গাজা
‘আত্মসমর্পণের’ শর্তে দেওয়া যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব প্রত্যাখান করল হামাস
গাজায় সক্রিয় সকল সশস্ত্রগোষ্ঠীকে আত্মসমর্পণ করার শর্তে দেওয়া যুদ্ধবিরতির একটি প্রস্তাব প্রত্যাখান করেছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস।
একই সঙ্গে ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীটি গাজায় ১৮ মাস ধরে চলমান যুদ্ধের অবসান ঘটানোর জন্য যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করার জন্য ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে দায়ী করেছে।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) হামাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সামি আবু জুহরি আল জাজিরা আরবিকে বলেন, ‘আমাদের জনগণের দুর্ভোগ লাঘবের জন্য সকল প্রস্তাবের জন্য হামাস প্রস্তুত।’ তবে সর্বশেষ খসড়া ইসরায়েলি প্রস্তাবে ফিলিস্তিনিদের ‘আত্মসমর্পণ’ করার জন্য দাবি জানানো হয়েছে।
আবু জুহরি বলেন, ‘নেতানিয়াহু যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে ভন্ডুল করার জন্য অবাস্তব শর্ত জুড়ে দিয়েছেন।’
আরও পড়ুন: ইসরায়েলে রকেট হামলা চালালো হামাস, আহত ৩
তিনি বলেন, ‘সর্বশেষ প্রস্তাবে দখলদার ইসরায়েল পূর্ণ যুদ্ধবিরতির প্রতিশ্রুতি দেয়নি, বরং কেবল তারা বন্দীদের গ্রহণ করতে চায়। গাজা যুদ্ধের সমাপ্তি ও উপত্যকা থেকে সরে যাওয়ার শর্তে আমরা জীবিত সব বন্দীর মুক্তি ও মৃতদের লাশ হস্তান্তর করতে প্রস্তুত।’
তিনি আরও বলেন, ‘হামাস আন্দোলনের আত্মসমর্পণের কোনো সুযোগ নেই। আমরা জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে নষ্ট করব না..হামাস আত্মসমর্পণ করবে না, সাদা পতাকা উত্তোলন করবে না। দখলদারদের বিরুদ্ধে সকল প্রকার চাপ প্রয়োগ করে যাবে হামাস।’
সবশেষ যুদ্ধবিরতির ইসরায়েলের খসড়া প্রস্তাবে দেখা যায়, এই যুদ্ধবিরতি ৪৫ দিনের জন্য কার্যকর করা হবে। এর অংশ হিসেবে হামাসের হাতে বন্দী থাকা সকল ইসরায়েলিকে পর্যায়ক্রমে মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।
১২ দফার এই প্রস্তাবে বলা হয়েছে, প্রথম সপ্তাহে বন্দী থাকা ইসরায়েলিদের অর্ধেক সংখ্যাকে মুক্তি দিতে হবে। এর বিনিময়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় খাবার ও পানীয় প্রবেশের সুযোগ দেবে ইসরায়েল।
উপত্যকাটিতে ৬ সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে খাদ্য, জীবন রক্ষাকারী উপকরণ, ওষুধ, জ্বালানি ও ভোজ্যতেল প্রবেশ করতে দিচ্ছে না যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও পশ্চিমা শক্তিগুলোর মদদপুষ্ট দখলদার ইসরায়েল।
গত সপ্তাহে প্যালেস্টাইন নন-গভর্নমেন্ট অর্গানাইজেশন নেটওয়ার্ক (পিএনওএন) সতর্ক করে বলেছে, গাজার পরিস্থিতি ‘দুর্ভিক্ষের চূড়ান্ত পর্যায়ে’ পৌঁছেছে। ইসরায়েলিদের বোম হামলায় খাদ্যগুদাম, পানি বিশুদ্ধ করার প্ল্যান্ট ও কমিউনিটি রান্নাঘরগুলো ধ্বংস হয়ে গেছে।
গাজায় ‘একটি দানাও’ প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না—ইসরায়েলি অতি ডানপন্থী অর্থমন্ত্রী বেজালের এমন ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পর এই সতর্কবার্তা আসলো।
যুদ্ধ শুরুর পর থেকে জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ ও অন্যান্য শীর্ষ মানবাধিকার সংস্থাগুলো ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর পরিকল্পিতভাবে গণহত্যা চালানোর অভিযোগ তুলে আসছে।
গাজায় গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ এনে গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়ভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে।
আরও পড়ুন: নতুন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে হামাসের সম্মতি, পাল্টা প্রস্তাব ইসরায়েলের
এই গ্রেপ্তারি পয়োনা জারির কয়েকদিন আগে জাতিসংঘের একটি বিশেষ কমিটি গাজায় যু্দ্ধের অস্ত্র হিসেবে দুর্ভিক্ষ তৈরি করার অভিযোগ আনে। যেটিকে ‘সম্ভাব্য গণহত্যা’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে গত ১৮ মার্চ থেকে চালানো ইসরায়েলি হামলায় ১ হাজার ৫৭৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন ৫০ হাজার ৯৪৪ জন।
দুইমাসের যুদ্ধবিরতির ফলে গাজায় হামলা বন্ধ করেছিল ইসরায়েল। কিন্ত মার্চের মাঝামাঝি সময়ে আবারও তীব্র হামলা শুরু করে দখলদার বাহিনী। এর কয়েকদিন পর হামাস ইসরায়েলে আবারও রকেট হামলা চালায়।
সূত্র: বিভিন্ন নিউজ এজেন্সি
২ দিন আগে
গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে জাবি ছাত্রদলের মানববন্ধন
গাজা উপত্যকায় ফিলিস্তিনি জনগণের উপর ইসরায়েলের বর্বর হামলার প্রতিবাদে মুখে কালো কাপড় বেঁধে মানববন্ধন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) বেলা সোয়া ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের (ডেইরি গেইট) সামনে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন তারা। মানববন্ধনে শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা ইসরায়েলের হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে ফিলিস্তিনের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানান। সেইসঙ্গে ফিলিস্তিনে হামলা বন্ধে বিশ্ব মোড়লদের এগিয়ে আসার উদাত্ত আহ্বান জানান তারা।
