ইহুদিবিদ্বেষ
সিডনিতে গুলিতে ১৫ প্রাণহানির পর কঠোর অস্ত্র আইনের পথে অস্ট্রেলিয়া
সিডনির বন্ডি সমূদ্রসৈকতে ইহুদিদের হনুক্কা উৎসব চলাকালে গুলিবর্ষণে শিশুসহ ১৫ জন নিহতের ঘটনার পর জাতীয় পর্যায়ে আরও কঠোর অস্ত্র আইন প্রণয়নের প্রস্তাব দিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ।
এই ঘটনার তদন্তের পর জানা যায়, হামলাকারী ছিলেন দুজন। তারা পিতা-পুত্র। তাদের মধ্যে পিতার গত এক দশক ধরে অস্ত্রের লাইসেন্স ছিল এবং তিনি অস্ট্রেলিয়ার আইন অনুসারেই ছয়টি আগ্নেয়াস্ত্র সংগ্রহ করেছিলেন।
এই তথ্য সামনে আসার পর স্থানীয় সময় সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সাংবাদিকদের আলবানিজ বলেন, একজন ব্যক্তি সর্বোচ্চ কতটি আগ্নেয়াস্ত্র রাখতে পারবেন, তা পুনর্নির্ধারণ করে নতুন অস্ত্র আইনের প্রস্তাব দেওয়া হবে। এ ধরনের হামলা ঠেকাতে সরকার প্রয়োজনীয় যেকোনো পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত। আর এ জন্য কঠোর অস্ত্র আইনের প্রয়োজনীয়তাও রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘মানুষ বদলায়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে কেউ কেউ চরমপন্থা দ্বারাও প্রভাবিত হতে পারে। তাই (আগ্নেয়াস্ত্রের) লাইসেন্স কোনোভাবেই আজীবনের জন্য হওয়া উচিত নয়।’
রবিবারের ওই হামলায় অন্তত ৩৮ জন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। আর নিহত ১৫ জনের মধ্যে ১০ বছর বয়সী একটি মেয়ে ও একজন রাব্বি ছিলেন।
সৈকত-সংলগ্ন ছোট এক পার্কে ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে হাজার খানেক মানুষ উপস্থিত ছিলেন। গরমের মধ্যে ওই সন্ধ্যায় সৈকতে প্রচুর ভিড় ছিল। এরই মধ্যে গুলি চালান দুই হামলাকারী।
গণহামলা ঠেকাতে অস্ত্র আইন
অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় সৈকতটিতে সংঘটিত এই নৃশংস হামলা দেশটিতে প্রায় তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে প্রাণঘাতী গুলিবর্ষণের ঘটনা। রাইফেলের মাধ্যমে ব্যাপক হারে গুলিবর্ষণ ঠেকাতে দেশটিতে কঠোর অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন রয়েছে।
তারপরও একটি নির্দিষ্ট ধর্মীয় গোষ্ঠীর ওপর এমন বর্বরতাকে ‘ইহুদিবিদ্বেষী সন্ত্রাসবাদ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী আলবানিজ। তিনি বলেছেন, এই ঘটনা গোটা দেশের হৃদয়ে আঘাত করেছে। যত দ্রুত সম্ভব এই ধরনের নৃসংশতা ঠেকাতে পদক্ষেপ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন তিনি।
এ লক্ষ্যে স্থানীয় সময় সোমবার বিকেলে নিউ সাউথ ওয়েলসের নেতাদের নিয়ে গঠিত জাতীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে তিনি অস্ত্র আইনসংক্রান্ত প্রস্তাব উপস্থাপনের পরিকল্পনার কথা জানান। কারণ কিছু পদক্ষেপ বাস্তবায়নে রাজ্য আইনের প্রয়োগ প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন তিনি।
তার কথায়, ‘কিছু আইন রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রণয়ন করা যায়, কিন্তু আরও কিছু আইন রয়েছে যেগুলো বাস্তবায়নের এখতিয়ার রাজ্য সরকারগুলোর। আমরা চাই সবাই যেন সম্পূর্ণভাবে সমান অবস্থানে থাকে।’
নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রিমিয়ার (রাজ্য সরকারপ্রধান) ক্রিস্টোফার মিন্স আলবানিজের প্রস্তাবে ঐকমত্য পোষণ করেছেন। তিনিও মনে করেন, অস্ত্রের লাইসেন্স আজীবনের জন্য দেওয়া উচিত নয়।
রাজ্যের রাজধানী সিডনিতে সাংবাদিকদের মিন্স বলেন, ‘রাজ্যের বিদ্যমান অস্ত্র আইনে পরিবর্তন আনা হবে। এ লক্ষ্যে সংসদে একটি বিল উপস্থাপন করা হবে, যাতে এসব ভয়ংকর অস্ত্র প্রাপ্তি আরও কঠিন হয়। আমাদের সমাজে যেসব অস্ত্রের কোনো বাস্তব প্রয়োজন নেই, সেগুলোর ওপর কড়াকড়ি আরোপ করা হবে।’
৭ ঘণ্টা আগে