পদ্মা সেতু
পদ্মা সেতু প্রতিবাদের ভাষা, বাঙালির উন্নয়নের প্রতীক: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান বলেছেন, স্বপ্নের পদ্মা সেতু আজ শুধু পদ্মা সেতুই নয়, এই সেতু আজ প্রতিবাদের ভাষা ও বাঙালি জাতির উন্নয়নের প্রতীক।’
ফরিদপুর শহরের টেপাখোলা লেক উন্নয়ন প্রকল্পের (প্রথম সংশোধিত) কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে শনিবার (১৩ জুলাই) দুপুরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী একথা বলেন।
আরও পড়ুন: মোট জনসংখ্যার প্রায় ২০ শতাংশ প্রাণিসম্পদ খাতের উপর সরাসরি নির্ভরশীল: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
তিনি বলেন, ‘নিজস্ব অর্থায়নে এই পদ্মা সেতু দিয়েই শেখ হাসিনা প্রমাণ করে দিয়েছিলেন যে, বিশ্ব মোড়লের ধার এই বাঙালি জাতি কখনো ধারে না, কখনো ধারবেও না।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ফরিদপুরবাসীর স্বপ্ন পূরণের রাস্তা সুগম হবে খুব শিগগিরই। শেখ হাসিনা ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে টেপাখোলা লেক সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। এই লেককে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠবে ফরিদপুরের নতুন উপশহর। এছাড়া ফরিদপুরবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন খুব শিগগিরই পূরণ হতে চলেছে। আমি এখনই তা প্রকাশ করতে চাই না।’
জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেনের সভাপতিত্বে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে ফরিদপুর—২ আসনের সংসদ সদস্য আয়মন আকবর চৌধুরী লাবলু, ফরিদপুর—৩ আসনের সংসদ সদস্য এ কে আজাদ, ফরিদপুর—৪ আসনের সংসদ সদস্য মুজিবুর রহমান নিক্সন চৌধুরী, সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি ঝর্ণা হাসান, এলজিইডির সাবেক প্রধান প্রকৌশলী শহিদুল হাসান, ফরিদপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শহিদুজ্জামান খান, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী বাকাহিদ হোসেন, টেপাখোলা লেক উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক সাজ্জাদ আহমেদ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক, সাধারণ সম্পাদক ইশতিয়াক আরিফ, পৌর মেয়র অমিতাভ বোস উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: ২০৪১ সালে ৮৫ লক্ষ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা বাংলাদেশের: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
দেশীয় পশু দিয়েই কোরবানি হবে: প্রাণিসম্পদমন্ত্রী
৪ মাস আগে
পদ্মা সেতু দেশকে বিশ্বে মর্যাদার আসনে প্রতিষ্ঠিত করেছে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ সম্পন্ন হওয়ায় বিশ্বে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ। এটি দেশের প্রতি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মানসিকতায় পরিবর্তন এনেছে।
তিনি বলেন, ‘এখন নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের সিদ্ধান্তের পর এবং এই সেতু নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ার পর বাংলাদেশের মানুষ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গর্বের সঙ্গে চলতে পারবে। এটাই সবচেয়ে বড় অর্জন।’
আরও পড়ুন: আমরা আমাদের দরজা বন্ধ রাখতে পারি না: ভারতকে ট্রানজিট দেওয়া প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী
শুক্রবার (৫ জুলাই) পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের সমাপনী অনুষ্ঠান উপলক্ষে মুন্সীগঞ্জে নাগরিক সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, আগে যারা মনে করত তাদের ছাড়া বাংলাদেশ চলতে পারবে না, তাদের মানসিকতা পরিবর্তন হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এই পদ্মা সেতু আমাদের গর্ব..... এখন আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের নাম শুনলেই মানুষ সম্মান করে। বাংলাদেশের জনগণকে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করা হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের মাধ্যমে দেশ উন্নত, সমৃদ্ধ ও স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে উঠবে।
তিনি বলেন, ‘পথে যত বাধাই আসুক না কেন, সব বাধা অতিক্রম করে আমরা অপ্রতিরোধ্য গতিতে এগিয়ে যাব। জাতির পিতার আদর্শ বাস্তবায়ন করে আমরা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব।’
আরও পড়ুন: চীনে ৮-১০ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফর ঘোষণা বেইজিংয়ের
বাংলাদেশ-স্পেনের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়ানোর আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর
৪ মাস আগে
পদ্মা সেতুর ঋণ পরিশোধ বাবদ ৩১৫ কোটি টাকার চেক গ্রহণ করলেন প্রধানমন্ত্রী
পদ্মা সেতু নির্মাণে নেওয়া ঋণ পরিশোধের সপ্তম ও অষ্টম কিস্তি বাবদ ৩১৫ কোটি টাকা তুলে দেওয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে।
বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) গণভবনে পদ্মা সেতুর জন্য ঋণের সপ্তম ও অষ্টম কিস্তি হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ৩১৪ কোটি ৬৪ লাখ ৮৬ হাজার ৯৬৩ টাকার চেক হস্তান্তর করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
এসময় আরও ছিলেন- প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, অর্থ সচিব ড. মো. খায়রুজ্জামান মজুমদার এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব এম নাঈমুল ইসলাম খান।
সপ্তম ও অষ্টম কিস্তি নিয়ে সেতু বিভাগ প্রথম আট কিস্তি বাবদ অর্থ বিভাগকে এ পর্যন্ত মোট ১ হাজার ২৬৩ কোটি টাকা পরিশোধ করেছে।
গত ৫ এপ্রিল পদ্মা সেতু থেকে টোল আদায় বাবদ অর্জিত রাজস্ব থেকে প্রথম ও দ্বিতীয় কিস্তি হিসেবে ৩১৬ কোটি ৯০ লাখ ৯৭ হাজার ৫০ টাকা দিয়ে ঋণ পরিশোধ শুরু করে সেতু বিভাগ।
২০২২ সালের ২৫ জুন থেকে ২০২৪ সালের ২৬ জুন পর্যন্ত পদ্মা সেতু থেকে টোল বাবদ ১ হাজার ৬৫৪ কোটি টাকা আদায় হয়েছে।
নিজস্ব অর্থায়নে ৩২ হাজার ৬০৫ কোটি ৫২ লাখ টাকা ব্যয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হয়।
নির্মাণ তহবিলের প্রায় পুরোটাই অর্থ বিভাগ থেকে স্বল্প সুদে ঋণ হিসেবে নিয়েছে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ। ঋণ পরিশোধের সময়সূচি অনুযায়ী ৩৫ বছরে ১৪০ কিস্তিতে (৪ কিস্তি) এ ঋণ পরিশোধ করা হবে।
২০২২ সালের ২৫ জুন পদ্মা নদীর ওপর দেশের সর্ববৃহৎ ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
৪ মাস আগে
উদ্বোধনের পর থেকে পদ্মা সেতুতে টোল আদায় হয়েছে ১৫০০ কোটি টাকা
পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর থেকে সরকারের রাজস্ব বেড়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে। এ সময় পদ্মা সেতু দিয়ে পারাপার হওয়া যানবাহন থেকে ১৫০০ কোটি টাকা টোল আদায় করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে পরিবহন ধর্মঘট চলছে, চরম দুর্ভোগে সাধারণ মানুষ
পদ্মা সেতু সাইট অফিসের অতিরিক্ত পরিচালক আমিরুল ইসলাম চৌধুরী জানান, শনিবার রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত সেতু উদ্বোধনের পর থেকে এ পর্যন্ত ১৫০২ কোটি ৬২ লাখ ১৫ হাজার ৯০০ টাকা টোল আদায় হয়েছে। এ সময় সেতুটি দিয়ে ১ কোটি ১২ লাখ ৯১ হাজার ৯৫টি যানবাহন পারাপার হয়েছে।
২০২৩ সালের ২৫ জুন সেতুটি প্রথম যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়।
ট্রাফিক বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রায় ৫৬ লাখ ১ হাজার ২৩২টি যানবাহন মাওয়া পয়েন্ট দিয়ে এবং ৫৬ লাখ ৮৯ হাজার ৮৬৩টি যানবাহন জাজিরা পয়েন্ট দিয়ে অতিক্রম করে।