এ সময় জাবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য তানজিলা হোসেন বৈশাখী বলেন, ‘গত এক সপ্তাহে ফিলিস্তিনে যা হয়েছে, তা অতীতের যেকোনো ভয়াবহতাকে হার মানায়। গণতন্ত্রের দোহায় দেওয়া যুক্তরাষ্ট্র ফিলিস্তিনে হামলাকে হালাল বানিয়েছে। এদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সবসময় ফিলিস্তিনের পাশে ছিল, আছে এবং থাকবে। আমরা বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতি আহবান জানাই দ্রুত ফিলিস্তিনের সমস্যা সমাধান করুন।‘
আরও পড়ুন: বিশ্বব্যাপী শিক্ষার্থীদের ‘দ্য ওয়ার্ল্ড স্টপস ফর গাজা’ কর্মসূচি: জাবি প্রশাসনের সংহতি
শাখা ছাত্রদলের সদস্য সচিব ওয়াসিম আহমেদ অনিক বলেন, ‘ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় যে বর্বর গণহত্যা সংগঠিত হয়েছে, পৃথিবীর কোথাও এমন গণহত্যার কোনো নজির নাই। এখানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে। মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘঠিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক মহল যদি এখনই কার্যকর ভূমিকা পালন না করে তাহলে ফিলিস্তিন মুছে যাবে।’
জাবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন বাবর বলেন, ‘আমরা দেখেছি আমাদের ফিলিস্তিনি ভাইদের উপর ইসরায়েল নারকীয় তান্ডব চালিয়েছে। কিন্তু জাতিসংঘসহ বিশ্বশক্তিগুলো নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা এই মানববন্ধন থেকে বলতে চাই, অবিলম্বে এই হামলা বন্ধ করতে হবে। বিশ্বশক্তিগুলোকে হামলা বন্ধে এগিয়ে আসতে হবে। ফিলিস্তিনে মানবতার চরম বিপর্যয় বন্ধ করতে হবে।’
৮ দিন আগে
ইসরায়েলি হামলায় গাজায় আরও ৬০ ফিলিস্তিনি নিহত
গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় আরও ৬০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। সোমবার (৭ এপ্রিল) ভোর থেকে চালানো হামলায় তারা নিহত হন।
মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) গাজার সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মোহাম্মদ বাশালের বরাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানায় সংবাদ মাধ্যম মিডল ইস্ট আই।
এর আগে নাসের হাসপাতালের কাছে সাংবাদিকদের তাবুতে ইসরায়েলি বোমা হামলায় তিন সাংবাদিক নিহত হন।
চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজা নগরী ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। উপত্যকাটিতে ইসরায়েলের কড়াকড়ি আরোপের ফলে ৬ লাখ ২ হাজার শিশু পোলিও টিকা থেকে বঞ্চিত হওয়ায় স্থায়ী স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছে।
আরও পড়ুন: গাজার ৫০ শতাংশ ইসরায়েলের দখলে, নিজ ভূমিতে পরবাসী ফিলিস্তিনিরা
অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, গত রবিবার তুরমাস আইয়ায় ইসরায়েলি বাহিনী ১৪ বছর বয়সী ফিলিস্তিনি-আমেরিকান কিশোর ওমর মোহাম্মদ রাবেয়াকে গুলি করে হত্যা করেছে।
যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ইসরায়েল গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় বড় আকারের বিমান ও স্থল অভিযান শুরু করেছে। শুধু তাই নয় ক্রমাগতভাবে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ সম্প্রসারণ করে চলেছে দখলদার ইসরায়েল। এখন পর্যন্ত উপত্যকাটির ৫০ শতাংশ অংশ দখলে নিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ)। এতে নিজ ভূমিতে অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছেন অধিকাংশ ফিলিস্তিনি।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরতায় এখন পর্যন্ত ৫০ হাজার ৬৯৫ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
সূত্র: বিভিন্ন এজেন্সি
৮ দিন আগে
গাজায় ইসরাইলি গণহত্যার প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিক্ষোভ
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর গণহত্যার প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ প্রতিবাদ হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করা হয়েছে। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ব্যাপকভাবে এ কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
সোমবার (৭ এপ্রিল) রাজধানী ঢাকার বাইরের বিভাগ ও জেলাগুলোতে মানববন্ধন এবং সমাবেশ করা হয়েছে। এসব সমাবেশ থেকে ইসরাইলি পণ্য বর্জন ও ইহুদিবাদী দেশটিকে বিচারের মুখোমুখি করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এছাড়াও বিক্ষোভ থেকে ‘ফ্রি, ফ্রি প্যালেস্টাইন’, ‘বয়কট ইসরাইল’, ‘ইসরাইলের কালো হাত ভেঙে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’, ‘ইসরায়েল উইল বি সি, প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি’, ‘নিউইয়র্ক উইল বি সি, প্যালেস্টাইন উইল বি ফ্রি’সহ বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেওয়া হয়।
