আয়
দিশেহারা সাধারণ আয়ের মানুষ, ফের বাড়ছে পোল্ট্রি মুরগির দাম!
খাদ্যের দাম বেশির কারণ দেখিয়ে খুলনার বাজারে ফের দাম বাড়তে শুরু করছে গরীবের একমাত্র আমিষের চাহিদা পূরণের ভরসা ব্রয়লার মুরগির। খুলনার বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও রাতারাতি হরিলুটের মতো চার থেকে পাঁচদিনের ব্যবধানে ১৯০টাকার ব্রয়লার মুরগি এখন বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি দরে।
বাজারের বর্তমান দৃশ্যমান দামের আগে শীতকালীন সময়ে টানা কয়েকমাস ১৪০ টাকা কেজি দরে স্থিতিশীল ছিল ব্রয়লার মুরগির দাম। তা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে বাড়তে ২৪০টাকা দরে পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে।
প্রতিদিনই খুলনার বিভিন্ন অঞ্চল- তালা, বটিয়াঘাটা, তেরখাদা, কৈয়া বাজার, ডুমুরিয়া, ফুলতলা, জামিরা, পথের বাজার, দিঘলিয়াসহ স্থানীয় এলাকার খামার হতে মুরগি আসে খুলনার খুচরা বাজারে।
রমজানকে ঘিরে খুলনা মহানগরী এলাকার রূপসা নতুন বাজার, জোড়াকল বাজার, সন্ধ্যা বাজার, বয়রা বাজার, বৈকালি বাজার, দৌলতপুর বাজার, খালিপুর বাজারসহ স্থানীয় এলাকার বাজারসমূহে জাতীয় ভোক্তা ও অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, কেসিসি কর্তৃক মোবাইল কোর্ট, জেলা প্রশাসনের অভিযানসহ অন্যান্য সংস্থা ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হস্তক্ষেপে করার ফলে বাজারে বিভিন্ন পণ্যের নিয়মবর্হিভূত কেনাবেচা অনেকটাই রোধ হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে আবারও বাড়তে শুরু করেছে ব্রয়লার মুরগির দাম। মাত্র তিন দিনের মাথায় কেজিতে ১০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে।
রেডি মুরগির বাচ্চা সরবরাহকারী পরিবেশক ও খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ খাতে কর্পোরেট গোষ্ঠী তাদের ইচ্ছেমতো ফিড ও মুরগির দাম বাড়াচ্ছে, আর সেই দাম মেনে নিয়ে প্রান্তিক খামারিরা উৎপাদন করলে বাজারে দাম কমিয়ে দিয়ে লোকসানে ফেলা হচ্ছে তাদের। এতে করে প্রান্তিক খামারিরা উৎপাদন থেকে ছিটকে পড়ছে।
আরও পড়ুন: ব্রয়লার মুরগি ২৩০ টাকা কেজি, কমেছে ডিমের দাম
তারা আরও জানান, বাংলাদেশের কয়েকটি কোম্পানির সিন্ডিকেটের কারণে প্রতিনিয়ত পোল্ট্রি মুরগির দাম ওঠা নামা করছে। ওই কোম্পানিগুলো গোটা বাংলাদেশে এই খাতের ব্যবসাটাকে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ করছে। খাদ্যে ও বাচ্চার দাম বৃদ্ধির জন্য কতিপয় কোম্পানি, কন্ট্রাক্ট ফার্মের ঊর্ধ্বতন ব্যক্তিসহ কিছু কর্মকর্তার কারসাজিতে চাহিদার তুলনায় বাচ্চা কম উৎপাদন করে রেডি মুরগির কৃত্রিম সংকট করছে, যার প্রভাব গোটা বাংলাদেশের উপর পড়ছে।
ফুলতলা আলকা ট্রান্সপোর্ট বাজার ফুলতলার মিতু পোল্ট্রি অ্যান্ড ফিড’র সত্ত্বাধিকারী এবং কাজী ফার্মস’র পরিবেশক রেজাউল ইসলাম সরদার জানান, গোটা বাংলাদেশের পোল্ট্রি খাতের যারা মাথা, তারা হাজার হাজার ডিলারদের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখাচ্ছে। মুষ্টিমেয় কিছু ব্যবসায়ী এই খাতটাকে নিয়ে খেলছে। আমি কাজী ফার্মের পরিবেশক। গোটা দেশে আজ পোল্ট্রি খাতে যে দামের ওঠা নামা চলছে, তা মাত্র কয়েকটি কোম্পানির কারণে হচ্ছে। তারা এ খাতটাকে জিম্মি করে রেখেছে।
বাংলাদেশে বাচ্চা উৎপাদনে এই কোম্পানিতে লিডিংয়ে রয়েছে তারা। গোটা বাংলাদেশে যে বাচ্চা উৎপাদন হয়, তার ৫০ হতে ৭০ শতাংশ বাচ্চাই কাজী ফার্মের।
খামারিরা জানিয়েছেন খাদ্যের ও বাচ্চার দাম বেশি। রবিবার (২ এপ্রিল) প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি স্থানীয় এলাকার খামারিদের কাছ থেকে ১৯০ টাকা দরে পাইকারি দরে কিনে এনেছি। খুচরা বিক্রি করেছি প্রতি কেজি ২১০ টাকা দরে। খামারিরা যে দাম কাটে তা হতে কিছু লাভে বিক্রি করি।
