নাসিমুল গনি
আমরা চাই পুলিশ কোমর সোজা করে দাঁড়াক: নাসিমুল গনি
জুলাই অভ্যুত্থানের পর মনোবল ভাঙা পুলিশ বাহিনী ফের কোমর সোজা করে দাঁড়াক, এমনটা আমরাও চাই বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি। রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ সম্পর্কে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন৷
সিনিয়র সচিব বলেন, ‘আমরা চাই পুলিশ কোমর সোজা করে দাঁড়াক। পুলিশের কেউ ভয়ে ও চাপে পড়ে অন্যায় করেছে। কিছু অতিউৎসাহী ছিল তারা পালিয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন হচ্ছে।’
নাসিমুল গনি বলেন, ‘আমাদের সিস্টেমের মধ্যে যেন একটা ভালো প্র্যাকটিস রেখে যেতে পারি সেই চেষ্টা করছি, যাতে আর কোনো আয়নাঘর তৈরি না হয়। এরকম পরিস্থিতি যাতে আর তৈরি না হয়। এছাড়া আমাদের সিস্টেমে যারা কাজ করবেন, তারা যেন সঠিকভাবে কাজ করতে পারেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আগামী ১১ তারিখ মানবাধিকার ও পরিবেশের ওপর গুরুত্ব দিয়ে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে একটি কর্মশালার আয়োজন করা হবে। যেখানে ঢাকা ও গাজীপুরের ১৫০ জন কর্মকর্তা থাকবে।’
অপারেশন ডেভিল হান্টে কারা নেতৃত্ব দেবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এটা পুলিশি অ্যাকশন। পুলিশ কাজ করবে ও সেনাবাহিনী এতে সহায়তা করবে।‘
পুলিশের এই নাজুক অবস্থায় তাদের দিয়ে এই অপারেশন চলবে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘যে সকল দেশে বিপ্লব হয়েছে সেখানে পরাজিত শক্তিকে কেউ রাখেনি। এই সরকার অতটা অমানবিক হতে পারেনি। আমরা পুলিশকে রিফর্ম করেছি। একটা বাহিনীর মনোবল ভেঙে গেছে। পুলিশের কিছু পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছি। আমরা চাই পুলিশ কোমর সোজা করে দাঁড়াক৷ এজন্য তাদের একটিভলি কাউস্নেলিং করছি।’
আরও পড়ুন: দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা প্রতিরোধে অপারেশন ডেভিল হান্ট: সিনিয়র সচিব
ডেভিল হান্টে কেউ গ্রেপ্তার হয়েছে কিনা জানতে চাইলে সিনিয়র সচিব বলেন, ‘তারা গতকাল (শনিবার) থেকে কাজ শুরু করেছে৷ চট করে সবকিছু বলা যাবেনা৷ যতদিন প্রয়োজন ততদিন এই অপারেশন রাখা হবে৷
ডেভিল হান্ট অপারেশন যারা পরিচালনা করছে তাদের ক্ষমতা কতটুকু, এমন প্রশ্মের উত্তরে তিনি বলেন, ‘পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটের যে ক্ষমতা আছে সেই ক্ষমতাই পাবে।’
৫ আগস্টের পর যাদের নামে মামলা হয়েছে, তারা ডেভিল হান্টের আওতায় আসবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘পুলিশ যখন ধরবে তখনই দেখতে পারবেন।’
৬০ দিন আগে
দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা প্রতিরোধে অপারেশন ডেভিল হান্ট: সিনিয়র সচিব
দেশকে যাতে কেউ অস্থিতিশীল করতে না পারেন, সে জন্যই অপারেশন ডেভিল হান্ট পরিচালনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি। তিনি বলেন, ‘হঠাৎ করে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সেটা যাতে না থাকে সে জন্যই, যাতে মানুষের মনকে উদ্বেলিত না করে, সে জন্যই এই প্রচেষ্টা। এটি পুলিশের পদক্ষেপ।’
রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয় সভাকক্ষে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি এমন কথা বলেন। জুলাই অভ্যুত্থানের ছয় মাস পার হলেও মানুষ পুলিশের কাছে নিরাপত্তা পাচ্ছেন না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি একমত। এটা বলা মুসিবত। যেসব দেশে বিপ্লব হয়েছে, সেখানে পরাজিত শক্তিকে কেউ রাখে না, আমরা অতটা মানবিক হতে পারিনি। আমরা তাদের সংস্কার করতে চাই।’
আরও পড়ুন: ১ সিনিয়র সচিবসহ ২ সচিব ওএসডি, ২ মন্ত্রণালয়ে নতুন সচিব
‘আমরা বুঝতে পারি, কিছু লোককে জবরদস্তিমূলকভাবে করানো হয়েছে, কিছু লোক ভয়ে করেছেন, কিছু যারা ডাইহার্ট (গোঁড়া) ছিল, তারা পালিয়ে গেছেন। তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু একটি বাহিনীর মনোবল ভেঙে গেছে, তাদের গড়ে তোলা দরকার। আবার আগে যে অরিয়েন্টেশন ছিল, সেটা থেকে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করা হচ্ছে,’ বলেন এই সিনিয়র সচিব।
তিনি আরও বলেন, ‘মাসছয়েক আগে দেশে যে পরিবর্তন এসেছে, সেই পরিবর্তনের পর আইনশৃঙ্খলার ক্ষেত্রে উপযুক্ত কারণেই সারা দেশে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। পুলিশ বাহিনীর বেশ কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মনোবল ক্ষুণ্ণ হয়ছে। মানসিক দুর্বলতা এসেছে। বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়েছে। কাজেই বেসামরিক বাহিনীকে সমর্থন দিতে সারা দেশে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।’
‘এসব পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে আমরা কিছু পদক্ষেপ নিয়েছি। তার একটি হচ্ছে, অপারেশন ডেভিল হান্ট। এখানে যৌথভাবে সবাই একটি ফোকাসড ওয়েতে (কেন্দ্রিভূতভাবে) কিছু কাজ করছে। দেশের স্থিতিশীলতাকে নষ্ট করার চেষ্টা করা হচ্ছে, সেটাকে আমরা নিউট্রালাইজড (নিঃশ্বেষ) করবো। সে জন্য আমরা আইনানুগভাবে যেসব ব্যবস্থা নেওয়া দরকার, সেটা নেওয়া হবে। আর এ জন্য সব বাহিনীকে প্রস্তুত করা হয়েছে, ব্রিফ করা হয়েছে। কাজও চলমান রয়েছে। আজও করেছি। আগামীতেও চলতে থাকবে।’
আরও পড়ুন: তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার যৌক্তিকতা পাচ্ছে না সরকার: সিনিয়র সচিব
নাসিমুল গনি বলেন, ‘আগে যেভাবে আইন প্রয়োগ করা হতো, আমরা সেই পথে হাঁটতে পারবো না। আইন প্রয়োগের ক্ষেত্রে আইনের স্পিরিট নিয়ে কাজ করতে হবে। সে জন্য আমরা চেষ্টা করেছি যে আইন প্রয়োগের সাথে যারা জড়িত, তাদের সবার (পুলিশ, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, প্রসিকিউটর) সাথে বসবো। কীভাবে আমরা সুষ্ঠুভাবে আইন প্রয়োগ করবো? মানবাধিকার ও পরিবেশ সুরক্ষা করে এটা করতে হবে। মানবাধিকার কেন? কারণ মানবাধিকারের কারণে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন হয়েছে।’
‘আমরা চাই, পরবর্তী প্রজন্মের জন্য যাতে একটা ভালো ভবিষ্যত রেখে যেতে পারি, আমাদের সিস্টেমের মধ্যে যেন গুড প্র্যাকটিস আমরা রেখে যেতে পারি। আর কোথাও যাতে আয়নাঘর তৈরি না হয়। আমাদের সিস্টেমে যারা কাজ করবেন, তারা যাতে উপযুক্তভাবে কাজ করতে পারেন। এসব প্রয়াসের মধ্যে একটি হচ্ছে এই অভিযান,’ বলেন তিনি।
৬০ দিন আগে