ভ্লাদিমির পুতিন
ইউক্রেন শান্তি চুক্তি যে আর দূরে নয়, তা নিশ্চিত: ক্রেমলিন
ইউক্রেন যুদ্ধের অবসানে রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনা গঠনমূলক হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ। তবে সফল চুক্তিতে পৌঁছাতে আরও কাজ বাকি আছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
স্থানীয় সময় বুধবার (৩ ডিসেম্বর) ক্রেমলিনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের সঙ্গে পাঁচ ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে তিনি একথা জানান উশাকভ।
শান্তি চুক্তিতে পৌঁছার জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ও জামাতা জ্যারেড কুশনারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন পুতিন। তবে কোনো পক্ষই আলোচনার ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু প্রকাশ করেনি।
উশাকভ এই আলোচনাকে কার্যকর, গঠনমূলক ও বাস্তবসম্মত বলে অভিহিত করেছেন। সুনির্দিষ্ট বিষয়ে আলোচনার পরিবর্তে শান্তি চুক্তির কাঠামো নিয়ে তারা আলোচনা করেছেন বলে জানান তিনি।
শান্তি চুক্তির বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে পুতিনের এই উপদেষ্টা বলেন, ‘সেটি যে আর দূরে নয়, তা নিশ্চিত।’
তিনি বলেন, ‘তবে মস্কো ও ওয়াশিংটনে এখনো অনেক কাজ বাকি আছে। এ বিষয়ে উভয় পক্ষই সম্মত হয়েছে এবং যোগাযোগ অব্যাহত থাকবে।’
১ দিন আগে
ভারত সফরে যাচ্ছেন পুতিন, গুরুত্ব পাবে যেসব বিষয়
দ্বীপক্ষীয় বৈঠকে অংশ নিতে চলতি সপ্তাহে ভারত সফরে যাচ্ছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। দুই দেশের মধ্যে অর্থনীতি, প্রতিরক্ষা ও জ্বালানি সহযোগিতার মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ছাড়াও মস্কো ও ওয়াশিংটনের সঙ্গে নয়াদিল্লির ভারসাম্য রক্ষার যে প্রচেষ্টা, তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ হবে এই সফর।
চার বছর পর বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় সফরে ভারতে পৌঁছানোর কথা রয়েছে পুতিনের। এরপর শুক্রবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠকে বসবেন তিনি। বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় অগ্রগতি পর্যালোচনা, পারস্পরিক স্বার্থের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা এবং বিভিন্ন আন্তঃমন্ত্রণালয় ও বাণিজ্যিক চুক্তিতে সই করা হবে বলে উভয় দেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
ওয়াশিংটনের শুল্কারোপ সত্ত্বেও মূল্যছাড়ে রাশিয়ার তেল কেনা অব্যাহত রেখেছে ভারত। যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, তেল কেনার ফলে যে অর্থায়ন করা হচ্ছে, তা ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার সক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখছে। অবশ্য ভারতের দাবি, দেশটির ১৪০ কোটি মানুষের ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা মেটাতে (রাশিয়া থেকে) এই তেল আমদানি অপরিহার্য।
গত চার বছরে পুতিন ও মোদির খুব বেশি সাক্ষাতের সুযোগ হয়নি। সর্বশেষ ২০২১ সালে ভারত সফর করেছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট। এরপর গত বছর মস্কো সফরে যান মোদি। এ ছাড়া চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে চীনে সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার সম্মেলনে এ দুই নেতার সাক্ষাৎ হয়।
গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক মুহূর্তে হচ্ছে এই বৈঠক
সম্প্রতি নতুন করে ইউক্রেন শান্তি প্রস্তাব নিয়ে তৎপরতা শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়ের সমাধানে অংশীদারদের সহযোগিতা চাইছে ওয়াশিংটন। ঠিক তখনই ভারতে পুতিন-মোদি বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে চলেছে।
ট্রাম্পের প্রাথমিক শান্তি পরিকল্পনায় রাশিয়ার স্বার্থকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে বলে সমালোচনা রয়েছে। এ নিয়ে ইতোমধ্যে জেনেভায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের কর্মকর্তাদের বৈঠকের পর গত সপ্তাহে প্রস্তাবটি সংশোধন করা হয়। এর ফ্লোরিডায় কিয়েভের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আরও এক দফা বৈঠকের পর মস্কোয় ক্রেমলিনের আলোচকদের সঙ্গে বৈঠক করেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দল। এর মধ্যেই ভারত সফর করছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট।
যুদ্ধের ময়দানে রাশিয়াকে চাপে রাখতে ভারতের ওপর কৌশলগত চাপ সৃষ্টি করেছেন ট্রাম্প। এমন বাস্তবতায় পুতিনের সঙ্গে মোদির এই বৈঠক কূটনৈতিক অঙ্গনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ইউক্রেন সংঘাত নিয়ে মোদির অবস্থান হচ্ছে, রাশিয়ার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে নিন্দা নয়, বরং যুদ্ধ বন্ধে শান্তিপূর্ণ সমাধানের ওপর জোর দেওয়া উচিৎ।
এ বিষয়ে জিন্দাল স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ শ্রীরাম সুন্দর চৌলিয়া বলেন, ভারত প্রকাশ্যে মধ্যস্থতার ভূমিকা এড়িয়ে চলেছে। কারণ, অন্যথায় রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়ের সঙ্গে দিল্লির সম্পর্ক জটিল হয়ে উঠতে পারে।
তিনি বলেন, ‘তবে পর্দার আড়ালের কূটনীতির চর্চা মোদির পক্ষে অসম্ভব নয় এবং ইতোমধ্যে তার কিছুটা হয়েছেও।’
ইউক্রেন ও ইউরোপের ব্যাপারে কিছু উদ্বেগ বিবেচনায় নিয়ে পুতিন যাতে যুদ্ধবিরতির পথ তৈরি করেন, সে বিষয়ে মোদি তাকে উৎসাহ দিতে পারেন বলে মনে করেন চৌলিয়া।
সফরের কেন্দ্রীয় লক্ষ্য অর্থনৈতিক সহযোগিতা
ভারত–রাশিয়া আলোচনায় অর্থনীতি, বাণিজ্য সহজীকরণ, সামুদ্রিক সহযোগিতা ও স্বাস্থ্যসেবা বিনিময়কে কেন্দ্র করে বেশ কিছু নথি চূড়ান্ত হবে বলে জানিয়েছেন ভারতীয় কর্মকর্তারা। পরিচয় গোপন রাখার শর্তে তারা বলেন, তবে এসব বিষয়ে এখনও প্রকাশ্যে কিছু জানানো হয়নি।