মুরগি বিক্রেতা মোস্তাক বলেন, কোম্পানি রেট, খাবার ও বাচ্চার দাম বেশির কারণেই মুরগির দাম বেশি। আর বাজার নিয়ন্ত্রণ করে কোম্পানি।
ক্রেতা রাজিব জানান, মাঝে ১৪০ টাকা ব্রয়লার মুরগি ধাপে ধাপে ২৪০টাকা পর্যন্ত হয়েছিল। হাতে গোনা কয়েকদিন আগে সেই মুরগি ১৯০ টাকা হওয়ার বেশ স্বস্তি নেমেছে ক্রেতাদের মাঝে। গরুর গোস্ত যাদের কেনার সমার্থ নেই, মুরগি তাদের অন্যতম ভরসা। কিন্তু দুঃখজনক বিষয় হলো- হঠাৎ আবার মুরগির দাম বাড়তে শুরু করেছে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আর্কষণ করছি।
কেসিসি’র বাজার সুপারভাইজার মো. মাজেদ মোল্লা জানান, মেয়র মহোদয়ের নির্দেশে পবিত্র মাহে রমজানে কঠোরভাবে বাজার মনিটরিং করছে কেসিসি। বাজারে যেহেতু ব্রয়লারের দাম বাড়তির ব্যাপারে বলা হয়েছে, এ ব্যাপারে বাজার মনিটরিং করা হবে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার ও সংরক্ষণ অধিদপ্তর খুলনা অঞ্চলের উপ-পরিচালক মো. ইব্রাহিম হোসেন জানান, ভোক্তার অধিকার নিশ্চিত করাই আমাদের প্রধান কাজ। জাতীয় ভোক্তা অধিকার ও সংরক্ষণ অধিদপ্তর নিয়মিত বাজার মনিটরিং, ভেজাল, মূল্য প্রদর্শন, পচাবাসী খাবার, মানহীন পণ্য, মেয়াদউত্তীর্ণ পণ্যসহ বিবিধ বিষয়ে অভিযান পরিচালনা করে থাকে। চলতি রমজানে আমরা নিয়মিত বিভিন্ন বাজারে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করছি। ইতোপূর্বেও আমরা নানামুখী বিষয়ে অভিযান পরিচালনা করেছি। নতুন করে আবার মুরগির দাম বৃদ্ধির ব্যাপারে আমরা মার্কেট মনিটরিং করব। দামের কারসাজিতে যারা যুক্ত থাকবেন তাদের ব্যপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ব্যাপারে খুলনা জেলা প্রশাসক খন্দকার ইয়াসিন আরেফীন জানান, আগের থেকে মুরগির দাম বেশ কমে এসেছিল। তবে যেহেতু নতুন করে বাড়তির দিকে যাচ্ছে, আমরা আবার মনিটরিংয়ের কাজ শুরু করবো।
আরও পড়ুন: খুলনায় খামারে দাম কমলেও বাজারে কমেনি পোলট্রি মুরগির দাম
শখের পোষা পাখি এখন তামিমের আয়ের উৎস
দোতলা বাড়ির ছাদে টিনের ছাউনির ঘর। ঘরের চারপাশ কাঠ ও তারের নেট দিয়ে ঘেরা। খামারের ভেতর কবুতরের পাশাপাশি রয়েছে বিভিন্ন জাতের পাখি। পাখির কিচিরমিচিরে বাড়িটি সবসময় মুখরিত থাকে।
বাসার কাছে আসতেই শোনা গেল পাখির কলরব। ছাঁদে গিয়ে আটকে গেল চোখ। সুন্দর পরিচ্ছন্নভাবে সাজানো পাখির খাঁচা।পাখিগুলোর মধ্যে কোন কোন পাখি ওড়াওড়ি করছে। কোন পাখি বানাচ্ছে বাসা। মনোরম সব দৃশ্য দেখতে পাখিপ্রেমীরা আসছেন এই পাখির খামারে। কেউ কেউ আবার পাখি কিনছেনও।
খামারটি তামিমের। তামিম এখানে পরিচিত ‘পাখি তামিম’ নামে।
তামিম ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল পৌরশহরের বাসিন্দা মো. মোকসেদ আলীর ছেলে। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট সে। ঢাকা কলেজ থেকে মাস্টার্স শেষ করেছেন তিনি।
তামিম জানান, পাখির প্রতি ভালোবাসা থেকেই ২০১৪ সালে অনার্সে পড়ার সময় ঢাকার কাঁটাবনের একটি পাখির খামার থেকে প্রথমে দুটি বাজরিগার পাখি নিয়ে এসে বাসার ছাদে একটি খাঁচায় রাখেন। পরবর্তীতে সেই পাখি বাচ্চা দিলে সেটিকে বড় পরিসরে করার চিন্তা করেন তামিম।
আরও পড়ুন: শখের বসে গৃহিণী থেকে সফল খামারি
মোবাইলে রপ্তানি আয় ও রেমিটেন্স আনতে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন
মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) প্রদানকারীদের প্রত্যাবাসন (বৈদেশিক মুদ্রা স্থানীয় মুদ্রায় রূপান্তর) রপ্তানি আয় এবং অভ্যন্তরীণ রেমিটেন্সের লেনদেনে অনুমতি দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
তথ্য প্রযুক্তি সক্ষম পরিষেবা (আইটিইএস) রপ্তানির কারণে সমস্ত অনুমোদিত ডিলার এমএফএস প্রদানকারীদের ইনওয়ার্ড রেমিটেন্সের বিপরীতে নগদকরণ সনদপত্র প্রদান করবে।
বৈদেশিক মুদ্রা প্রাপ্তি সহজতর করতে বাংলাদেশ ব্যাংক একটি নির্দেশনা জারি করে।
আরও পড়ুন: আইএমএফের হিসাবে আরও কমে যাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ!
