গুলশান-১
রাজধানীতে চাঞ্চল্যকর সুমন হত্যাকাণ্ডের হোতাসহ গ্রেপ্তার ২
রাজধানীর গুলশান-১ পুলিশ প্লাজার সামনে ডিশ ও ইন্টারনেট ব্যবসায়ী সুমনকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যাকাণ্ডের হোতাসহ এই অপরাধে সরাসরি অংশগ্রহণকারী দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
গ্রেপ্তাররা হলেন— মো. ওয়াসির মাহমুদ সাঈদ ওরফে বড় সাঈদ (৫৯) ও বেলাল (৪২)। এর মধ্যে বড় সাঈদকে পটুয়াখালীর চৌরাস্তা এলাকা থেকে এবং বেলালকে গাজীপুরের টঙ্গী পূর্ব থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গত বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) রাত সাড়ে ৯টার দিকে গুলশান-বনানী এলাকায় ডিশ ও ইন্টারনেট ব্যবসায়ী সুমনকে প্রকাশ্যে গুলি করে পালিয়ে যায় অজ্ঞাতনামা অস্ত্রধারী কয়েকজন সন্ত্রাসী। এরপর তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এই হত্যাকাণ্ডের পর গুলশান থানায় একটি হত্যা মামলা হয়।
আরও পড়ুন: অ্যাডভোকেট আলিফ হত্যাকাণ্ড: চট্টগ্রামের ৬৩ আইনজীবীর জামিন মঞ্জুর
মামলার পর হত্যার রহস্য উদঘাটন ও আসামিদের ধরতে গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে র্যাব-১, সিপিসি-১-এর একটি আভিযানিক দল। এর ধারাবাহিকতায় গতকাল দুপুরে ঘটনার মাস্টারমাইন্ড বড় সাঈদকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। সেইসঙ্গে রাত পৌনে ৯টার দিকে গ্রেপ্তার হন তাদের দলের অপর সদস্য বেলাল।
এ বিষয়ে এক বিবৃতিতে র্যাব জানিয়েছে, বড় সাঈদের মাধ্যমে একটি সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করে গত কয়েক বছর ধরে গুলশান-বাড্ডা এলাকায় চাঁদাবাজি করে আসছিলেন মেহেদী নামের এক ব্যক্তি। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর মেহেদী পালিয়ে যান। তবে পলাতক অবস্থায়ও বড় সাঈদের মাধ্যমে চাঁদা সংগ্রহ করতেন তিনি।
মেহেদী পালিয়ে গেলে অন্য একটি সন্ত্রাসী গ্রুপের (রবিন গ্রুপ) হয়ে সুমন গুলশান-বাড্ডা এলাকায় চাঁদাবাজি শুরু করেন। গুলশান এলাকার বিভিন্ন মার্কেটের দোকানে চাঁদাবাজি নিয়ে মেহেদী গ্রুপের সঙ্গে সুমনের বিরোধ সৃষ্টি হয়। ওই বিরোধের কারণে গ্রুপের নেতা মেহেদীর নির্দেশে সাঈদ সুমনকে হত্যা করার পরিকল্পনা করা হয়।
ঘটনার ৮/১০ দিন আগে সুমনকে হত্যার উদ্দেশ্যে বেলাল ও মামুনের নেতৃত্বে মেহেদী গ্রুপের ৪/৫ জন সন্ত্রাসী দিয়ে একটি কিলার গ্রুপ গঠন করেন বড় সাঈদ। সে সময় থেকে সুমনের ওপর নজর রেখে আসছিল ওই গ্রুপটি।
ঘটনার দিন গুলশান এলাকায় গিয়ে সুমনকে গোপনে খুঁজতে থাকে তারা। এরপর রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাকে পুলিশ প্লাজার সামনে ডাক্তার ফজলে রাব্বি পার্কের সামনে বসা অবস্থায় দেখতে পেয়ে গুলি করে তারা। গুলি খেয়ে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে সুমনকে প্রতিপক্ষ আরও কয়েকবার গুলি করে। এরপর তার মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায় তারা।
আরও পড়ুন: কেরানীগঞ্জের অস্থায়ী আদালতে হবে বিডিআর হত্যাকাণ্ডের বিচার
এই ঘটনার পর গা ঢাকা দেন বড় সাঈদ। তবে গতকাল (মঙ্গলবার) দুপুর আড়াইটার দিকে র্যাব-১ এর দলটি গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ঝালকাঠি সদর থানার বাসিন্দা সাঈদকে পটুয়াখালী চৌরাস্তা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে। এরপর তার কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী টঙ্গী পূর্ব থানা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন বেলাল।
ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেপ্তার এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধারে র্যাবের অভিযান অব্যাহত আছে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়।
৩৬ দিন আগে