গাজা
গাজায় ‘জাহান্নামের সব দরজা’ খুলে দেওয়ার হুমকি ইসরায়েলের
দুদিনের মধ্যে জিম্মিদের মুক্তি দেওয়া না হলে গাজাবাসীর জন্য ‘জাহান্নামের সব দরজা’ খুলে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎয। বুধবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে তিনি এমন হুমকি দিয়েছেন।তার এই হুমকিকে পরোয়া করছে না বলেও পাল্টা জবাব দিয়েছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। এতে দুই পক্ষের মধ্যে হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তির বাস্তবায়ন নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। যদিও চুক্তিটি টিকিয়ে রাখতে চেষ্টা করছে মধ্যস্থতাকারী দেশ কাতার ও মিসর।
গত ১৯ জানুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়া যুদ্ধবিরতি চুক্তির আওতায় আগামী শনিবারে (১৫ ফেব্রুয়ারি) তিন ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্ত করে দেওয়ার কথা রয়েছে।
তবে স্থানীয় সময় সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) এক বিবৃতিতে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত আর কোনো ইসরায়েলি জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে না বলে জানায় হামাসের সামরিক শাখা কাশেম ব্রিগেডের এক মুখপাত্র।
হামাসের এই সিদ্ধান্তকে ‘যুদ্ধবিরতি চুক্তির পুরোপুরি লঙ্ঘন’ বলে দাবি করেছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী।
হামাসকে হুমকি দিয়ে মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, “হামাস যদি জিম্মি মুক্তির সময়সীমা মেনে না চলে, ‘তীব্র লড়াই’ শুরু করবে ইসরায়েল।”
আরও পড়ুন: চুক্তি লঙ্ঘনের অভিযোগ: জিম্মিদের ফেরত দিচ্ছে না হামাস
নেতানিয়াহু আরও বলেন, তিনি গাজার ভেতরে ও আশপাশে ইসরায়েলি বাহিনীকে জড়ো হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। এর কিছুক্ষণ পরই গাজা সীমান্তবর্তী ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে অতিরিক্ত সেনা পাঠানো ও রিজার্ভ সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দেয় ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী।
এ ছাড়াও হামাসের সিদ্ধান্তে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) হোয়াইট হাউসে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘শনিবারের মধ্যে বন্দিবিনিময় সম্পন্ন না করা হলে যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাতিল হওয়া উচিত।’
তবে ট্রাম্প ও নেতানিয়াহুর হুমকিকে উড়িয়ে দিয়েছে হামাস। গতকাল মঙ্গলবার হামাসের এক নেতা সব ধরনের হুমকি উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ‘কেবল যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে চললেই গাজা থেকে জিম্মিদের ফেরত নিতে পারবে ইসরায়েল।’
এ পরিস্থিতে মধ্যস্থতাকারী দেশগুলো চুক্তি বজায় রাখতে তৎপরতা শুরু করেছে। যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য হামাসের একটি প্রতিনিধি দল মিসরে অবস্থান করছে।
এই আলোচনায় সংশ্লিষ্ট নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মিসরীয় কর্মকর্তা বলেন, ইসরায়েল ও গাজা একটি সমঝোতায় আসতে চলেছে। গাজায় আরও বেশি তাঁবু, আশ্রয়কেন্দ্র ও ভারী সরঞ্জাম পাঠানোতে সম্মত হয়েছে ইসরায়েল।
হামাসের কর্মকর্তা মাহমুদ মারদাওই বলেন, শনিবারে ৩ ইসরায়েলি বন্দি মুক্তির ক্ষেত্রে ‘ইতিবাচক ইঙ্গিত’ রয়েছে। তবে চুক্তি মেনে চলার ব্যাপারে ইসরায়েলের প্রতিশ্রুতির ব্যাপারে কোনো আনুষ্ঠানিক বার্তা তারা পাননি।
চুক্তি বজায় রাখার এই চলমান আলোচনা প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করেনি ইসরায়েলের কর্মকর্তারা।
৯ দিন আগে
সাময়িকভাবে গাজাবাসীদের সরাতে চান ট্রাম্প: রুবিও
ফিলিস্তানিদের অন্যত্র পুনর্বাসিত করার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার দখল নেওয়ার বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। ট্রাম্পের ওই বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেছেন, দীর্ঘমেয়াদে কিংবা স্থায়ীভাবে নয়, যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার পুনর্গঠনের জন্য উপত্যকাটি থেকে সাময়িকভাবে ফিলিস্তিনিদের অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।
গুয়েতেমালা সফরকালে স্থানীয় সময় বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রুবিও বলেন, প্রেসিডেন্টের (ট্রাম্প) প্রস্তাবটি ‘শত্রুভাবাপন্ন’ নয়, বরং গাজাবাসীর প্রতি এটি একটি ‘উদার পদক্ষেপ’। উপত্যকার পুর্নগঠনে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ দেখাতে চেয়েছেন তিনি।
‘গাজাকে বসবাসযোগ্য করতে সেখান থেকে যুদ্ধের ধ্বংসাবশেষ সরানো প্রয়োজন। সে সময়ে গাজার বাসিন্দারা সেখানে থাকতে পারবেন না।’