এতে বলা হয় যে বৈদেশিক মুদ্রার সমস্ত অনুমোদিত ডিলার এবং সমস্ত লাইসেন্সপ্রাপ্ত এমএফএস প্রদানকারীকে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত একাধিক দেশে চালু ওপিজিএসপিএস বা ডিজিটাল ওয়ালেট অথবা অ্যাগ্রিগেটর এবং আইটিইএসকে রপ্তানি আয় আহরণের অনুমতি দেয়া হয়েছে।
বুধবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ এই প্রজ্ঞাপন জারি করে এবং তা অবিলম্বে বাস্তবায়নের জন্য অনুমোদিত ডিলার এবং এমএফএস প্রদানকারীদের কাছে পাঠিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে যে সেটেলমেন্ট অ্যাকাউন্ট রক্ষণাবেক্ষণকারী অনুমোদিত ডিলাররা ইলেকট্রনিকভাবে এমএফএস প্রদানকারীদের অনুরোধের ভিত্তিতে অভ্যন্তরীণ রেমিটেন্সের সমর্থনে নগদকরণ সনদপত্র প্রদান করবে।
এক্ষেত্রে অনুরোধটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৈরি হওয়া তথ্য-সুবিধাভোগীর নাম, ওয়ালেট অ্যাকাউন্ট নম্বর, টাকার পরিমাণ, ক্রেডিট তারিখ- বিদেশে রেমিটেন্স পরিষেবা প্রদানকারীকে সমর্থন করা প্রয়োজন।
তথ্য সম্পর্কিত তাদের নিজস্ব স্ক্রীনিং প্যারামিটারের ওপর ভিত্তি করে মনোনীত অনুমোদিত ডিলাররা এমএফএস প্রদানকারীদের মাধ্যমে সুবিধাভোগীদের কাছে অ্যাক্সেসযোগ্য কিউআর কোডসহ একটি ইলেকট্রনিক নগদকরণ সনদপত্র (ঘের এ অনুযায়ী) তৈরি করবে।
সনদপত্রটি শুধুমাত্র আয়করের উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা।
আরও পড়ুন: ব্যাংকে অতিরিক্ত তারল্য আছে ১.৬৯ লাখ কোটি টাকা: বাংলাদেশ ব্যাংক
কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ঋণের সীমা তুলে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক
বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ প্রবাহ ২৪.৩৮% কমেছে: ইআরডি
বিগত অর্থবছরের তুলনায় চলতি (২০২২-২০২৩) অর্থবছরের জুলাই-আগস্টে বাংলাদেশে বৈদেশিক ঋণ প্রবাহ ২৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ কমেছে। যা ৮৬ দশমিক ৪৩ কোটি মার্কিন ডলার।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সর্বশেষ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বাংলাদেশ চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) ৮৬ দশমিক ৪৩ কোটি মার্কিন ডলার পেয়েছে, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল এক দশমিক ১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা বৈদেশিক ঋণের ২৪ দশমিক ৩৮ শতাংশ হ্রাস দেখায়।
বিগত আর্থিক বছরের ধারাবাহিকতায় ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে বৈদেশিক ঋণের প্রবাহে লাফ দেয়া শুরু করেছিল। চলতি অর্থবছরের প্রথম জুলাই মাসে প্রায় ৪৯ কোটি মার্কিন ডলার বৈদেশিক ঋণ দেশে এসেছে যা গত বছরের জুলাইয়ের তুলনায় ৪৮ দশমিক ৫০ শতাংশ বেশি।
কিন্তু, আগস্টে তা কিছুটা হোঁচট খেয়েছে। দাতারা এ মাসে ৩৭ দশমিক ৬৩ কোটি মার্কিন ডলার পাঠানো বন্ধ করেছে। যা আগের মাসের তুলনায় প্রায় ২৩ শতাংশ কম।
আরও পড়ুন: ট্রেড লাইসেন্স ছাড়াই ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারবে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা: বিবি
করোনা মহামারির পরে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে উল্টে যাওয়া বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে স্বল্প সুদে বৈদেশিক ঋণ পাওয়ার রেকর্ড গড়েছে। দাতারা এই অর্থবছরে ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি বৈদেশিক ঋণ মওকুফ করেছে।
বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের শাখা ইআরডি বিদেশি ঋণ মওকুফের এই তথ্য প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যায় যে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) দাতাদের কাছ থেকে ৮৬ দশমিক ৪৩ কোটি মার্কিন ডলার গৃহীত হয়েছে। এর মধ্যে প্রকল্প সাহায্য এসেছে ৮৩ দশমিক ২৯ কোটি মার্কিন ডলার। আর প্রাপ্ত অনুদান হল তিন দশমিক ১৪ কোটি মার্কিন ডলার।
আরও পড়ুন: আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার পদ্ধতি
গত বছরের একই সময়ে প্রকল্প সহায়তা ছিল এক দশমিক ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এর মধ্যে অনুদান এসেছে তিন দশমিক ৪২ কোটি মার্কিন ডলার।
উল্লেখ্য, ২০১৭-১৮ অর্থবছর থেকে বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ বাড়তে থাকে। একই বছরে বৈদেশিক ঋণ এক লাফে তিন বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বেড়ে ছয় দশমিক ৩৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে উন্নীত হয়েছে। তারপর ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ঋণ ছিল ছয় দশমিক ৫৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
