জুলাই আন্দোলন
জুলাই শহীদদের আত্মত্যাগই হবে আগামী বাংলাদেশের নির্মাণরেখা: প্রধান উপদেষ্টা
জুলাই আন্দোলনে যারা শহিদ হয়েছেন, তাদের আত্মত্যাগ বৃথা যেতে দেওয়া হবে না। জুলাই শহিদদের আত্মত্যাগই আগামী বাংলাদেশের নির্মাণরেখা হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন, জুলাই শহিদদের আত্মত্যাগ আমরা বৃথা যেতে দেব না। তাদের আত্মত্যাগই হবে আমাদের পথচলার প্রেরণা, তাদের স্বপ্নই হবে আমাদের আগামী বাংলাদেশের নির্মাণরেখা। আজকের দিনে এটাই হোক আমাদের শপথ।
মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে দেশজুড়ে জেলা প্রশাসন আয়োজিত অনুষ্ঠানে এক ভিডিও বার্তায় এসব কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, আজ আমরা পুরো জাতি একসঙ্গে স্মরণ করছি এমন এক দিনকে, যা এ দেশের ইতিহাসে গভীর ছাপ রেখে গেছে। ৫ আগস্ট শুধু একটি বিশেষ দিবস নয়—এটি একটি প্রতিজ্ঞা, গণজাগরণের উপাখ্যান এবং ফ্যাসিবাদী শাসন থেকে জাতির পুনর্জন্মের দিন।
আরও পড়ুন: হাজারো শহীদের আত্মত্যাগ রাষ্ট্র সংস্কারের সুযোগ এনেছে: প্রধান উপদেষ্টা
এ সময় ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধের সব বীর মুক্তিযোদ্ধাকে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন তিনি।
তবে স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পরেও এ দেশের মানুষ সুবিচার ও গণতন্ত্র থেকে বঞ্চিত হয়েছে, বৈষম্যের শিকার হয়েছে বলে মন্তব্য করেন ড. ইউনূস।
তিনি বলেন, ২০২৪ সালের উত্তাল জুলাই ছিল বাংলাদেশের ইতিহাসে এক সংকটময় অধ্যায়—১৬ বছরের পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। এ দেশের বিপুল সংখ্যক তরুণ ১৬ বছর ধরে ক্রমাগত হতাশায় নিমজ্জিত ছিল। ভালো ফল করেও তারা চাকরির জন্য ক্ষমতাসীনদের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরেছে। চাকরি ঘিরে তৈরি হয়েছিল দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি আর তদবিরের বাণিজ্য। যে তরুণ ঘুষ দিতে পারেনি, এলাকার মাফিয়াদের সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলতে পারেনি, সে চাকরি পায়নি।
সরকারি চাকরিতে বৈষম্যমূলক কোটা পদ্ধতি ছিল মূলত দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির আরেকটি হাতিয়ার। এর বিরুদ্ধে তরুণ সমাজ দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ করলেও ফ্যাসিবাদী শাসকের টনক নড়েনি। এই দীর্ঘ সময় ধরে প্রতিটি সেক্টরে মাফিয়াতন্ত্র কায়েম করে একটি সুবিধাভোগী শ্রেণি তৈরি করা হয়েছিল, যারা আর্থিক ও অন্যান্য সুবিধার বিনিময়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলবে ও কাজ করবে। স্বৈরাচারের পক্ষের সঙ্গী হলেই চাকরি মিলবে, কাজ পাওয়া যাবে। সরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান এমনকি বিচার ব্যবস্থা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, গণমাধ্যম এবং সাংস্কৃতিক অঙ্গনেও এই ধরনের সুবিধাভোগী শ্রেণি তৈরি হয়েছিল। এ দেশের গরিব মেহনতি মানুষের পয়সা লুট করে পতিত ফ্যাসিবাদ ও তাদের সহযোগীরা একেকজন টাকার পাহাড় গড়ে তুলেছিল। সীমাহীন দুর্নীতির কবলে পড়ে দেশের অর্থনীতি ভেঙে পড়ে।
ড. ইউনূস বলেন, এই দেড় যুগে প্রতিটি ন্যায্য দাবি, প্রতিবাদ, বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশের পাশাপাশি দলীয় সন্ত্রাসীরা অস্ত্র হাতে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালিয়েছে। গত ১৬ বছরে যারা সরকারের সমালোচনা করেছে বা নাগরিক অধিকারের পক্ষে কথা বলেছে, তাদের গ্রেপ্তার কিংবা গুম করা হয়েছে। লাখ লাখ বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীকে নির্বিচারে আটক ও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে দেশের ছাত্রসমাজ, তরুণ প্রজন্ম ও সাধারণ মানুষ সবাই একত্রিত হয় এক নতুন দিনের প্রত্যাশায়। সমস্বরে তারা বলে ওঠে—এবার ফ্যাসিবাদকে যেতে হবে।