রাশিয়ায় ওষুধ, কৃষিপণ্য ও পোশাক রপ্তানি বাড়াতে আগ্রহী ভারত। এসব পণ্যে শুল্ক বাধা সরাতে চায় দিল্লি। এ ছাড়া দীর্ঘমেয়াদি সার সরবরাহের ব্যাপারেও মস্কোর সঙ্গে আলোচনা করবে মোদি সরকার।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ খাত হলো, রাশিয়ায় দক্ষ ভারতীয় কর্মীদের নিরাপদ ও নিয়ন্ত্রিত অভিবাসন। এ বিষয়ে সম্ভাব্য চুক্তি চূড়ান্ত করতে কাজ করছে দুপক্ষ।
রাশিয়ার তেল কেনায় যুক্তরাষ্ট্রের চাপ
যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে ভারতকে ছাড়কৃত মূল্যে রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করতে চাপ দিয়ে আসছে। কিন্তু তা না মানায় ভারতীয় পণ্যে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যার ফলে ভারতীয় পণ্যে মার্কিন শুল্কের পরিমাণ বেড়ে ৫০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ অস্বীকার করে ভারতের দাবি, জাতীয় স্বার্থ ও জ্বালানি নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিলেও ভারত আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে না।
তবে রাশিয়ার তেল কোম্পানি রসনেফট ও লুকওয়েলের ওপর নতুন মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর ভারতের বর্তমান পরিস্থিতি কিছুটা জটিলতায় পড়তে পারে।
এ বিষয়ে ভারতীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা নিষেধাজ্ঞার আওতায় থাকা কোম্পানির তেল কেনা থেকে দূরে থাকবে, তবে নিষেধাজ্ঞামুক্ত অন্যান্য কোম্পানিগুলোকে বিকল্প হিসেবে বিবেচনায় রাখছে নয়াদিল্লি।
নয়াদিল্লিভিত্তিক থিংক ট্যাংক অবজারভার রিসার্চ ফাউন্ডেশনের বৈদেশিক নীতিবিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট হর্ষ পান্ত বলেন, ‘ভারত নিশ্চয়ই এ বিষয়টিতে জোর দেবে যে রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানি পুরোপুরি বন্ধ করার ইচ্ছা দিল্লির নেই।’
তিনি বলেন, বাজার পরিস্থিতি ও নিষেধাজ্ঞা কতটা কার্যকরভাবে ভারতের বেসরকারি ও রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানিগুলোকে রাশিয়ার জ্বালানি থেকে দূরে রাখতে পারবে, তার ওপর ভবিষ্যৎ আমদানি নির্ভর করবে।
ফলে পুতিনের সফরকালে জ্বালানি সহযোগিতাবিষয়ক আলোচনা বিশেষ গুরুত্ব পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর সঙ্গে রাশিয়ার দূরপ্রাচ্যে ভারতের বিনিয়োগ এবং সম্প্রসারিত বেসামরিক পারমাণবিক সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়টিও আলোচনায় থাকবে।
এ ছাড়াও রাশিয়ার সহযোগিতায় নির্মিত ভারতের তামিলনাড়ুর কুদানকুলম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রও দুই দেশের অংশীদারত্বের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, স্থানীয়ভাবে যন্ত্রাংশ উৎপাদন ও তৃতীয় দেশে যৌথ প্রকল্প নিয়েও আলোচনা চলছে।
আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা
২০১৮ সালের ৫৪০ কোটি ডলারের চুক্তির আওতায় রাশিয়া থেকে তিনটি এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কেনে ভারত। আরও দুটি এস-৪০০ দ্রুত পাওয়ার জন্য রাশিয়ার ওপর চাপ দেবে নয়াদিল্লি।
ভারত আরও এস-৪০০ বা এর উন্নত সংস্করণ কেনার সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখছে, তবে পুতিনের এবারের সফরে এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আশা করা হচ্ছে না।
ভারতীয় প্রতিরক্ষা পরিকল্পনাকারীরা বলছেন, গত মে মাসে পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনার সময় এস-৪০০-এর কার্যকারিতা প্রমাণিত হয়।
গত সপ্তাহে নয়াদিল্লির একটি নিরাপত্তা সম্মেলনে ভারতের প্রতিরক্ষা সচিব রাজেশ কুমার সিং বলেন, ‘বৈঠকে প্রতিরক্ষা সহযোগিতার প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো নিয়ে (পুতিনের সঙ্গে) আলোচনা হবে এবং সরবরাহের বিলম্ব দূর করার চেষ্টা চলবে। এ ছাড়া আরও এস-৪০০ কেনার ব্যাপারে আলোচনার সম্ভাবনাও পুরোপুরি উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। তবে এ বিষয়ে এখন কোনো ঘোষণা আশা করবেন না।’
এ ছাড়া ভারতীয় এসইউ-৩০ এমকেআই যুদ্ধবিমান আধুনিকায়ন, গুরুত্বপূর্ণ সামরিক সরঞ্জাম দ্রুত সরবরাহ এবং যৌথ মহড়া ও দুর্যোগ ত্রাণ সহযোগিতা বৃদ্ধির মতো বিষয়াবলিও আলোচনায় থাকবে।
গত কয়েক বছরে ভারত সামরিক সরঞ্জাম সংগ্রহের ক্ষেত্রে বহুমুখী উৎসের ওপর নির্ভর করলেও রাশিয়াই এখনও দেশটির সবচেয়ে বড় সরবরাহকারী। অন্যদিকে, রাশিয়া ভারতের কাছে তাদের এসইউ-৫৭ স্টেলথ যুদ্ধবিমান বিক্রি করতে আগ্রহী, তবে নয়াদিল্লি এ ব্যাপারে অন্যান্য দেশের দিকেও নজর রাখছে।
১ দিন আগে
এক ফ্রেমে পুতিন-শি-কিম, ‘ষড়যন্ত্রের গন্ধ’ পাচ্ছেন ট্রাম্প
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তির ৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় কুচকাওয়াজের আয়োজন করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। তবে এই আয়োজনে সবচেয়ে বেশি যে দৃশ্যটি বিশ্ববাসীর নজর কেড়েছে তা হলো, লাল গালিচায় একসঙ্গে হাঁটতে হাঁটতে শি, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উনের আলাপ ও করমর্দন।
বিরল এই দৃশ্যটি যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি একটি স্পষ্ট বার্তা বলে মনে করছেন বিশ্লেষকদের অনেকে। দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউসে ফিরেই শুল্ক যুদ্ধকে এক অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই সঙ্গে মিত্র ও প্রতিপক্ষদের প্রতি তার পরিবর্তিত নীতির কারণে অনেক দেশই প্রভাবিত হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি দেশের নেতা আজ একসঙ্গে দাঁড়িয়েছেন।
কুচকাওয়াজে সামরিক শক্তি ও সৈন্যদের ব্যাপক প্রদর্শনী করেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট। আর এ সময় তার পাশে ছিলেন দুই শক্তিধর নেতা পুতিন ও কিম। বিষয়টিকে পশ্চিমা বিশ্বের প্রতি এক ধরনের প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।