আরও পড়ুন: শেয়ার বাজার কারসাজিকারীকে চিহ্নিত করতে ৬-১২ মাস সময় লাগে: বিএসইসি চেয়ারম্যান
চাকরির পাশাপাশি অনলাইনে কাজ করে বাড়তি আয়ের উপায়
কর্মক্ষেত্রের প্রতিটি বিভাগে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা বৃদ্ধির দরুণ স্থায়ী চাকরির পাশাপাশি খণ্ডকালীন বা চুক্তি ভিত্তিক কাজের মাধ্যমে বাড়তি আয়ের তাগিদও বেড়ে চলেছে। শুধুমাত্র একটি চাকরি দিয়ে জীবনযাত্রার নিত্য প্রয়োজনীয় মৌলিক পণ্য বা সেবার মূল্যের উর্ধ্বগতির চাপ সামলানো প্রতিদিনি কঠিনতর হচ্ছে। এমতাবস্থায় অনলাইনে আয়ের উপায়গুলো যেন আলোকবর্তিকা হয়ে এসেছে। এতে শুধু সংসারের বাড়তি খরচে যে সহায়তা হচ্ছে তা নয়, যাবতীয় খরচ মিটিয়ে সঞ্চয়ের জন্যও ব্যবস্থা হচ্ছে। এমনকি স্থায়ী চাকরিটির বদলে অনলাইন কাজটিকে গ্রহণ করা যাচ্ছে স্থায়ীভাবে। চলুন, জেনে নেয়া যাক- অনলাইনে কাজ করে বাড়তি আয়ের উপায়গুলো সম্পর্কে।
চাকরির পাশাপাশি অনলাইনে অর্থ উপার্জনের ১০টি উপায়
একটি ইউটিউব চ্যানেল খোলা
এক সময় সাইড জব হিসেবে সেরা উপায় হলেও ইউটিউবিং এখন ক্যারিয়ারে পরিণত হয়েছে। প্রতিযোগিতা বেড়ে যাওয়ার দরুণ এখন দিনের প্রায় পুরোটা সময় দিতে হয় একটি ইউটিউব চ্যানেলের পেছনে। তবে ভ্লগ শুরুর মাধ্যমে দিনের একটি ছোট অংশ অতিবাহিত করে এখনো ইউটিউবে সফল হওয়া যায়। ভ্লগ ভিডিওগুলো মুলত কন্টেন্ট নির্মাতার নিত্যদিনের বিভিন্ন কার্যকলাপ নিয়ে জড়িত থাকে। তাই শুধুমাত্র একটি স্মার্টফোন থাকলেই নিজের কর্মকান্ডগুলো রেকর্ড করে ইউটিউবে আপলোড করে দেয়া যায়।
পোস্ট প্রোডাকশন এবং ভিডিও ইডিটের কাজ কম থাকায় এধরণের ভিডিওগুলো কম সময়ে বেশি পরিমাণে বানানো যায়। তাই টার্গেট কীওয়ার্ডগুলোও তুলনামুলক কম সময়ের মধ্যে ভিডিওগুলোকে দর্শকদের নিকট জনপ্রিয় করে তুলতে পারে। গুগল অ্যাডসের রেভেনিউ শেয়ারিং পদ্ধতি ছাড়াও এরকম ভ্লগাররা এখন বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রচারের মাধ্যমেও বেশ ভালো পরিমাণ অর্থ উপার্জন করে থাকে।
আরও পড়ুন: যে ১০টি সফটওয়্যার জানা থাকলে চাকরি পেতে সুবিধা হবে
অনলাইন রিসেলিং
খুব সহজ করে বলতে গেলে অপেক্ষাকৃত কম দামে কোন কিছু কিনে তা বেশি দামে বিক্রি করাটাই রিসেলিং। এটা কোন নতুন বিষয় নয়, বরঞ্চ নেট দুনিয়ায় বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার কারণে ব্যবসায়ের এই পুরনো উপায়টি অনেক সহজ হয়ে গেছে। এখানে শুরুতেই মার্কেট রিসার্চ করে দুটো বিষয়ে সম্যক ধারণা নিতে হবে।
প্রথমটি হলো কোথায় কম দামি জিনিসপত্র পাওয়া যায় এবং দ্বিতীয়টি হলো অনলাইন মার্কেটে সেই জিনিসগুলোর সর্বোচ্চ বিক্রয়মূল্য কেমন। ইবে, অ্যামাজন, ইটসি, র্যাকুটেন হলো বর্তমানে রিসেলিং-এর জন্য জনপ্রিয় মার্কেটপ্লেস।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
বেশ পুরনো এই ব্যবসায়িক পদ্ধতিটির জন্য অর্থ ও কৌশলের সঠিকভাবে প্রয়োগ করা দরকার। ডিজিটাল ব্যবসার জগতে এই লিঙ্ক শেয়ারিং ভিত্তিক ধারণাটি ব্যবসার চিরাচরিত সূত্র মেনে চলে। স্বল্প মূল্যের পণ্যের উপর লাভ পেতে হলে বেশি গ্রাহক পেতে হবে। আর বেশি দামের পণ্যের জন্য সীমিত কিছু গ্রাহক হলেই চলবে।
আরও পড়ুন: ইনস্টাগ্রাম থেকে আয় করবেন যেভাবে
এখানে মার্কেটাররা পণ্য তৈরিকারকদের নিকট থেকে পণ্যের লিঙ্ক নিয়ে পুরো ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়। লিঙ্কে ক্লিক করে পণ্যটি কেনার সম্ভাবনার উপর ভিত্তি করে মার্কেটাররা লিঙ্কটির ডিজিটাল মার্কেটিং-এর উপর অর্থ বিনিয়োগ করেন। অতঃপর চূড়ান্ত ভাবে পণ্য বিক্রি হলে তারা পূর্ব নির্ধারিত স্বয়ংক্রিয় সিস্টেম অনুযায়ী তার একটা নির্দিষ্ট শতাংশ লাভ করেন। এই শতাংশ লাভের চুক্তিটি এককালীন অথবা প্রতি মাসে পুনরাবৃত্তি হতে পারে।
উভয় ক্ষেত্রেই পণ্যের লিঙ্ক শেয়ারের সিস্টেমটি একবার চালু করে দিলেই পরবর্তীতে আর কাজ করার প্রয়োজন হয় না। গভীর রাতে মার্কেটার যখন ঘুমিয়ে তখন পৃথিবীর কোন না কেনা প্রান্তে কেউ একজন পণ্যটির লিঙ্কে ক্লিক করে তা কিনে ফেলে।
অনলাইনে ফটো বিক্রি
ইন্টারনেট ফটোগ্রাফারদের ছবি শেয়ারের জন্য পুরো জগৎটাকে হাতের মুঠোয় এনে দিয়েছে। এর জন্য যে শুধু ডিএসএলআর ক্যামেরা থাকতে হবে তা নয়। মোবাইল ফটোগ্রাফিকেও এখানে আলাদা ভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়। ছবি তুলে মার্কেটপ্লেসগুলোতে আপলোড করার পর শুরু হয় তার প্রচারণার কাজ। এখানে ডিজিটাল মার্কেটিং বেশ কার্যকরি ভূমিকা পালন করে।
আরও পড়ুন: আপনার স্মার্টফোন দিয়ে আয় করার সেরা কিছু উপায়!
