ইসরায়েল-ইরান সংঘাত
ইসরায়েল-ইরান প্রায় একই সঙ্গে এসে বলেছিল, শান্তি: দাবি ট্রাম্পের
শান্তি আলোচনা নিয়ে ইরান ও ইসরায়েল উভয়েই প্রায় একই সময়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বলে দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
স্থানীয় সময় সোমবার (২৩ জুন) রাতে নিজস্ব সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে এই দাবি করেন ট্রাম্প।
ট্রাম্প পোস্টে লেখেন, ‘ইসরায়েল ও ইরান প্রায় একই সঙ্গে আমার কাছে এসেছিল এবং বলেছিল, শান্তি! এই মুহূর্তে, আমি জানতাম এখন সময়।’
যুদ্ধবিরতি ঘোষণার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বিশ্ব ও মধ্যপ্রাচ্যই আসল জয়ী। উভয় জাতিই ভবিষ্যতে অসাধারণ ভালোবাসা, শান্তি এবং সমৃদ্ধি দেখতে পাবে।’
সিএনএন জানিয়েছে, ইরান কাতারে অবস্থিত একটি মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পর, দুই দেশের মধ্যে চলমান সংঘাত বন্ধে একটি শান্তিচুক্তি অর্জনের লক্ষ্যে ট্রাম্প ও তার শীর্ষ কূটনৈতিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের একটি দল পর্দার আড়ালে দ্রুত কাজ শুরু করে।
তবে ইরান বা ইসরায়েল কেউই প্রকাশ্যে যুদ্ধবিরতি মেনে নেয়নি। যদিও ইসরায়েল ইরানে হামলা বন্ধ করলে তারাও হামলা বন্ধ করবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছে তেহরান।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি জানান, ইসরায়েলের সঙ্গে এখন পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি বা সামরিক অভিযান বন্ধের বিষয়ে কোনো চুক্তি হয়নি।
আরও পড়ুৃন: ইরান-ইসরায়েল সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতিতে রাজি: ট্রাম্প
এ ছাড়া, ট্রাম্পের এই পোস্টের ঠিক আগমুহূর্তে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, ইরানের দিক থেকে ইসরায়েলের উদ্দেশ্যে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে এবং তারা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সক্রিয় করেছে।
দক্ষিণ ইসরায়েলের বেয়ার শেভা শহরের একটি আবাসিক ভবনে তেহরানের ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে তিনজন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ইসরায়েলের জরুরি সেবা সংস্থা ম্যাগেন ডেভিড অ্যাডম (এমডিএ)।
অন্যদিকে, মঙ্গলবার ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসনের জবাবে সামরিক প্রতিক্রিয়া জানানো শেষে ‘শত্রুর ওপর যুদ্ধবিরতি চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে’।
১৬৪ দিন আগে
ইসরায়েল-ইরান সংঘাতের মধ্যেই শুরু জি-৭ সম্মেলন
ইসরায়েল-ইরান সংঘাত ও চলমান বৈশ্বিক বাণিজ্য বিরোধের মধ্যেই জি-৭ সম্মেলনে যোগ দিতে কানাডার রকি পর্বতমালায় একত্রিত হয়েছেন গোষ্ঠীটির বিভিন্ন নেতারা।
স্থানীয় সময় রবিবার (১৫ জুন) ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে উত্তেজনার মধ্যেই এই সম্মেলন শুর হয়।
এদিকে, এক মার্কিন কর্মকর্তাই বার্তা সংস্থা এপিকে জানান, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল ইসরায়েল, কিন্তু মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভেটোয় সেই পরিকল্পনা আলোর মুখ দেখেনি। তবে নিঃসন্দেহে এ তথ্যটি ইসরায়েলের হামলার তীব্রতা নির্দেশ করে।
চলমান এই সংঘাত নিয়ে সম্মেলনে তীব্র আলোচনা হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। তাছাড়া সম্মেলনের আগেও তিনি ট্রাম্প ও ইসরায়েলে প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে আলোচনা করেছেন বকলে জানান।
