টেলিযোগাযোগ অধ্যাদেশ ২০২৫
টেলিযোগাযোগ অধ্যাদেশ ২০২৫-এর চূড়ান্ত অনুমোদন
ইন্টারনেট সেবাকে মৌলিক অধিকারের সমপর্যায়ভুক্ত করতে এবং এর নিরবচ্ছিন্ন প্রাপ্যতা নিশ্চিত করতে ‘বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫’-এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে সরকার।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিকেলে ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এই অধ্যাদেশের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।
তিনি জানান, এই সংশোধনের মধ্যে প্রধান কিছু প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে ইন্টারনেট বা টেলিযোগাযোগ সেবা কখনোই বন্ধ করা যাবে না। ২০১০ সালের বিতর্কিত সংশোধনের কাঠামো থেকে বেরিয়ে এসে বিটিআরসির স্বাধীনতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে। এছাড়া মন্ত্রণালয় ও বিটিআরসির ক্ষমতা ও কার্যপরিধির মধ্যে ভারসাম্য আনা হয়েছে। আগে সকল লাইসেন্স ইস্যুর অনুমোদন মন্ত্রণালয় থেকে হলেও, এখন থেকে জাতীয় পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু লাইসেন্সে মন্ত্রণালয় ইন্ডিপেন্ডেন্ট স্টাডির ভিত্তিতে অনুমোদনের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত হবে এবং অন্যান্য সকল লাইসেন্স ইস্যু করার এখতিয়ার বিটিআরসির কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়াও ডাক টেলিযোগাযোগ বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতির সভাপতিত্বে একটি ‘জবাবদিহিতা কমিটি’ গঠন করা হয়েছে।
শফিকুল আলম জানান, লাইসেন্সের আবেদন থেকে শুরু করে সিদ্ধান্ত পর্যন্ত সময় কমানো হয়েছে। এ ছাড়াও আগের আইনে বর্ণিত উচ্চ জরিমানা ও রিকারিং জরিমানা কমানো হয়েছে, যা টেলিযোগাযোগ খাতকে বিনিয়োগবান্ধব করবে বলে মনে করে সরকার।
তার দেওয়া তথ্য অনুসারে, এখন থেকে প্রতি চার মাসে বিটিআরসিকে গণশুনানি করতে হবে, তার ফলোআপ ওয়েবসাইটে রাখতে হবে এবং কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট রোধেও বিধান রয়েছে।
এছাড়া সিম ও ডিভাইস রেজিস্ট্রেশনের তথ্য ব্যবহার করে কোনো নাগরিককে নজরদারি বা অযথা হয়রানি করা আইনত ‘দণ্ডনীয় অপরাধ’ করা হয়েছে বলে জানান তিনি। বলেন, ‘স্পিচ অফেন্স’ সম্পর্কিত নিবর্তনমূলক ধারা পরিবর্তন করে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ ২০২৫-এর ধারাবাহিকতায় কেবল সহিংসতার আহ্বানকেই অপরাধের আওতাভূক্ত রাখা হয়েছে।
শফিকুল আলম বলেন, বিটিআরসির সার্বিক কার্যক্রমের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে ‘স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা কমিটি’ শীর্ষক একটি কমিটি গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ডিজিটাল অবকাঠামো সুরক্ষা প্রতারণা এবং অবৈধ কার্যক্রম প্রতিরোধের লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট বিধান ও সংযোজন করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, অধ্যাদেশে সিআইএস (সেন্টার ফর ইনফরমেশন সাপোর্ট) নামে একটি কারিগরি প্ল্যাটফর্ম গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। অধ্যাদেশে আইন উপদেষ্টাকে প্রধান করে একটি কাউন্সিল গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে। যা রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বা জনশৃঙ্খলার স্বার্থে আইনানুগ ইন্টারসেপশন সংক্রান্ত অনুবাদন প্রদান এবং সংশ্লিষ্ট কার্যাবলি সম্প্রদান করবে।
৬ ঘণ্টা আগে