অবশ্য এক যুগ আগে মার্কেটিং-এর প্রয়োজন হতো না। ওয়েবসাইটে আপলোড করার পরেই ক্রেতারা ছবি কেনার জন্য ভিড় জমাতো। এখনো জমায় বৈকি; কিন্তু ফটোগ্রাফারদের সংখ্যা মাত্রাতিরিক্ত হওয়ায় নতুনদের জন্য মার্কেটিং অবধারিত হয়ে পড়ে। অ্যাডোবি, শাটারস্টক, বিগস্টকফটোর মত সাইটগুলো ছবি বিক্রির জন্য প্রথম সারির মার্কেটপ্লেস।
চাকরির দক্ষতা কাজে লাগিয়ে ফ্রিল্যান্সিং
চাকরির পাশাপাশি অনলাইনে কাজ করে বাড়তি আয়ের লক্ষ্যে চাকরির দক্ষতাটিই হতে পারে মুল হাতিয়ার। এক্ষেত্রে কম্পিউটার বিজ্ঞান, সফ্টওয়্যার প্রযুক্তি এবং আইটি(ইনফরমেশন টেকনোলজি) সেক্টরের কর্মচারিরা সবার থেকে এগিয়ে থাকেন। কেননা এই সেক্টরের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কাজগুলোই অনলাইনে বেশ চওড়া দাম উঠে। ছোট একটা মোবাইল অ্যাপ বানিয়েই বেশ ভালো পরিমাণ আয় করতে পারেন সফ্টওয়্যার ডেভেলপাররা।
অ-প্রযুক্তিগত বিভাগেও স্পেশালিস্টরা পিছিয়ে থাকেন না। হিসাব রক্ষক, আইন বিষয়ক কন্সালটেন্ট, অনুবাদক, ভয়েস-ওভার-আর্টিস্ট, কন্টেন্ট রাইটাররা তাদের দক্ষতার ভিত্তিতে উপার্জন করে থাকেন। ফ্রিল্যান্সিং কাজের জন্য আপওয়ার্ক, ফাইভার, ফ্রিল্যান্সার ডট কম, এমনকি ফেসবুকের মত সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোতেও আনাগোনা হয় ফ্রিল্যান্সারদের।
আরও পড়ুন: চাকরির সিভি ও পোর্টফোলিও তৈরির প্রয়োজনীয় কিছু ওয়েবসাইট
পডকাস্ট শুরু করা
বিস্ময়কর হলেও সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অডিওবুক প্রকাশ করা পডকাস্ট সাইটগুলো অত্যন্ত জনপ্রিয়তা পেয়েছে। একটি পডকাস্টের জন্য প্রয়োজন হয় ভালো কন্ঠ, মাইক্রোফোন এবং কম্পিউটার। কি বলা হচ্ছে তা কতটুকু সাড়া ফেলবে তা নির্ভর করছে অডিও কন্টেন্ট এবং কথকের কন্ঠের মাধুর্যতার উপর।
পডকাস্টগুলো অর্থ উপার্জন করে বিজ্ঞাপন থেকে, তাই শ্রোতা সংখ্যা যত বাড়বে অর্থ উপার্জনও তত বেশি হবে। আর ঠিক এই জায়গাতেই আসে ডিজিটাল মার্কেটিং-এর চাহিদা। বিখ্যাত পডকাস্টাররা সব সময় অ্যাপলের আইটিউনকে নির্বাচন করে থাকে। এছাড়াও শীর্ষস্থানীয় পডকাস্ট প্রকাশনার মধ্যে আছে বাযস্প্রাউট, ক্যাপটিভেট, এবং ট্রানজিস্টর-এর মত সাইটগুলো।
সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজার
যেহেতু গোটা বিশ্বই বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া জ্বরে আক্রান্ত, তাই এই রোগীদের দিকেই সব সময় দৃষ্টি থাকে সব ধরনের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোর। ব্যবহারকারিদের সব সময় নিজেদের কন্টেন্টের প্রতি আকৃষ্ট রাখতে বিপুল বিনিয়োগ করে থাকে অনলাইন ব্যবসাগুলো। আর এই আকৃষ্ট রাখার কাজগুলোর ব্যবস্থা করেন সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজাররা।
আরও পড়ুন: অনলাইনে চাকরির ইন্টারভিউ দিতে প্রয়োজনীয় পাঁচ অনলাইন প্ল্যাটফর্ম
সোশ্যাল মিডিয়া প্রোফাইল থেকে শুরু করে পেজ, গ্রুপ, পোস্ট পরিচালনার পাশাপশি গ্রাহকদের সাথে রিয়েল টাইম চ্যাটে অংশ নেয়ার কাজগুলো করে থাকে এই ম্যানেজাররা। ফ্রিল্যান্সিং কাজগুলো মধ্যে অন্যতম প্রধান কাজ এটি। শীর্ষস্থানীয় মার্কেটপ্লেসগুলো ছাড়াও এই কাজগুলোর দেখা মেলে ইন্ডিড, লিঙ্ক্ডইন, মডস্কোয়াড, এমনকি স্বয়ং ফেসবুকেও।
ডিজিটাল পণ্য বিক্রি
যে কোন ভিডিও, অডিও, গেম, অ্যাপ্স, ওয়েব টেমপ্লেট, প্লাগ-ইন্স এবং যে কোন বইয়ের ডিজিটাল সংস্করণ ডিজিটাল পণ্যের অন্তর্ভূক্ত। প্রায় সময় তৈরিকারকরা তাদের বানানো ডিজিটাল পণ্যটি প্রচারের জন্য মার্কেটারদের সরণাপন্ন হন। প্রতি বিক্রিতে স্বল্প শতাংশ প্রদানের ভিত্তিতে পণ্য নির্মাতা ও মার্কেটারদের মধ্যে ব্যবসায়িক চুক্তি হয়।
অর্থাৎ অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং-এর মাধ্যমে এই বিক্রির কাজ হয়ে থাকে। আর যারা কিনে থাকেন তারা ব্যবহার করেন পণ্য রিসেলিং পদ্ধতি। এ ধরণের পণ্যের জন্য শীর্ষস্থানীয় মার্কেটপ্লেসগুলোর মধ্যে আছে ইটসি, শপিফাই, ইনভাটোর মত সাইটগুলো।
আরও পড়ুন: চাকরি প্রার্থীদের সফল সিভি তৈরির কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস
ওয়েবসাইট এবং অ্যাপ পরীক্ষা করুন
বিভিন্ন অনলাইন ব্যবসাগুলো তাদের অ্যাপ এবং ওয়েবসাইট উন্নত করতে তাদের টার্গেটকৃত অডিয়েন্সের প্রতিক্রিয়া যাচাই করে থাকে। এই প্রতিক্রিয়া জানানোর ব্যাপারটি সাইট বা অ্যাপটি পরীক্ষা করার মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। এই কাজের জন্য টেস্টারের একটি কম্পিউটার, একটি ওয়েবক্যাম, একটি মাইক্রোফোন এবং একটি ভাল ইন্টারনেট সংযোগ থাকা বাঞ্ছনীয়।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্ল্যাটফর্ম-প্রদত্ত সফ্টওয়্যারগুলো ব্যবহার করে স্ক্রিন রেকর্ড দেখাতে হয়। ওয়েবসাইট বা অ্যাপটি চালানোটা সহজ কিনা তা পরীক্ষার ফলাফল হিসেবে পরিবেশন করতে হয়। ইউজার-টেস্টিং, ইউজারফিল, ইউজারলিটিক্স প্রভৃতি সাইটগুলো এ ধরনের কাজ সরবরাহ করে থাকে।
