আলী রীয়াজ
১৫-১৬ অক্টোবর জুলাই সনদে সই হবে: আশা আলী রীয়াজের
আগামী ১০ অক্টোবরের মধ্যে সরকারের কাছে চূড়ান্ত সুপারিশ পেশ করবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন এবং রাজনৈতিক দলগুলো ১৫ ও ১৬ অক্টোবরের মধ্যে ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’-এ আনুষ্ঠানিকভাবে সই করবে বলে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
বুধবার (৮ অক্টোবর) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পঞ্চম দিনের বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে এসব কথা জানান তিনি।
আলী রিয়াজ বলেন, “সব দল একভাবে সম্মতি না দিলেও জনগণের চূড়ান্ত মত নেওয়ার সময় এসব আপত্তির বিষয়গুলো স্পষ্টভাবে জানাতে হবে। জুলাই জাতীয় সনদে যে বিষয়গুলো আছে সেখানে যেহেতু কিছু ‘নোট অব ডিসেন্ট’ আছে, সেটাকে আমাদের বিবেচনায় নিতে হবে।
“সবগুলো বিষয় একভাবে বিবেচনা করা যাবে তা আমরা মনে করছি না। কারণ যেসব রাজনৈতিক দল ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়েছেন তারা তাদের অবস্থানের দিক থেকে দিয়েছেন, তাদের শুধুমাত্র দলীয় অবস্থান নয়, আমরা আশা করি যে তারা অন্যান্য বিবেচনা থেকেও দিয়েছেন।”
তিনি বলেন, ‘জনগণের সম্মতি নিশ্চিত করার সময় এসব ভিন্নমত যেন যথাযথভাবে জানানো হয়, সেটিই হবে গণভোটের মূল উদ্দেশ্য। আমাদের দেখতে হবে জনগণের যে সম্মতি, সে সম্মতির ক্ষেত্রে যেন তারা এটা জেনেশুনেই সম্মতি নিতে পারেন যে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কিছু দলের এ বিষয়ে আপত্তি আছে।’
কমিশন সব দলের মতামত ও আপত্তির পর্যালোচনার ভিত্তিতে চূড়ান্ত প্রস্তাব তৈরি করে সরকারকে তা সুপারিশ করতে চায় বলে জানান জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি।
তিনি বলেন, ‘আপনাদের পক্ষ থেকে যদি সুনির্দিষ্ট সুস্পষ্ট একটি জায়গায় একটি প্রস্তাব আসে, কমিশন সরকারকে সেটাই উপস্থাপন করবে এবং কমিশন চাইবে যে সেটাই বাস্তবায়িত হোক।’
জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোটের বিষয়ে ইতোমধ্যেই রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মৌলিক ঐকমত্য তৈরি হয়েছে এবং কমিশন এখন চূড়ান্ত কাঠামো নির্ধারণে কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের এই প্রচেষ্টায় অনেকদূর অগ্রগতি হয়েছে এই অর্থে যে গণভোটের ক্ষেত্রে আমরা সকলেই একমত জায়গায় আসতে পেরেছি।’
অধ্যাপক রীয়াজ বলেন, ‘১০ অক্টোবরের মধ্যে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবগুলো আমরা সরকারের কাছে দিতে চাই। আমরা আগামী ১৫-১৬ অক্টোবরের মধ্যে সইয়ের আয়োজনটা শেষ করতে চাই।
বৈঠকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি বাংলাদেশ (এলডিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন— বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
৫৭ দিন আগে
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের মূল দায়িত্ব রাজনৈতিক নেতাদের: আলী রীয়াজ
জুলাই সনদের বাস্তবায়নের মূল দায়িত্ব রাজনৈতিক নেতাদের বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের (এনসিসি) সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এনসিসি ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় পর্বের সংলাপের ২৩তম দিনের শুরুতে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আলী রীয়াজ বলেন, ‘বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে প্রধান এবং মৌলিক দায়িত্বটা রাজনৈতিক নেতাদের। আমরা বিশ্বাস করি, যেসব বিষয়ে আপনারা একমত হয়েছেন, সেগুলো বাস্তবায়নের পথ আপনারা তৈরি করতে পারবেন। সেখানে কমিশন আনুষ্ঠানিক এবং অনানুষ্ঠানিকভাবে অনুঘটকের কাজ করবে।’
তিনি আরও বলেন, প্রয়োজনে সনদের বাস্তবায়ন কাঠামো নির্ধারণে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আবারও বসবে এনসিসি।