এবারের সম্মেলনের আয়োজক ও কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি জানান, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে মতপার্থক্য থাকায় কোনো সম্মেলন নিয়ে কোনো যৌথ বিবৃতি দেওয়া হবেনা। যদিও এই বিবৃতি জি-৭-এর দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য।
এ ছাড়া,সম্মেলনের আগে গ্রিনল্যান্ড সফর করেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁখো। এ সময় ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ড কিনতে চাওয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখান করেন তিনি। ম্যাঁখো বলেন, ‘গ্রিনল্যান্ড বিক্রির জন্য নয় এবং তা ছিনিয়ে নেওয়ার জন্যও নয়।’
রবিবার সন্ধ্যায় আলবার্টায় পৌঁছান ট্রাম্প। আজ (সোমবার) কার্নির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসার কথা রয়েছে ট্রাম্পের। এরপর শুরু হবে আনুষ্ঠানিক সেশন।
ব্যাপক অংশগ্রহণ, পুরনো উত্তেজনা
ভারত, ইউক্রেন, ব্রাজিল, দক্ষিণ আফ্রিকা, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, মেক্সিকো ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের নেতারাও সম্মেলনে আমন্ত্রিত হয়েছেন। এবার বাণিজ্য ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসী শুল্ক কৌশল আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে, ওয়াশিংটন ছাড়ার আগে ট্রাম্প বলেন, সম্মেলনে নতুন বাণিজ্য চুক্তির ঘোষণা আসতে পারে।
তবে ট্রাম্পের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক কিছু নেতার জন্য কঠিন হয়ে উঠেছে। এর আগে ইউক্রেন ও দক্ষিণ আফ্রিকার নেতাদের ওপর চাপ প্রয়োগের অভিযোগ রয়েছে তার ওপর।
ট্রাম্প সম্পর্কে সাবেক কানাডিয়ান প্রধানমন্ত্রী জ্যাঁ ক্রেতিয়ান নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘যদি ট্রাম্প মনোযোগ আকর্ষণে কোনো দৃশ্য তৈরি করতে চান, করতে দিন। শান্ত থাকুন ও নিজের কাজ চালিয়ে যান।’
গত মাসে যানবাহন, ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর শুল্ক কমাতে প্রাথমিক বাণিজ্য চুক্তি করে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র, তবে তা এখনও বাস্তবায়িত হয়নি।
এদিকে, কানাডা যুক্তরাষ্ট্রের ৫১তম রাজ্য হওয়া উচিত— ট্রাম্পের এমন মন্তব্যের প্রতিক্রিয়া নার জানানোয় কানাডিয়ানদের কাছ থেকে সমালোচিত হয়েছেন স্টারমার।
এর জবাবে স্টারমার বলেন, ‘কানাডা একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ এবং কমনওয়েলথের একজন গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার।’ এ ছাড়া, সম্মেলনের আগে ওটোয়ায় কার্নির সঙ্গে বাণিজ্য ও নিরাপত্তা বিষয়ে আলোচনা করেন স্টারমার।
অন্যদিকে, চলতি বছরের শুরুর দিকে ওভাল অফিসের বিতর্কিত বৈঠকের পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গে ট্রাম্পের আবার বৈঠকের কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, ইরানে ইসরায়েলি হামলার পর বিশ্ববাজার ও ওয়াল স্ট্রিটে পতন হয়েছে ও তেলের দাম বেড়েছে।
জার্মান কর্মকর্তারা জানান, সম্মেলনটি ‘জি-৬ বনাম ট্রাম্প’ হয়ে উঠবে এমন জল্পনা ভিত্তিহীন, কারণ সদস্য দেশগুলোর মধ্যেও মতপার্থক্য বিদ্যমান।
তবে ক্রেতিয়ান বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট কী করবেন, তা তার মেজাজ বা সংবাদ শিরোনামে থাকার ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে—এটাই সবচেয়ে অপ্রত্যাশিত দিক।’
আরও পড়ুন: ইসরায়েলের হামলার মধ্যেই যুদ্ধবিরতির আলোচনা প্রত্যাখান ইরানের
১৭২ দিন আগে