ওয়েবসাইট তৈরি করা
মুল ধারণাটি হলো ওয়েবসাইট তৈরি করে গুগল সার্চ ইঞ্জিনে র্যাঙ্ক করে গুগল অ্যাডসেন্সের মাধ্যমে আয় করা। কিন্তু এখানে সুক্ষ্ম দুটি পার্থক্য আছে। প্রথমটি হলো এই ওয়েবসাইট এক পেজের হয়। আর দ্বিতীয়টি হলো অন্যান্য ওয়েবসাইটের মত এখানে হাজার হাজার কন্টেন্টের প্রয়োজন হয় না। শুধু দরকার হয় নির্দিষ্ট কিছু অডিয়েন্সকে একটি সুনির্দিষ্ট সেবা প্রদান। যেমন গুগলে সার্চ করলে এমন অনেক এক পেজের সাইট পাওয়া যাবে যেগুলোর কোনটা শুধু বড় ছবিকে ছোট করছে, অথবা কোন ওয়েব পেজের লিঙ্ককে ছোট করছে।
আরও পড়ুন: কর্ম জীবনে উন্নতির জন্য কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকতেই কিভাবে প্রফেশনাল নেটওয়ার্ক তৈরি করবেন
এধরনের ওয়েবসাইটগুলোতে খুব অল্প সময়ের মধ্যে লক্ষ লক্ষ ভিউ পাওয়া যায়। এগুলোর কীওয়ার্ড সীমিত কিন্তু সুনির্দিষ্ট থাকে বিধায় গুগল অ্যাডসেন্স থেকে বেশ ভালো পরিমাণ আয় করা যায়। এর জন্য প্রয়োজন একজন ওয়েব ডেভেলপার এবং একজন ডিজিটাল মার্কেটার। নিয়মিত আয়ের একটি ধারা তৈরি করতে এটি একটি সেরা বিনিয়োগ হতে পারে।
পরিশিষ্ট
চাকরির পাশাপাশি অনলাইনে কাজ করে বাড়তি আয়ের এই উপায়গুলো মানুষের জীবনে অভাবনীয়ভাবে স্বচ্ছলতা এনে দিচ্ছে। তবে অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোতে ভিড় বাড়ার সাথে সাথে কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা পূর্বাপেক্ষা জটিলতর হয়ে উঠছে। এছাড়াও প্রযুক্তির দ্রুত অগ্রসর হওয়ার কারণে আগের চেয়ে অধিক হারে অনেক কাজের চাহিদা কমে যাচ্ছে। তবে ভালো দিক হলো- অনেক নতুন নতুন কাজের ক্ষেত্রও তৈরি হচ্ছে। কিন্তু সেগুলোতে প্রয়োজন পড়ছে যথেষ্ট ব্যবহারিক দক্ষতার। মুলত অনলাইন টুল্সগুলো জীবনকে সহজ করলেও অফলাইনের মত এ জায়গাগুলোতেও সফলতা কিন্তু রাতারাতি সম্ভব নয়। অর্থের পরিমাণ কম লাগলেও অনলাইনে আর্থিক স্বচ্ছলতার জন্য যথেষ্ট মেধা, শ্রম এবং সময় বিনিয়োগের কোন বিকল্প নেই।
আরও পড়ুন: কর্মজীবনে সাফল্যের জন্য কিভাবে নিজেকে গ্রুমিং করবেন?
রপ্তানি আয় ১০ মাসে রেকর্ড ৪৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়াল
চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে বাংলাদেশের রপ্তানি আয় ৩৫ দশমিক ১৪ শতাংশ বেড়ে ৪৩ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হয়েছে যা ২০২১ অর্থবছরের চেয়ে ১২ শতাংশ বেশি।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) চলতি অর্থবছরে ৫১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রমের মাইলফলক তৈরি করবে বলে আশা করছে।
সোমবার প্রকাশিত ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, এপ্রিলে এক মাসে পণ্য ও সেবা রপ্তানি করে বাংলাদেশি উদ্যোক্তারা চার দশমিক ৭৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছেন।
আরও পড়ুন: নেপালে বিদ্যুৎ রপ্তানির পাশাপাশি আমদানির প্রস্তাব বাংলাদেশের
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সত্ত্বেও কোভিড-১৯ মহামারি পরবর্তী সময়ে বিশ্ববাজারে তৈরি পোশাকের ক্রমবর্ধমান চাহিদার কারণে দেশের উদ্যোক্তারা এই রেকর্ড অর্জন করেছেন।
এ ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি অর্থবছরের শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো ৫১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে রপ্তানি বাণিজ্যে ইতিহাস সৃষ্টি করবে।
আরও পড়ুন: রপ্তানি বাড়াতে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পকে অগ্রাধিকার দিচ্ছে সরকার: প্রধানমন্ত্রী
উচ্চ রপ্তানি আয়ের একক মাস হিসেবে এপ্রিল বাংলাদেশের ইতিহাসে চতুর্থ সর্বোচ্চ মাস।
চলতি অর্থবছরের ডিসেম্বরে সর্বোচ্চ আয় ছিল চার দশমিক ৯০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ছিল জানুয়ারিতে চার দশমিক ৭৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। মার্চে ছিল চার দশমিক ৭৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার যা ফেব্রুয়ারিতে চার দশমিক ২৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছিল।
আপনার স্মার্টফোন দিয়ে আয় করার সেরা কিছু উপায়!