নিচে বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভের চিত্র তুলে ধরা হলো:
গোপালগঞ্জ—
সারাদিন ইসরাইল ও ট্রাম্পবিরোধী স্লোগানে উত্তাল ছিল এই জেলা। গোপালগঞ্জ মেডিকেল কলেজ, গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন। পাশাপাশি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলেরও কর্মসূচি ছিল।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে গোপালগঞ্জ মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ও ইন্টার্ন ডাক্তারদের আয়োজনে ফিলিস্তিনে ইসরাইলি বর্বরচিত হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ১২টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন। সরকারি বঙ্গবন্ধু কলেজের শিক্ষার্থীরা স্থানীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেন। এছাড়া বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে ওলামা পরিষদের আয়োজনে গোপালগঞ্জের প্রাণকেন্দ্র লঞ্চঘাট এলাকায় মানববন্ধন ও সমাবেশ হয়েছে।
খুলনা—
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে প্রতিবাদ সমাবেশ ‘মার্চ ফর প্যালেস্টাইন’ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদী চত্বরে এই সমাবেশ শুরু হয়। সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও অংশগ্রহণ করেন।
সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম। তিনি বলেন, ‘ইসরাইলি আগ্রাসনে ফিলিস্তিনের গাজায় প্রতিনিয়ত হাজার হাজার মানুষ হত্যার শিকার হচ্ছেন। তাদের বর্বরতা থেকে নারী-শিশু কেউ রেহাই পাচ্ছেন না। অনবরত বোমার আঘাতের মসজিদ-মাদরাসা, হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। অথচ বিশ্ব মানবতা তার দিকে কোনো নজর দিচ্ছে না।’
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. হারুনর রশীদ খান।
কিশোরগঞ্জ—
কিশোরগঞ্জে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন সাধারণ মানুষ। জোহরের নামাজের পর কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের শহীদী মসজিদ এলাকা থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় শহীদী মসজিদ চত্বরে এসে একত্রিত হয়।
পরে সেখানে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে। এ সময় জেলা শহরে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে সড়কের দুপাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে।
এ কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করে জেলা শহরের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদরাসাসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাকর্মীসহ বিভিন্ন শ্রণি-পেশার মানুষ অংশ নেন।
এদিকে সকালে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের সামনে একই দাবিতে ‘নো ক্লাস, নো এক্সাম, নো স্কুল’ কর্মসূচি পালন করেন কিশোরগঞ্জ নার্সিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।
এই কর্মসূচিতে ইনস্টিটিউটের শতাধিক শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণ করেন। এছাড়াও কিশোরগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলাতেও ইসরাইলবিরোধী বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: গাজার ৫০ শতাংশ ইসরায়েলের দখলে, নিজ ভূমিতে পরবাসী ফিলিস্তিনিরা
৯ দিন আগে
গাজার ৫০ শতাংশ ইসরায়েলের দখলে, নিজ ভূমিতে পরবাসী ফিলিস্তিনিরা
গত মার্চ মাসে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে গাজা উপত্যকায় হামলা শুরুর পর ক্রমাগতভাবে নিজেদের নিয়ন্ত্রণ সম্প্রসারণ করে চলেছে দখলদার ইসরায়েল। এখন পর্যন্ত উপত্যকাটির ৫০ শতাংশ অংশ দখলে নিয়েছে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী (আইডিএফ)। এতে নিজ ভূমিতে অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছেন ফিলিস্তিনিরা।
ইসরায়েলি সেনা ও মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলোর মতে, গাজা সীমান্তের আশপাশে সেনাবাহিনীর নিয়ন্ত্রণে থাকা সবচেয়ে বড় এলাকায় ফিলিস্তিনিদের বাড়িঘর, কৃষিজমি এবং অবকাঠামো ধ্বংস করে দিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। এসব এলাকা এখন বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে এই সামরিক বাফার জোনের পরিধি দ্বিগুণ করা হয়েছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর থেকে সাময়িক যুদ্ধবিরতের মাধ্যমে বেশ কিছু জিম্মিকে মুক্তি দেয় হামাস। অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তি দিতে হামাসকে চাপ দেওয়ার সাময়িক প্রয়োজনের অজুহাতে হামলা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি গাজার ভূমির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কড়াকড়ি আরোপ করে ইসরায়েল।
