আরেফিন সিদ্দিকী
আরেফিন সিদ্দিকের সার্বিক অবস্থা ‘খুবই ঝুঁকিপূর্ণ’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সার্বিক অবস্থা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। তাকে এখন যেকোনো পরিবর্তনের জন্য নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। রবিবার (৮ মার্চ) ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালের চিকিৎসকরা এমন তথ্য জানিয়েছেন।
তবে এয়ার এম্বুলেন্সে করে চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরের জেনারেল হাসপাতাল কিংবা মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে নেওয়া হতে পারে বলে তার পারিবারিক সূত্র জানিয়েছে। ওই সূত্র বলেছে, সিঙ্গাপুরে জেনারেল হাসপাতাল আর মাউন্ট এলিজাবেথে ডকুমেন্টস পাঠানো হয়েছে। ঢাকার ডাক্তাররা অনুমতি দিলে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স করে তাকে নিয়ে যাওয়া হতে পারে।
বর্তমানে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজধানীর ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগের অধীনে লাইফ সাপোর্টে রয়েছেন ঢাবির সাবেক এই উপাচার্য। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি থেকে এমন তথ্য জানা গেছে।
এতে বলা হয়, গেল বৃহস্পতিবার আনুমানিক দুপুর ৩টার পরে আরেফীন সিদ্দিকী ঢাকা ক্লাবে অবস্থানকালে হঠাৎ দাঁড়ানো অবস্থা থেকে পড়ে যান। এরপর তার জ্ঞানের মাত্রায় পরিবর্তন হওয়ায় এবং বমি হওয়ায় তাকে কাছের বারডেম জেনারেল হাসপাতালের ইমার্জেন্সি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এরপর ইমার্জেন্সি বিভাগ থেকে তাৎক্ষণিকবাবে তার মস্তিষ্কের পরীক্ষায় ‘রাইট সাইডেড অ্যাকিউট অন ক্রোনিক সাব ডিউরাল হেমাটোনা উইথ ফ্রন্টাল লব আইসিএইচ ও সিএএইচ দেখা দেওয়ায় দ্রুত তাকে ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতালের নিউরোসার্জারি বিভাগে রেফার করা হয়।
তাকে সেদিন বিকাল ৪টা ২১ মিনিটে সরাসরি নিউরোসার্জারি বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা. নজরুল হোসেইনের অধীনে নিউরো আইসিউতে ভর্তি করা হয়। তখন তার জ্ঞানের মাত্রা ছিল ১৩/১৫। ভর্তির অল্প সময় পরেই হঠাৎ তার শ্বাসকষ্ট শুরু হয়, চোখের মনি বড় হয়ে যায়, হার্টরেট কমতে থাকে এবং জ্ঞানের মাত্রা ৪/১৫ হয়ে যায়। দ্রুত তার স্বজনদের জানিয়ে তাকে তৎক্ষনাৎ লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আরেফিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হন ২০০৯ সালের ১৫ জানুয়ারি। এর প্রায় সাড়ে চার বছর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের উদ্যোগ নেয়।
আরও পড়ুন: লাইফ সাপোর্টে ঢাবির সাবেক ভিসি আরেফিন সিদ্দিক
নির্বাচনের পর ২০১৩ সালের ২৫ অগাস্ট প্যানেলে থাকা তিনজনের মধ্যে আরেফিন সিদ্দিককে বেছে নেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ও আচার্য আবদুল হামিদ। ১৯৫৩ সালের ২৩ অক্টোবর ঢাকায় জন্ম নেওয়া আরেফিন সিদ্দিক ১৯৬৯ সালে এসএসসি এবং ১৯৭১ সালে ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন।
১৯৭৩ সালে বিএ এবং ১৯৭৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে এমএ করেন তিনি। ১৯৮০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক পদে যোগ দেওয়ার আগে বুয়েটের পিআর ছিলেন আরেফিন সিদ্দিক।
বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগ সমর্থক শিক্ষকদের নীল দলের নেতা আরেফিন সিদ্দিক দুই মেয়াদে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার চেয়ারম্যান ও প্রেস ইনস্টিটিউটের সদস্যও ছিলেন তিনি।
উপাচার্যের দায়িত্ব পাওয়ার আগে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেন।দুঃখপ্রকাশ: ‘চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর নেওয়া হবে আরেফিন সিদ্দিককে’ বলে ভুলবশত খবরটি প্রকাশ করা হয়েছে। মূল বিষয় হচ্ছে, তার চিকিৎসাসংক্রান্ত নথি সিঙ্গাপুরের জেনারেল হাসপাতাল, মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতাল এবং ভারতের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু চিকিৎসার জন্য তাকে এসব দেশে পাঠানোর বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
২৪ দিন আগে