ঘুষ গ্রহণ
ঘুষ গ্রহণের দায়ে খুলনা জজ আদালতের হিসাব সহকারীকে ১০ বছরের কারাদণ্ড
খুলনা বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের হিসাব সহকারী কাম ক্যাশিয়ার অলোক কুমার নন্দীকে ১০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৩ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) খুলনা বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. আশরাফুল ইসলাম ঘুষ গ্রহণের দায়ে তার বিরুদ্ধে এ রায় ঘোষণা করেন।
এ সময় অলোক কুমার নন্দী আদালতে উপস্থিত ছিলেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. ইয়াসিন আলী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আদালত জানায়, খুলনা বিভাগীয় জজ আদালতে মো. জহুর ই আলমের বিরুদ্ধে বিশেষ মামলা বিচারাধীন ছিল। মামলার আসামির স্ত্রী হাসিনা আলম খোঁজখবর নিতে আদালতে আসেন। তখন অলোক কুমার নন্দী আসামি জহুর ই আলমকে দেড় লাখ টাকার বিনিময়ে খালাস করিয়ে দেওয়ার মিথ্যা আশ্বাস দেন। ১৯৯৪ সালের ২ ফেব্রুয়ারি অলোক কুমার নন্দীকে দেড় লাখ টাকা সিঅ্যান্ডবি কলোনির সামনে দেওয়া হবে বলে হাসিনা আলম আশ্বাস দেন, কিন্তু ওই দিন তিনি কোনো টাকা তাকে দেননি বা দেখাও করেননি। পরে একই বছরের ১৪ মে অলোক কুমার নন্দী মাগুরায় হাসিনা আলমের বাড়িতে যান এবং প্রতারণার আশ্রায় নেন। এরপর জানানো হয়, দেড় লাখ টাকা না দেওয়ায় আদালতের বিচারক আসামি জহুর ই আলমকে বিচারে সাজা দিয়েছেন। হাসিনা আলম তখন নন্দীর কাছে করণীয় জানতে চাইলে তিনি জানান, দেড় লাখ টাকা দিলে মামলার নথি পুড়িয়ে ফেলকেন তিনি।
এরপর ১৯৯৪ সালের ২৫ মে হাসিনা আলম ৬ শতক জমি ও গরু বিক্রি করে দেড় লাখ টাকা যোগাড় করে দুজনের উপস্থিতে নন্দীকে ওই টাকা দেন।
আরও পড়ুন: চেক জালিয়াতি: সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রীর ভাইয়ের কারাদণ্ড
পরবর্তীতে খাদ্য অধিদপ্তর থেকে জহুর ই আলমের বিরুদ্ধে আদালতের রায়ের সাজা সংক্রান্ত চিঠি পেয়ে আদালতে আত্মসর্ম্পণ করলে তাকে কারগারে প্রেরণ করা হয়।
পরবর্তীতে জহুর ই আলমের স্ত্রী হাসিনা আলম অলোক কুমার নন্দীর কাছে টাকা ফেরত চান। অলোক কুমার নন্দী বিভিন্ন সময়ে হাসিনা আলমকে ২৩ হাজার টাকা দিলেও আর কোনো টাকা দিতে পারবেন না বলে জানান।
এ ঘটনায় হাসিনা আলম খুলনা বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতে ১৯৯৯ সালের ১৭ জুন একটি নালিশি দরখাস্ত করেন, যার পর বিভাগীয় জজ আদালত থেকে একই বছরের ২২ জুন এ বিষয়ে একটি স্মারক খুলনা দুর্নীতি দমন ব্যুরোতে প্রেরণ করেন।
২০০০ সালের ৩০ মে যাবতীয় প্রমাণাদি গ্রহণ শেষে জেলা দুর্নীতি দমন ব্যুরো পরিদর্শক মিছবাহ উদ্দিন বাদী হয়ে খুলনা থানায় একটি মামলা করেন। এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন জেলা দুর্নীতি দমন ব্যুরোর পরিদর্শক সুভাষ চন্দ্র দত্ত। সেই মামলায় সাজা পেলেন অলোক কুমার নন্দী।
২৫ দিন আগে