মানবাধিকার
'মানবাধিকার সম্মানে' র্যাবের 'অসাধারণ অগ্রগতি': মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পর্যবেক্ষণ
দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু দায়িত্ব পালনের সময় ‘মানবাধিকারকে সম্মান করার’ ক্ষেত্রে র্যাবের ‘অভূতপূর্ব অগ্রগতির’ প্রশংসা করেছেন।
লু বলেন, র্যাবের বিষয়ে তাদের ইতিবাচক আলোচনা হয়েছে এবং তিনি হিউম্যান রাইটস ওয়াচের সাম্প্রতিক বিবৃতি উল্লেখ করেছেন। যাতে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড কমার ক্ষেত্রে ‘অসাধারণ অগ্রগতি’ হয়েছে বলে অভিহিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা এটি স্বীকার করি। এটি একটি অভূতপূর্ব কাজ। এতে দেখা যায় যে র্যাব মানবাধিকারকে সম্মান করার মধ্য দিয়েও তার সন্ত্রাসবাদবিরোধী প্রচেষ্টা এবং গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালনে সক্ষম হয়েছে।’
রবিবার বিকালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে জ্যেষ্ঠ মার্কিন কর্মকর্তা এ মন্তব্য করেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন ও পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন।
লু বলেন, ‘আমাদের খুব সৎ ও মুক্ত আলোচনা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: মার্কিন সহকারী সচিব ডোনাল্ড লু পৌঁছেছেন; খোলামেলা আলোচনা করবে ঢাকা
শ্রম অধিকার ইস্যু প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি বাংলাদেশের জন্য ও বাণিজ্যিক সম্পর্কের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
তিনি বলেন, ‘আজ সকালে আমার সালমান এফ রহমানের সঙ্গে ভবিষ্যৎ কর্মকাণ্ড নিয়ে কথা বলার সুযোগ হয়েছে। যাতে আমরা এই দেশে শ্রম অধিকারের উন্নতিতে সহযোগিতা করতে পারি। আমি খুব আত্মবিশ্বাসী যে আমরা এই বছর অগ্রগতি করতে যাচ্ছি।’
বাংলাদেশ ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজিতে যোগদান করুক যুক্তরাষ্ট্র তা চায় কিনা জানতে চাইলে লু বলেন, তারা এ বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা করেছেন।
তিনি বলেন, ‘এটা কোনও ক্লাব নয় এবং এতে যোগ দেয়া বা না দেয়ার বিষয়।’
বাংলাদেশের জন্য জিএসপি (জেনারালাইজড সিস্টেম অব প্রেফারেন্স) সুবিধা পুনরুদ্ধারের বিষয়ে মার্কিন কর্মকর্তা বলেন, তারা এখনও কংগ্রেসের অনুমোদনের জন্য অপেক্ষা করছে।
লু বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে খুব ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছি।’ কংগ্রেস অনুমোদন দিলে বাংলাদেশ তালিকায় (জিএসপি সুবিধা পাওয়া) প্রথম দেশ হবে।
আরও পড়ুন: র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বিবেচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করবে বাংলাদেশ: মোমেন
যুক্তরাষ্ট্র গঠনমূলক পরামর্শ দিলে তা গ্রহণ করবে বাংলাদেশ: মোমেন
মার্কিন সহকারী সচিব ডোনাল্ড লু পৌঁছেছেন; খোলামেলা আলোচনা করবে ঢাকা
দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু সন্ধ্যায় দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করতে, অর্থনৈতিক সম্প্রসারণ এবং শ্রম ও মানবাধিকারের বিষয়ে কথা শুনতে বাংলাদেশে পৌঁছেছেন।
ঢাকায় সংক্ষিপ্ত অবস্থানকালে সহকারী সচিব লু বাংলাদেশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে পারস্পরিক স্বার্থের বিষয়ে আলোচনা করবেন।
রবিবার সকালে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে তার প্রাতঃরাশের বৈঠকের কথা রয়েছে।
সহকারী সচিব লু রবিবার পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা করবেন যেখানে জ্বালানি, বাণিজ্য, নিরাপত্তা সহযোগিতা, ধর্মীয় স্বাধীনতা, শ্রম এবং মানবাধিকার, ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল এবং র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার সহ অগ্রাধিকারের একটি পরিসীমা রয়েছে।
শনিবার ভারত থেকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (আমেরিকা) নায়েম উদ্দিন আহমেদ লু কে স্বাগত জানান।
আরও পড়ুন: র্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বিবেচনার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করবে বাংলাদেশ: মোমেন
ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস টুইট করে বলেছে, ‘বাংলাদেশে স্বাগতম, সহকারী সচিব ডোনাল্ড লু। ঢাকায় থাকাকালীন, সহকারী সেক্রেটারি লু আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করার বিষয়ে আলোচনা করতে ঊর্ধ্বতন বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের সঙ্গে দেখা করবেন।’
দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী সেক্রেটারি অব স্টেট ডোনাল্ড লু ১২ থেকে ১৪ জানুয়ারি ভারত সফর করেছেন।
ভারতে সহকারী সচিব ভারত-যুক্তরাষ্ট্র ফোরাম এ অংশগ্রহণ করেছেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ভারত জ্বালানি, বাণিজ্য, নিরাপত্তা এবং মানবাধিকারের সহযোগিতার উপায় আরও প্রসারিত করতে ঊর্ধ্বতন ভারতীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি লু।
এর আগে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বলেছিলেন যে তিনি সহকারী সচিব লু’র সফরকে দুই পক্ষের মধ্যে নিয়মিত ব্যস্ততার অংশ হিসেবে দেখছেন।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘আমরা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করব, শুধু নির্বাচন ও মানবাধিকার বিষয় নিয়েই আলোচনা হবে না।’
তিনি বলেন, এমন অনেক ক্ষেত্র রয়েছে যেখানে বাংলাদেশের কিছু প্রত্যাশা রয়েছে এবং মার্কিন পক্ষের বাংলাদেশ থেকে কিছু প্রত্যাশা থাকতে পারে। ‘আমরা খোলাখুলি আলোচনা করব।’
আরও পড়ুন: ঢাকা-টোকিও ‘কৌশলগত অংশীদারিত্বে’ ঘনিষ্ঠ ও গভীর সম্পর্ক উন্নীত করার সুযোগ দেখছে
এফএস জানিয়েছে, ইন্দো-প্যাসিফিকের বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, জাপান এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের কৌশল রয়েছে।
মাসুদ বলেন, ‘এটা এমন নয় যে আমরা কোনো নির্দিষ্ট গ্রুপে যোগ দিচ্ছি বা না। আমরা বঙ্গোপসাগর এবং এর বাইরে কীভাবে দেখতে চাই তার কিছু উপাদান প্রস্তুত করছি।’
এ কে আবদুল মোমেন বলেছেন, এলিট ফোর্স র্যাবের ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা পুনর্বিবেচনা করতে এবং দেশে ইতিবাচক ভূমিকা বিবেচনা করে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করবে বাংলাদেশ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন মিলনায়তনে এক আলোচনায় অংশ নেয়ার পর সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘র্যাব এখন অনেক বেশি পরিপক্ক। আমাদের কাছে অনুরোধ থাকবে যে তারা (মার্কিন) সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমরা আমাদের ইস্যু তুলব। তারা তাদের ইস্যু তুলবে। কিন্তু অন্যদের আমাদের গণতন্ত্র শেখানোর দরকার নেই। গণতন্ত্র, মানবাধিকার এবং ন্যায়বিচার আমাদের প্রত্যেকের হৃদয়ে প্রোথিত।’
আরও পড়ুন: ভয়েস অব গ্লোবাল সাউথ সামিট: খাদ্য, জ্বালানি, সারের ঘাটতির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার আহ্বান
আমরা বাংলাদেশে মানবাধিকার সমুন্নত রাখি: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের পরিবর্তে মানবাধিকার রক্ষা করে।
বুধবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস-২০২২ উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার মাছ ধরার ছবি নেটিজেনদের মন ছুঁয়েছে
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ এদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন করে না, বরং সুরক্ষা দেয়। আওয়ামী লীগ জনগণের অধিকার নিশ্চিত করে।’
হত্যা ও জোরপূর্বক গুমের বিষয়ে কথা বলার জন্য বিরোধী বিএনপি নেতাদের নিন্দা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমানই (বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা) দেশে জোরপূর্বক গুমের সংস্কৃতি শুরু করেছিলেন।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বিমান বাহিনীর অনেক অফিসার ও সৈন্যকে হত্যার জন্য দায়ী। একইসঙ্গে আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকে হত্যার পেছনেও তিনি ছিলেন এবং তাদের গুম করেছেন বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, নিহতদের পরিবার ও স্বজনরা কখনো লাশ দেখতে পায়নি। বিএনপি কিভাবে গুম ও হত্যার কথা বলে?
