয়ার্কের (ক্লিন)প্রধান নির্বাহী হাসান মেহেদী ; অ্যাকশনএইডের ব্যবস্থাপক আবুল কালাম আজাদ; ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনমিকস অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল অ্যানালাইসিসের (আইইইএফএ)লিড এনার্জি অ্যানালিস্ট শফিকুল আলম।
বক্তারা বলেন, সরকারকে অবশ্যই বিদ্যুৎ ও প্রাথমিক জ্বালানি আমদানির ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে হবে। অন্যথায় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত অব্যাহত লোকসান থেকে মুক্তি পাবে না।
আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য তানভীর শাকিল বলেন, দেশের শতভাগ বিদ্যুতায়নের লক্ষ্য অর্জনই আওয়ামী লীগ সরকারের সবচেয়ে বড় সাফল্য।
তিনি বলেন, ‘জনগণের দাবি বিদ্যুৎ পাওয়া। তারা আর বিদ্যুতের জন্য অপেক্ষা করতে চায় না এবং উৎপাদন খরচ দেখতে চায় না।’
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে সামাজিক নিরাপত্তা নয়, সবার জন্য সামাজিক বিমা চালু করতে হবে: সিপিডি
তিনি আরও বলেন, কিছু ভুল থাকতে পারে, তবে আমরা সেগুলো থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছি।
তিনি বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারে প্রধান বাধা হচ্ছে দেশে জমির স্বল্পতা।
পাওয়ার সেলের মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতকে সামগ্রিক দৃষ্টিতে দেখতে হবে।
তিনি বলেন, সরকার রাতারাতি বিদ্যুৎ রূপান্তরের জন্য তার পরিকল্পনা পরিবর্তন করতে পারে না।
ড. তামিম বলেন, সরকার দিনের বেলা সৌর বিদ্যুৎ দিয়ে সহজেই তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ ঘাটতি পূরণ করতে পারে, তবে এ জাতীয় কোনও পরিকল্পনা নেই।
তিনি বলেন, বর্তমান পরিকল্পনার আওতায় আগামী ২০ বছর ১০ হাজার মেগাওয়াট কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু থাকবে।
শফিকুল আলম বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি আমদানির ফলে দেশে ডলারের ঘাটতি বাড়ছে। আমদানির ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে আমাদের দেশীয় গ্যাস অনুসন্ধান প্রচেষ্টা বাড়াতে হবে বলেও জানান তিনি।
অ্যাকশনএইডের আবুল কালাম আজাদ বলেন, গত অর্থবছরে (২০২২-২৩) বেসরকারি উৎপাদকদের কাছ থেকে বিদ্যুৎ কিনতে ৫২ হাজার কোটি টাকা, ক্যাপাসিটি পেমেন্ট বাবদ ১৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করতে হয়েছে।
আরও পড়ুন: এমপিদের সম্পদের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি তদন্ত করতে হবে: সিপিডির মুস্তাফিজুর রহমান
১০ মাস আগে
বাংলাদেশে সামাজিক নিরাপত্তা নয়, সবার জন্য সামাজিক বিমা চালু করতে হবে: সিপিডি
'ইনসেপশন অব সোশ্যাল ইন্স্যুরেন্স ফোরাম ইন বাংলাদেশ' শীর্ষক সংলাপে বক্তারা বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচির পরিবর্তে সামাজিক বিমা চালুর সময় এসেছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) ও জিআইজেড এ সংলাপের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিপিডির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য পারভীন মাহমুদ।
আরও পড়ুন: নির্বাচনের আগে মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে নিতেই সিপিডির অসত্য তথ্যনির্ভর সংবাদ সম্মেলন: তথ্যমন্ত্রী
তারা বলেন, বাংলাদেশের বিদ্যমান আর্থ-সামাজিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে শুধু সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে রাখলেই চলবে না।
