চুক্তি লঙ্ঘ
চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ: জিম্মিদের ফেরত দিচ্ছে না হামাস
ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে বন্দিবিনিময় স্থগিত করেছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। এ সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, চুক্তি অনুযায়ী ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্তি না দিলে যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাতিল হতে পারে।
চলমান যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় আগামী শনিবারে (১৫ ফেব্রুয়ারি) তিন ইসরায়েলি জিম্মি মুক্তির কথা রয়েছে। তবে স্থানীয় সময় সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত আর কোনো ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন হামাসের সামরিক শাখা কাশেম ব্রিগেডের এক মুখপাত্র।
হামাসের এই সিদ্ধান্তকে ‘যুদ্ধবিরতি চুক্তির পুরোপুরি লঙ্ঘন’ বলেছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরায়েল কাৎয।
হামাসের সিদ্ধান্তকে চলমান চুক্তির লঙ্ঘন আখ্যা দিয়ে সেনাদের সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন কাৎয। জিম্মিদের পরিবারকেও হামাসের সিদ্ধান্তের বিষয়ে অবগত করেছে ইসরায়েল প্রশাসন।
আরও পড়ুন: ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ গেল অন্তঃসত্ত্বা ফিলিস্তিনি নারীর
এদিকে হামাসের মুখপাত্র আবু ওবেইদা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি চুক্তির মূল শর্তগুলোই অমান্য করেছে ইসরায়েল।
ইসরায়েলি সেনারা সময়মতো ফিলিস্তিনিদের উত্তর গাজায় প্রবেশ করতে দেয়নি অভিযোগ করে তিনি বলেন, এমনকি গাজায় পর্যাপ্ত ত্রাণ পৌঁছাতেও বাধা দেওয়া হয়েছে।
এদিকে, হামাসের বন্দিবিনিময় চুক্তি স্থগিত করায় তীব্র চাপের মুখে পড়েছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। ইসরায়েলের কর্মকর্তারা জানিয়েছে, উদ্ভূত এই পরিস্থিতিতে গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছে নেতানিয়াহু।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার ( ১১ ফেব্রুয়ারি) সকালে নিরাপত্তা পরিষদের সঙ্গে এক জরুরি বৈঠকে তিনি এই সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন বলে বার্তা সংস্থা এসোসিয়েট প্রেসের (এপি) এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
এ ছাড়াও হামাসের সিদ্ধান্তে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) হোয়াইট হাউসে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘শনিবারের মধ্যে বন্দিবিনিময় সম্পন্ন না করা হলে যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাতিল হওয়া উচিত।’
আরও পড়ুন:ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুদের নিয়ে নেতানিয়াহুর বক্তব্য প্রত্যাখ্যান সৌদির
ট্রাম্প বলেন, ‘আমি বলব শনিবার ১২টার মধ্যে তাদের ফেরত দেওয়া উচিত......দুই, এক বা তিন চারজন করে নয় সবাইকে।’
এসময় চুক্তি ভঙ্গ হলে গাজায় পুনরায় সর্বাত্বক যুদ্ধ শুরু হওয়ার হুঁশিয়ারিও দেন তিনি। এমন হুঁশিয়ারি ইসরায়েলের পক্ষ থেকে প্রতিশোধ হিসেবে কিনা জানতে চাইলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপনারা দেখতে পারবেন, তারাও দেখবে…..হামাসও দেখতে পারবে আমি কি বুঝাতে চেয়েছি।’
প্রসঙ্গত, গেল পনেরো মাস ধরে গাজায় নির্বিচারে সামরিক হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে ৪৭ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হন, যাদের বেশিরভাগ নারী ও শিশু। মিসর, সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যস্থতায় ও যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনে দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি সই হয়, যা কার্যকর হয় গত ১৯ জানুয়ারি।
২৯৭ দিন আগে