আরও পড়ুন: তথ্য প্রযুক্তিখাতে বিনিয়োগ বাড়াতে শক্তিশালী ভূমিকা রাখবে শেখ হাসিনা সফটওয়্যার পার্ক
আ. লীগ সরকারের আমলে বাংলাদেশের অনেক পরিবর্তন হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
যারাই মানবাধিকার লঙ্ঘন করবে, তাদেরকেই আইনের আওতায় আনা হবে: আইনমন্ত্রী
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা, সুরক্ষা ও উন্নয়নে বর্তমান সরকার সর্বতভাবে কাজ করে যাচ্ছে। যেখানেই মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রশ্ন উঠছে, সেখানেই সরকার তড়িৎ ব্যবস্থা নিচ্ছে। মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীদের বিষয়ে সরকারের অবস্থান একেবারে পরিষ্কার। বাংলাদেশে যারাই মানবাধিকার লঙ্ঘন করবে, তাদেরকেই আইনের আওতায় এনে বিচার করা হবে।শনিবার দুপুরে রাজধানীর রেডিসন হোটেলে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের উদ্যোগে মানবাধিকার দিবস-২০২২ উদ্যাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।মন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও সুরক্ষার ক্ষেত্রে সরকারের অনেক বড়বড় অর্জন সত্ত্বেও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কেউকেউ বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতিকে নেতিবাচকভাবে চিত্রিত করার হীন চেষ্টা করছেন।বাংলাদেশের সংবিধান ও সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণাপত্র এদুটির কোথাও অন্যের অধিকার হরণ করে নিজের অধিকার প্রতিষ্ঠার কথা বলা নেই- একথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে আইনমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৭ অনুচ্ছেদ ও সর্বজনীন মানবাধিকার ঘোষণাপত্রের ২০ অনুচ্ছেদে শান্তিপূর্ণভাবে সভা-সমাবেশ করার অধিকারের কথা বলা আছে। কিন্তু মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার এদুটি অনন্য দলিলের কোথাও বলা নেই রাস্তাঘাট বন্ধ করে, জনসাধারণের চলাচলের পথ রুন্ধ করে সভা-সমাবেশ করা যাবে।তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, আজকাল মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে কি-না তা জানার আগেই অনেকে আমাদেরকে মানবাধিকার সমন্ধে ছবক দিচ্ছেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট, ৩ নভেম্বর ও ২৬ সেপ্টেম্বর এবং ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঘৃণতম মানবাধিকার লঙ্ঘন ঘটলেও তারা মানবাধিকার রক্ষা দূরে থাক, এবিষয়ে একটি টু শব্দও করেন নাই।
আরও পড়ুন: জনগণকে সর্বোত্তম সেবা দিন: সাব-রেজিস্ট্রারদের উদ্দেশে আইনমন্ত্রীতিনি বলেন, যে বঙ্গবন্ধু তার সারাটা জীবন মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও সুরক্ষার জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম করেছিলেন, সেই বঙ্গবন্ধুকে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রে ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট সপরিবারে নৃসংশভাবে হত্যা করা হয়, যা ছিল বিশ্বের ইতিহাসে ঘৃণ্যতম ও চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন। এই মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিভৎসতা এত ভয়াবহ ছিল যে, ইনডেমনিটি আইন করে দীর্ঘ ২১ বছর খুনিদের বিচারের পথ রুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল, তাঁদের পুরস্কৃত করা হয়েছিল এবং বিশ্বের বড়বড় দেশ খুনিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়েছিল। দণ্ডপ্রাপ্ত কয়েকজন খুনি এখনো কয়েকটি বড় দেশের আশ্রয়ে আছে। তাদেরকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা অনেকটা কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।