এর আগে, মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) হোয়াইট হাউজে ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকের পর এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ফিলিস্তিনিদের অন্যত্র পুনর্বাসিত করে যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার দখল নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন ট্রাম্প। তার এই বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেন জাতিসংঘ ও বিভিন্ন মানবাধিকারবিষয়ক প্রতিষ্ঠানসহ আরব দেশগুলোর নেতারা।
এদিকে, হোয়াইট হাউজের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিটও একই ধরনের কথা বলেছেন। তার ভাষ্যে, ট্রাম্পের বক্তব্যের উদ্দেশ্য গাজায় ‘সেনা মোতায়েন করে’ উপত্যকাটির দখল নেওয়া নয়। ওই অঞ্চলটি বর্তমানে মানুষের বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় কাউকে সেখানে বসবাস করতে দেওয়াটাও অমানবিক।
আরো পড়ুন:গাজায় যুক্তরাষ্ট্রের মালিকানা ও সেনা মোতায়েনের প্রস্তাব ট্রাম্পের
দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতা গ্রহণের পর গাজা থেকে বর্জ্য সরানোর নামে উপত্যকার বাসিন্দাদের অন্যত্র স্থানান্তর করে ‘ক্লিন গাজা’ মিশন পূরণ করতে চেয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। এ লক্ষ্যে তিনি ফিলিস্তানিদের আশ্রয় দেওয়ার জন্য মিসর ও জর্ডানকে আহ্বান জানিয়েছিলেন। তবে ট্রাম্পের ওই প্রস্তাবকে ‘অনৈতিক’ আখ্যা দিয়ে ওই দুই দেশ ছাড়াও অন্যান্য আরব দেশগুলো তা প্রত্যাখ্যান করে।
এরপর মঙ্গলবার শুধু গাজাবাসীদের সরানোই নয়, গাজার ওপর অধিকার নিতে চান বলেই ঘোষণা দেন ট্রাম্প। গাজাকে তিনি ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভেরিয়া’ বানাতে চান বলেও সে সময় জানান তিনি।
ট্রাম্পের ওই বক্তব্যের পর বিশ্বজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। মিসর, জর্ডান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশের নেতারা এর তীব্র নিন্দা জানান।
এক প্রতিবেদনে বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেস (এপি) জানিয়েছে, দীর্ঘমেয়াদে কিংবা সাময়িক—কোনোভাবেই গাজাবাসীদের নিজ ভূমি ত্যাগ করতে বাধ্য করার পক্ষপাতী নন তারা।
তবে নিন্দিত হলেও ট্রাম্পের প্রস্তাবে ‘দোষের কিছু’ দেখছেন না ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট নেতানিয়াহু। ট্রাম্পের বক্তব্যের সমালোচনার মধ্যে নিজের এই অবস্থান স্পষ্ট করেছেন তিনি।
১৬ দিন আগে
গাজায় যুক্তরাষ্ট্রের মালিকানা ও সেনা মোতায়েনের প্রস্তাব ট্রাম্পের
গাজা যুদ্ধে উদ্বাস্তু হওয়া ফিলিস্তিনিদের উপত্যকাটির বাইরে স্থায়ীভাবে পুনর্বাসনের পরামর্শ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুদ্ধ বিধ্বস্ত অঞ্চলটি নতুন করে নির্মাণে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘমেয়াদি মালিকানা নেওয়ারও প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। এমনকি ভূখণ্ডটিতে সেনা মোতায়েনের কথাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট।
হোয়াইট হাউসে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকের সময় তিনি এই পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন। এ সময়ে গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিদের মুক্তির বিষয়েও দুই নেতার কথা হয়েছে।-খবর অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি)।
ট্রাম্পের এই প্রগলভ প্রস্তাবে হামাস ও ইসরাইলের মধ্যকার ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতি দীর্ঘায়িত করার আলোচনার পরবর্তী ধাপে আরও ক্ষোভ তৈরি হতে পারে। দুইপক্ষের হাতে বন্দিদের মুক্তির বিষয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দিতে পারে।
গাজায় মানবিক সহায়তা ও পুনর্গঠন নিয়ে যখন কথা হচ্ছে, তখন এসব উসকানিমূলক কথাবার্তাও বাড়িয়ে দিয়েছেন ট্রাম্প। গেল ১৫ মাসের যুদ্ধে পুরো গাজা অঞ্চল মাটিতে মিশে গেছে। সেখানে মানবিক সংকট দেখা দিয়েছে বলে খবরে উঠে এসেছে।
এখন গাজার ১৮ লাখ মানুষকে উপত্যকাটির বাইরে নিয়ে পুনর্বাসনের কথা বলছেন যুক্তরাষ্ট্রের এই প্রেসিডেন্ট। অথচ এ অঞ্চলটি তাদের মাতৃভূমি, এখানেই তাদের জন্ম ও বেড়ে উঠেছেন। অঞ্চলটিকে ট্রাম্প এখন যুক্তরাষ্ট্রের বলে দাবি করছেন, সম্ভবত সেনা মোতায়েনের কথাও ভাবছেন।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমি মনে করি না, লোকদের ফিরে যাওয়া উচিত। তারা তো এখন গাজায় বসবাস করতে পারবেন না। আমি মনে করি, তাদের জন্য আরেকটি জায়গা দরকার। এটি এমন একটি জায়গা হওয়া উচিত, যা লোকজনকে সুখি করতে পারবে।’
আরও পড়ুন: আমেরিকানদেরও ‘কিছু যন্ত্রণা’ সইতে হবে: ট্রাম্প
‘যুক্তরাষ্ট্রের উচিত গাজার মালিকানা নিয়ে নেওয়া। এরপর ফিলিস্তিনিদের অন্য কোথাও পুনর্বাসন করে উপত্যকাটি পুনর্নির্মাণ করতে হবে, যাতে সেটি‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভেয়ারায়’ রূপান্তর হয়ে যায়, যেখানে ‘পৃথিবীর মানুষ’—ফিলিস্তিনিসহ—বসবাস করবেন,’ বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
ইতালীয় শব্দ রিভেয়ারা বলতে উপকূলীয় অঞ্চল বোঝায়।
