সুপ্রিম কোর্ট
নির্বাচন আয়োজন নিয়ে পিটিআইয়ের আবেদন ফিরিয়ে দিয়েছে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট
৯০ দিনের মধ্যে দেশব্যাপী নির্বাচন চেয়ে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) করা আবেদন ফিরিয়ে দিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্ট।
শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) পাকিস্তানভিত্তিক জিও নিউজের বরাতে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতের গণমাধ্যম এএনআই।
সাবেক ক্ষমতাসীন জোট সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করার আগে প্রাসঙ্গিক ফোরামের কাছে না যাওয়ায় আবেদনটি ফেরত দেওয়া হয়েছে।
আবেদনে পিটিআই পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভিকে বিবাদী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
তবে রেজিস্ট্রার বলেছেন, ২৪৮ ধারা অনুযায়ী প্রেসিডেন্টকে পিটিশনের অংশ করা যাবে না।
জিও নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার আরও বলেছেন যে আবেদনকারীর কোন মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে তা ‘পিটিশনে উল্লেখ করা হয়নি। পিটিশনটি ১৮৪/৩ ধারার অধীনে আদালতের হস্তক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করে না।’
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের স্বাধীনতা দিবসে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রীর শপথ
পিটিআই গত আগস্টে বিধানসভা ভেঙে দেওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে পাকিস্তানে নির্বাচন অনুষ্ঠানের নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের কাছে আবেদন করেছিল।
আবেদনকারী পিটিআই-এর মহাসচিব ওমর আইয়ুব, সুপ্রিম কোর্টকে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আলভিকে নির্বাচনের তারিখ দেওয়ার জন্য এবং পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনকে (ইসিপি) সেই অনুযায়ী নির্বাচনের সময়সূচি জারি করার নির্দেশ দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন।
জিও নিউজ জানিয়েছে, আইয়ুব সংবিধানের ১৮৪(৩) অনুচ্ছেদের অধীনে পিটিশনটি দাখিল করেন এবং আদমশুমারিকে অবৈধ ও বাতিল হিসেবে অনুমোদন দিয়ে ২০২৩ সালের ৫ আগস্টের সাধারণ স্বার্থ কাউন্সিলের (সিসিআই) সিদ্ধান্ত ঘোষণা করার জন্য আদালতকে অনুরোধ করেছিলেন। এটি ছিল সুপ্রিম কোর্টে দায়ের করা দ্বিতীয় পিটিশন।
এর আগে সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের (এসসিবিএ) সভাপতি আবিদ এস জুবায়েরি সুপ্রিম কোর্টে একই আবেদন করেছিলেন।
জুবায়েরি ব্যারিস্টার আলী জাফরের মাধ্যমে পিটিশনটি দাখিল করেন।
তাতে তিনি ২০২৩ সালের ৮ আগস্ট তারিখ পরিসংখ্যান ব্যুরোর বিজ্ঞপ্তিটিকে বেআইনি, বেআইনি ও বাতিল ঘোষণা করার অনুরোধ করেন।
২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট ইসিপি’র প্রস্তাবিত বিজ্ঞপ্তিটিকে বেআইনি ও অকার্যকর ঘোষণা করার জন্য আদালতকে অনুরোধ করেছিলেন তিনি।
পিটিআই আদালতকে অনুরোধ করেছেন, সিন্ধু রাজ্যপালকে সিন্ধু জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে হবে এবং নির্বাচনী সংস্থাকে সেই অনুযায়ী নির্বাচনের তফসিল জারি করতে বলা হবে এবং বেলুচিস্তান প্রদেশের জন্যও একই নিয়ম মানা হবে।
আরও পড়ুন: আনোয়ার-উল-হক কাকার পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত
জিও নিউজ জানিয়েছে, ইসিপি আরও বলেছে যে পাঞ্জাব ও খাইবার পাখতুনখোয়া বিধানসভার নির্বাচন আদালতের রায় অনুসারে এবং আদালত কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত হতে পারে।
পিটিআই পিটিশনে বলেছে, জাতীয় পরিষদের নির্বাচন বিলম্বিত করার অজুহাত হিসেবে ইসিপি’র করা আদমশুমারি ব্যবহার করা হচ্ছে।
পাকিস্তানভিত্তিক ডন জানিয়েছে, ১৩ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) সিকান্দার সুলতান রাজাকে একটি চিঠিতে ৬ নভেম্বর জাতীয় নির্বাচনের তারিখ হিসেবে প্রস্তাব করেছিলেন।
চিঠিতে প্রেসিডেন্ট আলভি বলেছেন, তিনি ৯ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দিয়েছিলেন।
উল্লেখ্য, নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে অংশীজনদের মধ্যে মতামত বিভক্তের কারণে সিইসিকে প্রেসিডেন্ট এই পরামর্শ দেন।
তিনি সংবিধানের ৪৮ (৫) অনুচ্ছেদও উদ্ধৃত করেছেন।
ডনের রিপোর্ট অনুযায়ী, আলভী বলেন যে সভাপতিকে বিধানসভা 'বিলুপ্তির তারিখ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য একটি তারিখ নির্ধারণ করার জন্য ক্ষমতা ও আদেশ দেওয়া হয়েছে।’
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের ইমরান খানের বিরুদ্ধে যথাযথ বিচারিক প্রক্রিয়া মানার আহ্বান জাতিসংঘ প্রধানের
চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘তাই অনুচ্ছেদ ৪৮ (৫) অনুসারে জাতীয় পরিষদের সাধারণ নির্বাচন সাধারণ পরিষদ ভেঙে দেওয়ার তারিখের ৮৯তম দিনের মধ্যে, অর্থাৎ ২০২৩ সালের ৬ নভেম্বরের মধ্যে অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত।’
ডন জানিয়েছে, চিঠিতে আলভি আরও বলেছেন যে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা পূরণের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে সিইসিকে সাংবিধানিক অভিপ্রায় এবং আদেশ বাস্তবায়নের উপায় নির্ধারণ করার জন্য একটি বৈঠকের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল।