মি. হক আরও বলেন, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা, সুরক্ষা ও উন্নয়নের লক্ষ্যে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন প্রণয়ন করে এর অধীনে শক্তিশালী জাতীয় মানবাধিকার কমিশন প্রতিষ্ঠা করেছে সরকার। সরকারের অব্যাহত সহযোগিতায় বর্তমানে এই কমিশনের এখতিয়ার ও কাজের পরিধি ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে এবং কমিশন স্বাধীন ও নিরপেক্ষভাবে কাজ করছে। এটি এখন নারী, শিশু, দলিত, হিজড়া, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, মেহনতী মানুষ ও প্রবাসী শ্রমিকসহ সর্বস্তরের মানুষের অধিকার সুরক্ষায় সফলভাবে কাজ করে যাচ্ছে। ফলে স্বল্প সময়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এশিয়া প্যাসিফিক ফোরামের সদস্য পদ লাভ করেছে এবং ‘বি’ ক্যাটাগরির স্ট্যাটাস অর্জন করেছে। মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও সুরক্ষায় জবাবদিহিতার অংশ হিসেবে সরকার জাতিসংঘের মানবাধিকার সংক্রান্ত বিভিন্ন কমিটিতে নিয়মিত রাষ্ট্রীয় প্রতিবেদন এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ছায়া প্রতিবেদন প্রেরণ করছে। দেশে ন্যায়বিচার প্রাপ্তির পথ সুগম করার পাশাপাশি সব ধরণের সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূলে কাজ করছে। মানবাধিকার সংশ্লিষ্ট উচ্চ আদালতের বিভিন্ন রায় ও আদেশ দ্রুত কার্যকর করার যথাযথ পদক্ষেপও নেওয়া হচ্ছে। মানবাধিকার নিশ্চিতকরণে সরকার আরও অনেক আইন প্রণয়ণ করেছে। বৈষম্য বিরোধী আইন প্রণয়নের বিষয়টিও এখন আইন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির নিকট পরীক্ষা-নিরীক্ষাধীন রয়েছে।সরকারের সুনীতি ও দৃঢ় অবস্থানের কারণেই বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড, জাতীয় চারনেতা হত্যাকাণ্ড ও ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত মানবতা বিরোধী অপরাধসহ বড় বড় মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিচার করা সম্ভব হয়েছে। দেশ থেকে বিচারহীনতার সংস্কৃতি দূর হয়েছে। মানুষ ন্যায়বিচার পাচ্ছেন। মানবাধিকার সুরক্ষায় আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। বাংলাদেশ চার চার বার জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্যপদ লাভ করেছে, বলেন আইনমন্ত্রী।জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য মো. সেলিম রেজা, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব মইনুল কবির প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
আরও পড়ুন: আয়কর আইনজীবীদের একটি শক্তিশালী নিয়ন্ত্রক সংস্থা থাকা দরকার: আইনমন্ত্রী
দেখা যাক, ছদ্মবেশে জামায়াতের নিবন্ধন ইসি কীভাবে পরিচালনা করে: আইনমন্ত্রী
ফখরুলের সঙ্গে কানাডা রাষ্ট্রদূতের বৈঠক, আলোচনায় নির্বাচন ও মানবাধিকার
বাংলাদেশে নিযুক্ত কানাডার হাইকমিশনার ডা. লিলি নিকোলস বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে দেখা করেছেন।
এসময় বাংলাদেশের আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ও মানবাধিকার পরিস্থিতি সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন তারা।
সোমবার দুপুর দেড়টায় নিকোলস বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে পৌঁছান। সেখানে ফখরুলের নেতৃত্বে বিএনপির একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে 'রুদ্ধদ্বার' বৈঠক করেন তিনি।বৈঠক শেষ হয় বেলা ৩টা ১০ মিনিটে।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ।
পরে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বৈঠক ও আলোচনার বিষয়বস্তু সাংবাদিকদের জানান।
‘আমাদের খুব ভালো আলোচনা হয়েছে। আমরা বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট, বিশেষ করে মানবাধিকার, আমাদের নির্বাচন, আইনের শাসন এবং জনজীবনের নিরাপত্তা সংক্রান্ত সব বিষয় নিয়ে কথা বলেছি।’
আরও পড়ুন: নির্বাচনের নামে আর খেলা নয়: ফরিদপুরের জনসভায় ফখরুল
খসরু বলেন, কানাডা মানবাধিকার, গণতান্ত্রিক অধিকার, জনজীবনের নিরাপত্তা, আইনের শাসন এবং সুশাসনকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়। ‘কানাডা এবং অন্যান্য কিছু দেশ সবসময় এই বিষয়ে কঠোর অবস্থান নেয়।’
তিনি বলেন, কানাডা বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ সরকারকে দ্বিপাক্ষিকভাবে বলে আসছে যে এখানে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে।
বাংলাদেশের জনগণ, গণতান্ত্রিক দেশ, বহুপাক্ষিক সংস্থা এবং সারা বিশ্বের মানবাধিকার সংস্থাগুলোর মতো কানাডাও অনেক বিষয়ে উদ্বিগ্ন, কারণ তারা গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারকে গুরুত্ব দেয়।
