যাত্রী কল্যাণ সমিতি
জানুয়ারিতে ৫৯৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৮৫ জন নিহত: যাত্রী কল্যাণ সমিতি
জানুয়ারি মাসে দেশে ৫৯৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৮৫ জন নিহত এবং ৮৯৯ জন আহত হয়েছেন। একই সময় রেলপথে ৪৪টি দুর্ঘটনায় ৪৬ জন নিহত এবং ৭৮ জন আহত হয়েছেন।
আর নৌ-পথে ১৩টি দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত, একজন আহত এবং ছয়জন নিখোঁজ হয়েছেন।
সবমিলে জানুয়ারি মাসে সড়ক, রেল ও নৌ-পথে মোট ৬৫০টি দুর্ঘটনায় ৬৪২ জন নিহত এবং ৯৭৮ জন আহত হয়েছে।
এসব দুর্ঘটনার মধ্যে ২১৪টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২০৫ জন নিহত এবং ১১৪ জন আহত হয়েছে।
আরও পড়ুন: খুলনায় প্রাইভেটকারের ধাক্কায় প্রাণ গেলো কিশোরের
শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
এছাড়া, দেশের বিভিন্ন জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌ-পথে দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌপথে দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
এতে দেখা গেছে, ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসের চেয়ে ২০২৩ সালে জানুয়ারি মাসে সড়কে দুর্ঘটনা ৫ দশমিক ৩ শতাংশ এবং দুর্ঘটনায় আহত ১০ দশমিক ৪ শতাংশ বাড়লেও প্রাণহানী ৪ দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে।
সড়ক দুর্ঘটনায় আক্রান্তদের মধ্যে ২০৬ জন চালক, ১০৯ জন পথচারী, ৩৫ জন পরিবহন শ্রমিক, ৫৩ জন শিক্ষার্থী, ১০ জন শিক্ষক, ১৩ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ১১৫ জন নারী, ৬২ জন শিশু, পাঁচজন সাংবাদিক, একজন মুক্তিযোদ্ধা, দুইজন আইনজীবী, তিনজন প্রকৌশলী এবং ১৪ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে।
এর মধ্যে নিহত হয়েছে ০৯ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে ছয়জন পুলিশ সদস্য, একজন বিজিবি সদস্য, দুইজন আনসার সদস্য, ১৫৩ জন চালক, ৮৪ জন পথচারী, আটজন নারী, ৪৬ জন শিশু, ৪৬ জন শিক্ষার্থী, ২৬ জন পরিবহন শ্রমিক, একজন সাংবাদিক, ০৯ জন শিক্ষক, দুইজন প্রকৌশলী, দুইজন আইনজীবী ও আটজন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।
এ সময়ে সংগঠিত দুর্ঘটনায় সর্বমোট ৮১৬টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে, যার ১২ দশমিক ৫ শতাংশ বাস, ২৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ ট্রাক-পিকাপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ৫ দশমিক ০২ শতাংশ কার-জীপ-মাইক্রোবাস, ৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিক্সা, ২৭ দশমিক ৩২ শতাংশ মোটরসাইকেল, ১৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিক্সা ও ইজিবাইক, ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।
আরও পড়ুন: সাভারে প্রাইভেটকারের ধাক্কায় নিহত ২
সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৫১ দশমিক ৬০ শতাংশ পথচারীকে গাড়ি চাপা দেয়ার ঘটনা, ২২ দশমিক ২৫ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১২ দশমিক ৪৭ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ১১ দশমিক ৯৭ শতাংশ বিবিধ কারণে, শূন্য দশমিক ৬৭ শতাংশ যানবাহনের চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে এবং ১ দশমিক ১ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা গেছে এই বছর মোট সংঘটিত দুর্ঘটনার ২৯ দশমিক ৫১ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ৩৮ দশমিক ৬১ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ২৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে।
এছাড়াও সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৫ দশমিক ২২ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ১ দশমিক ১৮ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে, ১ দশমিক ১ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংঘটিত হয়েছে।
