ঈদ আইনশৃঙ্খলা
ঈদে আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে সরকারের জরুরি নির্দেশনা
আসন্ন ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষের যাতায়াত নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যময় করাসহ সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, ঈদ-উল-ফিতরের প্রাক্কালে দেশব্যাপী সার্বিক আইন-শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখার বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করতে হবে; চুরি-ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসি কর্মকাণ্ড রোধে ইউনিফর্মধারী পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য মোতায়েন, বিশেষ বিশেষ রাস্তায় ও মোড়ে চেকপোস্ট স্থাপন, টাকা স্থানান্তরে মানি এস্কর্ট প্রদান, জাল টাকার বিস্তার রোধ ও শনাক্ত করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
আরও পড়ুন: ঈদযাত্রায় প্রস্তুত পাটুরিয়া-আরিচা ঘাটের ফেরি ও লঞ্চ
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাজধানীর কূটনৈতিক এলাকা, গুরুত্বপূর্ণ স্থানসহ দেশের অন্যান্য বড় বড় শহর ও বন্দরে সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ ও র্যাবের টহল বৃদ্ধি করতে হবে; গার্মেন্টস ও অন্যান্য শিল্পের মালিক পক্ষ অর্থাৎ বিজিএমইএ, বিকেএমইএ এবং শিল্প পুলিশ একত্রে বসে ঈদের পূর্বেই শ্রমিকদের বেতন-ভাতাদি, বোনাস ইত্যাদি পরিশোধের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে; সাধারণ মানুষের ঈদ উপলক্ষে নির্বিঘ্নে কেনা-কাটা নিশ্চিত করতে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি নারী পুলিশ ও সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্য মোতায়েন করতে হবে। মার্কেটগুলোতে বিশেষ রাত্রিকালীন নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে এবং সকল মার্কেট সিসি ক্যামেরার আওতায় আনার ব্যবস্থা করতে হবে।
‘এছাড়াও ঈদ উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষের যাতায়াত নিরাপদ নিশ্চিতকল্পে বাস, ট্রেন ও লঞ্চে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় না করা, লঞ্চ/ফেরি ঘাটসমূহে অনিয়ম ও অবৈধ সিরিয়াল প্রদানের মাধ্যমে অতিরিক্ত টাকা আদায় না করা, অতিরিক্ত যাত্রী পরিবহন না করা এবং পরিবহনে চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।’
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন বলা হয়েছে, পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরকে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ সারা দেশে যানজট নিরসনের লক্ষ্যে যথাযথ ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যমুনা সেতু, পদ্মা সেতু এবং ফ্লাইওভারসহ টোলপ্লাজাসমূহে যানজট নিরসনে ইটিসিসহ (ইলেট্রিক টোল কালেকশন) দ্রুত টোল আদায়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে; যানজট নিরসনে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের চিহ্নিত ১৫৫ স্পটে আইপি/সিসি ক্যামেরা স্থাপনপূর্বক ঈদুল ফিতরের পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী সময় মনিটরিং জোরদার করতে হবে। প্রয়োজনে অধিক গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ড্রোনের মাধ্যমে মনিটরিং করা যেতে পারে।
‘যানজট নিরসনে লক্ষ্যে ঈদের পূর্বের সাত দিন ও পরের সাত দিন সুনির্দিষ্ট পূর্ব তথ্য ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনী সড়কের উপরে মোটরযান তথা যানবাহন থামানো যাবে না; অত্যাবশ্যকীয় পণ্য পরিবহনকারী বা যাত্রীবাহী যানবাহন ব্যতীত স্থলবন্দর ও নৌবন্দরসহ যেকোন জায়গা থেকে ছেড়ে আসা নির্মাণ সামগ্রী বহনকারী ও লম্বা যানবাহনগুলোকে ঈদের পূর্বের ৩ দিন এবং পরের ৩ দিন যেন মহাসড়কে চলাচল করতে না পারে বা নৌ-রুটে ফেরি পারাপার করতে না পারে সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঈদের আগে পাঁচ দিন ও পরের পাঁচ দিন নদীতে বাল্কহেড চলাচল বন্ধ রাখতে হবে; বিভিন্ন সড়ক, মহাসড়ক ও নৌ-পথে আকস্মিক দুর্ঘটনায় উদ্ধারকার্য পরিচালনায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের টিম, রেসকিউ বোট, ডুবুরি, অগ্নিনির্বাপন সরঞ্জামাদিসহ এ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখতে হবে। প্রয়োজনে কোস্টগার্ডের সহযোগিতা গ্রহণ করতে হবে।
‘দুর্ঘটনা কবলিত অথবা রাস্তা/সেতুতে কোনো গাড়ি নষ্ট হলে দ্রুত দুর্ঘটনা কবলিত/অকেজো গাড়ি অপসারণ/রেকারিং করে পার্শ্ববর্তী খালি জায়গায় স্থানান্তর করতে হবে। যমুনা ও পদ্মা সেতুসহ যানজট প্রবণ এলাকায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক রেকারের ব্যবস্থা রাখতে হবে।’
আরও পড়ুন: ঈদযাত্রায় ভোগান্তি ছাড়াই ভ্রমণ করছেন যাত্রীরা
এছাড়াও ঈদের সময় সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি সড়কের শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ অধিদপ্তর এবং অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কন্ট্রোলরুম স্থাপন করতে হবে। সকল কন্ট্রোল রুমকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় জয়েন্ট অপারেশন সেন্টার (০১৩২০০০১২২৩) এর সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করতে হবে। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ এর সঙ্গে কন্ট্রোল রুমের সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে সড়কের শৃঙ্খলা রক্ষায় সমন্বয় জোরদার করতে হবে।
৫ দিন আগে