পরবর্তী নির্বাচন নিয়ে কানাডা কী বলেছে জানতে চাইলে খসরু বলেন, তারা ভেতরে কী আলোচনা করেছেন তা তিনি বিস্তারিত বলতে পারবেন না। ‘আমরা বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কিত সমস্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি। তবে আমরা কী আলোচনা করেছি তা বিশদভাবে বলার সুযোগ নেই।’
তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে বিএনপির পরবর্তী নির্বাচনে যাওয়ার কোনও কারণ নেই এবং বিএনপি এই অবস্থানে কঠোর।
আরও পড়ুন: সিলেটে কামাল হত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে ফখরুলের বিবৃতি
তিনি বলেন, একটি বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করতে বর্তমান সরকারকে হটিয়ে একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যেখানে জনগণ স্বাধীনভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে। ‘আওয়ামী লীগ, নির্বাচন কমিশন এবং অন্যরা পরবর্তী নির্বাচন সম্পর্কে কি বলবে তা নিয়ে আমরা কম চিন্তিত।’
খসরু বলেন, বাংলাদেশ ও কানাডা দীর্ঘদিন ধরে বৈচিত্র্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে আসছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ কানাডায় প্রায় দুই বিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি করে। কারণ ২০০৩ সালে বিএনপি সরকারের আমলে দেশটি বেশিরভাগ পণ্যের জন্য বাংলাদেশকে কানাডায় বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দিয়েছিল।’
এ ছাড়া বিএনপির নেতা বলেন, গম, ডালসহ অনেক প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্য আমদানির জন্য কানাডা বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্য। ‘কানাডা এখন আমাদের বাচ্চাদের পড়াশোনার জন্য একটি জনপ্রিয় গন্তব্য হয়ে উঠেছে।’
কানাডায় অনেক বাংলাদেশি বসবাস করছে এবং তারা সে দেশের অর্থনীতি ও সমাজে অবদান রাখছে।’
আরও পড়ুন: জনগণ সরকারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে: মির্জা ফখরুল
নরসিংদীতে পুলিশ হেফাজতে আসামির মৃত্যু: এমএসএফের সুষ্ঠু তদন্ত দাবি
নরসিংদীতে পুলিশ হেফাজতে এক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে মানবাধিকারবিষয়ক সংগঠন মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ) ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেছে।
পুলিশের হেফাজতে থাকা মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা তাদের দায়িত্ব। এমএসএফ সুষ্ঠু তদন্তের পর এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের দাবি করছে। বিষয়টি এমএসএফের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শুক্তবার জানানো হয়। আইন ও সালিশ কেন্দ্র ছেড়ে যাওয়ার পর মানবাধিকারকর্মী সুলতানা কামাল এমএসএফ প্রতিষ্ঠা করেন।
এর আগে বুধবার সকালে রায়পুরা থানার শৌচাগার থেকে আসামি সুজন মিয়ার ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সেখানে ভেন্টিলেটরের রডের সঙ্গে তার পরনের শার্ট ব্যবহার করে ঝুলতে থাকা লাশটি পাওয়া যায়।
গত ৫ নভেম্বর রায়পুরা পৌর এলাকার মজিবুর রহমানের ছেলে সুজন মিয়া তার স্ত্রী লাভলী আক্তারকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করে বলে অভিযোগ উঠে। পরে তাকে ফরিদপুর সদর উপজেলার আটরশি দরবার শরিফ এলাকা এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে দুই দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়।
আরও পড়ুন: লালমনিরহাটে ‘পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু’: মানবাধিকার সংগঠনের বিচার দাবি
এমএসএফ জানিয়েছে যে অভিযুক্তের মৃত্যু সংক্রান্ত বক্তব্য কোনোভাবেই বিশ্বাসযোগ্য হতে পারে না। শৌচাগার থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে বলে বলা হচ্ছে। সেখানে অনেক মানুষকে আটকে রাখা হয়েছে। সুতরাং, এটি অসম্ভব যে কেউ এত গুরুতর ঘটনা লক্ষ্য করবে না। জেলা পুলিশ তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করলেও সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সতর্ক থাকতে হবে।
সংবিধান অনুযায়ী হেফাজতে যেকোনো ব্যক্তির সুরক্ষা দেয়া রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব। তাই সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানিয়েছে এমএসএফ।
আরও পড়ুন: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পুলিশ হেফাজতে ব্যবসায়ীর মৃত্যুর অভিযোগ
