পরিবেশ ও কৃষি
চট্টগ্রামে আরও একটি বন্যহাতির মরদেহ উদ্ধার
জেলার বাঁশখালী উপজেলার পাহাড়ি এলাকায় মাটিচাপা অবস্থায় একটি বন্যহাতির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
বাঁশখালী বনবিভাগ ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের যৌথ দল বুধবার দুপুরে উপজেলার সাধনপুর ইউনিয়নের পূর্বাঞ্চলের লটমনী পাহাড় বন্য হাতির মরদেহটি উদ্ধার করে।
এর আগে সকালে স্থানীয়রা পাহাড়ের পাদদেশে মাটিচাপা অবস্থায় বন্যহাতির মরদেহ দেখতে পেয়ে বনবিভাগের কর্মকর্তাদের খবর দেন।
আরও পড়ুন: কক্সবাজারে হাতি হত্যায় অভিযুক্ত মারা গেলেন হাতির আক্রমণে
বনবিভাগের কর্মকর্তারা বাঁশখালী উপজেলা প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ ও সাফারি পার্কের কর্মকর্তার নেতৃত্বে প্রাণিসম্পদ বিভাগের চার জন ডাক্তারের একটি টিম ময়নাতদন্তের জন্য ঘটনাস্থলে যান।
বিষয়টি নিশ্চিত করে জলদী অভয়ারণ্য রেঞ্জ কর্মকর্তা আনিসুজ্জামান শেখ বলেন, ‘স্থানীয়দের দেয়া খবরের ভিত্তিতে আমাদের যৌথ টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। কে বা কারা হাতিটি মাটিচাপা দিয়েছে তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে কী কারণে হাতিটি মারা গেছে।’
আরও পড়ুন: হাতির বিরুদ্ধে থানায় জিডি!
এর আগে গত ১২ নভেম্বর একই উপজেলার চাম্বল ইউনিয়নের জঙ্গল চাম্বল পাহাড়ি এলাকায় একটি ধানখেত থেকে বন্যহাতির লাশ উদ্ধার করা হয়।
৩ বছর আগে
‘ফাতেমা’ জাতের ধানে বিঘায় ৫০ মণ ফলন
নওগাঁর মান্দায় ‘ফাতেমা’ জাতের ধান ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এর প্রতিটি শীষে ৭৫০ থেকে এক হাজার ধান পাওয়া গেছে। দেশে উৎপাদিত প্রচলিত জাতের ধানের চেয়ে এই ধানের ফলন প্রায় তিনগুণ। চলতি মৌসুমে নওগাঁয় দেড় বিঘা জমিতে প্রায় ৭৫ মণ ধানের ফলন হয়েছে।
নওগাঁর মান্দা উপজেলার গনেশপুর ইউনিয়নের দোশতীনা গ্রামের সৌখিন কৃষক আশরাফুল ইসলাম বশিরই প্রত্যন্ত অঞ্চলের এই প্রথম ‘ফাতেমা’ জাতের ধান চাষ শুরু করেন। তিনি পেশায় নওগাঁ জজ কোর্টের আইনজীবী। একই সাথে আধুনিক চাষাবাদে তার ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। গতানুগতিক কৃষির পরিবর্তে নতুন জাতের এ ধান উৎপাদনে তিনি সাফল্য পেয়েছেন।
আরও পড়ুন: আমনে পোকা, দুশ্চিন্তায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষকরা
বর্তমানে ওই ধান দেখতে এবং কিনতে তার বাড়িতে বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা মানুষ জন ভিড় জমাচ্ছে। লাভজনক হওয়ায় তার মতো এলাকার অনেকেই এখন নতুন এ জাতের ধান চাষের জন্য আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
জেলা কৃষি বিভাগ জানায়, এতে অধিক ফলনশীল জাতের ধান দেশের আর কোথাও আছে বলে তাদের জানা নেই। ‘ফাতেমা’ জাতের এই ধান কোন জাতের এবং কোথায় থেকে কীভাবে এলো এসব জানতে গবেষণার কাজ শুরু করেছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন, মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট।
আরও পড়ুন: বেশি লাভে আখ চাষে ঝুঁকেছেন মাগুরার কৃষকরা
দেখতে ব্রি-২৮ ধানের মতো এর জাতের বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করে আশরাফুল ইসলাম বশির জানান, এই ধানের চাষ পদ্ধতি অন্য ধানের মতোই। আউশ, আমন ও বোরো তিন মৌসুমেই এ ধানের চাষ করা যায়। তবে বোরো মৌসুমে এর উৎপাদন সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে। গাছের উচ্চতা প্রায় ৫ ফিট যা অন্য ধানের তুলনায় বেশি। গাছগুলো শক্ত হওয়ায় হেলে পড়ে না। আর এক একটি ধানের শীষে ৭৫০ থেকে এক হাজার করে ধান হয়। সাধারণ ধানের তুলনায় তিন থেকে চার গুণ বেশি। ফলে এর উৎপাদনও অনেক বেশি। চলতি মৌসুমে তিনি দেড় বিঘা জমিতে প্রায় ৭৫ মণ ধান পেয়েছেন। এধানে রোগ ও পোকামাকড়ের হার তুলনামূলক কম। এছাড়া চাল খুব চিকন ও ভাতও খেতে খুব সুস্বাদু।
