মাহমুদ খলিল
সন্তানকে উদ্দেশ্য করে মাহমুদ খলিলের হৃদয়বিদারক চিঠি
পৃথিবীতে এসেছে প্রথম সন্তান, কিন্তু সদ্যজাত সন্তানকে কোলে নেওয়ার সৌভাগ্য হয়নি। তাই বুকভরা যন্ত্রণা নিয়ে লুইজিয়ানার আটককেন্দ্র থেকে নবজাতকের উদ্দেশ্যে একটি হৃদয়বিদারক চিঠি লিখেছেন কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের আলোচিত ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী মাহমুদ খলিল।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানে মাহমুদের চিঠিটি প্রকাশ করা হয়েছে।
পুত্র দীনকে উদ্দেশ্য করে মাহমুদ লিখেছেন, ‘আমি যখন ভাবি, তোমাকে প্রথমবার কোলে নিতে পারিনি, তোমার প্রথম কান্না শুনতে পারিনি, তোমার মুঠোবাঁধা হাত খুলে দিতে পারিনি, কিংবা তোমার প্রথম ডায়াপার বদলাতে পারিনি; আমার হৃদয় ব্যথিত হয়ে ওঠে।’
নিজের সন্তানের জন্মের সময় তার অনুপস্থিতিকে তিনি ফিলিস্তিনের বহু পিতার অভিজ্ঞতার প্রতিচ্ছবি হিসেবে উল্লেখ করেছেন মাহমুদ।
আরও পড়ুন: আমি যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক বন্দি: মাহমুদ খলিল
বেদনা জড়িত বাক্যে তিনি লেখেন, ‘বর্ণবাদী শাসন ও দূরবর্তী কারাগারে বন্দি হয়ে আমিও অন্যান্য ফিলিস্তিনি পিতাদের মতো তোমার কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছি।’‘প্রতিদিন জন্ম নেওয়া যেসব শিশুর পাশে তাদের বাবারা থাকেন না— তারা স্বেচ্ছায় যান না কোথাও। যুদ্ধ, বোমা, কারাগার কিংবা দখলদারত্বের নির্মম যন্ত্রের মাধ্যমে তাদের ছিনিয়ে নেওয়া হয়। তোমার মা ও আমি যে শোক অনুভব করছি, তা ফিলিস্তিনি পরিবারগুলোর বহু প্রজন্ম ধরে ডুবে থাকা দুঃখের সাগরের একটি ক্ষুদ্র ফোঁটা মাত্র’, বলেন মাহমুদ।
নিজেকে একজন রাজনৈতিক বন্দি হিসেবে বর্ণনা করে মাহমুদ চিঠিতে আরও লেখেন, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতার প্রতি অটল সমর্থনের কারণেই তিনি আজ বন্দি।
সন্তানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘একদিন হয়তো তুমি জানতে চাইবে কেন ফিলিস্তিনের পক্ষে দাঁড়ানোর জন্য মানুষকে শাস্তি পেতে হয়, কেন সত্য ও সহানুভূতি ক্ষমতার জন্য বিপজ্জনক হয়ে ওঠে।’‘এই প্রশ্নগুলো কঠিন, কিন্তু আমি আশা করি আমাদের গল্প তোমাকে এটা শেখাবে; এই পৃথিবীর প্রয়োজন আরও সাহস। এমন মানুষ প্রয়োজন যারা সুবিধা নয় বরং ন্যায়কে বেছে নেন।’
গত বসন্তে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে সংঘটিত বিক্ষোভে জড়িত থাকার কারণে এ বছরের ৮ মার্চ মাহমুদ খলিলকে গ্রেপ্তার করেছিল দেশটির অভিবাসন কর্মকর্তারা। এরপর থেকে লুইজিয়ানার জেনা শহরে একটি অভিবাসী আটককেন্দ্রে রয়েছেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ইহুদিবিদ্বেষী বিক্ষোভ বন্ধের অভিযানের প্রথম শিকার ৩০ বছর বয়সী এই ফিলিস্তিনি যুবক। মাহমুদ খলিল কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড পাবলিক অ্যাফেয়ার্সের শিক্ষার্থী। যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের গ্রিনকার্ড রয়েছে তার। গ্রেপ্তারের পরই তার গ্রিনকার্ড বাতিলের কথা জানায় ওয়াশিংটন।
আরও পড়ুন: খলিল মাহমুদকে আটক: ট্রাম্প টাওয়ারে ইহুদিদের বিক্ষোভ
২০৬ দিন আগে
যুক্তরাষ্ট্র থেকে মাহমুদ খলিলকে বের করে দেওয়া যেতে পারে: বিচারক
ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদ করায় গ্রেপ্তার হওয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়া যেতে পারে বলে রায় দিয়েছেন লুইজিয়ানার অভিবাসন আদালতের বিচারক জেমি কোমান্স।