আলী রীয়াজ জানান,প্রথম পর্বের সংলাপে বেশ কিছু বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছানো হয়েছে এবং সে অনুযায়ী রাজনৈতিক দলগুলোকে সম্মত বিষয়গুলোর একটি তালিকা দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: ‘রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা’ নিয়ে সংস্কার সংলাপ চলছে
আজ (বৃহস্পতিবার) দ্বিতীয় পর্বের সংলাপ শেষ হবে উল্লেখ করে অধ্যাপক রীয়াজ বলেন, ‘আজকের আলোচনায় অনেকগুলো বিষয় আছে, যেগুলো মূলত সিদ্ধান্তের বিষয়। বিশেষ করে যে দায়িত্বগুলো আপনারা আমাদের ওপর অর্পণ করেছেন, তার মধ্যে যেগুলোতে সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত হয়েছে- সেগুলো আমরা আপনাদের অবহিত করব। এছাড়া কিছু অনালোচিত বিষয় রয়েছে, যেগুলোর ব্যাপারে আমরা ফ্লোর থেকে সিদ্ধান্ত নিতে চাই।’
আজকের আলোচনার বিষয় সরকারি কর্ম কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক এবং ন্যায়পাল বিধান নিয়োগ প্রক্রিয়াসহ আগের আলোচিত বিষয়গুলো।
কমিশনের বৈঠকে বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, এলডিপি, গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও আমার বাংলাদেশ পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশ নিয়েছেন।
আলী রীয়াজ বলেন, ‘আমরা যে অগ্রগতি অর্জন করেছি, তা হচ্ছে প্রায় ১৩টি বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কোথাও কোথাও নোট অব ডিসেন্টের সুযোগ ছিল এবং তা এখনো আছে। আজকের আলোচনায়ও কোনো ভিন্নমত থাকলে, তা রেজিস্টার করার সুযোগ থাকবে।’
কমিশনের সহসভাপতি বলেন, ‘সনদের টেক্সট নিয়ে ইতোমধ্যে আপনাদের পরিবর্তন, সংশোধন বিষয়ক মতামতগুলো আমরা পেয়েছি এবং তা প্রতিফলনের ভিত্তিতে চূড়ান্ত টেক্সট তৈরি করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আজকের মধ্যেই নিষ্পত্তির জায়গায় পৌঁছাতে চাই। আজকের আলোচনার পরেই আমরা চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করে আপনাদের জানাব এবং আশা করি, সবাই তাতে স্বাক্ষর করবেন। এটাই আমাদের আজকের উদ্দেশ্য, আর সেই উদ্দেশ্য পূরণেই আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
গত ২ জুন দ্বিতীয় দফা সংলাপের উদ্বোধন করেন কমিশনের চেয়ারম্যান প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
আরও পড়ুন: ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা থেকে বিএনপির ওয়াকআউট
২০২৫ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার ইস্যুগুলোতে একটি সমন্বিত জাতীয় অবস্থান গঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এর আগে ২০ মার্চ থেকে ১৯ মে পর্যন্ত প্রথম দফার সংলাপে রাজনৈতিক দল ও জোটগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে কমিশন।
১২৬ দিন আগে
সংস্কার ইস্যুতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত বৃহস্পতিবার: আলী রীয়াজ
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন (এনসিসি) দেশের গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সংস্কার ইস্যুগুলোতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের দিকে এগোচ্ছে। আগামী বৃহস্পতিবারের (৩১ জুলাই) মধ্যে এসব সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক দলগুলোকে জানানো হবে বলে জানিয়েছেন কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
বুধবার (৩০ জুলাই) রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের সংলাপ শেষে তিনি এ কথা বলেন।
আলী রীয়াজ বলেন, ‘আপনারা আমাদের যে দায়িত্ব দিয়েছেন, তার মধ্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ একটি বড় দায়িত্ব। আমরা যত দ্রুত সম্ভব এটি চূড়ান্ত করার চেষ্টা করছি। আশা করছি, আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) রাজনৈতিক দলগুলোকে সিদ্ধান্তগুলো জানাতে পারব।’