চলতি বছরের ৯ এপ্রিল ৪৫ হাজার ২০৪টি যানবাহন থেকে ৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা আয় করে সেতুটি একদিনে সর্বোচ্চ টোল আদায়ের রেকর্ড গড়ে।
২০২৩ সালের ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতুটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন এবং পরদিন সকালে যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হয়, যা দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক সম্প্রসারণে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক হিসেবে চিহ্নিত হয়।
আরও পড়ুন: রোগীর প্রতি চিকিৎসকের অবহেলা সহ্য করা হবে না: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে বৃষ্টির পূর্বাভাস
৬ মাস আগে
সড়ক যোগাযোগে উন্নতির কারণে ঈদযাত্রায় কমেছে নৌপথের যাত্রী
পদ্মা সেতুর কারণে সড়ক যোগাযোগের উন্নতি হওয়ায় নৌপথে যাত্রী সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে। ঢাকার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে এই পরিবর্তন স্পষ্ট চোখে পড়ে। এজন্য ঈদ উপলক্ষে অতিরিক্ত লঞ্চ চালু করা হবে কি না- তা নিয়ে অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন লঞ্চ মালিকরা।
নৌপথের যাত্রার চ্যালেঞ্জগুলো পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। ভ্রমণের সময় দীর্ঘ হওয়ায় লঞ্চ মালিকদের পরিচালন ব্যয়ও বেশি হয়। এর ফলে ভ্রমণকারীরা নৌপথে যাত্রা বাতিল করে বিকল্প পথে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপথ যাত্রী পরিবহন সমিতির (বিআইডব্লিউপিসিএ) সিনিয়র সহসভাপতি বদিউজ্জামান বাদল বলেন, ‘পদ্মা সেতুর কারণে সড়ক যোগাযোগের উন্নতি হওয়ায় নৌপথে যাত্রী পরিবহন ব্যবস্থায় সরাসরি প্রভাব পড়েছে।’
আরও পড়ুন: বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে ঈদের প্রথম জামাত সকাল ৭টায়
উপরন্তু সদরঘাট টার্মিনালের দিকে যাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ রাস্তায় তীব্র যানজটের কারণেও যাত্রীরা নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। এর কারণেও নৌপথে যাত্রী সংখ্যা কমে যাচ্ছে। বর্তমানে প্রতিদিন মাত্র ৫০-৫৫টি লঞ্চ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এগুলোতে আগের সময়ের চেয়ে যাত্রীর সংখ্যা অর্ধেকেরও কম।
বাদল জোর দিয়ে বলেন, যাত্রী না বাড়লে লঞ্চের সংখ্যা অপরিবর্তিত থাকবে। তবে ঈদের ছুটির ভিড় দেখা গেলে পরিষেবা বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে বলে ইঙ্গিত দেন তিনি।
অতীতে ঈদের মৌসুমে ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত যা্ত্রী নিয়ে লঞ্চ চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে এ বছর দৃশ্যপট আমূল বদলে গেছে, যাত্রী সংখ্যা প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। মন্দা সত্ত্বেও, যাত্রীদের সামর্থ্যের কথা মাথায় রেখে, ভাড়া বাড়ানো থেকে বিরত রয়েছেন লঞ্চ মালিকরা।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের নৌপথের ওপর নির্ভরশীলতার কথা তুলে ধরে নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ শহীদ মিয়া বলেন, বরিশাল ও চাঁদপুর থেকে যাত্রী কমে গেছে।
শিপিং অ্যান্ড কমিউনিকেশন রিপোর্টার্স ফোরামের (এসসিআরএফ) সভাপতি আশীষ কুমার দে উল্লেখ করেছেন, সাশ্রয়ী হওয়ার কারণে লঞ্চ ভ্রমণ অনেকেরই পছন্দের। তবে বিভিন্ন কারণে গত আঠারো মাসে এর পৃষ্ঠপোষকতা ৩৫ থেকে ৪৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে।
আশীষ দে বলেন, প্রতিকূলতা সত্ত্বেও এবারের ঈদে আনুমানিক ২৫ লাখ মানুষ লঞ্চে ঢাকা ছাড়বেন বলে আশা করা হচ্ছে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) যুগ্ম পরিচালক আলমগীর কবির জানান, সদরঘাটে ঈদের যাত্রা শুরু হয়েছে। ঈদের ছুটি যত ঘনিয়ে আসছে যাত্রী সংখ্যা ততই বাড়তে পারে বলে আশাবাদী তিনি।
