ভ্লাদিমির পুতিন
বাংলাদেশে শুধু পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রই নয়, শান্তিপূর্ণ পরমাণু শিল্পও গড়ে তুলেছে রাশিয়া: পুতিন
বাংলাদেশকে ‘দীর্ঘদিনের বন্ধু ও উত্তম অংশীদার’ বলে মন্তব্য করে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, তার দেশ সমতা, পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও একে অপরের স্বার্থ বিবেচনার নীতির ভিত্তিতে বাংলাদেশকে সহযোগিতা করবে।
রূপপুর প্রকল্পের আওতায় সহযোগিতার অংশ হিসেবে তিনি বলেন, রাশিয়া বাংলাদেশের পারমাণবিক খাতের জন্য অত্যন্ত যোগ্যতাসম্পন্ন বিশেষজ্ঞদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।
পুতিন বলেছেন, পারমাণবিক সেক্টরে ক্যারিয়ার গড়তে চান এমন ৮০ জনেরও বেশি বাংলাদেশি শিক্ষার্থী ইতোমধ্যে রাশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে তাদের পড়াশোনা শেষ করেছেন এবং এ সংখ্যা বাড়তে থাকবে।
তিনি বলেন, ‘আসলে আমরা কেবল একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছি না, বরং একটি সম্পূর্ণ পারমাণবিক সেক্টর তৈরি করছি। বাংলাদেশে একটি শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শিল্প গড়ে উঠেছে এবং আমরা আপনাদের সঙ্গে মিলে এটি করছি।’
বৃহস্পতিবার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ইউনিট ১-এ রাশিয়া থেকে পারমাণবিক জ্বালানি সরবরাহ উপলক্ষে একটি আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অংশ নেন।
শুক্রবার রাশিয়ান পক্ষের দেওয়া তার বক্তৃতার ইংরেজি অনুলিপি অনুসারে রুশ প্রেসিডেন্ট বলেন, এই ফ্ল্যাগশিপ প্রকল্পটি দুই দেশের স্বার্থ পূরণ করে এবং পারস্পরিক সহযোগিতা আরও জোরদার করতে সহায়তা করে।
আরও পড়ুন: রাশিয়ার দূতাবাসের পক্ষ থেকে বাংলাদেশিদের ঈদুল আজহার শুভেচ্ছা
তিনি বলেনি, ‘অবশ্যই এটি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে এবং জ্বালানি নিরাপত্তা জোরদার করতে একটি বাস্তব ও উল্লেখযোগ্য অবদান রাখছে।’
পুতিন বলেন, ‘এই তরুণ প্রজাতন্ত্রকে স্বীকৃতি দেওয়া প্রথম কয়েকটি দেশের মধ্যে আমাদের দেশও ছিল এবং এর অর্থনীতির উন্নয়নে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলাম আমরা। পাশাপাশি আমরা প্রধান শিল্প ও জ্বালানি কাঠামোগুলো নির্মাণে সহায়তা করছি, যাতে বাংলাদেশের জনগণ এর সুফল পেতে থাকে।’
শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তির একজন স্বীকৃত বিশ্বনেতা হিসেবে তিনি বলেন, রোসাটম সবচেয়ে কঠোর নিরাপত্তা মানদণ্ডের পাশাপাশি পরিবেশগত ও সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তার উপর ভিত্তি করে সবচেয়ে উন্নত প্রকৌশল সমাধান ও প্রযুক্তি ব্যবহার করে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সির (আইএইএ) নিয়মকানুন ও সুপারিশ কঠোরভাবে মেনে নির্মাণ ও উৎক্ষেপণের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, উদ্ভিদের শারীরিক সুরক্ষা ব্যবস্থা উন্নত ও নির্ভরযোগ্য।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এই প্রকল্পে তাদের সহায়তার জন্য আইএইএ-কে ধন্যবাদ জানাতে চাই।’
পুতিন বলেছেন, স্বাভাবিকভাবেই রাশিয়ার প্রচেষ্টা কেবল স্থাপনা নির্মাণের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। ‘আমরা পারমাণবিক প্রকল্পের সমগ্র জীবনচক্র জুড়ে আমাদের বাংলাদেশি অংশীদারদের সহায়তা করব। যার মধ্যে চুল্লির জ্বালানির দীর্ঘমেয়াদি সরবরাহ, উদ্ভিদ রক্ষণাবেক্ষণ ও পারমাণবিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্যও আমাদের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।’
গত বছর থেকে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য একটি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু রয়েছে।
আরও পড়ুন: রাশিয়া থেকে রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের পণ্য নিয়ে জাহাজ মোংলা বন্দরে
সেখানে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বিশেষজ্ঞরা প্ল্যান্টে প্রাথমিক প্রযুক্তিগত প্রক্রিয়াগুলো তদারকি করবেন। এক হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি নাগরিক ইতোমধ্যে তাদের প্রশিক্ষণ শেষ করেছেন।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘তাদের প্রয়োজনীয় পেশাগত দক্ষতা এবং জ্ঞান তাদের শুধু পারমাণবিক শিল্পেই নয়, বাংলাদেশের অন্যান্য অনেক অর্থনৈতিক খাতেও নিয়োগের সুযোগ দেবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন আমাদের অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবে আমরা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের এনার্জি ইউনিট ১-এ রাশিয়ান পারমাণবিক জ্বালানি সরবরাহের একটি প্রশংসাপত্র আমাদের বাংলাদেশি সহকর্মীদের কাছে হস্তান্তর করব। এর পরে রূপপুর সরকারি পারমাণবিক সুবিধার মর্যাদা পাবে।’
প্রেসিডেন্ট পুতিন শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক শক্তি এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার প্রতি তার ব্যক্তিগত মনোযোগের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
অন্যান্য অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ছিলেন- ইন্টারন্যাশনাল অ্যাটমিক এনার্জি এজেন্সির (আইএইএ) মহাপরিচালক রাফায়েল গ্রসি; স্টেট অ্যাটমিক এনার্জি কর্পোরেশন রোসাটমের মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ; বাংলাদেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান; রূপপুর প্রকল্প পরিচালক শওকত আকবর এবং রূপপুর এনপিপি নির্মাণের একটি সাধারণ ঠিকাদারের সিইও আন্দ্রেই পেট্রোভ।
স্টেট কর্পোরেশন রোসাটম ২০১১ সালে স্বাক্ষরিত একটি আন্তঃসরকারি চুক্তির অধীনে পাবনা জেলায় পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করছে।
প্ল্যান্টটি ২৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসহ দুটি প্রজন্মের ৩+ চুল্লি নিয়ে গঠিত হবে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ সাইটে কাজ করছেন ৪ হাজারেরও বেশি রাশিয়ান নাগরিকসহ ২০ হাজার বিশেষজ্ঞ।
আরও পড়ুন: রাশিয়ার নিকট যুদ্ধের ক্ষতিপূরণ দাবির জাতিসংঘের প্রস্তাবে ভোট দেয়নি বাংলাদেশ
১ বছর আগে
ওয়াগনার প্রধান প্রিগোজিনের মৃত্যু হয়েছে বিমান দুর্ঘটনায়: রাশিয়া
ওয়াগনার প্রধান ইয়েভজেনি প্রিগোজিনের মৃত্যু বিমান দুর্ঘটনায় হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে রাশিয়ার তদন্ত কমিটি।