বক্তারা বলেন, এখনই সময় সামাজিক বিমা চালুর। সরকারের অ্যাকশন প্ল্যানে বিষয়টি তুলে আনা উচিত বলে মনে করেন তারা।
তারা বলেন, অনেক দেশ ১০০ বছর আগে সামাজিক বিমা চালু করলেও বাংলাদেশ এক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে আছে। সেসব দেশ এখন এই ব্যবস্থার সুফল পাচ্ছে এবং বাংলাদেশের উচিত সেসব দেশের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যাওয়া।
মূল প্রবন্ধে ড. মোয়াজ্জেম বলেন, জ্ঞানের ঘাটতি দূর করা, ফ্রেমওয়ার্ক ডেভেলপমেন্ট সহজতর করা, স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে নেটওয়ার্ক স্থাপন এবং থিম্যাটিক ক্ষেত্রগুলোতে অগ্রগতি ট্র্যাক করার লক্ষ্যে কাজ করে এসআইএফ (সোশ্যাল ইন্স্যুরেন্স ফোরাম)।
বোধগম্যতা ও বাস্তবায়ন বাড়ানোর জন্য সাংগঠনিক ও অপারেশনাল কর্মপ্রবাহের স্পষ্টতার উপর জোর দেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
মোয়াজ্জেম আরও বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীতে অনেক ফাঁকফোকর রয়েছে, আর যাদের সামাজিক সুরক্ষা পাওয়ার কথা, তারা তা পায় না। যাদের পাওয়ার কথা নয়, তারা পায়।
আরও পড়ুন: এমপিদের সম্পদের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি তদন্ত করতে হবে: সিপিডির মুস্তাফিজুর রহমান
এ বাস্তবতায় সামাজিক বিমা চালু হলে এসব ফাঁকফোকর দূর করা সম্ভব হবে।
দেশে সামাজিক নিরাপত্তা বিমা না থাকায় বিস্ময় প্রকাশ করেন আইএলওর ঢাকা অফিসের চিফ টেকনিক্যাল কনসালটেন্ট সৈয়দ সাদ হোসেন জিলানি।
এর জন্য তিনি মন্থর আমলাতন্ত্রকে দায়ী করেন। সরকার আট বছর আগে সামাজিক নিরাপত্তা কৌশল প্রণয়ন করে। তবে তা বাস্তবায়নের গতি খুবই কম বলে জানান তিনি।
এর জন্য তিনি মূলত আমলাতন্ত্রের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার অভাবকে দায়ী করেন।
‘সামাজিক বিমা সবার জন্য; এটি কেবল দরিদ্রদের জন্য নয় কারণ আমাদের প্রত্যেকে বেকারত্ব, অসুস্থতা ও বার্ধক্যের অভিজ্ঞতা হতে পারে', টেক্সটাইল ও চামড়া শিল্পের (ইআইপিএস) শ্রমিকদের জন্য কর্মসংস্থান আঘাত সুরক্ষা প্রকল্পের প্রকল্প ব্যবস্থাপক ড সিলবিয়া পপ।
অনুষ্ঠানের আলোচনা পর্বে দেশের ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন এনজিওর প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
তারা বলেন, দেশে ক্ষুদ্রঋণ ও ক্ষুদ্রবিমা নিয়ে অনেক কাজ হয়েছে এবং অনেক পাইলট প্রকল্প চালু করা হয়েছে। বিমা কোম্পানিগুলোরও নিয়মিত মিনি ইনস্যুরেন্স প্রোডাক্ট থাকে।
এসব প্রকল্প ও কাজের অভিজ্ঞতা সবার সঙ্গে শেয়ার করতে হবে, তাহলে সামাজিক বিমার কাজে গতি আসবে বলে জানান বিভিন্ন এনজিওর প্রতিনিধিরা।
আরও পড়ুন: সিপিডি কোনো গবেষণা করেনি, তাদের রিপোর্ট নির্জলা মিথ্যাচার: তথ্যমন্ত্রী
১০ মাস আগে
এমপিদের সম্পদের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি তদন্ত করতে হবে: সিপিডির মুস্তাফিজুর রহমান
সংসদ সদস্যদের সম্পদ কীভাবে বহুগুণ বেড়েছে তা সরকার ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্ত করা উচিত বলে মন্তব্য করেছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানিত ফেলো অধ্যাপক ড. মুস্তাফিজুর রহমান।
মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) রাজধানীর পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত বাংলাদেশের সমসাময়িক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সিপিডির এই ফেলো বলেন, 'দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের হলফনামায় সম্পদ বৃদ্ধির হার দেখে আমি বিস্মিত হয়েছি। যেখানে একটি প্লটের দাম ১ কোটি টাকা; তা মাত্র এক লাখ টাকা দেখানো হয়েছে।’