তিনি বলেন, তবুও দেশের মানুষের বুকে গুলি চালিয়ে ক্ষমতা আঁকড়ে ধরার চেষ্টা চালায় ফ্যাসিবাদী সরকার। তারা নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে, গ্রেপ্তার করেছে, ইন্টারনেট বন্ধ করে হত্যাকাণ্ডের তথ্য গোপন করতে চেয়েছে, রাতের অন্ধকারে এলাকায় এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছাত্রদের ধরে নিয়ে গেছে। গুলিবিদ্ধ আহতদের হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে দেয়নি। হাসপাতালগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল যেন আহতদের ভর্তি না করা হয়। এর ফলে বহু মানুষ চিকিৎসা না পেয়ে চিরতরে দৃষ্টিশক্তি হারিয়েছে, পঙ্গু হয়ে গেছে।
ভিডিও বার্তায় প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আজ ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসে’ আমি জাতির সূর্যসন্তান—জুলাই শহিদদের গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি এবং তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। যারা আহত হয়েছেন, চিরতরে পঙ্গু হয়েছেন, দৃষ্টি হারিয়েছেন—জাতির পক্ষ থেকে আমি তাদের প্রতি শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। এই জাতি আপনাদের কাছে চিরকৃতজ্ঞ থাকবে।
তিনি বলেন, আজ আমরা কেবল অতীত স্মরণ করতে আসিনি—আমরা একটি শপথ নিতে এসেছি। শপথ এই যে—আমরা কোনো ধরনের নিপীড়নের কাছে মাথা নোয়াব না। আমরা প্রতিষ্ঠা করব একটি জবাবদিহিমূলক, মানবিক, গণতান্ত্রিক ও বৈষম্যহীন রাষ্ট্র—একটি রাষ্ট্র, যা সবসময় জনকল্যাণে কাজ করবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, গত বছর ডিসেম্বর মাসে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে’ শহিদ পরিবার ও আহতদের কল্যাণ ও যাবতীয় বিষয়াদির প্রশাসনিক দায়িত্ব মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ওপর ন্যস্ত করা হয়। এখন পর্যন্ত ৮৩৬টি শহিদ পরিবারের মধ্যে ৭৭৫টি পরিবারকে মোট ৯৮ কোটি ৪০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র ও মাসিক ভাতা বাবদ ব্যাংক চেক দেওয়া হয়েছে। অবশিষ্ট পরিবারের কয়েকটি বিষয় নিষ্পত্তির পর তাদেরও সঞ্চয়পত্র দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রীয় সংকটময় পরিস্থিতিতে ড. ইউনূসের নেতৃত্ব আন্তর্জাতিক সমর্থন পেয়েছিল: শফিকুল আলম
এ ছাড়া আহত ১৩ হাজার ৮০০ জন ‘জুলাই যোদ্ধাকে’ তিনটি ক্যাটাগরিতে নগদ অর্থ ও চেক বাবদ মোট ১৫৩ কোটি ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৭৮ জন অতি গুরুতর আহত ‘জুলাই যোদ্ধাকে’ উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, তুরস্ক ও রাশিয়ায় পাঠানো হয়েছে এবং চিকিৎসা ব্যয় বাবদ এ পর্যন্ত ৯৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সব সরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং সরকার নির্ধারিত বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোতে সব শ্রেণির আহত ‘জুলাই যোদ্ধাদের’ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে ‘জুলাই শহিদ’ ও আহতদের জন্য আরও নানা উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
তবে জুলাইয়ের মহানায়কদের আত্মত্যাগ তখনই সার্থক হবে—যখন এই দেশকে আমরা একটি সত্যিকারের জনকল্যাণমুখী রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে পারব।
১২২ দিন আগে
পুরোনো আইনে বাংলাদেশকে আর চলতে দেবো না: নাহিদ ইসলাম
মৌলভীবাজার, ২৬ জুলাই (ইউএনবি): জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, পুরোনো সিস্টেমের পুরোনো আইনে বাংলাদেশকে আর চলতে দেবো না।
শনিবার (২৬ জুলাই) দুপুরে মৌলভীবাজারের বেরিরপাড়ে জুলাই পথযাত্রা কর্মসূচির শেষে পথসভায় তিনি এ কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, অভ্যুত্থানের পরে নানা শক্তি দেশকে এগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। বিচার, সংস্কার ও নতুন সংবিধানের মাধ্যমে আমরা নতুন বাংলাদেশের যাত্রা শুরু করতে চাই।