কমিটির মুখপাত্র স্বেতলানা পেট্রেনকো রবিবার (২৭ আগস্ট) এক বিবৃতিতে বলেছেন, ফরেনসিক ও জেনেটিক পরীক্ষার পরে দুর্ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হওয়া ১০ জনের লাশের পরিচয় শনাক্ত করা গেছে।
তবে বিবৃতিতে দুর্ঘটনার কারণ কী হতে পারে সে সম্পর্কে কোনো বিশদ বিবরণ দেওয়া হয়নি।
রাশিয়ার বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ এই সপ্তাহের শুরুতে জানায়, প্রিগোজিনসহ তার ছয়জন শীর্ষ লেফটেন্যান্ট এবং তিনজন ক্রু নিয়ে একটি বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। মস্কো এবং তার নিজ শহর সেন্ট পিটার্সবার্গের মাঝামাঝি একটি জায়গায় বিমানটি আকাশ থেকে আছড়ে পড়লে বিমানের ১০ আরোহী নিহত হন।
তবে এই দুর্ঘটনাকে একটি ‘পরিকল্পিত হত্যা’ বলে মনে করছেন অনেকেই।
কারণ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে ওয়াগনার গ্রুপের বিদ্রোহের মাত্র দুই মাস পরেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
গত ২৩-২৪ জুন বিদ্রোহের অবসান করা চুক্তিতে অভিযোগ প্রত্যাহার করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য পশ্চিমা কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছিলেন, পুতিন দীর্ঘদিন প্রিগোজিনের দিকে নজর রাখবেন।
আরও পড়ুন: বিমান দুর্ঘটনায় ওয়াগনার প্রধান প্রিগোজিনের মৃত্যু
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ‘আসলে কী ঘটেছে আমি তা জানি না। তবে আমি অবাক হইনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাশিয়ায় খুব কম কাজই পুতিনের ইশারা ছাড়া হয়।’
প্রিগোজিন সমর্থকরা প্রো-ওয়াগনার মেসেজিং অ্যাপ চ্যানেলে দাবি করেছেন, বিমানটি ইচ্ছাকৃতভাবে বিধ্বস্ত করা হয়েছে।
কীভাবে তা করা হয়েছে তা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের মতামত দিয়েছেন তারা।
বেশিরভাগ পর্যবেক্ষক প্রিগোজিনের মৃত্যুকে পুতিনের ২৩ বছরের শাসনকালে তার কর্তৃত্বের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ করার শাস্তি বলে মনে করছেন।
কার্নেগি রাশিয়া ইউরেশিয়া সেন্টারের একজন সিনিয়র ফেলো তাতিয়ানা স্ট্যানোভায়া টেলিগ্রামে বলেছিলেন, ‘বিমান দুর্ঘটনার কারণ যাই হোক না কেন, সবাই এটিকে ক্রেমলিনের প্রতিশোধ বলে মনে করবে।’
স্ট্যানোভায়া টেলিগ্রাম পোস্টে বলেছেন, ‘প্রিগোজিনের মৃত্যু পুতিনের পক্ষ থেকে রাশিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী ও সামরিক বাহিনীর সম্ভাব্য বিদ্রোহকারীদের জন্য দেওয়া একটি শিক্ষা হতে পারে।’
আরও পড়ুন: ইউক্রেনের ৪ অঞ্চল রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত, স্বাক্ষর করলেন পুতিন
গত ২৩ জুন ওয়াগনার সেনাদের শুরু করা বিদ্রোহ ২৪ ঘণ্টারও কম সময় স্থায়ী হয়েছিল। প্রিগোজিনের ভাড়াটে সৈন্যরা দক্ষিণ রাশিয়ার রোস্তভ-অন-ডন শহরে প্রবেশ করে এবং একটি গুলিও না চালিয়ে সেখানকার সামরিক সদর দপ্তর দখল করে।
এরপর ওয়াগনার গ্রুপের সদস্যরা মস্কো অভিমুখে রওনা দেয়, যেটিকে প্রিগোজিন শীর্ষস্থানীয় সামরিক নেতাদের ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য ‘মার্চ অব জাস্টিস’ বলে অভিহিত করেছিলেন।
পুতিন এই বিদ্রোহকে ‘বিশ্বসঘাতকতা’ এবং ‘পিঠে ছুরিকাঘাত’ বলে নিন্দা করেছিলেন এবং অপরাধীদের শাস্তি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
কিন্তু কয়েক ঘণ্টা পরে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্ততায় পুতিন ও প্রিগোজিন একটি চুক্তি করেছিলেন।
চুক্তি অনুযায়ী, প্রিগোজিন ও তার ভাড়াটে সৈন্যদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের অপরাধে আনা ফৌজদারি মামলাগুলো তুলে নিয়ে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হবে। বিনিময়ে প্রিগোজিন বিদ্রোহের অবসান করে বেলারুশে চলে যাবেন।
বিদ্রোহ সত্ত্বেও প্রিগোজিনের ভাড়াটে সৈন্যরা আফ্রিকায় তাদের কার্যক্রম চালিয়ে গেছে।
এই সপ্তাহের শুরুর দিকে, প্রিগোজিন তার প্রথম ভিডিও প্রকাশ করেন।
যেখানে তিনি জানান তিনি আফ্রিকার কোনো একটি জায়গা থেকে কথা বলছিলেন।
ভিডিওতে তিনি বলছিলেন, ওয়াগনার ‘সব মহাদেশেই রাশিয়াকে আরও ক্ষমতাবান করবে এবং আফ্রিকাকে আরও মুক্ত করে তুলবে।’
প্রিগোজিনের বিদেশি কার্যকলাপ রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বকে বিরক্ত করেছে।
তারা আফ্রিকায় ওয়াগনার সৈন্যদের বদলে রাশিয়ান সামরিক কর্মী পাঠাতে চাচ্ছিলেন।
আরও পড়ুন: রাশিয়ার ৩টি তেল শোধনাগারের নিয়ন্ত্রণ নিল জার্মানি
১ বছর আগে
বিমান দুর্ঘটনায় ওয়াগনার প্রধান প্রিগোজিনের মৃত্যু
রাশিয়ার ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনার-এর প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিন এবং তার ব্যক্তিগত সামরিক বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারা একটি বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন।
তবে এই দুর্ঘটনাকে একটি ‘পরিকল্পিত হত্যা’ বলে মনে করছেন অনেকেই।
কারণ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিরুদ্ধে ওয়াগনার গ্রুপের বিদ্রোহের মাত্র দুই মাস পরেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
রাশিয়ার সিভিল এভিয়েশন এজেন্সি জানিয়েছে, বুধবার মস্কো থেকে তিনজন ক্রু নিয়ে প্রিগোজিন ও ছয়জন শীর্ষ লেফটেন্যান্ট একটি ব্যবসায়িক জেটে উড্ডয়নের পরপরই এটি বিধ্বস্ত হয়।
প্রিগোজিনের ওয়াগনার প্রাইভেট মিলিটারি কোম্পানি তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
রুশ মিডিয়া ওয়াগনার প্রাইভেট মিলিটারি কোম্পানির সূত্র উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, উদ্ধারকারীরা ১০ জনের লাশ উদ্ধার করেছে।
গত ২৩-২৪ জুন বিদ্রোহের অবসান করা চুক্তিতে অভিযোগ প্রত্যাহার করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও; মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য পশ্চিমা কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছিলেন, পুতিন দীর্ঘদিন প্রিগোজিনের দিকে নজর রাখবেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, ‘আসলে কী ঘটেছে আমি তা জানি না। তবে আমি অবাক হইনি।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাশিয়ায় খুব কম কাজই পুতিনের ইশারা ছাড়া হয়।’
আরও পড়ুন: রাশিয়ার থ্রিডি-প্রিন্টেড রকেট উৎক্ষেপণের পরপরই ব্যর্থ!
