জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস
ডিজিটাল প্রশিক্ষণ দিয়ে জুলাই যোদ্ধাদের আত্মকর্মসংস্থানে সহায়তা করা হবে: ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব
‘জুলাই শহীদ দিবস’ ও ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত এক সেমিনারে আইসিটি বিভাগের পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে যে, আন্দোলনে আহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের আত্মকর্মসংস্থানের লক্ষ্যে ডিজিটাল প্রশিক্ষণ কর্মসূচি হাতে নেওয়া হবে।
মঙ্গলবার(১৬ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আইসিটি টাওয়ারের বিসিসি অডিটোরিয়ামে আয়োজিত ‘ইয়থ পাওয়ার: ল্যাংগুয়েজ মুভমেন্ট ১৯৫২ টু কোটা রিফর্ম মুভমেন্ট ২০২৪’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব এ কথা বলেন।
সেমিনারের শুরুতে জুলাইয়ের শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এর আগে ফয়েজ আহমদ আইসিটি টাওয়ারের নিচতলায় নবনির্মিত ‘জুলাই কর্নার’র উদ্বোধন করেন।
ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, ‘আজ আমাদের জন্য একটি দুঃখের দিন। যে তরুণরা তাদের জীবন দিয়ে আমাদের স্বপ্ন দেখিয়েছেন এবং নতুন দায়িত্ব দিয়েছেন আমরা কতটা শ্রদ্ধাশীল থেকে সেই দায়িত্ব পালন করেছি—আজ তা বুঝে নেওয়ার দিন। আমরা যে কাজগুলো শুরু করেছি অনেক ক্ষেত্রেই গত এক বছরে আমরা সফল হইনি। আগামী দিনে কিভাবে সফল হতে পারি সে পরিকল্পনা আমাদের করতে হবে। প্রতিদিন যখন বাসায় ফিরি আমার মনে হয়, অনেক কাজ বাকি। আমি ছাত্রদের সামনে দাঁড়াতে পারি না, লজ্জা লাগে বলে তিনি আবেগতাড়িত হয়ে যান।’
তিনি আরও বলেন, ‘আইসিটি বিভাগ থেকে এখনো খুব বেশি কিছু করতে পারিনি। এই বিষয়টি আমাকে তাড়িত করে। তবে আগামী মাসগুলোতে আমরা চেষ্টা করব—জুলাইয়ের আহতদের তথ্য-প্রযুক্তিভিত্তিক দক্ষতা দিয়ে একটি সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ গড়ার পথ দেখাতে।
এ সময় তিনি জানান, ‘নাগরিক সেবা’ নামে একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম চালু করা হয়েছে, যার মাধ্যমে সাধারণ মানুষ হয়রানিমুক্ত সেবা পাবে।
তিনি আরও বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠা সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্কগুলোতে এখনো প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়নি। ভবিষ্যতে এসব স্থাপনায় স্কিল ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম চালুর লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার।
সভাপতির বক্তব্যে আইসিটি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, ‘বাঙালি মরতে জানে, কিন্তু হারতে জানে না। জুলাই আন্দোলনে দুই হাজারের বেশি প্রাণ বিসর্জনের পর আমরা জগদ্দল পাথর সরিয়েছি।’
৫ আগস্টের পর থেকে বিভিন্ন ফ্যাসিবাদবিরোধী দলের মধ্যে বিভাজন ঘটাতে ষড়যন্ত্র চলছে। বিগত ১৫ বছরে অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ দিয়ে এ ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের চেষ্টা চলছে। কিন্তু আমরা তা সফল হতে দেব না।
আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মো. মামুনুর রশীদ ভূঁইয়া বলেন, ‘জাতির ক্রান্তিলগ্নে তরুণরাই আলোর পথ দেখায়। জুলাই আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ স্লোগান ছিল যদি তুমি ভয় পাও তবে তুমি শেষ, যদি তুমি রুখে দাড়াও তুমিই বাংলাদেশ। আমরা প্রবীণরা রুখে দাঁড়াতে পারিনি, তরুণরাই রক্ত দিয়ে অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছে।’
জুলাই আন্দোলনের নেতা ও ছাত্র প্রতিনিধি মো. আবু বকর সিদ্দীক বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থা পরিবর্তনের লক্ষ্যে জুলাই আন্দোলন হয়েছে। তিনি বিচার এবং যথাযথ সংস্কারের পর নির্বাচন আয়োজনের জন্য অর্ন্তবর্তী সরকারকে অনুরোধ করেন।’
ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী আহসান ইয়াসির শারার বলেন, ‘আমরা এখনও খুনিদের বিচার দেখছি না। পুলিশরা এখনও কার্যকর (ফাংশনাল) না। প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করলেও তাদের উপর ১০ শতাংশ কর আরোপ করা হয়েছে, তিনি তা প্রত্যাহার চান।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন টেকনোলজির অধ্যাপক ড. এম মেজবাহ উদ্দিন সরকার।
বিসিসির নির্বাহী পরিচালক ড. মো. মেহেদী হাসানসহ আইসিটি ডিভিশনের অধীনস্থ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা এবং আন্দোলনে আহত ছাত্র-ছাত্রীরা সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন।
১৪১ দিন আগে