যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প
এক সপ্তাহের মধ্যেই গাজা যুদ্ধবিরতি হতে পারে: ট্রাম্প
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, তার বিশ্বাস এক সপ্তাহের মধ্যেই ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে গাজা যুদ্ধবিরতি হতে পারে।
শুক্রবার (২৮ জুন) সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এই কথা জানান ট্রাম্প। তার দাবি, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে আলাপের পর যুদ্ধবিরতির সম্ভাবনা নিয়ে তিনি আশাবাদী।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা মনে করি, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যেই যুদ্ধবিরতি হতে পারে।’ তবে তিনি কার সঙ্গে কথা বলেছেন, এ সময় তা প্রকাশ করেননি।
ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য-বিষয়ক বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের দপ্তর অবশ্য গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে এখনো কোনো নিশ্চিত তথ্য দিতে পারছে না।
বাইডেন সরকারের সময় গাজায় যে যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তি হয়েছিল, সেটির অন্যতম মধ্যস্থতাকারী ছিলেন উইটকফ। তবে, মার্চে ইসরায়েল চুক্তি লঙ্ঘন করে আকস্মিক বিমান হামলা শুরু করলে সেই চুক্তি ভেঙে যায়।
এদিকে, কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদক নুর ওদ শুনিয়েছেন ভিন্ন কথা। তিনি জানান, ট্রাম্পের এই মন্তব্য গাজার ক্ষুধার্ত ও নিপীড়িত জনগণের জন্য আশার বাণী হতে পারে। তবে, বাস্তবে এই মুহূর্তে কোথাও কোনো আনুষ্ঠানিক আলোচনা হচ্ছে না।
তিনি বলেন, ‘ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে সাম্প্রতিক যুদ্ধবিরতির পর এই আলোচনা কিছুটা বেড়েছে। তবে ইসরায়েল এখনই গাজায় যুদ্ধ থামানোর কথা আলোচনা করতে চায় না।’
এই বিশ্লেষকের মতে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এই মুহূর্তে গাজায় যুদ্ধবিরতির কথা বললে উল্টো তিনিই রাজনৈতিকভাবে বড়সড় ঝুঁকিতে পড়তে পারেন।
বিভিন্ন সূত্রের বরাতে ওদ আরও বলেন, ‘আরব দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চাইলে নেতানিয়াহুকে কোনো না কোনোভাবে যুদ্ধবিরতিতে সম্মতি দিতে হতে পারে। এই সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ প্রচেষ্টা মূলত ট্রাম্প প্রশাসনই এগিয়ে নিচ্ছে।’
অন্যদিকে হামাস বলছে, ইসরায়েলকে গাজায় সামরিক অভিযান বন্ধ করতে হবে এবং তারা মার্চ থেকে যেসব অঞ্চল দখল করেছে, তা ছেড়ে দিতে হবে। এরপরই তারা যুদ্ধবিরতিতে যাবে।
হামাসের দাবি, যুদ্ধবিরতির পরবর্তী আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই নিশ্চয়তা দিতে হবে। পাশাপাশি ইসরায়েল যেন পুনরায় যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করতে না পারে, তারও নিশ্চয়তা চেয়েছে এই সংগঠনটি।
ইসরায়েলের কৌশল-বিষয়ক মন্ত্রী রন ডারমার আগামী সপ্তাহে ওয়াশিংটনে যাওয়ার কথা রয়েছে। এই সফরে তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে গাজা, ইরান ও নেতানিয়াহুর সম্ভাব্য যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে আলোচনা করবেন বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।
১৬০ দিন আগে
নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য আনুষ্ঠানিক মনোনয়ন পেলেন ট্রাম্প
ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) মার্কিন কংগ্রেসের জর্জিয়া অঙ্গরাজ্যের প্রতিনিধি বাডি কার্টার নরওয়ের নোবেল কমিটির কাছে পাঠানো এক চিঠিতে ট্রাম্পের মনোনয়ন সুপারিশ করেন।
চিঠিতে তিনি বলেন, ‘সশস্ত্র সংঘাতের অবসান ঘটিয়ে ঐতিহাসিক চুক্তি সাফল্যের সঙ্গে বাস্তবায়নে ট্রাম্পের অসাধারণ ভূমিকা বিশ্ব শান্তির জন্য এক মাইলফলক।’
কার্টার আরও বলেন, ‘অনেকের কাছে যা অসম্ভব বলে মনে হয়েছিল, সেই যুদ্ধবিরতি চুক্তি ট্রাম্পের দৃঢ় নেতৃত্বের কারণেই সম্ভব হয়েছে।’
সোমবার (২৩ জুন) ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন ট্রাম্প। যদিও দুই পক্ষই একে অপরের বিরুদ্ধে তা লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছে। তবে, ট্রাম্পের প্রচেষ্টাকে আন্তর্জাতিক মহলে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই বিবেচনা করা হচ্ছে।
কার্টার আরও উল্লেখ করেন, ‘ইরানের পরমাণু কর্মসূচি থামাতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছেন। বিশ্বের সবচেয়ে বড় সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষক রাষ্ট্রটি যাতে পরমাণু অস্ত্র অর্জন করতে না পারে, তা নিশ্চিত করেছেন।’
আরও পড়ুন: ইরানে শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন করতে চান না ট্রাম্প
এর আগেও ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্যে ‘আব্রাহাম চুক্তি’ বাস্তবায়নের জন্য নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য আলোচনায় ছিলেন। এবার ইরান-ইসরায়েল সংকটে তার ভূমিকা তাকে আবারও আলোচনার কেন্দ্রে নিয়ে এসেছে।
সবশেষ ২৪ জুন ইরানে হামলা চালিয়ে দুই জেনারেলসহ দেশটির অভিজাত বাহিনী আইআরসিজির সাত সদস্যকে হত্যার দাবি করেছে ইসরায়েল। এখন পর্যন্ত দেশ ইসরায়েলের হামলায় ৬১০ জন ইরানি নিহত হয়েছেন। অপর দিকে ইরানের মিসাইল হামলায় ২৪ জন ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন বলে গণমাধ্যমের খবরে জানা গেছে। ধ্বংস হয়ে গেছে উভয় পক্ষের গুরুত্বপূর্ণ অনেক সামরিক ও বেসামরিক স্থাপনা।