দ্য গার্ডিয়ান বলছে, বর্তমান বিশ্বের শীর্ষ তিন নেতার এই মেলবন্ধনে ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছেন ট্রাম্প।
এ বিষয়ে ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট শি এবং চীনের চমৎকার জনগণকে মহান ও দীর্ঘস্থায়ী উদযাপনের শুভেচ্ছা। আপনারা যখন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন, তখন দয়া করে পুতিন ও কিমকে আমার উষ্ণ শুভেচ্ছা জানাবেন।’
শি বলেছেন, ‘মানবজাতি এমন একটি পর্যায়ে রয়েছে যখন শান্তি বা যুদ্ধ, সংলাপ অথবা মুখোমুখি সংঘর্ষ, পারস্পরিক কল্যাণ কিংবা সবার অকল্যাণ— এর মধ্যে যেকোনো একটি বেছে নিতে হবে।’ তবে চীনের জনগণ ইতিহাসের সঠিক পাশে দৃঢ়ভাবে দাঁড়িয়ে আছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এ সময় যুক্তরাষ্ট্রকে ইঙ্গিত করে চীনের প্রেসিডেন্ট বলেন, কিছু দেশ ‘বুলিং আচরণ’ করছে। তবে চীনকে কেউ আটকে রাখতে পারবে না বলেও সতর্ক করে দেন তিনি।
অ্যাটলান্টিক কাউন্সিলের গ্লোবাল চায়না হাবের নন-রেসিডেন্ট ফেলো ওয়েন-তি সাং বলেন, ‘চীনের এই আয়োজন আরও একটি বার্তা দিচ্ছে। সেটি হলো, পশ্চিমারা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা চালিয়ে গেলেও বন্ধুর পাশে দাঁড়াতে ভয় পায় না চীন।’
কুচকাওয়াজে আরও উপস্থিত ছিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান ও মিয়ানমারের সামরিক জান্তার প্রধান মিন অং হ্লাইং। কিমের সঙ্গে ছিলেন তার মেয়ে কিম জু। তবে কোনো বড় পশ্চিমা নেতা এই অনুষ্ঠানে অংশ নেননি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, পশ্চিমা নেতৃত্বাধীন বৈশ্বিক শৃঙ্খলা পুনর্গঠনে আগ্রহী— এমন কিছু দেশের কাছে এই কুচকাওয়াজ ছিল শিয়ের প্রভাব প্রদর্শনের একটি কৌশল।
এর আগে, তিয়ানজিন শহরে সাংহাই কো-অপারেশন অরগানাইজেশনের (এসসিও) দুই দিনব্যাপী সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন বিভিন্ন দেশের ২০ জনের বেশি রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধান এবং ১০টি আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধানরা। সেখানেও পুতিন উপস্থিত ছিলেন। তবে এসসিও সম্মেলনে যোগ দেননি কিম। তবে ওই অনুষ্ঠানে ছিলেন সম্প্রতি শুল্কারোপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হওয়া ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
এই মুহুর্তে বিশ্লেষকদের নজর এখন শি, পুতিন ও কিমের মধ্যে কোনো আনুষ্ঠানিক বৈঠক হয় কি না, সেদিকে আটকে রয়েছে।
আরও পড়ুন: চীনে এসসিও সম্মেলন ও সামরিক কুচকাওয়াজে অংশ নিচ্ছেন কারা
টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিজ অন এশিয়ার গবেষক লিম চুয়ান-তিয়ং বলেন, যদি এই তিনজনের ত্রিপক্ষীয় কোনো বৈঠক হয়, সেটি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অবশ্যই তাৎপর্যপূর্ণ হবে। এমনকি সেটি বিশ্বকে আরেকটি স্নায়ুযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিতে পারে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
লিমের ভাষ্যে, যদি এমন কোনো বৈঠক না হয়, তাহলে বুঝতে হবে চীন যুক্তরাষ্ট্রকে খুব বেশি উসকানি দিতে চায় না। তাছাড়া ত্রিপক্ষীয় কৌশলগত অস্পষ্টতাও বজায় রাখতে চান শি।
কুচকাওয়াজে প্রদর্শিত সামরিক সরঞ্জামও পর্যবেক্ষণ করেছেন বিশ্লেষকরা। সেখানে ছিল— ট্যাংক, ড্রোন, দূরপাল্লার ও পারমাণবিক হামলায় সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র, যুদ্ধবিমান ও স্টেলথ বিমান। আবার কয়েকটি নতুন উন্নত অস্ত্রও উন্মোচন করা হয়।
এস রাজারত্নম স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের সিনিয়র ফেলো ড্রু থম্পসন বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপসহ চীনের যেসব প্রতিবেশি দেশ তাদের মৌলিক জাতীয় স্বার্থ চ্যালেঞ্জ করার কথা চিন্তা করে, এই প্রদর্শনী তাদের প্রতি এক ধরনের সতর্কবার্তা।
তিনি বলেন, মৌলিক জাতীয় স্বার্থের মধ্যে সরাসরি নাম উচ্চারণ না করা হলেও যা সবকিছুতে উপস্থিত থেকেছে, তা হলো তাইওয়ান। শি নিজের বক্তব্যে বারবার ‘চীনা জাতির পুনর্জাগরণের’ কথা বলেছেন। এটি তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার অংশ এবং এর মূল ভিত্তি তাইওয়ানকে চীনের ভূখণ্ড হিসেবে সংযুক্ত করা।
তাইওয়ানকে বরাবরই চীনের একটি প্রদেশ হিসেবে দাবি করে আসছেন শি ও চীনা কমিউনিস্ট পার্টি। তবে চীনের এই দাবি মানতে নারাজ তাইওয়ানের সরকার ও সেখানকার জনগণ।
৯২ দিন আগে
কেন জেলেনস্কির সঙ্গে আলোচনায় বসতে নারাজ পুতিন?
সম্প্রতি আলাস্কা সম্মেলনের পর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিসহ ইউরোপের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে বৈঠক করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপর রাশিয়া-ইউক্রেন শান্তি আলোচনার পরবর্তী ধাপে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে জেলেনস্কির বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার বিষয়ে সবাই একমত হন।
তবে এ বিষয়ে ত্রেমলিনের জবাবের প্রতীক্ষায় ছিল সবাই। এরপর সোমবারের (১৮ আগস্ট) হোয়াইট হাউসের বৈঠকের পর নিজেদের অবস্থান জানিয়েছে মস্কো এবং তা ইউরোপ-আমেরিকার নেতাদের সঙ্গে মিলছে না।
ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনালাপের বিষয়টি নিশ্চিত করে ক্রেমলিনের সহযোগী ইউরি উশাকভ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতিনিধি পর্যায় উন্নতকরণের সুযোগের ধারণাটি আলোচনায় এসেছে। তবে কোন নেতা বা প্রতিনিধিকে সেই পর্যায়ে উন্নীত করা হতে পারে— এমন কোনো নাম তিনি উল্লেখ করেননি এবং সুস্পষ্ট করেও কিছু বলেননি।
এরপর মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ আরেকটু সমঝোতার সুরে বলেন, দ্বিপক্ষীয় কিংবা ত্রিপক্ষীয় কোনো কাজই আমরা প্রত্যাখ্যান করছি না। তবে যেকোনো আলোচনায় শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে হবে।’
পুতিনের আপত্তির কারণ কী হতে পারে?