তিনি আরও বলেছেন, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন ও পরিচালনার জন্য 'অনুচ্ছেদ ৫১, ২১৮, ২১৯, ২২০ এবং নির্বাচন আইন, ২০১৭'-এর অধীনে নির্ধারিত সমস্ত সাংবিধানিক ও আইনি পদক্ষেপগুলো মেনে চলা পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের (ইসিপি) দায়িত্ব।
সুপ্রিম কোর্টে মিছিল-সমাবেশ নিষিদ্ধের রায় কঠোরভাবে অনুসরণের নির্দেশ
সুপ্রিম কোর্টে সমাবেশ ও মিছিল না করার বিষয়ে ২০০৫ সালের উচ্চ আদালতের একটি রায় কঠোরভাবে অনুসরণের নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
বুধবার (৩০ আগস্ট) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের চার বিচারপতির বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
বেঞ্চের অপর সদস্যরা হলেন- বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, বিচারপতি বোরহান উদ্দিন, বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম।
একই সঙ্গে দুই বিচারপতির পদত্যাগের দাবিতে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করার প্রেক্ষাপটে বিএনপি সমর্থক সাত আইনজীবীর বিরুদ্ধে যে আদালত অবমাননার আবেদন করা হয়েছে সে বিষয়ে শুনানির জন্য ১৯ অক্টোবর দিন ধার্য করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: আপিল বিভাগে মেয়র জাহাঙ্গীরের নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা
আদালত অবমাননার আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন- নাহিদ সুলতানা যুথি। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন- অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
আদেশের পরে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন সাংবাদিকদের বলেন, সুপ্রিম কোর্টসহ দেশের সব আদালত প্রাঙ্গণে কোনো ধরনের মিছিল, সভা-সমাবেশ ও লিফলেট বিতরণ করা যাবে না।
সুপ্রিম কোর্টের এ রায় এখন থেকে মানা না হলে তা হবে আদালত অবমাননা। কারণ আপিল বিভাগ আজ ২০০৫ সালে দেওয়া ওই রায় মেনে চলতে বলেছেন। নিষেধ অমান্য করে কেউ মিছিল, সভা-সমাবেশ ও লিফলেট বিতরণ করলে সেই আইনজীবী আইনি কার্যক্রম থেকে বিরত থাকবে বলেও তিনি জানান।
তিনি আরও বলেন, মূলত ২০০৫ সালে তৎকালীন হাইকোর্টের বিচারপতি আবদুল মতিনের বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে এসব নিষেধাজ্ঞা দেন। আজ থেকে সেই রায় কঠোরভাবে অনুসরণ করা হবে। তবে আদালত অবমাননার অভিযোগ ওঠা বিএনপির ৭ আইনজীবীর ক্ষেত্রে এই রায় কার্যকর হবে না বলেও জানান অ্যাটর্নি জেনারেল।
গত ১৫ অগাস্ট সুপ্রিম কোর্ট আয়োজিত শোক দিবসের এক আলোচনা সভায় দুই বিচারপতি তাদের বক্তব্যে বলেন, ‘বিচারপতিরা শপথবদ্ধ রাজনীতিবিদ’। ওই বক্তব্যকে কেন্দ্র করে তাদের অপসারণ চেয়ে সংবাদ সম্মেলনের পাশাপাশি কয়েকটি কর্মসূচি পালন করেছেন বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা।
এর পরিপ্রেক্ষিতে মঙ্গলবার বিএনপি সমর্থক সাত আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে ব্যবস্থা গ্রহণ চেয়ে সর্বোচ্চ আদালতে আবেদন করেন মো. নাজমুল হুদা নামে এক আইনজীবী। সেই আবেদন আপিল বিভাগে উপস্থাপন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী নাহিদ সুলতানা যুথী।
বিএনপির যে সাত আইনজীবীর বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হয়েছে তারা হলেন- জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী, ফোরামের মহাসচিব ও বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক কায়সার কামাল, ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট শাখার সভাপতি আব্দুল জব্বার ভূঁইয়া, সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস কাজল, সাবেক সহসম্পাদক মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান খান, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ফাহিমা নাসরিন মুন্নি এবং ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট শাখার সাধারণ সম্পাদক গাজী কামরুল ইসলাম সজল।
বুধবার (৩০ আগস্ট) আবেদনটি শুনানির জন্য আদালতে আবেদন করেন আইনজীবী নাহিদ সুলতানা যুথি।
এ পর্যায়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, আমরা আবেদনটি অবকাশের পর শুনানি গ্রহণ করব। এরপরই ২০০৫ সালে হাইকোর্টের দেওয়া রায় কঠোরভাবে অনুসরণের আদেশ দেন প্রধান বিচারপতি।
উল্লেখ্য, ২০০৫ সালে বিচারপতি এম.এ মতিন ও বিচারপতি এএফএম আব্দুর রহমানের দ্বৈত হাইকোর্ট বেঞ্চ এক রায়ে বলেছিলেন, সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে প্রধান বিচারপতিসহ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের সভা-সমাবেশ বা মিছিল করা যাবে না। বহন করা যাবে না কোনো প্ল্যাকার্ড। এ ধরনের কর্মকাণ্ড করলে তা হবে বিচার প্রশাসনে হস্তক্ষেপের সামিল। এমনকি তা আদালত অবমাননাও বটে।
এ ছাড়া কর্মসূচি দিয়ে কোনো আইনজীবীকে মামলা পরিচালনা করতে বাধা দেওয়া যাবে না বলেও রায়ে উল্লেখ করা হয়। কিন্তু এই রায় গত ১৮ বছরেও মেনে চলেনি আইনজীবীদের সংগঠনগুলো।
আরও পড়ুন: বিচারপতিকে নিয়ে আপত্তিকর বক্তব্য, মেয়রকে আপিল বিভাগে তলব
রাষ্ট্রপতি নির্বাচন প্রক্রিয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট আপিল বিভাগেও খারিজ
ড. ইউনূসসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলা চালানোর রাখার নির্দেশ
শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় নোবেল বিজয়ী ও গ্রামীণ কমিউনিকেশন্সের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ তিনজনের করা আবেদন খারিজ করে বিচার কার্যক্রম অব্যাহত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
