যাত্রী কল্যাণ সমিতি
যানজট নিয়ন্ত্রণে প্রধান সড়ক থেকে ছোট যানবাহন অপসারণের দাবি যাত্রী কল্যাণ সমিতির
ঢাকা মহানগরীর প্রধান সড়ক থেকে রিকশা, ইজিবাইকসহ ছোট ছোট যানবাহন তুলে দিয়ে বৈজ্ঞানিক পন্থায় ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণের দাবি করেছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
এ ব্যবস্থা চালু করা গেলে ঢাকার যানজট সমস্যা থেকে দ্রুত মুক্তি মিলবে বলে দাবি তাদের।
রবিবার (৬ অক্টোবর) সকালে নগরীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ দাবি করেন।
আরও পড়ুন: অবিলম্বে জ্বালানি তেলের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহারের দাবি যাত্রী কল্যাণ সমিতির
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, যত্রতত্র যাত্রী উঠানামা, পরিবহন সংশ্লিষ্টরা নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করায় ভয়াবহ যানজটে নাকাল রাজধানীবাসী। নগরীর এক প্রান্ত থেকে যেকোনো গন্তব্যে যেতে ৪/৫ ঘন্টার বেশি সময় পেরিয়ে যাচ্ছে। ঢাকার যানজটে প্রতিদিন নষ্ট হচ্ছে কর্মক্ষম মানুষের ৮২ লাখ কর্মঘণ্টা।
বুয়েটের তথ্য বলছে, প্রতি বছর এই যানজটে আর্থিক ক্ষতি পরিমাণ ৫০ হাজার কোটি টাকা।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ তুলে ধরে সংগঠনের মহাসচিব আরও বলেন, নগরীতে মেয়াদ উত্তীর্ণ বাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ৪ লাখ প্যাডেলচালিত রিকশা, ৬ লাখ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ১ লাখ ৩৪ হাজার রাইডশেয়ারিং এর ছোট ছোট যানবাহন, ৩০ হাজার সিএনজিচালিত অটোরিকশা অবাধ যাতায়াতের কারণে নগরীর যানজট ও জনজট চরমভাবে বেড়ে চলেছে। অন্যদিকে এসব যানবাহন নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক ব্যবস্থা এখনো সেকেলে পদ্ধতিতে রয়েছে। সরকার পরিবর্তনের পরে নগরীর ৪ হাজার ট্রাফিক পুলিশ এখনো নিষ্ক্রিয়। যানজট কমাতে জরুরি ভিত্তিতে অত্যাধুনিক প্রকৌশলগত ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু করা দরকার।
তিনি আরও বলেন, প্রকৌশলগত গবেষণা করে ২ বা ৩ লেইনের ছোট ইন্টারসেকশনে ট্রাফিক সিগনাল ১ থেকে ২ মিনিট আর বড় ইন্টারসেকশনে ট্রাফিক সিগনাল ২ থেকে ৩ মিনিট চালু রাখা।
বিআরটিএর তথ্যমতে, রাজধানীতে প্রতিদিন গড়ে ছোট ছোট ৮০০ গাড়ি নামছে। জাইকার সমীক্ষা অনুযায়ী ঢাকা মহানগরীতে প্রতিদিন গড়ে ৪ কোটি টিপ যাত্রী যাতায়াত হয় এর ৬০ শতাংশ গণপরিবহন ব্যবহার করেন। এসব যাত্রীদের ৬৭ শতাংশ কেবল বাস ব্যবহার করেন।
মোজাম্মেল চৌধুরি বলেন, নগরীর প্রধান সড়ক করিডর থেকে প্যাডেলচালিত রিকশা, মোটরচালিত রিকশা, ইজিবাইক, ভ্যানগাড়ি, ডেলিভারিভ্যানসহ অযান্ত্রিকযান, ত্রি-চক্রযান চলাচল বন্ধ করা গেলে যানজট সমস্যা বাকি ২০ শতাংশ সমাধান সম্ভব।
রাজধানী ঢাকার যানজট সমস্যা থেকে বেরিয়ে আসতে বেশ কয়েকটি সুপারিশ করেছে সংগঠনটি। সেগুলো হলো-
১. রাজধানী ঢাকায় উন্নত সিটিবাসের ব্যবস্থা করা, বাস রুট রেশনালাইজেশনের মাধ্যমে বাসের জন্য প্রাধিকার লেইনের ব্যবস্থা করা।
আরও পড়ুন: মেট্রোরেলের ভাড়া ৫০% কমানোর দাবি যাত্রী কল্যাণ সমিতির
২. এই মুহূর্তে ঢাকায় মোটরসাইকেলসহ ছোট ছোট যানবাহন নিবন্ধন জরুরি ভিত্তিতে বন্ধ করা।
৩. রাজধানীর ঢাকার প্রধান প্রধান সড়ক করিডর থেকে প্যাডেল চালিত রিক্সা, ইজিবাইকসহ ধীরগতির যানবাহন চলাচল বন্ধ করা।
৪. ফুটপাত দখল মুক্ত করা, ফুটপাতে সাচ্ছন্দ্যে পদচারী যাতায়াতের ব্যবস্থা করা, প্রয়োজনে সড়কের মিডিয়ানে উড়াল ফুটপাত তৈরি করা।
৫. ট্রাফিক সিগন্যাল ডিজিটাল করা, আইন লঙ্ঘনের জন্য ট্রাফিক প্রসিকিউশন সিস্টেম উন্নত বিশ্বের মত ক্যামেরা পদ্ধতি চালু করা। জরিমানার অর্থ পরিবহন মালিক- চালকের ব্যাংক হিসাব থেকে আদায়ের ব্যবস্থা করা।
৬. প্রধান সড়কে, সড়কের বাঁকে পার্কিং, লোডিং, আনলোডিং বন্ধ করা, যত্রতত্র যাত্রী উঠানামা বন্ধ করা।
৭. যত্রতত্র হাত তুলে রাস্তা পারাপার বন্ধ করে জেব্রাক্রসিং, ফুটওভার ব্রিজ, আন্ডারপাস ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা।
৮. যানজট সমস্যা চিহ্নিত করা ও তাৎক্ষণিক সমাধানের জন্য ডিটিসিএ, ডিএনসিসি, ট্রাফিক বিভাগের সমন্ময়ে ৪ থেকে ৬ সদস্যের একটি ট্রাফিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিশেষজ্ঞ টিম সার্বক্ষণিক নগরজুড়ে যানজট পরিস্থিতি মনিটরিং করে তাৎক্ষণিক সমাধান দেবে এমন একটি অভিজ্ঞ-বিশেষজ্ঞ টিম তৈরি করা।