তিনি জানান, বীজপাতা তৈরি করার পর ১৫০ থেকে ১৫৫ দিনের মধ্যে ধান কাটা যায়। এই ধান ঝড়, খড়া এবং লবণাক্ততা সহনীয়। ওই জাতের প্রতিটি ধানগাছের দৈর্ঘ্য ১১৫ থেকে ১৩০ সেন্টিমিটার, গুছি গড়ে আটটি, প্রতিটি ধানের ছড়ার দৈর্ঘ্য ৩৬ সেন্টিমিটার, গড়ে দানার সংখ্যা এক হাজারের ওপরে।
আরও পড়ুন: ৩০ বছর আগে লাগানো ছাদবাগানে ফুটেছে অপরূপ নাইট কুইন
জানা গেছে, বাগেরহাট জেলার ফকিরহাট উপজেলার বেতাগা ইউনিয়নের চাকুলিয়া গ্রামে লেবুয়াত শেখ (৪০) নিজেদের জমিতে ২০১৬ সালে প্রথম ওই ধান চাষ করেন। ওই বছর বোরো মৌসুমে তার বাড়ির পাশে জমিতে হাইব্রিড আফতাব-৫ জাতের ধান কাটার সময় তিনটি ভিন্ন জাতের ধানের শীষ তিনি দেখতে পান। ওই তিনটি শীষ অন্যগুলোর চেয়ে অনেক বড় এবং শীষে ধানের দানার পরিমাণও অনেক বেশি ছিল। এরপর ওই ধানের শীষ তিনটি বাড়িতে এনে শুকিয়ে বীজ হিসেবে ব্যবহার করে এ ধান চাষ শুরু করেন। তিনি তার মায়ের নামানুসারে নাম না জানা এই ধানের নাম রাখেন ‘ফাতেমা ধান’।
বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা কৃষক লিটন, রঞ্জু, মামুন, আতাব আলী জানান, অনেক ফলন হচ্ছে শুনে তারা কৃষক বশিরের এ ধান দেখতে এসেছেন এবং তার কাছ থেকে বীজ সংগ্রহ করেছেন। আগামীতে তারা এ ধান চাষ করবেন।
আরও পড়ুন: চৌগাছায় ১৮০ হেক্টর জমিতে গ্রীষ্মকালীন শিম চাষ
জেলা কৃষি সশ্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ সামসুল ওয়াদুদ বলেন, ‘ওই ধানের ফলন শুধু দেশ নয়, গোটা বিশ্বকে তাক লাগাতে পারে। এত বেশি ফলন পাওয়া যায়, এমন কোনো জাতের ধান দেশে আছে বলে আমার জানা নেই।’
তিনি বলেন, ‘এই ধান খড়া ও লবণ সহ্যকারী এবং সারাদেশে চাষের উপযোগী। মনে হচ্ছে, সারা দেশে ওই ধান চাষ করা যাবে। এই ধান যদি সারা দেশে চাষ করা যায় তাহলে বার্ষিক উৎপাদন পাঁচ কোটি টন ছাড়িয়ে যাবে।’
৩ বছর আগে
সবজিতে সবুজ দিগন্ত!
সবজি চাষে বিপ্লব ঘটিয়েছে যশোরের মুনিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জের শাহপুর ও হায়াতপুরের কৃষকরা। এই খানে বছরের ১২ মাস সবজি চাষ করা হয়। শাহপুর ও হায়াতপুর গ্রামের অন্তত ৫০০ পরিবার সবজি চাষ করে এখন স্বাবলম্বী।
উপজেলার পশ্চিমে রাজগঞ্জ বাজারের পাশেই শাহপুর ও হায়াতপুর সবজি চাষের মাঠ। মাঠের পর মাঠ নানা ধরনের সবজি ছড়িয়ে আছে। গ্রাম দু’টিতে বিশাল খেত জুড়ে ১২ মাসই বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ হচ্ছে। আর এই খেতে কাজ করছে শত শত নারী-পুরুষ ।
কৃষি বিভাগ জানায়, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে এই মাঠে সবজি চাষিদের সব সময় উৎসাহ এবং সঠিক পরামর্শ দিয়ে থাকে।
আরও পড়ুন: আবাদ মৌসুমে সারের দাম বৃদ্ধি, ফরিদপুরে আমন উৎপাদনে শঙ্কিত চাষিরা
বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সরোজমিনে শাহপুর ও হায়াতপুরে দেখা গেছে, সবজি খেতগুলোতে ফুলকপি, বাঁধাকপি, ওলকপি, ঢেঁড়স, মুলা, লাউ, শিম, বরবটি,ক্ষীরা, মিষ্টিকুমড়া, টমেটো, লালশাক, পালংশাক, কাঁচ কলা, বেগুন, শসা, মেটে আলু, ডাটা,পটল, ঝিংগা, উচ্ছে, কাকরোল, গাজর, চিচিঙ্গা ও ওলসহ বিভিন্ন ধরনের শীতের ও বারোমাসি সবজিতে ভরপুর। বিশাল এই মাঠে উত্তম কৃষি চাষের মাধ্যমে নিরাপদ ও বালাইমুক্ত সবজি উৎপাদন করা হচ্ছে।এখানে সবজি চাষে জৈব সারও ব্যবহার করা হয়।