তিনি বলেন, পুলিশ হত্যাকে সামনে তুলে ধরে এর দায় অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-জনতাকে দেওয়ার অপচেষ্টা করা হচ্ছে। আমরা ৩ আগস্ট এক দফায় স্পষ্ট করেছি, আমাদের লড়াই শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট শাসনের বিরুদ্ধে। আমাদের যে দমন-পীড়ন করা হয়েছে, আমরা বাধ্য হয়েছিলাম প্রতিরোধ গড়ে তুলতে। আমাদের লড়াই ছিল ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র ও ফ্যাসিস্ট বাহিনীর বিরুদ্ধে।
পড়ুন: নির্বাচিত প্রতিনিধি ছাড়া প্রকৃত সংস্কার সম্ভব নয়: ফখরুল
‘অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে অনেক দাবি ছিল। কিন্তু আমাদের সব দাবিকে নির্বাচনের দাবিতে রূপান্তর করে ফেলা হয়েছে। আমরা বলেছি, আমরা নির্বাচন চাই, আমরা গণতন্ত্রের পক্ষের শক্তি, ভোটাধিকারের পক্ষে লড়াই করা শক্তি,’ বলেন নাহিদ।
সংবিধান প্রসঙ্গে এনসিপির আহ্বায়ক বলেন, আমরা বলেছি, আমাদের নতুন সংবিধান প্রয়োজন—যেই সংবিধানে বাংলাদেশের মানুষের অধিকারের কথা লেখা থাকবে, সব ঐতিহাসিক লড়াইয়ের স্বীকৃতি থাকবে, সকল জাতি-ধর্ম-বর্ণের সমান অধিকার নিশ্চিত করা হবে।
এর আগে শহরের শহীদ মিনার থেকে এনসিপির জুলাই পদযাত্রাটি বের হয়। শহরের কোর্ট রোড ও শাহ মোস্তফা সড়কে পথযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সর্বস্তরের মানুষ যোগদান করেন।
মৌলভীবাজার জেলার প্রধান সমন্বয়কারী ফাহাদ আলমের সভাপতিত্বে পথসভায় আরও বক্তব্য রাখেন এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব ডা. তাসনিম জারা, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের (বাগছাস) কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক আবু বাকের মজুমদার, জাতীয় যুব শক্তির কেন্দ্রীয় সংগঠক মারুফ আল হামিদ, জাকারিয়া ইমন প্রমুখ।
১৩২ দিন আগে
জুলাই আন্দোলনের নেতাদের পদযাত্রায় বাধা দিয়ে ফেরানো যাবে না: নাহিদ
জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আমাদের পূর্ব ঘোষিত শান্তিপূর্ণ সমাবেশে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে। গোপালগঞ্জকে এই ফ্যাসিস্টরা তাদের আশ্রয় কেন্দ্র বানিয়েছে। এই জেলার সাধারণ মানুষকে মুজিবাদ থেকে মুক্ত করব। আমরা সাধারণ মানুষের পাশে আছি।
ফ্যাসিস্ট সন্ত্রাসী প্রত্যেককে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে কোনো সাধারণ মানুষকে হয়রানি না করতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বানও জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) ফরিদপুরে জুলাই পদযাত্রার পথসভায় নাহিদ ইসলাম এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, সেখানে চারজন মানুষ বিচার বহির্ভূতভাবে মারা গিয়েছে, আমরা সন্ত্রাসীদেরও মানবাধিকার বিশ্বাস করি। আমরা ৫ আগস্ট বলেছিলাম, বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করতে হবে। কিন্তু এখনও তাদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না।
এনসিপি নেতা বলেন, প্রশাসনের ভেতর তাদের দোষর রয়েছে। আমি তাদের বলতে চাই অপরাধীদের বিচার না করা পর্যন্ত রাজপথ ছাড়ছি না। এখনও সময় দিচ্ছি ফ্যাসিস্ট ও তাদের দোসরদের আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করুন।
১৪০ দিন আগে
চারদিন ধরে বন্ধ জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইন্সটিটিউট, বিপাকে রোগীরা
চিকিৎসক-কর্মচারীদের সঙ্গে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের সংঘর্ষের জেরে জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালে সেবা কার্যক্রম চারদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। এতে, বিপাকে পড়েছেন রোগী ও স্বজনরা।
