ভাষা সৈনিক
ভাষা সৈনিক মুক্তিযোদ্ধা বি এম কলিমুল্লাহ আর নেই
ভাষা সৈনিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা বি এম কলিমুল্লাহ ভুঁইয়া আর নেই।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টা ১০ মিনিটের দিকে ঢাকার কল্যাণপুরে ইবনে সিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিল ১০৯ বছর।
আরও পড়ুন: সাবেক কূটনীতিক ওয়ালিউর রহমান আর নেই
তার ছেলে বি এম আহসান ইউএনবিকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, তার পৈত্রিক বাড়ি উপজেলার রামচন্দ্রপুর গোপালখোর ভু্ইয়াবাড়িতে পারিবারিক গোরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
ভাষা সৈনিক বি এম কলিমুল্লাহর এক ছেলে, সাত মেয়ে আছেন।
আরও পড়ুন: কবি আবু বকর সিদ্দিক আর নেই
ভাষা সৈনিক বি এম কলিমুল্লাহ দীর্ঘদিন ধরেই বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছিলেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ৫২’র ভাষা সৈনিক আ. মতিনের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা ছিলে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনের ছাত্র থাকাকালে তিনি ‘৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিলে যোগ দেন। তখন পুলিশের গুলিবিদ্ধ সালামকে কোলে করে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করেন।
আরও পড়ুন: কুমিল্লা সিটি মেয়র রিফাত আর নেই
এরপর তিনি চাঁদপুরে লঞ্চে বাড়ি আসার সময় ডিবি পুলিশ তাকে সদরঘাটে গ্রেপ্তার করে। কয়েকদিন কারাবন্দি থাকেন। ২৫ ফেব্রুয়ারি মুক্তি পেয়েই ১৯৫২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারিতে চাঁদপুরের মোহাম্মদি মুসলিম হোস্টেলে (এখন সরকারি মহিলা কলেজ হোস্টেল) এক গোপন মিটিংএ সালামের রক্তমাখা জামা সবাইকে দেখালে সবাই ক্ষোভে ফেটে পড়েন। এর পর তার নেতৃত্বেই গঠিত হয় চাঁদপুর মহকুমা ভাষা সংগ্রাম কমিটি। এ সভায় বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ঠজন আ. করিম পাটোয়ারিসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। যার ফলে ভাষা আন্দোলন চাঁদপুরের সবর্ত্র ছড়িয়ে পড়ে।
আরও পড়ুন: প্রবীণ সাংবাদিক এম ওয়াহিদুল্লাহ আর নেই
১০ মাস আগে
অবহেলায় ভাষাসৈনিক ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের বাড়ি, সংরক্ষণে উদ্যোগ নেই
অযত্ন-অবহেলায় পড়ে আছে ভাষা সৈনিক শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের স্মৃতিবিজড়িত বাড়িটি। বর্তমানে বাড়িটি দেখে বোঝার উপায় নেই এখানেই ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত বসবাস করতেন। এটি এখন ভূতুড়ে বাড়িতে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে বাড়িটি সংস্কারে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি, এতে ভাষা সংগ্রামের সঠিক ইতিহাস জানা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে নতুন প্রজন্ম।
২০১০ সালে তৎকালীন তথ্য ও সংস্কৃতিমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ বাড়িটি পরিদর্শনে এসে এখানে ‘ভাষাসৈনিক ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্মৃতি জাদুঘর’ নির্মাণের আশ্বাস দিলেও গত প্রায় ১২ বছরেও এর বাস্তবায়ন হয়নি।
জানা যায়, ১৯৪৮ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের করাচিতে গণপরিষদের অধিবেশন শুরু হয়। ২৫ ফেব্রুয়ারি ওই অধিবেশনে ধীরেন্দ্রনাথ দত্তই সর্বপ্রথম রাষ্ট্রভাষা বাংলা করার দাবিতে সোচ্চার হন। তিনি অধিবেশনে স্পিকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, গণপরিষদে যে কার্যবিবরণী লেখা হয় তা ইংরেজি ও উর্দু ভাষায় লিপিবদ্ধ হয়। সমগ্র পাকিস্তানের ৫৬ শতাংশ মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলেন। অধিবেশনে ইংরেজি ও উর্দুর সঙ্গে বাংলা ভাষা ব্যবহারের দাবি তোলেন তিনি।
আরও পড়ুন: জরাজীর্ণ টিনশেড ঘরে চলছে ইউপি কার্যক্রম
তখনকার পাকিস্তানের প্রথম প্রধানমন্ত্রী লিয়াকত আলী খান এতে ক্ষিপ্ত হন। এতে ধীরেন্দ্রনাথ তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের রোষাণলে পড়ে কয়েকবার কারাবরণ করেন।