তিনি বলেন, ‘আমি আশ্বস্ত করতে পারি, এটা বিশ্বমানের হবে। লোকজনের জন্য এটা খুবই চমৎকার হবে—ফিলিস্তিনিদের, আমরা অধিকাংশ ক্ষেত্রে ফিলিস্তিনিদের নিয়েই আলোচনা করছি।’
ট্রাম্পকে সতর্ক করে দিয়ে মিসর, জর্ডান ও অন্য মার্কিন মিত্ররা বলছেন, গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের অন্য কোথাও পুনর্বাসন করলে মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতা হুমকিতে পড়বে, সংঘাত দীর্ঘায়িত হয়ে যাবে। পাশাপাশি কয়েক দশক ধরে দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের যে কথা যুক্তরাষ্ট্র ও মিত্ররা বলে আসছে, সেটিও দুর্বল হয়ে যাবে।
কিন্তু এই ধ্বংসস্তূপ থেকে ফিলিস্তিনিদের অন্য কোথাও যাওয়ার বিকল্প নেই বলে দাবি করছেন ট্রাম্প। আর তার শীর্ষ সহযোগী বলছেন, পুরো অঞ্চলটি পুনর্নির্মাণে তিন থেকে পাঁচ বছর সময় লাগবে।
গেল সপ্তাহে গাজাবাসীকে অন্য কোথাও পুনর্বাসনে ট্রাম্পের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন মিসরীয় প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি ও জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ। কিন্তু ট্রাম্পের দাবি, মিসর-জর্ডান ও অন্য কয়েকটি দেশ এ বিষয়ে তার সঙ্গে একমত হয়েছে।
ট্রাম্প বলেন, কয়েক দশক ধরে দেখছেন যে গাজায় সবাই মারা যাচ্ছেন। বছরের পর বছর ধরে এমনটা ঘটছে। এখানের সবাই মৃত। লোকজনকে স্থায়ীভাবে পুনর্বাসন করে আমরা একটি সুন্দর এলাকা পেতে পারি, সুন্দর বাড়িঘর, যেখানে তারা সুখে থাকতে পারবেন। কোনো গোলাগুলি হবে না, কেউ হত্যাকাণ্ডের শিকার হবে না, কেউ ছুরিকাঘাতে মরবে না, যেটা গাজায় এখন ঘটছে।
গাজা পুনর্গঠনে সেনা মোতায়েনের কথাও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তিনি। অঞ্চলটি নতুন করে গড়ে তুলতে দীর্ঘমেয়াদি মার্কিন মালিকানার স্বপ্ন দেখছেন ট্রাম্প। নিরাপত্তা ঘাটতি পূরণে আমেরিকান সেনা মোতায়েনের সম্ভাব্যতার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যেটা করা দরকার, সেটিই আমরা করবো।’
এমন এক সময় গাজা নিয়ে নিজের পরিকল্পনার কথা বলছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট, যখন ভূখণ্ডটিতে হামাস-ইসরাইল যুদ্ধবিরতি এক অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন: মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েলের অবস্থান মজবুত করতে বৈঠকে বসছেন ট্রাম্প-নেতানিয়াহু
১৭ দিন আগে
গাজা থেকে মিসর-জর্ডানে শরণার্থী বাড়াতে ট্রাম্পের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান হামাসের
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা থেকে মিসর ও জর্ডানের আরও বেশি শরণার্থী নেওয়া উচিত বলে যে মন্তব্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড করেছেন, তা প্রত্যাখ্যান করেছে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। জর্ডানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও সুস্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন যে তাদের পক্ষে ট্রাম্পের এই নির্দেশনা গ্রহণ করা সম্ভব না।
গাজা উপত্যকার জন্য এটি কী অস্থায়ী কিংবা দীর্ঘমেয়াদি সমাধান, প্রশ্নে ট্রাম্প বলেন, ‘দুটোই হতে পারে।’
ইসরাইলি সামরিক বাহিনীর হামলায় গাজায় ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এখন পর্যন্ত ৪৫ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: মার্কিন অভিবাসী ফ্লাইট অবতরণের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান, নিষেধাজ্ঞার মুখে কলোম্বিয়া
ট্রাম্পের এই মন্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছেন ইসরাইলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ। তিনি বলেন, এটি একটি চমৎকার আইডিয়া। এটি বাস্তবায়ন করার পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করে দেব।
কিন্তু বিষয়টিকে সন্দেহের চোখে দেখছে হামাস। বাড়িঘর থেকে ফিলিস্তিনিদের স্থায়ীভাবে উচ্ছেদের যে শঙ্কা রয়েছে, ট্রাম্পের বক্তব্যে সেটিই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে বলে মনে করছে তারা।
হামাসের রাজনৈতিক শাখার সদস্য বাসেম নাইম বলেন, বিষয়টি ভালো উদ্দেশ্য হিসেবে দেখা দিলেও এমন কোনো সমাধান কিংবা প্রস্তাব গ্রহণ করবে না ফিলিস্তিনিরা।
আর পূর্বসূরি জো বাইডেনের মতো ট্রাম্পকেও কোনো ‘ব্যর্থ ধারণার’ পুনরাবৃত্তি না করার আহ্বান জানিয়েছেন আরেক হামাস নেতা সামি আবু জুহরি। তিনি বলেন, ‘ফিলিস্তিনিরা মরতে রাজি, কিন্তু তারা নিজেদের মাতৃভূমি ছাড়তে চায় না। কোনো অজুহাতে তারা এই ভূখণ্ড ছেড়ে যাবে না।’
ট্রাম্পের এই নির্দেশনা প্রত্যাখ্যান করেছে জর্ডানও। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান সাফাদি সাংবাদিকদের বলেন, গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের উৎখাতের বিরুদ্ধে জর্ডানের অবস্থান আগের মতোই অবিচল ও কঠোর।
এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত মিসরের কাছ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। কিন্তু ফিলিস্তিনিদের নিজ ভূখণ্ড থেকে উৎখাতের বিরোধিতা করে আসছেন তারা।
