রাতে নিরাপদে ভ্রমণে কিছু সতর্কতা
রাতে বাসে বা গণপরিবহনে নিরাপদে ভ্রমণে কিছু সতর্কতা
সন্ধ্যার পর নিকটস্থ বা দূরপাল্লার গন্তব্যে যাতায়াতের জন্য আপনি বাস বা গণপরিবহন ব্যবহার করেন? রাতে বাস বা গণপরিবহনে ভ্রমণের সময় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত।
সান্ধ্য বা নৈশ ভ্রমণে যানবাহনে করণীয়-বর্জনীয়
.
পরিকল্পিতভাবে ভ্রমণ করুন
পরিকল্পিতভাবে ভ্রমণ করলে যাত্রা আরামদায়ক ও নিরাপদ হয়। যদি বাস বা ট্রেনের টিকিট বুকিং করার সুযোগ থাকে, তাহলে মাঝামাঝি আসন নিন। রাতের বেলায় ভ্রমণের ক্ষেত্রে জানালার পাশে বা বাসের খুব পেছনের আসন এড়িয়ে চলাই ভালো।
যদি সম্ভব হয়, পরিচিত কাউকে আপনার যাত্রার তথ্য (গন্তব্য, সম্ভাব্য পৌঁছানোর সময়) জানিয়ে রাখুন।
আরো পড়ুন: বাসা-বাড়িতে ডাকাতি প্রতিরোধে করণীয়
নির্ভরযোগ্য যানবাহন ব্যবহার করুন
নির্দিষ্ট গন্তব্যে যাওয়ার জন্য নির্ভরযোগ্য বাস বা যানবাহন বেছে নিন। সরকারি বা স্বীকৃত পরিবহন সংস্থার যানবাহন ব্যবহার করুন। বাস বা গাড়ির রুট ও সময়সূচি সম্পর্কে আগেই জেনে নিন।
অ্যাপ-ভিত্তিক রাইড শেয়ারিং পরিষেবা (যেমন Uber, Pathao) ব্যবহার করলে গাড়ির তথ্য যাচাই করুন।
নিজের অবস্থান গোপন রাখুন
বর্তমান যুগে অনেকেই নিজের দৈনন্দিন কার্যকলাপ এবং ব্যক্তিগত তথ্য সোশ্যাল মিডিয়াতে প্রকাশ করে থাকেন। যারা সন্ধ্যার পর বা রাতে ভ্রমণ করেন তাদের জন্য এটি ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। অপরিচিতদের সঙ্গে ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করবেন না। যদি সম্ভব হয়, যাত্রাপথের লাইভ লোকেশন পরিবার বা বন্ধুকে শেয়ার করুন।
আরো পড়ুন: রমজানে রোজা রাখার প্রস্তুতি: দেহ ও মনকে সুস্থ রাখতে করণীয়
সতর্ক থাকুন ও চারপাশ পর্যবেক্ষণ করুন
অপরিচিত বা সন্দেহজনক ব্যক্তির সঙ্গে অতিরিক্ত কথা বলা বা ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার করা এড়িয়ে চলুন। ব্যস্ত থাকলেও মোবাইলে পুরোপুরি মনোযোগ দেবেন না, চারপাশের পরিস্থিতি লক্ষ্য রাখুন। সন্দেহজনক কিছু দেখলে বা অনুভব করলে বাসচালক বা সহযাত্রীদের জানান।
ভিড় এড়িয়ে চলুন
খুব বেশি ভিড় থাকলে বা সন্দেহজনক পরিস্থিতি দেখলে সেই যানবাহনে না ওঠাই ভালো। গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র যেমন মানিব্যাগ, ফোন বা ব্যাগ নিজের কাছেই রাখুন।
আত্মরক্ষায় প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সঙ্গে রাখুন
প্রয়োজনে আত্মরক্ষার জন্য ছোটখাটো সরঞ্জাম (যেমন: পেপার স্প্রে, হুইসল, ফোল্ডিং মেটাল সেফটি রড, ইত্যাদি ) সঙ্গে রাখতে পারেন। ফোনের ব্যাটারি ও মোবাইল ডাটা চালু রাখুন, যাতে প্রয়োজনে সাহায্য চাইতে পারেন।
আরো পড়ুন: পবিত্র ওমরাতে যাওয়ার পূর্বপ্রস্তুতি ও কিছু সাবধানতা
জরুরি নম্বর সংরক্ষণ করুন
স্থানীয় পুলিশ, বাস সার্ভিস হেল্পলাইন ও পরিচিতজনের নম্বর সহজেই পাওয়া যায় এমন জায়গায় রাখুন। বিপদের সময় ৯৯৯ (বাংলাদেশের জরুরি সেবা) তে কল করুন।
যাত্রা পথে অপরিচিত ব্যক্তির দেয়া কিছু খাবেন না
যাত্রাকালে অনেক যাত্রী পার্শ্ববর্তী যাত্রীকে ভদ্রতার খাতিরে বা বন্ধুসুলভভাবে খাদ্য-পানীয় গ্রহণে অনুরোধ করেন। যাত্রীর ছদ্মবেশে অনেক সময় মলম পার্টির লোকেরা খাবারে বিষাক্ত কেমিকাল মিশিয়ে দেয়। এই খাবার গ্রহণের পর যাত্রীরা অচেতন হয়ে পড়লে তারা সর্বস্ব লুটে নেয়। এধরণের পরিস্থিতিতে ঝুঁকি এড়াতে অপরিচিত ব্যক্তির দেয়া কিছু না খাওয়া নিরাপদ।
ভ্রমণের সময় ভারসাম্য বজায় রাখুন
যদি বাস বা যানবাহন চলন্ত অবস্থায় থাকে, তবে হঠাৎ উঠে দাঁড়ানো বা নড়াচড়া করা এড়িয়ে চলুন। হাতল বা সাপোর্ট ধরে রাখুন যাতে হঠাৎ ব্রেক করলে পড়ে না যান। সম্ভব হলে হেলপারকে আপনার গন্তব্যস্থল আগেই জানিয়ে রাখুন, যাতে গাড়ি উক্তস্থানে পৌঁছালে আপনাকে ডেকে নিতে পারে।
আরো পড়ুন: তরুণদের মধ্যে স্ট্রোকের প্রবণতা বেড়ে যাচ্ছে: জানুন কারণ, লক্ষণ ও প্রতিরোধ
মোবাইল ফোন নিরাপদে রাখুন
অনেকেই বাসে বা গণপরিবহনে যাত্রাকালে মোবাইল ফোন বের করে সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রলিং করেন। এ ধরনের অভ্যাস ছিনতাইয়ের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে। বিশেষ করে জানালার পাশে বসলে খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মোবাইল ফোন বের না করে নিরাপদ। সম্ভব হলে, যাত্রা শেষ না হওয়া পর্যন্ত ফোন বের না করে, নিরাপদে পকেটে বা ব্যাগে রাখুন।
উপসংহার
ব্যক্তিগত বা জরুরি প্রয়োজনে কিংবা পেশাগত কারণে অনেকেই সন্ধ্যার পরে বা রাতের দিকে গণ পরিবহনে যাতায়াত করেন । উপরোল্লিখিত বিষয়গুলোতে সতর্কতা অবলম্বন করলেই রাতের ভ্রমণকে আরও নিরাপদ করা সম্ভব।
আরো পড়ুন: মরণঘাতী ড্রাগ ‘ডেভিলস ব্রেথ’ বা ‘শয়তানের নিঃশ্বাস’ থেকে বাঁচতে করণীয়
৬৬ দিন আগে