এসব বক্তব্যে এটা পরিষ্কার যে, জেলেনস্কি-পুতিন বৈঠকের বিষয়ে সম্মত হওয়ার মতো অবস্থানে পৌঁছায়নি ক্রেমলিন।
অবশ্য এতে অবাক হওয়ারও কিছু নেই। কারণ এই যুদ্ধ একতরফাভাবে পুতিনই শুরু করেছিলেন। পূর্ব ইউক্রেনের স্বঘোষিত ‘পিপলস রিপাবলিক’ দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে দেশটিতে হামলা শুরু করেছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন: শান্তিচুক্তির বিনিময়ে কী ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা পেতে পারে ইউক্রেন
পুতিন এ-ও মনে করেন, ইতিহাস, সংস্কৃতি ও আত্মিক জায়গা থেকে ইউক্রেন রাশিয়ার অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং ইউক্রেনকে আলাদা করা ছিল ‘ঐতিহাসিক ভুল’।
চ্যাথাম হাউসের রাশিয়া ও ইউরেশিয়া কর্মসূচির পরিচালক ওরিসিয়া লুতসেভিচ বলেন, যদি এই বৈঠক হয়, তাহলে পুতিনকে এই ব্যর্থতা মেনে নিতে হবে যে তিনি এমন এক প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বসতে যাচ্ছেন, যাকে তিনি হাসির পাত্র বলে পরিহাস করেন এবং যে দেশের অস্তিত্বই তিনি স্বীকার করেন না।
তাছাড়া রাশিয়ার মানুষদেরও বোঝানো কঠিন হবে বলে মনে করেন তিনি। ওরিসিয়া বলেন, দিনের পর দিন রাষ্ট্রায়ত্ত্ব গণমাধ্যমগুলোর মাধ্যমে রুশ নাগরিকদের মগজ ধোলাই করা হয়েছে। তাদের বোঝানো হয়েছে যে, জেলেনস্কি একজন নাৎসি, ইউক্রেন হলো পশ্চিমাদের হাতের পুতুল রাষ্ট্র… জেলেনস্কির সরকার অবৈধ। তাহলে হঠাৎ তিনি কেন তার সঙ্গে কথা বলতে যাবেন? ক্রেমলিন এই প্রশ্নের কী উত্তর দেবে— বৈঠক হলে সেটিই হয়ে উঠবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
মস্কো যে শুধু জেলেনস্কি সরকারকে অবৈধ আখ্যা দিয়ে চলেছে, তা-ই নয়। তারা দেশটির নির্বাচনের স্থগিতাবস্থা নিয়েও বারবার প্রশ্ন তুলেছে। যদিও সামরিক আইনের আওতায়ই ইউক্রেনে নির্বাচন স্থগিত রয়েছে।
সর্বশেষ শান্তি আলোচনার প্রস্তাবে যেকোনো চূড়ান্ত শান্তিচুক্তির আগে ইউক্রেনে নির্বাচনের দাবি করেছে মস্কো। এমনকি তারা জেলেনস্কির নামও মুখে নেন না, বলে কিয়েভ প্রশাসন।
একটু পেছনে ঘুরে তাকালে দেখা যাবে, এ বছরের মে মাসের মাঝামাঝি তুরস্কে ইউক্রেনের সঙ্গে প্রথম সরাসরি আলোচনায় জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করতে এক ইতিহাসের বই লেখকের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছিলেন পুতিন।
কার্নেগি রাশিয়া ইউরেশিয়া সেন্টারের সিনিয়র ফেলো এবং রাশিয়া বিষয়ক খবর ও বিশ্লেষণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান আর পলিটিকের প্রতিষ্ঠাতা তাতিয়ানা স্তানোভায়ার ভাষ্যে, আসলে ইউক্রেন যুদ্ধে পুতিনের সঙ্গে আলোচনা গুরুত্বপূর্ণ মনে করেন না পুতিন। তার কাছে এই যুদ্ধ মূলত ইউক্রেনের সঙ্গে নয়, বরং পশ্চিমাদের মোকাবিলা করার উদ্দেশ্যে। তবে পুতিন যদি মনে করেন যে বৈঠক সফল হতে পারে, তাহলে আবার এতে রাজি হতেও পারেন।
তাতিয়ানা আরও মনে করেন, বৈঠক অনুষ্ঠিত হলে সেখানে অবশ্যই মূল বিষয়গুলো আলোচনার জন্য থাকতে হবে। এর মধ্যে, ইউক্রেনের ভূখণ্ড ছাড়ার মতো বিষয় রয়েছে। কিন্তু জেলেনস্কি শুরু থেকেই মস্কোর এসব দাবি প্রত্যাখ্যান করে আসছেন। আর এক্ষেত্রে ট্রাম্প পরিবর্তন আনতে পারেন বলে ধারণা পুতিনের।
আরও পড়ুন: ‘দনবাস’ কেন রাশিয়া-ইউক্রেন শান্তি আলোচনার কেন্দ্রে
তিনি বলেন, রাশিয়া যা চাইছে তা অর্জনে ট্রাম্প সহায়ক হতে পারে বলে মনে করে মস্কো। এ কারণে রুশ দাবিগুলো নিয়ে কিয়েভকে আরও নমনীয় ও খোলামেলা হতে যুক্তরাষ্ট্রের চাপ দেওয়া উচিত বলে মনে করেন তাতিয়ানা।
তার ধারণা, যুক্তরাষ্ট্রকে পাশে রাখতে এবার হয়তো উশাকভের প্রস্তাব অনুযায়ী ইস্তানবুলে বৈঠকে বসতে রাজি হতে পারেন পুতিন। সেখানে প্রতিনিধি দলে উশাকভ ও ল্যাভরভকেও পাঠাতে পারেন প্রেসিডেন্ট। তবে জেলেনস্কির সঙ্গে এমন কোনো বৈঠকে বসবে না ত্রেমলিন, যেখানে তাদের সব দাবি প্রত্যাখ্যান করা হবে।
এদিকে, সোমবার রাতে ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প জানান, তিনি প্রেসিডেন্ট পুতিন ও জেলেনস্কির মধ্যে এক বৈঠক আয়োজনের প্রস্তুতি শুরু করেছেন।
ওই পোস্ট দিয়ে তিনি ঘুমাতে গেলেন, আর উঠে বুঝতে পারলেন যে বিষয়টি এখনো চূড়ান্তই হয়নি। পরে সুর বদলে ফক্স নিউজে বলেন, আমি একভাবে পুতিন আর জেলেনস্কির মধ্যে সেট-আপটা করেছিলাম। তবে জানেনই তো, সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব তো তাদের! আমরা তো ৭ হাজার মাইল দূরে।’
কিন্তু কোনো ছাড় না দিয়েই পুতিন যখন আলাস্কায় যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সম্মানিত হয়েছেন, তখন বর্তমান পরিস্থিতিতে তার এই বৈঠকে রাজি হওয়ার কোনো কারণ নেই। এমনকি আগস্টের শুরুর দিকে ইউক্রেনে ড্রোন হামলার মাত্রা সামান্য কমালেও সোমবার রাত থেকে আবার তা বাড়িয়েছে রাশিয়া। ইউক্রেনে সোমবার রাতভর মোট ২৭০টি ড্রোন ও ১০টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে মস্কো।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, জেলেনস্কির ওপর ট্রাম্পের চাপে যদি কাঙ্ক্ষিত ফল না পায় রাশিয়া, তাহলে তাদের সামরিক শক্তি তো আছেই।
তবে যে প্রশ্নের উত্তর আসলে কেউই জানে না, সেটি হলো— এই আলোচনা ব্যর্থ হলে এর দায় কার ঘাড়ে চাপাবেন ট্রাম্প?