ফিলিস্তিনি বিশ্লেষক গাসসান আল-খতিব বলন, অধিকৃত পশ্চিমতীর, গাজা উপত্যকাসহ জর্ডান ও মিসরে বাস করা ফিলিস্তিনিরাও ট্রাম্পের এই ধারণাকে গ্রহণ করবেন না। আমি মনে করি না, এমন কিছু ভাবার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
নিজেদের মাটি থেকে ফিলিস্তিনিদের জোরপূর্বক উচ্ছেদে সমর্থন করে না বলে গতবছর জানিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র। এছাড়া গাজার পরিস্থিতি নিয়ে মানবাধিকার সংস্থাগুলো বছরজুড়ে উদ্বেগ জানিয়ে আসছে।
কিন্তু সমালোচনার মুখে পড়লেও ইসরাইলকে সমর্থন দেওয়া অব্যাহত রেখেছে যুক্তরাষ্ট্র। হিজবুল্লাহ, হুতি ও হামাসের মতো মিলিশিয়াদের বিরুদ্ধে ইসরাইলের প্রতিরক্ষায় সহায়তার কথা বলছে ওয়াশিংটন।
আরও পড়ুন: ইসরাইলি অবরোধ, বাড়িঘরে ফিরতে পারছেন না ফিলিস্তিনিরা
শনিবার জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহর সঙ্গে ফোনকলের পর ট্রাম্প বলেন, ‘আমি তাকে বলেছি, তারা যাতে আরও বেশি শরণার্থী গ্রহণ করেন। কারণ জায়গাটি (গাজা) এখন একেবারে বিশৃঙ্খলায় অবস্থায় আছে। মিসরকেও একই কথা বলবো।
এ বিষয়ে মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির সঙ্গে কথা বলবেন বলেও জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
২৬ দিন আগে
গাজায় ১৫ মাসের বিয়োগান্তক উপাখ্যান শেষে যুদ্ধবিরতির বার্তা
টানা ১৫ মাস ধরে গাজাবাসী অপেক্ষায় ছিলেন যুদ্ধ বন্ধের। শত-সহস্র প্রাণ ঝড়ে যাওয়ার পর অবশেষে এলো সেই মাহেন্দ্রক্ষণ।যুক্তরাষ্ট্র, মিসর আর কাতারের মধ্যস্থতায় যুদ্ধ বিরতিতে রাজি হয়েছে হামাস আর ইসরাইল। রোববার থেকে গাজার আকাশে দেখা যাবে না আর কোনো ইসরাইলি বোমারু বিমান।আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাগুলো বলছে, ২০২৪ সালের মধ্যভাগ থেকে চলছিল যুদ্ধবিরতির আলোচনা। একদিকে গোলটেবিল বৈঠক আর অন্যদিকে গাজার ওপর মুহুর্মুহু বোমাবর্ষণ। ২০২৩ সালে ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় নিহত এক হাজার ২০০ ইসরাইলির লাশের কাফফারা দিতে হয়েছে ৪৭ হাজার ফিলিস্তিনির জীবনের বিনিময়ে।মা হারিয়েছেন তার সন্তান, সন্তান হারিয়েছেন বাবা-মাকে, মৃত সন্তানের কফিন কাঁধে তুলে নিতে হয়েছে পিতাকে, বাস্তুচ্যুত হয়ে থাকতে হয়েছে ক্যাম্পে ক্যাম্পে। অনাহারে অর্ধাহারে বেঁচে থাকা। সকালে যার সঙ্গে নাস্তা করেছেন, দুপুরে হয়তো সেই প্রিয়জনের লাশ কাঁধে নিয়ে যেতে হয়েছে গোরস্থানে। এইতো ছিল ১৫ মাস ধরে গাজাবাসীর জীবন।সারা বিশ্বকে নাড়া দিয়েছে গাজার আর্তনাদ। প্রতিটি মানবাধিকার সংস্থা বলেছে, এটা আর কিছু না, নিরাপত্তার ধোয়া তুলে রীতিমতো প্রতিহিংসার খেলায় মেতে উঠেছে ইসরাইল। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, স্রেফ গণহত্যা চালানো হয়েছে গাজায়। যুদ্ধাপরাধের দায়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে।অবশেষে সেই খুশির খবর। প্রায় অর্ধলক্ষ নিরীহ ফিলিস্তিনির লাশের ওপর দাঁড়িয়ে বোধোদয় হলো বিশ্ব মোড়লদের, ঘোষিত হলো যুদ্ধবিরতি।রোববার থেকে গাজার রাতের আকাশে হয়তো আর যুদ্ধবিমান না, দেখা মিলবে জ্বলজ্বলে নক্ষত্রের। হয়তো স্বজনহারা গাজাবাসী আবারও নতুন উদ্যোমে বাঁচতে শুরু করবে। সব ভুলে হয়তো ফিলিস্তিনের ধ্বংসস্তূপের ওপর ফুটবে নতুন দিনের লাল গোলাপ।পাঁচ দিন আগে ডোনাল্ড ট্রাম্পের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের শেষ মুহূর্তে মুখ রক্ষা করলেন জো বাইডেন। জানালেন, রোববার থেকেই ইসরাইলের সৈন্যরা ছাড়তে শুরু করবে গাজার মাটি। যারা বাড়িছাড়া হয়ে এতদিন উদ্বাস্তুর মতো বেঁচে ছিলেন, তারা ফিরে যাবেন নিজ গৃহে। আবারও আন্তর্জাতিক সাহায্য আসবে গাজার মাটিতে, শিশুর শূন্য থালায় জায়গা করে নিবে শুকনো রুটি।জাতিসংঘেরও জোর সেদিকেই। যুদ্ধ তো শেষ হলো, এবার এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সামলানোর আহ্বান সংস্থাটির মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতারেসের।হামাসের হাতে এখনো বন্দি ৯৪ জন ইসরাইলের নাগরিক, চুক্তি মোতাবেক যাদের মুক্তি দিতে হবে শিগগিরই। যদিও ইসরাইল সরকারের ধারণা এদের মধ্যে ৩৪ জন হয়তো আর বেঁচেই নেই। তবে হামাস জানিয়েছে, যারা বেঁচে আছেন, তাদের সবাইকেই ফেরত পাঠানো হবে ইসরাইলে।বুধবার গাজার রাত ছিল ভিন্নরকমের। যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বিমান হামলায় নিহত ৩ ফিলিস্তিনি। শেষবেলায়ও শোধ তুলে নিতে ভুল করেনি আগ্রাসী ইসরাইল। তবুও রাতের আঁধার আর বোমার আঘাতকে তুচ্ছ করে তাবু ছেড়ে রাস্তায় বেড়িয়ে পড়ে গাজাবাসী। সবচেয়ে অবাককাণ্ড এত ক্ষয়, এত মৃত্যু, এত রক্ত; এরপরও ফিলিস্তিনিদের সৃষ্টিকর্তঅর প্রতি বিশ্বাসে ভাটা পড়েনি এতটুকু। রীতিমতো আল্লাহু আকবর ধ্বনিতে আনন্দ উদযাপন করেছেন তারা।এই আনন্দ ঘরে ফেরার, নিজের টেবিলে বসে আহার করার, নিজের বিছানায় ঘুমানোর। হয়তো যে সন্তানকে কোলে নিয়ে মা ঘুমাতো সেই বুকের ধন বেঁচে নেই। হয়তো যে বাবার আঙুল ধরে স্কুলে যাতায়াত বোমার আঘাতে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে তার শরীর। যে ঘরে হয়তো প্রতিদিন বসতো চাঁদের হাট সেখানে ফিরতে হবে একা। তারপরও বেঁচে থাকাই যেন অনেক কিছু গাজাবাসীর জন্য। আর এই বেঁচে থাকার উদ্যোম নিয়েই এত আঘাতের পরেও মেরুদণ্ড সোজা করে মানচিত্র আঁকড়ে ধরে টিকে আছে ফিলিস্তিন, স্বপ্ন তাদের স্বাধীনতার।