স্মার্টফোনের প্রতিনিয়ত উন্নয়নের কারণে মোবাইল ফোন দিয়ে আয় করার ব্যাপারটা ক্রমেই সহজ হয়ে উঠছে। উপযোগী বিকল্প হিসেবে ডেস্কটপ কম্পিউটারের স্থান দখল করে নিচ্ছে মোবাইল ফোনগুলো। প্রতিটি ওয়েবসাইটের ডেস্কটপ ভার্সনের পাশাপাশি মোবাইল ভার্সনও হরহামেশাই দেখা যাচ্ছে।
ওয়েব অ্যাপলিকেশনগুলো স্মার্টফোনের ওপর অধিক গুরুত্ব দেয়ায় আপনি পৃথিবীর যেকোনও জায়গা থেকে আপনার ব্যবসা পরিচালনা করতে পারছেন। মুহূর্তেই যোগাযোগ করতে পারছেন আপনার গ্রাহক ও ব্যবসায়িক পার্টনারদের সাথে।
আর এরই ধারাবাহিকতায় তৈরি হচ্ছে নতুন আয়ের উৎস। কিন্তু তৃতীয় বিশ্বের বিপর্যস্ত আর্থ-সামাজিক অবস্থার পাশাপাশি আয়-রোজগার নিয়ে মানুষের সংকীর্ণতার কারণে সৃষ্টি হচ্ছে কিছু ভুল ধারণা। ফলশ্রুতিতে যারা অনলাইনে ক্যারিয়ার গড়ার চেষ্টা করছেন তাদের অধিকাংশই পরিচালিত হচ্ছে ভুল পথে।
মোবাইল ফোন দিয়ে আয় করার সঠিক উপায়
আপনাকে অবশ্যই এমন কাজ বাছাই করতে হবে যা করার মাধ্যমে আপনি একটি নির্ভরযোগ্য ক্যারিয়ার গড়তে পারেন। যে কাজটি করার মধ্য দিয়ে আপনার একটি পরিচয় তৈরি হবে। সর্বোপরি অবশ্যই খেয়াল রাখবেন যে সেই কাজটির চাহিদা যেন কখনোই শেষ হয়ে না যায়। চলুন, অনলাইনে এরকম কিছু কাজের কথা জেনে নিই।
ইউটিউব ভিডিও তৈরি
অনলাইন কন্টেন্ট মূলত ৪ প্রকার। টেক্সট, ছবি, অডিও এবং ভিডিও। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো ভিডিও কন্টেন্ট। আপনি যে বিষয়ে পারদর্শী তা নিয়ে একটি সুন্দর ভিডিও বানিয়ে ইউটিউবে আপলোড করতে পারেন। মোটামোটি ভালো ক্যামেরার একটি স্মার্টফোন আর আপনার সৃজনশীলতা যথেষ্ঠ ইউটিউবে ভিডিও বানানোর জন্য। এর জন্য আপনার একটি ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করতে হবে। আর আয়ের জন্য কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। তা হলো ১০০০ সাবস্ক্রাইবার এবং গত এক বছরের মধ্যে ৪০০০ ওয়াচ আওয়ার। অর্থাৎ বিগত ১ বছরে দর্শকরা যে সময় নিয়ে আপনার ভিডিও দেখবে তার মোট সময় হতে হবে ৪০০০ ঘন্টা। এরপর থেকেই আপনার চ্যানেলটি আয়ের জন্য উপযুক্ত হয়ে যাবে। ইউটিউবের নির্দেশনা মেনে আপনার ভিডিও কন্টেন্ট ভালো হলে খুব দ্রুতই আপনি একজন ইউটিউবার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে সাইবার বুলিংয়ের শিকার হলে কি করবেন?
অনলাইনে লেখালেখি
টেক্সট কন্টেন্ট ভিডিওর থেকে তুলনামূলকভাবে অনেক নিচের দিকে হলেও সার্চ ইঞ্জিনের জন্য এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই অনলাইনে কন্টেন্ট রাইটারদের চাহিদাও প্রচুর। মোবাইল দিয়ে বিভিন্নভাবে আপনি এই কন্টেন্ট রাইটিং করতে পারেন।
ব্লগিং
আপনার ভালো লাগার বিষয়টি নিয়ে আপনি নিজের একটি ব্লগ তৈরি করতে পারেন। ফ্রিতে শুরু করতে চাইলে আপনি Blogger.com ব্যবহার করতে পারে। এটি গুগলের একটি সার্ভিস এবং সবচেয়ে ইউজার ফ্রেন্ডলি। ব্লগ থেকে ইনকাম আসে গুগল অ্যাডসেন্সের রেভেনিউ শেয়ারের মাধ্যমে। আপনার ব্লগে দেখানে অ্যাডগুলোতে আপনার ব্লগের দর্শক বা পাঠকরা ক্লিক করলেই আপনার আয় হতে থাকবে।
নিজস্ব ব্লগ ছাড়াও আপনি অন্য ব্লগে লেখালেখি করে আয় করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই জানতে হবে কিভাবে কন্টেন্ট রাইটিং করতে হয়। মোবাইল দিয়ে কন্টেন্ট রাইটিং প্রথমে একটু কষ্টসাধ্য হলেও পরবর্তীতে আয়ত্ত্বে চলে এলে আপনি খুব সহজেই ব্লগিং করতে পারবেন। অফ পেজ এসইও’র একটি বড় অংশ এই গেস্ট ব্লগিং।
সোশ্যাল মিডিয়াতে লেখালেখি
ফেসবুক, টুইটারের মত জনপ্রিয় অনলাইন সোশ্যাল মিডিয়াগুলোতে মোবাইল দিয়ে লেখালেখি করে আয় করতে পারেন। অবশ্য আপনার একটি নিজস্ব ব্লগ থাকলেও তার প্রচারের স্বার্থে সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করতে হয়। ফেসবুকে আপনার নিজস্ব একটি পেজ বা গ্রুপ খুলে তাতে লেখালেখি
করতে পারেন। সব সময় খেয়াল রাখবেন, আপনার বিষয়বস্তু যেন অবশ্যই আপনার পাঠকদের উপকারে আসে।
ছবি বিক্রি
আপনার হ্যান্ডসেটটির যদি খুবই ভালো মানের ক্যামেরা থাকে, তাহলে এই মোবাইল দিয়ে ছবি তুলে ছবি বিক্রি করে টাকা ইনকাম করতে পারবেন। অনলাইনে এরকম বেশ কিছু ওয়েবসাইট আছে যেগুলোতে ছবি বিক্রি করা যায়। তাছাড়া ফটোগ্রাফি আপনার প্রিয় কাজ হলে শুধুমাত্র এই ছবি দিয়ে আপনি অনেক টাকা আয় করতে পারবেন। আপনি বিভিন্ন ফটোগ্রাফি কন্টেস্টেও অংশগ্রহণ করতে পারেন।
আরও পড়ুন: নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত হবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২: মোস্তাফা জব্বার
ডেলিভারি সার্ভিস