৯. ঢাকার প্রবেশদ্বারগুলো যানজটমুক্ত রাখার উপায় বের করা। বিকল্প সড়কসমূহ ব্যবহারে ট্রাফিক নির্দেশনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন।
১০. মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভার যানজটমুক্ত করতে গুলিস্থান পার্ককে অস্থায়ী টার্মিনাল বানানো, কারগারি দিক বিবেচনা করে রাজধানীতে প্রবেশমুখী র্যাম্প বাড়ানো।
১১. বৈজ্ঞানিক পন্থায় গবেষণা করে ২ বা ৩ লেইনের ছোট ইন্টারসেকশনে ট্রাফিক সিগনাল ১ থেকে ২ মিনিট আর ৩ বা ৪ লেইনের বড় ইন্টারসেকশনে ট্রাফিক সিগনাল ২ থেকে ৩ মিনিট চালু রাখা।
১২. বাস দাড়ালে যানজট হয় না, সমীক্ষা চালিয়ে এমন স্পটগুলো খুজে খুজে নগরজুড়ে ৩০০ বাসস্টপেজের ব্যবস্থা করা। এ সব বাসস্টপেজে যাত্রী উঠা-নামা বাধ্যতামূলক করা। নির্মিত যাত্রীছাউনিগুলো জরুরি ভিত্তিতে যাত্রী উঠা-নামায় ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা।
আরও পড়ুন: ‘গলাকাটা’ ভাড়া নির্ধারণ করা হলে প্রতিহত করার ঘোষণা যাত্রী কল্যাণ সমিতির
২ মাস আগে
এপ্রিলে সড়ক দুর্ঘটনায় ৭০৮ নিহত, আহত ২৪২৬: যাত্রী কল্যাণ সমিতি
এপ্রিল মাসে সারা দেশে ৬৮৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৭০৮ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এ সময় দুই হাজার ৪২৬ জন আহত হয়েছে।
এছাড়া ৪৪টি রেলপথে দুর্ঘটনায় ৪৭ জন নিহত ও ৩৬ জন আহত হয়েছেন। নৌপথে ছয়টি দুর্ঘটনায় আটজন নিহত ও ১০ জন আহত হয়েছেন এবং একজন এখনও নিখোঁজ।
আরও পড়ুন: সেপ্টেম্বরে ৪৬৭ দুর্ঘটনায় নিহত ৪৯৬: যাত্রী কল্যাণ সমিতি
বুধবার (২২ মে) যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরীর সই করা এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌপথে দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, সারাদেশে সড়ক, নৌ ও রেলপথে ৭৩৩টি দুর্ঘটনায় ৭৬৩ জন নিহত ও দুই হাজার ৪৭২ জন আহত হয়েছেন। এছাড়া ৩০৫টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২৭৪ জন নিহত ও ৩২৮ জন আহত হয়েছেন। যা মোট দুর্ঘটনার ৪৪ দশমিক ৬৫ শতাংশ ও মোট নিহতের ৩৮ দশমিক ৭০ শতাংশ এবং আহতের ২৪ দশমিক ৬৬ শতাংশ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এই মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে। ঢাকা বিভাগে সর্বোচ্চ ১৫৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৭৯ জন নিহত ও ৩০৫ জন আহত। বরিশাল বিভাগে সর্বনিম্ন ৩৫ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৩ জন নিহত ও ৪৮ জন আহত হয়েছে।
সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ১০ সদস্য, ১৬৯ জন চালক, ৬৩ জন পথচারী, ৫৮ জন পরিবহন শ্রমিক, ৪৬ জন শিক্ষার্থী, ছয়জন শিক্ষক, ১১৯ জন নারী, ৬৭ জন শিশু, তিনজন সাংবাদিক, দুইজন চিকিৎসক, একজন আইনজীবী, তিনজন প্রকৌশলী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আটজন নেতা-কর্মীর পরিচয় মিলেছে।
এদের মধ্যে নিহত হয়েছেন- একজন পুলিশ সদস্য, তিনজন সেনাবাহিনী সদস্য, একজন সাংবাদিক, দুইজন চিকিৎসক, ১২৩ জন বিভিন্ন পরিবহনের চালক, ৫৮ জন পথচারী, ৯৩ জন নারী, ৪৯ জন শিশু, ৩৬ জন শিক্ষার্থী, ৩৩ জন পরিবহন শ্রমিক, ছয়জন শিক্ষক, তিনজন প্রকৌশলী ও আটজন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী।
এই সময় সড়ক দুর্ঘটনায় সংগঠিত ৯৮৮টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে।
আরও পড়ুন: ঈদুল আজহায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২৯৯, আহত ৫৪৪ : যাত্রী কল্যাণ সমিতি
দুর্ঘটনায় জড়িত যানবাহনের মধ্যে ছিল ৩৪ দশমিক ৭১ শতাংশ মোটরসাইকেল, ১৫ দশমিক ৪৮ শতাংশ বাস, ১৩ দশমিক ১৫ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৫ দশমিক ৯৭ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৬ দশমিক ৭৮ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা, ৬ দশমিক ২৭ শতাংশ প্রাইভেটকার-এসইউভি-মাইক্রোবাস।
এছাড়া সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৪৭ দশমিক ৪৩ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ২৫ দশমিক ৩২ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ এবং ২৩ দশমিক ১৩ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে দুর্ঘটনা ঘটেছে।
এছাড়া ৩ দশমিক ৩৬ শতাংশ বিবিধ কারণে যেমন- চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে ০ দশমিক ২৯ শতাংশ এবং ০ দশমিক ৪৩ শতাংশ ট্রেনের সঙ্গে অন্য কোনো যানবাহনের সংঘর্ষে ঘটে।
দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, এই মাসে সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৩৫ দশমিক ২৮ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ১৪ দশমিক ৭৮ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ৪২ দশমিক ৪৫ শতাংশ ফিডার রোডে ঘটেছে।
এছাড়াও সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৬ দশমিক ৫৮ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ০ দশমিক ৪৩ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ০ দশমিক ৪৩ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংগঠিত ঘটেছে।
আরও পড়ুন: ঈদুল আজহায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২৯৯, আহত ৫৪৪ : যাত্রী কল্যাণ সমিতি
৭ মাস আগে
সেপ্টেম্বরে ৪৬৭ দুর্ঘটনায় নিহত ৪৯৬: যাত্রী কল্যাণ সমিতি
চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে সড়ক, নৌ ও রেলপথে ৪৬৭টি দুর্ঘটনায় ৪৯৬ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এ ছাড়া একই সময় আহত হয়েছেন ৬৮১ জন।
শনিবার (৭ অক্টোবর) বিভিন্ন জাতীয়, স্থানীয় দৈনিক ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে বেসরকারি সংস্থা বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
আরও পড়ুন: অবিলম্বে জ্বালানি তেলের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহারের দাবি যাত্রী কল্যাণ সমিতির
এর মধ্যে ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৪০২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪১৭ জন নিহত এবং ৬৫১ জন আহত হয়েছেন। রেলপথে ৪৯টি দুর্ঘটনায় ৫১ জন নিহত এবং ২৬ জন আহত হয়েছেন।অ এ ছাড়া নৌ-পথে ১৬টি দুর্ঘটনায় ২৮ জন নিহত, ৪ জন আহত ছাড়া এবং ৩ জন নিখোঁজ রয়েছেন।
এ ছাড়া সারাদেশে মোট দুর্ঘটনার ৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ ঢাকা শহরে, ০ দশমিক ৪৯ শতাংশ চট্টগ্রাম শহরে এবং ০ দশমিক ২৪ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে ঘটেছে।
মোট দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য রয়েছেন ১০ জন, ১৪৩ জন চালক, পথচারী ৬৬ জন, ৬০ জন পরিবহন শ্রমিক, ৬৫ জন শিক্ষার্থী, ৮ জন শিক্ষক, ৭৪ জন নারী ও শিশু রয়েছে ৪৪ জন।
আরও পড়ুন: ঈদুল আজহায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২৯৯, আহত ৫৪৪ : যাত্রী কল্যাণ সমিতি
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি সেপ্টেম্বর মাসে সড়ক দুর্ঘটনার উল্লেখযোগ্য কারণগুলো চিহ্নিত করেছে।
কারণগুলো হলো-
বিপজ্জনক ওভারটেকিং, বেপরোয়া গতি, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, ফুটপাতের অভাব বা ফুটপাত দখল, রেলক্রসিং ও মহাসড়কে ফিডার রোড থেকে হঠাৎ করে যানবাহন প্রবেশ, ছোট যানবাহনের সংখ্যা বৃদ্ধি।
এ ছাড়া বিভিন্ন জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কে সার্ভিস লেনের অভাব, জাতীয় ও আঞ্চলিক মহাসড়কের বিভিন্ন ফিডার রোড থেকে ইজিবাইক, রিকশা, অটোরিকশা নেমে আসাও এর অন্যতম কারণ।
আরও পড়ুন: জানুয়ারিতে ৫৯৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৮৫ জন নিহত: যাত্রী কল্যাণ সমিতি
১ বছর আগে
ঈদুল আজহায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২৯৯, আহত ৫৪৪ : যাত্রী কল্যাণ সমিতি
পবিত্র ঈদুল আজহায় যাতায়াতে দেশের সড়ক মহাসড়কে ২৭৭ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৯৯ জন নিহত ও ৫৪৪ জন আহত হয়েছে। সড়ক, রেল ও নৌ পথে সম্মিলিতভাবে ৩১২টি দুর্ঘটনায় মোট ৩৪০ জন নিহত ও ৫৬৯ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সমিতি।
শনিবার সকালে রাজধানীর বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী ঈদুল আজহা-২০২৩ সড়ক দুর্ঘটনা পর্যবেক্ষণ প্রকাশকালে এই তথ্য তুলে ধরেন।
তিনি বলেন, সংগঠনটির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেল প্রতি বছরের ন্যায় এবারো প্রতিবেদনটি তৈরি করে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিবছর ঈদকেন্দ্রিক সড়ক দুর্ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাওয়ায় সংগঠনটি ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা, অতিরিক্ত ভাড়া আদায় ও যাত্রী হয়রানির বিষয়টি দীর্ঘ এক দশক ধরে পর্যবেক্ষণ করে আসছে।
আরও পড়ুন: গণপরিবহনে ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদ যাত্রী কল্যাণ সমিতির
তিনি বলেন, এবারের ঈদে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও পরিবহন ব্যয় অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়াসহ নানা কারণে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ মানুষের কম যাতায়াত হয়েছে। বর্তমান সরকারের বিগত ১৪ বছরে ধারাবাহিক উন্নয়নের ফলে দেশের সড়ক মহাসড়কের অবস্থা আগের তুলনায় অনেক ভাল ছিল। ঈদের ছুটি ১দিন বাড়ানোর সুফল মিলেছে।
প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী দেশে ঈদযাত্রায় মোট যাতায়াতের প্রায় ০৮ শতাংশ মোটরসাইকেলে যাতায়াত হয়েছে। হাইওয়ে পুলিশ, জেলা পুলিশসহ সরকারের বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থার কঠোর নজরদারির কারণে এবারের ঈদযাত্রা খানিকটা স্বস্তিদায়ক হয়েছে।
তবে, পরিকল্পনার গলদে উত্তরাঞ্চলের পথে যানজটের ভোগান্তির পাশাপাশি কিছু কিছু রুটে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য হলেও কর্তৃপক্ষ বরাবরের মতো দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে।
ঈদযাত্রা শুরুর দিন ২২ জুন থেকে ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা ০৬ এপ্রিল পর্যন্ত বিগত ১৫ দিনে ২৭৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৯৯ জন নিহত ৫৪৪ জন আহত হয়েছে। বিগত ২০২২ সালের ঈদুল আযহায় যাতায়াতের সঙ্গে তুলনা করলে এবারের ঈদে সড়ক দুর্ঘটনা ১৫ দশমিক ১৬ শতাংশ, প্রাণহানি ৩৩ দশমিক ১১ শতাংশ, আহত ৪২ দশমিক ২৭ শতাংশ কমেছে।
উল্লেখিত সময়ে রেলপথে ২৫টি ঘটনায় ২৫ জন নিহত ও ১০ জন আহত হয়েছে। নৌ-পথে ১০টি দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত, আহত ১৫ জন ও ০৬ জন নিখোঁজ হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী বিগত বেশ কয়েক বছর যাবৎ দুর্ঘটনার শীর্ষে মোটরসাইকেলের অবস্থান থাকলেও এবারের পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, পশুবাহী যানবাহনের ব্যাপক চলাচল ও ঈদযাত্রায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যানের অবাধ চলাচলের কারণে এবারের ঈদে দুর্ঘটনার শীর্ষে রয়েছে ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান।
আরও পড়ুন: মেট্রোরেলের ভাড়া ৫০% কমানোর দাবি যাত্রী কল্যাণ সমিতির
এবারের ঈদে ৮৮টি ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ডভ্যান দুর্ঘটনায় ৯৩ জন নিহত, ১৯৩ জন আহত হয়েছে। যা মোট সড়ক দুর্ঘটনার ৩১ দশমিক ৭৬ শতাংশ। নিহতের ৩১ দশমিক ১০ শতাংশ এবং আহতের ৩৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ প্রায়। এর সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ৯১টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ৯৪ জন নিহত ও ৭৭ জন আহত হয়েছে। যা মোট দুর্ঘটনার ৩২ দশমিক ৮৫ শতাংশ এবং মোট নিহতের ৩১ দশমিক ৪৩ শতাংশ আর মোট আহতের ১৪ দশমিক ১৫ শতাংশ।
এই সময় সড়কে দুর্ঘটনায় ৮২ জন চালক, ৯ জন পরিবহন শ্রমিক, ৩৫ জন পথচারী, ৪৭ জন নারী, ২৫ জন শিশু, ১৭ জন শিক্ষার্থী, ০৫ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ৪ জন শিক্ষক, ৫ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী নিহত হওয়ার পরিচয় মিলেছে।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির সড়ক দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের সদস্যরা বহুল প্রচারিত ও বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় দৈনিক, আঞ্চলিক দৈনিক ও অনলাইন দৈনিক এ প্রকাশিত সংবাদ মনিটরিং করে প্রতি বছর ঈদযাত্রায় এ প্রতিবেদন তৈরি করে আসছে।
আরও পড়ুন: জানুয়ারিতে ৫৯৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৮৫ জন নিহত: যাত্রী কল্যাণ সমিতি
১ বছর আগে
জানুয়ারিতে ৫৯৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৮৫ জন নিহত: যাত্রী কল্যাণ সমিতি
জানুয়ারি মাসে দেশে ৫৯৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৮৫ জন নিহত এবং ৮৯৯ জন আহত হয়েছেন। একই সময় রেলপথে ৪৪টি দুর্ঘটনায় ৪৬ জন নিহত এবং ৭৮ জন আহত হয়েছেন।
আর নৌ-পথে ১৩টি দুর্ঘটনায় ১১ জন নিহত, একজন আহত এবং ছয়জন নিখোঁজ হয়েছেন।
সবমিলে জানুয়ারি মাসে সড়ক, রেল ও নৌ-পথে মোট ৬৫০টি দুর্ঘটনায় ৬৪২ জন নিহত এবং ৯৭৮ জন আহত হয়েছে।
এসব দুর্ঘটনার মধ্যে ২১৪টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২০৫ জন নিহত এবং ১১৪ জন আহত হয়েছে।
আরও পড়ুন: খুলনায় প্রাইভেটকারের ধাক্কায় প্রাণ গেলো কিশোরের
শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
এছাড়া, দেশের বিভিন্ন জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌ-পথে দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌপথে দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে।
এতে দেখা গেছে, ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসের চেয়ে ২০২৩ সালে জানুয়ারি মাসে সড়কে দুর্ঘটনা ৫ দশমিক ৩ শতাংশ এবং দুর্ঘটনায় আহত ১০ দশমিক ৪ শতাংশ বাড়লেও প্রাণহানী ৪ দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে।
সড়ক দুর্ঘটনায় আক্রান্তদের মধ্যে ২০৬ জন চালক, ১০৯ জন পথচারী, ৩৫ জন পরিবহন শ্রমিক, ৫৩ জন শিক্ষার্থী, ১০ জন শিক্ষক, ১৩ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ১১৫ জন নারী, ৬২ জন শিশু, পাঁচজন সাংবাদিক, একজন মুক্তিযোদ্ধা, দুইজন আইনজীবী, তিনজন প্রকৌশলী এবং ১৪ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে।
এর মধ্যে নিহত হয়েছে ০৯ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে ছয়জন পুলিশ সদস্য, একজন বিজিবি সদস্য, দুইজন আনসার সদস্য, ১৫৩ জন চালক, ৮৪ জন পথচারী, আটজন নারী, ৪৬ জন শিশু, ৪৬ জন শিক্ষার্থী, ২৬ জন পরিবহন শ্রমিক, একজন সাংবাদিক, ০৯ জন শিক্ষক, দুইজন প্রকৌশলী, দুইজন আইনজীবী ও আটজন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী।
এ সময়ে সংগঠিত দুর্ঘটনায় সর্বমোট ৮১৬টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে, যার ১২ দশমিক ৫ শতাংশ বাস, ২৪ দশমিক ৭৫ শতাংশ ট্রাক-পিকাপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ৫ দশমিক ০২ শতাংশ কার-জীপ-মাইক্রোবাস, ৫ দশমিক ৮৮ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিক্সা, ২৭ দশমিক ৩২ শতাংশ মোটরসাইকেল, ১৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিক্সা ও ইজিবাইক, ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।
আরও পড়ুন: সাভারে প্রাইভেটকারের ধাক্কায় নিহত ২
সংগঠিত মোট দুর্ঘটনার ৫১ দশমিক ৬০ শতাংশ পথচারীকে গাড়ি চাপা দেয়ার ঘটনা, ২২ দশমিক ২৫ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১২ দশমিক ৪৭ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ১১ দশমিক ৯৭ শতাংশ বিবিধ কারণে, শূন্য দশমিক ৬৭ শতাংশ যানবাহনের চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে এবং ১ দশমিক ১ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা গেছে এই বছর মোট সংঘটিত দুর্ঘটনার ২৯ দশমিক ৫১ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ৩৮ দশমিক ৬১ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ২৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে।
এছাড়াও সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৫ দশমিক ২২ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ১ দশমিক ১৮ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে, ১ দশমিক ১ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংঘটিত হয়েছে।
গত জানুয়ারি মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ১৭ জানুয়ারি। এদিন ৩৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২০ জন নিহত এবং ৩১ জন আহত হয়েছেন।
অন্যদিকে, সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ২ জানুয়ারি। এদিন ১২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১০ জন নিহত এবং ২১ জন আহত হয়েছেন।
সড়ক দুর্ঘটনায় একদিনে সবচেয়ে বেশি নিহত হয়েছে ১১ জানুয়ারি। এদিন ২৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩০ জন নিহত এবং ১৭ জন আহত হয়েছেন।
সড়ক দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি আহত হয়েছে ৫ জানুয়ারি। এদিন ১৮টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত এবং ৭১ জন আহত হয়েছে।
আরও পড়ুন: সিলেটে প্রাইভেটকারের ধাক্কায় পথচারী নিহত
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ মতে সড়ক দুর্ঘটনার উল্লেখযোগ্য কারণসমূহ-
১। বেপরোয়া গতি।
২। বিপদজনক অভারটেকিং।
৩। ফিটনেসবিহীন যানবাহনের অবাধে চলাচল।
৪। যাত্রী ও পথচারীদের অসতর্কতা।
৫। চালকের অদক্ষতা।
৬। চালকের বেপরোয়া মনোভাব।
৭। চলন্ত অবস্থায় মোবাইল বা হেড ফোন ব্যবহার।
৮। মাদক সেবন করে যানবাহন চালানো।
৯। রাস্তায় ফুটপাত না থাকা বা ফুটপাত বেদখলে থাকা।
১০। ট্রাফিক আইনের দুর্বল প্রয়োগ ও ট্রাফিক আইন অমান্য করা।
১১। ছোট যানবাহনের ব্যাপক বৃদ্ধি।
১২। সড়কে চাঁদাবাজি।
১৩। রাস্তার পাশে হাট-বাজার।
১৪। ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন রাস্তায় নামানো।
১৫। চালকের নিয়োগ ও কর্মঘন্টা সুনির্দিষ্ট না থাকা।
১৬। দেশব্যাপী নিরাপদ ও আধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্থার পরিবর্তে ইজিবাইক-ব্যাটারিচালিত রিকশা, মোটরসাইকেল, সিএনজি অটোরিকশানির্ভর গণপরিবহন ব্যবস্থার দিকে ধাবিত হওয়ার কারণে সড়ক দুর্ঘটনা বাড়ছে।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রাইভেটকারের ধাক্কায় নিহত ১
১ বছর আগে
মেট্রোরেলের ভাড়া ৫০% কমানোর দাবি যাত্রী কল্যাণ সমিতির
মেট্রোরেলের ভাড়া সিটি বাস সার্ভিসের দ্বিগুণ নির্ধারণকে অযৌক্তিক ও গণবিরোধী বলে মন্তব্য করেছে যাত্রী কল্যাণ সংস্থা বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
তারা প্রতি কিলোমিটার ভাড়া ৫০ শতাংশ কমানোর দাবি করেছে এবং ন্যূনতম ভাড়া যৌক্তিক পর্যায়ে নির্ধারণের দাবি জানান।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ২৮ ডিসেম্বর দেশের প্রথম মেট্রোরেল পরিষেবা উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
শনিবার রাজধানীতে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ঢাকা মেট্রোরেল উদ্বোধনের আগে তাদের দাবি পূরণ করতে হবে।
আরও পড়ুন: মেট্রোরেলের আরেকটি চালান পৌঁছাল মোংলা বন্দরে
তিনি বলেন, আর্থ-সামাজিক অবস্থা, মাথাপিছু আয় এবং জিডিপি বিবেচনায় প্রায় সব সূচকেই ঢাকা ও ভারতের কলকাতা শহর অনেকটা একই রকম।
তবে ঢাকায় মেট্রোরেলের প্রতি কিলোমিটার ভাড়া দুই গুণ বেশি হবে এবং কলকাতায় মেট্রোরেলের তুলনায় মোট ভাড়া চার গুণ বেশি হবে বলে জানান তিনি।
মোজাম্মেল বলেন, ‘এটি যাত্রীদের স্বার্থকে চরমভাবে ব্যাহত করবে এবং ধাক্কাধাক্কি বাস কোম্পানিগুলো উপকৃত হবে। যাত্রীরা নিয়মিত মেট্রোরেল ব্যবহার করার ক্ষমতা হারাবে এবং মেট্রোরেল যাত্রী বহনের লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হবে।’
এক লিখিত বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, কলকাতা মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ তাদের ওয়েবসাইটে স্পষ্টভাবে বলেছে যে সড়ক পরিবহন ভাড়ার তুলনায় মেট্রোরেলের ভাড়া সবচেয়ে সস্তা।
তিনি বলেন, ‘কলকাতা মেট্রোরেলে সর্বনিম্ন ভাড়া ৫ টাকা বা ৬ টাকা, কিন্তু ঢাকা মেট্রোরেলে সর্বনিম্ন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ টাকা। কলকাতা মেট্রোরেলের সর্বোচ্চ ভাড়া ২৫ টাকা বা ৩১ টাকা, যা ঢাকা মেট্রোরেলে ১০০ টাকা।’
নয়াদিল্লি ও কলকাতাসহ এশিয়ার বিভিন্ন মেট্রো রেলের উদাহরণ তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘ঢাকা মেট্রোরেলের তুলনায় অন্যান্য দেশের এই মেট্রোরেল পরিষেবাগুলোর ভাড়া সস্তা, কারণ এগুলোর নির্মাণ খরচ কম।’
তিনি বলেন, সাধারণ যাত্রীরা জানতে চান কেন বাংলাদেশ অন্যান্য দেশের প্রতিযোগিতামূলক ব্যয়ের বিপরীতে মেট্রোরেল নির্মাণে এত বেশি ব্যয় করেছে।
তিনি আরও বলেন, ‘কিছু মেগা প্রকল্পে হিসাবহীনভাবে ব্যয় হচ্ছে, আবার কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ব্যাংক খালি করে দিচ্ছে। ফলে জনগণকে চড়া মূল্য দিতে হচ্ছে। আমাদের প্রতিবেশি দেশ ভারতের তুলনায় বাংলাদেশে চাল, ডাল, তেল, মাছ, মাংসের দাম দ্বিগুণ; কোনো কোনো ক্ষেত্রে তিন গুণেরও বেশি।’
আরও পড়ুন: মেট্রোরেলের মালামাল নিয়ে আরও একটি জাহাজ মোংলা বন্দরে
মেট্রোরেলে চাকরি: ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের চাকরির বিজ্ঞপ্তি ২০২২
২ বছর আগে
দেশে পালন করা হচ্ছে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস
বাংলাদেশে ষষ্ঠ জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস (২০২২) পালন করা হচ্ছে আজ (শনিবার)।
ক্রমবর্ধমান যানবাহন, বেপরোয়া গাড়ি চালানো ও নিয়ম না মেনে সড়কে হাঁটা, পুলিশসহ গুরুত্বপূর্ণ সংস্থায় জনবলের ঘাটতির কারণে দুর্ঘটনার উচ্চ হারের মধ্য দিয়েই ‘আইন মেনে সড়কে চলি, নিরাপদে ঘরে ফিরি’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে দিবসটি পালিত হবে আজ।
যাত্রী কল্যাণ সমিতি আজ দাবি করেছে যে সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এর অধীনে জরুরি ভিত্তিতে একটি বিধান প্রণয়ন করে সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের সময়মতো আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হোক।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (এআরআই) হিসাব বলছে, গত তিন বছরে সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এক দশমিক ০৯ লাখ কোটি টাকা।’
আরও পড়ুন: জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবসে দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল স্কুলছাত্রের
তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশের তথ্যের ভিত্তিতে এআরআই বলেছে, গত এক দশকে দেশে সড়ক-মহাসড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ৫৪ শতাংশের বয়স ১৬ থেকে ৪০ বছর। আর দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ১৮ দশমিক ৫ শতাংশই ১৫ বছরের কম বয়সী।’
মোজাম্মেল বলেন, যদিও সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ এ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের আর্থিক সহায়তা তহবিল থেকে নিহতদের পরিবারকে পাঁচ লাখ টাকা ও আহতদের তিন লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার বিধান রয়েছে। আইন কার্যকর হওয়ার তিন বছর পরও এই ক্ষতিপূরণ দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়নি।
সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের আর্থিক সহায়তা কার্যক্রম দ্রুত চালু করার দাবি জানান তিনি।
দুর্ঘটনায় প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি কমাতে জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা পরিষদকে সক্রিয় করারও আহ্বান জানান মোজাম্মেল।
আরও পড়ুন: নিরাপদ সড়ক ও হাফ ভাড়ার দাবিতে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ
নিরাপদ সড়কের দাবিতে শাহবাগে শিক্ষার্থীদের কফিন মিছিল
২ বছর আগে
এবারের ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ৩৯৮ জন নিহত
বাংলাদেশে এ বছর ঈদুল আজহার আগে ও পরে ভ্রমণের সময় মাত্র ১৫ দিনে ৩১৯টি দুর্ঘটনায় সড়কে ৩৯৮ জনের মৃত্যু হয়েছে।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এবছর ঈদুল আজহায় বাংলাদেশের সড়কে দুর্ঘটনা ও মৃত্যুর রেকর্ড গত ৭ বছরে সবচেয়ে বেশি।
মঙ্গলবার রাজধানীতে এক সংবাদ সম্মেলনে সংস্থাটির মহাপরিচালক মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।
প্রতি বছরের মতো এবারও সংস্থাটির মনিটরিং সেল ৩ থেকে ১৭ জুলাই ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিবেদন তৈরি করেছে।
২০১৬ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৯৩টি দুর্ঘটনায় প্রায় ২৪৮ জন সড়কে প্রাণ হারিয়েছে।
২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত, প্রতি বছর মৃত্যুর সংখ্যা ২৫০-৩০০ জনের মধ্যে ছিল এবং দুর্ঘটনার সংখ্যা ২০০-২৫০টির মধ্যে ছিল।
মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘কোভিড-১৯ সংক্রান্ত কোনো বিধিনিষেধ না থাকায় এ বছর ঈদে ভ্রমণকারীর সংখ্যা বেড়েছে। ঈদের ছুটিতে প্রায় এক কোটি ২০ লাখ মানুষ ঢাকা ছেড়েছেন এবং আরও চার কোটি মানুষ বিভিন্ন জেলায় ভ্রমণ করেছেন।
একই সময়ে পৃথক স্থানে ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে ২৫ জন, ১০টি নৌদুর্ঘটনায় ১৭ জন নিহত ও ১৫ জন আহত এবং তিনজন নিখোঁজ হয়েছেন।
যাত্রী কল্যাণ সমিতি বহুল প্রচারিত ও বিশ্বাসযোগ্য জাতীয় দৈনিক, স্থানীয় সংবাদপত্র এবং অনলাইনে প্রকাশিত সংবাদ পর্যবেক্ষণ করে প্রতিবেদনটি তৈরি করে।
আরও পড়ুন: টাঙ্গাইলে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৪, আহত ১৫
২ বছর আগে
গণপরিবহনে ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদ যাত্রী কল্যাণ সমিতির
প্রতি কিলোমিটারে ডিজেলচালিত বাসের ভাড়া ২৭ শতাংশ বৃদ্ধির সরকারি সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ করেছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি (জেকেএস)।
জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির প্রতিবাদে গণপরিবহন মালিকদের ডাকা ধর্মঘটের প্রেক্ষিতে রবিবার ঢাকায় বাস মালিকদের সাথে বৈঠকের পর ভাড়া বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে সরকার। সোমবার থেকে নতুন ধার্য করা এই বাড়া কার্যকর হবে।
সরকার ভাড়া বৃদ্ধির ঘোষণা দেয়ার পর শুক্রবার সকাল থেকে ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছে বাস মালিকেরা।
এক বিবৃতিতে জেকেএস’র মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী জানান, নতুন ধার্যকৃত বাড়তি ভাড়ার বিরুদ্ধে নেওয়া প্রতিবাদ কর্মসূচীর বিষয়ে সোমবার সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে।
বিবৃতিতে জেকেএস আরও জানায়,সরকার কোনও পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই অবৈধভাবে ডিজেল এবং কেরোসিনের দাম ২৩ শতাংশ বাড়িয়েছে।
আরও পড়ুন:ডিজেল চালিত বাস ও মিনিবাসের ভাড়া বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন
বাস ধর্মঘট প্রত্যাহার, ভাড়া বাড়ছে
দ্বিগুণ ভাড়ায় চট্টগ্রাম মহানগরীতে বাস চলাচল শুরু
৩ বছর আগে
বর্ধিত জ্বালানি তেলের মূল্য ও পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহারের দাবি যাত্রী কল্যাণ সমিতির
করোনার বিপর্যয় কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টারত নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকা সচল রাখার স্বার্থে অযৌক্তিকভাবে বর্ধিত জ্বালানি তেলের মূল্য ও পরিবহন ধর্মঘট প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
শনিবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘করোনায় বিপর্যয় কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টারত জনগণের উপর বর্ধিত জ্বালানি তেলের মূল্য প্রত্যাহার ও ধর্মঘটের নামে পরিবহনে নৈরাজ্য বন্ধের দাবি’তে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ দাবি জানান।
আরও পড়ুন: তেলের দাম বৃদ্ধির বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী পর্যবেক্ষণ করছেন: ওবায়দুল কাদের
তিনি বলেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনা সংকটে লকডাউনসহ নানা কারণে দেশের ৭৭ ভাগ মানুষের আয় কমেছে। ফলে তিন কোটি ২৪ লাখ মানুষ নতুন করে দরিদ্র হয়েছে বলে এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে। এহেন শংকটাপন্ন দেশের মানুষজন দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে যখন দিশেহারা, ঠিক তখনই জ্বালানি তেলের দাম একলাফে ২৩ শতাংশ বৃদ্ধির কারণে মানুষের যাতায়াত, পণ্য পরিবহন, খাদ্যপণ্য ও কৃষিজ উৎপাদনসহ সামগ্রিক ব্যয় আরও কয়েকগুণ বেড়ে যাবে। পণ্য ও সেবামূল্য আরও একদফা বৃদ্ধির ফলে চরমভাবে মুদ্রাস্ফীতি বাড়বে। এতে নতুন করে আরও কয়েক কোটি মানুষ দারিদ্রের ঝুঁকিতে পরার শঙ্কা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কম থাকায় সরকার উচ্চহারে তেল বিক্রি করে গত ছয় বছরে ধরে একচেটিয়া মুনাফা করেছে। এতে সরকার প্রায় ৬৩ হাজার কোটি টাকার বেশি আয় করেছে। মাত্র পাঁচ মাস ধরে জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির কারণে দেশের মানুষের এই কঠিন দুঃসময়ে একলাফে ২৩ শতাংশ তেলের মূল্য বৃদ্ধি করা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত বলে দাবি করেন তিনি। করোনা শংকটাপন্ন জনগণকে প্রণোদনা দিয়ে সরকার যেখানে জনগণের পাশে থাকার কথা সেখানে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে জনসাধারণকে আরেক দফা শংকটে ঠেলে দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। ৬ লাখ কোটি টাকার জাতীয় বাজেটে জ্বালানি খাতে মূল্য না বাড়িয়েও ছয় হাজার কোটি টাকা বছরে ভুতর্কি দেয়ার সক্ষমতা সরকারের রয়েছে বলে দাবি করে তিনি অনতিবিলম্বে জ্বালানি তেলের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহার করে এহেন পরিবহন ধর্মঘটের নামে এহেন নৈরাজ্য বন্ধের দাবি জানান।
আরও পড়ুন: জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির পেছনে সরকারের যুক্তি ‘অগ্রহণযোগ্য’: ফখরুল
সংগঠনের উপদেষ্ঠামণ্ডলীর সদস্য শরীফুজ্জামান শরীফ বলেন, যে প্রক্রিয়ায় দাম বাড়ানো হয়েছে তা অবৈধ। জ্বালানির দাম বাড়ানোর কোন ক্ষমতা জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের নেই। এটা করার ক্ষমতা বিইআরসির। সেখানে শুনানির পরেই সিদ্ধান্ত গ্রহণের নিয়ম। সরকার গায়ের জোরে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাদের নেতা কর্মীদের বিরাট অংশের আয় বৃদ্ধিকে সাধারণ মানুষের আয় বৃদ্ধি মনে করে সরকার জনগণের বিরুদ্ধে এমন হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
এতে আরও বক্তব্য দেন সংগঠনের সহ-সভাপতি তাওহীদুল হক লিটন, যুগ্ম মহাসচিব এম. মনিরুল হক, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার হোসেন।
৩ বছর আগে