ঢাবি ছাত্রদল
সাম্য হত্যায় বড় ষড়যন্ত্র থাকলেও খতিয়ে দেখা হচ্ছে না: ঢাবি ছাত্রদল
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রদল নেতা এস এম শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যাকাণ্ডে পেছনে বড় ধরনের ষড়যন্ত্র থাকতে পারে বলে দাবি করেছে সংগঠনটির বিশ্ববিদ্যালয় শাখা। তারা বলছে, অথচ তদন্ত করে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে না।
শনিবার (৩১ মে) ক্যাম্পাসের মধুর ক্যান্টিনে সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি জানানো হয়। ‘ছাত্রদল নেতা সাম্য হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার এবং সাম্প্রতিক রাজনীতি’ শিরোনামে এ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
এ সময়ে সাম্য হত্যাকাণ্ডের তদন্ত ও বিচার কার্যক্রম নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে। তাদের দাবি, প্রশাসনের অবহেলা ও পুলিশের পক্ষপাতমূলক আচরণের কারণে এই হত্যা মামলার তদন্ত কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠেছে।
ঢাবি শাখা ছাত্রদল সভাপতি গণেশচন্দ্র রায় সাহসের অভিযোগ, ‘গত ১৩ মে দিবাগত রাতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের প্রবেশমুখে সাম্যকে নির্মমভাবে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়। ঘটনার সময় পুলিশ সদস্যদের উপস্থিতি সত্ত্বেও তারা যথাযথ পদক্ষেপ না নিয়ে বরং হত্যাকারীদের পালিয়ে যেতে সহায়তা করে—এমন অভিযোগও উঠে এসেছে প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্যে।’
সংগঠনটির ভাষ্যমতে, ঘটনার দীর্ঘ সময় পর তদন্তে গতি আসে এবং ডিএমপি কমিশনারের নেতৃত্বে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপিত তথ্য ছিল ‘অস্পষ্ট ও বিভ্রান্তিকর’। সাম্যের নিহত ট্রেজার গান-সংক্রান্ত তুচ্ছ বিরোধের জের ধরে হয়েছে বলে জানানো হলেও চিকিৎসকদের মতে, পরিকল্পিতভাবে তার উরুর গুরুত্বপূর্ণ ধমনি কেটে ফেলা হয়, যা তাৎক্ষণিক মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
ছাত্রদল অভিযোগ করে, ‘এই হত্যাকাণ্ডের পেছনে বড় ধরনের ষড়যন্ত্র থাকতে পারে, অথচ তদন্তে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও তারা প্রশ্ন তোলেন।’
‘ক্যাম্পাস ও হলগুলোতে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের দাপট, মাদক সিন্ডিকেটের বিস্তার এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতির মধ্যেও প্রশাসন কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টরের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে ছাত্রদল বলেছে, ‘শিক্ষার্থীদের আবেগ-অনুভূতির প্রতি উপাচার্যের অপেশাদার আচরণ আরও অসন্তোষ তৈরি করেছে।’আরও পড়ুন: সাম্য হত্যার রহস্য উদঘাটনের দাবি ডিএমপির
পাশাপাশি সাম্য ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে সামাজিকমাধ্যমে গুজব ও অপপ্রচার চালানোর অভিযোগও উত্থাপন করেছে তারা। ছাত্রদলের দাবি, সাম্য হত্যাকাণ্ডের বিচারপ্রক্রিয়াকে ঢাকতে মনোযোগ সরিয়ে নেয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।
সংগঠনটি মনে করে, ২০২৪ সালের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে স্বাধীন ও নিরাপদ ক্যাম্পাসের স্বপ্ন দেখা হয়েছিল, প্রশাসনের ব্যর্থতায় তা এখনও অধরাই থেকে গেছে। তাই উপাচার্য ও প্রক্টরের পদত্যাগ এবং নতুন প্রশাসনের অধীনে নিরাপদ ক্যাম্পাস গঠনের দাবি পুনর্ব্যক্ত করেছে ছাত্রদল।
ছাত্রদল জানায়, শহীদ সাম্য হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এবং নিরাপত্তার দাবিতে তাদের আন্দোলন আরও তীব্র হবে।
১৮৭ দিন আগে