তারপরও সম্পদ শতগুণ বেড়ে যায়, তাহলে আসল চিত্রটা কী? অধ্যাপক মুস্তাফিজ প্রশ্ন তোলেন, 'এটা দেখে বোঝা যাচ্ছে না আসলে সম্পদ কতটা বেড়েছে।’
তিনি বলেন, প্রার্থীদের হলফনামায় অনেকের সম্পত্তি শতগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এত অল্প সময়ের মধ্যে কীভাবে এত বিপুল পরিমাণ সম্পদ বৃদ্ধি পেয়েছে তা দেখার বিষয়।
আরও পড়ুন: আরএমজি শিল্পে ন্যূনতম ১৭ হাজার ৫৬৮ টাকা মজুরির সুপারিশ সিপিডির
অধ্যাপক মোস্তাফিজ বলেন, ‘ওই সম্পত্তিগুলো এত বেড়েছে যে সরকার এবং তাদের দলের উচিত এই সম্পত্তিগুলোর উৎস সম্পর্কে জানতে চাওয়া। একই সঙ্গে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) তাদের সম্পদের উৎস খুঁজে বের করতে হবে।’
তিনি বলেন, ব্যাংকিং খাতের অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি, মানি লন্ডারিং, সবকিছুই একটি 'অসাধু চক্রের’ তৈরি।
তিনি বলেন, খেলাপি ঋণ বাড়ছে এবং আগ্রাসী ঋণ প্রদানের কারণে কিছু ব্যাংকও বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে।
এটি নিয়ন্ত্রণ করা বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান দায়িত্ব। তাদের স্বাধীনভাবে কাজ করার অনুমতি দেওয়া উচিত, অন্যথায় কেউ এখানে হস্তক্ষেপ করতে পারবে না, এটি রাষ্ট্রকে অবশ্যই নিশ্চিত করতে হবে বলেও জোর দেন সিপিডির এই ফেলো।
তিনি বলেন, 'আর্থিকভাবে দুর্বল ব্যাংকগুলোর একীভূতকরণের বিষয়টি আগেও বহুবার উল্লেখ করা হয়েছে। এজন্য আইনগত দুর্বলতা ও বিধি-বিধান ঠিক করতে হবে। কারণ ব্যাংকিং খাত অর্থনীতির রক্ত। এই খাতের সমস্যা পুরো অর্থনীতির উপর পড়ে,’ বলেও তিনি উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, খেলাপির বিপরীতে ব্যাংককে বিপুল পরিমাণ অর্থ প্রভিশন করতে হয়। এর মানে হলো, টাকা অর্থনীতিতে অংশ নিতে পারছে না, ব্যাংকে পড়ে আছে।
এতে করে ব্যাংকের ঋণ দেয়ার সক্ষমতা কমে যাচ্ছে এবং আয় কমে যাচ্ছে।
ড. মোস্তাফিজ বলেন, ধরুন ব্যাংকগুলো ১০০ টাকা আমানতের বিপরীতে সুদ দিচ্ছে, কিন্তু ব্যাংক ১০০ টাকার মধ্যে ৮০ টাকা ঋণ দিতে পারছে। অর্থাৎ ঋণের সুদের হার বাড়াতে হবে, এটি আবার বিনিয়োগে প্রভাব ফেলবে।
আরও পড়ুন: ১৫ বছরে বিভিন্ন কেলেঙ্কারিতে ব্যাংক থেকে ৯২ হাজার কোটিরও বেশি টাকা পাচার হয়েছে: সিপিডি
মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমেরিকা নিজেদের সুবিধার জন্য বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা (নিষেধাজ্ঞা) আরোপ করে।
প্রয়োজনে ভেনেজুয়েলার মতো দেশের সঙ্গে চুক্তি করতে হবে। অতএব, এটি জোর দেওয়া উচিত যে তারা অনুমোদন করবে কিনা সেদিকে মনোযোগ না দিয়ে তারা অনুমোদনের সুযোগ পাবে না। আমাদের শ্রমিকদের মজুরি ও অধিকার নিশ্চিত করারও পরামর্শ দেন তিনি।
তিনি বলেন, সরকার বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দিয়ে গার্মেন্টস শিল্পকে এই পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। বিশ্বের পোশাকের বাজার ৭০০ বিলিয়ন ডলার। আমাদের পণ্য রপ্তানির সম্ভাবনা রয়েছে। এর মতো বড় খাত আর নেই। রপ্তানি বৈচিত্র্যময় করতে হবে, নতুন বাজারে যেতে হবে।
এখনও এই বাজারের একটি বড় অংশ দখল করার সুযোগ রয়েছে, এর জন্য বাংলাদেশকে আরও আধুনিকীকরণ করতে হবে।
তিনি চামড়া খাত ও ওষুধ রপ্তানির ওপর জোর দেওয়ার পরামর্শ দেন। বৈশ্বিক বাজারে এই পণ্যগুলোর জন্য একটি সম্ভাব্য ভবিষ্যত রয়েছে।
ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ রেফায়েত উল্লাহ মৃধা।
আরও পড়ুন: সিপিডি কোনো গবেষণা করেনি, তাদের রিপোর্ট নির্জলা মিথ্যাচার: তথ্যমন্ত্রী
১১ মাস আগে
সিপিডি কোনো গবেষণা করেনি, তাদের রিপোর্ট নির্জলা মিথ্যাচার: তথ্যমন্ত্রী
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) রিপোর্টকে নির্জলা মিথ্যাচার বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
সিপিডির সাম্প্রতিক সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশিত রিপোর্ট সম্পর্কে তিনি বলেছেন, 'সিপিডি কোনো গবেষণা করেনি। তাদের বক্তব্য নির্জলা মিথ্যাচার ছাড়া অন্য কিছু নয়।'
সোমবার (২৫ ডিসেম্বর) দুপুরে মন্ত্রীর নিজ জেলা চট্টগ্রামে বন্দরনগরীতে বাংলাদেশ টেলিভিশনের ৫৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিটিভি চট্টগ্রাম কেন্দ্রে স্থাপিত জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে ফুল দেওয়া শেষে সিপিডির দেওয়া তথ্য সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, 'সিপিডির সংবাদ সম্মেলনে যদিওবা গবেষণার কথা বলা হয়েছে, বাস্তবে গবেষণা করতে অনেক সময় লাগে, অনেক তথ্য-উপাত্ত থাকে। কিন্তু সিপিডি এই রিপোর্ট তৈরি ও প্রকাশ করার ক্ষেত্রে অনেক লুকোচুরি করেছে এবং অনেক ভুল ও অসত্য তথ্য তারা পরিবেশন করেছে।'
মন্ত্রী বলেন, 'যেমন সিপিডি বলেছে আমাদের উন্নয়ন বাজেটের ৭৫ শতাংশ হচ্ছে বিদেশনির্ভর। অথচ আসলে আমাদের চলতি বাজেটের ৩৫ শতাংশ হচ্ছে সাহায্যনির্ভর কিংবা বিদেশনির্ভর। এক সময় এটি ২০ শতাংশের নিচে নেমে গিয়েছিল। সাম্প্রতিক সময়ে কিছু প্রকল্পের জন্য বৈদেশিক ঋণ নেওয়ার কারণে এটি ৩৫ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। অথচ সিপিডি বলেছে এটি ৭৫ শতাংশ।'
ড. হাছান বলেন, 'সিপিডি বলেছে বেসিক ব্যাংক থেকে চার হাজার কোটি টাকা লোন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু চার হাজার কোটি টাকার মধ্যে দুই হাজার কোটি টাকা ইতোমধ্যে আদায় করা হয়েছে এবং বাকি দুই হাজার কোটি টাকার জন্য মামলা করা হয়েছে। মামলা চলমান, আদায় প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে।’
আরও পড়ুন: নির্বাচনের আগে মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে নিতেই সিপিডির অসত্য তথ্যনির্ভর সংবাদ সম্মেলন: তথ্যমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘সিপিডি আরও বলেছে নাবিল গ্রুপ ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। কিন্তু সেই ঋণ যেসব আদায় হয়েছে, সে তথ্য সিপিডির রিপোর্টে জানানো হয়নি। ইচ্ছাকৃতভাবে এগুলোকে লুকানো হয়েছে। সিপিডি চট্টগ্রামভিত্তিক একটি গ্রুপের কথা বলেছে। আমি বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে চেক করেছি। সেই গ্রুপের কোনো লোনই ক্লাসিফায়েড নয়। অর্থাৎ সিপিডি অসত্য তথ্য দিয়েছে।'
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, 'একইসঙ্গে সিপিডি বলেছে, ক্লাসিফায়েড লোনের আকার বেড়েছে। কিন্তু তারা শুধু আকারের কথা বলেছে, পারসেন্টেজের কথা বলে নাই। কারণ, ক্লাসিফায়েড লোনের হার কমেছে। ২০০৯ সালে আমাদের জিডিপি ছিল ৮০ বিলিয়ন ডলার। এখন জিডিপি হচ্ছে প্রায় ৫০০ বিলিয়ন বা হাফ এ ট্রিলিয়ন ডলার। জিডিপি ৬ গুণ বৃদ্ধি পেলে তো ক্লাসিফায়েড বা ব্যাড লোনের আকারও বৃদ্ধি পাবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু পারসেন্টেজ কত, সেটাই হচ্ছে মূল বিষয়। ২০০৯ সালে ক্লাসিফায়েড লোন ছিল ১০ দশমিক ৫ শতাংশ, আর এখন ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ। অর্থাৎ তখনকার তুলনায় কমেছে।'
