ইনোভেশন ফর ওয়েলবিং ফাউন্ডেশন
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘হার্থ সামিট বাংলাদেশ’ অনুষ্ঠিত
দেশব্যাপী মানসিক স্বাস্থ্য সেবা ও ওয়েলবিংকে মূল ধারায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে ‘হার্থ সামিট বাংলাদেশের’ (ঢাকা পর্ব) আয়োজন করেছে ইনোভেশন ফর ওয়েলবিং ফাউন্ডেশন।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে ফ্রান্সভিত্তিক ওয়েলবিং-বিষয়ক প্রতিষ্ঠান দ্য ওয়েলবিং প্রজেক্টের গ্লোবাল কোলাবোরেশনে ‘ভালো থাকি, প্রস্ফুটিত হই, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে’ এই স্লোগানে সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়।
ব্রিটিশ কাউন্সিলের সহযোগিতায় ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব এডুকেশনাল ডেভেলপমেন্ট, হিরোজ ফর অল এবং টিচ ফর বাংলাদেশের যৌথ আয়োজনে এই সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়।
বিভিন্ন বয়সের মানুষকে ওয়েলবিং (ভালো থাকা), সহনশীলতা ও ব্যক্তিগত সমৃদ্ধির মতো বিষয়গুলোতে উদ্বুদ্ধ করতে সম্মেলনে ৪০০-র বেশি তরুণ, শিক্ষক, অভিভাবক, মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ও ওয়েলনেস পেশাজীবী এই সম্মেলনে যোগ দেন।
আরও পড়ুন: বুলবুল হাসানের বায়োফিকশন অন্তহীন বিতর্কযাত্রার প্রকাশনা উৎসব অনুষ্ঠিত
এ উদ্যোগের মাধ্যমে ইনোভেশন ফর ওয়েলবিং ফাউন্ডেশন পরোক্ষভাবে ৫ হাজারের বেশি তরুণ, শিক্ষক, অভিভাবক ও সোশ্যাল চেঞ্জমেকারদের কাছে পৌঁছানোর পরিকল্পনা নিয়েছে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে সংস্থাটি।
সম্মেলনে অনুপ্রেরণামূলক আলোচনা, অংশগ্রহণমূলক কর্মশালা ও ভিন্নধর্মী শিল্প অভিজ্ঞতার মাধ্যমে অংশগ্রহণকারীরা মানসিক স্বাস্থ্য ও ভালো থাকা নিয়ে গভীর উপলব্ধির সুযোগ পেয়েছেন।
বিভিন্ন প্রজন্মকে নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যসেবার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা এবং সামগ্রিকভাবে ভালো থাকার লক্ষ্যে এই আয়োজন একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
সম্মেলনের প্রধান অতিথি ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর স্টিফেন ফোর্বস বলেন, ‘ঢাকায় অনুষ্ঠিত হার্থ সামিট বাংলাদেশে অংশ নিতে পেরে আমি আনন্দিত, যা ভালো থাকার উদ্যোগকে প্রাধান্য দেয়।’
তিনি বলেন, ‘আধুনিক জীবনের প্রভাব, বিশেষত তরুণ ও শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য ও ওয়েলবিং নিয়ে উদ্বেগ ক্রমশ বাড়ছে। শিক্ষা থেকে পেশাগত জীবনে প্রবেশের মুহূর্তে তারা নানা মানসিক ও আবেগগত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়।’
মানসিক স্বাস্থ্য ও ওয়েলবিং চর্চাকে এগিয়ে নেওয়ার এই গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ গ্রহণের জন্য ইনোভেশন ফর ওয়েলবিং ফাউন্ডেশন ও ব্র্যাক আইইডির প্রসংসা করেন তিনি।
সম্মেলনে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে কানাডা হাইকমিশনের পলিটিক্যাল কাউন্সেলর মার্কাস ডেভিস।
আরও পড়ুন: সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য পরিবেশের সুরক্ষা করতে হবে: পরিবেশ উপদেষ্টা
তিনি বলেন, ‘কানাডা ফান্ড ফর লোকাল ইনিশিয়েটিভসের সহায়তায় কানাডা হাইকমিশন, ব্র্যাক আইইডি ও হার্থ সামিট বাংলাদেশ একসঙ্গে এমন নিরাপদ জায়গা তৈরি করছে যেখানে শিক্ষার্থীরা তাদের মানসিক চাপ তুলে ধরে মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা পেতে পারে।’
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্র্যাক আইইডির মেন্টাল হেলথ টিমের প্রধান, সহকারী অধ্যাপক ড. তাবাসসুম আমিনা বলেন, ‘ব্রাক আইইডি হার্থ সামিট বাংলাদেশ ঢাকা পর্বের সহ-আয়োজক হিসেবে এই মূল্যবান আয়োজনের অংশীদার হতে পেরে অত্যন্ত আনন্দিত।’
তিনি জানান, ‘আমাদের লক্ষ্য হল সচেতনতা বৃদ্ধি করা, মানসিক স্বাস্থ্য সেবায় প্রবেশাধিকার সম্প্রসারণ করা এবং বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে মানসিক সুস্থতার চর্চাকে অগ্রাধিকার দিতে উদ্বুদ্ধ করা।’
আয়োজক প্রতিষ্ঠান ইনোভেশন ফর ওয়েলবিং ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক মনিরা রহমান বলেন, ‘হার্থ সামিট বাংলাদেশ আমাদের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন, যেখানে আমরা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মের বন্ধনকে শক্তিশালী করে মানসিক স্বাস্থ্য, সহনশীলতা ও ব্যক্তিগত সমৃদ্ধিকে উদ্বুদ্ধ করছি।’
‘ভালো থাকি, প্রস্ফুটিত হই, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে’ শীর্ষক উদ্বোধনী প্লেনারি আলোচনা পর্বে, মানসিক স্বাস্থ্য ও ওয়েলবিং একাডেমিক ও বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. হামিদা বেগম, অধ্যাপক কামাল চৌধুরী ও ড. তাবাসসুম আমিনা প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে সংযোগের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
প্রশ্নোত্তর পর্বে তরুণ শিক্ষার্থীরা অতীত অভিজ্ঞতা থেকে কিছু মানসিক আঘাতজনিত অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন এবং এ ধরনের ট্রমাটিক পরিস্থিতির সম্মুখীন হলে কীভাবে নিজেদের সহায়তা করতে পারেন, সে ব্যাপারে উপস্থিত প্যানেল আলোচকদের পরামর্শ নেন।
সম্মেলনে ওয়েলবিং-বিষয়ক কয়েকটি কর্মশালার আয়োজন করা হয়, যার মধ্যে একটি পরিচালনা করেন হিরোজ ফর অল-এর প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি ড. রেহনুমা করিম।
৩৭ দিন আগে