তবে মানবাধিকার গোষ্ঠী ও গাজা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইসরায়েলের দখলে থাকা অঞ্চলটির উত্তর-দক্ষিণের ভূমিকে বিভক্ত করা করিডোরটি দীর্ঘমেয়াদি নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু গত সপ্তাহে বলেছেন, হামাস পরাজিত হওয়ার পরও ইসরায়েল গাজায় নিরাপত্তা নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখবে এবং ফিলিস্তিনিদের সেখান থেকে চলে যেতে বাধ্য করা হবে।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও দুই সাংবাদিক নিহত
পাঁচ ইসরায়েলি সেনা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) জানিয়েছেন, ইসরায়েলি সীমান্তের কাছে ধ্বংসযজ্ঞ এবং বাফার জোনের ধারাবাহিক সম্প্রসারণ ১৮ মাস আগে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে চলমান।
গাজায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর যে দলটি ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে, তাদের সুরক্ষায় মোতায়েন করা ট্যাংক স্কোয়াডের এক সদস্য বলেন, ‘তারা যা কিছু পেয়েছে, তাই ধ্বংস করেছে। তাদের সামনে যা কিছু কার্যকর মনে করছে, তারা সেখানেও তারা গুলি করেছে ...যাতে (ফিলিস্তিনিদের) ফিরে আসার কিছুই না থাকে। তারা আর ফিরতে পারবে না, কখনই না।’ নিরাপত্তার স্বার্থে নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি এবং আরও চার সেনা এপিকে এসব কথা বলেন।
সোমবার (৭ এপ্রিল) বাফার জোনে থাকা সেনাদের বিবরণ নথিভুক্ত করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে দখলদারবিরোধী ভেটেরান্স গ্রুপ ব্রেকিং দ্য সাইলেন্স। হাতেগোনা কয়েকজন সেনাদের মধ্যে কয়েকজন এপির সঙ্গে আলাপও করেছেন। ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ওই অঞ্চলটিকে একটি বিশাল পতিতভূমিতে পরিণত করছে বলে জানিয়েছেন।
গোষ্ঠীটি বলেছে, ‘ব্যাপক, পরিকল্পিত ধ্বংসযজ্ঞের মাধ্যমে সামরিক বাহিনী ভবিষ্যতে ওই এলাকায় ইসরায়েলি নিয়ন্ত্রণের ভিত্তি তৈরি করেছে।’
সৈন্যদের বিষয়ে জানতে চাইলে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলেছে, তারা তার দেশকে রক্ষার জন্য এবং বিশেষত ৭ অক্টোবরের হামলায় বিধ্বস্ত দক্ষিণাঞ্চলীয় সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা উন্নত করতে কাজ করছে। ওই হামলায় প্রায় ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি নিহত হন। এছাড়া ২৫১ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায় হামাস।
বিভক্ত গাজা
ব্রেকিং দ্য সাইলেন্সের মতে, যুদ্ধের প্রথমদিকে ইসরায়েলি সেনারা সীমান্তের নিকটবর্তী গাজার এক কিলোমিটারের বেশি এলাকায় বাস করা ফিলিস্তিনিদের জোর করে সরিয়ে একটি বাফার জোন তৈরি করতে সেখানে থাকা সব স্থাপনা ধ্বংস করে দিয়েছে।
ইসরায়েলি সৈন্যরা ‘নেতজারিম করিডোর’ নামে পরিচিত গাজার একটি বিশাল ভূমিও দখল করেছে। এই করিডোরটি গাজা সিটিসহ উত্তরাঞ্চলকে সংকীর্ণ ও উপকূলীয় উপত্যকাটির বাকি অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন করেছে। গোটা গাজা উপত্যকাটিতে ২০ লাখের বেশি মানুষের আবাসস্থল।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর প্রকাশ করা একটি মানচিত্রে দেখা যায়, গত মাসে ইসরায়েল যখন যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে পুনরায় হামলা শুরু করে, তখন এটি বাফার জোনের আকার দ্বিগুণ করেছে। কিছু জায়গায় এটি গাজার অভ্যন্তরে তিন কিলোমিটার (১.৮ মাইল) পর্যন্ত দখলে নেয়।
বেন গুরিয়ন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশগত গবেষণার অধ্যাপক ইয়াকভ গার্ব বলেন, বাফার জোন এবং নেতজারিম করিডোর উপত্যকাটির কমপক্ষে ৫০ শতাংশ এলাকা নিয়ে গঠিত। এই অধ্যাপক কয়েক দশক ধরে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি ভূমি ব্যবহারের ধরন পরীক্ষা করে আসছেন।
গত সপ্তাহে নেতানিয়াহু বলেছিলেন, ইসরায়েল দক্ষিণ গাজায় আরেকটি করিডোর তৈরি করতে চায়—যা রাফাহ শহরকে অন্যান্য অঞ্চল থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলবে। গাজায় ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণ আরও বাড়বে। গাজার ওই অঞ্চলে সম্প্রতি পরিকল্পিত হামলার আগে বেসামরিক নাগরিকদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে তারা।
বাফার জোন ‘কিল জোন’, দাবি সেনাদের
সৈন্যরা বলেছে, বাফার জোনের কোনো নির্দিষ্ট সীমানা নেই। তবে এসব এলাকায় যে ফিলিস্তিনিরা প্রবেশ করেছিলেন, তাদের গুলি করা হয়েছে।
ট্যাংক স্কোয়াডে থাকা ওই সেনা কর্মকর্তা বলেন, একটি সাঁজোয়া বুলডোজার ভূমি সম্প্রসারণ করে একটি ‘কিল জোন’ তৈরি করেছে। ট্যাংকের ৫০০ মিটারের মধ্যে কেউ এলে, তাকে গুলি করা হয়। যাদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত ৪৪, পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি-আমেরিকান কিশোরকে হত্যা
কম্পিত ও ভীত অবস্থায় তিনি বলেন, ‘অনেক সেনা ৭ অক্টোবরের হামলার প্রতিশোধ নিতে এ কাজ করেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমি এখানে এসেছি, কারণ তারা আমাদের হত্যা করেছে। এখন আমরা তাদের হত্যা করতে এসেছি। আমি বুঝতে পারছি যে, আমরা কেবল তাদের হত্যা করছি না, আমরা তাদের স্ত্রী, শিশু, বিড়াল, কুকুরকে হত্যা করছি। ধ্বংস করছি তাদের বাড়িঘর।’