৩৭ দিন আগে
গাজায় ইসরাইলি হামলায় নারী ও শিশুসহ ১২ ফিলিস্তিনি নিহত
নতুন বছরের শুরুতে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় তিনটি ইসরাইলি হামলায় অন্তত ১২ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। বুধবার (২ জানুয়ারি) স্থানীয় কর্মকর্তারা এমন তথ্য দিয়েছেন।
উত্তর গাজার বিচ্ছিন্ন এলাকা জাবালিয়ার একটি বাড়িতে প্রথম হামলার ঘটনা ঘটেছে। গেল প্রায় ১৫ মাস ধরে চলা এই যুদ্ধে উপকূলীয় অঞ্চলটিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে জাবালিয়া। অক্টোবরের শুরুর দিক থেকে সেখানে ব্যাপক সামরিক অভিযান চালিয়ে আসছে ইসরাইলি বাহিনী। খবর এপির।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এক নারী ও চারটি শিশুসহ জাবালিয়ায় অন্তত সাতজন নিহত হয়েছেন। ইসরাইলি সামরিক বাহিনী বলছে, তারা হামাস যোদ্ধাদের নির্মূল করছে।
আরও পড়ুন: গাজার ২ স্কুলে ইসরায়েলি হামলায় ১৭ জন নিহত
আল-আকসা মার্টায়ারস হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, মধ্য গাজার বুরেইজ শরণার্থী শিবিরে আরেক ইসরাইলি হামলায় এক নারী ও একটি শিশু নিহত হয়েছে।
একটি শিশুর মরদেহ বহন করে নিয়ে যাওয়া এক ফিলিস্তিনি বলেন, ‘আপনারা কী নতুন বছর উদযাপন করছেন? উপভোগ করুন, যখন আমরা হত্যাকাণ্ডের শিকার হচ্ছি। গেল দেড় বছর ধরে আমাদের ওপর দিয়ে এই হত্যাকাণ্ড চালানো হচ্ছে।’
ইসরাইলি বাহিনী জানিয়েছে, রাতে বুরেইজ এলাকা থেকে ইসরাইলে রকেট হামলা করা হয়েছে। এই হামলার মাধ্যমে সেই জবাব দেওয়া হয়েছে।
তৃতীয় হামলাটি চালানো হয়েছে খান ইউনিসে। এতে অন্তত তিন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। স্থানীয় নাসের হাসপাতাল ও ইউরোপীয় হাসপাতালে তাদের মরদেহ পাঠানো হয়েছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে অভিযান চালিয়ে এক হাজার ২০০ অবৈধ বসতিস্থাপনকারী ইসরাইলিকে হত্যা করে ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস। এছাড়া আরও ২৫০ জনকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়। অপহৃতদের মধ্যে প্রায় ১০০ ইসরাইলি এখনো গাজায় বন্দি আছেন ও তিনজন নিহত হয়েছেন।
এরপর থেকে ইসরাইলি হামলায় অন্তত ৪৫ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। নিহতদের অর্ধেকের বেশি নারী ও শিশু।
আরও পড়ুন: গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ২৫ জন নিহত
৫১ দিন আগে
গাজায় ইসরায়েলি অভিযানে ৩৩ জিম্মি নিহত: হামাস
সোমবার গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযানে ৩৩ জন ইসরায়েলি জিম্মির মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে হামাস। এ ঘটনায় এখনও নিখোঁজ রয়েছেন আরও কয়েকজন।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর 'একগুঁয়েমি ও অব্যাহত আগ্রাসন বন্দিদের মৃত্যুর সংখ্যা বাড়িয়ে তুলছে' বলে মন্তব্য করেছে হামাস।
নেতানিয়াহুর উদ্দেশে হামাস এক বক্তব্যে বলে, 'উন্মত্ত যুদ্ধ' অব্যাহত থাকলে 'আপনি আপনার বন্দিদের চিরতরে হারাতে পারেন। খুব দেরি হওয়ার আগেই ব্যবস্থা নিন।’
হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসসাম ব্রিগেড শনিবার গাজায় এক ইসরায়েলি বন্দিকে আটক রাখার একটি ভিডিও প্রকাশ করে। ওই নাগরিকের মার্কিন নাগরিকত্বও রয়েছে। এর দু'দিন পরে হামাসের এই ভিডিও এসেছিল।
আরও পড়ুন: উত্তর গাজায় ১৫ ইসরায়েলি সেনাকে হত্যার দাবি হামাসের
এডান আলেকজান্ডার বলেন, তাকে ৪২০ দিনেরও বেশি সময় ধরে বন্দি করে রাখা হয়েছিল। ইসরায়েলি সরকার ও যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতি গাজার বাকি বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানান তিনি।
একজন ইসরায়েলি-আমেরিকান সৈন্য আগে গাজায় জিম্মি ছিল বলে মনে করা হতো। সোমবার ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ঘোষণা দেয়, এখন তাকে মৃত মনে করা হচ্ছে।
এক বিবৃতিতে সেনাবাহিনী ওই সেনাকে ক্যাপ্টেন ওমর ম্যাক্সিম নিউট্রা (২১) বলে শনাক্ত করেছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের অতর্কিত হামলায় নিহত হয় তিনি। এতে আরও বলা হয়, তার মরদেহ গাজায় হামাস আটকে রেখেছে।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, নিউইয়র্কে জন্মগ্রহণকারী নিউট্রা ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনীতে তালিকাভুক্ত হন এবং ৭৭তম ব্যাটালিয়নে ট্যাংক প্লাটুন কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েল সীমান্তে হামাস আক্রমণ করে। সে সময় প্রায় ১,২০০ মানুষ নিহত এবং প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করা হয়েছিল। এর প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েল গাজায় হামাসের ওপর আক্রমণ চালায়।
