রিকশা ও অটোরিকশা
বাকৃবি প্রশাসনের নির্ধারিত ভাড়া মানছেন না রিকশাচালকরা, ভোগান্তিতে শিক্ষার্থীরা
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ক্যাম্পাসের ভেতরে চলাচলকারী রিকশা ও অটোরিকশার নির্ধারিত ভাড়া মানছেন না অনেক রিকশাচালক। এতে প্রতিনিয়ত ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের দাবি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নির্দিষ্ট গন্তব্য অনুযায়ী নির্ধারিত ভাড়ার তালিকা প্রকাশ করলেও বাস্তবে তার থেকে দ্বিগুণ ভাড়া দাবি করছেন চালকরা।
অপরদিকে রিকশাচালকরা বলছেন, প্রশাসন যে ভাড়া নির্ধারণ করে দিয়েছে, তা পর্যাপ্ত নয়।
শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের অভিযোগের ভিত্তিতে গত ৫ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অভ্যন্তরীণ রিকশা ও অটোরিকশার জন্য রুটভিত্তিক ভাড়া নির্ধারণ করে। এরপর ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে ভাড়ার তালিকাও টাঙিয়ে দেওয়া হয়। তবু কিছু রিকশাচালক নিজেদের ইচ্ছামতো বাড়তি ভাড়া দাবি করছেন। প্রশাসনের তদারকির অভাবেই তারা এ ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন বলে দাবি করেছেন শিক্ষার্থীরা।
আরও পড়ুন: কাজে আসছে না ১৫০ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ডিজিটাল শিক্ষা উপকরণ
মঙ্গলবার (১৩ মে) দুপুরে এমনই এক পরিস্থিতির শিকার হন ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থী মো. সোহান। তিনি জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের কে আর মার্কেট থেকে শেষ মোড় পর্যন্ত রিকশাভাড়া ১০ টাকা নির্ধারিত থাকলেও এক রিকশাচালক তার কাছে ২০ টাকা দাবি করেন।
সোহান বলেন, ‘এটি পুরোপুরি অযৌক্তিক। প্রশাসন যদি ক্যাম্পাসের ভেতরে নির্দিষ্ট রিকশা সার্ভিস চালু করে, তাহলে শিক্ষার্থীরা এমন হয়রানি থেকে মুক্তি পেতে পারে।’
তবে অভিযুক্ত রিকশাচালক মো. নীরব পাল্টা যুক্তি দিয়ে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যে ভাড়া নির্ধারণ করে দিয়েছে, সেটি আমাদের জন্য পর্যাপ্ত নয়। ময়মনসিংহ শহরে এইটুকু রাস্তার ভাড়া আমরা সর্বনিম্ন ২০ টাকা রাখি। আপনারা রিকশায় ওঠার আগে ভাড়া ঠিক করে তারপর উঠবেন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী মো. মুরসালিন বলেন, ‘ময়মনসিংহ শহরে চলাচলে প্রচুর যানজট মোকাবিলা করতে হয়। এক জায়গাতেই অনেকক্ষণ বসে থাকতে হয়। অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে কোনো যানজট নেই। প্রশাসন বিভিন্ন স্থান থেকে দূরত্ব পরিমাপ করেই ভাড়া নির্ধারণ করেছে। তাই রিকশাচালকদের শহরের সঙ্গে তুলনা করে ভাড়া চাওয়া অযৌক্তিক।’
বিষয়টি নিয়ে সহযোগী ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল্লাহ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করেই বর্তমান প্রশাসন ক্যাম্পাসের ভেতরে রিকশা ও অটোরিকশার ভাড়া নির্ধারণ করে দিয়েছে। ক্যাম্পাসের বাইরে থেকেও অনেক রিকশা ক্যাম্পাসের ভেতরে প্রবেশ করে এবং ভাড়া নিয়ে ঝামেলা করে থাকে বলে অভিযোগের কথা শুনেছি।’
তিনি বলেন, ‘ক্যাম্পাসের মধ্যেই যারা নিয়মিত রিকশা চালায় তাদের আরও মোটিভেট করার চেষ্টা করব। তবে অনেক সময় বৃষ্টি বা অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় রিকশা ভাড়া বেশি চাওয়া হয়, পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষার্থীদেরও সেই সময় মানবিক হতে হবে। যেহেতু বিষয়টি শিক্ষার্থী-কেন্দ্রিক, তাই আমরা রিকশাচালকদের সঙ্গে আলোচনা করে ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে অতি শিগগিরই বিষয়টির সমাধান করব।’
২২৯ দিন আগে