১০৬ দিন আগে
‘শূন্য হাতে’ পুতিনকে নিয়ে আলাস্কা ছাড়লেন ট্রাম্প
ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কাছ থেকে কোনো চুক্তি নিশ্চিত করতে পারেননি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পুতিনের জন্য আলাস্কায় লাল গালিচা বিছিয়েও নির্বাচনী প্রচারে ‘ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে’ নিজের অঙ্গীকার পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। এক প্রকার ‘শূন্য হাতেই’ পুতিনকে সঙ্গে নিয়ে আলস্কা ছাড়লেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
ইউক্রেন নিয়ে নিজেদের মধ্যে একটা ‘বোঝাপড়া’ হয়েছে বলে রুশ প্রেসিডেন্টের দাবির পর ট্রাম্প বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত একটি চূড়ান্ত চুক্তি না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত কোনো চুক্তিই কার্যকর না।’
রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধে ইউক্রেনের একটি চুক্তিতে সম্মত হওয়া উচিত বলেও জানান তিনি। দুপক্ষের মধ্যে যে অগ্রগতি তৈরি হচ্ছে, ইউরোপ যাতে তাতে বাধা হয়ে না দাঁড়ায় সেই হুশিয়ারিও দিয়েছেন পুতিন।
তবে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতাদের ফোন করে এ বিষয়ে জানাবেন বলে দাবি করেছেন ট্রাম্প। দীর্ঘমেয়াদী, মাঝারি বা স্বল্প মেয়াদি ইউক্রেনে কোনো ধরনের যুদ্ধবিরতির চুক্তি ছাড়াই আলাস্কার অ্যাঙ্করেজে এলমেনডর্ফ-রিচার্ডসন সামরিক ঘাঁটি ছেড়েছেন ভ্লাদিমির পুতিন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) প্রায় তিন ঘণ্টার বৈঠক শেষে দুই নেতা যৌথ সংবাদ সম্মেলন করলেও কেউই সাংবাদিকদের প্রশ্ন নেননি। ট্রাম্প বলছেন, তার ও পুতিনের মধ্যে কিছু বিষয়ে ‘ব্যাপক অগ্রগতি’ হয়েছে, তবে সেটা কী তার কোনো ইঙ্গিতই দেননি, স্বভাবসুলভভাবে বিশ্বকে এক ধরনের ধন্দে রেখেছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা (সমঝোতায়) পৌঁছাতে পারিনি।’ কিন্তু যে লোক নিজেকে ‘পিসমেকার’, ‘ডিলমেকার’ বলতে ভালোবাসেন, তাকে যে ঝুলিতে শান্তি বা চুক্তি, দুটির কোনোটি নেওয়া ছাড়াই আলাস্কা ছাড়তে হল!
পুতিন হালকা স্বরে ‘পরেরবার মস্কোতে’ বললেও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে সঙ্গে নিয়ে পরবর্তী একটি শীর্ষ সম্মেলন হচ্ছেই, এমন আভাসও শুক্রবার পাওয়া যায়নি।
আরও পড়ুন: ভারতকে কি চীনের দিকে ঠেলে দিচ্ছেন ট্রাম্প?
অবশ্য আলাস্কার এ বৈঠক থেকে রাশিয়া বা ইউক্রেনের তুলনায় ট্রাম্পের প্রাপ্তির আকাঙ্ক্ষা এমনিতেই ছিল কম। আগেই তিনি বলেছিলেন, বৈঠকটি ব্যর্থ হওয়ার সম্ভাবনা মাত্র ২৫ শতাংশ।
সে বিচারে শেষ পর্যন্ত এটি তার সুনামে চিড় ধরাল বলে মনে করছেন বিবিসির উত্তর আমেরিকা প্রতিনিধি অ্যান্থনি জার্চার। বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনের শুরুটাও ছিল ‘অন্যরকম’। সংবাদ সম্মেলন শুরুই করেন পুতিন, বেশ খানিকক্ষণ কথা বলেন তিনি; এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে পাশে নীরবে দাঁড়াতে হয়েছে।
ওভাল অফিসে ট্রাম্পের আগের বৈঠকগুলোর ক্ষেত্রে এমনটি দেখা যায়নি। সেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে দেখা যেত কথা দিয়ে অপর নেতাকে ‘ঠেসে ধরতে’, যার ধাক্কায় বিদেশি সেই রাষ্ট্র বা সরকারপ্রধানকে নিরুত্তর চেয়ে থাকতে হতো।
জার্চার বলছেন, আলাস্কা যদিও মার্কিন ভূখণ্ডের অধীনে, তারপরও পুতিন এতটাই স্বচ্ছন্দ ছিলেন যে তাকে মনে হয়েছে—ঘরেরই ছেলে। গত শতকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বিক্রি করে দেওয়ার আগে এটি যে ‘রাশিয়ান আমেরিকা’ ছিল, তা বলতে এখনও ভালোবাসেন অনেক রুশ কর্মকর্তা।
বিবিসির উত্তর আমেরিকা প্রতিনিধি বলেন, এটা হয়তো সামনের দিনগুলোতে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ভেতরে ভেতরে পোড়াবে, এমনকি সংবাদ সম্মেলনও, যা শীর্ষ সম্মেলনকে ব্যর্থ হিসেবেই হাজির করেছে।
তার মতে, এখন সবচেয়ে বড় যে প্রশ্নটা হাজির হবে, শুক্রবার আলাস্কায় যে প্রশ্নটি করতে পারেননি সাংবাদিকরা, সেটি হল— যুদ্ধবিরতি না হওয়ায় সাজা হিসেবে রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের যে হুমকি ট্রাম্প গত কয়েকদিন ধরে দিয়ে গেছেন, তা কি তিনি বাস্তবায়ন করবেন?
‘আলাস্কা ছেড়ে যাওয়ার আগে ফক্স নিউজের সঙ্গে এক বন্ধুত্বপূর্ণ কথোপকথনে ট্রাম্প এর আংশিক উত্তর দিয়েছেন। বলেছেন, এ ধরনের পদক্ষেপের (নিষেধাজ্ঞা) বিষয়টি তিনি দুই-তিন সপ্তাহের মধ্যে ভাববেন।
‘কিন্তু প্রেসিডেন্টের প্রতিশ্রুতি ছিল ‘গুরুতর পরিণতির’, এখন এ ধরনের অস্পষ্ট উত্তর হয়তো আরও বেশি প্রশ্নের জন্ম দেবে,’ বলেছেন জার্চার।
‘সংবাদ সম্মেলন’ কখন সংবাদ সম্মেলন হয় না? যখন কোনো প্রশ্ন হয় না। প্রেসিডেন্ট পুতিন ও ট্রাম্প যখন কেবল নিজের নিজের কথা বলে, কোনো প্রশ্ন না নিয়েই মঞ্চ ছেড়ে যান, তখন হলরুমের প্রায় সবাই অবাক হয়ে পড়ে বলে জানান বিবিসির রাশিয়া এডিটর স্টিভ রোজেনবার্গ।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে পুতিনকে সময় বেঁধে দিলেন ট্রাম্প
রুশ প্রতিনিধিদলের সদস্যরাও দ্রুতগতিতে কক্ষ ত্যাগ করেন, তাদের দিকে ছুঁড়ে দেওয়া সাংবাদিকদের প্রশ্নের কোনো উত্তর না দিয়েই।
ইউক্রেনে যুদ্ধ নিয়ে পুতিন ও ট্রাম্পের মধ্যে যে এখনও বড় ধরনের মতপার্থক্য রয়েছে, এগুলোকে তার স্পষ্ট লক্ষণ হিসেবে দেখছেন রোজেনবার্গ। তিনি বলেন, রাশিয়ার কাছে যুদ্ধবিরতি চাইলেন ট্রাম্প, ভ্লাদিমির পুতিন দিলেন না।
অথচ দিনের শুরুতে পরিস্থিতি ছিল পুরোপুরি ভিন্ন। অ্যাঙ্করেজের বিমানঘাঁটিতে পুতিনকে লাল গালিচায় স্বাগত জানানো হয়, ট্রাম্প তার অতিথিকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। রুশ প্রেসিডেন্টের প্রতি সম্মান জানিয়ে আকাশে উড়ে যায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বিমান।
১১০ দিন আগে
ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে পুতিনকে সময় বেঁধে দিলেন ট্রাম্প
ইউক্রেনে যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে দেওয়া ৫০ দিনের সময়সীমা কমিয়ে ১০ থেকে ১২ দিন নির্ধারণ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তা না-হলে রাশিয়ার ওপর কড়া শুল্কারোপের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
স্থানীয় সময় সোমবার (২৮ জুলাই) এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘অপেক্ষা করার কোনো মানে নেই। আমরা কোনো অগ্রগতি দেখছি না।’
এর আগে ১৪ জুলাই ট্রাম্প বলেছিলেন, সেপ্টেম্বরের শুরু পর্যন্ত শান্তিচুক্তি না হলে তিনি রাশিয়ার ওপর কড়া শুল্কারোপ করবেন। তবে এখন সেই সময়সীমা কমিয়ে ১০–১২ দিন নির্ধারণ করেছেন তিনি।