গত জানুয়ারি মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ১৭ জানুয়ারি। এদিন ৩৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২০ জন নিহত এবং ৩১ জন আহত হয়েছেন।
অন্যদিকে, সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ২ জানুয়ারি। এদিন ১২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১০ জন নিহত এবং ২১ জন আহত হয়েছেন।
সড়ক দুর্ঘটনায় একদিনে সবচেয়ে বেশি নিহত হয়েছে ১১ জানুয়ারি। এদিন ২৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩০ জন নিহত এবং ১৭ জন আহত হয়েছেন।
সড়ক দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি আহত হয়েছে ৫ জানুয়ারি। এদিন ১৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত এবং ৭১ জন আহত হয়েছে।
আরও পড়ুন: সিলেটে প্রাইভেটকারের ধাক্কায় পথচারী নিহত
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ মতে সড়ক দুর্ঘটনার উল্লেখযোগ্য কারণসমূহ-
১। বেপরোয়া গতি।
২। বিপদজনক অভারটেকিং।
৩। ফিটনেসবিহীন যানবাহনের অবাধে চলাচল।
৪। যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা।
৫। চালকের অদক্ষতা।
৬। চালকের বেপরোয়া মনোভাব।
৭। চলন্ত অবস্থায় মোবাইল বা হেড ফোন ব্যবহার।
৮। মাদক সেবন করে যানবাহন চালানো।
৯। রাস্তায় ফুটপাত না থাকা বা ফুটপাত বেদখলে থাকা।
১০। ট্রাফিক আইনের দুর্বল প্রয়োগ ও ট্রাফিক আইন অমান্য করা।
১১। ছোট যানবাহনের ব্যাপক বৃদ্ধি।
১২। সড়কে চাঁদাবাজি।
১৩। রাস্তার পাশে হাট-বাজার।
১৪। ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন রাস্তায় নামানো।
১৫। চালকের নিয়োগ ও কর্মঘন্টা সুনির্দিষ্ট না থাকা।
১৬। দেশব্যাপী নিরাপদ ও আধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্থার পরিবর্তে ইজিবাইক-ব্যাটারিচালিত রিকশা, মোটরসাইকেল, সিএনজি অটোরিকশানির্ভর গণপরিবহন ব্যবস্থার দিকে ধাবিত হওয়ার কারণে সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ছে।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রাইভেটকারের ধাক্কায় নিহত ১
মেট্রোরেলের ভাড়া ৫০% কমানোর দাবি যাত্রী কল্যাণ সমিতির
মেট্রোরেলের ভাড়া সিটি বাস সার্ভিসের দ্বিগুণ নির্ধারণকে অযৌক্তিক ও গণবিরোধী বলে মন্তব্য করেছে যাত্রী কল্যাণ সংস্থা বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
তারা প্রতি কিলোমিটার ভাড়া ৫০ শতাংশ কমানোর দাবি করেছে এবং ন্যূনতম ভাড়া যৌক্তিক পর্যায়ে নির্ধারণের দাবি জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২৮ ডিসেম্বর দেশের প্রথম মেট্রোরেল পরিষেবা উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
শনিবার রাজধানীতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ঢাকা মেট্রোরেল উদ্বোধনের আগে তাদের দাবি পূরণ করতে হবে।
আরও পড়ুন: মেট্রোরেলের আরেকটি চালান পৌঁছাল মোংলা বন্দরে
তিনি বলেন, আর্থ-সামাজিক অবস্থা, মাথাপিছু আয় এবং জিডিপি বিবেচনায় প্রায় সব সূচকেই ঢাকা ও ভারতের কলকাতা শহর অনেকটা একই রকম।
তবে ঢাকায় মেট্রোরেলের প্রতি কিলোমিটার ভাড়া দুই গুণ বেশি হবে এবং কলকাতায় মেট্রোরেলের তুলনায় মোট ভাড়া চার গুণ বেশি হবে বলে জানান তিনি।
মোজাম্মেল বলেন, ‘এটি যাত্রীদের স্বার্থকে চরমভাবে ব্যাহত করবে এবং ধাক্কাধাক্কি বাস কোম্পানিগুলো উপকৃত হবে। যাত্রীরা নিয়মিত মেট্রোরেল ব্যবহার করার ক্ষমতা হারাবে এবং মেট্রোরেল যাত্রী বহনের লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হবে।’
এক লিখিত বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, কলকাতা মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ তাদের ওয়েবসাইটে স্পষ্টভাবে বলেছে যে সড়ক পরিবহন ভাড়ার তুলনায় মেট্রোরেলের ভাড়া সবচেয়ে সস্তা।
তিনি বলেন, ‘কলকাতা মেট্রোরেলে সর্বনিম্ন ভাড়া ৫ টাকা বা ৬ টাকা, কিন্তু ঢাকা মেট্রোরেলে সর্বনিম্ন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ টাকা। কলকাতা মেট্রোরেলের সর্বোচ্চ ভাড়া ২৫ টাকা বা ৩১ টাকা, যা ঢাকা মেট্রোরেলে ১০০ টাকা।’