গাজা উপত্যকায় চলমান ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৪ হাজার ৪৬৬ জনে দাঁড়িয়েছে বলে সোমবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে গাজাভিত্তিক স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।
হামাস পরিচালিত গাজা সরকারের গণমাধ্যম কার্যালয় জানায়, গত ৫ অক্টোবর গাজার উত্তরাঞ্চলে ইসরায়েল সামরিক অভিযান জোরদার করার পর থেকে এ পর্যন্ত ৩ হাজার ৭০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত বা নিখোঁজ হয়েছেন।
আরও পড়ুন: নেদারল্যান্ডসে ইসরায়েলি ফুটবল সমর্থকদের ওপর হামলা
৮১ দিন আগে
গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ভেটো দিল যুক্তরাষ্ট্র
গাজায় ইসরায়েল-হামাসের চলমান যুদ্ধ বন্ধে অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবিতে জাতিসংঘের একটি প্রস্তাবে ভেটো দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আমেরিকা বলেছে, বুধবারের (২০ নভেম্বর) উত্থাপিত প্রস্তাবটিতে হামাসের হাতে এখনও আটক ইসরায়েলি জিম্মিদের তাৎক্ষণিক মুক্তির বিষয়টি নেই।
এদিকে লেবাননে ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে অগ্রগতির লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। তবে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলেছেন, তার দেশ যুদ্ধ বন্ধের যেকোনো চুক্তিতে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের অধিকার চায়।
লেবাননের সরকার সম্ভবত এ ধরনের যেকোনো দাবিকে তার দেশের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন হিসেবে দেখবে।, যা ইসরায়েল ও হিজবুল্লাহর মধ্যে সেপ্টেম্বর থেকে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা সর্বাত্মক যুদ্ধের অবসানের প্রচেষ্টাকে জটিল করে তুলবে।
লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, লেবাননে ইসরায়েলি বিমান হামলা ও স্থল যুদ্ধে সাড়ে তিন হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আর আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৫ হাজার মানুষ। যুদ্ধের কারণে প্রায় ১২ লাখ মানুষ বা লেবাননের মোট জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
অন্যদিকে রকেট, ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ইসরায়েলের ৮৭ সেনা ও ৫০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের অভিযানের পরদিন থেকেই ইসরায়েলে গোলাবর্ষণ শুরু করে হিজবুল্লাহ।
গাজা উপত্যকায় ইসরাইলের প্রতিশোধমূলক যুদ্ধে প্রায় ৪৪ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। ৭ অক্টোবরের হামাসের ওই হামলায় ইসরায়েলে প্রায় ১২০০ মানুষ নিহত হয়, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক এবং আরও ২৫০ জনকে অপহরণ করা হয়। গাজার অভ্যন্তরে প্রায় ১০০ জন ইসরায়েলি জিম্মি রয়েছে। যাদের অন্তত এক তৃতীয়াংশ নিহত বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: গাজায় ত্রাণের ট্রাক লুট, ২০ জনকে হত্যা করেছে হামাস
৯৩ দিন আগে
গাজায় সাহায্য ও ইউক্রেন যুদ্ধ সমাধানের আহ্বান জি২০ সম্মেলনে
দারিদ্র্য ও ক্ষুধা মোকাবিলার জন্য বৈশ্বিক চুক্তি, যুদ্ধ-বিধ্বস্ত গাজা অঞ্চলে আরও সহায়তা দান এবং মধ্যপ্রাচ্য ও ইউক্রেনে যুদ্ধের অবসানের আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্বের ২০টি প্রধান অর্থনীতির দেশের নেতারা।
সোমবার এ বিষয়ে একটি যৌথ ঘোষণা জারি করেন তারা। তবে, এই ঘোষণাকে সাধারণ দিক-নির্দেশনা বলা যায়, এসব লক্ষ্য অর্জনের জন্য নির্দিষ্ট কৌশল বা বিস্তারিত কোনো পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়নি এতে।
যৌথ বিবৃতিতে জোট সদস্যরা সমর্থন করলেও সম্পূর্ণ ঐকমত্য অর্জন করা যায়নি। এতে ভবিষ্যতে বিলিওনিয়ারদের ওপর একটি বৈশ্বিক কর আরোপ এবং জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচটি স্থায়ী সদস্যের বাইরেও সদস্য সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য সংস্কারের আহ্বান জানানো হয়েছে।
তিন দিনের এ বৈঠকে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা সমবেত নেতাদের নিয়ে কোনো সমঝোতায় পৌঁছাতে পারবেন কি না-তা নিয়ে বিশেষজ্ঞরা সন্দেহ প্রকাশ করেন।
প্রাথমিক খসড়ায় কিছু ভাষার বিষয়ে চ্যালেঞ্জ জানায় আর্জেন্টিনা এবং এটিই একমাত্র দেশ যা সম্পূর্ণ ঘোষণায় সমর্থন করেনি।
স্বাধীন রাজনৈতিক পরামর্শক ও ব্রাজিলের সাবেক মন্ত্রী টমাস ট্রমা বলেন, 'যদিও এটি সাধারণ, তবে ব্রাজিলের জন্য এটি ইতিবাচক চমক। এমন সময়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে, এ মুহূর্তে কোনো ঘোষণা দেওয়া হবে বলেই আশঙ্কা ছিল। এত সতর্কতা সত্ত্বেও এটা লুলার জন্য ইতিবাচক।’
যুদ্ধের নিন্দা, শান্তির ডাক, কোনো দোষারোপ নয়
ইসরায়েলে ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার এক বছরের বেশি সময় পরে এ ঘোষণাপত্রে ‘গাজার বিপর্যয়কর মানবিক পরিস্থিতি এবং লেবাননে উত্তেজনা বৃদ্ধির’ কথা উল্লেখ করা হয়েছে। মানবিক সহায়তা সম্প্রসারণ এবং বেসামরিক নাগরিকদের আরও ভালোভাবে রক্ষা করার জরুরি প্রয়োজনের উপর জোর দেওয়া হয়েছে।