এই পর্যায়ের আলোচনায় রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ও দায়িত্ব, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পদ্ধতি, উচ্চকক্ষ গঠন ও তার সদস্যদের নির্বাচনের প্রক্রিয়া, সংসদে নারীর প্রতিনিধিত্ব, নাগরিকদের মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ, রাষ্ট্রের মূলনীতি এবং পাবলিক সার্ভিস কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিরীক্ষা দপ্তর এবং তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
আলী রীয়াজ বলেন, ‘সাংসদ হিসেবে নারীর প্রতিনিধিত্ব নিয়ে ভালো অগ্রগতি হয়েছে। এ বিষয়ে একটি খসড়া প্রস্তাব আলোচনায় অংশগ্রহণকারী দলগুলোর কাছে তুলে ধরা হয়েছে।’
পড়ুন: অন্তর্বর্তী সরকারকে ভুল পদক্ষেপ, গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্তের বিষয়ে সতর্ক করলেন তারেক
তিনি জানান, মৌলিক অধিকার সম্প্রসারণ সংক্রান্ত আলাদা একটি প্রস্তাবও রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে তুলে ধরা হয়েছে। এ নিয়ে সকল দল মৌলিকভাবে একমত হলেও সংবিধানে এটি কীভাবে প্রতিফলিত হবে—তা নিয়ে ভিন্নমত রয়েছে।
আলী রীয়াজ বলেন, ‘আজকের মধ্যে আমরা যেসব বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছি, তার একটি তালিকা দলগুলোকে দেব। আশা করছি, আগামীকাল একটি সমন্বিত এবং গ্রহণযোগ্য খসড়া সনদ সবার সামনে উপস্থাপন করতে পারব।
১২৭ দিন আগে
ঐকমত্য কমিশনের আলোচনা থেকে বিএনপির ওয়াকআউট
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত সরকারি কর্মকমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, মহাহিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রণ এবং ন্যায়পাল নিয়োগ প্রক্রিয়ার আলোচনায় অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানিয়েছে বিএনপি।
সোমবার (২৮ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ২০তম দিনের আলোচনার শুরুতে ওয়াকআউটের সিদ্ধান্ত জানায় দলটি।
বেলা সাড়ে ১১টার পরে বিষয়টি আলোচনার জন্য উপস্থাপন করেন কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দীন আহমেদ জানান, তাদের দল এ আলোচনায় অংশ নেবে না।
আরও পড়ুন: ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে সংলাপ শেষ করতে চায় কমিশন: আলী রীয়াজ
এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা উপস্থিত থাকবেন কিন্তু আলোচনায় অংশ নেবেন না। একটি রাজনৈতিক দল আলোচনায় অংশ না নিলে পুরো সংলাপ বন্ধ করা সম্ভব নয়।
অবশ্য কিছু সময় পর বিএনপি আবার আলোচনায় যোগ দেয়।
তবে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, একটি বড় দল আলোচনায় অংশ না নিলে ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব নয়। আলোচনায় অগ্রসর হওয়া সম্ভব নয়।
১২৯ দিন আগে
ঐকমত্য কমিশনের সংলাপ শুরু, আলোচনায় পুলিশ কমিশন গঠনের প্রস্তাব
দ্বিতীয় ধাপে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের ১৯তম দিনের বৈঠক চলছে। এতে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার প্রস্তাব হিসেবে পুলিশ কমিশন গঠন আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে।
রবিবার (২৭ জুলাই) বেলা ১১টা ১০ মিনিটে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে আলোচনা শুরু হয়।
সংলাপের এই পর্বে আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচনায় এসেছে। সেগুলো হলো: রাষ্ট্রের মৌলিক নীতিমালা এবং নাগরিকদের মৌলিক অধিকার প্রসার।
পুলিশ কমিশন গঠনের প্রস্তাবটি প্রথম দফার ১৬৬টি সংস্কার ইস্যুর মধ্যে ছিল না। তবে পেশাদারত্ব ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে নতুন করে এটি তোলা হয়েছে।