প্রিগোজিন সমর্থকরা প্রো-ওয়াগনার মেসেজিং অ্যাপ চ্যানেলে দাবি করেছেন, বিমানটি ইচ্ছাকৃতভাবে বিধ্বস্ত করা হয়েছে।
কীভাবে তা করা হয়েছে তা নিয়ে বিভিন্ন ধরনের মতামত দিয়েছেন তারা।
তদন্তকারীরা দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং প্লেনটি বিধ্বস্ত হওয়ার জায়গাটিকে ঘিরে রেখেছে পুলিশ।
ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য কর্তৃপক্ষ লাশগুলো নিয়ে গেছে।
জানা গেছে, লাশগুলো খুব খারাপভাবে পুড়ে গেছে।
সেন্ট পিটার্সবার্গে ওয়াগনারের সদর দপ্তরে একটি বড় ক্রসের আকারে আলো জ্বালানো হয়েছে।
প্রিগোজিনের সমর্থকরা তার স্মরেণে একটি অস্থায়ী স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছে।
বেশিরভাগ পর্যবেক্ষক প্রিগোজিনের মৃত্যুকে পুতিনের ২৩ বছরের শাসনকালে তার কর্তৃত্বের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ করার শাস্তি বলে মনে করছেন।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনের ৪ অঞ্চল রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত, স্বাক্ষর করলেন পুতিন
কার্নেগি রাশিয়া ইউরেশিয়া সেন্টারের একজন সিনিয়র ফেলো তাতিয়ানা স্ট্যানোভায়া টেলিগ্রামে বলেছিলেন, ‘বিমান দুর্ঘটনার কারণ যাই হোক না কেন, সবাই এটিকে ক্রেমলিনের প্রতিশোধ বলে মনে করবে।’
স্ট্যানোভায়া টেলিগ্রাম পোস্টে বলেছেন, ‘প্রিগোজিনের মৃত্যু পুতিনের পক্ষ থেকে রাশিয়ার নিরাপত্তা বাহিনী ও সামরিক বাহিনীর সম্ভাব্য বিদ্রোহকারীদের জন্য দেওয়া একটি শিক্ষা হতে পারে।’
গত ২৩ জুন ওয়াগনার সেনাদের শুরু করা বিদ্রোহ ২৪ ঘণ্টারও কম সময় স্থায়ী হয়েছিল। প্রিগোজিনের ভাড়াটে সৈন্যরা দক্ষিণ রাশিয়ার রোস্তভ-অন-ডন শহরে প্রবেশ করে এবং একটি গুলিও না চালিয়ে সেখানকার সামরিক সদর দপ্তর দখল করে।
এরপর ওয়াগনার গ্রুপের সদস্যরা মস্কো অভিমুখে রওনা দেয়, যেটিকে প্রিগোজিন শীর্ষস্থানীয় সামরিক নেতাদের ক্ষমতাচ্যুত করার জন্য ‘মার্চ অব জাস্টিস’ বলে অভিহিত করেছিলেন।
পুতিন এই বিদ্রোহকে ‘বিশ্বসঘাতকতা’ এবং ‘পিঠে ছুরিকাঘাত’ বলে নিন্দা করেছিলেন এবং অপরাধীদের শাস্তি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: রাশিয়ার ৩টি তেল শোধনাগারের নিয়ন্ত্রণ নিল জার্মানি
কিন্তু কয়েক ঘণ্টা পরে বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কোর মধ্যস্ততায় পুতিন ও প্রিগোজিন একটি চুক্তি করেছিলেন।
চুক্তি অনুযায়ী, প্রিগোজিন ও তার ভাড়াটে সৈন্যদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের অপরাধে আনা ফৌজদারি মামলাগুলো তুলে নিয়ে সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হবে। বিনিময়ে প্রিগোজিন বিদ্রোহের অবসান করে বেলারুশে চলে যাবেন।
বিদ্রোহ সত্ত্বেও প্রিগোজিনের ভাড়াটে সৈন্যরা আফ্রিকায় তাদের কার্যক্রম চালিয়ে গেছে।
এই সপ্তাহের শুরুর দিকে, প্রিগোজিন তার প্রথম ভিডিও প্রকাশ করেন।
যেখানে তিনি জানান তিনি আফ্রিকার কোনো একটি জায়গা থেকে কথা বলছিলেন।
ভিডিওতে তিনি বলছিলেন, ওয়াগনার ‘সব মহাদেশেই রাশিয়াকে আরও ক্ষমতাবান করবে এবং আফ্রিকাকে আরও মুক্ত করে তুলবে।’
প্রিগোজিনের বিদেশি কার্যকলাপ রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বকে বিরক্ত করেছে।
তারা আফ্রিকায় ওয়াগনার সৈন্যদের বদলে রাশিয়ান সামরিক কর্মী পাঠাতে চাচ্ছিলেন।
১ বছর আগে
পুতিনের কট্টর সমালোচক নাভালনির ১৯ বছরের কারাদণ্ড
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কট্টর সমালোচক এবং কারাবন্দি বিরোধী দলীয় নেতা আলেক্সেই নাভালনিকে ১৯ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। স্থানীয় সময় শুক্রবার (৪ আগস্ট) উগ্রবাদী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করে তার এই সাজা ঘোষণা করেন একটি রুশ আদালত।