এতে বলা হয়, 'ফিলিস্তিনিদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের প্রতি আমরা সমর্থন দিচ্ছি। দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি আমাদের অঙ্গীকার অবিচল। অর্থাৎ ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র শান্তিতে পাশাপাশি বসবাস করবে।’
এতে ইসরাইলের দুর্ভোগ বা হামাসের হাতে জিম্মি থাকা ১০০ জনের কথা উল্লেখ করা হয়নি। ইসরায়েল জি-২০ এর সদস্য নয়। লেবাননের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে ইসরায়েলের অভিযানের পর যুদ্ধে গাজায় এ পর্যন্ত ৪৩ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি এবং লেবাননে সাড়ে তিন হাজারেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে।
ইসরায়েলের দুর্দশার উল্লেখ যে বাদ পড়েছে, তা মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকারের প্রতি ধারাবাহিক সমর্থনের বিপরীতে চলে বলে মনে হয়েছিল। এটি এমন একটি বিষয় যা বাইডেন সর্বদা প্রকাশ্যে উল্লেখ করেন, এমনকি যখন তিনি ফিলিস্তিনিদের ওপর অবহেলার বিষয়েও কথা বলেন। জি২০ নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে, ঘোষণা চূড়ান্ত করার আগে, বাইডেন বলেন হামাসই এই যুদ্ধের একমাত্র দায়ী এবং তিনি অন্যান্য নেতাদের কাছে হামাসের ওপর চাপ বাড়ানোর আহ্বান জানান; যেন তারা একটি যুদ্ধবিরতির চুক্তি মেনে নেয়।
ইউক্রেনকে আরও গভীরভাবে রাশিয়ার ভেতরে আঘাত হানতে মার্কিন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা শিথিল করার বিষয়ে বাইডেনের সিদ্ধান্তও এই বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
সম্মেলনে বাইডেন বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র দৃঢ়ভাবে ইউক্রেনের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে সমর্থন করে। আমার মতে, এই টেবিলের চারপাশে বসা সবারই এভাবে সমর্থন করা উচিত।’
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বৈঠকে উপস্থিত হননি। তার পররাষ্ট্র মন্ত্রী সেরগেই লাভরভকে পাঠিয়েছেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত তাকে গ্রেপ্তার করতে সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে বাধ্য করার পর থেকে পুতিন এসব সম্মেলন এড়িয়ে চলছেন।
জি২০ ঘোষণাপত্রে ইউক্রেনে মানবিক বিপর্যয়ের উল্লেখ করা হয়েছে এবং শান্তির আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে সেখানে রাশিয়ার নাম উল্লেখ করা হয়নি।
রিও ডি জেনেইরোর স্টেট ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক পাওলো ভেলাসকো বলেন, ‘ঘোষণাটি দোষীদের প্রতি আঙুল তোলার বিষয়টি এড়িয়ে গেছে। অর্থাৎ, এতে ইসরায়েল বা রাশিয়ার সমালোচনামূলক কোনো উল্লেখ নেই। তবে উভয় ক্ষেত্রেই মানবিক সংকটের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।’
পুরো ঘোষণাপত্রটি স্পষ্টতার অভাবে ভুগছে বলেও মন্তব্য করেন ভেলাসকো।
তিনি বলেন, ‘এটি অনেকটাই ব্রাজিলের প্রত্যাশার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। কিন্তু যদি আমরা এটি গভীরভাবে বিশ্লেষণ করি, তাহলে দেখতে পাব এটি মূলত ইচ্ছাপ্রকাশের একটি ঘোষণা। এটি বিভিন্ন বিষয়ে সদিচ্ছার প্রকাশ, তবে এতে খুব কমই সুনির্দিষ্ট, বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ রয়েছে।’
বৈশ্বিক বিলিওনিয়ারদের ওপর কর আরোপের উদ্যোগ
ঘোষণায় বৈশ্বিক বিলিওনিয়ারদের ওপর সম্ভাব্য কর আরোপের কথা বলা হয়েছে, যা লুলা সমর্থন করেন। এই ধরনের কর বিশ্বের প্রায় ৩,০০০ ধনী ব্যক্তিকে প্রভাবিত করবে। এর মধ্যে প্রায় ১০০ জন লাতিন আমেরিকায় রয়েছেন।
আর্জেন্টিনার বিরোধিতা সত্ত্বেও এই ধারা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তেমনিভাবে, একটি ধারা লিঙ্গ সমতার প্রসারেও উৎসর্গ করা হয়েছে বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ব্রাজিল এবং অন্য দেশের কর্মকর্তারা।
আর্জেন্টিনার আপত্তি সত্ত্বেও জি২০ ঘোষণায় স্বাক্ষর
আর্জেন্টিনা জি২০ ঘোষণায় স্বাক্ষর করলেও জাতিসংঘের ২০৩০ টেকসই উন্নয়ন এজেন্ডার উল্লেখ নিয়ে আপত্তি জানায়। দেশটির ডানপন্থি প্রেসিডেন্ট জাভিয়ের মিলেই এই এজেন্ডাকে ‘সমাজতান্ত্রিক প্রকৃতির একটি অতিরাষ্ট্রীয় প্রোগ্রাম’ বলে অভিহিত করেছেন। এছাড়া, সামাজিক মাধ্যমে ঘৃণাত্মক বক্তব্য নিয়ন্ত্রণের আহ্বান এবং ক্ষুধা মোকাবিলায় সরকারের ভূমিকা বাড়ানোর প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন। তিনি এটিকে জাতীয় সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপ বলে মনে করেন।
মিলেই প্রায়ই বহুপাক্ষিক আলোচনায়, বিশেষ করে তার প্রকাশ্য সমালোচক লুলার নেতৃত্বাধীন বৈঠকে ট্রাম্পের মতো বাধা সৃষ্টিকারীর ভূমিকা পালন করেন।
বৈশ্বিক ক্ষুধা মোকাবিলায় নির্দিষ্ট উদ্যোগ
ঘোষণাপত্রের বড় একটি অংশই ক্ষুধা নির্মূলের ওপর গুরুত্বারোপ করেছে। এটি লুলার অগ্রাধিকার।