নয়াদিল্লি ও কলকাতাসহ এশিয়ার বিভিন্ন মেট্রো রেলের উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘ঢাকা মেট্রোরেলের তুলনায় অন্যান্য দেশের এই মেট্রোরেল পরিষেবাগুলোর ভাড়া সস্তা, কারণ এগুলোর নির্মাণ খরচ কম।’
তিনি বলেন, সাধারণ যাত্রীরা জানতে চান কেন বাংলাদেশ অন্যান্য দেশের প্রতিযোগিতামূলক ব্যয়ের বিপরীতে মেট্রোরেল নির্মাণে এত বেশি ব্যয় করেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘কিছু মেগা প্রকল্পে হিসাবহীনভাবে ব্যয় হচ্ছে, আবার কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ব্যাংক খালি করে দিচ্ছে। ফলে জনগণকে চড়া মূল্য দিতে হচ্ছে। আমাদের প্রতিবেশি দেশ ভারতের তুলনায় বাংলাদেশে চাল, ডাল, তেল, মাছ, মাংসের দাম দ্বিগুণ; কোনো কোনো ক্ষেত্রে তিন গুণেরও বেশি।’
আরও পড়ুন: মেট্রোরেলের মালামাল নিয়ে আরও একটি জাহাজ মোংলা বন্দরে
মেট্রোরেলে চাকরি: ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের চাকরির বিজ্ঞপ্তি ২০২২
দেশে পালন করা হচ্ছে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস
বাংলাদেশে ষষ্ঠ জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস (২০২২) পালন করা হচ্ছে আজ (শনিবার)।
ক্রমবর্ধমান যানবাহন, বেপরোয়া গাড়ি চালানো ও নিয়ম না মেনে সড়কে হাঁটা, পুলিশসহ গুরুত্বপূর্ণ সংস্থায় জনবলের ঘাটতির কারণে দুর্ঘটনার উচ্চ হারের মধ্য দিয়েই ‘আইন মেনে সড়কে চলি, নিরাপদে ঘরে ফিরি’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে দিবসটি পালিত হবে আজ।
যাত্রী কল্যাণ সমিতি আজ দাবি করেছে যে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এর অধীনে জরুরি ভিত্তিতে একটি বিধান প্রণয়ন করে সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের সময়মতো আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হোক।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (এআরআই) হিসাব বলছে, গত তিন বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এক দশমিক ০৯ লাখ কোটি টাকা।’
আরও পড়ুন: জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবসে দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল স্কুলছাত্রের
তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশের তথ্যের ভিত্তিতে এআরআই বলেছে, গত এক দশকে দেশে সড়ক-মহাসড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ৫৪ শতাংশের বয়স ১৬ থেকে ৪০ বছর। আর দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ১৮ দশমিক ৫ শতাংশই ১৫ বছরের কম বয়সী।’
মোজাম্মেল বলেন, যদিও সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের আর্থিক সহায়তা তহবিল থেকে নিহতদের পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা ও আহতদের তিন লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার বিধান রয়েছে। আইন কার্যকর হওয়ার তিন বছর পরও এই ক্ষতিপূরণ দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়নি।
সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা কার্যক্রম দ্রুত চালু করার দাবি জানান তিনি।
দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি কমাতে জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা পরিষদকে সক্রিয় করারও আহ্বান জানান মোজাম্মেল।
আরও পড়ুন: নিরাপদ সড়ক ও হাফ ভাড়ার দাবিতে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
নিরাপদ সড়কের দাবিতে শাহবাগে শিক্ষার্থীদের কফিন মিছিল
এবারের ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩৯৮ জন নিহত
বাংলাদেশে এ বছর ঈদুল আজহার আগে ও পরে ভ্রমণের সময় মাত্র ১৫ দিনে ৩১৯টি দুর্ঘটনায় সড়কে ৩৯৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এবছর ঈদুল আজহায় বাংলাদেশের সড়কে দুর্ঘটনা ও মৃত্যুর রেকর্ড গত ৭ বছরে সবচেয়ে বেশি।
মঙ্গলবার রাজধানীতে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির মহাপরিচালক মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।
