আইএনসি ৫.২
বৈশ্বিক প্লাস্টিক দূষণ চুক্তির খসড়া প্রত্যাখ্যান, কঠোর পদক্ষেপের আহ্বান বাংলাদেশের
সম্প্রতি প্লাস্টিক দূষণ রোধে প্রস্তাবিত ‘গ্লোবাল প্লাস্টিক দূষণ চুক্তি’র সর্বশেষ খসড়াকে দুর্বল আখ্যা দিয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেছে বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে প্লাস্টিক দূষণ রোধে আরও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।
বুধবার (১৩ আগস্ট) সুইজারল্যান্ডের জেনেভার অনুষ্ঠিত প্লাস্টিক দূষণবিষয়ক আন্তঃসরকারি আলোচনাসভার (আইএনসি ৫.২) দ্বিতীয় পর্বে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে বাংলাদেশ। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ মনে করে, প্রস্তাবিত খসড়াটি জাতিসংঘ পরিবেশ পরিষদের প্রস্তাব ৫/১৪ অনুসারে প্লাস্টিক দূষণ বন্ধে আন্তর্জাতিকভাবে আইনি বাধ্যতামূলক চুক্তি প্রণয়নের যে ম্যান্ডেট রয়েছে, তা পূরণে ব্যর্থ।
পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের মতে, খসড়াটি দুর্বল ও অপর্যাপ্ত। এতে সরবরাহপক্ষীয় পদক্ষেপ বাদ দেওয়া হয়েছে। প্লাস্টিকের পূর্ণ জীবনচক্র, স্বাস্থ্যগত প্রভাব, ক্ষতিকর রাসায়নিক, বর্জ্য ব্যবস্থার অগ্রাধিকার ও আন্তঃসীমান্ত দূষণ রোধে বাধ্যতামূলক ব্যবস্থা এতে অন্তর্ভুক্ত নয়। এমনকি কার্যকর বাস্তবায়নের জন্য নির্ভরযোগ্য উপায়ও এতে নেই, বরং জটিল ও স্বেচ্ছাসেবী পদ্ধতির ওপর খসড়াটি নির্ভর করছে, যা বৈশ্বিক সংকটের গুরুত্ব উপেক্ষা করে।
বাংলাদেশ জোর দিয়ে বলেছে, চুক্তির মূল অংশে প্লাস্টিকের ক্ষতিকর রাসায়নিক, নিঃসরণ ও প্রাথমিক উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে। এই খসড়া মানবস্বাস্থ্য ও পরিবেশ রক্ষায় কার্যত কিছুই করে না; এটি কেবল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাঠামো যা উৎপাদকদের দায়মুক্ত রাখে এবং সবচেয়ে ক্ষতিকর প্লাস্টিক পণ্য বন্ধে কোনো বাধ্যতামূলক পদক্ষেপ দেয় না।
আরও পড়ুন: মূল ভূখণ্ডের ২০ শতাংশে উন্নীত করা হবে বনভূমি: পরিবেশ উপদেষ্টা
অর্থবহ সংশোধন ছাড়া খসড়াটি সমর্থনযোগ্য নয় বলেও স্পষ্ট করেছে বাংলাদেশ এবং জাতিসংঘ পরিবেশ পরিষদের ম্যান্ডেট অনুযায়ী উচ্চাকাঙ্ক্ষা বাড়ানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।
এদিকে, বুধবার আরেক অনুষ্ঠানে প্লাস্টিক দূষণ মোকাবিলায় শক্তিশালী বৈশ্বিক অংশীদারত্ব ও লক্ষ্যভিত্তিক সম্পদের আহ্বান জানান পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
জেনেভায় অনুষ্ঠিত আইএনসি-৫.২-এর এক অনানুষ্ঠানিক মন্ত্রী পর্যায়ের গোলটেবিল বৈঠকে তিনি নিম্নপ্রবাহী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের ঝুঁকির কথা তুলে ধরে আন্তঃসীমান্ত প্লাস্টিক দূষণ মোকাবিলায় বৈশ্বিক কাঠামোর প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেন।
এ সময় সার্কুলার অর্থনীতি মডেল প্রচার, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ফাঁকফোকর বন্ধ, টেকসই পণ্যের নকশা উন্নয়ন এবং বর্জ্য খাতের শ্রমিকদের জন্য ন্যায়সঙ্গত রূপান্তরের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
পরিবেশ ও স্বাস্থ্য উভয় ক্ষেত্রেই প্লাস্টিক দূষণের প্রভাব তুলে ধরে ক্ষতিকর প্লাস্টিক ব্যবহার পর্যায়ক্রমে বন্ধে উচ্চাভিলাষী ও সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানান রিজওয়ানা হাসান।
১১৩ দিন আগে