লাম্পি রোগে গরু
ফুলবাড়ীতে মরা গরু জবাই, কসাইকে পুলিশে দিল স্থানীয়রা
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে লাম্পি রোগে আক্রান্ত মরা গরু অজ্ঞাত স্থানে জবাই করে পঁচা মাংস বস্তায় ভরে দোকানে নিয়ে আসার সময় এক কসাইকে হাতেনাতে আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে স্থানীয় জনতা।
শুক্রবার(১১ জুলাই) রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের নয়াবাজার এলাকায় এঘটনা ঘটে। জনতার হাতে আটক কসাইয়ের নাম শাহানুর রহমান (৪২)। তিনি শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের ভুরিয়ারকুটি গ্রামের জোবেদ আলীর ছেলে।
এদিকে শনিবার (১২ জুলাই) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেহেনুমা তারান্নুম, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আরিফুর রহমান কনক, উপজেলা ভেটেরেনারী সার্জন ডা. মওদুদ হাসান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার উপস্থিতিতে ওই কসাইয়ের দোকান থেকে পঁচা ও দুর্গন্ধ যুক্ত মাংসগুলো উদ্ধার করে মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়েছে।
ওই এলাকার মানিক, মর্তুজা, দেলোয়ার হোসেন, মহব্বত আলী জানান, কসাই শাহানুর অনেকদিন থেকে রোগাক্রান্ত, মরা, বাশিপঁচা মাংস বিক্রি করে আসছে। কিন্তু তাকে কোনোদিনও হাতেনাতে ধরতে পারিনি। গত শুক্রবার রাত ১১টার দিকে শাহানুর কসাইয়ের সহযোগী বাজারের মধ্যদিয়ে অটোরিকশা যোগে বস্তায় ভরে মাংস নিয়ে যাওয়ার সময় আমাদের সন্দেহ হয়। আমরা অটোরিকশাকে থামতে বললে কসাইয়ের সহযোগী দৌড়ে পালিয়ে যায়। আমরা বস্তা খুলে পঁচা দুর্গন্ধযুক্ত মাংস দেখতে পাই। পরে শাহানুর কসাই নিজে এসে এলাকাবাসীর কাছে ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চায় এবং মাংস গুলো পুঁতে রাখার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু উত্তেজিত জনতা তাতে রাজি না হয়ে তাকে আটক করে উপযুক্ত শাস্তির দাবিতে রাত আড়াইটার দিকে ফুলবাড়ী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলে আটক কসাইকে পুলিশের কাছে তুলে দেয় স্থানীয় জনতা।
ফুলবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মনজুরুল ইসলাম জানান, জনতার হাতে আটক কসাই শাহানুর থানায় আটক থাকার কথা স্বীকার করেন। বলেন, আটক ব্যক্তিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এ ব্যাপারে তিনিই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আরিফুর রহমান কনক বলেন, উপজেলায় প্রায় চল্লিশ জন কসাই লাইসেন্স ছাড়াই মাংস বিক্রি করে আসছে। ভবিষ্যতে মাংস বিক্রির জন্য পশু জবাই করতে হলে লাইসেন্স নিতে হবে। লাইসেন্স ছাড়া কেউ যাতে যত্রতত্র পশু জবাই করে মাংস বিক্রি করতে না পারে সেজন্য তদারকি বৃদ্ধি করা হবে।
এ প্রসঙ্গে ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেহেনুমা তারান্নুম জানান, ঘটনাটি গভীররাতে ঘটেছে। ওই সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা সম্ভব ছিল না। ওই মাংস বিক্রেতাকে লাইসেন্স ছাড়া আর মাংস বিক্রি করতে দেওয়া হবে না। আর ভবিষ্যতে কখনও যেন অসুস্থ, রোগাক্রান্ত বা মরা পশুর মাংস বিক্রি না করে সে রকম মুচলেকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে।
১৪৬ দিন আগে