প্রতি বছরের মতো এবারও সংস্থাটির মনিটরিং সেল ৩ থেকে ১৭ জুলাই ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিবেদন তৈরি করেছে।
২০১৬ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৯৩টি দুর্ঘটনায় প্রায় ২৪৮ জন সড়কে প্রাণ হারিয়েছে।
২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত, প্রতি বছর মৃত্যুর সংখ্যা ২৫০-৩০০ জনের মধ্যে ছিল এবং দুর্ঘটনার সংখ্যা ২০০-২৫০টির মধ্যে ছিল।
মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘কোভিড-১৯ সংক্রান্ত কোনো বিধিনিষেধ না থাকায় এ বছর ঈদে ভ্রমণকারীর সংখ্যা বেড়েছে। ঈদের ছুটিতে প্রায় এক কোটি ২০ লাখ মানুষ ঢাকা ছেড়েছেন এবং আরও চার কোটি মানুষ বিভিন্ন জেলায় ভ্রমণ করেছেন।
একই সময়ে পৃথক স্থানে ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে ২৫ জন, ১০টি নৌদুর্ঘটনায় ১৭ জন নিহত ও ১৫ জন আহত এবং তিনজন নিখোঁজ হয়েছেন।
যাত্রী কল্যাণ সমিতি বহুল প্রচারিত ও বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় দৈনিক, স্থানীয় সংবাদপত্র এবং অনলাইনে প্রকাশিত সংবাদ পর্যবেক্ষণ করে প্রতিবেদনটি তৈরি করে।
আরও পড়ুন: টাঙ্গাইলে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪, আহত ১৫
গণপরিবহনে ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদ যাত্রী কল্যাণ সমিতির
প্রতি কিলোমিটারে ডিজেলচালিত বাসের ভাড়া ২৭ শতাংশ বৃদ্ধির সরকারি সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ করেছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি (জেকেএস)।
জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে গণপরিবহন মালিকদের ডাকা ধর্মঘটের প্রেক্ষিতে রবিবার ঢাকায় বাস মালিকদের সাথে বৈঠকের পর ভাড়া বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে সরকার। সোমবার থেকে নতুন ধার্য করা এই বাড়া কার্যকর হবে।
সরকার ভাড়া বৃদ্ধির ঘোষণা দেয়ার পর শুক্রবার সকাল থেকে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছে বাস মালিকেরা।
এক বিবৃতিতে জেকেএস’র মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী জানান, নতুন ধার্যকৃত বাড়তি ভাড়ার বিরুদ্ধে নেওয়া প্রতিবাদ কর্মসূচীর বিষয়ে সোমবার সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে।
বিবৃতিতে জেকেএস আরও জানায়,সরকার কোনও পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই অবৈধভাবে ডিজেল এবং কেরোসিনের দাম ২৩ শতাংশ বাড়িয়েছে।
আরও পড়ুন:ডিজেল চালিত বাস ও মিনিবাসের ভাড়া বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন
বাস ধর্মঘট প্রত্যাহার, ভাড়া বাড়ছে
দ্বিগুণ ভাড়ায় চট্টগ্রাম মহানগরীতে বাস চলাচল শুরু
বর্ধিত জ্বালানি তেলের মূল্য ও পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহারের দাবি যাত্রী কল্যাণ সমিতির
করোনার বিপর্যয় কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টারত নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকা সচল রাখার স্বার্থে অযৌক্তিকভাবে বর্ধিত জ্বালানি তেলের মূল্য ও পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
শনিবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘করোনায় বিপর্যয় কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টারত জনগণের উপর বর্ধিত জ্বালানি তেলের মূল্য প্রত্যাহার ও ধর্মঘটের নামে পরিবহনে নৈরাজ্য বন্ধের দাবি’তে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ দাবি জানান।
আরও পড়ুন: তেলের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী পর্যবেক্ষণ করছেন: ওবায়দুল কাদের