নারীর প্রতি সহিংসতা বাড়ছে: এমএসএফের প্রতিবেদন
জেনেভায় মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের সঙ্গে আইনমন্ত্রীর বৈঠক
মানবাধিকারের প্রসার ও সুরক্ষায় জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনারের অফিসের সঙ্গে একযোগে কাজ করে যাওয়ার অঙ্গীকার করেছেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।
মঙ্গলবার জেনেভায় জাতিসংঘের নবনিযুক্ত মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার ভলকার তার্ক -এর সঙ্গে এক বৈঠকে এ অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী।
এসময় তিনি মানবাধিকার রক্ষা ও সমুন্নত রাখার ব্যাপারে বর্তমান সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকারের কথাও পুনর্ব্যক্ত করেন।
বৈঠকে তিনি রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের প্রচেষ্টাকে সফল করতে জাতিসংঘের অধিকতর শক্তিশালী ও কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান। আইনমন্ত্রী হাইকমিশনারকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে তার অফিসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার কথাও অবহিত করেন।
আরও পড়ুন: নতুন আইন বাস্তবায়নের সময় কিছু অপব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া যায়: আইনমন্ত্রী
এসময় হাই কমিশনার ভলকার তার্ক রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দানের জন্য বাংলাদেশ সরকারের মানবীয় উদারতার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
সাক্ষাতের শুরুতে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক নবনিযুক্ত মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনারকে অভিনন্দন জানান।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ১৭ অক্টোবর ভলকার তার্ক জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
বৈঠকে জেনেভাস্থ জাতিসংঘ অফিসে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মো. সুফিউর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
জেনেভা সফরকালে আইনমন্ত্রী গতকাল মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার নবনিযুক্ত ডিরেক্টর জেনারেল গিলবার্ট এফ হংবো এর সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। এসময় তিনি শ্রম অধিকার রক্ষায় বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক গৃহীত নানা পদক্ষেপ সম্পর্কে ডিরেক্টর জেনারেলকে অবহিত করেন। এ বৈঠকে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ানও উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: জনগণকে সর্বোত্তম সেবা দিন: সাব-রেজিস্ট্রারদের উদ্দেশে আইনমন্ত্রী
আয়কর আইনজীবীদের একটি শক্তিশালী নিয়ন্ত্রক সংস্থা থাকা দরকার: আইনমন্ত্রী
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে লঙ্ঘিত হচ্ছে মানবাধিকার: জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞ
জলবায়ু পরিবর্তন প্রেক্ষাপটে মানবাধিকারের প্রচার ও সুরক্ষাবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ র্যাপোর্টিয়ার ইয়ান ফ্রাই বলেছেন, সারা বিশ্বে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে মানবাধিকার নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত ও লঙ্ঘিত হচ্ছে।
মানবাধিকারগুলোর মধ্যে রয়েছে জীবন, স্বাস্থ্য, খাদ্য, উন্নয়ন, আত্মনিয়ন্ত্রণ, পানি ও স্যানিটেশন, কর্ম, পর্যাপ্ত বাসস্থান ও সহিংসতা, যৌন নির্যাতন, পাচার এবং দাসত্ব থেকে মুক্তির অধিকার।
শুক্রবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে পেশ করা এক প্রতিবেদনে জাতিসংঘের এই বিশেষজ্ঞ বলেন যে উন্নত অর্থনীতির কারণে দরিদ্রতম ও ন্যূনতম মানিয়ে নিতে সক্ষম এমনদের প্রতি বড়ধরনের অবিচার হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘গ্রিনহাউস গ্যাস নিঃসরণ ব্যাপকভাবে হ্রাস করার দায়িত্ব নিতে উন্নত অর্থনীতি ও বড় করপোরেশনগুলোর নিষ্ক্রিয়তার জন্য জলবায়ুর যে ক্ষতি হয়েছে তার ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়েছে। উদাহরণ হিসেবে জি২০ সদস্য দেশগুলোর কথা বলা যায়। যারা ৭৮ শতাংশ গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনের জন্য দায়ী।’
