জয়নুল আবদিন ফারুক
নির্বাচন নিয়ে সন্দেহ দূর করতে সরকারের প্রতি বিএনপি নেতার আহ্বান
আসন্ন ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে চলমান অনিশ্চয়তা ও সংশয় দূর করতে অন্তর্বর্তী সরকারকে সক্রিয় ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক।
সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবে বিকশিত ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, নির্বাচন হবে কি হবে না, কারা এমন সন্দেহ তৈরি করছে? সরকার চুপ করে বসে আছে কেন? চারপাশে তাকান, মন্ত্রণালয়গুলোতে কারা বসে আছে তা কি জানেন না? কারা মিছিল করছে, কারা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে, তা কি দেখতে পাচ্ছেন না? আপনাদের জানা উচিত।
সাবেক বিরোধী দলের চিফ হুইপ বলেন, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে ভয় পাওয়ার প্রয়োজন নেই। তিনি গণঅভ্যুত্থান ও শহীদ আবু সায়েদ, মীর মাহফুজুর রহমান মুগ্ধ, ওয়াসিম আকরামের মতো অনেকের আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে এই সরকারের প্রধান হয়েছেন।
ফারুক বলেন, এখনো জাতীয় নির্বাচন হবে কি না তা নিয়ে ভীতি ও সংশয় রয়ে গেছে। এই সংশয় দূর করা সরকারের দায়িত্ব। কলকাতা থেকে শুরু করে প্রশাসনের ভেতরে কিছু গোপন এজেন্ট বসে আছে যারা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করছে।
তিনি অবিলম্বে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ ও গোপন এজেন্টদের তালিকা প্রকাশ করে, তাদের নির্বাচন প্রক্রিয়া থেকে দূরে রাখতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। এটা হলে জনগণের সন্দেহ আর থাকবে না।
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ভারতের মদদে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের ঐতিহাসিক অর্জনকে খাটো করার জন্য ষড়যন্ত্র চলছে। এই আন্দোলন বিএনপি ও দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পূর্ণ সমর্থনে সফল হয়েছিল বলেও যোগ করেন তিনি।জামায়াতকে ইঙ্গিত করে ফারুক বলেন, কিছু দল রাজনৈতিক ভণ্ডামিতে লিপ্ত। নির্বাচনের বিরোধিতা করলেও তারা আবার মসজিদে গিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছে।
তিনি মোহাম্মদপুরের একটি ঘটনার উদাহরণ দেন, যেখানে এক মসজিদের ইমাম দাবি করেন তিনি একটি সংগঠনের প্রতিনিধিত্ব করছেন, তবে অভিযোগ ছিল তার সঙ্গে জামায়াতে ইসলামীর যোগসূত্র রয়েছে।
পড়ুন: দুর্গাপূজায় অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে চালু হচ্ছে অ্যাপ: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
এ সময় উপস্থিত এক তরুণ ইমামের অবস্থানকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেন, মসজিদে নির্বাচনী প্রচারণা চালানো যাবে না। আর একইসঙ্গে নির্বাচন নিয়ে ভীতি ছড়ানোও গ্রহণযোগ্য নয়। এ ধরনের দ্বিচারিতা বন্ধ হওয়া উচিত।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ফারুক সব শিক্ষার্থীদের আগামীকাল (মঙ্গলবার) অনুষ্ঠেয় ভোটে অংশগ্রহণের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘দমন-নিপীড়নের মধ্যেও ছাত্রদল টিকে আছে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শ আঁকড়ে ধরে। জিয়াউর রহমানের আদর্শ, খালেদা জিয়ার আপসহীন নেতৃত্ব আর তারেক রহমানের দিকনির্দেশনায় ছাত্রদল আগামীকালের কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি।’
ফারুক শিক্ষার্থীদের জাতীয়তাবাদী চেতনায় বিশ্বাস রেখে ছাত্রদল প্যানেলকে নির্বাচিত করার আহ্বান জানান। একইসঙ্গে তিনি ডাকসু নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
অতীতের কথা স্মরণ করে ফারুক বলেন, অতীতে আন্দোলন- সংগ্রামের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রনেতা শহীদ উদ্দিন চৌধুরী অ্যানিসহ সুলতান সালাউদ্দিন টুকুকে আহত অবস্থায় দেখতে হয়েছে।তিনি বলেন, ‘হৃদয়ে সাহস নিয়ে আগামীকাল (মঙ্গলবার) জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল শহীদ জিয়াউর রহমানের আদর্শে, খালেদা জিয়ার আপসহীন নেতৃত্বে এবং তারেক রহমানের দিকনির্দেশনায় কঠিন পরীক্ষার মুখোমুখি হতে যাচ্ছে।
তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব স্তরের শিক্ষার্থীদের জাতীয়তাবাদী চেতনায় বিশ্বাস রেখে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল প্যানেলকে বিজয়ী করার আহ্বান জানান।
একই সঙ্গে বিএনপি নেতা সরকারের প্রতি ডাকসু নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠানেরও আহ্বান জানান।
৮৮ দিন আগে
রমজানের আগেই নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার, দাবি বিএনপির ফারুকের
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও সাবেক বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক জানান, প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণা অনুযায়ী সরকারের রমজানের আগেই জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে বলে বিশ্বাস করেন তারা।
শুক্রবার (২৭ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবে শিক্ষা উন্নয়ন প্রচার ক্যাম্পেইনের আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
ফারুক বলেন, ‘ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি আমাদের বিনীত অনুরোধ, আপনি আপনার কথা রাখুন। আমরা আশাবাদী, দেশে রমজানের আগেই নির্বাচন হবে। সরকার সে অনুযায়ীই প্রস্তুতি নিচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘সরকার নির্বাচন দিতে এরই মধ্যে অনেক দেরি করে ফেলেছে। আর বিলম্ব নয়। সাবেক রাষ্ট্রপতি বিচারপতি সাহাবুদ্দিন আহমেদ এরশাদ সরকারের পতনের তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন দিয়েছিলেন। আপনি যদি ১৬ বছরের কলঙ্কজনক অধ্যায়ের অবসান ঘটিয়ে তিন মাস বা ছয় মাসের মধ্যে নির্বাচন দিতেন, আপনার নাম ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকত। তবে এখনও সময় আছে, আমরা আশাবাদী রমজানের আগেই নির্বাচন হবে।’
ফারুক আরও বলেন, এখন আলোচনা হচ্ছে যে একটি দল নাকি ২০০ থেকে ৩০০ আসন পাবে। এটি, জনগণের মধ্যে সন্দেহ তৈরি করছে।
তিনি বলেন, ‘অনেকে সংশয়ের মধ্য আছেন যে, নতুন দল (এনসিপি) শক্তিশালী না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন হবে না। তবে লন্ডন বৈঠকের পর আমি রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আত্মবিশ্বাস পেয়েছি যে, রমজানের আগেই নির্বাচন হবে।’
ফারুক বলেন, ‘ভবিষ্যৎ সরকারের ওপরই নির্বাচন ব্যবস্থা, আইনশৃঙ্খলা ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহ, বিশেষ করে দুর্নীতি দমন কমিশনের উন্নতি নির্ভর করবে।’
আরও পড়ুন: বিএনপির নাম ব্যবহার করে সরকারি অফিসে ‘কুচক্রী মহল’ বিশৃঙ্খলা করছে: রিজভী
তিনি আশা প্রকাশ করেন, পরবর্তী সরকার শেখ হাসিনা সরকারের দমন-পীড়নের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিশ্চিত করবে—যাতে পুনরায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়।
বিচার বিভাগসহ সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
বিএনপি সরকার গঠন করতে পারলে শিক্ষা খাতকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হবে জানিয়ে ফারুক বলেন, ‘যখন নির্বাচিত সরকার আসবে, তখন জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি শিক্ষাখাতের সমস্যাগুলো সমাধান করবে। আমরা যদি শিক্ষার উন্নতি করতে না পারি, দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়।’
তিনি অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করেছেন।
এনপির এই নেতা মন্তব্য করেন, ‘শেখ হাসিনা ও তার বাবা যেভাবে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংস করেছেন—তা ভাষায় প্রকাশের মতো নয়। যারা দেশে গণতন্ত্রের কথা বলেন, তারা কখনো শিক্ষার কথা বলেননি।’
১৬১ দিন আগে