সেনাবাহিনী বলেছে, ‘যতটা সম্ভব বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষতি এড়াতে’ গোয়েন্দা তথ্যের উপর ভিত্তি করে তারা আক্রমণগুলো চালাচ্ছেন।
এদিকে, ২০২৩ সালের পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ৫০ হাজার ৬৯৫ জন ফিলিস্তিনি, যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। আর পোলিও টিকার অভাবে গাজার ৬ লাখ ২ হাজার শিশু স্থায়ীভাবে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে।
৯ দিন আগে
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও দুই সাংবাদিক নিহত
ইসরায়েলের হামলায় গাজায় প্রাণ হারিয়েছেন দুই সাংবাদিক। স্থানীয় সময় সোমবার (৭ এপ্রিল) দক্ষিণ গাজার খান ইউনুস শহরের নাসের হাসপাতালের কাছে সাংবাদিকদের তাঁবুতে ইসরায়েলি সেনারা হামলা চালালে প্রাণ হারান তারা, এ সময় আহত হয়েছেন অন্তত সাতজন।—খবর আল জাজিরার।
কুদস নেটওয়ার্ক ও ফিলিস্তিনের গণমাধ্যমের সংবাদে নিহত ওই দুই সাংবাদিকদের পরিচয় নিশ্চিত করা হয়েছে। তারা হলেন, হেলমি আল ফাকাউই ও আহমেদ মনসুর।
হামলায় আহতদের মধ্যে আল জাজিরার এক ফটো সাংবাদিকও রয়েছেন বলে গণমাধ্যমটির খবরে বলা হয়েছে। এ নিয়ে ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় চলমান ইসরায়েলের নারকীয় হত্যাযজ্ঞে অদ্যাবধি অন্তত ২০০ সাংবাদিক প্রাণ হারিয়েছেন।
এর আগে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় বড় আকারের বিমান ও স্থল অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের এসব বর্বর হামলার প্রতিবাদে রবিবার (৬ এপ্রিল) ইসরায়েলে রকেট হামলা চালায় হামাস। এতে দক্ষিণ ইসরায়েলে তিনজন আহত হন।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত ৪৪, পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি-আমেরিকান কিশোরকে হত্যা
এর জবাবে গাজায় হামলা জোরদার করেছে ইসরায়েল। এতে আজ (সোমবার) গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ৪৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ সময় অধিকৃত পশ্চিত তীরে আইডিএফ ১৪ বছর বয়সী এক ফিলিস্তিনি-আমেরিকান কিশোরকে গুলি করে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ।
নতুন করে চালানো এসব হামলায় অন্তত ১ হাজার ৩৩৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত ও ৩ হাজার ২৯৭ জন আহত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে হামাস শাসিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এদিকে, ২০২৩ সালের পর থেকে ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ৫০ হাজার ৬৯৫ জন ফিলিস্তিনি, যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। আর পোলিও টিকার অভাবে গাজার ৬ লাখ ২ হাজার শিশু স্থায়ীভাবে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছে।
সূত্র: বিভিন্ন এজেন্সি
১০ দিন আগে
গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত ৪৪, পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি-আমেরিকান কিশোরকে হত্যা
গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ৪৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। হামাসের ছোড়া বিরল রকেট হামলার পর এই বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল।
রবিবার (৬ এপ্রিল) ইসরায়েলি হামলায় এসব হতাহত হয় বলে জানিয়েছে গাজার সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি।
অন্যদিকে অধিকৃত পশ্চিত তীরে ইসরায়েলি বাহিনী ১৪ বছর বয়সী এক ফিলিস্তিনি-আমেরিকান কিশোরকে গুলি করে হত্যা করেছে বলে জানিয়েছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৬০, আহত ১৬২
হামাসের সশস্ত্র শাখা আল-কাসসাম ব্রিগেড রবিবার সকালে ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে রকেট হামলা চালানোর পর সহিংসতা বেড়ে যায়। রকেট হামলাকে ফিলিস্তিনি বেসামরিক নাগরিকদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি 'গণহত্যার' প্রতিশোধ হিসেবে বর্ণনা করেছে হাসাস।
রকেট নিক্ষেপকে 'অগ্রহণযোগ্য' বলে নিন্দা জানিয়ে 'কঠোর জবাব' দেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, হামাসের ছোড়া রকেটের বেশিরভাগই প্রতিহত করা হয়েছে। তবে একটি রকেট আশকেলন শহরে আঘাত হানলে তিনজন সামান্য আহত হয়েছেন। এর জবাবে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) দেইর আল-বালাহসহ মধ্য গাজার সন্দেহভাজন রকেট উৎক্ষেপণ কেন্দ্র লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, রাতভর লাগাতার বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে।
যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ইসরায়েল গত ১৮ মার্চ থেকে গাজায় বড় আকারের বিমান ও স্থল অভিযান শুরু করেছে।
এর আগে রবিবার গাজার স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, নতুন করে চালানো এসব হামলায় অন্তত ১ হাজার ৩৩৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত ও ৩ হাজার ২৯৭ জন আহত হয়েছেন।
অধিকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রবিবার তুরমাস আইয়ায় ইসরায়েলি বাহিনী ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় ১৪ বছর বয়সী ফিলিস্তিনি-আমেরিকান কিশোর ওমর মোহাম্মদ রাবেয়া গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন।
আইডিএফ দাবি করেছে, সৈন্যরা ‘সন্ত্রাসীদের’ সঙ্গে লড়াই করার সময় বেসামরিক নাগরিকরা পাথর নিক্ষেপ করেছিল, যার ফলে একজন নিহত এবং দু'জন আহত হন।
তবে বিনা উসকানিতে এই গুলিবর্ষণের নিন্দা জানিয়েছেন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারা। তুরমাস আইয়ার মেয়র একজন ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীকে সহিংসতায় উসকানিদাতা হিসেবে অভিযুক্ত করেছেন।
আরও পড়ুন: গাজায় চিকিৎসাকর্মী হত্যার ঘটনায় ভুল স্বীকার ইসরায়েলের
১৯৬৭ সাল থেকে ইসরায়েলের দখলে থাকা পশ্চিম তীরে জানুয়ারি থেকে ব্যাপক সামরিক অভিযান চালাচ্ছে আইডিএফ। এসব অভিযানকে ইসরায়েল সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান হিসেবে বর্ণনা করছে। অন্যদিকে ফিলিস্তিনি নেতা ও বাসিন্দারা ইসরায়েলি বাহিনী ও বসতি স্থাপনকারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বৃদ্ধির অভিযোগ এনেছে—যা ওই অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা বাড়িয়ে তুলছে।
১০ দিন আগে
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৬০, আহত ১৬২
গাজায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনে আরও ৬০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বাহিনী অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে হামলা চালিয়ে তাদের হত্যা করেছে। এতে আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৬২ জন।
নিহতদের মধ্যে আজ ভোর থেকে চালানো হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩০ জন ফিলিস্তিনি। মিডল ইস্ট আই গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বরাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
ইউনিসেফের একটি প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে ইউএনআরডব্লিউএ প্রধান ফিলিপ লাজারিনি বলেছেন, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ১৮ মার্চ থেকে পুনরায় হামলা শুরু করার পর থেকে প্রতিদিন কমপক্ষে ১০০ জন শিশু নিহত হচ্ছে।
আরও পড়ুন: গাজায় চিকিৎসাকর্মী হত্যার ঘটনায় ভুল স্বীকার ইসরায়েলের
গাজার ১০ লাখেরও বেশি শিশু এক মাসেরও বেশি সময় ধরে জীবন রক্ষাকারী সহায়তা পাচ্ছে না বলেও সতর্ক করেছে জাতিসংঘের সংস্থা ইউনিসেফ।
গাজায় আগ্রাসনের সময় চলতি বছরের ২৩ মার্চ ১৫ জন জরুরি চিকিৎসা কর্মীকে হত্যার ঘটনায় ভুল স্বীকার করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। গাজার দক্ষিণাঞ্চলে রাফাহতে এই হত্যাকাণ্ডটি চালিয়েছে আইডিএফ।
হত্যাকাণ্ডের শিকার রেফাত রাদওয়ানের মোবাইলে ধারন করা ভিডিওটি প্রকাশের পর হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি সামনে আসে। ত্রাণবাহী একটি দল নিহত চিকিৎসাকর্মীদের লাশগুলো খুঁজে পায়। এসময় তারা রিফাত রাদওয়ানের মোবাইল ফোনটিও উদ্ধার করেছিল।
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস এক বিবৃতিতে বলেছে, ইসরায়েলি বাহিনী পরিকল্পিতভাবে চিকিৎসাকর্মী ও ত্রাণকর্মীদের লক্ষ্যবস্তু করে হামলা চালিয়ে হত্যা করেছে। যা নতুন প্রকাশিত একটি ভিডিওতে অকাট্যভাবে প্রমাণিত। এটি আন্তর্জাতিক আইনে একটি ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।’
গাজায় ১৫ জন চিকিৎসা ও ত্রাণ কর্মীর হত্যাকাণ্ডকে ‘নিশ্চিতভাবেই যুদ্ধাপরাধ’ উল্লেখ করে নিন্দা জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক সাবেক প্রধান এবং মেডিয়েশন গ্রুপ ইন্টারন্যাশনালের বর্তমান নির্বাহী পরিচালক মার্টিন গ্রিফিথস।
ওই ঘটনায় ৮ জন রেড ক্রিসেন্ট কর্মী, ৬ জন দমকল কর্মী ও একজন জাতিসংঘের কর্মী নিহত হয়েছেন।
রেড ক্রিসেন্ট এবং অন্যান্য অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থা একটি স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: গাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত ১৭
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস নেতৃত্বাধীন যোদ্ধারা ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় প্রায় ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি নিহত হন। এসময় ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায় হামাস যোদ্ধারা। এরপর যুদ্ধবিরতি চুক্তির মাধ্যমে বেশিরভাগ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। যদিও ইসরায়েলও অসংখ্য মৃতদেহসহ মুষ্টিমেয় কিছু ব্যক্তিকে উদ্ধার করেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরাইলি হামলায় ৫০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। মন্ত্রণালয়টির দেওয়া হিসাবে বেসামরিক নাগরিক ও যোদ্ধার আলাদা হিসাব দেওয়া হয়নি। তথ্যমতে, নিহতদের অর্ধেকেরও বেশি নারী ও শিশু। ইসরায়েল প্রায় ২০ হাজার হামাস যোদ্ধাকে হত্যা করার দাবি করলেও এর সমর্থনে কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি।