নাভালনি ইতোমধ্যেই বিভিন্ন অভিযোগে ৯ বছরের সাজা ভোগ করছেন।
অন্যদিকে, নাভালনি তার বিরুদ্ধে আনা সমস্ত অভিযোগ রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং ক্রেমলিনের বিরুদ্ধে তাকে আজীবন কারাগারে রাখার জন্য অভিযুক্ত করেছেন।
নাভালনির দুর্নীতিবিরোধী ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম এবং তার ঘনিষ্ট সহযোগীদের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।
পঞ্চমবারের মতো ফৌজদারি মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলেন তিনি। এর ফলে তৃতীয় দফায় তার কারাবাস আরও দীর্ঘ হলো।
রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইনফর্মেশন টেলিগ্রাফ এজেন্সি অব রাশিয়া (ইতার-তাস) জানায়, নাভালনি জালিয়াতি ও আদালত অবমাননার অভিযোগে বর্তমানে সাজা খাটছেন। চলমান সাজার সঙ্গে আরও ১৯ বছরের কারাদণ্ড যোগ করেছেন বিচারক।
আরও পড়ুন: বিষ প্রয়োগে অসুস্থ রুশ নেতা নাভালনিকে চিকিৎসার জন্য জার্মানি প্রেরণ
নাভালনির মুখপাত্র কিরা ইয়ারমিশ দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) বলেছেন, তারা আগে থেকেই এই ধরনের রায় দেওয়ার বিষয়টি অনুমান করেছিলেন।
এমনকি নাভালনিও তাকে জানিয়েছিলেন, দীর্ঘ কারাদণ্ড হবে বলে তিনি আশঙ্কা করছেন।
প্রসিকিউশন তার ২০ বছরের কারাদণ্ডের দাবি করেছিল।
প্যারোল লঙ্ঘনের অভিযোগে ২০২১ সালে তাকে আড়াই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল।
মস্কোর পূর্বাঞ্চলের পেনাল কলোনিতে রুদ্ধদ্বার কারাগারে তার বিচার এবং সাজা ঘোষণা করা হয়েছে।
মামলার শুনানি ও সাজা ঘোষণা করতে বিচারক ১০ মিনিটেরও কম সময় নিয়েছে। অথচ এ ধরনের মামলার রায় ঘোষণায় রাশিয়ায় সাধারণত কয়েক ঘণ্টা, এমনকি সারাদিন কেটে যায়।
পৃথক কক্ষে থাকা সাংবাদিকদের কাছে শুনানিটি সম্প্রচার করা হয়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় তার সাজা নিয়ে দলের দেওয়া পোস্টে নাভালনি মন্তব্য করেছেন।
সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘সংখ্যা কোনো ব্যাপার নয়।’
আরও পড়ুন: পাকিস্তান-রাশিয়া নয়া সম্পর্ক: এক দেশভিত্তিক সম্পর্ক আর নয়
তিনি লিখেছেন, আমি বুঝতে পারছি অন্যান্য রাজনৈতিক বন্দির মতো আমিও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করছি। আজীবন অথবা এই সরকারের শাসনকাল পর্যন্ত আমাকে সাজা খাটতে হবে।
নাভালনি তার সমর্থকদের ‘মনোবল না হারানোর’ আহ্বান জানিয়েছেন।’
রায় ঘোষণার বিষয়টি এপিকে নিশ্চিত করেছেন নাভালনির মুখপাত্র ইয়ারমিশ।
তিনি আরও জানান, এ ছাড়াও নাভালনিকে ৫ লাখ রুবল (প্রায় ৫ হাজার ২০০ ডলার) জরিমানা করেছেন আদালত।
তিনি বলেন, কঠোর সাজা সত্ত্বেও নাভালনি আশাবাদী এবং ‘তিনি যা করছেন সে ব্যাপারে পুরোপুরি আত্মবিশ্বাসী।’
নাভালনির নতুন সাজাকে ‘একটি অন্যায় বিচারের অন্যায় উপসংহার’ বলে নিন্দা করেছে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট। একই সঙ্গে অবিলম্বে তার মুক্তির আহ্বান জানিয়েছে।
মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলেছে, ‘কয়েক বছর ধরেই নাভালনির মুখ বন্ধ করার চেষ্টা করছে ক্রেমলিন। সর্বশেষ এই গোপন বিচার করে এবং কথিত প্রমাণের ভিত্তিতে তার আইনজীবীদের প্রবেশাধিকার সীমিত করে রুশ কর্তৃপক্ষ আবারও তাদের মামলার ভিত্তিহীনতা প্রমাণ করেছে। এর মাধ্যমে যারা সরকারের সমালোচনা করার সাহস করে তাদের জন্য দেশটিতে থাকা আইনের শাসনের অভাবকেও ফুটিয়ে তুলেছে।’
আরও পড়ুন: রাশিয়ার থ্রিডি-প্রিন্টেড রকেট উৎক্ষেপণের পরপরই ব্যর্থ!