আরও পড়ুন: ঈদে পর্যটন খাতে মন্দা কাটিয়ে উঠার আশা কক্সবাজারের ব্যবসায়ীদের
৭ মাস আগে
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ: ভাঙ্গা-রুপদিয়া রেলপথে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল শুরু
ফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে যশোরের রূপদিয়া পর্যন্ত পরীক্ষামূলকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। শনিবার সকাল ৮টা ৪১ মিনিটের দিকে ভাঙ্গার রেলওয়ে স্টেশন থেকে ট্রেনটি যশোরের রূপদিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।
মো. সাখাওয়াত হোসেন এ ট্রায়াল ট্রেনে চালকের দায়িত্ব পালন করছেন এবং ট্রেনটি ১২০ কিলোমিটার সর্বোচ্চ গতিতে চলানো হবে।
ভাঙ্গার রেলস্টেশন মাস্টার মো. জিল্লুর রহমান বলেন, শনিবার সকাল ৮ টা ৪১ মিনিটে উচ্চগতি সম্পন্ন এই পরীক্ষামূলক ট্রেনটি যশোরের রুপদিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। ট্রেনটি ১২০ কিলোমিটার গতিতে যশোর পৌঁছাতে সময় লাগবে মাত্র এক ঘণ্টা।
আরও পড়ুন: এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে থেকে রেললাইনে পড়ল ক্রেন, ব্যাহত ট্রেন চলাচল
তিনি আরও বলেন, রবিবার আবারও (৩১ মার্চ) সকালে রুপদিয়া রেল স্টেশনের উদ্দেশে ছেড়ে যাবে ট্রেনটি। আবার যশোর থেকে ভাঙ্গার উদ্দেশে ছেড়ে আসবে। এভাবে ট্রেনটি কয়েকবার ফরিদপুরের ভাংগা থেকে যশোরের রুপদিয়া স্টেশন পর্যন্ত চলাচল করবে।
এদিকে আগে ঢাকা-যশোর রেলপথের ভাঙ্গা পর্যন্ত ইতোমধ্যে ট্রেন চলাচল করছে। ভাঙ্গা থেকে নড়াইল হয়ে যশোর অংশের রেলপথ নির্মাণের কাজও প্রায় শেষের দিকে।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা-যশোর রেলপথের ভাঙ্গা পর্যন্ত ইতোমধ্যে ট্রেন চলাচল করছে। প্রকল্পের শেষ অংশ ভাঙ্গা থেকে যশোর। এই অংশের দৈর্ঘ্য ৮৭ দশমিক ৩২ কিলোমিটার। মাঠ পর্যায়ে প্রকল্পটির কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালে।
এর আগে ২০১৬ সালের ৩ মে ‘পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প’ নামে এটি একনেকে অনুমোদন পেয়েছিল।
২০২৩ সালের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা 'পদ্মা সেতু রেল সংযোগ নির্মাণ প্রকল্পের' আওতায় ঢাকার সঙ্গে যশোরের রেল সংযোগের নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন।
তিনটি পর্যায়ে (ঢাকা ও গেন্ডারিয়ার মধ্যে তিন কিলোমিটার সংযোগ স্থাপন) ৩৭ কিলোমিটার গেন্ডারিয়া-মাওয়া সেকশন, ৪২ কিলোমিটার মাওয়া-ভাঙ্গা অংশ এবং ৮৭ কিলোমিটার ভাঙ্গা জংশন-যশোর অংশের রেললাইন নির্মাণ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ৩ ঘণ্টা পর ঢাকার সঙ্গে উত্তর-দক্ষিণের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক
প্রায় ৪৩ দশমিক ২ কিলোমিটার লুপ, সাইডিং এবং ওয়াই-সংযোগগুলো মোট লাইনের দৈর্ঘ্য ২১৫ দশমিক ২ কিলোমিটারে নিয়ে আসে।
ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ২০টি স্টেশন থাকবে, যার মধ্যে ১৪টি নতুন এবং ৬টি ইতোমধ্যে রয়েছে। আগের স্টেশনগুলোও আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। নির্মাণ কাজ শেষ হলে ট্রেনগুলো ১২০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারবে।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, রাজধানী ঢাকা থেকে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যশোরের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের জন্য নির্মিতব্য ১৭২ কিলোমিটার রেলপথ পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পটি ২০২৪ সালের জুনে শেষ হওয়ার পথে রয়েছে।