দ্বিতীয় দফা সংলাপে অংশ নিচ্ছে প্রায় ৩০টি রাজনৈতিক দল, যারা বিভিন্ন সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরছে।
চলমান এই সংলাপে ২০টি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার ইস্যুতে আলোচনা শেষে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে একটি ঐক্যবদ্ধ অবস্থান চূড়ান্ত করতে চায় কমিশন।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান কেউ একসঙ্গে থাকতে পারবে না: ঐকমত্য কমিশন
গত ২ জুন দ্বিতীয় দফা সংলাপের উদ্বোধন করেন কমিশনের চেয়ারম্যান প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
২০২৫ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনকে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার ইস্যুগুলোতে একটি সমন্বিত জাতীয় অবস্থান গঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়।
এর আগে ২০ মার্চ থেকে ১৯ মে পর্যন্ত প্রথম দফার সংলাপে রাজনৈতিক দল ও জোটগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে কমিশন।
১৩১ দিন আগে
মূল সংস্কার ইস্যুতে ঐকমত্যে পৌঁছাতে হিমশিম খাচ্ছে কমিশন
নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান নিয়োগ, জাতীয় সংসদে উচ্চকক্ষ গঠন এবং নারীদের জন্য ১০০টি সংরক্ষিত আসনে নির্বাচন পদ্ধতি— এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার ইস্যুতে একমত হতে পারছে না জাতীয় ঐক্য কমিশন।
এই তিনটি বিষয়ে, বিশেষ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান নির্বাচনের প্রক্রিয়া নিয়ে বিএনপি ও জামায়াত প্রায় অভিন্ন প্রস্তাব দিলেও জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) কয়েকটি দলের ভিন্নমতের কারণে এ বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি কমিশন।
৩১ জুলাইয়ের মধ্যে ১৯টি মূল সাংবিধানিক সংস্কার বিষয়ে রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে তুলে একটি জাতীয় সনদ (রিফর্ম চার্টার) চূড়ান্ত করতে চায় কমিশন। কিন্তু দ্বিতীয় দফা সংলাপ এগোচ্ছে ধীরগতিতে। ওই তিনটি বিষয়ে দলগুলোর মতপার্থক্যই এর বড় কারণ।
অচলাবস্থা কাটাতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ও সংসদের উচ্চকক্ষের কাঠামো নিয়ে একাধিক সংশোধিত প্রস্তাব দিয়েছে কমিশন।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার
এর আগে, রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচন তত্ত্বাবধানের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা পুনর্প্রতিষ্ঠা এবং এর মেয়াদসহ অন্যান্য বিষয়ে একমত হলেও তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান নিয়োগের প্রক্রিয়ায় ভিন্নমত দেখা দেয়।
বিএনপি প্রথমে পাঁচটি বিকল্প প্রস্তাব দিয়েছিল। জামায়াত দিয়েছিল তিনটি। তবে সম্প্রতি তারা সংশোধিত প্রস্তাব দিয়েছে যাতে মূল পার্থক্য খুব একটা নেই।
আরও পড়ুন: বিমান দুর্ঘটনায় ঐকমত্য কমিশনের শোক প্রস্তাবে স্বাক্ষর করেছে ৩০টি রাজনৈতিক দল
গত সোমবার কমিশনে জমা দেওয়া সংশোধিত প্রস্তাবে চার সদস্যবিশিষ্ট একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠনের কথা বলেছে, যার সদস্য হবেন— প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেতা, জাতীয় সংসদের স্পিকার এবং ডেপুটি স্পিকার (বিরোধী দলীয়)। এই কমিটি ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দল থেকে পাঁচজন করে মোট ১০ জনের মধ্য থেকে আলোচনার মাধ্যমে একজনকে বাছাই করবে। মতৈক্য না হলে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী অনুযায়ী প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে। তবে রাষ্ট্রপতিকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধানের দায়িত্ব দেওয়ার ধারাটি বাদ রাখা হবে।
