দাতব্য চিকিৎসালয়
চিকিৎসক সংকটে বন্ধ হয়ে গেল চাঁদপুরের শতবর্ষী দাতব্য চিকিৎসালয়
অবশেষে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ‘প্রাথমিক চিকিৎসার বাতিঘর’ খ্যাত চাঁদপুর পৌরসভার শতবর্ষী দাতব্য চিকিৎসালয়। চিকিৎসক সংকটের কারণে এটি আপাতত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গত ১ মাস ধরে বন্ধ রাখা রয়েছে মেঘনাপাড়ে অবস্থিত গরীবের চিকিৎসাসেবার এই অন্যতম এই কেন্দ্রটি। এতে করে নদীভাঙন-কবলিত ও চরম দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করা মানুষেরা আরও বিপাকে পড়েছেন। ফলে স্থানীয়দের মাঝে দেখা দিয়েছে চাপা ক্ষোভ। ১০৫ বছর পুরনো এই চিকিৎসাকেন্দ্রটি ফের চালু করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, চাঁদপুর জেলার প্রধান বাণিজ্যিক এলাকা পুরানবাজারের দরিদ্র ও অসহায় মানুষের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে একশ বছরের বেশি সময় আগে প্রতিষ্ঠা করা হয় পৌর দাতব্য চিকিৎসালয়টি।
ব্রিটিশ সরকার, পাকিস্তান সরকার এবং স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের শাসনামলে সগৌরবে এই প্রতিষ্ঠানটি নামমাত্র মূল্যে (২ টাকা) মানুষকে চিকিৎসাসেবা ও ওষুধ সরবরাহ করে আসছিল। সবশেষ চাঁদপুর পৌরসভার অর্থায়নে মাত্র ২ টাকার টিকিটে চিকিৎসা ও ওষুধ দিয়ে ‘মানবতার বাতিঘর’ হিসেবে দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে ব্যাপক সুনাম কুড়ায় প্রতিষ্ঠানটি।
আরও পড়ুন: কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে ফি আছে, চিকিৎসা নেই!
হাবিবুর রহমানসহ (৭৫) স্থানীয় কয়েকজন বর্ষীয়ানের সঙ্গে আলাপকালে তারা জানান, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর প্রথম দিকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটিতে অস্ত্রোপচারসহ গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা দেওয়া হতো। পরবর্তীতে অর্থ সংকটে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক না থাকলেও পৌরসভার ২ জন স্বাস্থ্য সহকারী দিয়ে রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসার কার্যক্রম চালিয়ে নেওয়া হচ্ছিল। এতে হতদরিদ্র মানুষের ছোটখাট অসুখের চিকিৎসার আশ্রয়স্থল হয়ে উঠে দাতব্য চিকিৎসালয়টি। দৈনিক প্রায় ৮০/৯০ জন রোগী এখানে সেবা নিতে আসতেন বলে জানান তারা।
তবে হঠাৎ করেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সংকটের কারণ দেখিয়ে গত মাসে চিকিৎসালয়টি বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফলে দূর-দূরান্ত থেকে আসা হতদরিদ্র মানুষজন পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে।
৯২ দিন আগে