৪৭ বছর বয়সী নাভালনি প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের চরম শত্রু। কারণ তিনি সরকারি বিভিন্ন দুর্নীতির কথা প্রকাশ করেছেন এবং ক্রেমলিন বিরোধী বিশাল বিক্ষোভের আয়োজন করেছেন।
২০২১ সালের জানুয়ারিতে জার্মানিতে নার্ভ এজেন্ট বিষক্রিয়া থেকে সুস্থ হয়ে মস্কোতে ফিরে আসার পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
২০২১ সালে রুশ কর্তৃপক্ষ নাভালনির দুর্নীতিবিরোধী ফাউন্ডেশন এবং রাশিয়াজুড়ে এর অফিসগুলোর বিশাল নেটওয়ার্ককে চরমপন্থী সংগঠন হিসেবে বেআইনি ঘোষণা করে তার বিচার শুরু করেন।
নাভালনির মিত্ররা বলেছে, চরমপন্থার অভিযোগগুলো ২০১১ সালে তৈরি হওয়ার পর থেকে দুর্নীতিবিরোধী ফাউন্ডেশনের সমস্ত কার্যকলাপকে বিতর্কিত করার চেষ্টা।
জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক বলেছেন, নাভালনির নতুন সাজা ‘রাশিয়ায় রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে বিচারিক হয়রানি এবং আদালতের আজ্ঞাবহ রায়ের বিষয়ে নতুন করে গুরুতর উদ্বেগ জাগিয়েছে’।
এ ছাড়াও তিনি নাভালনির মুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন।
১ বছর আগে
পুতিন-শি জিনপিং বৈঠক, বিচ্ছিন্ন রুশ প্রেসিডেন্টের জন্য রাজনৈতিক উৎসাহ
আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) ইউক্রেনে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত হওয়ার পর বিচ্ছিন্ন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে রাজনৈতিক উত্সাহ দিতে তার সঙ্গে বৈঠক করবেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং।
এই বৈঠকের কারণ ও উদ্দেশ্য কি তার কোনো বিশদ বিবরণ দেয়নি শি’র সরকার।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে হামলার আগে শি ও পুতিন ঘোষণা করেছিলেন যে তাদের ‘সীমাহীন বন্ধুত্ব’ ছিল, তবে যুদ্ধের পুরোটা সময়ই চীন নিজেকে নিরপেক্ষ হিসেবে উপস্থাপনের চেষ্টা করেছে। এমনকি বেইজিং গত মাসে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছিল।
চীন সরকার জানিয়েছে, শি সোমবার থেকে বুধবার মস্কো সফর করবেন, তবে তিনি চলে গেছেন কিনা তার কোনও ইঙ্গিত তারা দেয়নি।
রুশ সরকার জানিয়েছে যে শি’র মধ্যাহ্নে পৌঁছানোর কথা রয়েছে এবং এরপরে পুতিনের সঙ্গে দেখা করার কথা রয়েছে।
বৈঠকের আগে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইসিসির প্রতি একজন রাষ্ট্রপ্রধানের ‘বিচার বিভাগীয় অনাক্রম্যতাকে সম্মান করার’ এবং ‘সবকিছুকে রাজনীতিকরণ এবং ডাবল স্টান্ডার্ড ত্যাগের’ আহ্বান জানিয়েছে।
আরও পড়ুন: পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলেন আন্তর্জাতিক আদালত
চীন রাশিয়াকে তার অর্থনীতির জন্য তেল ও গ্যাসের উৎস হিসেবে এবং বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে আমেরিকার আধিপত্যের বিরোধিতা করার অংশীদার হিসেবে মনে করে।
ওয়াশিংটনের আমেরিকান ইউনিভার্সিটির চীনা-রাশিয়ান সম্পর্কের বিশেষজ্ঞ জোসেফ টোরিজিয়ান বলেছেন,এ বৈঠক পুতিন ও শি’কে ওয়াশিংটনের সঙ্গে উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্কের সময়ে ‘শক্তিশালী অংশীদারিত্ব’- দেখানোর একটি সুযোগ দেবে।
টোরিজিয়ান বলেন, ‘এই বৈঠক চীনের দেয়া এমন ইঙ্গিত হতে পারে যে রাশিয়াকে সাহায্য করার জন্য তারা আরও বেশি কিছু করতে পারে; যদি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের আরও অবনতি হয় তবে তারা রাশিয়াকে শক্তিশালী করতে এবং ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে রাশিয়াকে সহায়তা করতে আরও অনেক কিছু করতে পারে।’
প্রযুক্তি, নিরাপত্তা, মানবাধিকার এবং হংকং ও মুসলিম সংখ্যালঘুদের প্রতি ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির আচরণ নিয়ে বিরোধের কারণে ওয়াশিংটন, ইউরোপ এবং এর প্রতিবেশীদের সঙ্গে বেইজিংয়ের সম্পর্ক তিক্ত।
কেউ কেই ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডে রাশিয়ার দাবি এবং তাইওয়ানের প্রতি বেইজিংয়ের দাবি একই বলে মনে করেন।
কমিউনিস্ট পার্টির দাবি, ১৯৪৯ সালে গৃহযুদ্ধের পরে চীন থেকে বিভক্ত হওয়া স্ব-শাসিত দ্বীপ তাইওয়ানকে প্রয়োজনে শক্তি প্রয়োগ করে হলেও মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে একত্র হতে বাধ্য করা হবে।
শি’র সরকার তাইওয়ানের চারপাশ দিয়ে ফাইটার জেট উড়িয়ে এবং সমুদ্রে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে দ্বীপটিকে ভয় দেখানোর প্রচেষ্টা জোরদার করছে।
পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার মুখে রাশিয়ার রাজস্ব বাড়াতে সাহায্য করার জন্য চীন ক্রেমলিনের থেকে তেল ও গ্যাস কেনা বাড়িয়েছে। তবে আর্থিক নিষেধাজ্ঞা ও সামরিক সহায়তার বিধানের ক্ষেত্রে ওয়াশিংটন এবং ইউরোপীয় সরকারগুলোর নির্ধারিত নিয়ম ভাঙে, এমন কোনও পদক্ষেপ নেয়নি চীন।
আরও পড়ুন: সৌদি-ইরান চুক্তির পর বিশ্বে বৃহৎ ভূমিকা রাখতে চায় চীন
গত শুক্রবার আইসিসি অভিযোগ করে যে ইউক্রেন থেকে হাজার হাজার শিশু অপহরণের জন্য পুতিন ব্যক্তিগতভাবে দায়ী। যেসব দেশের সরকার এই আদালতের কর্তৃত্ব স্বীকার করে, পুতিন তাদের দেশে গেলে তাৎক্ষণিক তাকে গ্রেপ্তার করতে তারা বাধ্য থাকবে।
পুতিন এখনও এই ঘোষণার বিষয়ে মন্তব্য করেননি, তবে ক্রেমলিন এই পদক্ষেপকে ‘আপত্তিকর ও অগ্রহণযোগ্য’ বলে প্রত্যাখ্যান করেছে।