চলমান এই যুদ্ধ গাজাকে ধ্বংস করেছে। বেশিরভাগ অঞ্চল ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ইসরায়েলি হামলার মাত্রা এতো বেশি যে, ভূখন্ডটির জনসংখ্যার ৯০ শতাংশ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
সূত্র: বিভিন্ন এজেন্সি
১১ দিন আগে
গাজায় চিকিৎসাকর্মী হত্যার ঘটনায় ভুল স্বীকার ইসরায়েলের
গাজায় আগ্রাসনের সময় চলতি বছর ১৫ জন জরুরি চিকিৎসাকর্মীকে হত্যার ঘটনায় ভুল স্বীকার করেছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। গাজার দক্ষিণাঞ্চলে গত ২৩ মার্চ এই হত্যাকাণ্ডটি চালিয়েছে আইডিএফ।
রাফাহর কাছে ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির (পিআরসিএস) অ্যাম্বুলেন্স, জাতিসংঘের একটি গাড়ি এবং গাজার সিভিল ডিফেন্সের একটি অগ্নিনির্বাপক গাড়িকে লক্ষ্য করে গুলি বর্ষণ করেছিল আইডিএফ। এতে এসব হতাহতের ঘটনা ঘটেছিল।
ওই ঘটনার পর ইসরায়েল প্রাথমিকভাবে দাবি করেছিল যে, গাড়ি বহরটিকে ‘সন্দেহভাজন’ হিসেবে ইসরায়েলি সৈন্যরা গুলি চালিয়েছিল। কারণ, বহরটির গাড়িগুলোর হেডলাইট বা ফ্ল্যাশিং লাইট ছাড়াই অন্ধকারে চালানো হয়েছিল। তারা আরও দাবি করেছে যে, এসব যানবাহন চলাচলের আগে সেনাবাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় বা অনুমোদন নেওয়া হয়নি।
তবে নিহত হওয়া একজন জরুরি চিকিৎসাকর্মীর মোবাইলে ধারন করা একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, আহতদের সাহায্য করতে যাওয়ার সময় গাড়িগুলোতে আলো জ্বলছিল। গাড়িগুলোতে স্পষ্ট লোগো লাগানো ছিল।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জোর দিয়ে বলেছে যে, ওই বহরে থাকা কমপক্ষে ছয়জন চিকিৎসাকর্মী হামাসের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন—তবে এখন পর্যন্ত কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি তাদের দাবির পক্ষে। ইসরায়েলি সেনারা যখন গুলি চালিয়েছিল, তখন তারা নিরস্ত্র ছিল বলে স্বীকারও করেছেন তারা।
নিউ ইয়র্ক টাইমসের শেয়ার করা মোবাইল ভিডিওতে দেখা যায়, ভোর হওয়ার ঠিক আগেই যখন গাড়িগুলো সড়কে চলছিল, ঠিক তখনই কোনো প্রকার সতর্ক বার্তা না দিয়েই গুলি চালানো শুরু করে সেনারা।
পাঁচ মিনিটেরও বেশি সময় ধারণ করা ভিডিতে রেফাত রাদওয়ান নামের ওই চিকিৎসাকর্মীকে শেষ প্রার্থনা করতেও শোনা যায়। তিনি কাঁদতে কাঁদতে ও ক্ষীণ কণ্ঠে বলছিলেন, 'আমাকে ক্ষমা করে দাও মা। এই পথটাই আমি বেছে নিয়েছি মা, মানুষকে সাহায্য করার জন্য।’
আইডিএফের এক কর্মকর্তা শনিবার সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের বলেন, এর আগে সৈন্যরা তিন হামাস সদস্যকে বহনকারী একটি গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালায়।
অ্যাম্বুলেন্সগুলো যখন সাহায্যের জন্য ওই এলাকায় পৌঁছায়, তখন ইসরায়েলের আকাশ থেকে নজরদারিকারীরা ঘটনাস্থলে থাকা সেনাদের তাদের অগ্রসর হওয়াকে 'সন্দেহজনক’ বলে জানায়।
আরও পড়ুন: গাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত ১৭
যখন অ্যাম্বুলেন্সগুলো হামাসের গাড়ির পাশে এসে থামে, সৈন্যরা ধরে নিয়েছিল যে তারা হুমকির মধ্যে রয়েছে এবং জরুরি দলের কেউই সশস্ত্র ছিল— এমন কোনো প্রমাণ না থাকা সত্ত্বেও গুলি চালানো হয়।
ইসরায়েল স্বীকার করেছে যে, অ্যাম্বুলেন্সগুলো বাতি না জ্বালিয়ে অগ্রসর হয়েছিল বলে তারা পূর্বে যে বক্তব্য দিয়েছিল তা ভুল ছিল। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সেনাদের দায়ী করা হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, গাড়িগুলো স্পষ্টভাবে লোগো দিয়ে চিহ্নিত করা ছিল এবং জরুরি চিকিৎসাকর্মীরা রিফ্লেক্টিভ হাই-ভিস ইউনিফর্ম পরিধান করেছিলেন।
ওই কর্মকর্তা দাবি করেন, সৈন্যরা বন্য প্রাণীদের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য ১৫ জন মৃত কর্মীর দেহ বালিতে পুঁতে রাখে। রাস্তা পরিষ্কার করার জন্য পরের দিন গাড়িগুলো সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো ওই এলাকায় চলাচল নিরাপদ করার ব্যবস্থা করতে না পারায় ঘটনার এক সপ্তাহ পরও তাদের সন্ধান পাওয়া যায়নি।
ত্রাণবাহী একটি দল যখন লাশগুলো খুঁজে পায়, তখন তারা রিফাত রাদওয়ানের মোবাইল ফোনও উদ্ধার করে। আর সেই মোবাইলে ধারণ করা ভিডিওগুলো থেকে এসব তথ্য উঠে আসে।
হত্যাকাণ্ডের শিকার কোনো চিকিৎসককে হাতকড়া পরানোর কথা অস্বীকার করে ইসরায়েলি সামরিক কর্মকর্তা বলেন, খুব কাছ থেকে তাদের হত্যা করা হয়নি—যেমনটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
এ সপ্তাহের শুরুর দিকে বেঁচে যাওয়া একজন চিকিৎসা কর্মী বিবিসিকে বলেন, অ্যাম্বুলেন্সগুলোর লাইট জ্বালিয়ে রাখা হয়েছিল এবং তার সহকর্মীদের কোনো সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পৃক্ততা থাকার কথা অস্বীকার করেন।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এই ঘটনার ‘পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত’ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছে যে তারা ‘ঘটনার প্রেক্ষাপট এবং পরিস্থিতি পরিচালনা করবে।’