অন্যদিকে, জামায়াত তাদের চূড়ান্ত প্রস্তাবে পাঁচ সদস্যের অনুসন্ধান কমিটি চেয়েছে, যেখানে বিএনপি প্রস্তাবিত চারজনের সঙ্গে জাতীয় সংসদের তৃতীয় বৃহত্তম দলের একজন প্রতিনিধি থাকবেন।
তাদের প্রস্তাব, ক্ষমতাসীন ও প্রধান বিরোধী দল থেকে তিনজন করে, তৃতীয় বৃহত্তম দল থেকে দুইজন এবং অন্যান্য দল বা স্বতন্ত্ররা একজন করে প্রার্থী মনোনয়ন দেবেন। মতৈক্য না হলে তারাও রাষ্ট্রপতি ব্যতীত ত্রয়োদশ সংশোধনীর পদ্ধতি অনুসরণের প্রস্তাব দিয়েছে।
উভয় দলই মনে করে, অনুসন্ধান কমিটির সদস্যদের সম্মতির ওপর ভিত্তি করেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান নির্বাচন করা উচিত।
জামায়াতের পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট প্রস্তাবের প্রতি নমনীয়তা দেখিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, অনুসন্ধান কমিটিতে সংসদের তৃতীয় বৃহত্তম দলের প্রতিনিধি থাকলে সমস্যা নেই।
আরও পড়ুন: ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফায় পঞ্চদশ দিনের আলোচনা শুরু
তবে এনসিপিসহ কয়েকটি দল ত্রয়োদশ সংশোধনী অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির বিকল্প উপায় রাখার প্রস্তাবে আপত্তি জানিয়েছে। তারা তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান নিয়োগে র্যাংকড চয়েস ভোটিং পদ্ধতির পক্ষে মত দিয়েছে, যাতে রাজনৈতিক সমঝোতার ভিত্তিতে নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেওয়া যায়।
এনসিপির প্রস্তাব ছিল— তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান নির্বাচন পদ্ধতিতে র্যাংকড চয়েস ভোটিং চালু করা হোক।
জামায়াতের নায়েবে আমির ড. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের মঙ্গলবার বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান নির্বাচন হবে সম্মতির ভিত্তিতে, সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে নয়। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যেন অবিশ্বাস তৈরি না হয়, সে জন্য আলোচনার মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য সমাধানে পৌঁছাতে হবে।’
ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব
জামায়াতের কাঠামোর অনুরূপ পাঁচ সদস্যের অনুসন্ধান কমিটির প্রস্তাব দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনও। তাদের প্রস্তাব অনুযায়ী প্রত্যেক রাজনৈতিক দল ও স্বতন্ত্র সংসদ সদস্যদের একজন করে উপযুক্ত প্রার্থীর নাম দিতে বলা হবে। এরপর যদি সম্মতিতে পৌঁছানো না যায়, তাহলে ক্ষমতাসীন ও প্রধান বিরোধী দল তিনজন করে, আর তৃতীয় বৃহত্তম দল দুইজনকে মনোনয়ন দেবে।
এই প্রক্রিয়ায় ক্ষমতাসীন দল বিরোধী দলের তালিকা থেকে একজন এবং তৃতীয় বৃহত্তম দলের তালিকা থেকে একজনকে বেছে নেবে। বিরোধী দলও তাই করবে। তৃতীয় বৃহত্তম দল ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দল উভয়ের তালিকা থেকে একজন করে বেছে নেবে। যদি এসব প্রার্থীর মধ্যে কারো ওপর ঐকমত্য হয়, তবে তাকেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারপ্রধান হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে; অন্যথায় র্যাংকড চয়েস ভোটিং পদ্ধতি ব্যবহার করা হবে।
আরও পড়ুন: জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফায় দ্বাদশ দিনের আলোচনা শুরু
র্যাংকড চয়েস ভোটিং এমন একটি নির্বাচন পদ্ধতি, যেখানে ভোটাররা একাধিক প্রার্থীকে তাদের পছন্দের ক্রমানুসারে (প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ইত্যাদি) ভোট দেন।
গত মঙ্গলবার প্রেস ব্রিফিংয়ে এনসিসির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘অনেক দলই বিচার বিভাগের সদস্যদের (বিশেষ করে অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতিদের) অন্তর্ভুক্তির বিপক্ষে। এর পরিবর্তে আবার অনেকে র্যাংকড চয়েস ভোটিংও চায়। সেই সঙ্গে ত্রয়োদশ সংশোধনীর পদ্ধতি ফিরিয়ে আনার বিরোধিতাও আছে।’