বরং এ রায়কে অবজ্ঞা করে পুতিন ইউক্রেন থেকে রাশিয়ার ক্রিমিয়ান উপদ্বীপ দখলের নবম বার্ষিকী উপলক্ষে ক্রিমিয়া এবং দখলকৃত ইউক্রেনীয় বন্দর শহর মারিউপোল পরিদর্শন করেন।
রাশিয়ান সংবাদ প্রতিবেদনে তাকে মারিউপোলের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলতে এবং ক্রিমিয়ার সেভাস্তোপলে একটি আর্ট স্কুল এবং একটি শিশু কেন্দ্র পরিদর্শন করতে দেখা গেছে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন বলেছেন, আইসিসির উচিত ‘একটি বস্তুনিষ্ঠ ও নিরপেক্ষ অবস্থান বজায় রাখা এবং একজন রাষ্ট্রপ্রধানের প্রাপ্য বিচার বিভাগীয় অনাক্রম্যতাকে সম্মান করা’ এবং ‘সবকিছুকে রাজনীতিকরণ এবং ডাবল স্ট্যান্ডার্ড ত্যাগ করা উচিত’।
আরও পড়ুন: ইউক্রেন যুদ্ধের সমালোচনা করায় শিক্ষার্থীর ৮ বছরের কারাদণ্ড
ওয়াং বলেন, ‘চীন ইউক্রেনের সঙ্কটের বিষয়ে তার বস্তুনিষ্ঠ ও ন্যায্য অবস্থান বজায় রাখবে এবং শান্তি আলোচনার প্রচারে গঠনমূলক ভূমিকা পালন করবে।’
রুশ সংবাদপত্র রাশিয়ান গেজেটে সোমবার প্রকাশিত একটি নিবন্ধে শি বলেছেন যে চীন ‘সক্রিয়ভাবে শান্তি আলোচনার চেষ্টা করেছে’।
চীনের সিনহুয়া নিউজ এজেন্সির এক প্রতিবেদনে জানা যায় যে শি বলেছেন, ‘আমার আসন্ন রাশিয়া সফর হবে বন্ধুত্ব, সহযোগিতা ও শান্তি স্থাপনের যাত্রা।’
শি আরও বলেছেন, ‘সঙ্কট সমাধানের একটি যুক্তিসঙ্গত উপায়’- খুঁজে পাওয়া যেতে পারে; যদি ‘সব পক্ষ অভিন্ন, সর্বাঙ্গীন, সহযোগিতামূলক এবং টেকসই নিরাপত্তার মনোভাব পোষণ করে।’
বেইজিংয়ে সেঙ্গে বৈঠকের পর ইরান ও সৌদি আরবের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের আশ্চর্য ঘোষণার পর শি এই সফর করছেন।
টোরিজিয়ান বলেন, শি একজন বিশ্বব্যাপী রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে নিজেবে দেখতে চান, যিনি শান্তির কথা বলে ‘গঠনমূলক ভূমিকা পালন করছেন’। কিন্তু যুদ্ধ শেষ করার জন্য শি পুতিনকে চাপ দেবেন এমন কোনও সম্ভাবনা নেই।
১ বছর আগে
ইউক্রেনের ৪ অঞ্চল রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত, স্বাক্ষর করলেন পুতিন
ইউক্রেনের চারটি অঞ্চল রাশিয়ার সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করার আইনে বুধবার স্বাক্ষর করেছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
এটি এমন একটি পদক্ষেপ যা আন্তর্জাতিক আইনের অমান্য করে সম্মিলিতকরণকে চূড়ান্ত করে।
এই সপ্তাহের শুরুতে রাশিয়ান পার্লামেন্টের উভয় কক্ষ দোনেস্ক, লুহানস্ক, খেরসন এবং জাপোরিঝঝিয়া অঞ্চলকে রাশিয়ার অংশ করার চুক্তি অনুমোদন করে।
এর আগে ইউক্রেন থেকে দখল করা এই চার অঞ্চলে গণভোট আয়োজনের পর রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত করার ঘোষণা দেন পুতিন।
তবে রাশিয়ার এই কর্মকাণ্ডকে পশ্চিমা বিশ্ব এবং ইউক্রেন প্রত্যাখ্যান করেছে।
পড়ুন: রাশিয়ার ৩টি তেল শোধনাগারের নিয়ন্ত্রণ নিল জার্মানি
জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি, কম দামে রাশিয়ার তেল কেনার কথা ভাবছে ইন্দোনেশিয়া
রাশিয়া অধিকৃত ডনবাসে শ্রমিক পাঠাতে পারে উ. কোরিয়া
২ বছর আগে
ইউক্রেনজুড়ে সামরিক স্থাপনায় রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
রাশিয়া সারা ইউক্রেনের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে কয়েক ডজন ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। অন্যদিকে ইউক্রেনের এয়ার কমান্ড জানিয়েছে, প্রথমবারের মতো বেলারুশ থেকে মোতায়েন করা রুশ দূরপাল্লার তু-২২ বোমারু বিমান থেকে ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে।
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং বেলারুশিয়ান প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কোর মধ্যে একটি বৈঠকের পরেই এই বোমা হামলা হয়েছে।
পুতিন সেসময় বেলারুশকে ইস্কান্ডার-এম ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা সরবরাহ করার পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেন।
শনিবার রাতে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইগর কোনাশেনকভ বলেছেন, রাশিয়া ও মস্কো সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদী বাহিনী এখন সিভিয়েরোডোনেৎস্ক ও এর আশেপাশের গ্রামগুলো নিয়ন্ত্রণ করছে।
তিনি আরও বলেন, ইউক্রেনীয় বাহিনীর ‘অ্যাজোট প্লান্টকে প্রতিরোধের একগুঁয়ে প্রচেষ্টা’ ব্যর্থ হয়েছে।
শুক্রবার লুহানস্ক প্রদেশের গভর্নর সেরহি হাইদাই বলেছেন, কয়েক সপ্তাহের বোমাবর্ষণ ও লড়াইয়ের পর ইউক্রেনের সেনারা সিভিয়েরোডোনেৎস্ক থেকে পিছু হটছে।
শনিবার তিনি নিশ্চিত করেছেন যে, শহরটির নিয়ন্ত্রণ এখন রাশিয়ান এবং বিচ্ছিন্নতাবাদী সেনাদের হাতে। এসব সেনারা এখন দক্ষিণ থেকে লিসিচানস্ক অবরোধ করার চেষ্টা করছে।
লিসিচানস্ক দখলের মাধ্যমে রুশ বাহিনী এই প্রদেশের সবচেয়ে বড় অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ হাতে পাবে। পুরো ডনবাস দখল করার জন্য রাশিয়া কাছে লিসিচানস্ক দখল একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। ইতোমধ্যে রাশিয়ান এবং বিচ্ছিন্নতাবাদীরা ডনবাসের দ্বিতীয় প্রদেশ ডোনেৎস্কের প্রায় অর্ধেক নিয়ন্ত্রণ করে।
আরও পড়ুন: স্পেনের ছিটমহল মেলিলায় প্রবেশ; নিহত বেড়ে ২৩