রবিবার (২০ আগস্ট) প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির সমন্বয়ে গঠিত নিয়মিত ও পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে নাশকতা মামলায় বিএনপি-জামায়াতের ৪৬ জনের বিচার শুরুর আদেশ
আসামিপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
২০২১ সালের ৯ সেপ্টেম্বর, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের শ্রম পরিদর্শক আরিফুজ্জামান ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।
এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন- গ্রামীণ টেলিকমের এমডি মো. আশরাফুল হাসান, পরিচালক নূরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহান।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গ্রামীণ টেলিকম পরিদর্শনে গিয়ে অধিদপ্তরের পরিদর্শকরা দেখতে পান, ১০১ জন শ্রমিক-কর্মচারীদের স্থায়ী হওয়ার কথা ছিল, তাদের তা করা হয়নি। তাদের জন্য কোনো অংশগ্রহণ তহবিল ও কল্যাণ তহবিল গঠন করা হয়নি এবং কোম্পানির মুনাফার পাঁচ শতাংশ আইন অনুসরণ করে শ্রমিকদের দেওয়া হয়নি।
পরে গত ৭ ডিসেম্বর প্রফেসর ইউনূস মামলাটি বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন।
গত ১২ ডিসেম্বর হাইকোর্ট ছয় মাসের জন্য মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন।
চলতি বছরের ৬ জুন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচারের আদেশ দেন শ্রম আদালত।
পরে ড. ইউনূস অভিযোগ গঠনের আদেশ বাতিল চেয়ে আবারও হাইকোর্টে রিট করেন। এরপর গত ৮ আগস্ট হাইকোর্ট আবেদনটি খারিজ করে দেন।
রবিবার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ডিভিশন শুনানি শেষে আবেদনটি নিষ্পত্তি করেন।
আরও পড়ুন: মাইকেল জ্যাকসনের বিরুদ্ধে আনা যৌন নির্যাতনের মামলার শুনানি শুরু আপিল বিভাগে
সাঈদীর মৃত্যু: শাহবাগে জামায়াত-শিবিরের সহিংসতায় ৫ হাজার নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
সুপ্রিম কোর্টে ভাঙচুর: খোকন-কাজলসহ ১৪ জনের আগাম জামিন
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের কক্ষে ভাঙচুর ও আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীদের ওপর হামলার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় ১৪ আইনজীবীকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে ৪ আইনজীবীকে জামিন না দিয়ে ছয় সপ্তাহের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
যাদেরকে জামিন দেওয়া হয়েছে তারা হলেন- বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্ট শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, মো. সাগর হোসেন, মো. রেজাউল করিম রেজা, মাহবুবুর রহমান খান, মো. রবিউল আলম সৈকত, নজরুল ইসলাম ছোটন, রেদোয়ান আহমেদ রানজিব, মো. মাহমুদ হাসান, মো. কামাল হোসেন, মো. আনিসুর রহমান (রায়হান) ও খালেদ মাহমুদুর রহমান আদনান।
একইসঙ্গে ভাঙচুরের ঘটনায় সরাসরি যুক্ত থাকায় আইনজীবী নূরে আলম সিদ্দিকী সোহাগ, মোস্তাফিজুর রহমান আহাদ, আ. কাইয়ুম ও উজ্জল হোসেনকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে অধস্তন আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
তারা সশরীরে হাজির হয়ে আগাম জামিন চেয়ে আবেদন জানালে সোমবার (৮ আগস্ট) বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী ও অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন।
এর আগে গত ৩ আগস্ট সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের কক্ষে ভাঙচুর ও আওয়ামী লীগপন্থী আইনজীবীদের ওপর হামলার অভিযোগে বিএনপির ১৮ আইনজীবীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
আইনজীবী সমিতির সহকারী সুপাররিনটেনডেন্ট মো. রফিকুল্লাহ বাদী হয়ে রাজধানীর শাহবাগ থানায় এ মামলা করেন। তবে সেদিন বিএনপি সমর্থক এক নারী আইনজীবীর ওপর হামলার ঘটনায় মামলা করতে গেলেও তা গ্রহণ করেনি শাহবাগ থানা পুলিশ।
আরও পড়ুন: সাজা বহালের রায় প্রকাশ, আমান দম্পতিকে ১৫ দিনের মধ্যে আত্মসমর্পণের নির্দেশ
জানা যায়, অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুদকের করা মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানকে সাজা দেওয়ার প্রতিবাদে গত ৩ আগস্ট সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম।
সংবাদ সম্মেলন শেষে সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের কক্ষের সামনে দু’পক্ষের আইনজীবীরা স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে শুরু হয় ধাক্কাধাক্কি, হাতা-হাতি। এ পরিস্থিতি চলতে থাকে অন্তত ১০ মিনিট। এরই মধ্যে আইনজীবীরা সমিতির সভাপতির কক্ষের সামনে থাকা নেমপ্লেট খুলে ফেলেন।
পরে সমিতির সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুন নূর দুলাল বলেন, বিএনপির ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, কায়সার কামাল, কাজল ও সজলের নেতৃত্বে আমাদের আইনজীবীদের ওপর হামলা হয়েছে। সমিতির সভাপতি-সম্পাদকের কক্ষ ভাঙচুর করেছে তারা।এদিকে বিএনপির ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ সংবাদ সম্মেলন করে বের হওয়ার সময় আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরা আমাদের এক নারী আইনজীবীর ওপর হামলা করেন। তাকে উদ্ধার করতে গেলে তারা আরও মারমুখী আচরণ করেন। সম্পাদকের কক্ষ ভাঙচুরের অভিযোগ অস্বীকার করে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, তারা নিজেরা ভাঙচুর করে উল্টো আমাদের ওপর দোষ চাপাচ্ছে।
আরও পড়ুন: ‘এস আলমের আলাদিনের চেরাগ’ নিয়ে ডেইলি স্টারের প্রতিবেদন: অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