গ্রেপ্তারের প্রায় মাসখানেক পরে স্থানীয় সময় শুক্রবার (১১ এপ্রিল) এই রায় ঘোষণা করেন বিচারক। তবে এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে বলে জানিয়েছেন মাহমুদের আইনজীবীরা। আগামী ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত আপিলের সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছেন বিচারক। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই এমন খবর দিয়েছে।
গত বসন্তে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গাজা যুদ্ধের বিরুদ্ধে সংঘটিত বিক্ষোভে জড়িত থাকার কারণে এ বছরের ৮ মার্চ তাকে গ্রেপ্তার করেছিল দেশটির অভিবাসন কর্মকর্তারা। এরপর থেকে লুইজিয়ানার জেনা শহরে একটি অভিবাসী আটককেন্দ্রে ছিলেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কথিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ইহুদিবিদ্বেষী বিক্ষোভ বন্ধের অভিযানের প্রথম শিকার ৩০ বছর বয়সী এই ফিলিস্তিনি যুবক। মাহমুদ খলিল কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড পাবলিক অ্যাফেয়ার্সের শিক্ষার্থী। যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের গ্রিনকার্ড রয়েছে তার। গ্রেপ্তারের পরই তার গ্রিনকার্ড বাতিলের কথা জানায় ওয়াশিংটন।
আরও পড়ুন: আমি যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক বন্দি: মাহমুদ খলিল
শুক্রবারের এই রায় যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ফিলিস্তিন-সমর্থিত গ্রিনকার্ডধারী ও ভিসাধারীদের কণ্ঠরোধ ও দমনপীড়নের পথ প্রশস্ত করবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
মাহমুদের আইনজীবী ও আমেরিকান সিভিল লিবার্টিস-নিউ জার্সির নির্বাহী পরিচালক অমল সিনহা বলেছেন, ‘তাড়াহুড়ো করে দেওয়া আদালতের এই রায় পুরোপুরি ভিত্তিহীন। সরকার পক্ষ নিজেদের সমর্থনে তেমন কোনো প্রমাণই উপস্থাপন করতে পারেনি, আসলে তাদের কাছে কোনো প্রমাণই তো নেই মাহমুদের বিরুদ্ধে।’
এই রায়কে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওর মতামতের লজ্জাজনক অনুসরণ বলে অভিহিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর কনস্টিটিউশনাল রাইটসের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ডিয়ালা শামাস।
গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ১৯৫২ সালের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড ন্যাশনালিটি অ্যাক্টের উদাহরণ দিয়ে রুবিও বলেছিলেন, ‘মাহমুদের কার্যকলাপ মার্কিন পররাষ্ট্রনীতির জন্য ক্ষতিকর হতে পারে, এজন্য তাকে বিতাড়িত করা উচিত।’
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সেই যুবক এখন বিপাকে
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যকে অগ্রাহ্য করার এখতিয়ার তার নেই বলে জানিয়েছেন বিচারক কোমান্স। তাছাড়া মাহমুদকে বিতাড়িত করতে প্রশাসন তাদের যুক্তি প্রমাণ করেছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
খলিলের আইনজীবীরা অভিযোগ করেন, লুইজিয়ানার যে আদালতে মাহমুদের মামলার শুনানি হয়েছে, সেখানকার বিচারকরা ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি পক্ষপাতদুষ্ট হয়ে এই রায় দিয়েছেন।
তারা জানান, ১৯৫২ সালের অভিবাসন আইনের অধীনে নেওয়া সিদ্ধান্তের ‘যুক্তিসংগত কারণ’ সম্পর্কে পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিওকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে বিচারকের কাছে আবেদন করা হয়েছিল। বিচারক সেই আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছেন।
এদিকে, মাহমুদকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দিতে এই রায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হলেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জন্য এই রায়কে উল্লেখযোগ্য বিজয় হিসেবে দেখা হচ্ছে।
কারণ গত ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় দফায় হোয়াইট হাউসে ফিরেই ট্রাম্প অঙ্গীকার করেছিলেন, গত বছর কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনিপন্থি প্রতিবাদী আন্দোলনে জড়িত কিছু বিদেশি শিক্ষার্থীকে তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেবেন। এই আন্দোলনকে তিনি ‘ইহুদিবিদ্বেষী’ বলে অভিহিত করেন।
স্বাধীন সংবাদমাধ্যম জেটো নিউজের এক খবরে জানা যায়, রায় সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে খলিল বলেন, ‘এই আদালত ঠিক সেটিই করেছেন, ঠিক যে উদ্দেশ্যে আমার পরিবার থেকে প্রায় এক হাজার মাইল দূরে আমাকে পাঠিয়েছিল ট্রাম্প প্রশাসন। আমি আশা করি যে দ্রুততার সঙ্গে আমার ঘটনায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, একইরকম যেন মাসের পর মাস আটকে থাকা বন্দিদের বিষয়েও আদালত দ্রুত সিদ্ধান্ত নেয়।’
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনি অ্যাক্টিভিস্ট আটক: যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন
ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে গত বসন্তে বিক্ষোভ করায় খলিলের মতো আরও অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছেন অভিবাসন কর্মকর্তারা। তাদেরও যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেওয়া হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মাহমুদকে গ্রেপ্তারের পর তার আইনজীবী কিংবা তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে না জানিয়েই তাকে লুইজিয়ানাতে স্থানান্তর করা হয়, যদিও তার মামলাটি নিউ জার্সির একটি আদালতে বিচারাধীন ছিল।
এর আগে তার গ্রেপ্তারের ঘটনাটি মার্কিন সংবিধানের প্রথম ও পঞ্চম সংশোধনীর আওতায় দেওয়া বাক্স্বাধীনতার সুরক্ষাকে লঙ্ঘন করছে কি না সে বিষয়ে হাবিয়েস পিটিশন করেছিল তার আইনজীবীরা।
শুক্রবারের রায় ঘোষণার পর মাহমুদ খলিলের আইনজীবীরা বলেন, ‘মাহমুদকে বিতাড়ন করা আটকাতে লড়াই এখনও শেষ হয়নি। তার পরিবারের কাছে তাকে ফিরিয়ে না দেওয়া পর্যন্ত আমরা লড়াই চালিয়ে যাব।’
২৩৬ দিন আগে
আমি যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক বন্দি: মাহমুদ খলিল
যুক্তরাষ্ট্রের অভিবাসন কর্মকর্তাদের হাতে গ্রেপ্তার কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মাহমুদ খলিল নিজেকে একজন রাজনৈতিক বন্দি হিসেবে দাবি করেছেন। এ সময় মার্কিন প্রশাসনের অভিবাসীদের এভাবে আটকে রাখার প্রক্রিয়াকে ইসরায়েলের বিচারবহির্ভূত আটক ব্যবস্থার সঙ্গে তুলনা করেছেন এই ফিলিস্তিনি যুবক।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) যুক্তরাষ্ট্রের লুইজিয়ানার আটককেন্দ্র থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেছেন তিনি।
গ্রেপ্তার হওয়ার পর প্রকাশ্যে দেওয়া এটিই তার প্রথম কোনো বিবৃতি। গত শনিবার (৮ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসভবন থেকে খলিলকে গ্রেপ্তার করে যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের (আইসিই) কর্মকর্তারা।
বিবৃতিতে খলিল বলেন, ‘আমি একজন রাজনৈতিক বন্দি। লুইজিয়ানার শীতের সকালে ঘুম ভাঙার পর আমার দীর্ঘ দিন কাটে এখানে আটক বহু মানুষদের দেখে, যারা আইনের সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত।’
খলিল বর্তমানে লুইজিয়ানার জেনা শহরে একটি অভিবাসী আটককেন্দ্রে রয়েছেন। সেখানেই তিনি বিচারের মুখোমুখি হওয়ার অপেক্ষায় আছেন। তাকে এভাবে আটকে রাখার ঘটনাকে তিনি ইসরায়েলের কারাগারে বিনা বিচারের বছরের পর বছর ফিলিস্তিনিদের আটকে রেখে নির্যাতনের সঙ্গে তুলনা করেছেন।
আরও পড়ুন: খলিল মাহমুদকে আটক: ট্রাম্প টাওয়ারে ইহুদিদের বিক্ষোভ
খলিল বলেন, ‘ফিলিস্তিনের ভূমি থেকে দূরে থাকলেও ভাগ্য সেই সীমানা অতিক্রম করে ফেলেছে। নিজেদের অধিকারের জন্য তাদের লড়াই চালিয়ে যেতে হয়।’