শনিবারও (৩১ মে) হাসপাতালের ফটক বন্ধ থাকায় ঢাকার বাইরে থেকে যারা চিকিৎসা নিতে এসেছেন, তাদেরও ফেরত যেতে হয়েছে। অচলাবস্থা শেষে চিকিৎসাসেবা কবে চালু হবে, সে বিষয়েও কিছু বলছে না কর্তৃপক্ষ।
বুধবার (২৮ মে) সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলেও চারদিন ধরে চিকিৎসা সেবা বন্ধ করে রেখেছে কতৃপক্ষ। হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে রোগীরা আসছেন। কিন্তু ফটক বন্ধ থাকায় ভেতরে যেতে পারছেন না তারা, গেইটের বাইরে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে চলে যেতে হচ্ছে।
এদিকে, বিপাকে পড়েছেন চিকিৎসাধীন ব্যক্তিরাও। জুলাই যোদ্ধা মনির নিজের দুর্দশার কথা তুলে ধরে বলেন, ‘কি আর করবো ভাই বলেন? কাকে দুঃখের কথা বলবো? চারদিন ধরে হাসপাতাল বন্ধ, চিকিৎসা সেবা বাদ দেন। খাবারও দেওয়া হচ্ছে না। তাই বাসায় চলে আসতে হয়েছে।’
এ বিষয়ে হাসপাতালের কনসালটেন্ট সঞ্জয় কুমার বলেন, ‘আমাদের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জান-এ আলম মৃধার নির্দেশনায় আমরা চিকিৎসকরা কেউ হাসপাতালে যাচ্ছি না। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তখন ওনার নির্দেশনাতেই সেবা দিতে যাবো।
আরও পড়ুন: দেশে আরও ২১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত
তিনি আরও জানান, ‘২৮ মে জুলাই আন্দোলনে আহতরা তাদের চিকিৎসা সেবা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং এক সময় আমাদের স্টাফদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সেদিন সেবা চালু ছিলো। তবে ২৯ মে থেকে পুরোদমে সেবা বন্ধ।
এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জান-এ আলমের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও পাওয়া যায়নি। তবে সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করেছি। নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আগ পর্যন্ত কাজে ফিরতে চাচ্ছেন না চিকিৎসক ও নার্সরা। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এ বিষয়ে কোনো নিশ্চয়তা পাইনি।’
দ্রুতই চিকিৎসা সেবা চালু করতে চেষ্টা করছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘কিন্তু কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতেও সতর্ক থাকতে হচ্ছে।’
গত বুধবার (২৮ মে) চিকিৎসা সংক্রান্ত ত্রুটি হচ্ছে— এই অভিযোগে হাসপাতালটির চিকিৎসক ও স্টাফদের হামলা করে জুলাই আন্দোলনের আহতরা। এতে চিকিৎসকসহ প্রায় ১৫ জন স্টাফ আহত হন। এরপরই ন চিকিৎসক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা হাসপাতাল ছেড়ে চলে গেলে বন্ধ হয়ে যায় সেবা কার্যক্রম।
এর আগে, গত রবিবার (২৫ মে) চক্ষু বিজ্ঞান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন চার জুলাইযোদ্ধা বিষপান করেন। তাদের অভিযোগ— উন্নত চিকিৎসা বা পুনর্বাসনের বিষয়ে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে না।
এরপর মঙ্গলবার দুপুরে চক্ষু বিজ্ঞান হাসপাতালের পরিচালককে অবরুদ্ধ করেন আহতরা। একঘণ্টার বেশি সময় অবরুদ্ধ থাকার পর হাসপাতাল সেনাবাহিনীর সহায়তায় তাকে উদ্ধার করা হয়।
এরপর বুধবার সকাল থেকে, নিরাপত্তার দাবি তুলে কর্মবিরতিতে যান হাসপাতালের কর্মচারীরা। এরপরেই, হাসপাতালের কর্মচারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন জুলাই আন্দোলনে আহতরা।
১৮৮ দিন আগে
জুলাই আন্দোলনে হামলাকারীদের তথ্য চেয়ে জবি প্রশাসনের গণবিজ্ঞপ্তি
