নাটোরে সড়ক দুর্ঘটনা
নাটোরে সড়ক দুর্ঘটনা: কুষ্টিয়ায় পাশাপাশি দাফন একই পরিবারের চারজনকে
নাটোরের বড়াইগ্রামে ট্রাকের সঙ্গে মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে আটজন নিহত হন। নিহত আটজনের মধ্যে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের ধর্মদহ গ্রামের একই পরিবারের পাঁচজন ও গাড়িচালক। নিহত অপর দুইজন তাদের স্বজন।
বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) দুপুর দুইটার দিকে দৌলতপুরের ধর্মদহ ফরাজীপাড়া গোরস্থানে একই পরিবারের চারজনের একসঙ্গে জানাজা শেষে পাশাপাশি কবরে দাফন করা হয়েছে। জানাজায় গ্রামের হাজারো মুসল্লি অংশ নেন।
দুর্ঘটনায় নিহত জাহিদুল ইসলামের দুই ছেলে সোহান ও সাগর সিঙ্গাপুর থেকে বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) বেলা ১০টার দিকে গ্রামের বাড়িতে এসে পৌঁছানোর পর দুপুর ২টার দিকে একসঙ্গে পরিবারের চারজনের নামাজের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
আরও পড়ুন: নাটোরে সড়ক দুর্ঘটনায় ৮ নিহতের ঘটনায় ট্রাকচালক গ্রেপ্তার
নিহতরা হলেন- কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ধর্মদহ গ্রামের মৃত জিল্লুর রহমানের ছেলে জাহিদুল ইসলাম (৫৫), তার স্ত্রী সেলিনা খাতুন (৫০), তার ভাই শহিদুল ইসলামের স্ত্রী আনোয়ারা খাতুন আন্না (৫৫),তার ভাই মিজানুর রহমানের স্ত্রী আনোয়ারা খাতুন আনু (৫০), নিহত জাহিদুলের বোন প্রাগপুর গ্রামের রফেজ চৌধুরীর স্ত্রী ইতি খাতুন (৪০), একই গ্রামের জয়নাল আবেদীনের ছেলে সাহাব হোসেন (৩৫), মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বেতবাড়ীয়া গ্রামের মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী আঞ্জুমানারা (৭৫) এবং মেয়ে সীমা খাতুন (৩৫)।
নিহতরা মাইক্রোবাসে করে বাড়ি থেকে সিরাজগঞ্জে অসুস্থ রোগীকে দেখতে যাচ্ছিলেন।
নিহত জাহিদুল, তার স্ত্রী সেলিনা খাতুন, ভাইয়ের স্ত্রী আন্না ও আনুর লাশ বুধবার (২৩ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার ধর্মদহ গ্রামে পৌঁছায়। এ সময় এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের তৈরি হয়। পরিবার, স্বজন ও স্থানীয়দের শোক আর কান্নায় এলাকার পরিবেশ ভারী হয়ে ওঠে।
একই গ্রামের বাসিন্দা ও নিহত গাড়িচালক সাহাবের লাশও বুধবার রাতে ধর্মদহ গ্রামে পৌঁছায়। এরপর স্থানীয় গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
এদিকে জাহিদুল ইসলামের বোন ও পার্শ্ববর্তী প্রাগপুর গ্রামের রফেজ চৌধুরীর স্ত্রী ইতি খাতুন (৪০), জাহিদুলের শ্বাশুড়ি ও শ্যালিকা অর্থাৎ মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার বেতবাড়ীয়া গ্রামের মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী আঞ্জুমানারা (৭৫) এবং মেয়ে সীমা খাতুনের(৩৫) লাশ তাদের নিজ নিজ গ্রামে আনা হয় বুধবার রাতে। এরপর বৃহস্পতিবার সকালে স্থানীয় গোরস্থানে তাদের দাফন করা হয়।
নিহত জাহিদুলের চাচাতো ভাই অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য জানারুল ইসলাম বলেন, বুধবার সকাল ৭টার দিকে মাইক্রোবাসে করে সিরাজগঞ্জে রোগী দেখতে যাচ্ছিলেন সবাই। জাহিদুলের ছেলে সোহানের অসুস্থ স্ত্রীকে দেখতে যাচ্ছিলেন তারা। এ সময় ট্রাকের ধাক্কায় আটজন মারা গেছেন। ধর্মদহ গ্রামের পাঁচজন মারা গেছেন। তাদের মধ্যে একজন মাইক্রোবাসের চালক। বাকি চারজন একই পরিবারের সদস্য। এছাড়াও নিহত জাহিদুলের বোন প্রাগপুর গ্রামের ইতি, গাংনীর বসতবাড়িয়া গ্রামের জাহিদুলের শাশুড়ি ও শ্যালিকা মারা গেছেন।
আরও পড়ুন: নাটোরে ট্রাক-মাইক্রোবাস সংঘর্ষে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮
জানা গেছে, বুধবার সকাল ১০টার দিকে বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়কের তরমুজ পাম্প এলাকায় মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলেই পাঁচজনের মৃত্যু হয়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তিনজনকে বড়াইগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে একজনের মৃত্যু হয়। বাকি দুজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে ওই দুজনেরও মৃত্যু হয়।
১৩৪ দিন আগে