এই পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা এবং রাশিয়ার বাণিজ্যিক অংশীদারদের লক্ষ্য করে মাধ্যমিক শুল্কারোপের বিষয়টি। এ সম্পর্কিত আনুষ্ঠানিক ঘোষণা সোমবার অথবা মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দেওয়া হবে বলেও জানান ট্রাম্প। এ বিষয়ে রাশিয়ার পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানালেও ইউক্রেনে অব্যাহত হামলা চালানোর জন্য পুতিনের সমালোচনা করেন ট্রাম্প। পুতিনের প্রতি হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘আমি বলেছি, বিষয়টি এভাবে করা উচিত নয়।’
আরও পড়ুন: ইউক্রেনের সঙ্গে ফের আলোচনায় বসতে চায় রাশিয়া
পুতিনের সঙ্গে বৈঠকে বসার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে ট্রাম্প জানান, তিনি এখন আর সেই বিষয়ে আগ্রহী নন। তবে ক্রেমলিনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেওয়া নিয়ে কিছুটা দ্বিধাও প্রকাশ করেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘আমি রাশিয়ার জনগণকে ভালোবাসি। আমি তাদের সঙ্গে এটা করতে চাই না।’
এদিকে পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি পুতিনের বিরুদ্ধে আরও কঠোর অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ইউক্রেন। রাশিয়াকে দেওয়া সময়সীমার জন্য ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্টের দপ্তরের প্রধান আন্দ্রেই ইয়ারমার্ক।
টেলিগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, ‘পুতিন কেবল শক্তির ভাষা বোঝেন। সেটিই এখন স্পষ্ট ও জোরালোভাবে তাকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, রাতভর রাশিয়া ইউক্রেনের বিভিন্ন শহরে ৩০০টির বেশি ড্রোন, চারটি ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র এবং তিনটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে। ট্রাম্পের যুদ্ধ বন্ধের চাপ সত্ত্বেও রাশিয়ার হামলা অব্যাহত রয়েছে।
১২৮ দিন আগে
ইরানে শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন করতে চান না ট্রাম্প
ইরানে শাসনব্যবস্থা পরিবর্তন করতে চান না বলে জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার মতে, এটি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি করবে।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) নেদারল্যান্ডের হেগে ন্যাটো সম্মেলনে যোগ দিতে বিমান এয়ারফোর্স ওয়ানে করে যাওয়ার পথে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘ইরানকে কোনোভাবেই পরমাণু অস্ত্র রাখতে দেওয়া হবে না।’
তিনি আরও জানান, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তাকে মুঠোফোনে ইরান-ইসরায়েল সংঘাত নিরসনে সহযোগিতার প্রস্তাব দিয়েছেন।
এর আগে, সোমবার যদিও নিজের মালিকানাধীন সামাজিকমাধ্যম সোশ্যাল ট্রথে ট্রাম্প ইঙ্গিত দিয়েছেন, তিনি ইরানের পুরো শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের চিন্তা করছেন। তিনি ওই পোষ্টে লিখেছিলেন, ‘বর্তমান ইরানি শাসন যদি ইরানকে আবার মহান করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে শাসনব্যবস্থা পরিবর্তন কেন হবে না?’
আরও পড়ুন: যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ইরানে ইসরায়েলের হামলা, দুই জেনারেলসহ নিহত ৭
ট্রাম্পের এমন পোস্টের পর মঙ্গলবার (২৪ জুন) ইরানের শেষ শাহ্-এর ছেলে রেজা পাহলভি এক বক্তব্যে ঘোষণা করেন, ‘ইসলামী প্রজাতন্ত্রের পতনের সময় খুব কাছাকাছি। এটাই আমাদের বার্লিন প্রাচীর পতনের মুহূর্ত।’
তিনি বলেন, ‘একটি স্বাধীন ও গণতান্ত্রিক নতুন ইরান কল্পনা করুন, যেখানে জনগণ প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করবে এবং দেশ হয়ে উঠবে উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু।’
এর আগে, সোমবার (২৩ জুন) সামাজিকমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দুই দেশের সংঘাতকে ‘১২ দিনের যুদ্ধ’ দাবি করে বলেন, ‘ইরান ও ইসরায়েল সম্পূর্ণ ও পুরোপুরি যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে।’
তবে, ইরান-ইসরায়েল দুদেশই একে অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছে। ইরানে ব্যাপক হামলাও চালিয়েছে ইসরায়েল। হামলায় ইরানের দুই জেনারেলসহ আইআরজিসির সাত সদস্য নিহত হয়েছেন বলেও দাবি করেছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরাইল কাটজ। অন্যদিকে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার কথা অস্বীকার করেছে ইরান।
সূত্র: বিভিন্ন সংবাদ সংস্থা
১৬৩ দিন আগে
ইউক্রেনের সঙ্গে ফের আলোচনায় বসতে চায় রাশিয়া
ইউক্রেনের সঙ্গে ফের ‘সরাসরি আলোচনা’ শুরু করার প্রস্তাব দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। কোনো শর্ত ছাড়াই আগামী ১৫ মে তুরস্কের ইস্তানবুলে তিনি এই বৈঠক করতে চাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।
এমন এক সময় তিনি এই প্রস্তাব দিয়েছেন, যখন রাশিয়াকে নিঃশর্তভাবে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে রাজি হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে ইউক্রেন ও তার মিত্র দেশগুলো। এই যুদ্ধবিরতিতে সম্মত না হলে আরও নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়বে মস্কো বলেও হুঁশিয়ারে দেন তারা। যদিও তাদের এই আল্টিমেটাম প্রত্যাখ্যান করেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট।
রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার কয়েকদিন পর ২০২২ সালের মার্চে ইস্তানবুলে হওয়া অসফল বৈঠকের উদহারণ টেনে সেই আলোচনাই ফের শুরু করার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি। রবিবার (১১ মে) টেলিভিশনে দেওয়া এক বিরল বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘স্থায়ী ও ফলপ্রসূ শান্তির দিকে এগিয়ে যেতে আন্তরিক আলোচনা করতে চাচ্ছে রাশিয়া।’
ইউক্রেনের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা চলাকালীন একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে একমত হওয়ার বিষয়টিও উড়িয়ে দেননি তিনি। এরআগে শনিবার ইউরোপের শক্তিধর চার দেশ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, ‘মস্কো যদি নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতিতে সম্মত না হয়, তাহলে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।’
ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, জার্মানি ও পোল্যান্ডের নেতারা বলেন, ‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সমর্থিত তাদের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব সোমবার থেকে শুরু হবে। এরআগে এ বিষয়ে ট্রাম্পকে অবগত করা হয়েছে।’