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) ক্যাম্পাস ও ক্যাম্পাসের বাহিরে সংঘটিত বেআইনি ও সহিংস ঘটনায় জড়িত জবির শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের তথ্য চেয়ে গণবিজ্ঞপ্তি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সোমবার (২৮ এপ্রিল) জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা দপ্তর হতে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে ২০২৪ সালের জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় (১৫ জুলাই ২০২৪ থেকে ৫ আগষ্ট ২০২৪ পর্যন্ত) ক্যাম্পাস ও ক্যাম্পাসের বাহিরে সংঘটিত বেআইনি ও সহিংস ঘটনায় জড়িত জবির শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে আগামী ৭ কার্যদিবসের মধ্যে অভিযোগকারীর তথ্য, অভিযোগ ও অভিযুক্তদের বিস্তারিত বিবরণ এবং স্বপক্ষে প্রমাণসহ সিলগালাকৃত খামে জমা দিতে অনুরোধ করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে অভিযোগকারীর তথ্য ও পরিচয় কঠোর গোপনীয়তার সঙ্গে রক্ষা করা হবে বলেও উল্লেখ করা হয়।
আরও পড়ুন: জবি শিক্ষার্থীকে মারধর ও পুলিশে সোপর্দ, প্রতিবাদে বিভাগের গেটে তালা
এর আগে বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মঞ্জুর মুর্শেদ ভূঁইয়াকে আহ্বায়ক করে এই কমিটি গঠন করা হয়। মঞ্জুর মুর্শেদ ভূঁইয়া বলেন, ‘আমাদের যে কমিটিটা হয়েছিল সেটার কার্যক্রম আমরা বৃহত্তর পরিসরে শুরু করেছি। তাই প্রাথমিকভাবে আমরা বিভিন্ন বিভাগ, দপ্তর, ইনিস্টিউট ও এর বাইরেও যদি কেউ আক্রান্ত হয় এই তথ্যটা বিভাগের চেয়ারম্যান, শিক্ষক, কর্মকর্তা এবং শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আমরা সিলগালা খামে তথ্য আহ্বান করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘অভিযোগ এসেছে, সেগুলোও আমরা দেখছি। তবে আমরা একটু বৃহত্তর পরিসরে কাজ শুরু করেছি, যাতে কেউ বলতে না পারে যে তাদের তথ্য নেওয়া হয়নি। তারপর সে অনুযায়ী আমরা শুনানি, গণশুনানি বা তাদের ইন্টারভিউ নেব, তারপর বাকি কাজ করব।
২২০ দিন আগে
জুলাই হামলা: জাবিতে ২৫৯ ছাত্রলীগকর্মী ও ৯ শিক্ষক বরখাস্ত
জুলাই আন্দোলনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগে ছাত্রলীগের ২৫৯ নেতাকর্মীকে ও পুলিশি হামলায় সরাসরি মদত দেওয়ার অভিযোগে ৯ শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
রবিবার (২৭ এপ্রিল) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ কার্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ড. মোহাম্মদ মহিউদ্দিনের সই করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত বছরের ১৪ জুলাই রাত আনুমানিক ১১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলে, ১৫ জুলাই সন্ধ্যা ৭টার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে, একই দিন রাত ১২টায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা, ছররা গুলি বর্ষণ এবং ১৭ জুলাই বেলা ৩টার দিকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রাথমিক প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ৯ শিক্ষক, ২ কর্মকর্তা ও ১ জন কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, প্রাথমিক তদন্তে আরও ১০ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে জুলাই বিপ্লবে শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশি হামলায় মদত দেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক আনুষ্ঠানিক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কুয়েট ভিসি মাসুদের পদত্যাগ দাবিতে জাবিতেও অনশন
এছাড়া গণঅভ্যুত্থান চলাকালীন চরম নিরাপত্তাহীন অবস্থায় শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল খালি করার সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে গত বছরের ১৭ জুলাই অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় উপস্থিত সিন্ডিকেট সদস্যদের কার দায় কতটুকু— তা যাচাই করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