বিনা অপরাধে, বিচারে তাদের আটক থাকতে হয়, তিনিও এর বাইরে নন বলে মন্তব্য করেন বিবৃতিতে। তবে যুক্তরাষ্ট্রের এই অভিবাসন কেন্দ্রে কেউই নিজের অধিকার পেতে পারেন না বলেও নিজের অভিমত জানান মাহমুদ খলিল।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় দফায় হোয়াইট হাউসে ফিরেই অঙ্গীকার করেছিলেন, গত বছর কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনিপন্থি প্রতিবাদী আন্দোলনে জড়িত কিছু বিদেশি শিক্ষার্থীকে তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেবেন। এই আন্দোলনকে তিনি ‘ইহুদিবিদ্বেষী’ বলে অভিহিত করেন।
ট্রাম্পের তথাকথিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ইহুদিবিদ্বেষী বিক্ষোভ বন্ধের অভিযানের প্রথম শিকার ৩০ বছর বয়সী এই ফিলিস্তিনি যুবক। মাহমুদ খলিল কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড পাবলিক অ্যাফেয়ার্সের শিক্ষার্থী। যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাসের গ্রিনকার্ড রয়েছে তার। কিন্তু তার গ্রিনকার্ড বাতিলের প্রক্রিয়া চলমান বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন। আপাতত তাকে নিবার্সিত করার প্রক্রিয়া স্থগিত করেছেন এক ফেডারেল জজ।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সেই যুবক এখন বিপাকে
নিজের বন্ধু ও পরিবারের মাধ্যমে পাঠানো ওই বিবৃতিতে আটককেন্দ্রে অভিবাসীদের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের অমানবিক আচরণের প্রতিবাদ করেছেন মাহমুদ খলিল। গাজায় পুনরায় ইসরায়েলের হামলা শুরু করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। পাশাপাশি প্রশাসনের কাছে নতজানু হয়ে নিজেদের শিক্ষার্থীকে শাস্তির মুখে ঠেলে দেওয়ায় কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সমালোচনাও করেছেন খলিল।
ট্রাম্প প্রশাসনের মতে, খলিলকে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে ইহুদি শিক্ষার্থীদের জন্য ক্যাম্পাসে ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করায় অভিযুক্ত বিদেশি শিক্ষার্থীদের দেশ থেকে বের করে দেওয়ার অভিযানের শুরু হয়েছে।
তবে ওয়াশিংটনের এই পদক্ষেপকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় আঘাত ও ফিলিস্তিনপন্থি মতামত দমনের চেষ্টা বলে অভিহিত করেছেন অনেক মানবাধিকার কর্মী ও খলিলের আইনজীবীরা।
বিবুতিতে খলিলও বলেছেন, তাকে গ্রেপ্তারের ঘটনা সরাসরি তার বাকস্বাধীনতা লঙ্ঘন। তিনি কোনো অপরাধমূলক কার্যক্রমে জড়িত ছিলেন না। তিনি বলেন, ‘আমি শুধু চেয়েছিলাম ফিলিস্তিনে গনহত্যা বন্ধ হোক। সেজন্য আমাকে গ্রেপ্তার করা হলো।’
খলিল জানান, তার আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী নূর আবদাল্লার সামনে থেকে তাকে নিয়ে আসা হয়েছে। এমনকি কোনো পরোয়ানাও দেখানো হয়নি, নাম-প্রতীকহীন একটি গাড়িতে তাকে নিয়ে আসা হয়েছে। তার গর্ভবতী স্ত্রীকে নিয়ে অত্যন্ত চিন্তিত ছিলেন বলে জানান খলিল।
তিনি বলেন, গত বসন্তে তারা গাজায় ইসরায়েলি যে আগ্রাসন বন্ধে আন্দোলন করেছেন, তা যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন নসাৎ করে দিয়েছে, এখন নতুন করে বর্বরতা শুরু করেছে ইসরায়েল।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনি অ্যাক্টিভিস্ট আটক: যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন
আবার সীমাহীন দুর্ভোগ ও স্বজন হারানোর বেদনা সইতে হবে ফিলিস্তিনিদের বলে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি। এদিকে, খলিলের আটক সংবিধানের পুরোপুরি লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছেন তার আইনজীবীরা। গত সপ্তাহে এ লক্ষে একটি সংশোধিত পিটিশন দায়ের করেছেন তারা। খলিলকে কোনো অপরাধে অভিযুক্ত করা হয়নি, তিনি কোনো আইন অমান্য করেননি বলে উল্লেখ করেন তারা।