তিনি বলেন, ‘আসলে আমরা কিছুটা অচলাবস্থায় আছি— অনুসন্ধান কমিটি সিদ্ধান্ত কীভাবে নেবে, অচলাবস্থা কীভাবে কাটাবে তা নিয়ে। আমরা দলগুলোকে তাদের অবস্থান পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানিয়েছি।’
উচ্চকক্ষ গঠন ও সংরক্ষিত নারী আসন
বিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ প্রায় সব রাজনৈতিক দল দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠনের পক্ষে মত দিয়েছে, যেখানে উচ্চকক্ষে ১০০টি এবং নিম্নকক্ষে ৪০০টি আসন থাকবে। পাশাপাশি, সংরক্ষিত নারী আসন ৫০ থেকে বাড়িয়ে ১০০ করার প্রস্তাবও প্রায় সর্বসম্মতভাবে গৃহীত হয়েছে।
তবে নির্বাচন পদ্ধতি নিয়ে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে মতপার্থক্য রয়ে গেছে।
জামায়াত প্রস্তাব করেছে, উচ্চকক্ষ এবং সংরক্ষিত নারী আসন উভয় ক্ষেত্রেই ভোটের আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে নির্বাচন হোক। অন্যদিকে বিএনপি চায়, এই নির্বাচন নিম্নকক্ষের সদস্যসংখ্যা অনুযায়ী আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের ভিত্তিতে হোক।
১৩২ দিন আগে
প্রধানমন্ত্রী ও দলীয় প্রধান কেউ একসঙ্গে থাকতে পারবে না: ঐকমত্য কমিশন
দলীয় প্রধান প্রধানমন্ত্রীর পদে থাকতে পারবেন না বলে রাজনৈতিক দলগুলোকে জানিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। তবে এ সিদ্ধান্তের ওপর জাতীয় সনদে কোনো দল চাইলে নোট অব ডিসেন্ট দিতে পারবে।
মঙ্গলবার (২২ জুলাই) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর ১৭তম দিনের আলোচনার শুরুতে এ কথা জানান কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী পদে দলীয় প্রধান থাকতে পারবেন না বলে অধিকাংশ দল একমত হয়েছে। কিছু দল এ বিষয়ে ভিন্নমত ব্যক্ত করেছেন, তাদের নোট অব ডিসেন্ট দেওয়ার সুযোগ রাখা হবে।’
বিএনপি, এলডিপি, লেবার পার্টি ও এনডিএমসহ বেশ কয়েকটি দল রাজনৈতিক দলীয় প্রধানকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রাখতে চায়। অন্যদিকে, অধ্যাপক আলী রীয়াজের মন্তব্যে সমর্থন দিয়েছে জামায়াত ও জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) বেশ কয়েকটি দল।
আরও পড়ুন: বিমান দুর্ঘটনায় ঐকমত্য কমিশনের শোক প্রস্তাবে স্বাক্ষর করেছে ৩০টি রাজনৈতিক দল
আলী রীয়াজ বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের অনুরোধ যারা নোট অব ডিসেন্ট দিতে উৎসাহী, যদি আপনারা প্রয়োজন মনে করেন সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করতে পারেন। এটা আমাদের অনুরোধ। কিন্তু আমরা অতীত যেভাবে নোট অব ডিসেন্টের কথা বলা আছে, সেভাবে জাতীয় সনদে তারা নোট অব ডিসেন্ট দিতে পারবে। এটা সিদ্ধান্ত হিসেবে আপনাদের জানালাম।
মঙ্গলবারের আলোচ্য সূচি ছিল— প্রধানমন্ত্রীর একাধিক পদে থাকার বিধান (সিদ্ধান্ত গ্রহণ), তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিষয়ে বিষয়ে রাজনৈতিক দলের প্রস্তাবের ভিত্তিতে একটি সমন্বিত প্রস্তাব—সর্বশেষ আলোচনার পর সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং নির্বাচন কমিশন, সরকারি কর্মকমিশন, মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক, দুর্নীতি দমন কমিশন এবং ন্যায়পাল নিয়োগের বিধান সম্পর্কিত।
১৩৫ দিন আগে
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের পদ্ধতি নিয়ে অধিকাংশ দল একমত: আলী রীয়াজ
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ১৫তম দিনের আলোচনার প্রথমার্ধে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করেছে ঐকমত্য কমিশন। আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন দলের মতামতের আলোকে কমিশন সভা করে দলগুলোর কাছে ফের একটি সংশোধিত সমন্বিত প্রস্তাব প্রদান করেছে।