তিনি বলেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনা সংকটে লকডাউনসহ নানা কারণে দেশের ৭৭ ভাগ মানুষের আয় কমেছে। ফলে তিন কোটি ২৪ লাখ মানুষ নতুন করে দরিদ্র হয়েছে বলে এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে। এহেন শংকটাপন্ন দেশের মানুষজন দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে যখন দিশেহারা, ঠিক তখনই জ্বালানি তেলের দাম একলাফে ২৩ শতাংশ বৃদ্ধির কারণে মানুষের যাতায়াত, পণ্য পরিবহন, খাদ্যপণ্য ও কৃষিজ উৎপাদনসহ সামগ্রিক ব্যয় আরও কয়েকগুণ বেড়ে যাবে। পণ্য ও সেবামূল্য আরও একদফা বৃদ্ধির ফলে চরমভাবে মুদ্রাস্ফীতি বাড়বে। এতে নতুন করে আরও কয়েক কোটি মানুষ দারিদ্রের ঝুঁকিতে পরার শঙ্কা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কম থাকায় সরকার উচ্চহারে তেল বিক্রি করে গত ছয় বছরে ধরে একচেটিয়া মুনাফা করেছে। এতে সরকার প্রায় ৬৩ হাজার কোটি টাকার বেশি আয় করেছে। মাত্র পাঁচ মাস ধরে জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির কারণে দেশের মানুষের এই কঠিন দুঃসময়ে একলাফে ২৩ শতাংশ তেলের মূল্য বৃদ্ধি করা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত বলে দাবি করেন তিনি। করোনা শংকটাপন্ন জনগণকে প্রণোদনা দিয়ে সরকার যেখানে জনগণের পাশে থাকার কথা সেখানে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে জনসাধারণকে আরেক দফা শংকটে ঠেলে দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। ৬ লাখ কোটি টাকার জাতীয় বাজেটে জ্বালানি খাতে মূল্য না বাড়িয়েও ছয় হাজার কোটি টাকা বছরে ভুতর্কি দেয়ার সক্ষমতা সরকারের রয়েছে বলে দাবি করে তিনি অনতিবিলম্বে জ্বালানি তেলের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহার করে এহেন পরিবহন ধর্মঘটের নামে এহেন নৈরাজ্য বন্ধের দাবি জানান।
আরও পড়ুন: জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পেছনে সরকারের যুক্তি ‘অগ্রহণযোগ্য’: ফখরুল
সংগঠনের উপদেষ্ঠামণ্ডলীর সদস্য শরীফুজ্জামান শরীফ বলেন, যে প্রক্রিয়ায় দাম বাড়ানো হয়েছে তা অবৈধ। জ্বালানির দাম বাড়ানোর কোন ক্ষমতা জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের নেই। এটা করার ক্ষমতা বিইআরসির। সেখানে শুনানির পরেই সিদ্ধান্ত গ্রহণের নিয়ম। সরকার গায়ের জোরে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাদের নেতা কর্মীদের বিরাট অংশের আয় বৃদ্ধিকে সাধারণ মানুষের আয় বৃদ্ধি মনে করে সরকার জনগণের বিরুদ্ধে এমন হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এতে আরও বক্তব্য দেন সংগঠনের সহ-সভাপতি তাওহীদুল হক লিটন, যুগ্ম মহাসচিব এম. মনিরুল হক, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার হোসেন।
চট্টগ্রামে ট্রাক-সিএনজি সংঘর্ষে নিহত ৩
জেলার বাঁশখালী উপজেলার বৈঁলগাও এলাকায় ট্রাক ও সিএনজি অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে মা-মেয়েসহ তিনজন সিএনজি যাত্রী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও দুজন।
সোমবার (১০ মে) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে বাঁশখালী থানার ডিউটি অফিসার এএসআই জাহাঙ্গীর আলম বলেন, চট্টগ্রামমুখী একটি সিএনজি অটোরিকশার সাথে বাঁশখালীমুখী একটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই তিনজন নিহত হয়। আহত হয় আরও দুই যাত্রী।
আরও পড়ুন: সিলেটে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৪ জনসহ নিহত ৫
আহত ও নিহতদের পরিচয় জানা যায়নি। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ।
এদিকে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইদুজ্জামান চৌধুরীসহ পুলিশ কর্মকর্তারা।
এপ্রিলে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪৬৮: যাত্রী কল্যাণ সমিতি
বিদায়ী এপ্রিলের লকডাউনের এক মাসে ৪৩২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৬৮ জন নিহত ও ৫০৭ জন আহত হয়েছে। একই সময় রেল-পথে ৮টি দুর্ঘটনায় ৬ জন নিহত হয়েছে এবং নৌ-পথে ১৪টি দুর্ঘটনায় ৩৮ জন নিহত, ৯ জন আহত এবং ২ নিখোঁজ হওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
দেশের সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে সম্প্রতি গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