ট্রাম্প প্রশাসন অন্যায়ভাবে খলিলের ওপর প্রতিশোধ নিচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন তারা। সেন্টার ফর কনস্টিটিউশনাল রাইটসের সদস্য ও খলিলের আইনজীবী বলেন, ‘খলিলকে দিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের এই তথাকথিত ইহুদিবিদ্বেষী অভিযানের শুরু মাত্র। ভবিষ্যতে আরও অনেকে এই সমস্যায় পড়বেন। তবে শুরুতেই তারা একজন নির্ভীক ও নীতিনিষ্ঠ সংগঠককে আটক করেছেন, যিনি কিনা নিজ সম্প্রদায়ের মধ্যে অত্যন্ত ভালোবাসা ও বিশ্বাসের পাত্র।’
২৬১ দিন আগে
ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া সেই যুবক এখন বিপাকে
গত বসন্তে যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে গাজায় ইসরায়েলি সহিংসতা বন্ধে বিক্ষোভের সূত্রপাত হয়, যা পরবর্তীতে দেশটির অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ে। সে সময় নির্ভীক চাহনির এক ফিলিস্তিনি যুবকের মুখ বেশ পরিচিত হয়ে ওঠে। দেশি-বিদেশি গণমাধ্যমে আন্দোলনের সংবাদে দেখা যায় ওই যুবকের দীপ্ত চেহারা।
সম্প্রতি আবার আলোচনায় ফিরেছে সেই চেহারা। কারণ তখনকার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার ‘অপরাধে’ তাকে এবার আইনের আওতায় আনা হয়েছে।
ওই যুবকের নাম মাহমুদ খলিল। তিনি কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ বিষয়ের শিক্ষার্থী। যে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় গাজায় নির্বিচারে বোমা বর্ষণ করেছিল ইসরায়েল, সেই যুক্তরাষ্ট্রের মাটিতেই উপক্যতাটিতে হামলা বন্ধে গত এপ্রিলের সংঘঠিত তীব্র আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক এই যুবক।
যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম সেরা আটটি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে গঠিত গ্রুপ ‘আইভি লীগের’ একটি কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়। সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অভিবাসী শিক্ষার্থী হিসেবে খলিলের এই সাহসিকতা বাস্তবিকই প্রশংসার দাবিদার বলে মন্তব্য করেছেন অনেকে। আবার অনেক সমালোচকদের লক্ষ্যবস্তুও হয়েছে তার এই কর্মকাণ্ড।
খলিল কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানহ্যাটন ক্যাম্পাসের আন্দোলনে নিয়মিত অংশগ্রহণ করতেন। পাশাপাশি তিনি যুদ্ধে ইসরায়েলকে সমর্থনকারী কোম্পানিগুলোর সঙ্গে এই আইভি লিগ বিশ্ববিদ্যালয়টির আর্থিক সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবিতে আন্দোলনরতদের মুখপাত্র ও আলোচকের ভূমিকা পালন করেন। আন্দোলন চলাকালে খলিল বলেছিলেন, ‘আমরা সবার নজর কাড়তে চাই।’
খলিল সত্যিই যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের নজর কেড়েছিলেন, যার ফলস্বরূপ এই শনিবার (৮ মার্চ) দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের তথাকথিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ইহুদিবিদ্বেষী বিক্ষোভ বন্ধের অভিযানের প্রথম শিকার ৩০ বছর বয়সী এই ফিলিস্তিনি যুবক।
মাহমুদ খলিলের মতো একজন সাধারণ শিক্ষার্থীর চেহারা বোধহয় দেশটির প্রশাসনের বুকে শেলের মতোই বিঁধেছিল। এ কারণেই গ্রিনকার্ডধারী স্থায়ী বাসিন্দা এবং এক মার্কিনকে বিয়ে করার পরও তাকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করতে উঠেপড়ে লেগেছে ট্রাম্প প্রশাসন।
গত শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসভবন থেকে খলিলকে গ্রেপ্তার করে যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্টের (আইসিই) কর্মকর্তারা। বর্তমানে তাকে লুইজিয়ানার জেনায় একটি অভিবাসী আটককেন্দ্রে রাখা হয়েছে।