তিনি বলেন, প্রস্তাবটিতে বিস্তারিতভাবে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিয়োগের পদ্ধতি উল্লেখ করা হয়েছে এবং এই প্রস্তাবের অধিকাংশ বিষয়ে দলগুলো একমত হয়েছে। খসড়া প্রস্তাবটির ভাষাগত ও খুঁটিনাটি দিক পর্যালোচনা করে রাজনৈতিক দলগুলোর আগামীকালের মতামতের ভিত্তিতে মঙ্গলবার এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবে কমিশন।
রবিবার (২০ জুলাই) ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের ১৫তম দিনের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
এ সময় কমিশনের সদস্য হিসেবে বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।
সকালে একাডেমি সম্মুখে ৩ দফা দাবিতে মানববন্ধনকারী জুলাই অভ্যুত্থানে আহত ও শহিদ পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও সহানুভূতি প্রকাশ করে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘এই মানববন্ধন কর্মসূচির সঙ্গে আমরা আন্তরিক সংহতি প্রকাশ করছি।’
পড়ুন: গোপালগঞ্জে পরিস্থিতির কারণে গুলি করা হয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
একটি জাতীয় সনদ তৈরির লক্ষ্যে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে কাজ শুরু করেছে ঐকমত্য কমিশন। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার মধ্য দিয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এবং বাকি দিনগুলোর আলোচনায়ও আরও কিছু মৌলিক বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হবে।
তিনি জানান, এই প্রক্রিয়া চলমান থাকলে আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে জাতীয় সনদ তৈরি করা সম্ভব হবে।
উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠা নিয়ে কোনো ভিন্নমত নেই উল্লেখ করে কমিশনের সহ-সভাপতি বলেন, উচ্চকক্ষ কীভাবে হবে, তা নিয়ে দুটি ভিন্ন প্রস্তাব রয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো এ বিষয়ে কমিশনের কাছে দায়িত্ব অর্পণের মতামত দিয়েছে।
কমিশন ইতোমধ্যে উচ্চকক্ষ বিষয়ে বৈঠক করেছে। কী ধরনের উচ্চকক্ষ হবে, সে বিষয়ে কমিশন আরেকটু সময় নিয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে পারবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আজকের আলোচনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি-সহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।
১৩৭ দিন আগে
ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফায় পঞ্চদশ দিনের আলোচনা শুরু
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ও প্রধানমন্ত্রীর একাধিক পদে থাকার মতো বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক ইস্যুতে আলোচনা চালিয়ে নিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় দফার সংলাপের পঞ্চদশ দিনের আলোচনায় বসেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
রবিবার (২০ জুলাই) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বেলা ১১টা ২০ মিনিটের দিকে এ আলোচনা শুরু হয়। এতে সভাপতিত্ব করছেন কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ।
কমিশন সূত্রে জানা যায়, আজকের সংলাপে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ও প্রধানমন্ত্রীর একাধিক পদে থাকার মতো বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সাংবিধানিক ইস্যুতে আলোচনার জন্য তালিকাভুক্ত রয়েছে।
সংলাপে অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) প্রায় ৩০টি রাজনৈতিক দল। প্রতিটি দলই প্রস্তাবিত সংস্কারের ওপর তাদের নিজ নিজ অবস্থান তুলে ধরছে।
দ্বিতীয় দফা সংলাপে প্রায় ২০টি প্রধান সাংবিধানিক বিষয়ের আলোচনা শেষে আগামী ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে একটি ঐক্যবদ্ধ সংস্কার প্রস্তাব চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে কাজ করছে কমিশন।