সিপিডির কেউ কেউ তো ২০০৭-২০০৮ সালে দেশ পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন এবং তখন ব্যাড লোন ১০ শতাংশের উপরে ছিল উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, এইভাবে অসত্য তথ্য দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করা আসলে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
বিএনপির তিনদিনের কর্মসূচি ঘোষণায় প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, 'বিএনপি যে তিনদিন কর্মসূচি দিয়েছে, জনগণও তা জানে না, কেউ খেয়ালও করে নাই। হয়তো বা সাংবাদিকরা খবরা-খবর রাখেন বলেই খেয়াল করেছেন। তারা কোন দিন হরতাল দেয়, কোন দিন অবরোধ দেয়, কেউ কিন্তু খেয়াল করে না। বাংলাদেশের মানুষও খেয়াল করে নাই, কাকপক্ষীও খেয়াল করেছে কি না আমি জানি না। সুতারং এগুলো গতানুগতিক কর্মসূচি ও হাস্যকর।'
আরও পড়ুন: বিএনপির নির্বাচন বর্জনের ডাক ‘ফিউজ’ হয়ে গেছে: তথ্যমন্ত্রী
রাজনীতির নামে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের মানববন্ধনে তথ্যমন্ত্রী
১১ মাস আগে
নির্বাচনের আগে মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে নিতেই সিপিডির অসত্য তথ্যনির্ভর সংবাদ সম্মেলন: তথ্যমন্ত্রী
নির্বাচনের আগে মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে ফেরাতেই সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) অসত্য তথ্যনির্ভর সংবাদ সম্মেলন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
রবিবার (২৪ ডিসেম্বর) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ (পিআইবি) প্রকাশিত ‘সংবাদপত্রে শেখ হাসিনার বক্তৃতা ১৯৮১-১৯৮৬’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
পিআইবির মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ এবং দৈনিক সংবাদ পত্রিকার ব্যবস্থাপনা সম্পাদক কাশেম হুমায়ুন অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
সিপিডির প্রতিবেদনের ভুল চিহ্নিত করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “সিপিডির এই প্রতিবেদন আমি পড়েছি। উনারা বলেছেন আমাদের উন্নয়ন বাজেটের ৭৫ শতাংশ আসে বৈদেশিক সাহায্য থেকে, যা সম্পূর্ণ অসত্য, ‘অ্যাবসোল্যুটলি রং অ্যান্ড বোগাস’। আমাদের উন্নয়ন বাজেটের ৩৫ শতাংশ হচ্ছে বৈদেশিক সাহায্য নির্ভর। আগে আরেকটু কম ছিল। একটা গবেষণালব্ধ প্রতিবেদন এ রকম ভুল কীভাবে থাকে। সুতরাং এই প্রতিবেদনে আরও ভুল আছে। নির্বাচনের আগ মুহূর্তে এ রকম প্রচার করার উদ্দেশ্য কি মানুষের দৃষ্টিকে ভিন্ন দিকে নিবদ্ধ করা? সেই প্রশ্ন অনেকেই রেখেছে।”
ড. হাছান বলেন, ‘বিভিন্ন বড় বড় গ্রুপ যে ঋণ নিয়েছে, সেগুলোকে সন্নিবেশিত করে সিপিডি বলতে চেষ্টা করেছে যে, ৯২ হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। আমি মনে করি, ব্যাংকিং খাতে অনিয়ম যে হয়নি বা হচ্ছে না সেটি নয়, অনিয়ম কিছুটা হয়েছে। কিন্তু এসব বিষয় আগে বহুবার পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। এখানে গবেষণার কিছু নাই। এগুলো সব লোন ইস্যু বা ঋণের বিষয়, এগুলো সবাই জানে। উনারা পত্রপত্রিকা ঘেঁটে নির্বাচনের আগ মুহূর্তে প্রেস কনফারেন্সে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করল। সেই প্রতিবেদনেও অনেক ভুল। এই সময় মানুষের দৃষ্টিকে ভিন্ন দিকে নিবদ্ধ করার জন্যই এটি করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: বিএনপির নির্বাচন বর্জনের ডাক ‘ফিউজ’ হয়ে গেছে: তথ্যমন্ত্রী