আমাদের দেশে ই-কমার্স ব্যবসাগুলো বেশ জমজমাট। অনলাইনে খাবারের ব্যবসা থেকে শুরু করে এমন আরও অনেক রকমের ব্যবসা আছে, যার মাধ্যমে মানুষের কাছে হোম ডেলিভারি দিতে হয়। ফলে তাদের প্রয়োজন পড়ে ডেলিভারি ম্যান-এর। এক্ষেত্রে আপনি আপনার মোবাইলে তাদের অ্যাপ ডাউনলোড করে ডেলিভারি সার্ভিস এর কাজ টি শুরু করে দিতে পারেন।
এই কাজ টি করে আপনি প্রতিমাসে মোটামুটি ভাল মানের টাকা আয় করতে পারবেন। শহরে হলে সেই টাকার পরিমাণটা আরেকটু বেড়ে যাবে।
অনলাইন মেন্টরিং
আপনার যদি নির্দিষ্ট কোন বিষয় সম্পর্কে অগাধ জ্ঞান থাকে তাহলে আপনি তা অনলাইনের মাধ্যমে অন্যদের শিখাতে পারেন। প্রতি ব্লগারই তাদের সাইটে এরকম মেন্টরশীপের একটা আলাদা ওয়েব পেজ রাখে। এর মাধ্যমে তারা ব্যাচ তৈরি করে তাতে শিক্ষার্থীদের নিবন্ধন নেন। অতঃপর তাদের কোনও কিছু শেখানোর মাধ্যমে তারা আয় করে থাকেন। বর্তমানে অনলাইন মিটিং-এর উন্নতির ফলে এধরনের মেন্টরিং আগে থেকে অনেক সহজ হয়ে দাড়িয়েছে।
রিসেলিং ব্যবসা
অনলাইনে অনেক ই-কমার্স সাইট তাদের পণ্যগুলো রিসেলিং-এর সুবিধা দিয়ে থাকে। এখানে আপনার প্রয়োজন হবে কোনো ইনভেন্টরি, কোনো অফিস। আপনি আপনার বাসাতে থেকেই শুধু মোবাইল ফোন ব্যবহারের মাধ্যমে রিসেলিং করতে পারেন। ওয়েবসাইটে ইতোমধ্যেই আপনার জন্য সহজলভ্য পণ্যসমূহ আপলোড করা থাকে। সেখান থেকে আপনি আপনার পছন্দমত যেকোনো একটা বাছাই করে নতুন দামে বিক্রি করতে পারেন। এ থেকে লাভের অংশটাই হলো আপনার আয়। সম্প্রতি ShopUp এবং Meesho নামে রিসেলিং অ্যাপ দুটি বেশ সুনাম কুড়িয়েছে। এই ব্যবসায় সফল হওয়ার জন্য আপনার প্রয়োজন একটি উপযুক্ত অনলাইন নেটওয়ার্ক।
প্রচলিত কিছু ভুল ধারণা
ইন্টারনেট জুড়ে মার্কেটিং এর আধিক্য এবং সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের অসদ্ব্যবহারের কারণে কিছু ভুল কর্মকান্ডের দিকে অনেকেই ঝুঁকে পড়ছেন অনলাইনে আয়ের উদ্দেশ্য নিয়ে। চলুন দেখে নিই তার কিছু অংশ।
আরও পড়ুন: মোবাইলে দেখা যাবে বিটিভি, আ্যপ উদ্বোধন করলেন তথ্যমন্ত্রী
বিভিন্ন অ্যাপ থেকে আয়
অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস উভয় অপারেটিং সিস্টেমে ব্যবহারের উপযোগী করে তৈরি করা হয় অ্যাপগুলো। ফলে সিংহভাগ স্মার্টফোন ব্যবহারকারী এগুলো খুব সহজেই পেয়ে যায়।
আপনি এই অ্যাপগুলো ব্যবহার করে মাসে খুবই সীমিত পরিমাণ আয় করতে পারবেন। কিন্তু এর স্থায়ীত্ব বেশি দিন থাকে না। সবচেয়ে বড় কথা, এগুলো ব্যবহারের মাধ্যমে আপনার নিজস্ব কোন ব্র্যান্ড প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে না। আর পরবর্তীতে নতুন তৈরিকৃত এই অ্যাপগুলোর মার্কেটিং শেষ হয়ে যাচ্ছে তখন এগুলো থেকে আয়ও বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সুতরাং এগুলোর উপর নির্ভর করে আপনার অনলাইন ক্যারিয়ার তৈরি তো হচ্ছেই না বরং সাময়িক কিছু রোজগারের আশায় যে সময়টুকু আপনি এখানে দিচ্ছেন তার পুরোটাই বিফলে যাচ্ছে। কারণ এ ধরনের অ্যাপ ব্যবহার করে আপনার কোন স্কিল ডেভেলপ হবে না।
এগুলোর মধ্যে যে অ্যাপগুলো খুব বেশী ব্যবহৃত হচ্ছে সেগুলো হচ্ছে- Swagbucks, Google Opinion Rewards, Pocket Money, Current Rewards, TaskBucks, Make Money App, BTCClicks, Inboxdollars, PaidVerts, NeoBux।
এগুলোতে মূলত যে কাজগুলো করার মাধ্যমে আয় হয় তা হচ্ছেঃ সার্ভে তে অংশ নেয়া, আরেক জনকে অ্যাপটি রেফার করা, ভিডিও দেখা বা ডাউনলোড করা, গেম খেলা ও ডাউনলোড করা, অ্যাডে ক্লিক করা, সাইন-আপ এবং যে কোনো কন্টেন্ট লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার করা।
পরিশেষে
আপনি যেভাবেই মোবাইল ফোন দিয়ে আয় করার চেষ্টা করুন না কেন, সব মাধ্যমেই আপনার পরিশ্রম ও সময় দিতে হবে। কোনটাই রাতারাতি সম্ভব নয়। একদম শুরুর দিকে আপনার উচিৎ হবে যে কোনও একটি নির্দিষ্ট স্কিল রপ্ত করা। অতঃপর নিয়মিত সেই স্কিল চর্চার মাধ্যমে নিজেকে দক্ষ করে তুলতে হবে। প্রযুক্তির উত্তরোত্তর উন্নতির ফলে সবকিছু সহজলভ্য হলেও প্রতিযোগিতামূলক এই বিশ্বে টিকে থাকতে মানোন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই।
পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানিতে আয় বেড়েছে প্রায় ২১ শতাংশ: মন্ত্রী
পাট উৎপাদনের গত মৌসুমে দেশে ৭৪ দশমিক ৪৬ লাখ বেল কাঁচাপাট উৎপাদন হয়েছে। আর চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে জানুয়ারি সময়ে পাট ও পাটজাত পণ্যে ৬১৬ দশমিক ২০ মিলিয়ন ডলারের রপ্তানি আয় হয়েছে। এটি গত অর্থবছরের একই সময়ের চেয়ে ২০ দশমিক ৮২ শতাংশ বেশি।
ইনস্টাগ্রাম থেকে আয় করবেন যেভাবে
আপনি কি নতুন পোশাক পরলে, নতুন রেসিপি রান্না করলে বা ভালো কোনো রেস্তোরাঁয় গেলে অথবা নতুন কোনো জায়গায় ঘুরতে গেলে প্রায়শই ইনস্টাগ্রামে ছবি বা ভিডিও পোস্ট করতে পছন্দ করেন?