ওই ঘটনায় ৮ জন রেড ক্রিসেন্ট কর্মী, ৬ জন দমকল কর্মী ও একজন জাতিসংঘের কর্মী নিহত হয়েছেন।
রেড ক্রিসেন্ট এবং অন্যান্য অনেক আন্তর্জাতিক সংস্থা একটি স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানিয়েছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস নেতৃত্বাধীন যোদ্ধারা ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় প্রায় ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি নিহত হন। এসময় ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায় হামাস যোদ্ধারা। এরপর যুদ্ধবিরতি চুক্তির মাধ্যমে বেশিরভাগ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। যদিও ইসরায়েলও অসংখ্য মৃতদেহসহ মুষ্টিমেয় কিছু ব্যক্তিকে উদ্ধার করেছে।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনিদের ‘মানবঢাল’ হিসেবে ব্যবহার করত ইসরায়েলি বাহিনী
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরাইলি হামলায় ৫০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। মন্ত্রণালয়টির দেওয়া হিসাবে বেসামরিক নাগরিক ও যোদ্ধার আলাদা হিসাব দেওয়া হয়নি। তথ্যমতে, নিহতদের অর্ধেকেরও বেশি নারী ও শিশু। ইসরায়েল প্রায় ২০ হাজার হামাস যোদ্ধাকে হত্যা করার দাবি করলেও এর সমর্থনে কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি।
চলমান এই যুদ্ধ গাজাকে ধ্বংস করেছে। বেশিরভাগ অঞ্চল ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ইসরায়েলি হামলার মাত্রা এতো বেশি যে, ভূখন্ডটির নজনসংখ্যার ৯০ শতাংশ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
সূত্র: বিভিন্ন এজেন্সি
১১ দিন আগে
গাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত ১৭
গাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েলি বিমান হামলায় আরও ১৭ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (৪ এপ্রিল) ভোরে চালানো বিমান হামলায় এসব মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।
অন্যদিকে ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের উত্তরাঞ্চলের আরও গভীরে প্রবেশ করেছে এবং হামাসের বিরুদ্ধে তাদের অভিযান জোরদার করেছে।
হামাস পরিচালিত গাজার হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসে বিমান হামলায় অন্তত ১৭ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের অনেকেই একই পরিবারের সদস্য। হামলা চালানোর কয়েক ঘণ্টা পরও ধ্বংসস্তূপের ভেতর থেকে জীবিতদের উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছেন উদ্ধারকর্মীরা।
আরও পড়ুন: নতুন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে হামাসের সম্মতি, পাল্টা প্রস্তাব ইসরায়েলের
এই হামলার মাত্র একদিন আগেই ইসরায়েলি হামলায় শতাধিক ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবরে হামাসের হাতে জিম্মি হওয়া ইসরায়েলিদের মুক্তি দিতে চাপ সৃষ্টি করতেই ইসরায়েল গাজায় হামলা বাড়িয়েছে। ইসরায়েলি বাহিননীর হামলায় গাজায় গত দুই সপ্তাহেই শত শত লোক মারা গেছেন।
শুক্রবার ইসরায়েল ঘোষণা করেছে, ‘নিরাপত্তা অঞ্চল’ বাড়ানোর জন্য তাদের স্থল বাহিনী গাজার উত্তরাঞ্চলে প্রবেশ করেছে।
স্থল অভিযানের আগে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী উত্তর গাজার কিছু অংশ থেকে খালি করার জন্য বাসিন্দাদের নির্দেশ দিয়েছিল।
গত মাসে হামাসের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ২ লাখ ৮০ হাজার ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা দপ্তর।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস নেতৃত্বাধীন যোদ্ধারা ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে অতর্কিত হামলা চালায়। এসময় প্রায় ১ হাজার ২০০ জন ইসরায়েলি নিহত হন। এসময় ২৫১ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে যায় হামাস যোদ্ধারা। এরপর যুদ্ধবিরতি চুক্তির মাধ্যমে বেশিরভাগ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। যদিও ইসরায়েলও অসংখ্য মৃতদেহসহ মুষ্টিমেয় কিছু ব্যক্তিকে উদ্ধার করেছে।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনিদের ‘মানবঢাল’ হিসেবে ব্যবহার করত ইসরায়েলি বাহিনী
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ইসরাইলি হামলায় ৫০ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। মন্ত্রণালয়টির দেওয়া হিসাবে বেসামরিক নাগরিক ও যোদ্ধার আলাদা হিসাব দেওয়া হয়নি। তথ্যমতে, নিহতদের অর্ধেকেরও বেশি নারী ও শিশু। ইসরায়েল প্রায় ২০ হাজার হামাস যোদ্ধাকে হত্যা করার দাবি করলেও এর সমর্থনে কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি।
চলমান এই যুদ্ধ গাজাকে ধ্বংস করেছে। বেশিরভাগ অঞ্চল ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। ইসরায়েলি হামলার মাত্রা এতো বেশি যে, ভূখন্ডটির নজনসংখ্যার ৯০ শতাংশ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
১২ দিন আগে