একইসঙ্গে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, “দেশের উন্নয়নের স্বার্থে এবং সরকার যাতে সঠিকভাবে কাজ করে সে প্রয়োজনে ভুল ধরে দেওয়ার জন্য সিডিপির মতো প্রতিষ্ঠান দরকার আছে, গবেষণারও প্রয়োজন আছে। কিন্তু যখন এই গবেষণায় এতবড় ভুল থাকে যা ‘গ্রস মিসটেক, নট সিলি মিসটেক’ আর প্রতিবেদন হয় অসত্য তথ্যনির্ভর, তাহলে সেই প্রতিবেদন এবং যারা তা প্রকাশ করে তাদের নিয়েও প্রশ্ন ওঠে।”
নির্বাচনবিরোধী প্রচারণার ওপর নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিষেধাজ্ঞা থাকলেও বিএনপি কীভাবে নির্বাচনবিরোধী প্রচারণা চালাচ্ছে-এ প্রশ্নের জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, “মাঠ প্রশাসন এবং পুলিশ এখন নির্বাচন কমিশনের অধীনে। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নির্দেশনা বাস্তবায়ন কমিশনই করবে। যখনই কমিশন এ ধরনের কার্যক্রমের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য প্রশাসনকে নির্দেশনা দেবে অবশ্যই প্রশাসন সেটি প্রতিপালন করবে। আমি মনে করি যে, এই নির্দেশনা সুষ্ঠু, অবাধ, জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে সহায়ক।”
নির্বাচনের বিরুদ্ধে কেউ কেউ গোলটেবিল বৈঠক করছে এমন প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “যারা লম্বা, গোল বা চ্যাপ্টা টেবিল মিটিং করছে তাদের হাঁকডাক তো শোনা যাচ্ছে না, পত্রিকার পাতায়ও স্থান পাচ্ছে না। নির্বাচন অত্যন্ত অংশগ্রহণমূলক হচ্ছে। প্রতি আসনে গড়ে সাড়ে ৬ জন প্রার্থী। ৪৪টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের মধ্যে ৩০টি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। জনগণের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে।”
বিএনপিনেতা রিজভী ও মঈন খানের মন্তব্য ‘সরকার লুটপাটের অর্থ দিয়ে ডামি নির্বাচন করছে’- এর জবাবে হাছান মাহমুদ বলেন, “বিএনপির ডামি নেতারা কী বলল এতে কিছু আসে যায় না। ওদের আসল নেতা তারেক রহমান আর মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রুহুল কবির রিজভী আর মঈন খান তো ওদের ডামি নেতা। এরা দুজনই ডামি নেতা বলেই ডামি শব্দটা বেশি পছন্দ করে এবং তারা কী বলল, কিছু আসে যায় না। আর লুটপাটের জন্য তো উনারাই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে, পরপর পাঁচবার উনারা দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে এবং সেই লুটপাটের অর্থ দিয়ে তারা এখন দেশে আগুনসন্ত্রাস চালাচ্ছে। আমাদের সরকার লুটপাটকারীদের ধরার ব্যবস্থা করছে এবং আরাফাত রহমান কোকোর টাকা ফেরত এনেছে, তারেক রহমানের বিরুদ্ধে এফবিআই এসে বাংলাদেশে সাক্ষী দিয়ে গেছে।’’
পিআইবির পরিচালক ড. কামরুল হক, সহসম্পাদক আকিল উজ জামান খান, গবেষক পপি দেবী থাপা এবং মোহাম্মদ এনায়েত হোসেন প্রমুখ গ্রন্থমোড়ক উন্মোচনে অংশ নেন।
আরও পড়ুন: রাজনীতির নামে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের মানববন্ধনে তথ্যমন্ত্রী
ধ্বংসাত্মক রাজনীতি নির্মূল করে মানবিক রাষ্ট্র গঠনই বিজয় দিবসের প্রত্যয়: তথ্যমন্ত্রী
১১ মাস আগে
১৫ বছরে বিভিন্ন কেলেঙ্কারিতে ব্যাংক থেকে ৯২ হাজার কোটিরও বেশি টাকা পাচার হয়েছে: সিপিডি
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) জানিয়েছে, ২০০৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত বিগত ১৫ বছরে বিভিন্ন কেলেঙ্কারির মাধ্যমে দেশের ব্যাংকিং খাত থেকে ৯২ হাজার ২৬১ কোটি টাকার বেশি পাচার হয়েছে।
শনিবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে ঢাকার ধানমন্ডি কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি ২০২৩-২৪: চলমান সংকট ও করণীয়’- শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় স্বাধীন থিংক-ট্যাংক সিপিডি।
সিপিডি জানিয়েছে, ২০০৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতে ২৪টি কেলেঙ্কারির মাধ্যমে তহবিল লুণ্ঠন করা হয়েছে।
সিপিডি উল্লেখ করেছে, বিগত কয়েক বছরে অসংখ্য ব্যবসায়িক সংগঠন ও ব্যক্তিদের করা বেশ কয়েকটি অনিয়মের সম্মুখীন হয়েছে দেশের ব্যাংকিং খাত। যার ফলে বেশ কয়েকটি ব্যাংক থেকে প্রচুর অর্থের অপব্যবহার হয়েছে, যার পরিমাণ হাজার হাজার কোটি টাকা।
এই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘সিপিডি ২০০৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতে ২৪টি বড় অনিয়মের প্রকাশিত সংবাদ প্রতিবেদন সংকলন করেছে, যার পরিমাণ ৯২২ দশমিক ৬১ বিলিয়ন বা ৯২ হাজার ২৬১ কোটি টাকারও বেশি।’
আরও পড়ুন: কয়লা-এলএনজি'র ওপর নির্ভরতা বাড়িয়ে পরিচ্ছন্ন জ্বালানির বিরুদ্ধে কাজ করছে সরকার: সিপিডি
১১ মাস আগে
নির্বাচনের আগে বাংলাদেশ গভীর খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে: ড. দেবপ্রিয়
৭ জানুয়ারির আসন্ন সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও রাজনীতি এই তিনটি প্রধান ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ আরও বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশিষ্ট ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ আজ গভীর খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে আছে।’ আসন্ন নির্বাচন একতরফা হলে দেশের সংকট আরও বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
বিশিষ্ট এই অর্থনীতিবিদ চলতি সপ্তাহে ঢাকায় ইউএনবির সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং আন্তর্জাতিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে তার মতামত জানিয়েছেন।
এসময় ড. দেবপ্রিয় বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং একদলীয় নির্বাচন অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা আরও বাড়াবে। কারণ বাংলাদেশের প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ একটি সুষ্ঠু ও আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চায়, যা টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির জন্যও খুব প্রয়োজন।
বড় রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণ ছাড়া নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) রাজনৈতিক দল তৈরি করে তাদের ইচ্ছামতো নিবন্ধন দিচ্ছে।
তিনি বলেন, এখানে বিভিন্ন স্বার্থ রয়েছে বলে বাংলাদেশ এখন বৈশ্বিক শক্তির দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। আগামী নির্বাচন আগের গত নির্বাচনের মতো হবে, না কি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও অংশগ্রহণমূলক হবে তারা তা পর্যবেক্ষণ করছেন।
অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের বিষয়ে তিনি বলেন, মানুষ দীর্ঘদিন ধরে মুদ্রাস্ফীতির ধাক্কা সহ্য করে আসছে, অথচ মহামারির পরে এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সময়ও অনেক দেশ এক্ষেত্রে উন্নতি করেছে।
তিনি বলেন, এখানে খাদ্য মূল্যস্ফীতি প্রায় ১২ শতাংশ এবং গ্রামাঞ্চলে মূল্যস্ফীতি শহরাঞ্চলের তুলনায় বেশি, যা আগে দেখা যায়নি।