আরও পড়ুন: মিয়ানমারের সামরিক জান্তা সত্য আড়ালের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে: জাতিসংঘ বিশেষজ্ঞ
ফ্রাই আরও বলেন, মানবসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তন বিশ্বের প্রাকৃতিক পরিবেশ ও সমাজের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকির কারণ। যার সম্মুখীন বিশ্ব কখনও হয়নি। আর এর কারণে সবচেয়ে বেশি মূল্য দিতে হচ্ছে দরিদ্র দেশগুলোকে।
নিউইয়র্ক থেকে প্রাপ্ত একটি বার্তা অনুসারে, বিশেষ র্যাপোর্টিয়ারের প্রতিবেদনটি প্রশমন কাজ, ক্ষয়ক্ষতি, প্রবেশাধিকার ও অন্তর্ভুক্তি এবং জলবায়ু অধিকার রক্ষাকারীদের সুরক্ষার বিষয়গুলোর ওপর গুরুত্বারোপ করে।
ফ্রাই বলেন, গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন কমানোর জন্য অপর্যাপ্ত পদক্ষেপের সামগ্রিক প্রভাব একটি মানবাধিকার বিপর্যয় তৈরি করছে এবং এই জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত বিপর্যয়ের খরচ প্রচুর।
যারা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ও ক্ষতির শিকার, তারা বর্তমান পরিস্থিতিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সবচেয়ে কম অংশগ্রহণ করতে সক্ষম। এদিকে, শিশু, যুবক, মহিলা, প্রতিবন্ধী, আদিবাসী ও সংখ্যালঘুসহ এদের ভবিষ্যত নিশ্চিত করার জন্য আরও বেশি কাজ করতে হবে।
ফ্রাই জলবায়ু অধিকার রক্ষাকারীদের সম্পর্কে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়গুলো জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে পদক্ষেপজনিত অভাবের কারণে ক্রমবর্ধমান হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছে। জলবায়ু সংক্রান্ত জরুরি অবস্থা প্রত্যক্ষ করতে তারা বিক্ষোভ ও জনগণের হস্তক্ষেপের দিকে ঝুঁকছে।
এই বিশেষজ্ঞ জোর দিয়ে বলেন, আদিবাসীরা, বিশেষ করে গুরুতর আক্রমণ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে।
ফ্রাই ২০২৩ সালে অনুষ্ঠিতব্য একটি প্রস্তাবিত উচ্চস্তরের প্রশমন প্রতিশ্রুতি ফোরামসহ সাধারণ পরিষদে বেশ কয়েকটি সুপারিশ পেশ করেন। যেখানে ক্ষয়ক্ষতির আর্থিক সুবিধা পরিচালনার জন্য পদ্ধতি ও নিয়মকে সংজ্ঞায়িত করতে অর্থ বিশেষজ্ঞদের একটি পরামর্শমূলক গ্রুপ প্রতিষ্ঠার কথা বলা হয়েছে। যেখানে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিকার ও অভিযোগের উল্লেখ আছে, যাতে ক্ষতিগ্রস্থ সম্প্রদায়গুলো প্রয়োজনে আশ্রয় নিতে পারে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের আবারও ‘বাঙালি সম্প্রদায়’ বলল মিয়ানমার
মিয়ানমার বিষয়ক আসিয়ানের বিশেষ দূতকে সু চির সঙ্গে দেখা করার আহ্বান
‘১৯৭৫ সালে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছিল’
মানবাধিকার কর্মী এবং আইনজীবী জেড আই খান পান্না ১৯৭৫ সালকে এমন একটি সময় হিসাবে বর্ণনা করেছেন যখন জাতি মানবাধিকারের ওপর চরম আক্রমণের প্রত্যক্ষদর্শী হয়েছে। তিনি উল্লেখ করেছেন, পরবর্তী ক্ষতিপূরণ অধ্যাদেশটি সবচেয়ে খারাপ ছিল।
শনিবার মানবাধিকার বিষয়ক আলোচনায় বক্তব্য দেয়ার সময় তিনি বলেন, ‘মানবাধিকারের ওপর মূল আক্রমণ হয়েছিল ১৯৭৫ সালে এবং ক্ষতিপূরণ অধ্যাদেশের মতো খারাপ কিছু হতে পারে না।’
রাজধানীর বনানীতে ঢাকা গ্যালারিতে এ আলোচনা সভার আয়োজন করে সম্পাদকদের সংগঠন এডিটরস গিল্ড, বাংলাদেশ।
আরও পড়ুন: আইজিপিসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ প্রত্যাখান ঢাকার
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মাত্র ৪১ দিন পর খন্দকার মোশতাক আহমেদ একটি ক্ষতিপূরণ অধ্যাদেশ জারি করেন। যিনি সামরিক আইন জারি করে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পরপরই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করেছিলেন।
১৯৭৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর খুনিদের এবং যারা ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট সকালে সামরিক আইন ঘোষণার সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে যে কোনও আইনি বা অন্যান্য কার্যক্রম বন্ধ করতে অধ্যাদেশটি জারি করেছিল।
পান্না ১৯৭৫ পরবর্তী উন্নয়ন এবং কীভাবে জনগণকে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়েছিল তার বর্ণনাও দিয়েছেন।
