কাশিয়ানী থানা
গোপালগঞ্জে সহিংসতা: আরও একটি মামলা, আসামির সংখ্যা ছাড়াল ১০ হাজার
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) গোপালগঞ্জের সমাবেশকে কেন্দ্র করে হামলা-সংঘর্ষের ঘটনায় কাশিয়ানী থানায় নতুন করে আরও একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ নিয়ে জেলায় মোট মামলার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১টিতে।
কাশিয়ানী উপজেলার রামদিয়া পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) নাসির উদ্দীন বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) রাতে কাশিয়ানী থানায় এ মামলা করেন।
মামলায় কাশিয়ানী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী জাহাঙ্গীর আলম এবং কাশিয়ানী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী খোকনসহ ৮৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি, আরও ২০০-২৫০ জন অজ্ঞাত নেতাকর্মীকেও আসামি করা হয়।
মামলাটি সন্ত্রাসবিরোধী আইনে দায়ের করা হয়েছে বলে জানান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১৬ জুলাই এনসিপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে কাশিয়ানী উপজেলার ফুকরা বাসস্ট্যান্ড ও আশপাশ এলাকার রাস্তাঘাট অবরোধ করা হয়। এতে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে যান চলাচল ব্যাহত হয় এবং জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের পক্ষে নেতাকর্মীরা মিছিল করতে থাকেন। আসামিরা অসৎ উদ্দেশ্যে এবং এনসিপির সমাবেশকে নস্যাৎ করতে এ ধরনের অপকর্মে লিপ্ত হয়। এতে সাধারণ জনগণের ভোগান্তিতে পড়তে হয়।
এদিকে থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কাশিয়ানী থানার এই মামলা নিয়ে গোপালগঞ্জে পুলিশের ওপর হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ এবং রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে জড়ানোর অভিযোগ ও হত্যা ঘটনায় মোট ১১টি মামলা করা হয়েছে।
গোপালগঞ্জ জেলার সদর, কাশিয়ানী, টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া থানায় দায়ের হওয়া ওই ১১টি মামলায় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ৬৮৭ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও প্রায় ৯ হাজার ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
১৬ জুলাই থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত জেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে মোট ৩৩৫ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: গোপালগঞ্জে রাজনৈতিক সমাবেশকে ঘিরে সহিংসতার তদন্তে কমিটি গঠন
উল্লেখ্য, ১৬ জুলাই এনসিপির একটি কর্মসূচি শেষে গোপালগঞ্জ থেকে মাদারীপুরে ফেরার পথে দলটির গাড়িবহরে হামলা চালানো হয়। পরে বিক্ষুব্ধ জনতা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। সংঘর্ষে এখন পর্যন্ত পাঁচজন নিহত এবং অন্তত অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনার দিন বিকালে প্রথমে ১৪৪ ধারা জারি করেন জেলা প্রশাসক ও ম্যাজিস্ট্রেট মুহম্মদ কামরুজ্জামান। রাতেই জারি করা হয় কারফিউ। পরে কারফিউর মেয়াদ কয়েক দফা বাড়ানো হলেও রবিবার (২০ জুলাই) রাত ৮টা থেকে কারফিউ শিথিল করা হয়।
১৩২ দিন আগে