তারেক-জুবাইদার সাজার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন, সুপ্রিমকোর্টে আইনজীবীদের দু’পক্ষের সংঘর্ষ
সুপ্রিম কোর্ট বার সম্পাদকের কক্ষ ভাঙচুর: ২৫ আইনজীবীর আগাম জামিন
সমিতির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদকের কক্ষে ভাঙচুরের মামলায় ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ ২৫ আইনজীবীকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
রবিবার (২১ মে) বিচারপতি মো. সেলিম ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ মামলায় পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল করা পর্যন্ত তাদের জামিন দেন।
আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার এম আমীর উল ইসলাম ও জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী।
এ সময় বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: পুনর্নির্বাচন দাবি সুপ্রিম কোর্ট বারের বিএনপিপন্থীদের
জামিন পাওয়া আইনজীবীরা হলেন-বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, সমিতির সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট গাজী মো. কামরুল ইসলাম সজল, বারের এডহক কমিটির আহ্বায়ক মো. মহসিন রশিদ, এডহক কমিটির সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট শাহ আহমেদ বাদল, সংবিধান সংরক্ষণ কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ মামুন মাহবুব, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আলী, অ্যাডভোকেট কাজী মোস্তাফিজুর রহমান আহাদ, অ্যাডভোকেট মো. ঈশা, অ্যাডভোকেট নূরে আলম সিদ্দিকী সোহাগ, অ্যাডভোকেট মো. কাইয়ুম, অ্যাডভোকেট মো. সাগর হোসেন, অ্যাডভোকেট মো. রেজাউল করিম রেজা, অ্যাডভোকেট মো. উজ্জল হোসেন, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ওসমান চৌধুরী, অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান খান, অ্যাডভোকেট মাহফুজ বিন ইউসুফ, অ্যাডভোকেট মো. রবিউল আলম সৈকত, অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম ছোটন, ব্যারিস্টার রেদোয়ান আহমেদ রানজিব, অ্যাডভোকেট মো. মাহমুদ হাসান, অ্যাডভোকেট মো. কামাল হোসেন, অ্যাডভোকেট সাকিবুজ্জামান ও আব্দুল কাইয়ুম।
গত ১৬ মে দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট বার সম্পাদকের কক্ষে ভাঙচুর চালানো হয়। এ সময় দুপক্ষের ‘হাতাহাতি’র ঘটনাও ঘটে।
ঘটনার দিন রাতেই বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের আসামি করে মামলা করেন সুপ্রিম কোর্ট বারের সহকারী সুপারিন্টেডেন্ট মো. রফিকউল্লাহ।
রাজধানীর শাহবাগ থানায় করা এ মামলায় ২৫ আইনজীবীর নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১৫০ জনকে আসামি করা হয়।
আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন: ঘটনা তদন্তে বিএনপি সমর্থিত ১৪ প্রার্থীর রিট
এ মামলার এজাহারে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের বিরুদ্ধে ভাঙচুর, হামলা, নারী আইনজীবীদের যৌন হয়রানি, এক লাখ টাকা দামের স্বর্ণের চেইন, নগদ ৫০ হাজার টাকা এবং ১৫ হাজার টাকার কেসিও ঘড়ি চুরির অভিযোগ করেছেন বাদী।
গত ১৫ ও ১৬ মার্চ হট্টগোল, হামলা, ভাঙচুর, মামলা, সাংবাদিক পেটানো, প্রধান বিচারপতির কাছে নালিশ ও ধাক্কাধাক্কির মধ্যদিয়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির দুই দিনব্যাপী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
১৪টি পদের সব কটিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্যানেল জয়ী হয়েছেন।
দুই দিনব্যাপী নির্বাচনের শেষদিন দিনগত রাতে এ ফলাফল ঘোষণা করা হয়।
যদিও নির্বাচনে ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল বিএনপি সমর্থকরা। এরপর থেকে বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা আন্দোলন করে আসছেন। এর ধারাবাহিকতায় ১৬ মে মিছিল ও সমাবেশ করেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা। সেদিন বার সম্পাদকের কক্ষে হামলা ও ভাঙচুর চালানো হয়।
আরও পড়ুন: আ.লীগ ‘তথাকথিত’ সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচনী ব্যবস্থা ভেঙে দিয়েছে: ফখরুল
নিম্ন আদালতে কালো কোট-গাউন পরার আবশ্যকতা নেই: সুপ্রিম কোর্ট
চলমান তাপপ্রবাহের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে সারা দেশের নিম্ন আদালতে মামলার শুনানির সময় বিচারক ও আইনজীবীদের কালো কোট ও গাউন পরার বাধ্যবাধকতা স্থগিত করা হয়েছে।
দেশের বিভিন্ন আইনজীবী সমিতির আবেদনের প্রেক্ষাপটে প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী শনিবার সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারপতিদের সঙ্গে আলোচনা করে নিম্ন আদালতে মামলার শুনানিকালে পরিধেয় পোশাকের বিষয়ে এই সিদ্ধান্ত দেন।
আরও পড়ুন: পুনর্নির্বাচন দাবি সুপ্রিম কোর্ট বারের বিএনপিপন্থীদের
প্রধান বিচারপতির আদেশক্রমে শনিবার সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. গোলাম রব্বানী স্বাক্ষরিত এসংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দেশব্যাপী চলমান তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে দেশের বিভিন্ন আইনজীবী সমিতির আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ বিচারপতিদের আলোচনাক্রমে সিদ্ধান্ত হয়, অধস্তন দেওয়ানী ও ফৌজদারী আদালত, ট্রাইব্যুনালসমূহের বিচারক ও আইনজীবীরা ক্ষেত্রমত সাদা ফুলশার্ট বা সাদা শাড়ি/সালোয়ার কামিজ ও সাদা নেক ব্যান্ড/কালো টাই পড়বেন। এক্ষেত্রে কালো কোট ও গাউন পড়ার আবশ্যকতা নেই। এ নির্দেশনা আগামী রবিবার থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।