পাশাপাশি ২৫৯ জন শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিস্কার করে অধিকতর তদন্ত কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সিন্ডিকেট সভায়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, সাময়িক বরখাস্ত হওয়া শিক্ষকরা হলেন— সাবেক উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজ, সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক আলমগীর কবির, সরকার ও রাজনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আ স ম ফিরোজ-উল-হাসান, সমাজবিজ্ঞান অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক বশির আহমেদ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক ইস্রাফিল আহমেদ, ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মেহেদী ইকবাল, ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক হোসনে আরা, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের সাবেক প্রক্টর নাজমুল হাসান তালুকদার এবং পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ তাজউদ্দীন সিকদার।
তদন্ত কমিটির আওতায় অভিযুক্ত ১০ শিক্ষক হলেন— অধ্যাপক কানন কুমার সেন, পলাশ বাহা, শফি মোহাম্মদ তারেক, জহিরুল ইসলাম খন্দকার, মো. জাহাঙ্গীর আলম, মনির উদ্দিন শিকদার, সাইদুর রহমান, আনোয়ার খসরু পারভেজ, মুহিবুর রউফ শৈবাল, এ এ মামুন।
আরও পড়ুন: কুয়েট ভিসির পদত্যাগ দাবিতে জাবিতে মানববন্ধন
এছাড়াও শিক্ষকদের পাশাপাশি আরও ২ জন অফিসারকে (রাজিব, নাহিদুর) এবং ১ জন কর্মচারীকে (মুজিব হল) সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। গত ১৭ মার্চ থেকে ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত নেতাকর্মীরা এই আদেশের আওতায় থাকবেন।
২২১ দিন আগে
জুলাই আন্দোলনে শহীদের মেয়ের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার
জুলাই আন্দোলনের পুলিশের গুলিতে নিহত পটুয়াখালীর দুমকি উপজেলার শহীদ জসিম উদ্দিনের মেয়ে লামিয়ার (১৭) ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে রাজধানীর শেখেরটেকে ৬ নম্বর রোডে ভাড়া বাসায় তাকে গলায় ফাসঁরত ঝুলন্ত অবস্থায় তার (কলেজছাত্রী) লাশ উদ্ধার করা হয়।
এর আগে গত ১৮ মার্চ সন্ধ্যায় উপজেলার পাংগাশিয়া ইউনিয়নে কলেজছাত্রী লামিয়া নিজ বাড়ি থেকে নানা বাড়ি যাওয়ার পথে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। পরে নিজে বাদী হয়ে মামলা করেন।
পরে দুমকি থানা পুলিশ আসামি সাকিব ও সিফাতকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে।
আরও পড়ুন: বিয়ানীবাজারে প্রতিবেশীর হামলায় একজন নিহত, আটক ১
লামিয়ার দাদা সোবাহান হাওলাদার বলেন, ‘শনিবার লামিয়ার সঙ্গে কথা হয়, আমি ওকে ওর বাবা জুলাই আন্দোলনে শহীদ হওয়ায় জন্য সরকারিভাবে সাহায্য দেওয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসন থেকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আজ (রবিবার) যাওয়ার জন্য বলি। এ সময় লামিয়া জানায় তার মা তাকে ঢাকায় নিয়ে গেছে। আজ (রবিবার) পটুয়াখালীতে আসবে বলে ও আমাকে জানায়। এদিকে আজ রাতে আমার ভাইয়ের ছেলে কালাম হাওলাদার ফোনে এই দুর্ঘটনার কথা জানান।’
দুমকি থারা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাকির হোসেন বলেন, ‘রাত ১০টার দিকে রাজধানীর শেখেরটেকে ৬ নম্বর রোডে ভাড়া বাসা থেকে গলায় ফাসঁরত ঝুলন্ত অবস্থায় ওই কলেজছাত্রীর লাশ উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। পুলিশ পুরো ঘটনাটি নিবিড়ভাবে তদন্ত করছে। এছাড়া ডিএনএ রিপোর্ট হাতে পেলে চার্জশিট গঠন করা হবে।’
২২১ দিন আগে
জুলাই আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার অভিযোগে ঢাবির ১২৮ শিক্ষার্থী বহিষ্কার
জুলাইয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ১২৮ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের সময় হামলার বিষয়ে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সোমবার(১৭ মার্চ) ঢাবি সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মুন্সী শামসুদ্দিন আহমেদ।