তিনি ১৯৭৫ পরবর্তী সময়ে ‘আয়নাঘর’ এর অস্তিত্ব দাবি করেছিলেন এবং তিনি এর অন্যতম শিকার ছিলেন। ‘অনেক ভুক্তভোগী রয়েছে’ উল্লেখ করে তিনি কয়েকটি নাম উল্লেখ করে তাদের ওপর নির্যাতনের নৃশংস প্রকৃতির কথা তুলে ধরেন।
পান্না বর্তমান পরিস্থিতিও তুলে ধরে বলেন, কিছু ব্যর্থতা আছে। ‘আমি বলব প্রবণতা এড়াতে, সীমাবদ্ধতা নয়।’
তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি হলো কোনো তৃতীয় পক্ষ বা দেশের অংশগ্রহণ ছাড়াই অন্যতম সেরা চুক্তি।এর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কৃতিত্ব দেন এই অধিকারকর্মী।
গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, বিশ্ব ইতিহাসে বাংলাদেশ একটি অনন্য জাতি।
এই অধিকারকর্মী আরও বলেন, বাংলাদেশ ছাড়া পৃথিবীর এমন দেশ কেউ দেখাতে পারবে না, যে দেশে ৯ মাসে ৩০ লাখ মানুষ প্রাণ দিয়েছে। আপনি বিশ্বের ইতিহাসে দেখাতে পারবেন না। বাংলাদেশ একটি অনন্য দেশ।তিনি বলেন, এটি প্রচলিত যুদ্ধ নয়, এটি একটি জনযুদ্ধ।
এডিটরস গিল্ডের সভাপতি ও একাত্তর টেলিভিশনের প্রধান সম্পাদক মোজাম্মেল বাবুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, অধ্যাপক ডা. মিজানুর রহমান, মানবাধিকার কর্মী খুশি কবির, ভোরের কাগজের সম্পাদক শ্যামল দত্ত প্রমুখ।
আরও পড়ুন: আসকের সেপ্টেম্বরের প্রতিবেদনে বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভয়াবহ চিত্র ফুটে উঠেছে
মানবাধিকার লঙ্ঘনের কথা আজ প্রমাণিত: যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা প্রসঙ্গে বিএনপি
মানবাধিকার নিয়ে বিএনপির অপপ্রচার মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে: তথ্যমন্ত্রী
মানবাধিকার নিয়ে বিএনপির অপপ্রচার মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে বলে দাবি করেছেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের মধ্যে সর্বোচ্চ ১৬০ ভোট পেয়ে পুনরায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হয়েছে। অথচ বিএনপি, কিছু ব্যক্তিবিশেষ এবং চিহ্নিত কয়েকটি সংগঠন ক্রমাগতভাবে বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে বলে অপপ্রচার করছে। তারা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ভুল তথ্য উপাত্ত পাঠিয়ে বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টা করছিল এবং সেই প্রেক্ষাপটের মধ্যেই বাংলাদেশ সর্বোচ্চ ভোট পেয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য নির্বাচিত হয়েছে। এতেই প্রমাণিত হয়, বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে তারা যে অপপ্রচার চালিয়ে এসেছে, বিদেশিদের বিভক্ত করার চেষ্টা করেছে, সেগুলো অসার এবং কাজে আসেনি। বরং প্রমাণ হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার সঠিক পথেই আছে।
বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: তৃতীয়বার করোনায় আক্রান্ত তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রকৃতপক্ষে বাংলাদেশে মানবাধিকারের সর্বোচ্চ লঙ্ঘন হয়েছে, যখন জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় থাকতে বিনা বিচারে হাজার হাজার সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা-জওয়ানকে হত্যা করেছে। এমন ঘটনাও ঘটেছে যে, ফাঁসি কার্যকর হয়েছে আগে, বিচারের রায় হয়েছে পরে। দিজ আর ডকুমেন্টেড অর্থাৎ এগুলোর প্রমাণ রয়েছে। জিয়ার আমলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া সরকারও ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলা, আমাদের সাবেক অর্থমন্ত্রী কিবরিয়া, আহসান উল্লাহ মাস্টার, খুলনার মনজুর ইমামকে হত্যা এবং হুমায়ুন কবির বালু থেকে শুরু করে বহু সাংবাদিক হত্যার সঙ্গে যুক্ত ছিল। তারা সেগুলোর কোনো সঠিক বিচার করেনি।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের স্বপ্নে বিভোর বিএনপিকে সবক্ষেত্রে প্রতিহত করার আহ্বান তথ্যমন্ত্রীর
হাছান মাহমুদ বলেন, ২০১৩-১৪-১৫ সালে যেভাবে মানুষকে জীবন্ত পুড়িয়ে হত্যা করে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন হয়েছে, আমরা সেগুলো বিশ্ব দরবারে নিয়ে যাচ্ছি। জিয়াউর রহমান যাদেরকে হত্যা করেছিল তাদের পরিবারগুলোর সংগঠন ‘মায়ের কান্না’ ঢাকা-চট্টগ্রামহসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করছে।