আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি
অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ক্ষতে প্রলেপ দিয়ে ফাইনালে ভারত
২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে শিরোপা হাতছাড়া হওয়ার দুঃস্বপ্ন এখনও তাড়া করে বেড়ায় ভারতীয় ক্রিকেটের সমর্থকদের। তবে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে বিদায় করে ফাইনালে উঠে এতদিন পর সেই ক্ষতে প্রলেপ দিয়েছে রোহিত শর্মার দল।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রথম সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে চার উইকেটে হারিয়ে ফাইনালে উঠেছে ভারত।
এদিন টস জিতে শুরুতে ব্যাটিং করে ইনিংসের তিন বল বাকি থাকতেই ২৬৪ রান তুলে গুটিয়ে যায় অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস। ৯৬ বলে ৭৩ রান করে দলটির সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ। এছাড়া মিডল অর্ডারে নামা উইকেটরক্ষক-ব্যাটার অ্যালেক্স ক্যারি করেন ৬১ রান।
ভারতের হয়ে দশ ওভারে মাত্র ৪৮ রান দিয়ে তিন উইকেট তুলে নেন মোহাম্মদ শামি। এছাড়া দুই স্পিনার বরুণ চক্রবর্তী ও রবীন্দ্র জাদেজা নেন দুটি করে উইকেট।
২৬৫ রানের জবাবে খেলতে নেমে প্রথম পাওয়ার প্লের মধ্যে দুই ওপেনারকে হারালেও ১১ বল বাকি থাকতেই জয়ের বন্দরে পৌঁছায় ভারত।
তিনে ব্যাট করতে নামা বিরাট কোহলিই এদিন ভারতের জয়ের ভীত গড়ে দেন। ৯৮ বলে ৮৪ রান করার পথে শ্রেয়াস আইয়ার (৪৫), অক্ষর প্যাটেল (২৭) ও লোকেশ রাহুলের (৪২*) সঙ্গে গড়েন যথাক্রমে ৯১, ৪৪ ও ৪৭ রানের জুটি।
পাঁচ উইকেট হাতে রেখেই যখন জয়ের সুবাতাস পেতে শুরু করেছে ভারত, ঠিক তখনই একেবারে শেষ মুহূর্তে গিয়ে আউট হন ২৪ বলে ২৮ রান করা হার্দিক পান্ডিয়া। পরে জাদেজাকে নিয়ে ভারতীয়দের জাহাজ জয়ের বন্দরে নোঙর করেন রাহুল।
এদিন নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পেলেও কার্যকর সময়ে ভারতীয় ব্যাটারদের প্যাভিলিয়নে ফেরাতে ব্যর্থ হয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার বোলাররা। ফলে দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুর দিকেই কেবল ভারতকে রুখে দেওয়ার ইঙ্গিত দেয় দলটি। পরে সময় যত গড়িয়েছে, জয়ের পাল্লা ভারতের দিকেই তত ভারী হয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের মধ্যে নাথান এলিস ৪৯ রান খরচ করে এবং অ্যাডাম জ্যাম্পা ৬০ রানে দুটি করে উইকেট নিয়েছেন।
এর ফলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির এবারের আসরে মাত্র একটি ম্যাচ হেরেই বিদায় নিতে হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার। গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচটি জিতলেও বৃষ্টির কারণে পরের দুই ম্যাচ পণ্ড হয়। ফলে ওই এক ম্যাচ জিতেও অপরাজিত থেকে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে দুবারের শিরোপাধারীরা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