পরীক্ষামূলক ট্রেন যাত্রায় সবকিছু পর্যবেক্ষণ করছেন সেনাবাহিনী ও রেল প্রকল্পে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। নতুন রেললাইন চালু হওয়ার সংবাদে রেল লাইনের আশে-পাশের মানুষের মধ্যে চলছে উৎসবের আমেজ।
আরও পড়ুন: বিজয় এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত: ১৪ ঘণ্টা পর ডাউন লাইনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক
৭ মাস আগে
পদ্মা সেতু দিয়ে বাণিজ্যিক ট্রেন চলাচল শুরু
খুলনা থেকে প্রথমবার যাত্রী নিয়ে পদ্মা সেতু হয়ে ঢাকায় গেল সুন্দরবন এক্সপ্রেস। এটি ছিল সেতুতে প্রথম বাণিজ্যিক ট্রেন চলাচল।
বুধবার (১ নভেম্বর) রাত ৯ টা ৪৫ মিনিটে খুলনা রেল স্টেশনের এক নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে ট্রেনটি ছেড়ে যায়। ঢাকায় পৌঁছায় ভোর ৫টা ১০ মিনিটে।
নতুন এই রুটে ট্রেন চলাচলে অন্তত ২ ঘণ্টা সময় কমবে।
খুলনা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে প্রথম যাত্রায় অংশ নিতে পেরে উচ্ছ্বসিত যাত্রীরা।
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্টের সহকারী অধ্যাপক হারুন অর রশিদ বলেন, সুন্দরবন ট্রেনে করে ঢাকায় অনেকবার গিয়েছি। আগে সময় অনেক বেশি লাগতো। পদ্মা সেতু হওয়াতে ঢাকায় যেতে আমাদের কম সময় লাগবে। এখন ট্রেনযাত্রা আমাদের জন্য অনেক সহজ হয়ে গেছে। আজকে প্রথম যাত্রায় যাত্রী হতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত।
খুলনা টিঅ্যান্ডটি জামে মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা দেলোয়ার হোসেন বলেন, পদ্মা সেতু হয়ে ট্রেনে করে ঢাকায় যাব কখনো কল্পনাও করিনি। অনেক ভালো লাগছে। নিজের দেশের টাকা দিয়ে পদ্মা সেতু তৈরি করা হয়েছে। সেতুর উপর দিয়ে পরিবহন এবং নিচ দিয়ে ট্রেন যাচ্ছে। আর এত সুন্দর কোচ কখনো দেখিনি। এজন্য প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই।
খুলনার নাগরিক নেতা আইনজীবী বাবুল হাওলাদার বলেন, পদ্মা সেতু হয়ে খুলনা টু ঢাকা ট্রেন যোগাযোগের যে মেলবন্ধন শুরু হলো সেটি নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য সুখের খবর। তবে খুলনার মানুষ হিসেবে আমাদের দাবি- এই রুটটা যেন আরও শর্ট করা, ট্রেনের বগির সংখ্যা বাড়ানো ও ভাড়া কমানোর বিষয়ে কর্তৃপক্ষ যেন সিদ্ধান্ত নেয় সেই প্রত্যাশা করছি।
খুলনা রেল স্টেশনের মাস্টার মাসুদ রানা বলেন, খুলনা থেকে ঢাকাগামী আন্ত:নগর সুন্দরবন এক্সপ্রেস রুট পরিবর্তন করে পোড়াদাহ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, ভাঙা হয়ে পদ্মাসেতু দিয়ে ঢাকা যাচ্ছে। নতুন এই রুট পরিবর্তনের ফলে পূর্বের তুলনায় যাত্রী সংখ্যা বাড়বে। একইসঙ্গে সময় কমবে অন্তত ২ ঘণ্টা। বুধবার ২২৫ জন যাত্রী নিয়ে খুলনা ছেড়েছে ট্রেনটি।
তিনি জানান, খুলনা থেকে রাত ৯টা ৪৫ মিনিটে সুন্দরবন ট্রেনটি ছেড়ে যাবে। আর ঢাকায় পৌঁছাবে ভোর ৫টা ১০ মিনিটে। অপরদিকে ঢাকা থেকে সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে ছেড়ে ৩টা ৫০ মিনিটে খুলনায় এসে পৌঁছাবে। নতুন এই রুটে ট্রেন চলাচলের খবরে যাত্রীদের আগ্রহ বেড়েছে।
তার দেওয়া তথ্যমতে, সুন্দরবন ট্রেনটি ১৩টি কোচ নিয়ে যাতায়াত করবে। রাতে খুলনা থেকে ঢাকাগামী সুন্দরবন ট্রেনের মোট আসন সংখ্যা ৮৬০টি। এর মধ্যে শোভন চেয়ার ৪৯২টি, এসি বার্থ ৪৮টি ও স্নিগ্ধা ৩২০টি। আর ঢাকা থেকে খুলনার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসা ট্রেনের আসন সংখ্যা ৯০৮টি। এরমধ্যে শোভন চেয়ার ৪৯২টি, এসি সিট ৯৬টি ও স্নিগ্ধা ৩২০টি।
এদিকে খুলনা থেকে ঢাকা পর্যন্ত সুন্দরবন আন্ত:নগর ট্রেনের ভাড়া (ভ্যাট ছাড়া) ধরা হয়েছে- শোভন চেয়ার শ্রেণীর ভাড়া ৫০০ টাকা, প্রথম সিট শ্রেণীর ভাড়া ৬৬৫ টাকা, প্রথম বার্থ শ্রেণীর ভাড়া ৯৯৫ টাকা, স্নিগ্ধা শ্রেণীর ৮৩০ টাকা, এসি সিট শ্রেণীর ভাড়া ৯৯৫ টাকা ও এসি বার্থ শ্রেণির ভাড়া ১ হাজার ৪৯৫ টাকা।
১ বছর আগে