এর আগে বিভিন্ন সময় আদালতে আইনজীবী ও বিচারকদের জন্য গ্রীষ্ম ও শীতকালীন ভিন্ন ভিন্ন ড্রেসকোড নির্ধারণের জন্য প্রধান বিচারপতি বরাবর আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের কয়েকজন আইনজীবী।
সে আবেদনে বলা হয়, অতিরিক্ত গরমে নিয়ম অনুযায়ী কালো কোট, গাউন, কলার, ব্যান্ড/টাই পড়ার কারণে প্রতিবছর বহু সংখ্যক আইনজীবী হিট স্ট্রোক করেন এবং অসুস্থ হয়ে পড়েন।
এছাড়া, তীব্র গরম ও তাপপ্রবাহের কারণে কোট-গাউন পরে অনেক বয়জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আদালতে যেতে পারেন না।
অন্যদিকে, গত বৃহস্পতিবার আইনজীবীদের নির্ধারিত পোশাক পরে মুখ্য বিচারিক হাকিম (সিএমএম) আদালতে একটি মামলার শুনানি করে শফিউল আলম নামের এক আইনজীবী নিজ চেম্বারে যাওয়ার সময় জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন।
পরে তাকে ঢাকা ন্যাশনাল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তার সহকর্মীদের দাবি ‘হিট স্ট্রোকে’ আইনজীবী শফিউল আলমের মৃত্যু হয়।
আরও পড়ুন: সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচন: ঘটনা তদন্তে বিএনপি সমর্থিত ১৪ প্রার্থীর রিট
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে ৩ বিচারপতির নিয়োগ
ইমরান খানকে মুক্তির নির্দেশ পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের
পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট বৃহস্পতিবার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আদালত জানিয়েছেন, খানকে গ্রেপ্তারের পর থেকে গত দুই দিনে দেশজুড়ে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। তাই সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি উমর আতা বন্দিয়াল ইমরান খানকে তার সমর্থকদের শান্তিপূর্ণ থাকার আহ্বান জানাতে বলেছেন।
এদিন তার মুক্তি উদযাপন করতে আদালত ভবনের কাছে খানের সমর্থকদের নাচতে দেখা গেছে।
আইন প্রণেতাদের অনাস্থা ভোটে ক্ষমতা থেকে অপসারিত হওয়ার পর, খান পাকিস্তানি আদালতে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগের সম্মুখীন হন।
পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে হেফাজতে নেওয়ার পর থেকেই সহিংসতা শুরু হয়। নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে তার সমর্থকদের সংঘর্ষে বহু মানুষ আহত হয় এবং রাতারাতি অভিযানে কয়েকশ’ মানুষকে আটক করা হয়।
সামরিক দখল, রাজনৈতিক সঙ্কট ও সহিংসতায় অভ্যস্ত এই জাতির জন্য এই ধরনের সহিংসতার ঘটনা নজিরবিহীন। এটি রাওয়ালপিন্ডির গ্যারিসন সিটিতে একটি নির্বাচনী সমাবেশে ২০০৭ সালে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোকে হত্যার পরে সৃষ্ট পরিস্থিতির কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। সে সময় তার সমর্থকরা, তার হত্যাকাণ্ডে বিক্ষুব্ধ হয়ে সারা পাকিস্তানে কয়েকদিন ধরে তাণ্ডব চালিয়েছিল।
মঙ্গলবার খানের নাটকীয় গ্রেপ্তারের পর থেকে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে তার অন্তত ১০ জন সমর্থক নিহত এবং কয়েক ডজন আহত হয়েছে। পাশাপাশি ২০০ জনেরও বেশি পুলিশ আহত হয়েছে।
আরও পড়ুন: ইমরান খান গ্রেপ্তার: বিক্ষোভকারী-পুলিশ সংঘর্ষে নিহত ১০
বুধবার রাতে রাজধানী ইসলামাবাদের উপকণ্ঠে একটি রেলস্টেশন পুড়িয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা। বৃহস্পতিবার, তারা পাকিস্তানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর লাহোরের আশেপাশের এলাকায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে, একটি পুলিশের গাড়িতে আগুন দেয় এবং একটি ট্রেন অবরোধ করে।
পুলিশ বৃহস্পতিবার বলেছে যে ইমরান খানের প্রায় এক হাজার ৬০০ সমর্থককে সারাদেশে রাষ্ট্রীয় সম্পদের ক্ষতি এবং সামরিক স্থাপনায় হামলার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ফলে মঙ্গলবার থেকে আটককৃতদের সংখ্যা বেড়ে দুই হাজার ৩০০ জনে পৌঁছেছে।
বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় ট্রাক, গাড়ি ও পুলিশের গাড়িতে আগুন ধরিয়ে এবং মহাসড়ক অবরোধ করে সরকারি ও সামরিক ভবনে হামলার পর তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
খানের গ্রেপ্তারের কয়েক ঘন্টা পরে মঙ্গলবার লাহোরে একজন শীর্ষ সেনা কমান্ডারের বাসভবনে উত্তেজিত জনতা আগুন ধরিয়ে দেয়।
সার্বিক দিক বিবেচনায় দেশটির সরকার সহিংস এলাকাগুলোতে বুধবার থেকে সেনাবাহিনী মোতায়েন করেছে।
খানকে ইসলামাবাদের একটি আদালত কক্ষ থেকে টেনে নিয়ে যাওয়া হয় যেখানে তিনি মঙ্গলবার দুর্নীতির অভিযোগের মুখোমুখি হন।
তাকে এখন ইসলামাবাদের একটি পুলিশ কম্পাউন্ডে রাখা হয়েছে। যেখানে একটি অস্থায়ী আদালতে বুধবার একজন বিচারক ৭০ বছর বয়সী খানকে কমপক্ষে আরও আট দিনের জন্য আটক রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
খানের আইনজীবীর কাছ থেকে একটি আবেদনের সংক্ষিপ্ত শুনানির পর, বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোর্ট খানকে যেভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তাতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে এবং কর্তৃপক্ষকে তাকে এক ঘন্টার মধ্যে হাজির করার নির্দেশ দিয়েছে। এতে ধারণা করা হয় এবার খানকে মুক্তি দেওয়া হবে।
খানের গ্রেপ্তারকে বেআইনি বলে যুক্তি দিয়ে তার আইনজীবীরা তার মুক্তি চেয়েছিলেন।
পুলিশ বৃহস্পতিবার খানকে কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে নিয়ে গেলে, সরকার তাকে হেফাজতে রাখার দাবি জানায়।
শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতিকে উদ্দেশ্য করে তথ্যমন্ত্রী মরিয়ম আওরঙ্গজেব এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আপনারা যদি তাকে কোনো ছাড় দেন তাহলে এটা অন্যায় হবে।’
তিনি খানের অনুসারীদের করা সহিংসতার দিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে মুক্তি দিলে আদালত ‘সবাইকে হত্যা করার লাইসেন্স’ দেবে।
অন্যদিকে বৃহস্পতিবার পুলিশ জনতাকে সহিংসতায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগে খান এবং তার পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ দলের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে নতুন করে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ দায়ের করেছে।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের পর অস্থিরতা থামাতে সেনা মোতায়েন
বুধবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ বলেন, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর অনুসারীদের অস্থিরতা ‘সংবেদনশীল সরকারি ও ব্যক্তিগত সম্পত্তির ক্ষতি করেছে।’
মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর শরীফ বলেন, ‘এ ধরনের দৃশ্য পাকিস্তানের জনগণ কখনো দেখেনি। এমনকি রোগীদের অ্যাম্বুলেন্স থেকে বের করে এনে অ্যাম্বুলেন্সে আগুন দেওয়া হয়েছে।’
শরীফ হামলাকে ‘শাস্তিযোগ্য’ বলে অভিহিত করেছেন এবং সতর্ক করেছেন যে সহিংসতায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হবে।
তিনি বলেন, খানকে দুর্নীতিতে জড়িত থাকার কারণে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল এবং এই অভিযোগগুলোর স্বপক্ষে প্রমাণ রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি বৃহস্পতিবার খানের অনুসারীদের সহিংসতা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তবে তিনি বলেছেন, তাদের (খানের সমর্থকদের) শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ করার অধিকার আছে।
তিনি আরও বলেন, ‘যা হয়েছে, হয়েছে। নিজের জন্য বিষয়গুলোকে আরও কঠিন করবেন না।’
সহিংসতার পরে সরকার পাঞ্জাব এবং উত্তর-পশ্চিম খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেয়। কেননা সেখানে খানের ব্যাপক সমর্থক রয়েছে এবং সেখানেই বেশিরভাগ সহিংসতার খবর পাওয়া গেছে।
এ পর্যন্ত অন্তত সাতজন বিক্ষোভকারীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে খাইবার পাখতুনখোয়ায় এবং দুইজন পাঞ্জাবের রাজধানী লাহোরে এবং একজন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর কোয়েটায়।
সরকার দেশের বিভিন্ন স্থানে ইন্টারনেট পরিষেবা স্থগিত করেছে।
পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী মহসন নকভি বলেছেন, ‘যারা আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত করেছে আমরা তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করব।’
কর্মকর্তারা বলছেন যে খানের সমর্থকরা বিশেষ করে সামরিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্যবস্তু করেছে, কারণ তিনি তার ২০২২ সালের ক্ষমতাচ্যুতির জন্য সামরিক বাহিনীকে দোষারোপ করেছেন।
আরও পড়ুন: ৮ দিনের রিমান্ডে পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান
পাশাপাশি খান দাবি করেছেন যে এটি ওয়াশিংটন এবং শরীফের সরকারের একটি ষড়যন্ত্র ছিল।
তবে এ অভিযোগগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং শরীফ উভয়ই অস্বীকার করেছেন।
সামরিক বাহিনীও বলেছে যে তারা খানকে ক্ষমতাচ্যুত করার ক্ষেত্রে কোনো ভূমিকা পালন করেনি।
সহিংসতার মধ্যে খানের সমর্থকরা রাওয়ালপিন্ডিতে সামরিক সদর দপ্তর এবং উত্তর-পশ্চিমে নিরাপত্তা চৌকিতে হামলা চালিয়েছে, আফগানিস্তানের সীমান্তে নিরাপত্তা চাকদারা দুর্গে আগুন দিয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে লাহোরে, বিক্ষোভকারীরা আঞ্চলিক কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল সালমান ফাইয়াজ গনির বাসভবন ভাঙচুর করে ও পুড়িয়ে দেয়।
বুধবার সেনাবাহিনী পূর্ণ শক্তি দিয়ে বিক্ষোভকারীদের আক্রমণের জবাব দেওয়ার অঙ্গীকার করে।
তারা বলেছে, তাদের স্থাপনাগুলোতে আক্রমণগুলো একটি সাজানো পরিকল্পনা অনুসারে করা হয়েছে এবং এই সহিংসতা দেশের ইতিহাসে একটি ‘কালো অধ্যায়’।
ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে দেশটি স্বাধীনতা লাভের পর থেকে সামরিক বাহিনী ৭৫ বছরের অর্ধেকেরও বেশি সময় ধরে সরাসরি পাকিস্তান শাসন করেছে এবং বেসামরিক সরকারগুলোর ওপর প্রভাব বিস্তার করে রাখে।
দেশের কোর্টগুলোতে প্রায় ৪০ লাখ মামলা বিচারাধীন: প্রধান বিচারপতি
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেছেন, দেশের কোর্টগুলোতে প্রায় ৪০ লাখ মামলা বিচারাধীন রয়েছে। এই মামলার জট কমাতে বিচারক ও আইনজীবীরা একসঙ্গে চেষ্টা করছেন।
মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টায় মেহেরপুর জজকোর্ট চত্বরে বিচারপ্রার্থীদের জন্য নির্মাণাধীন ‘ন্যায়কুঞ্জ’র ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, সুপ্রিম কোর্টে গত বছর ৮২ হাজার মামলা ফাইল হয়েছে। মামলাগুলোর মধ্যে ৭৯ হাজার মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। অর্থাৎ নিষ্পত্তি হয়েছে শতকরা ৯৫ ভাগ।
আরও পড়ুন: প্রধান বিচারপতির কাছে অভিযোগ উপস্থাপন করলেন বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা
তিনি বলেন, জেলা পর্যায়ের জুডিসিয়ারিতেও যে মামলা ফাইল হয়েছে, তার মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি জেলাতে কেস নিষ্পত্তির যত মামলা ফাইল হয়েছে তার চেয়ে বেশি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এই দেশের ৪০ লাখ মামলার জন্য বিচারকের সংখ্যা মাত্র দুই হাজার। এটা খুবই অপ্রতুল। আমরা চেষ্টা করছি, নতুন বিচারক নেওয়ার। ইতোমধ্যে ১০২ জন বিচারক নেওয়ার প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। পুলিশি তদন্তে আছেন তারা। আমরা এই বছরের মধ্যেই তাদের নিয়োগ দিতে পারবো। এছাড়া আরও ১০০ বিচারক নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বলেন, আমরা আশাবাদী যে বিচারকগণ পরিশ্রম করেই মামলাজট সুরাহা করতে পারবেন। সেক্ষেত্রে আইনজীবীদের আদালতকে সহায়তা করার আহ্বান জানান। যাতে করে সবাই একসঙ্গে মামলাজটকে রিমুভ করতে পারি।
তিনি বলেন, এই দেশের মালিক জনগণ। প্রতিদিন আদালত প্রাঙ্গণে শত শত লোক বিচারের আশায় আসেন। তাদের বসার কোনো যায়গা নেই। এইসব চিন্তা ভাবনা থেকেই আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি বিচারপ্রার্থীরা যাতে আদালতে এসে একটু স্বস্তিতে বসতে পারেন। সেটাই আজকের এই ন্যায়কুঞ্জের কনসেপ্ট।
এসময় সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার মো. তোফায়েল হাসান, মেহেরপুর জেলা ও দায়রা জজ মো. শহিদুল্লাহ, মেহেরপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুল ইসলাম, মেহেরপুর পুলিশ সুপার মো. রাফিউল আলম, জজকোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট পল্লব ভট্টাচার্য, আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: বিচার বিভাগ ক্ষতিগ্রস্ত হলে গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হবে: প্রধান বিচারপতি
সমিতির নির্বাচন বিষয়ে প্রধান বিচারপতির করণীয় কিছু নেই: অ্যাটর্নি জেনারেল
খোকন-কায়সারসহ ২৪ আইনজীবীর আগাম জামিন
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির (বার অ্যাসোসিয়েশন) ইফতার ও দোয়া মাহফিলে হামলা, ভাঙচুর, হুমকি ও প্রাণনাশের চেষ্টার অভিযোগে করা মামলায় ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ ২৪ আইনজীবী আগাম জামিন পেয়েছেন।
সোমবার তারা সশরীরে হাজির হয়ে আগাম জামিনের আবেদন জানালে বিচারপতি ইকবাল কবির ও বিচারপতি এ কে এম রবিউল হাসানের বেঞ্চ তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।
এছাড়া তাদের পক্ষে জামিন শুনানি করেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী।
আরও পড়ুন: আরেকটি মামলায় জামিন পেয়েছেন প্রথম আলোর সাংবাদিক শামসুজ্জামান
ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ছাড়া জামিন পাওয়া আইনজীবীরা হলেন-ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, অ্যাডভোকেট গাজী মো. কামরুল ইসলাম সজল, অ্যাডভোকেট শাহ আহমদ বাদল, অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান খান, অ্যাডভোকেট মাহফুজ বিন ইউসুফ, ব্যারিস্টার এ কে এম এহসানুর রহমান, ব্যারিস্টার মাহাদিন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট জামিউল হক ফয়সাল, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট ইউনুস আলী রবি, অ্যাডভোকেট কাজী মোস্তাফিজুর রহমান আহাদ, অ্যাডভোকেট মির্জা আল মাহমুদ, ব্যারিস্টার মেহেদী হাসান, অ্যাডভোকেট নূরে আলম সিদ্দীকী সোহাগ, অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম ছোটন, অ্যাডভোকেট মহসিন কবির রকি, অ্যাডভোকেট ফয়সাল সিদ্দীকি, অ্যাডভোকেট সফিউল আলম সপু, অ্যাডভোকেট মো. শহিদুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মনজুরুল আলম সুজন, ব্যারিস্টার রেদওয়ান আহমদ রানজিব ও অ্যাডভোকেট মো. ইসা। এর আগে রবিবার ২৪ আইনজীবীর নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৫০ থেকে ৬০ জন বিএনপিপন্থি আইনজীবীর নামে মামলা করা হয়।
শাহবাগ থানায় এজাহার দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির প্রশাসনিক কর্মকর্তা রবিউল হাসান।
মামলা বলা হয়, এই ২৪ জনসহ আরও ৫০/৬০ জন আইনজীবী ও কয়েকজন বহিরাগত হঠাৎ সাজাপ্রাপ্ত তারেক রহমান এবং জামায়াতের নাম নিয়ে স্লোগান দিয়ে মিছিলসহ প্রথম সমিতির ২ নম্বর হল রুম পরবর্তীত ১ নম্বর হল রুম প্রবেশ করে ইফতার অনুষ্ঠানের প্রধান বিচারপতির নাম সম্বলিত সব ব্যানার ছিড়ে ফেলে এবং আইনজীবী সদস্যদের জন্য সংরক্ষিত আসনের চেয়ার টেবিল ভেঙে ও কাপড় ওপরে ফেলে সমস্ত সমিতি ভবন একটি অরাজক অবস্থার সৃষ্টি করে।
এসময় উপরোক্ত আসামিদের বেআইনী কর্মকাণ্ডে বাধা দিত গেলে তারা সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট রকিবুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট পানু খান ও অ্যাডভোকেট মো. শাহনওয়াজসহ অন্যান্য আইনজীবীদের ধাক্কা দিয়ে ফেলে আহত করে।
অ্যাডভোকেট রকিবুল ইসলাম ১২ নম্বর আসামি অ্যাডভোকেট নূর আলম সিদ্দীকী সোহাগ প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে কাঠের লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করতে গেলে ভিকটিম হাত দিয়ে ঠেকানোর সময় তার ডান হাত মারাত্মক রক্তাক্ত হয়।
তখন উপরোক্ত আসামিরা সাধারণ আইনজীবীদের ইফতার অনুষ্ঠান অংশগ্রহণ করতে নিষেধ করে এবং ইফতার অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করলে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