ট্রাম্প প্রশাসনের মতে, খলিলকে গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে ইহুদি শিক্ষার্থীদের জন্য ক্যাম্পাসে ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করায় অভিযুক্ত বিদেশি শিক্ষার্থীদের দেশ থেকে বের করে দেওয়ার অভিযানের শুরু হয়েছে।
তবে ওয়াশিংটনের এই পদক্ষেপকে মতপ্রকাশের স্বাধীনতায় আঘাত ও ফিলিস্তিনপন্থি মতামত দমনের চেষ্টা বলে অভিহিত করেছেন অনেক মানবাধিকার কর্মী ও খলিলের আইনজীবীরা।
খলিলের গ্রেপ্তারের খবরে মর্মাহত হয়েছেন আন্দোলন চলাকালে তার সহকর্মীরাও। তারা জানান, খলিল তার কূটনৈতিক জ্ঞানের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে বিক্ষোভের উতপ্ত দিনগুলোতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও বিক্ষোভকারীদের মধ্যে মধ্যস্ততার চেষ্টা করেছেন।
অ্যান্ড্রু ওয়ালার নামে খলিলের এক সহকর্মী বলেন, ‘তিনি (খলিল) ২০১৮ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সিরিয়ার সঙ্গে যু্ক্তরাজ্যের কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে কাজ করেছেন। সিরিয়াতে একটি বৃত্তির ফান্ডও পরিচালনা করেছিলেন খলিল।’
এ ধরনের দায়িত্ব দেওয়ার আগে নিশ্চয়ই খলিলের অতীত নিয়ে পর্যাপ্ত অনুসন্ধান করা হয়েছিল বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ওয়ালার আরও জানান, খলিলের স্ত্রী গর্ভবতী; অল্প কিছুদিনের মধ্যেই পৃথিবীতে আসতে চলেছে তাদের প্রথম সন্তান।
গত সপ্তাহে খলিলের সঙ্গে তার আলাপ হয়েছে উল্লেখ করে ওয়ালার বলেন, ‘ট্রাম্প প্রশাসনের নিশানা হওয়ার আশঙ্কা তিনি (খলিল) আগেই করেছিলেন।’
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনি অ্যাক্টিভিস্ট আটক: যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন
যুদ্ধবিধ্বস্ত সিরিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে
সিরিয়ায় একটি ফিলিস্তিনি পরিবারে খলিলের জন্ম। সেখানেই উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশোনা করেন তিনি। এভিয়েশন ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়তে চেয়েছিলেন এই যুব্ক, কিন্তু তার স্বপ্নে বাধ সাধে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ।
২০১৭ সালে একটি আন্তর্জাতিক শিক্ষা সহায়তায় খলিলের দেওয়া এক নিবন্ধ থেকে জানা যায়, সিরিয়া থেকে পালিয়ে গিয়ে লেবাননের রাজধানী বৈরুতে শিশুশিক্ষা নিয়ে কাজ করে—এমন একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজে যোগ দেন তিনি। পরে লেবাননের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখানে কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক সম্পন্ন করে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন খলিল।
কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবস্থায় গাজায় যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভের সময়ে তিনি মার্কিন প্রশাসনসহ সমালোচকদের নজরে আসেন।
শিক্ষার্থী বিক্ষোভকারীদের মধ্যে কেউ কেউ গত বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের আঙিনায় তাঁবু স্থাপন করেছিলেন। কয়েক ঘণ্টার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি একাডেমিক ভবনের নিয়ন্ত্রণও নিয়েছিলেন তারা। পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাদের হটাতে পুলিশের শরণাপন্ন হয়।
বিক্ষোভ চলাকালে ফিলিস্তিনি সমর্থক ও নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত মুসলিম শিক্ষার্থীদের পক্ষে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করেন খলিল। এরপর বিক্ষোভের মাঝে উঁচু স্বরে প্রতিবাদ জানানোর ফলে দ্রুতই নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হন তিনি। এই আন্দোলনকে যারা ইহুদীবিদ্বেষী হিসেবে দেখেছিলেন, তিনি তাদের চক্ষুশূল হয়ে ওঠেন।