পদ্মা সেতু রেল সংযোগ চীনের বিআরআই’র আওতায় একটি যুগান্তকারী প্রকল্প: রাষ্ট্রদূত ইয়াও
বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের আওতায় একটি যুগান্তকারী প্রকল্প এবং চীনের অগ্রাধিকারমূলক ঋণ ব্যবহার করে বাংলাদেশের বৃহত্তম অবকাঠামো প্রকল্প।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো প্রকল্প হিসেবে এটি ৮ কোটি মানুষকে সরাসরি উপকৃত করবে এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ১ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি করবে।
আরও পড়ুন: ওয়ার্ক ভিসার জন্য বায়োমেট্রিক্স বাধ্যতামূলক করল সৌদি দূতাবাস, বুধবার চট্টগ্রামে সেন্টার চালু
মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের ঢাকা-ভাঙ্গা অংশের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেন রাষ্ট্রদূত।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, রেলমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজন এবং সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ।
রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, গত ২৩ আগস্ট চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দক্ষিণ আফ্রিকায় বৈঠক করেন এবং চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ককে শক্তিশালী করে তুলতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
আরও পড়ুন: ঢাকা আসছেন মার্কিন ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি আফরিন আখতার
তিনি বলেন, দুই নেতা পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি সমর্থন এবং একে অপরের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার উপর ভিত্তি করে ঐতিহ্যবাহী বন্ধুত্ব এবং চমৎকার সম্পর্কের প্রশংসা করেন।
রাষ্ট্রদূত বলেন, 'চীন উভয় পক্ষের সম্মত মেগা প্রকল্পগুলোতে অর্থায়ন অব্যাহত রাখতে প্রস্তুত রয়েছে এবং বাংলাদেশকে তার 'ভিশন ২০৪১' কৌশল এবং 'সোনার বাংলা' স্বপ্ন বাস্তবায়নে সহায়তা করার জন্য আরও চীনা উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগ, আরও শিল্প অঞ্চল গড়ে তুলতে উৎসাহিত করছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন দেখতে চায় সুইডেন : সুইডিশ পররাষ্ট্র সচিব
১ বছর আগে
পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকা-ভাঙ্গা রেল সংযোগের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে আরেকটি মাইলফলক স্থাপনে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে ঢাকা-ভাঙ্গা রেললাইনের উদ্বোধন করেছেন।
'পদ্মা সেতু রেল সংযোগ নির্মাণ প্রকল্পের' আওতায় ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা পর্যন্ত ৮২ কিলোমিটার রেলপথ উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর মানুষের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।
রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজনের সভাপতিত্বে জমকালো অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা।
সেনাপ্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য (মুন্সীগঞ্জ-২) সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন রেলওয়ে সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবির।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু হয়ে মাওয়া-ভাঙ্গা রেলপথে চলল পরীক্ষামূলক পণ্যবাহী ট্রেন
গত বছরের ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী রেললাইন নির্মাণের কাজ উদ্বোধন করেন।
রেললাইনটি তিন ধাপে নির্মিত হচ্ছে (পাশাপাশি ঢাকা ও গেন্ডারিয়ার মধ্যে ৩ কিলোমিটার সংযোগ নির্মাণ করা হচ্ছে): ৩৭ কিলোমিটার গেন্ডারিয়া-মাওয়া সেকশন, ৪২ কিলোমিটার মাওয়া-ভাঙ্গা সেকশন এবং ৮৭ কিলোমিটার ভাঙ্গা জংশন-যশোর সেকশন। প্রায় ৪৩ দশমিক ২ কিলোমিটার লুপ, সাইডিং ও ওয়াই-সংযোগসহ মোট পথের দৈর্ঘ্য ২১৫ দশমিক ২ কিলোমিটার।