তার মতে, টাকার ক্রমাগত দরপতনের কারণে আমদানি মূল্যস্ফীতির মুখে পড়তে হচ্ছে জনগণকে।
ড. দেবপ্রিয় বলেন, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে এই ধরনের মুদ্রাস্ফীতি কমানোর কোনো দৃশ্যমান লক্ষণ নেই।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমদানি এক-চতুর্থাংশ কমে যাওয়ায় রাজস্ব উৎপাদন মারাত্মকভাবে কমে গেছে।
তিনি আরও বলেন, রাজস্ব বোর্ডের অদক্ষতার কারণে রাজস্ব আদায় কম হয়েছে।
আরও পড়ুন: রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সবসময়ই অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা তৈরি করে: আহসান মনসুর
ড. দেবপ্রিয় বলেন, নির্বাচনের বছরের মধ্যেও সরকার স্থানীয় সরকার পর্যায়ে প্রতিশ্রুত উন্নয়ন কাজ বাস্তবায়ন করতে পারে না।
তিনি বলেন, একটি অবাধ ও সুষ্ঠু সংসদ নির্বাচন না হওয়া পর্যন্ত এই স্থবিরতা যাবে না। সব খাতে জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার জন্য এটি প্রয়োজনীয়।
তিনি আরও বলেন, আমদানির ব্যাপক পতন অভ্যন্তরীণ বাজারে মূল্যবৃদ্ধি সৃষ্টি করেছে এবং কয়েকটি সিন্ডিকেট এটিকে দাম বাড়ানোর বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করছে।
ব্যক্তিগত ও সামগ্রিক আয় বাড়ানো সত্ত্বেও রাজস্ব ঘাটতি বাড়ছে, দুর্নীতি ও অর্থপাচার কমছে না; জবাবদিহিতার অভাবে এগুলো ঘটছে।
তিনি বলেন, সরকার টপ টু বটম কোথাও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পারছে না, কারণ রাজনৈতিক ও নৈতিক বৈধতা না থাকায় তারা আমলা ও রাষ্ট্রীয় সংস্থার উপর নির্ভরশীল।
তিনি আরও বলেন, শুধু তাই নয় বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়েও কিছু প্রভাবশালী দেশ হস্তক্ষেপ করছে, যা আগে কখনো হয়নি। এগুলো সবই এখানে ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচনের ফলাফল এবং তারা (বিদেশিরা) রাজনৈতিক মতবিরোধ ও সরকারের নৈতিক বৈধতার অভাবের সুযোগ নিচ্ছে।
গত নির্বাচনের বৈধতা প্রসঙ্গে ড. দেবপ্রিয় বলেন, সংবিধানের বিবেচনায় ওই নির্বাচনগুলো বৈধ হলেও, রাজনৈতিক ও নৈতিক বৈধতার অভাব ছিল।
তিনি বলেন, একটি দেশ শক্তিশালী হয় যখন তার স্বাধীন রাষ্ট্রীয় অঙ্গগুলো শক্তিশালী হয়। বাংলাদেশে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান এবং অন্যান্য রাষ্ট্রীয় সংস্থা উভয় পক্ষ পক্ষপাতমূলক ভূমিকা পালন করছে।
শ্রম অধিকারের বিষয়ে ড. দেবপ্রিয় বলেন, পশ্চিমা বিশ্ব কাজের পরিবেশ, অযথা হয়রানি এবং শ্রম অধিকার কর্মীদের জোরপূর্বক গুম করা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে। পশ্চিমা জনগণ; যারা বাংলাদেশের পোশাক এবং অন্যান্য পণ্যের ক্রেতা, তারা এই বিষয়গুলো নিয়ে খুবই সচেতন ও উদ্বিগ্ন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অনেক খাতেই সংস্কার করতে হবে। যেমন- বিপুল খেলাপি ঋণ পুনরুদ্ধার করা, অর্থপাচার কমানো, কাজের উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং নির্ভয়ে তাদের মতামত প্রকাশ করা।
কূটনৈতিক ক্ষেত্রে, বাংলাদেশি পণ্য, জনশক্তি ও রেমিটেন্সের রপ্তানি গন্তব্যের কথা মাথায় রেখে দেশকে বৈশ্বিক শক্তির সঙ্গে ভারসাম্য বজায় রাখতে হবে।
আরও পড়ুন: নির্বাচনের আগে অবরোধ ও হরতালের কারণে অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে: ড. আতিউর
নির্বাচনের আগে অফশোর হাইড্রোকার্বন অনুসন্ধানের আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বানের পরিকল্পনা স্থগিত
১ বছর আগে