গত সপ্তাহে অ্যাসোসিয়েট প্রেসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে খলিল বলেন, ‘এই ফিলিস্তিনির দিকে তাকান, যে কখনও নিজের মুখ লুকায়নি—বলে আমি আসলে বলির পাঁঠা হয়ে গিয়েছি।’
অন্যদিকে, খলিলকে ক্যাম্পাসে ‘অরাজকতার হোতা’ হিসেবে বলে আখ্যা দিয়েছে কলাম্বিয়া ইহুদি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন। এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি শৃঙ্খলা কমিটি তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তদন্ত করছে।
সর্বশেষ তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ডিনকে ‘নরহত্যাকারী’ বলে সম্বোধন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতি ভঙ্গ করেছেন।
ট্রাম্প প্রশাসনের নিশানায় খলিল
ট্রাম্প গত ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় দফায় হোয়াইট হাউসে ফিরেই অঙ্গীকার করেছিলেন, গত বছর কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিলিস্তিনপন্থি আন্দোলনে জড়িত কিছু বিদেশি শিক্ষার্থীকে তিনি যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেবেন। এই আন্দোলনকে তিনি ‘ইহুদিবিদ্বষী’ বলে অভিহিত করেন।
ট্রাম্পের মতে, গাজার ক্ষমতায় থাকা ‘সন্ত্রাসী সংগঠন হামাসকে’ সমর্থন করে ওই শিক্ষার্থীরা যুক্তরাষ্ট্রে থাকার অধিকার হারিয়েছেন।
ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশেই মাহমুদ খলিলকে শনিবার গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন অভিবাসন কর্মকর্তারা।
শনিবার আটকের পর খলিলকে লুইজিয়ানার একটি অভিবাসী আটককেন্দ্রে রাখা হয়েছে। সেখানে তিনি পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন।
এ ঘটনার পর রবিবার (৯ মার্চ) এক্সে দেওয়া এক পোস্টে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, ‘আমেরিকায় হামাস সমর্থকদের ভিসা ও গ্রিনকার্ড বাতিল করবে প্রশাসন, যাতে তাদের নির্বাসন দেওয়া যায়।’
পরে মঙ্গলবার (১১ মার্চ) সংবাদ সম্মেলনে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিট বলেন, ‘মাহমুদ খলিলকে অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্র থেকে নির্বাসিত করা উচিত।’
লেভিটের ভাষ্যে, ‘খলিল এমন একটি বিক্ষোভ সংগঠিত করেছেন, যা শুধু কলেজ ক্যাম্পাসের শিক্ষা কার্যক্রমকে ব্যাহত করেনি, আমেরিকার ইহুদি শিক্ষার্থীদেরও হয়রানি করেছে। এছাড়া তাদের নিজ ক্যাম্পাসে নিরাপত্তাহীনতার পরিস্থিতি তৈরি করেছে বিক্ষোভকারীরা।’
হামাসের সমর্থনে খলিল প্রোপাগান্ডা ছড়িয়েছে বলেও অভিযোগ করেন লেভিট।
তবে লেভিটের এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তার সঙ্গে অংশগ্রহণকারী অন্যান্য শিক্ষার্থীরা।
ম্যারিয়ান আলওয়ান নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘অন্য কেউ বিক্ষোভ-সংশ্লিষ্ট নয়—এমন কিছু প্রচার করলে সেই দায় যাতে খলিলের ওপর না বর্তায়, এ কারণেই তিনি (খলিল) মুখ খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেন।’
এদিকে, খলিলের স্ত্রী আট মাসের গর্ভবতী বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা। নিজের নাম না প্রকাশ করে এক বিবৃতিতে খলিলের স্ত্রী বলেছেন, ‘আমার চোখে মাহমুদ খলিল একজন স্নেহপরায়ণ স্বামী এবং আমার গর্ভের সন্তানের বাবা।’
খলিলকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের হাত থেকে ছাড়িয়ে নিজের কাছে ফিরিয়ে নিতে তিনি সবার সহযোগিতা কামনা করেছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি তাকে ঘরে ফিরিয়ে আনতে চাই। আমার প্রথম সন্তান যখন পৃথিবীতে আসবে, তখন আমার স্বামীকে আমি পাশে চাই। এজন্য সবার সহযোগিতা চাই।’
২৬৭ দিন আগে