পোশাকের বিপণি বিতান
ধনীদের আস্থা ব্র্যান্ডে, ফেনীতে ফুটপাতেই ভরসা গরিবের
দরজায় কড়া নাড়ছে ঈদ। ঈদ উপলক্ষে সব শ্রেণিপেশার মানুষের মধ্যেই চলছে প্রস্তুতি। ঈদ এলেই মানুষের চাঞ্চল্য সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ে পোশাকের বিপণি বিতানগুলোতে। ঈদের মাসখানেক আগে থেকেই দোকানে দোকানে ভিড় পড়ে যায়। ফেনীতে এবারও তার ব্যতিক্রম নেই।
তবে আর্থিক সামর্থ্যের চরম বাস্তবতা ফুটে ওঠে এই সময়ে। জমকালো শপিং মল, সাধারণ মার্কেটের দোকান আর ফুটপাতের পোশাকের দোকান— তিন ধরনের বিপণি বিতানে দৃষ্টি দিলেই স্পষ্ট হয়ে যায় ধনী-গরিবের পার্থক্য; কে কতটা বিত্তশালী।
ঈদের কেনাকাটায় এবারও ধনীদের পছন্দ অভিজাত শপিং মল ও নামি-দামি ব্র্যান্ডগুলো। মধ্যবিত্তদের মধ্যে রুচিশীল কেউ কেউ সেসব জায়গা থেকে কেনাকাটা করে থাকেন বটে, তবে বেশিরভাগেরই গন্তব্য সুপার মার্কেটের পোশাকের দোকান। আর দরিদ্র শ্রেণির ভরসা সেখানে ফুটপাতের দোকানগুলোতেই। সামর্থ্যের মধ্যে নিজেদের পছন্দের কাপড়-চোপড়, গয়না, জুতা, স্যান্ডেল ও অন্য প্রসাধনীসহ অন্যান্য পণ্য কিনতে ভিড় করছেন ফুটপাত ও খোলা জায়গায় বসানো অস্থায়ী দোকানগুলোতে।
ঈদের আগে ক্রেতা আকৃষ্ট করতে হরেক রকম রঙ-ঢঙের বাতি আর বাহারি রকমের শৈলীতে আকর্ষণীয় করে সাজানো হয়েছে শহরের গ্র্যান্ড হক টাওয়ার, শহিদ হোসেন উদ্দিন বিপণি বিতান, গার্ডেন সিটি, তমিজিয়া মার্কেট, এসি মার্কেট, বড় বাজার ও শহিদ শহীদুল্লা কায়সার সড়কের নামিদামি ব্র্যান্ডের শোরুমগুলো। রমজানের শুরু থেকেই সেসব শোরুমে ক্রেতার ভিড় বাড়লেও ২০ রমজানের পর থেকে বেচাকেনার ধুম পড়ে গেছে। ঈদের আগমুহূর্তে পা ফেলার জায়গা নেই ফুটপাতসহ অন্যান্য পোশাকের দোকানগুলোতেও।
আরও পড়ুন: ঈদযাত্রায় ভোগান্তি ছাড়াই ভ্রমণ করছেন যাত্রীরা
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকেই ফুটপাতের অস্থায়ী দোকানগুলোতে জামাকাপড়, জুতা, গেঞ্জিসহ বিভিন্ন পণ্যের সমাহার সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। ‘এক্সপোর্টের শার্ট লন, মাত্র আড়াইশ টাকা’, ‘পাঞ্জাবি লন, মাত্র তিনশ টাকা’, ‘প্যান্ট লন, গেঞ্জি লন’, ‘দেইখ্যা লন, বাইচ্ছা লন’, ‘এক দাম, এক রেট’—বিক্রেতাদের এমন হাঁকডাকে জমে উঠেছে ফেনীর রাজাঝিদিঘী এলাকার ফুটপাতের ঈদ বাজার।
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে ক্রেতাদের ভিড়ও। সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত অভিজাত বিপণি বিতানগুলোতে বিত্তবানদের কেনাকাটায় ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়। নিম্নবিত্তরা এসব বিতানের আলোকসজ্জা দেখেই চোখ জুড়ান, সেখান থেকে কেনাকাটার সামর্থ্য তাদের বেশিরভাগেরই নেই।
ঈদের বাজারে সব ধরনের দোকানেই বিক্রি হচ্ছে নারীদের জন্য বিভিন্ন ডিজাইনের শাড়ি, সালওয়ার-কামিজ; আর পুরুষদের জন্য ঈদে বাঙালির ঐতিহ্য পাঞ্জাবি-পায়জামা ছাড়াও শার্ট, টি-শার্ট ও প্যান্টের পসরা সাজানো হয়েছে। পাশাপাশি শিশুদের জন্য রঙিন জামাকাপড়, খেলনা ও ঈদ স্পেশাল গিফট আইটেমও বিক্রি হচ্ছে।
এ সময় চোখে পড়ে বিশেষ একটি জিনিস, অর্থাভাব থাকলেও ঈদের বাজারে এসে তার সবটাই বিদায় করে দিয়েছেন নিম্নবিত্তরা। সাধ্যের সবটুকু দিয়ে সাধের ঈদ করার চেষ্টায় মুখভরা হাসিতে সন্তানদের জামাকাপড় কিনে দিচ্ছেন তারা।
৩৬ দিন আগে