ব্রাজিল সরকার বলেছে, ‘ক্ষুধা ও দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক জোট’ চালু করা জি২০ ঘোষণার মতোই গুরুত্বপূর্ণ। ব্রাজিলের মতে, এরই মধ্যে ৮২টি দেশ এই পরিকল্পনায় সই করেছে। এই উদ্যোগ রকফেলার ফাউন্ডেশন এবং বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের মতো সংগঠনগুলোর সমর্থন পেয়েছে।
রবিবার রিওর কোপাকাবানা সৈকতে একটি প্রতীকী প্রদর্শনীতে ৭৩৩টি খালি থালা সাজানো হয়েছিল। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী ২০২৩ সালে ক্ষুধার্ত ৭৩৩ মিলিয়ন মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে এই প্রদর্শনী।
ব্রাজিলের জি২০ সম্মেলনে সভাপতিত্বের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন দারিদ্র্যবিরোধী অলাভজনক সংস্থা অক্সফামের একজন পরিচালক ভিভিয়ানা সান্তিয়াগো। চরম বৈষম্য, ক্ষুধা ও জলবায়ু বিপর্যয়ের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে মানুষের দাবির প্রতি সাড়া দিতে এবং বিশেষত ধনীদের উপর কর আরোপের বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন তিনি।
এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘ব্রাজিল আরও ন্যায়সঙ্গত এবং স্থিতিশীল বিশ্বের পথে আলো দেখিয়েছে। এই সংকটময় মুহূর্তে অন্যদেরও তাদের সঙ্গে যুক্ত হতে চ্যালেঞ্জ আহ্বান জানিয়েছে’
বহু প্রতীক্ষিত জাতিসংঘ সংস্কার
নেতারা জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের "রূপান্তরমূলক সংস্কার" নিয়ে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দেন। ‘২১ শতকের বাস্তবতা ও চাহিদার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং আরও প্রতিনিধিত্বমূলক, অন্তর্ভুক্তিমূলক, দক্ষ, কার্যকর, গণতান্ত্রিক ও দায়বদ্ধ’ হতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হন তারা।
ঘোষণাপত্রে বলা হয়, ‘আমরা এমন নিরাপত্তা পরিষদের সম্প্রসারিত কাঠামোর আহ্বান জানাই, যা আফ্রিকা, এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল এবং লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের মতো কম প্রতিনিধিত্বশীল এবং অপ্রতিনিধিত্বশীল অঞ্চল ও গোষ্ঠীগুলোর প্রতিনিধিত্ব উন্নত করবে।’
সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘ শীর্ষ সম্মেলনের আগে যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা দেয়, তারা আফ্রিকার দুটি দেশের জন্য নতুন স্থায়ী আসনের সমর্থন করছে, তবে ভেটো ক্ষমতা ছাড়া। পাশাপাশি, প্রথমবারের মতো একটি ছোট দ্বীপ উন্নয়নশীল দেশের জন্য অস্থায়ী আসনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
তবে গ্রুপ অব ফোর (ব্রাজিল, জার্মানি, ভারত ও জাপান) একে অপরের স্থায়ী আসনের দাবির পক্ষে সমর্থন জানাচ্ছে। অন্যদিকে, পাকিস্তান, ইতালি, তুরস্ক ও মেক্সিকোসহ এক ডজন দেশের বৃহত্তর ইউনাইটিং ফর কনসেনসাস গ্রুপ দীর্ঘ মেয়াদের অতিরিক্ত অস্থায়ী আসন চায়।
৯৫ দিন আগে
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৫০ ফিলিস্তিনি নিহত
ইসরায়েলি হামলায় নারী ও শিশুসহ অন্তত ৫০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ হামলায় আরও অনেকে আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে গাজায় ফিলিস্তিনি সিভিল ডিফেন্স।
স্থানীয় সময় সোমবার (১৮ নভেম্বর) গাজা উপত্যকায় এ হামলা চালানো হয়।
সিভিল ডিফেন্সের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, উত্তর গাজার বেইত লাহিয়া ও জাবালিয়া, মধ্য গাজার নুসেইরাত শিবির এবং দক্ষিণের খান ইউনিস ও রাফাহ শহরে বাস্তুচ্যুতদের আবাসিক বাড়িঘর ও আশ্রয়কেন্দ্র লক্ষ্য করে ইসরায়েলি বোমা হামলা চালানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, ইসরায়েলি অব্যাহত হামলা ও আগ্রাসনের কারণে গাজার উত্তরাঞ্চলে তাদের কাজ বন্ধ রয়েছে। এর ফলে হাজার হাজার নাগরিক মানবিক সহায়তা, চিকিৎসা সেবা ও ত্রাণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
এদিকে, ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির গণমাধ্যম কর্মকর্তা রায়েদ আল-নামাস গাজায় সাংবাদিকদের বলেছেন, চিকিৎসা সরবরাহ ও কর্মীর সংকটের কারণে উত্তরাঞ্চলের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অবনতি হচ্ছে।
আল-নামাস বলেন, একেবারে ন্যূনতম সেবা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া ১২ হাজার আহত লোককে উপত্যকার বাইরে চিকিৎসা প্রয়োজন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্তে হামাসের হামলার প্রতিশোধ নিতে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় হামলা করে। ওই হামলায় প্রায় ১,২০০ জন নিহত এবং প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করা হয়।
গাজাভিত্তিক স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ সোমবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, গাজায় চলমান ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৩ হাজার ৯২২ জনে দাঁড়িয়েছে।
৯৫ দিন আগে