পরবর্তীতে বিকাল ৫টা ১০ মিনিটের সুপ্রিম কার্টের আপীল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক সমিতির আমন্ত্রণে ইফতার অনুষ্ঠান যোগদানর জন্য সমিতির নিচ তলার সিঁড়ি দিয় ২য় তলায় ওঠার সময় আসামিরা তাকে গালাগাল করে এবং ৭ নম্বর আসামি অ্যাডভোকেট ইউনুস আলী রবি ১, ২, ৩ ও ৪ নম্বর আসামির নির্দশে তার দিকে পানি ভর্তি বোতল ছুঁড়ে মারে সমিতির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নসহ ফৌজদারী অপরাধ করে।
সমিতির সাধারণ আইনজীবীরা আশঙ্কা করছেন উপরোক্ত আসামিরা যেকোনো সময় সংগঠিত হয়ে আরও বড় কোনো অঘটন ঘটিয় সাধারণ আইনজীবীদের পেশাগত এ পবিত্র স্থানে ব্যাপক জান-মালের ক্ষয়ক্ষতিসহ যে কোনো ধরনের বড় ক্ষতি করতে পারে।
ঘটনার পর ইফতার শেষ করে সবাই ক্লান্ত হয়ে পড়ায় এবং পর দিন শুক্রবার (৭ এপ্রিল) সমিতির অফিস বন্ধ থাকায় সমিতির নির্বাচিত নেতা ও সিনিয়র সদস্যরা এ ঘটনা সম্পর্কে আলাচনা করে এ মামলা করতে বিলম্ব হয়।
আরও পড়ুন: রানা প্লাজার সোহেল রানার জামিন, মুক্তিতে বাধা নেই
বিএনপির ২৪ আইনজীবীর নামে মামলা
বিএনপির ২৪ আইনজীবীর নামে মামলা
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির (বার অ্যাসোসিয়েশন) ইফতার ও দোয়া মাহফিলে হামলা, ভাঙচুর হুমকি ও প্রাণনাশের চেষ্টার অভিযোগে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও রুহুল কুদ্দুস কাজলসহ ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৫০/৬০ জন বিএনপিপন্থী আইনজীবীর নামে মামলা করা হয়েছে।
রবিবার (৯ এপ্রিল) শাহবাগ থানায় এজাহার দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির প্রশাসনিক কর্মকর্তা রবিউল হাসান।
এছাড়া মামলার আসামিরা সবাই সমিতির বিএনপি সমর্থক আইনজীবী।
আরও পড়ুন: কুমিল্লায় হত্যা মামলায় ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড
জানা যায়, ব্যারিস্টার এএম মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ছাড়া অন্যরা হলেন-ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, অ্যাডভোকেট গাজি মো. কামরুল ইসলাম সজল, অ্যাডভোকেট শাহ আহমদ বাদল, অ্যাডভোকেট মাহবুবুর রহমান খান, অ্যাডভোকেট মাহফুজ বিন ইউসুফ, ব্যারিস্টার একেএম এহসানুর রহমান, ব্যারিস্টার মাহাদিন চৌধুরী, অ্যাডভোকেট জামিউল হক ফয়সাল, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট ইউনুস আলী রবি, অ্যাডভোকেট কাজী মোস্তাফিজুর রহমান আহাদ, অ্যাডভোকেট মির্জা আল মাহমুদ, ব্যারিস্টার মেহেদী হাসান, অ্যাডভোকেট নূরে আলম সিদ্দীকী সোহাগ, অ্যাডভোকেট নজরুল ইসলাম ছোটন, অ্যাডভোকেট মহসিন কবির রকি, অ্যাডভোকেট ফয়সাল সিদ্দীকি, অ্যাডভোকেট সফিউল আলম সপু, অ্যাডভোকেট মো. শহিদুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট মনজুরুল আলম সুজন, ব্যারিস্টার রেদওয়ান আহমদ রানজিব, অ্যাডভোকেট মো. ইসাসহ আরও ৫০/৬০ জন আইনজীবী ও কয়েকজন বহিরাগত হঠাৎ সাজাপ্রাপ্ত তারেক রহমান এবং জামায়াতের নাম নিয়ে স্লোগান দিয়ে মিছিলসহ প্রথম সমিতির ২ নম্বর হলরুম, পরবর্তীতে ১ নম্বর হলরুমে প্রবেশ করে ইফতার অনুষ্ঠানের প্রধান বিচারপতির নাম সম্বলিত সব ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে। আইনজীবী সদস্যদের জন্য সংরক্ষিত আসনের চেয়ার টেবিল ভেঙে ও কাপড় উপড়ে ফেলে সমস্ত সমিতি ভবন একটি অরাজক অবস্থার সৃষ্টি করে।
এসময় উপরোক্ত আসামিদের বেআইনী কর্মকাণ্ডে বাধা দিত গেলে তারা সমিতির সদস্য অ্যাডভোকেট রকিবুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট পানু খান ও অ্যাডভোকেট মো. শাহনওয়াজসহ অন্যান্য আইনজীবীদের ধাক্কা দিয়ে ফেলে আহত করে।
আরও পড়ুন: মিতু হত্যা মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু
অ্যাডভোকেট রকিবুল ইসলাম ১২ নম্বর আসামি অ্যাডভোকেট নূর আলম সিদ্দীকী সোহাগ প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে কাঠের লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করতে গেলে ভিকটিম হাত দিয়ে ঠেকানোর সময় তার ডান হাত মারাত্মক রক্তাক্ত হয়।
তখন উপরোক্ত আসামিরা সাধারণ আইনজীবীদের ইফতার অনুষ্ঠান অংশগ্রহণ করতে নিষেধ করে এবং ইফতার অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করলে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে তারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
পরবর্তীতে বিকাল ৫টা ১০ মিনিটের সুপ্রিম কার্টের আপীল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক সমিতির আমন্ত্রণে ইফতার অনুষ্ঠান যোগদানর জন্য সমিতির নিচ তলার সিঁড়ি দিয় ২য় তলায় ওঠার সময় আসামিরা তাকে গালাগাল করে এবং ৭ নম্বর আসামি অ্যাডভোকেট ইউনুস আলী রবি ১, ২, ৩ ও ৪ নম্বর আসামির নির্দশে তার দিকে পানি ভর্তি বোতল ছুঁড়ে মারে সমিতির ভাবমূর্তি ক্ষুন্নসহ ফৌজদারী অপরাধ করে।
সমিতির সাধারণ আইনজীবীরা আশঙ্কা করছেন উপরোক্ত আসামিরা যেকোনো সময় সংগঠিত হয়ে আরও বড় কোনো অঘটন ঘটিয়ে সাধারণ আইনজীবীদের পেশাগত এ পবিত্র স্থানে ব্যাপক জানমালের ক্ষয়ক্ষতিসহ যে কোনো ধরনের বড় ক্ষতি করতে পারে।
ঘটনার পর ইফতার শেষ করে সবাই ক্লান্ত হয়ে পড়ায় এবং পর দিন শুক্রবার (৭ এপ্রিল) সমিতির অফিস বন্ধ থাকায় সমিতির নির্বাচিত নেতা ও সিনিয়র সদস্যরা এ ঘটনা সম্পর্কে আলোচনা করে এ দায়ের করতে বিলম্ব হয়।
উল্লেখ্য, গত ৬ এপ্রিল সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির দুটি আলাদা হল রুমে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে সমিতির নির্বাচন ইস্যুতে বিবদমান দুটি পক্ষ। বিকেল ৪টার দিকে দুই পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে হাতাহাতি ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
আরও পড়ুন: ৯৭ বার পেছালো সাগর-রুনি হত্যা মামলার প্রতিবেদন