এরআগে ‘খুবই উচ্চ পর্যায়ের’ বৈঠকের জন্য রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘তিনবছর ধরে চলা এই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ বন্ধে তারা একটি চুক্তির কাছাকাছি পৌঁছেছেন।’ এদিকে, শান্তি আলোচনায় প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তবে শর্ত দিয়ে তিনি বলেন, ‘সেটা তখনই হবে, যখন যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে।’
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে ৭২ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা রাশিয়ার
মস্কোর প্রস্তাব
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রাশিয়া বেশ কয়েকটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে বলে দাবি করেন পুতিন। যার মধ্যে রয়েছে—জ্বালানি অবকাঠামোয় হামলা বন্ধ রাখা, যাতে ইউক্রেনও রাজি হয়েছে; ইস্টার সানডেতে ত্রিশ-ঘণ্টার একতরফা অস্ত্রবিরতি; এছাড়াও গেল ৮ থেকে ১০ মে দুদিনের একতরফা অস্ত্রবিরতি।
ইউক্রেন বারবার এসব পদক্ষেপ ব্যর্থ করে দেওয়ার চেষ্টা করেছে বলে অভিযোগ করেন রুশ প্রেসিডেন্ট। বিপরীতে রাশিয়া নিজেই এসব অস্ত্রবিরতি লঙ্ঘন করেছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেনীয় কর্তৃপক্ষ।
গেল মার্চে, ত্রিশ দিনে সীমিত একটি অস্ত্রবিরতির প্রস্তাব দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র, যাতে রাজি হয়েছিল ইউক্রেন। কিন্তু নিজস্ব শর্ত জুড়ে দিয়ে তা আটকে দিয়েছিল রাশিয়া।
রবিবার পুতিন বলেন, ‘ক্রেমলিনের এমন একটি যুদ্ধবিরতি দরকার, যা তাদের একটি স্থায়ী শান্তির দিকে নিয়ে যাবে। তারা এমন যুদ্ধবিরতি চায় না, যাতে ইউক্রেন নতুন করে অস্ত্র মজুত ও সামরিক বাহিনীতে নতুন জনশক্তি নিয়োগের সুযোগ পায়।’
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগানের সঙ্গে কথা বলে আগামী ১৫ মে শান্তি আলোচনার আয়োজনের অনুরোধ করবেন বলেও জানান পুতিন।
২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে বৈঠকের আয়োজন করেছিল তুরস্ক, যদিও তা সফল হয়নি। প্রস্তাবিত চুক্তিতে ইউক্রেনের ‘নিরপেক্ষ মর্যাদা, দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর আকার কতটা হবে, সেই সীমা আরোপ করে দেওয়ার কথা ছিল। পাশাপাশি রাশিয়া অধিকৃত অঞ্চলগুলোর মর্যাদা নিয়ে আলোচনা বিলম্বিত করা হয়েছিল।
সেই আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার জন্য ইউক্রেন ও পশ্চিমা দেশগুলোকে দায়ী করে রাশিয়া। পুতিন বলেন, ‘যারা সত্যিই শান্তি চাচ্ছেন, ফের শান্তি আলোচনা শুরুর প্রস্তাব নাকচ করে দিতে পারেন না তারা।’
আরও পড়ুন: ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সিআইএ কর্মকর্তার ছেলে নিহত
খুবই গুরুত্বপূর্ণ সংকেত
শনিবার ইউরোপীয় নেতাদের পাশাপাশি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। চার ইউরোপীয় দেশের নেতাদের সঙ্গে তার বৈঠককে ‘খুবই গুরুত্বপূর্ণ সংকেত’ হিসেবে আখ্যায়িত করেন তিনি।
জেলেনস্কির সরকারি ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা এক যৌথ বিবৃতিতে সোমবার থেকে পরবর্তী ত্রিশ দিনের একটি যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন তারা। যুদ্ধ বন্ধে কূটনৈতিক উদ্যোগের সুযোগ তৈরি করার উদ্দেশ্যে তারা এই প্রস্তাব দিয়েছেন বলে দাবি করেন।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন বলেন, ‘ইউরোপীয় দেশগুলোর সহায়তায় প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণের নেতৃত্ব দেবে যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়া যদি এই যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে, তাহলে তাদেরকে ইউরোপ ও আমেরিকার ব্যাপক সমন্বিত নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়তে হবে।’
২০৭ দিন আগে
যুক্তরাষ্ট্রের হাত ধরেই কী ইউক্রেন জয়ের পথে রাশিয়া?
হয়ত এই মুহূর্তটির জন্যই অপেক্ষা করছিল রাশিয়া! ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পরপরই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন জানিয়েছেন, ‘যুদ্ধ বন্ধে আলোচনায় বসতে রাজি তিনি।’ যার সূত্র ধরে দুই প্রেসিডেন্টের দীর্ঘ ফোনালাপ এবং অবশেষে সৌদি আরবের রিয়াদে উচ্চ পর্যায়ের দ্বিপাক্ষিক বৈঠক।
২০২২ সালে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর প্রায় হাজারখানেক নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও টলানো যায়নি যে পুতিনকে, সেই তিনি কেন হঠাৎ সমাধান চাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের থেকে?
এই প্রশ্নের সহজ উত্তর মিলবে মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সৌদি আরবের রিয়াদে অনুষ্ঠিত রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনার চিত্র থেকে।
ইউক্রেন আক্রমণের পর এই প্রথম রাশিয়ার উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কর্মকর্তারা। যে ইউক্রেনকে ঘিরে এতকিছু তাকেই রাখা হয়েছে আলোচনার টেবিলের বাইরে। আর যেখানে ইউরোপের নিরাপত্তা ইস্যু নিয়ে আলোচনা সেই ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত কোনো দেশকে আমন্ত্রণ জানায়নি ট্রাম্প প্রশাসন।
আরও পড়ুন: রুশ-মার্কিন বৈঠক: যুদ্ধ বন্ধ ও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কোন্নয়নে গুরুত্ব
যুদ্ধ চলছে ইউরোপে, বোমার আঘাতে ক্ষতবিক্ষত কিয়েভ- কিন্তু আলোচনার টেবিলে মুখ্য বিষয় ছিল রাশিয়াকে সর্বোচ্চ লাভ নিশ্চিত করে যুদ্ধ বন্ধ করা এবং চলমান সব নিষেধাজ্ঞা তুলে দিয়ে রুশ-আমেরিকান বাণিজ্যকে আবারও বিস্তৃত করা।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসসহ (এপি) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেরগেই লাভরভের নেতৃত্বে অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে দুই দেশের মধ্যে। ট্রাম্প-পুতিনের দীর্ঘ ফোনালাপের পর যত দ্রুত সম্ভব এবার দুই রাষ্ট্রপ্রধানের মুখোমুখি বৈঠকের ব্যবস্থার ওপরে জোর দেওয়া হয়েছে দুই পক্ষ থেকেই।
চার ঘণ্টার আলোচনা শেষে মার্কো রুবিও জানিয়েছেন, শুধু রাজনৈতিক না, রাশিয়ার সঙ্গে সমাধান করা হবে সব ধরনের অর্থনৈতিক টানাপোড়েন। অন্যদিকে সেরগেই লাভরভ বেশ খোশ মেজাজে বলেছেন, এতদিন পর রাশিয়ার দিকটাও বুঝতে পারছে যুক্তরাষ্ট্র।
দুপক্ষের বার্তা থেকে কূটনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ‘ইউক্রেন যুদ্ধে রাশিয়ার বিজয়ের প্রথম স্বীকৃতি হয়ত যুক্তরাষ্ট্রের হাত ধরেই আসতে চলেছে।’