উল্লেখ্য, ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলা চালিয়ে তা ধ্বংসের দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এর প্রতিক্রিয়ায় কাতারে থাকা মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে মিসাইল হামলা চালায় ইরান।
সূত্র: বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা
১৬৩ দিন আগে
যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে ১৯ দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিলেন ট্রাম্প
দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসে ফিরেই একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিয়ে চলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরই ধারাবাহিকতায় ১২টি দেশের নাগরিকদের ওপর যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। এছাড়া ৭টি দেশের ভ্রমণকারীদের ওপর অতিরিক্ত বিধিনিষেধ দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় সময় বুধবার (৪ জুন) এ ঘোষণা দেন ট্রাম্প। আগামী সোমবার (৯ জুন) রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে এসব নিষেধাজ্ঞা ও বিধিনিষেধ কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে।
এটি ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের অন্যতম বিতর্কিত নীতির পুনরাবৃত্তি। তবে ২০১৭ সালের নিষেধাজ্ঞার সময় বিমানবন্দরে দেখা দেওয়া বিশৃঙ্খলা এড়াতে এবার আগাম নোটিশের মাধ্যমে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
এ ঘোষণায় ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা কিছু দেশ আবারও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। সম্পূর্ণ নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা ১২টি দেশ হলো- আফগানিস্তান, মিয়ানমার, চাদ, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, ইরিত্রিয়া, হাইতি, ইরান, লিবিয়া, সোমালিয়া, সুদান ও ইয়েমেন।
অন্যদিকে, বুরুন্ডি, কিউবা, লাওস, সিয়েরা লিওন, টোগো, তুর্কমেনিস্তান ও ভেনেজুয়েলা থেকে আগত ভ্রমণকারীদের জন্য অতিরিক্ত বিধিনিষেধ আরোপ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওতে এই নতুন নিষেধাজ্ঞার আরোপের কারণ হিসেবে কলোরাডোর বোল্ডারে রোববারের সন্ত্রাসী হামলার প্রসঙ্গ টানেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, যেসব ভ্রমণকারী ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও যুক্তরাষ্ট্রে থেকে যান, তারা বিপজ্জনক হতে পারে।
বিস্ময়কর ব্যাপার হলো কলোরাডো হামলার সন্দেহভাজন ব্যক্তি মিশরের নাগরিক হলেও দেশটি ট্রাম্পের নিষেধাজ্ঞার তালিকায় নেই। তবে যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ জানিয়েছে, ওই ব্যক্তি পর্যটক ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছিলেন।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে পুনরায় দায়িত্ব নিয়েই ট্রাম্প এ নিষেধাজ্ঞা পুনরায় আরোপের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। আগের এক সুপ্রিম কোর্টের রায়ের সমর্থন থাকায় এবার তার আইনি ভিত্তি আরও শক্তিশালী বলে মনে করা হচ্ছে।
এ বছর ২০ জানুয়ারি এক নির্বাহী আদেশের তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি ও জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালককে একটি প্রতিবেদন তৈরি করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ‘বৈরী মনোভাব’ ও নির্দিষ্ট কিছু দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে আসা দেশটির জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি কিনা তা নথিভুক্ত করতে বলা হয়।
আরও পড়ুন: পুতিন ‘পুরোপুরি পাগল’ হয়ে গেছে: ডোনাল্ড ট্রাম্প
এর আগে, প্রথম মেয়াদে ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে এক নির্বাহী আদেশে ৭ টি দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন ট্রাম্প। ইরাক, সিরিয়া, ইরান, সুদান, লিবিয়া, সোমালিয়া ও ইয়েমেন- এই ৭টি দেশ ছিল সে তালিকায়। এগুলো মূলত প্রধানত মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ।
এই আদেশটি ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদের শুরুর দিককার সবচেয়ে বিশৃঙ্খল ও বিভ্রান্তিকর মুহূর্তগুলোর একটি ছিল।
নিষেধাজ্ঞায় থাকা দেশের যাত্রীদের কেউ কেউ বিমানেই উঠতে পারেননি, আবার কেউ যুক্তরাষ্ট্রে নেমে বিমানবন্দরেই আটক হন। তাদের মধ্যে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, পর্যটক এবং বন্ধু ও পরিবারের সদস্যদের দেখতে আসা মানুষরাও ছিলেন।
এই আদেশটিকে সাধারণত ‘মুসলিম নিষেধাজ্ঞা’ বা ‘ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা’ নামে ডাকা হতো, যা পরে আইনি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে পুনর্গঠিত হয় এবং শেষ পর্যন্ত ২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের অনুমোদন পায়।যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণে ১৯ দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিলেন ট্রাম্প
১৮৩ দিন আগে