ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ
উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনার পরও অব্যাহত কুয়েটের অনশন
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) ভাইস চ্যান্সেলর (ভিসি) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদের পদত্যাগের দাবিতে অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সি আর আবরার। তবে তার সঙ্গে আলোচনার পরও আমরণ অনশন অব্যাহত রেখেছেন শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (২৩ এপ্রিল) সকাল পৌনে ১০টার দিকে কুয়েট ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করতে যান উপদেষ্টা। সেখানে প্রায় তিনি আধঘণ্টা অনশনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেন, তবে কোনো সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব হয়নি।
শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের প্রাথমিক ছয় দফা দাবি থেকে এখন একমাত্র দাবি ভিসির পদত্যাগ। এই দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অনশন চালিয়ে যাবেন বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: কুয়েটের উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে শাহবাগ অবরোধ
আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের উপদেষ্টা বলেন, ‘এটা দুঃখজনক যে পরিস্থিতি এ পর্যায়ে পৌঁছেছে। শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিক ঘোষণা চান, যাতে তারা অনশন ভাঙতে পারেন। আমি তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেছি, আইনি প্রক্রিয়া মেনে সমাধান করতে হবে। আমি মনে করি, কিছুটা হলেও তাদের আস্থা অর্জন করতে পেরেছি।’
এ সময় উপদেষ্টা অসুস্থ শিক্ষার্থীদের পানি পান করার এবং অনশন ভাঙার অনুরোধ করলেও শিক্ষার্থীরা তা প্রত্যাখ্যান করেন।
এদিকে বৈশাখের তীব্র গরমে অনশনরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ইতোমধ্যে পাঁচজন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। অনেকের রক্তচাপ কমে গেছে, শারীরিক দুর্বলতা দেখা দিয়েছে। অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন হলেও শিক্ষার্থীরা তাদের দাবিতে অনড়। সোমবার (২১ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ৩টা থেকে স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার সেন্টার চত্বরে এই অনশন শুরু হয়।
এদিকে কুয়েটের আন্দোলনে সংহতি জানিয়ে মঙ্গলবার (২২৩ এপ্রিল) রাতে ঢাকার শাহবাগে অবরোধ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি), বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়সহ (বুয়েট) ও জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। অবরোধ শেষে আজ (বুধবার) সারাদেশে ক্লাস ক্লাস বর্জনের ডাক দেন তারা।
এছাড়া খুলনা নাগরিক সংগঠন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন সংগঠন বিক্ষোভ, মিছিল ও কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। বুধবার সকাল থেকে কুয়েট ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে, ফটকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: কুয়েট ভিসির পদত্যাগ দাবিতে জাবিতে মানববন্ধন
শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের অনশন প্রত্যাহার করে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের অনুরোধ জানালেও তারা তাদের অবস্থানে অটল। এর আগে, ১৪ এপ্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় ৩৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার ও ক্যাম্পাস বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, যা শিক্ষার্থীরা প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন শুরু করে।
গত ১৮-১৯ ফেব্রুয়ারির সহিংস ঘটনা ও ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি নিয়ে শুরু হওয়া এই আন্দোলন এখনো অমীমাংসিত রয়েছে। শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, ভিসির পদত্যাগ না হওয়া পর্যন্ত তারা পিছু হটবেন না।
২২৬ দিন আগে