রাশিয়ার ইন্টারফ্যাক্স বার্তা সংস্থা বিচ্ছিন্নতাবাদী বাহিনীর একজন মুখপাত্র আন্দ্রেই মারাচকোকে উদ্ধৃত করে বলেছে, রাশিয়ান সেনা ও বিচ্ছিন্নতাবাদী যোদ্ধারা লিসিচানস্কে প্রবেশ করেছে এবং শহরের কেন্দ্রস্থলে লড়াই চলছে।
তবে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে এ দাবির বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
রাশিয়ান বোমাবর্ষণের ফলে সিভিয়েরোডোনেৎস্কের বেশিরভাগ অংশ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে এবং এর জনসংখ্যা এক লাখ থেকে কমে ১০ হাজারে এসে ঠেকেছে।
এর আগে ইউক্রেনের অবশিষ্ট সেনারা কয়েকশ’ বেসামরিক নাগরিকের সঙ্গে বিশাল অ্যাজট রাসায়নিক প্ল্যান্টের ভূগর্ভস্থ আশ্রয়কেন্দ্রে অবরুদ্ধ হয়ে ছিল।
ইন্টারফ্যাক্স এক রিপোর্টে জানিয়েছে, শনিবার এক বিচ্ছিন্নতাবাদী প্রতিনিধি ইভান ফিলিপোনেঙ্কো জানান তার বাহিনী রাতে কারখানা থেকে ৮০০ বেসামরিক লোককে সরিয়ে নিয়েছে।
এলভিভ অঞ্চলের গভর্নর ম্যাকসিম কোজিটস্কি বলেন, প্রায় এক হাজার কিলোমিটার পশ্চিমের কৃষ্ণ সাগর থেকে ছোঁড়া চারটি রাশিয়ান ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র ইয়ারোভিভে একটি ‘সামরিক স্থাপনায়’ আঘাত করে।
তিনি নির্দিষ্ট কোনো সামরিক স্থাপনার উল্লেখ করেননি। তবে ইয়ারোভিভে একটি বিশাল সামরিক ঘাঁটি রয়েছে, যোদ্ধাদের প্রশিক্ষণের জন্য যেটি ব্যবহৃত হয়। এসব যোদ্ধাদের মধ্যে যারা স্বেচ্ছায় ইউক্রেনের পক্ষে যুদ্ধ করছে এমন বিদেশিরাও রয়েছেন।
এর আগে মার্চ মাসে ইয়ারোভিভ ঘাঁটিতে রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ৩৫ জন নিহত হয়।
আঞ্চলিক গভর্নর ভিটালি বুচেনকো বলেছেন, শনিবার সকালে মধ্য ইউক্রেনের জাইটোমির অঞ্চলে প্রায় ৩০টি রুশ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়, এতে একজন ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছেন।
তিনি বলেন, সব হামলাই ছিল সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্য করে।
আরও পড়ুন: যুক্তরাষ্ট্রে গর্ভপাতের সাংবিধানিক অধিকারের অবসান
রিভনে আঞ্চলিক গভর্নর ভিটালি কোভাল বলেছেন, উত্তর-পশ্চিমে, সারনির একটি সার্ভিস স্টেশন ও অটো মেরামত কেন্দ্রে দুটি ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হেনেছে;এতে তিনজন নিহত এবং চারজন আহত হয়েছে।
সারনি বেলারুশের সীমান্ত থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত।
অন্যদিকে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, কৃষ্ণ সাগর উপকূল বরাবর দক্ষিণ ইউক্রেনে, ক্রিমিয়া থেকে ছোড়া ৯টি ক্ষেপণাস্ত্র বন্দর শহর মাইকোলাইভে আঘাত করেছে।
ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী আরও জানিয়েছে, উত্তরে বেলারুশ থেকে চেরনিহিভ অঞ্চলে প্রায় ২০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হয়েছে।
ইউক্রেনের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা বলেছে, শনিবারের হামলার জন্য রাশিয়ান বোমারু বিমান প্রথমবারের মতো বেলারুশীয় আকাশসীমা ব্যবহার করেছে। এ পদক্ষেপকে ‘ক্রেমলিনের যুদ্ধে বেলারুশকে টেনে আনার প্রচেষ্টা’- হিসেবে দেখা হচ্ছে।
যুদ্ধে বেলারুশ রুশ সামরিক ইউনিটগুলোকে সাহায্য করছে এবং রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার আগে একটি মঞ্চ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। তবে বেলারুশীয় সেনারা সীমান্ত অতিক্রম করেনি।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তার রাতের ভিডিও ভাষণে বলেন, মস্কো যে যুদ্ধটি পাঁচ দিন স্থায়ী হবে বলে আশা করেছিল, তা পঞ্চম মাসে পৌঁছেছে।
আরও পড়ুন: নরওয়েতে বন্দুকধারীর গুলিতে ২ জন নিহত, আহত এক ডজনের বেশি
২ বছর আগে
পূর্ব ইউক্রেনের সর্বশেষ মুক্ত শহরে রুশ হামলা জোরদার
তুমুল লড়াই চলা পূর্ব ইউক্রেন সম্পূর্ণ দখলের লক্ষ্যে অগ্রগতি নিশ্চিত করেছে রাশিয়া। সিভিয়ারোডোনেটস্ক এবং কাছাকাছি লাইসিচানস্ক শহরগুলো দখল করার প্রচেষ্টা জোরদার করেছে রুশ বাহিনী। যেটি লুহানস্কে ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণাধীন সর্বশেষ প্রধান এলাকা।
শনিবার বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তার দেশকে নিষেধাজ্ঞার দেয়া এবং ইউক্রেনের প্রতিরক্ষাকে সমর্থন করে অস্ত্র সরবরাহ করা ইউরোপীয় দেশগুলোকে সর্তক করেছেন।
রাশিয়ান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, এই সপ্তাহে তারা ইউক্রেণের ছোট শহর লাইমান দখল করেছে।
আরও পড়ুন: ব্রাজিলে প্রবল বর্ষণে ৩৭ মৃত্যু
তবে ইউক্রেনের কর্মকর্তারা এ ব্যাপারে ভিন্ন ভিন্ন মতামত দিয়েছেন। শুক্রবার, ডোনেটস্কের গভর্নর পাভলো কিরিলেঙ্কো বলেছেন, রাশিয়ান সৈন্যরা শহরটির বেশিরভাগ নিয়ন্ত্রণ করছে এবং এই অঞ্চলের আরেকটি শহর বাখমুতের দিকে তাদের আক্রমণ চালানোর চেষ্টা করছে।
তবে দেশটির উপ-প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হানা মালিয়ার মস্কোর দাবির বিরোধিতা করে বলেছেন, লাইমানে লড়াই এখনও চলছে।
শনিবারের এক ভিডিও ভাষণে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দেশটির পূর্বের পরিস্থিতিকে ‘খুব জটিল’ উল্লেখ করে বলেছেন, ‘রুশ সেনাবাহিনী কিছু ফলাফল চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে।
আরও পড়ুন: নাইজেরিয়ায় পদদলিত হয়ে শিশুসহ নিহত ৩১
