ভূকম্প
মিয়ানমারে ভূকম্পে নিহত বেড়ে ৩৫০০, বৃষ্টিতে বেড়েছে দুর্ভোগ
ভারী বৃষ্টি ও দমকা হওয়ার পর বজ্রঝড়ের কবলে পড়েছে মিয়ানমারের ভূমিকম্পে-বিধ্বস্ত এলাকার বাসিন্দারা। এতে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম ব্যাপকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। পাশাপাশি, দুর্যোগে যারা বসতবাড়ি হারিয়েছেন ও খোলা জায়গায় বসবাস করছেন, তাদের দুর্দশা বাড়িয়ে তুলেছে। এছাড়া নিহতের সংখ্যা বেড়ে সাড়ে তিন হাজার ছাড়িয়েছে।
রবিবার (৬ এপ্রিল) মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন টেলিভিশন চ্যানেল এমআরটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী সপ্তাহে দেশটির বিভিন্ন জায়গায় বজ্রঝড় ও বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, ‘দমকা বাতাস, বজ্রপাত, ভূমিধস ও ঝড়ো বাতাসের সঙ্গে অসময়ের বৃষ্টির হতে পারে। যে কারণে লোকজনকে সচেতন থাকতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সপ্তাহের মাঝামাঝিতে দিনের তাপমাত্রা ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।’
আরও পড়ুন: মিয়ানমারের ভূমিকম্পের পর ৮৯ আফটারশক অনুভূত
মিয়ানমারে এশিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ ভূমিকম্পটি আঘাত হানে গেল ২৮ মার্চ। সাত দশমিক সাত মাত্রার এই ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল দেশটির দ্বিতীয় বৃহৎ শহর মান্দালয়ে।
এতে রাজধানী নেপিদোসহ ছয়টি অঞ্চলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রবিবার (৭ এপ্রিল) মিয়ানমারের সামরিক সরকারের মুখপাত্র মেজর জেনারেল জো মিন তুন বলেন, ‘এ পর্যন্ত তিন হাজার ৫৬৪ জনের প্রাণহানি ঘটেছে ভূমিকম্পে। আহত হয়েছেন পাঁচ হাজার ১২ জন। এছাড়াও এখনো ২১০ জন নিখোঁজ রয়েছেন।’
ভূমিকম্পের কারণে দেশটির বিভিন্ন এলাকা এখনো বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এতে সড়ক ও সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
মান্দালয়ে মিয়ানমার রেসকিউ ফেডারেশেনের এক কর্মকর্তা বলেন, শনি ও রবিবার ভারী বৃষ্টির কারণে উদ্ধার অভিযানে ব্যবহার হওয়া বৈদ্যুতিন যন্ত্রপাতি বন্ধ করে রাখতে হয়েছে। এতে উদ্ধার কাজ অনেক কঠিন হয়ে পড়লেও একেবারে স্থগিত রাখা হয়নি।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক সরকারি কর্মকর্তা বলেন, ‘আরও বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকলেও উদ্ধারকারীরা তাদের কাজ চালিয়ে যাবেন।’
মান্দালয়ে কাজ করা আরেক উদ্ধারকারী বলেন, ‘বৃষ্টি ও ঝড়ো বৃষ্টিপাতের কারণে কয়েকটি ভবন ভেঙে পড়েছে। এতে যারা আশ্রয়ের খোঁজে রয়েছেন, তাদের কষ্ট বাড়িয়ে দিয়েছে।’
আরও পড়ুন: প্রথম ধাপে ১ লাখ ৮০ হাজার রোহিঙ্গা ফেরত নেবে মিয়ানমার
২০২১ সালে অং সান সুচির নেতৃত্বাধীন নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে দেশটির শাসন করছে সামরিক বাহিনী। এরপর থেকে গণতন্ত্রপন্থি প্রতিরোধ যোদ্ধা ও জাতিগত সংখ্যালঘু গেরিলাদের বিরুদ্ধে গৃহযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে তারা।
জান্তা সরকার জানিয়েছে, ভূমিকম্পে পাঁচ হাজার ২২৩টি ভবন, এক হাজার ৮২৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, দুই হাজার ৭৫২টি বৌদ্ধ মঠের আবাসিক ভবন, চার হাজার ৮১৭টি প্যাগোডা ও মন্দির, ১৬৭টি হাসপাতাল ও ক্লিনিক, ১৬৯টি সেতু, ১৯৮টি বাঁধ এবং প্রধান মহাসড়কের ১৮৪টি অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
২৪ দিন আগে