আরও পড়ুন: বিশ্বনাথে ফসলের পোকা নিধনে পরিবেশবান্ধব ‘আলোক ফাঁদ’
স্থানীয় চাষি রবিউল ইসলাম জানান, এই মাঠের উৎপাদিত সবজি স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে যশোর, খুলনা ও ঢাকার বড় বড় বাজারেও সরবরাহ করা হয়।
শাহপুর গ্রামের চাষি শরিফুল ইসলাম জানান, তিনি এবার ২ বিঘা জমিতে শিম চাষ করেছেন। সেই খেত থেকে বুধবারও (১৫ সেপ্টেম্বর) তিনি তিন মণ শিম তুলে বাজারে বিক্রি করেছেন। দামও ভালো পেয়ে খুব খুশি তিনি।
একই গ্রামেরে সবজি চাষি ফয়সাল আহম্মেদ, রাজু, মেহেদীসহ অনেকেই জানান, কষ্ট করে রোদ-বৃষ্টির মধ্যে মাঠে কাজ করে বিভিন্ন ধরনের সবজি ফলাই। সেই সবজি তারা স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে অন্য জেলা-উপজেলা শহরে সরবরাহ করে। সপ্তাহের সোমবার ও বৃহস্পতিবার রাজগঞ্জ বাজারে বড় হাট বসে। এই দু’দিন শাহপুর ও হায়াতপুরের কৃষকরাই বেশিভাগ সবজি বিক্রির জন্য এই হাটে আনে। রাজগঞ্জ বাজার থেকে পাইকারি দরে সবজি কিনে বিভিন্ন জেলা শহরে নিয়ে যান ব্যাপারিরা।
আরও পড়ুন: রূপসা পাড়ে অফ সিজনাল তরমুজের বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসি
স্থানীয় ইউনিয়ন উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা এসএম মারুফুল হক ও হাসানুজ্জামান জানান, কৃষি বিভাগ থেকে রাজগঞ্জের শাহপুর ও হায়াতপুর মাঠের সবজি চাষিদের সবধরনের সহযোগিতা ও পরামর্শ দেয়া হয়। এছাড়া নতুন জাত ও নতুন ফসল সম্প্রসারণে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে প্রদর্শনী প্লটও স্থাপন করা হয়।
৩ বছর আগে
শিলাবৃষ্টিতে সর্বশান্ত নাটোরের কৃষকরা
প্রায় ২৫ মিনিটে শেষ হয়ে গেছে নাটোরের অসংখ্য কৃষকের স্বপ্ন।
শুক্রবার সন্ধ্যায় শিলাবৃষ্টিতে জেলার বড়াইগ্রাম উপজেলার বহু কৃষকের ফসল নষ্ট হয়ে গেছে।
ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা জানান, রোজার মাসকে সামনে রেখে উপজেলার চলনবিল অঞ্চলের কৃষকরা বাঙ্গি আবাদ করে। লাভের আশায় এ বছরও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে অনেকেই চাষ করেছিলেন বাঙ্গি। কিন্তু শুক্রবার শেষ বিকালের ২৫ মিনিটের শিলা বৃষ্টি শেষ করে দিয়েছে কৃষকের সব স্বপ্ন।
আর পড়ুন: ফরিদপুরে শিলাবৃষ্টিতে পাটসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি
তারা জানান, শিলা বৃষ্টির আঘাতে এখানকার ভবানীপুর, গড়মাটি, আটঘড়িয়া, হারোয়াসহ বিভিন্ন এলাকার বাঙ্গির খেত তছনছ হয়ে গেছে। একই সাথে ব্যাপকভাবে ভুট্টা, আম, কলা, লিচু, তরমুজসহ অন্যান্য ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর ফলে সর্বস্ব হারিয়ে চরম হতাশায় পড়েছেন কৃষকরা।
আরও পড়ুন:লালমনিরহাটে শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি
বড়াইগ্রাম উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন আক্তার জানান, কৃষি বিভাগের কর্মীরা মাঠ পরিদর্শন করে ক্ষতির পরিমাণ নিরুপন ও ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরি করছেন। সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
আরও পড়ুন:নাটোরে শিলাবৃষ্টিতে ২৯০০ হেক্টর জমির ধান নষ্ট, কৃষকের মাথায় হাত
৩ বছর আগে
ধান খেতে পোকা দমনে রাজগঞ্জে ‘পার্চিং’ উৎসব
মণিরামপুর উপজেলার রাজগঞ্জে চলতি ইরি-বোরো মৌসুমে ধান খেতে পোকা দমনে গাছের ডাল পুতে ‘পার্চিং’ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে।
৪ বছর আগে