বহিষ্কৃতদের বিষয়ে আরও বিস্তারিত তদন্তের জন্য সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. তাজমেরী এস এ ইসলামকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে যত দ্রুত সম্ভব প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ১২৮ জনকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
আরও পড়ুন: চুয়েট ছাত্রলীগের ১৯ নেতা বহিষ্কার
প্রশাসনের পক্ষ থেকে সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. তাজমেরী এস এ ইসলামকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে আরও রয়েছেন প্রক্টর স্যার এ এফ রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ কাজী মাহফুজুল হক স্বপন, আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইকরামুল হকসহ বেশ কয়েকজন। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে জড়িতদের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
প্রক্টর আরও উল্লেখ করেন, ৫০০ পৃষ্ঠার ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশের বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত হয়নি। এছাড়া জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানে শিক্ষকদের সম্পৃক্ততা নিয়ে আলাদা একটি কমিটিও কাজ করছে।
২৬২ দিন আগে
জুলাই শহীদ পরিবার ও আহতদেরকে দেওয়া সহায়তা যথেষ্ট নয়: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
জুলাই আন্দোলনের শহীদ ও আহত পরিবারের সদস্যদের যে আর্থিক সহায়তা করা হচ্ছে তা যথেষ্ট নয় বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
এ সময় আন্দোলনে শহীদ ও আহতদের অবদানেই নতুন বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে উল্লেখ করে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।
রবিবার (৯ মার্চ) খুলনা জেলা শিল্প কলা একাডেমীতে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘আহত যোদ্ধাদের পাশে বাংলাদেশ’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
রবিবার (৯ মার্চ) গণমাধ্যমে দেওয়া মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার মো. মামুন হাসানের সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
আরও পড়ুন: মাংস-ডিম আমদানিতে নিরুৎসাহিত করলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
উপদেষ্টা বলেন, ‘২০২৪ এ ছাত্র জনতার আন্দোলন আমাদের দেখিয়ে দিয়েছে; অন্যায় এবং অবিচার বাংলাদেশের ছাত্রসমাজ এবং সাধারণ মানুষ কখনোই মেনে নেয় না। তাদের এ আত্নত্যাগেই বাংলাদেশ দ্বিতীয়বার স্বাধীন হয়েছে।’
বর্তমান সরকার আহতদের যতদিন প্রয়োজন ততদিন চিকিৎসা সুবিধা দেবে বলেও আশ্বাস দেন তিনি। আহত এবং শহীদ পরিবারদের সহায়তার জন্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি অধিদপ্তর হচ্ছে বলে জানান ফরিদা আখতার।
উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘যে ছাত্ররা সুস্থ আছেন, তারা নারী নির্যাতন বন্ধসহ আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি সঠিক রাখতে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে ভূমিকা রাখতে পারেন।’
খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্ত্যে দেন খুলনার বিভাগীয় কমিশনার মো. ফিরোজ সরকার, পুলিশ সুপার টিএম মোশাররফ হোসেন। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ।
জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে জুলাই বিপ্লবে খুলনার ৬১ জন আহতদের মধ্যে ৪০ জনের প্রত্যেককে এক লাখ করে টাকার চেক দেওয়া হয়। এ নিয়ে মোট ৫৩ জনকে আর্থিক সহায়তা দিলো জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন।
এর আগে অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই বিপ্লবে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন এবং জুলাই বিপ্লব নিয়ে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
২৭০ দিন আগে