ঢাকা-যশোর রেলপথের পুরো প্রকল্পটি ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ২০টি স্টেশন থাকবে, যার মধ্যে ১৪টি নতুন ও ৬টি ইতোমধ্যে রয়েছে। পূর্ববর্তী স্টেশনগুলোরও আধুনিকীকরণ করা হচ্ছে। কাজ শেষ হলে ১২০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালানো যাবে।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু বাংলাদেশের জীবন-জীবিকার উন্নয়ন ঘটিয়েছে
ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত প্রতিটি লেভেল ক্রসিংয়ে আন্ডারপাস নির্মাণ করা হচ্ছে বলে ঢাকা-যশোর রেললাইনের কোথাও কোনো রেলক্রসিং থাকবে না।
ঢাকা থেকে ভাঙ্গার দূরত্ব প্রায় ৮২ কিলোমিটার। ঢাকার গেন্ডারিয়া থেকে কেরাণীগঞ্জ হয়ে পদ্মা সেতুতে যুক্ত হয়েছে নতুন রেললাইন।
ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ রেলপথ দিয়ে কমলাপুর থেকে গেন্ডারিয়া হয়ে ভাঙ্গা পর্যন্ত ট্রেন চলাচল করতে পারবে।
প্রকল্পের আওতায় ইতোমধ্যে ১০০টি আধুনিক যাত্রীবাহী কোচ কেনা হয়েছে। এগুলোর সঙ্গে রেক সাজিয়ে নতুন ট্রেন চালু করা হবে।
২০১৬ সালের ৩ মে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। সে সময় এর নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছিল প্রায় ৩৪ হাজার ৯৮৯ কোটি টাকা। ২০১৮ সালের ২২ মে প্রকল্প প্রস্তাব সংশোধন করা হলে ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৩৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা। এতে ব্যয় আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জিটুজি (সরকার থেকে সরকার) ভিত্তিতে চীনের অর্থায়নে পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প নির্মাণ করা হচ্ছে। চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং গ্রুপ (সিআরইসি) এই প্রকল্পের কাজ করছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে চীনের এক্সিম ব্যাংক ২৬৬ কোটি ৭৯ লাখ ডলার ঋণ দিচ্ছে। বাকি খরচ বাংলাদেশ সরকার বহন করছে।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু দিয়ে ট্রেনে পাড়ি দিতে উদগ্রীব দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলবাসী
১ বছর আগে
পদ্মা সেতু দিয়ে ট্রেনে পাড়ি দিতে উদগ্রীব দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলবাসী
দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলসহ ফরিদপুরের মানুষের বহুল আকাঙ্ক্ষিত ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে ভাঙ্গা পযন্ত রেল চলাচলের শুভ উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নতুন রেল সংযোগকে নিয়ে ফরিদপুরবাসীর মধ্যে আনন্দের বন্যা বইছে। এ অঞ্চলের মানুষ ট্রেনে চড়ে পদ্মা সেতু পাড়ি দিতে উদগ্রীব হয়ে আছেন।
ঢাকা ভাঙ্গা পদ্মা সেতু রেল প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল সাঈদ আহমেদ জানিয়েছেন , ইতোমধ্যে আমরা এই রেল সড়কে যাত্রীবাহী ট্রেন ও পণ্যবাহী ট্রেনের গতি পরীক্ষা সফলভাবে সম্পন্ন করেছি।
তিনি আরও বলেন, পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার নতুন রেলপথ নির্মাণের জন্য সরকার পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্প ২০১৬ সালে অনুমোদন করে। প্রকল্পের আওতায় ১৭২ কিলোমিটার পথ নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ইতোমধ্যেই ঢাকা থেকে স্বপ্নের পদ্মা সেতু হয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ৮২ কিলোমিটার রেলপথ এখন ট্রেন চলাচলের জন্য প্রস্তুত। রেলপথের এই অংশটি উদ্বোধনের দ্বার প্রান্তে রয়েছে। এরপর এই পথে দ্রুততম সময়ের মধ্যে জনসাধারণের চলাচলের জন্য বাণিজ্যিক ট্রেন চালানো হবে।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু দিয়ে ঢাকা-ভাঙ্গা রেলপথে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলবে বৃহস্পতিবার