ভাষা আন্দোলনে ভূমিকা রাখার জন্য আগে থেকেই টার্গেটে ছিলেন ধীরেন্দ্রনাথ। আর সে কারণেই ১৯৭১ সালের ২৯ মার্চ গভীর রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী কুমিল্লা নগরীর ধর্মসাগরের পশ্চিম পাড়ের এই বাড়ি থেকে ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত ও তার ছেলে দিলীপ কুমার দত্তকে ধরে নিয়ে যায় কুমিল্লা সেনানিবাসে। সেখানে ৮৫ বছর বয়স্ক এই দেশপ্রেমিক রাজনীতিককে অমানবিক নির্যাতন চালায়। পরে বাবা-ছেলে দুজনকেই হত্যা করা হয়। পরবর্তীতে তাদের মরদেহের সন্ধানও পায়নি পরিবার।
এরপর থেকে এ বাড়ির অবকাঠামো ক্রমেই ভেঙে পড়তে থাকে। এই বাড়ি দেখে এখন আর বোঝার উপায় নেই, এখানে এক সময় অবিভক্ত পাকিস্তানের এক প্রথিতযশা বর্ষীয়ান রাজনীতিক বসবাস করতেন।
আরও পড়ুন: সংযোগ সড়ক না থাকায় কাজে আসছে না ৩১ লাখ টাকার সেতু
গবেষক ও সংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আহসানুল কবির বলেন, ধীরেন্দ্রনাথের বাড়িটি শুধু কুমিল্লাবাসীর না, এটি দেশের মানুষের অহংকারের জায়গা। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় আজ বাড়িটি জীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। বাড়িটিকে কেন্দ্র করে আরও আগেই অনেক কিছু হতে পারতো। কেন হয়নি এটি না ভেবে, এখনই রাষ্ট্রীয়ভাবে সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়া প্রয়োজন।
সরকারের কাছে জোর দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, বাড়িটি সংস্করণে যদি আইনগত কোনো বাধা না থাকে প্রয়োজনে অধিগ্রহণ করে এখানে শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের নামে একটি জাদুঘর করা হোক। যেটি দেখে শত শত বছর বাংলা ভাষা-ভাষি মানুষ অনুপ্রাণিত হবে।
শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত স্মৃতিরক্ষা পরিষদের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট নাজমুল বারী চৌধুরী বলেন, ‘বাংলা ভাষার প্রস্তাবক ও ভাষা সৈনিক শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের স্মৃতি রক্ষার দাবিতে বিভিন্ন সময়ে আমরা আন্দোলন সংগ্রামসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছি। জেলা প্রাশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপিও দিয়েছি। আমাদের দাবি এখানে ধীরেন্দ্রনাথের নামে একটি ভাষা জাদুঘর স্থাপন করা হোক।’
আরও পড়ুন: দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতা: শীতেও ভবদহ অঞ্চলে ভোগান্তি
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র মনিরুল হক সাক্কু বলেন, ‘সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে সবকিছু করা সম্ভব নয়। ইতোপূর্বে আমরা ২২ লাখ টাকা খরচ করে ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের নামে স্টেডিয়ামের মূল গেটটি নির্মাণ করে দিয়েছি। ধীরেন্দ্রনাথ পরিবারের লোকজন বাড়িটি সংস্কারের দাবি তুললে সাংস্কৃতিক মন্ত্রণালয় দ্রুত সেটা করে দেবে। যেমনভাবে কুমিল্লায় শচীন দেববর্মণের বাড়িটি সংস্কার করা হয়েছে।’
২ বছর আগে
গাইবান্ধায় প্রথম নারী সাংবাদিক আফরোজা ভাষা সৈনিক কার্জন আলী পদক পেয়েছেন
গাইবান্ধায় প্রথম নারী সাংবাদিকতায় অবদানের জন্য একুশে টেলিভিশনের গাইবান্ধা প্রতিনিধি আফরোজা লুনা ভাষা সৈনিক কার্জন আলী সম্মননা ও পদক পেয়েছেন।
৩ বছর আগে
ভাষা সৈনিক দেবপ্রিয় বড়ুয়া আর নেই
বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক ভাষা সৈনিক ডি পি বড়ুয়া (দেবপ্রিয় বড়ুয়া) আর নেই।
৪ বছর আগে
ভাষা আন্দোলনের ভুলে যাওয়া নায়ক মোহাম্মদ সুলতান
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) যে ১১ জন ছাত্র ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ১৯৫২ সালে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলা প্রতিষ্ঠার জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েছিল, ক্যাম্পাসে প্রথম কালো পতাকা উত্তোলন করেছিল তিনি ভাষা সৈনিক মোহাম্মদ সুলতান।
৪ বছর আগে