এইমাসে সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ৮২ জন পথচারী, ১৩৪ জন চালক, ১১০ জন পরিবহন শ্রমিক, ৩৩ জন শিক্ষার্থী, ৬ জন শিক্ষক, ২৮ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ৫২ জন নারী, ৪৭ জন শিশু এবং ৪ জন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীর পরিচয় সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে।
এর মধ্যে নিহত হয়েছে ১১২ জন চালক, ৮২ জন পথচারী, ৩৮ জন নারী, ২৬ জন ছাত্র-ছাত্রী, ৩৬ জন পরিবহন শ্রমিক, ৪২ জন শিশু, ২ জন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী, ৭ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও ৪জন শিক্ষক ছিল।
পরিসংখ্যানে দেখা যায় সর্বোচ্চ ২২১টি দুর্ঘটনা ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানে, ১৪৪টি দুর্ঘটনা মোটরসাইকেলে, ৫৫টি ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৬৪টি নসিমন ও করিমন, ৫২টি সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৩০টি প্রাইভেট কার ও ২০টি বাস এসব দুর্ঘটনায় জড়িত ছিল।
এ মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয় ৮ এপ্রিল। ওইদিনে ২৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৬ জন নিহত ও ৩৩ জন আহত হয়।
সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয় ১৪ এপ্রিল ৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১০ জন নিহত ও ৬ জন আহত হয়।
এপ্রিলে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪৬৮: যাত্রী কল্যাণ সমিতি
লকডাউনে থেমে নেই সড়ক দুর্ঘটনা। বিদায়ী এপ্রিলের লকডাউনের এক মাসে ৪৩২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৬৮ জন নিহত ও ৫০৭ জন আহত হয়েছে। একই সময় রেল-পথে ৮টি দুর্ঘটনায় ৬ জন নিহত হয়েছে এবং নৌ-পথে ১৪টি দুর্ঘটনায় ৩৮ জন নিহত, ৯ জন আহত এবং ২ নিখোঁজ হওয়ার সংবাদ পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে।
দেশের সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে আজ রবিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি এই প্রতিবেদন প্রকাশ করে।
আরও পড়ুন: সিলেটে সড়ক দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৪ জনসহ নিহত ৫
এইমাসে সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ৮২ জন পথচারী, ১৩৪ জন চালক, ১১০ জন পরিবহন শ্রমিক, ৩৩ জন শিক্ষার্থী, ৬ জন শিক্ষক, ২৮ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ৫২ জন নারী, ৪৭ জন শিশু এবং ৪ জন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীর পরিচয় সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে।
এর মধ্যে নিহত হয়েছে ১১২ জন চালক, ৮২ জন পথচারী, ৩৮ জন নারী, ২৬ জন ছাত্র-ছাত্রী, ৩৬ জন পরিবহন শ্রমিক, ৪২ জন শিশু, ২ জন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী, ৭ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও ৪জন শিক্ষক ছিল।
পরিসংখ্যানে দেখা যায় সর্বোচ্চ ২২১টি দুর্ঘটনা ট্রাক ও কাভার্ডভ্যানে, ১৪৪টি দুর্ঘটনা মোটরসাইকেলে, ৫৫টি ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৬৪টি নসিমন ও করিমন, ৫২টি সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৩০টি প্রাইভেট কার ও ২০টি বাস এসব দুর্ঘটনায় জড়িত ছিল।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২, আহত ৩
এ মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয় ৮ এপ্রিল। ওইদিনে ২৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৬ জন নিহত ও ৩৩ জন আহত হয়।
সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা সংগঠিত হয় ১৪ এপ্রিল ৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১০ জন নিহত ও ৬ জন আহত হয়।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে রাইট শেয়ারিং সার্ভিস চালুর দাবি যাত্রী কল্যাণ সমিতি’র
চালকের মতো যাত্রীর মাথায় মানসম্মত হেলমেট নিশ্চিত করে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ সাপেক্ষে রাইট শেয়ারিংয়ের মোটরসাইকেল চালুর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এই দাবি জানান।