তবে ডোনেস্ক ও লুহানস্কে রাশিয়ার সাম্প্রতিক অগ্রগতি পুতিনকে আরও উৎসাহিত করতে পারে। তারা ইউক্রেণের ছোট ছোট শহরগুলো নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।
এদিকে ক্রেমলিন জানিয়েছে, পুতিন ফ্রান্স ও জার্মানির নেতাদের সঙ্গে শনিবার ৮০ মিনিটের একটি ফোন কল করেছেন যেখানে তিনি ইউক্রেনে পশ্চিমা অস্ত্রের ক্রমাগত সরবারহের বিষয়ে সতর্ক করেছেন এবং পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাকে বিশ্বব্যাপী খাদ্য সরবরাহ সংকটের জন্য দায়ী করেছেন।
জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ স্কোলজ এবং ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি এবং রাশিয়ান সৈন্য প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছেন। যুদ্ধ শেষ করার বিষয়ে তারা পুতিনকে জেলেনস্কির সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসতে আহ্বান জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ইন্দোনেশিয়ায় ফেরিডুবি, নিখোঁজ ২৫
২ বছর আগে
ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ একটি 'গণহত্যা': বাইডেন
ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ ‘গণহত্যার’ সমান বলে মন্তব্য করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন মঙ্গলবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে ‘এমনকি একজন ইউক্রেনীয় হওয়ার ধারণাটি মুছে ফেলার’ চেষ্টা করার অভিযোগ করেছেন।
ওয়াশিংটনে ফেরার জন্য এয়ার ফোর্স ওয়ানে উঠার কিছুক্ষণ আগে আইওয়াতে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি এটাকে গণহত্যা বলেছি।’
বাইডেন বলেন, ‘এটি আরও পরিষ্কার ও স্পষ্ট হয়ে গেছে যে পুতিন কেবল ইউক্রেনীয় হওয়ার ধারণাটি মুছে ফেলার চেষ্টা করছেন।’
মেনলো, আইওয়াতে একটি পূর্ববর্তী ইভেন্টে যুদ্ধের ফলে ক্রমবর্ধমান জ্বালানির দাম বৃদ্ধির বিষয়ে বাইডেন ইঙ্গিত দিয়েছিলেন যে, তিনি ভেবেছিলেন পুতিন ইউক্রেনের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালাচ্ছেন, তবে কোনও বিস্তারিত বিবরণ দেননি।
বাইডেনের মন্তব্য ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির প্রশংসা অর্জন করেছে, যিনি পশ্চিমা নেতাদের তার দেশে রাশিয়ার হামলা বর্ণনা করতে এই শব্দটি ব্যবহার করার আহ্বান জানিয়েছেন।
বাইডেন বলেন, রাশিয়ার আচরণ গণহত্যার জন্য আন্তর্জাতিক মান পূরণ করেছে কি না তা সিদ্ধান্ত নেয়ার আইনজীবীদের উপর নির্ভর করে, যেমনটি ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা দাবি করেছেন। তবে তিনি বলেছেন ‘এটি আমার কাছে নিশ্চিত মনে হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনে রাশিয়ানরা যে ভয়ঙ্কর কাজগুলো করেছে তার আরও প্রমাণ আক্ষরিক অর্থে বেরিয়ে আসছে এবং আমরা কেবল ধ্বংসযজ্ঞ সম্পর্কে আরও বেশি কিছু শিখতে যাচ্ছি এবং আইনজীবীদের আন্তর্জাতিকভাবে সিদ্ধান্ত নিতে দিব যে এটি যোগ্য কি না।
গত সপ্তাহে বাইডেন বলেছেন, তিনি বিশ্বাস করেননি যে রাশিয়ার কর্মকাণ্ড গণহত্যার সমান, কেবলমাত্র তারা ‘যুদ্ধাপরাধ’ করেছে।
পড়ুন: মারিউপোলে ১০ হাজারের বেশি বেসামরিক লোক নিহত: মেয়র
নিউইয়র্কে রেলস্টেশনে ৫ জন গুলিবিদ্ধ
২ বছর আগে
মারিউপোলে ১০ হাজারের বেশি বেসামরিক লোক নিহত: মেয়র
ইউক্রেনের বন্দর নগরী মারিউপোলের মেয়র সোমবার বলেছেন, তার শহরের রুশ অবরোধে ১০ হাজারের বেশি বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে এবং এই সংখ্যা ২০ হাজার ছাড়িয়ে যেতে পারে।
সোমবার দ্য অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) সাথে ফোনে আলাপকালে মেয়র ভাদিম বয়চেঙ্কো রাশিয়ান বাহিনীকে বহির্বিশ্বের কাছ থেকে সেখানে হত্যাকাণ্ড লুকানোর প্রয়াসে শহরে আটক মানবিক কনভয়কে কয়েক সপ্তাহ অবরুদ্ধ করারও অভিযোগ করেন।
রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে ইউক্রেনে আগ্রাসনের নির্দেশ দেয়ার পরপরই শুরু হওয়া রুশ হামলার কারণে মারিউপোল অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে এবং যুদ্ধের সবচেয়ে নৃশংস হামলার শিকার হয়েছে।
পড়ুন: পরবর্তী কয়েক দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ: জেলেনস্কি
বয়চেঙ্কো ইউক্রেনের কর্মকর্তাদের সাম্প্রতিক অভিযোগের নতুন বিবরণ দিয়েছেন যে, রুশ বাহিনী মারিউপোলে অবরোধের শিকারদের মৃতদেহ নিষ্পত্তি করার জন্য মোবাইল শ্মশান সরঞ্জাম এনেছিল।
বয়চেঙ্কো বলেন, রুশ বাহিনী অনেক লাশ একটি বিশাল শপিং সেন্টারে নিয়ে গেছে যেখানে স্টোরেজ সুবিধা এবং রেফ্রিজারেটর রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘মোবাইল শ্মশানগুলো ট্রাকের আকারে এসেছে: আপনি সেগুলো খুলুন এবং ভিতরে একটি পাইপ আছে এবং এই মৃতদেহগুলো পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে।
বয়চেঙ্কো ইউক্রেনীয় নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের একটি স্থান থেকে কথা বলেছেন, তবে এটি মারিউপোলের বাইরে।
মেয়র বলেন, শহরে রাশিয়ান বাহিনী কর্তৃক কথিত শ্মশানের মৃতদেহ পোড়ানোর পদ্ধতি সম্পর্কে তার কাছে বেশ কয়েকটি উৎস রয়েছে, তবে তার তথ্যের উৎস সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানান নি।
পড়ুন: শাহবাজ শরিফ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত
২ বছর আগে