আরও পড়ুন: কী পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ গঠন হবে সে ব্যাপারে ঐকমত্য হওয়া যাচ্ছে না: আলী রীয়াজ
গত ২ জুন দ্বিতীয় দফা সংলাপের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা ও কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনুস।
২০২৫ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি অধ্যাপক ইউনুসের নেতৃত্বে গঠিত এ কমিশনের দায়িত্ব ছিল রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার ইস্যুতে একটি একক জাতীয় অবস্থান গড়ে তোলা।
এর আগে, ২০ মার্চ শুরু হওয়া প্রথম দফা সংলাপে ৩৩টি রাজনৈতিক দল ও জোটের সঙ্গে আলোচনা করে ১৯ মে তা শেষ করে কমিশন।
১৩৮ দিন আগে
ভবিষ্যতে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পরিবর্তন চাইলে গণভোট লাগবে: আলী রীয়াজ
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, বিদ্যমান সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার অন্তর্ভুক্তির পর ভবিষ্যতে এই ব্যবস্থা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে গণভোটের প্রয়োজন হবে।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বিতীয় পর্যায়ের ১৪তম দিনের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফকালে এসব কথা বলেন তিনি। এ সময় কমিশনের সদস্য হিসেবে বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।
কমিশনের সহসভাপতি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে কোনো মতভেদ নেই বলে এর পরিবর্তনে গণভোটের কথা বলা হয়েছে।
আগামী সপ্তাহে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান নিয়োগের বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার আশা প্রকাশ করেন তিনি।
আলোচনায় সংবিধান সংশোধনের বিষয়ে কিছু সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া গেছে বলে উল্লেখ করে কমিশনের সহসভাপতি বলেন, যদি উচ্চকক্ষ গঠিত না হয় বা উচ্চকক্ষ হওয়া পর্যন্ত সংবিধানের সংশোধনের জন্য সংসদের দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের সমর্থনের প্রয়োজন হবে৷ তবে সুনির্দিষ্ট কিছু অনুচ্ছেদ—যেমন: প্রস্তাবনা, রাষ্ট্রের মূলনীতি, অনুচ্ছেদ ৪৮, ৫৬, ১৪২ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা সংক্রান্ত ৫৮খ, ৫৮গ, ৫৮ঘ ও ৫৮ঙ সংবিধানে যুক্ত হলে তা সংশোধনের ক্ষেত্রে গণভোটের প্রয়োজন হবে।
পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক চ্যালেঞ্জে সরকারের পাশে থাকার ঘোষণা বিএনপির
সংখ্যাগরিষ্ঠ দল ও জোট দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ প্রতিষ্ঠার পক্ষে মত দিয়েছে বলে মন্তব্য করেন অধ্যাপক আলী রীয়াজ।
তিনি বলেন, প্রথম পর্যায়ের আলোচনাতেও সংখ্যাগরিষ্ঠ দল এ মত প্রকাশ করেছে। তবে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠন প্রক্রিয়া সম্পর্কে আজও ঐকমত্য হয়নি। কোনো কোনো রাজনৈতিক দল বলছে, ভোটের সংখ্যানুপাতে যেন উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠা করা হয়; অন্যদিকে আসনের সংখ্যানুপাতেও উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, যেহেতু রাজনৈতিক দল ও জোটগুলো এ বিষয়ে একাধিক আলোচনার পরও ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি, সেহেতু দল ও জোটগুলোর পক্ষ থেকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের দায়িত্ব কমিশনের ওপর অর্পণ করা হয়েছে। ঐকমত্য কমিশন নিজেদের মধ্যে এবং পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলোচনার মাধ্যমে আগামী সপ্তাহে একটি অবস্থানে পৌঁছার আশা প্রকাশ করেন তিনি।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আজকের আলোচনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি-সহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।
১৪২ দিন আগে