জয় বাংলা ক্লাব
সংবাদ প্রকাশের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সেই পদ ‘স্থগিত’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাভার উপজেলা আহ্বায়ক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক রাকিব মুসুল্লির বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের পর পদটি সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। যদিও রাকিব বলছেন, তদন্ত কমিটি গঠিত হলেও তার পদ বহালই আছে।
রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র আল মাসুদ সজীব স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। তবে আজ (মঙ্গলবার) তা প্রকাশ্যে আসে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সাভার উপজেলা আহবায়ক কমিটির ‘যুগ্ম আহ্বায়ক’ রাকিব মুসুল্লির ব্যাপারে সম্প্রতি কিছু অভিযোগ ওঠায় এই বিষয়টি নিয়ে আহ্বায়ক কমিটির সিদ্ধান্তে ৫ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হলো।
আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, সাভার উপজেলার আহ্বায়ক কমিটি সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত জানাবে।
তদন্ত প্রতিবেদন না পাওয়া পর্যন্ত রাকিব মুসুল্লির ‘যুগ্ন আহ্বায়ক পদটি অস্থায়ীভাবে (সাময়িক) স্থগিত করা হলো বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
রাকিব মুসল্লির বিরুদ্ধে ওঠা নানা অনিয়মের অভিযোগে রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) একটি সংবাদ প্রকাশ করে ইউএনবি। “‘জয় বাংলা ক্লাব’ সভাপতি এখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নেতা!” শিরোনামে ইউএনবির প্রকাশিত ওই সংবাদ ছাড়াও আরও কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে এ বিষয়ে খবর বেরোয়।
প্রকাশিত সংবাদের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি আলোচনার জন্ম দিলে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করে। এরপর রবিবারই সাময়িকভাবে তার পদ স্থগিত করে বিজ্ঞপ্তি দেয় সংগঠনটি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোইবাল ফোনে রাকিব মুসুল্লি বলেন, ‘আমি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে ছিলাম। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ও প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে ৫ সদস্যবিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, তবে পদ স্থগিত হয়নি। তিন দিনের মধ্যে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী সংগঠন যেকোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে।’
এই প্রতিবেদককে তিনি আরও বলেন, ‘বিজ্ঞপ্তির শেষের লাইনটি, যেখানে আমার পদ স্থগিতের কথা লেখা, সেটি পরবর্তীতে যুক্ত করা হয়েছে। এটি আসল নয়। তবে এভাবেও সংবাদ প্রকাশ করতে পারেন, প্যাড়া নাই।’
৪৭ দিন আগে
‘জয় বাংলা ক্লাব’ সভাপতি এখন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নেতা!
পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী অধ্যক্ষ মহিবুর রহমানের সহধর্মিণী ও কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ফাতেমা আক্তার রেখার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত রাকিব মুসুল্লির বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তিনি মহিপুর থানা শাখার ‘জয় বাংলা ক্লাবের’ সভাপতি হিসেবে দখলদারিত্ব, চাঁদাবাজি ও কাউন্টার দখলসহ বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে আসছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
রাকিব মুসুল্লি ছাত্রলীগের ছত্রছায়ায় ‘ফেয়ার মাইন্ড সমাজসেবা সংগঠন’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন গড়ে তুলেছিলেন, যা মূলত চাঁদাবাজির কাজে ব্যবহৃত হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষকে জোরপূর্বক এই সংগঠনের নামে অর্থ দিতে বাধ্য করা হতো। টাকা দিতে অস্বীকার করলেই বিভিন্নভাবে তাদের হয়রানির শিকার হতে হতো।
দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের অনেক নেতাকর্মীর মতো তিনিও এলাকা ছাড়তে বাধ্য হন। ৫ আগস্টের পর তিনি আত্মগোপনে চলে যান এবং পরে ঢাকার সাভারে আশ্রয় নেন।
সাভারে গিয়ে রাকিব মুসুল্লি ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলেন এবং আশ্চর্যজনকভাবে সংগঠনটির সাভার উপজেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক পদে জায়গা করে নেন।
এই ঘটনায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। তারা প্রশ্ন তুলছেন—‘দখলদারিত্ব, চাঁদাবাজি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে অভিযুক্ত একজন ব্যক্তি কীভাবে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্বস্থানীয় পদ পেতে পারেন?’
এই ঘটনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই এটিকে সংগঠনের বড় ধরনের ব্যর্থতা এবং আদর্শবিরোধী বলে উল্লেখ করছেন।
আরও পড়ুন: বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন-সংশ্লিষ্ট মামলায় গুরুত্ব দিতে ডিএমপি কমিশনারের নির্দেশ
৪৯ দিন আগে