বাইডেন আমলে রাশিয়ার ওপর যুদ্ধাপরাধের দায় চাপানো, পুতিনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি; সব ছাপিয়ে ট্রাম্প চাচ্ছে রাশিয়ার সঙ্গে নিরঙ্কুশ সুসম্পর্ক। এতদিন মার্কিনিরা ইউক্রেনকে দেদারসে অস্ত্র দিয়ে আসলেও এবার অন্য নীতি নিবে যুক্তরাষ্ট্র।
নিষেধাজ্ঞার কারণে বড় বড় আমেরিকান কোম্পানি রাশিয়া ছাড়ায় ৩০০ বিলিয়ন ডলার ক্ষতি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের করপোরেট খাতে। এই ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে মরিয়া ট্রাম্প প্রশাসন।
আরও পড়ুন: যুদ্ধ বন্ধে ‘কার্যকর আলোচনায়’ থাকবে ইউক্রেন ও ইউরোপীয়রা
এদিকে ইউক্রেন প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির উদ্ভ্রান্ত দশা। রিয়াদের আলোচনায় রুশদের সঙ্গে এক টেবিলে বসতে না পারায় ক্ষোভ ঝেড়েছেন তিনি। তিনি জানান, নিজেরা নিজেরা আলোচনা করে ইউক্রেনের ওপর কোনো সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া যাবে না।
যুদ্ধ বন্ধে তিন ধাপে কাজ করবে রাশিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। যার প্রথমটিই হচ্ছে মস্কো এবং ওয়াশিংটনের সম্পর্ক উন্নয়ন। মার্কো রুবিও জানান, মস্কোর ওপর সব ধরনের অযাচিত চাপ প্রত্যাহার করা হবে। বিনিময়ে ওয়াশিংটনের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেবে পুতিন সরকার।
রুবিও বলেন, যুদ্ধ বন্ধে ইউক্রেন-ইউরোপের সঙ্গে আলোচনা হবে। তবে রাশিয়া এগিয়ে না এলে কোনোদিনও এ যুদ্ধ বন্ধ সম্ভব না। তাই রাশিয়ার দিক বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়াকেই যথোপযুক্ত মনে করছে ট্রাম্প সরকার।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে, রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক উন্নয়নে যা কিছু করা দরকার; সবকিছুই করা হবে বলে জানান এ পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
ব্যবসায়িক সুসম্পর্কের ব্যাপারে বৈঠক শেষে রুশ সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কিরিল দিমিত্রিভ বলেন, ‘কোনো কাটখোট্টা আলোচনা হয়নি। দুপক্ষই বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। এখন সময় ভেঙে যাওয়া সম্পর্ক এবং বিশ্বাসের পুনঃনির্মাণের।'
মার্কিন সংবাদ মাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে জেলেনস্কির পরিস্থিতি তুলে ধরা হয়েছে বেশ মজার ছলে। প্রতিবেদনে বলা হয়, জেলেনস্কি ভালো করেই বুঝতে পেরেছেন- এত এত সংগ্রামের পর শেষমেশ আমেরিকার বলির পাঁঠা হতে যাচ্ছেন তিনি। বিশেষত এতদিনের বড় ভরসা যুক্তরাষ্ট্রই এবার পিঠ দেখাচ্ছে ইউক্রেনকে।
এর বাইরে ট্রাম্পের গ্রিনল্যান্ড কেনার খায়েসে ইউরোপের বাগড়া দেওয়া এবং ন্যাটো নিয়ে ঝামেলার ঝাল পুরোটাই তুলল যুক্তরাষ্ট্র। সৌদিকে কেন্দ্রে রেখে ইউরোপকে পাশ কাটিয়ে যাওয়ায় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো এক রকমের হতবাকই হয়েছে।
২৮৮ দিন আগে
ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে একমত ট্রাম্প-পুতিন, বসবেন সৌদিতে
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সরাসরি বৈঠক করতে একমত হওয়ার কথা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সৌদি আরবে এই বৈঠক হতে পারে বলেও তিনি আভাস দিয়েছেন।
এরমধ্য দিয়ে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে গেল তিন বছর ধরে চলা মার্কিন নীতিতে বড় পরিবর্তন এনেছেন তিনি। বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) ওভাল অফিসে ট্রাম্প বলেন, ‘এই যুদ্ধ বন্ধে আলোচনা করতে পুতিন ও আমি একমত।’-খবর এসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি)।
একঘণ্টারও বেশি সময় ধরে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে তার আলোচনা হয়েছে বলে জানান তিনি। এরপর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কের সঙ্গেও কথা হবে বলে জানান ট্রাম্প। কিন্তু রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনায় ইউক্রেনও সমানভাবে অংশীদার হবে কিনা; সে বিষয়ে তার কোনো প্রতিশ্রুতি নেই।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমি মনে করি, আমরা শান্তি অর্জনের পথে রয়েছি। আমি মনে করি, প্রেসিডেন্ট পুতিন ও প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিও শান্তি চান। আমিও শান্তি চাই। আমি কেবল দেখতে চাই, লোকজনের প্রাণহানি হচ্ছে না।’
আরও পড়ুন: ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ইউরোপীয়দের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বৈঠক চলতি সপ্তাহে
পুতিনের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘পুতিনের চিন্তাভাবনা সম্পর্কে জনগণ সত্যিকার অর্থে জানেন না। কিন্তু আমি মনে করি, আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলতে পারি, তিনিও এই যুদ্ধের অবসান দেখতে চান। কাজেই সেটা ভালো এবং আমরা এই যুদ্ধ বন্ধের দিকে যাচ্ছি, যত দ্রুত সম্ভব।’
এ সময়ে শিগগিরই পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলেও জানিয়েছেন ট্রাম্প, যা সৌদি আরবে হতে পারে।
ট্রাম্প-পুতিন আলোচনার মাধ্যমে এই আভাসই দেওয়া হচ্ছে যে, ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ওয়াশিংটন ও মস্কো একটি চুক্তি পৌঁছাতে একমত হয়েছে। এরমধ্য দিয়ে এই যুদ্ধ নিয়ে যে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে কিয়েভও যে পরিপূর্ণ একটি অংশীদার হবে বলে মনে করতো জো বাইডেন প্রশাসন, সেখান থেকে সরে এসেছে ওয়াশিংটন।
ইউক্রেনও কী এই যুদ্ধের সমান অংশীদার হতে যাচ্ছে, জানতে চাইলে ট্রাম্প বলেন, ‘খুবই চমৎকার প্রশ্ন, আমি মনে করি, তারাও শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চান।’
এছাড়া ইউক্রেন যে পশ্চিমাদের সঙ্গে আরও ঘেঁষতে চাচ্ছে, সেই প্রত্যাশায় আরেকটি আঘাত করলেন মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পেট হেগসেথ। ব্রাসেলসে ন্যাটোর প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনের জন্য ন্যাটোর সদস্য হওয়া বাস্তবসম্মত না।’
পরবর্তীতে ট্রাম্পও একই কথা বলেছেন। তিনি বলেন, হেগসেথ যে কথা বলেছেন, সেটিই সত্য বলে আমি মনে করি।
২০২২ সালে ইউক্রেনে রুশ অভিযান শুরু হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের তখনকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন অঙ্গীকার করেন, ইউক্রেনের জন্য এই পশ্চিমা সামরিক জোটের সদস্য হওয়া অপরিহার্য।
আরও পড়ুন: দালালের খপ্পরে রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধে জড়াচ্ছেন বাংলাদেশিরা: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
২৯৫ দিন আগে