অস্ট্রেলিয়া: ২৬৪/১০ (৪৯.৩ ওভার) (স্মিথ ৭৩, ক্যারি ৬১, হেড ৩৯; শামি ৩/৪৮, জাদেজা ২/৪০, চক্রবর্তী ২/৪৯)।
ভারত: ২৬৭/৬ (৪৮.১ ওভার) (কোহলি ৮৪, আইয়ার ৪৫, রাহুল ৪২*; এলিস ২/৪৯, জ্যাম্পা ২/৬০)।
ফলাফল: ভারত চার উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: বিরাট কোহলি।
১৮ দিন আগে
কোহলির সেঞ্চুরি, পাকিস্তানকে বিপদে ঠেলে সেমির পথে ভারত
ম্যাচের ফল একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল আগেই। শেষ পর্যন্ত বিরাট কোহলি সেঞ্চুরি করতে পারেন কিনা, তা-ই দেখার বাকি ছিল। জয়ের জন্য যখন ২ রান দরকার, শতক হাঁকাতে কোহলির দরকার তখন ৪। তবে চার মেরেই সব হিসাব-নিকাশ মিলিয়ে দিলেন তিনি।
রবিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুবাইয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে টস জিতে শুরুতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন পাকিস্তান অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ান। এরপর ভারতীয় বোলারদের প্রতাপ সামলে ইনিংসের দুই বল বাকি থাকতেই ২৪১ রান তুলে গুটিয়ে যায় তাদের ইনিংস।
২৪২ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৬ উইকেট হাতে রেখে ২৪৪ রান করে জয়োল্লাস করে ভারত। ইনিংসের ৪৫ বল বাকি ছিল তাদের।
ভারতের এই জয়ে মূল কাজটি করেন তাদের বোলাররা। দীর্ঘ সময় উইকেট না পেলেও নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে পাকিস্তানের রানের গতি এমনভাবে তারা কমিয়ে দেন যে প্রথম ইনিংসে একেকটি বাউন্ডারি দেখতেই ৪০-৪৫ বলের মতো অপেক্ষা করতে হয়েছে দর্শকদের।
শেষের দিকে রানরেট বাড়াতে গিয়ে একের পর এক উইকেট বিলিয়ে শেষ পর্যন্ত অলআউট হওয়ার লজ্জাও বরণ করতে হয় তাদের।
অপরদিকে, ফিল্ডিং চলাকালে বোলারদের পাশাপাশি ভারতের ফিল্ডারদেরও খানিকটা কৃতিত্ব দিতে হয়। তাদের পরিশ্রমী মানসিকতার কারণেই অনেকগুলো এক পাকিস্তানি ব্যাটাররা দুইয়ে রূপ দিতে পারেননি, অনেকগুলো সম্ভাব্য চার আটকে গেছে তিনে। এরপর রান তাড়ায় নেমে নিজেদের স্বাভাবিক খেলাই উপহার দিয়েছেন ভারতীয় ব্যাটাররা।
অবশ্য শুরুর দিকে (পঞ্চম ওভারের শেষ বলে) রোহিত শর্মাকে ফিরিয়ে দিয়ে লড়াইয়ের ইঙ্গিত দিলেও সময় যত গড়িয়েছে, জয়ের পাল্লা ততই ভারতের পক্ষে ভারী হয়েছে।
৩১ রানে প্রথম উইকেট পতনের পর পাকিস্তান দ্বিতীয় উইকেটের দেখা পায় ১০০ রানের মাথায়। ৫২ বলে ৪৬ রান করা শুভমান গিল এদিন অল্পের জন্য হাফ সেঞ্চুরি বঞ্চিত হলেও কোহলির সঙ্গে দারুণ একটি জুটি গড়ে জয়ের ভিত গড়ে দিয়ে যান। এরপর শ্রেয়াস আইয়ারের সঙ্গে কোহলির ১১৪ রানের জুটিটি পাকিস্তানকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয়।
৬৭ বলে ৫৬ রান করে শ্রেয়াস ফেরার অল্প সময় পর হার্দিক পান্ডিয়াও আউট হলে ভারতের তখন প্রয়োজন ৬০ বলে মাত্র ১৯ রান। এরপর শেষ মুহূর্তে সেঞ্চুরির মাধ্যমে দলকে জেতানোর পথে অনন্য এক কীর্তি গড়েন কোহলি।
২৭ দিন আগে