ডিজিটাল জগত
স্টারলিংক বাংলাদেশের ডিজিটাল জগতে বিপ্লব আনবে: প্রধান উপদেষ্টা
স্পেসএক্সের প্রতিষ্ঠাতা ও মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্কের মালিকানাধীন স্টারলিংকের মাধ্যমে স্বল্পমূল্যের উচ্চগতির ইন্টারনেট বাংলাদেশের ডিজিটাল জগতে বিপ্লব আনবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। মঙ্গলবার (২৫ মার্চ) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে তিনি এমন মন্তব্য করেছেন।
তিনি বলেন, ইলন মাস্কের সঙ্গে আলাপ করে বাংলাদেশে স্টারলিংকের কার্যক্রম শুরু করার আহ্বান জানিয়েছি। সে অনুসারে, তাদের প্রতিনিধিরা বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম শুরু করার আয়োজন করেছেন। তিন মাসের মধ্যেই তাদের সঙ্গে বাণিজ্যিক চুক্তি চূড়ান্ত করার কাজ চলছে।
আরও পড়ুন: স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ডাকটিকিট অবমুক্ত করলেন প্রধান উপদেষ্টা
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, স্টারলিংকের মাধ্যমে স্বল্পমূল্যে উচ্চগতির ইন্টারনেট বাংলাদেশের ডিজিটাল জগতে একটি বিপ্লব আনবে। স্টারলিংক চালু হলে বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রাম, দীপাঞ্চল, দুর্গম ও পাহাড়ি অঞ্চল অতি উচ্চগতির ইন্টারনেটের আওতায় চলে আসবে।
‘স্টারলিংক চালু হলে ভবিষ্যতে কোনো সরকার ইন্টারনেট বন্ধ করে মানুষকে তথ্য থেকে বঞ্চিত করতে পারবে না। বাংলাদেশের প্রতিটি অঞ্চলে বিশ্বমানের শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, অর্থনীতির ক্ষেত্রে সব নাগরিকের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা যাবে।’
তিনি আরও বলেন, আমাদের নতুন প্রজন্ম দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকে বিশ্ব নাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠার সুযোগ পাবেন।
‘সরকার যুব উদ্যোক্তা নীতি ২০২৫ প্রণয়নের উদ্যোগ নিয়েছে। এর লক্ষ্য হবে, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত অগ্রগতির মূলচালক হিসেবে তরুণ-তরুণীদের ক্ষমতায়ন করা। এই নীতি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের উপায় হিসেবে সফল উদ্যোক্তা তৈরিতে সহায়ক হবে। সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে তরুণ উদ্যোক্তাদের অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে,’ বলেন তিনি।
ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্থনিও গুতেরেস কয়েকদিন আগে বাংলাদেশ সফর করেছেন। তাকে সঙ্গে করে আমি কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরগুলো পরিদর্শন করেছি। ক্যাম্পে অবস্থানরত এক লাখ নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোরের সঙ্গে ইফতার করেছি। আমাদের প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়ে, আগামী সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে একটি পৃথক অধিবেশনের প্রস্তুত নেওয়া হয়েছে। মালয়েশিয়া ও ফিনল্যান্ড যৌথভাবে এই সম্মেলনের আয়োজক হতে এগিয়ে এসেছে।
‘গত ষোলো বছরে শেখ হাসিনা যে ভয়াবহ লুটপাট কায়েম করেছিল, আপনারা সেটার ভুক্তভোগী ছিলেন। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখেও তারা পালিয়ে যাওয়ার সময় এক লণ্ডভণ্ড অর্থনীতি রেখে গেছে। এই পরিস্থিতিতে দায়িত্ব নেওয়ার পর অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে অন্তর্বর্তী সরকার নানা উদ্যোগ নিয়েছে।’
আরও পড়ুন: ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে নির্বাচন: প্রধান উপদেষ্টা
ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে জানিয়ে তিনি বলেন, ক্রমান্বয়ে অর্থনীতির অন্য সুযোগগুলো ইতিবাচক ধারায় ফিরতে শুরু করেছে। এই সরকারের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ মূল্যস্ফীতি। ফেব্রুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৩২ শতাংশে নেমে এসেছে। যা ২২ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। আগামী জুনের মধ্যে এটি আট শতাংশের নিচে নেমে আসবে বলে আশা করছি।
‘দেশের ধ্বংসপ্রাপ্ত অর্থনীতিতে স্বস্তি নিয়ে এসেছে আমাদের প্রবাসী ভাই-বোনেরা। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে দেশে রেমিট্যান্সের প্রবাহ বেড়েছে। ফেব্রুয়ারিতে রেমিট্যান্স প্রবাহ রেকর্ড গড়েছে। প্রায় ২৫ শতাংশ বেড়ে আড়াই বিলিয়ন ডলার হয়েছে,’ বলেন তিনি।
২৩ দিন আগে