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে ফরিদপুর গোপালগঞ্জ ও মাদারীপুর নড়াইলসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হবে। এই রেল সড়ক দিয়ে সাশ্রয়ী মূল্যে ঢাকার সঙ্গে নিরাপদ যোগাযোগ সম্ভব হবে। এতে গণপরিবহনের একচেটিয়া প্রভাব ও যাতায়াতে বেশি ভাড়া থেকে বাঁচবে এ অঞ্চলের মানুষ।
মুক্তিযোদ্ধা আবুল ফয়েজ শাহ নেওয়াজ এ প্রসঙ্গে বলেন, দেশ স্বাধীন যেমন স্বপ্নের ছিলো, ঠিক তেমনি পদ্মা নদীর উপর দিয়ে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের জন্য ট্রেন চলাচল করবে এটাও একটা স্বপ্নের মতো ছিলো। সরকারের ঐকান্তিক চেষ্টায় আজ সেই স্বপ্ন বাস্তবে রুপ নিচ্ছে। ভাবতেই অবাক লাগছে।
ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলা চেয়ারম্যান এম এম মোশাররফ হোসেন মুশা মিয়া বলেন, ঈদসহ প্রতিটা উৎসবে ঢাকা থেকে পদ্মা পাড়ি দিয়ে আসতে মানুষের প্রচুর কষ্ট হতো। এসময় যাত্রীদের কাছ থেকে গণপরিবহনগুলো তাদের ই্চছামতো ভাড়া আদায় করতো। ট্রেন চালু হওয়ায় যে আমরা খুশি তার অন্যতম কারণ হচ্ছে এই ট্রেনে অন্য সময় তো বটেই বিশেষ করে ঈদের ছুটিতে সাশ্রয়ী মূল্যে বাড়িতে ফিরতে পারবে এ অঞ্চলের মানুষ। তিনি দাবি করে বলেন, রেল এই অঞ্চলের মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটাবে।
ফরিদপুরের ভাঙ্গা মহিলা কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক দিলীপ রায় বলেন, কয়েক দিন ধরে রেললাইন পরিষ্কার করছে ও দফায় দফায় ট্রায়াল ট্রেন চলছে। ট্রেনের শব্দে যেন আর তর সইছে না আমাদের। যে পদ্মা নদীতে আগে ফেরি-লঞ্চে পার হতাম সেই পদ্মা সেতুতে এখন ট্রেন চলবে ভাবতেই স্বপ্ন মনে হয়।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু হয়ে মাওয়া-ভাঙ্গা রেলপথে চলল পরীক্ষামূলক পণ্যবাহী ট্রেন
ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলা চেয়ারম্যান এ কে এম জাহিদ হাসান বলেন, এ উপজেলার অনেকেই ব্যবসার কাজে ঢাকায় যায়। এখান থেকে ভেঙে ভেঙে গেলে ৫০০ থেকে সাড়ে ৫শ’ টাকার বেশি খরচ হতো। ট্রেন চালু হলে নিশ্চয়ই এতো খরচ হবে না। পাশাপাশি মালামালও ট্রেনে করে নিয়ে আসতে পারবে।
ফরিদপুর চেম্বারের প্রেসিডেন্ট মো. নজরুল ইসলাম ট্রেন যোগাযোগের নতুন মাত্রা প্রসঙ্গে বলেন, ফরিদপুরের পাট কলগুলো নয় শুধু, পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্যটি স্বল্প সময়ে অল্প খরচে রাজধানীতে নিতে পারবে। এটা বিরাট ব্যাপার। সরকারের আন্তরিকতা ছাড়া কোনোভাবেই সম্ভব ছিলো না।
এ প্রসেঙ্গ ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সধারণ সম্পাদক শাহ মো. ইশতিয়াক আরিফ বলেন, দীঘদিনের অবহেলিত এ অঞ্চলের মানুষের অর্থনৈতিক মুক্তির দ্বার উন্মোচন হবে রেল সংযোগের মধ্যে দিয়ে। তিনি বলেন, মানুষের জীবমানের যেমন পরিবর্তন হবে, তেমনি এখানকার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মাঝে উদ্দীপনার সৃষ্টি করবে। এতে আগামী জাতীয় নির্বাচনে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সবকয়টি সংসদীয় আসন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে উপহার দিতে পারবে বলে আমি মনে করি।
উল্লেখ্য, আগামী ১০ অক্টোবর ঢাকা-ভাঙ্গা রেলপথ উদ্বোধন করতে ট্রেনে চড়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গায় আসবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে ভাঙ্গা উপজেলা সদরের কাজী আবু ইউসুফ স্টেডিয়াম মাঠে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক জনসভায় দুপুর ২টার দিকে বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে।
আরও পড়ুন: পদ্মা সেতু বাংলাদেশের জীবন-জীবিকার উন্নয়ন ঘটিয়েছে
১ বছর আগে