তিনি বলেন, রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে যানজট, গণপরিবহন সংকট, পরিবহনে বিশৃঙ্খলা, অরাজকতা, ভাড়া নৈরাজ্য ও যাত্রী সেবারমান তলানীতে পৌঁছানোর কারণে সময়ের চাহিদার প্রেক্ষিতে মোটরসাইকেলে রাইট শেয়ারিং চালু হলেও বর্তমানে প্রায় ৫ লক্ষাধিক মানুষের জীবন-জীবিকার একমাত্র উৎস হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে এটি। এছাড়াও প্রায় ১২ লাখ বাইকার রাইট শেয়ারিংয়ের মাধ্যমে স্বাভাবিক সময়ে সারাদেশে দৈনিক প্রায় ৫০ লক্ষ ট্রিপ যাত্রী পরিবহন করছে।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, যানজট, গণপরিবহন সংকটসহ নানা কারণে জরুরি যাতায়াতের প্রয়োজনে যাত্রীদের কাছে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠা এই বাহনটি করোনা সংকটে বন্ধ করে দেয়ায় জরুরি যাতায়াতের যাত্রীরা বিপাকে পড়েছে। অন্যান্য গণপরিবহনের চেয়ে অপেক্ষাকৃত কম ঝুকিঁপূর্ণ হলেও সরকারের অদুরদর্শী সিদ্বান্তে এটি বন্ধ থাকায় যাত্রীদের পাশাপাশি এই পেশায় নিয়োজিত চালকেরা নিধারুণ অর্থ সংকটে পড়েছে।
আরও পড়ুন: গণপরিবহনে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের দাবি যাত্রী কল্যাণ সমিতি’র
গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মানানো কঠিন হলেও মোটরসাইকেলের ক্ষেত্রে এটি মানানো অনেক সহজতর। তাই জরুরি ভিত্তিতে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ সাপেক্ষে রাইট শেয়ারিংয়ের মোটরসাইকেল চালু করার দাবি জানান মোজাম্মেল হক।
গণপরিবহনে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের দাবি যাত্রী কল্যাণ সমিতি’র
গণপরিবহনে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ, ভাড়া নৈরাজ্য ও যাত্রী দুর্ভোগ বন্ধের দাবি জানিয়েছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনের মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ দাবি জানান।
আরও পড়ুন: ফরিদপুরে গণপরিবহনে প্রথম দিনে অনিয়ম, পুলিশের নজরদারি
বিবৃতিতে তিনি বলেন, করোনা সংকটে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণপূর্বক অর্ধেক যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন চালানোর জন্য বাসের ভাড়া ৬০ শতাংশ বৃদ্ধি করা হলেও এখন দেশের অধিকাংশ গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। সিটিং সার্ভিস ও শহরতলীর বাস, হিউম্যান হলার, অটো টেম্পুসমূহে বর্ধিত ভাড়া নিয়ে সেই পুরনো কায়দায় গাদাগাদি করে যাত্রী বহন করা হচ্ছে। এতে কর্মজীবী, শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের সাধারণ লোকজন, কর্মহীন ও আয় কমে যাওয়া দেশের সাধারণ মানুষের যাতায়াত দুর্বিসহ হয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুন: করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে গণপরিবহনে কথা না বলার পরামর্শ
এছাড়াও সকল অফিস আদালত খোলা থাকায় অর্ধেক যাত্রী নিয়ে সিটিং সার্ভিসের বাসগুলো চলাচলের ফলে রাস্তায় প্রতিটি বাস স্টপেজে শত-শত যাত্রী ঘণ্টার পর ঘণ্টা রাস্তায় অপেক্ষা করে গণপরিবহন পাচ্ছে না। এতে নারী, শিশু, অসুস্থ রোগী ও অফিসগামী যাত্রীরা অবর্ণনীয় দুর্ভোগে পড়ছে। হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়া বাড়তি ভাড়া আদায়কে কেন্দ্র করে প্রতিটি রুটে চলাচলকারী গণপরিবহনে যাত্রী-শ্রমিক বচসা, হাতাহাতি, মারামারি চলছে।
আরও পড়ুন: গণপরিবহনের শৃঙ্খলায় বৃদ্ধি পাচ্ছে পাইলট রুটের পরিধি
বিবৃতিতে তিনি দেশে লকডাউন বা সাধারণ ছুটি ঘোষণা না করা হলে, যত সিট তত যাত্রী (বিআরটিএ নিবন্ধিত আসন অনুযায়ী) পদ্ধতিতে পূর্বের ভাড়ায় যাতায়াতের কঠোর স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ পূর্বক যাত্রী পরিবহন, একই সাথে গণপরিবহণের বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহার করে দেশের প্রতিটি রুটে বর্ধিত ভাড়া পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানান।