ব্যাংকের এজেন্ট শাখা
ব্যাংকের এজেন্ট শাখায় গ্রাহকের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ, আটক ৩
জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে ইসলামী ব্যাংকের একটি এজেন্ট শাখায় গ্রাহকের হিসাব থেকে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। শাখার ক্যাশিয়ার প্রাথমিকভাবে ৭০ থেকে ৮০ লাখ টাকা আত্মসাতের কথা স্বীকার করেছেন।
ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর গ্রাহকরা রবিবার(২৩ মার্চ) সন্ধ্যায় ব্যাংকটির ওই এজেন্ট শাখার মালিক ও কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করেন। পরে তাদের পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের জয়পুরহাট শাখা ব্যবস্থাপক হাবিবুর রহমান বলেন, গ্রাহকদের মোট আত্মসাৎ করা টাকার পরিমাণ এখনও সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না। তবে প্রাথমিকভাবে ৮০ লাখ টাকার মতো হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় ইসলামী ব্যাংকের ওই এজেন্ট ব্যাংকিং শাখার এজেন্ট মালিক জাহিদুল ইসলাম, ইনচার্জ (ব্যবস্থাপক) রিদওয়ানা ফারজানা ও ক্যাশিয়ার মাসুদ রানাকে পুলিশি হেফাজতে নেওয়ার পর সোমবার তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে জয়পুরহাটের আক্কেলপুর পৌর শহরের উপজেলা পরিষদের সামনে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের এজেন্ট ব্যাংকিং শাখাটি খোলা হয়। সেখানে প্রায় দুই হাজার হিসাব রয়েছে। শাখাটির এজেন্ট মালিক, ইনচার্জ (ব্যবস্থাপক) ও ক্যাশিয়ারসহ তিন কর্মকর্তা কর্মরত ছিলেন।
গত বৃহস্পতিবার আক্কেলপুর দারুল কোরআন মাদরাসার হিসাব থেকে টাকা উধাও হওয়ার পর শাখাটির থেকে গ্রাহকদের টাকা আত্মসাতের ঘটনাটি প্রথম ধরা পড়ে।
ওই মাদরাসার মুহতামিম মুফতি ফিরোজ আহমদ জানান, তাদের মাদরাসার হিসাবে ৩৯ লাখ টাকা ছিল। বৃহস্পতিবার তারা ১৩ লাখ টাকা উত্তোলন করেন। দীর্ঘদিন ধরে মোবাইল ফোনে ওই এজেন্ট ব্যাংকিং শাখা থেকে টাকা জমা ও উত্তোলনের কোনো খুদে বার্তা আসত না। সন্দেহ হওয়ায় তারা জয়পুরহাট জেলা শহরের ইসলামী ব্যাংকের জয়পুরহাট শাখায় যান। সেখানে গিয়ে তাদের প্রতিষ্ঠানের হিসাব বিবরণী নেন।
আরও পড়ুন: অর্থ আত্মসাত: ডেসটিনির রফিকুল আমীনসহ ১৯ জনের ১২ বছরের কারাদণ্ড
হিসাব বিবরণীতে দেখা যায়, মাত্র ১৭ হাজার ২৯৯ টাকা রয়েছে। তারা হিসাব বিবরণী নিয়ে আক্কেলপুরের ওই এজেন্ট শাখায় গিয়ে ওই ব্যাংকের শাখায় তাদের জমা করা টাকা উধাও হওয়ার বিষয়ে ব্যাংকের ব্যবস্থাপক ও ক্যাশিয়ারের মুখোমুখি বসে চাপ সৃষ্টি করলে তখন ক্যাশিয়ার তাদের প্রতিষ্ঠানসহ অন্য ব্যক্তিদের হিসাব থেকে কৌশলে টাকা তুলে আত্মসাতের কথা স্বীকার করেন।
ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা জানান, তারা ঘটনাটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনজুরুল আলমকে জানিয়েছেন।
আটক ক্যাশিয়ার মাসুদ রানা বিভিন্ন ব্যাংক হিসাব থেকে কৌশলে ৭০ থেকে ৮০ লাখ টাকা তুলে তার গ্রামের বাড়িতে জমি কিনেছেন ও জমি বন্ধক নিয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন।
এ ব্যাপারে আক্কেলপুরের ইউএনও মনজুরুল আলম বলেন, ‘আমি প্রথমে ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকা আত্মসাতের কথা শুনেছি। এখন কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে শুনতে পাচ্ছি।’ তিনি গ্রাহকদের আশ্বস্থ করে বলেন, এ ঘটনায় মামলা করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
৮ দিন আগে