নদীভাঙন
বন্যার পর সুনামগঞ্জে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে নদীভাঙন
বন্যার পর এবার সুনামগঞ্জে ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে নদীভাঙন। এতে বিপাকে পড়েছে নদীপাড়ের মানুষ। তিন দফা বন্যার পর নদীভাঙনে অসহায়ত্ব ফুটে উঠছে ভাটি জেলার মানুষের চোখে-মুখে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ভাঙনের কবলে পড়ে সদর উপজেলার সদরপুর গ্রামের বাসিন্দা বশির মিয়ার পুরো বসতভিটাটি নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। এখন নদীপাড়ে বসে প্রায় প্রতিদিনই কাঁদতে দেখা যায় তাকে।
ইউএনবিকে বশির মিয়া বলেন, ‘আমার মাথা গোঁজার ঠাঁই নাই। সবকিছু নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। একমাত্র মেয়েকে নিয়ে যেখানে রাত হয় সেখানেই থাকি। এখন পর্যন্ত আমাদের কেউ খোঁজ নেয়নি।’
আরও পড়ুন: নড়াইলে মধুমতি নদীভাঙনের কবলে শতাধিক পরিবার
শুধু বশির মিয়ার নয়, সদরপুর গ্রামের আরও অনেকেরই শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলার সুরমা, কুশিয়ারা, নলজুর, বটেরখাল, মহাশিং, নাইন্দাও পুরাতন সুরমা নদীর বিভিন্ন এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে ১২ উপজেলার ঘরবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাটবাজার থেকে শুরু করে মসজিদ ও কবরস্থান নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙন ঠেকাতে শত কোটি টাকার প্রকল্পের উদ্যোগ নেওয়া হলেও কার্যকর ফল মিলছে না।
এদিকে, বসতভিটা হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে দিন পার করছেন নদীপাড়ের বাসিন্দারা।
৪ সপ্তাহ আগে
সরকারের পদক্ষেপের কারণেই সারাদেশে নদীভাঙন কমে এসেছে: পানিসম্পদ উপমন্ত্রী
পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম বলেছেন, গত ১৩ বছরে সারাদেশে নদী ভাঙনের পরিমাণ সাড়ে ৯ হাজার হেক্টর থেকে সাড়ে ৩ হাজার হেক্টরে নেমেছে।
তিনি বলেন, সারাদেশের নদী ভাঙন রোধে দ্রুত কাজ করছে সরকার। আর সরকারের পদক্ষেপের কারণেই সারাদেশে নদীভাঙন কমে এসেছে।
শনিবার (২১ জানুয়ারি) সকালে চট্টগ্রামে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও পওর বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, শুধু চট্টগ্রামেই আট হাজার ৩০০ কোটি ২৪ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৬ টি প্রকল্প হয়। যার সাতটি প্রকল্পের কাজ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। বাকিগুলোও সমাপ্তির পথে।
আরও পড়ুন: যেকোনো মূল্যে মেঘনা থেকে চাঁদপুরকে রক্ষা করা হবে: পানিসম্পদ উপমন্ত্রী
তিনি আরও বলেন, এছাড়াও সাতটি প্রকল্প একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে। যার প্রকল্প ব্যয় প্রায় ছয় হাজার ৩২১ কোটি টাকা। এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে নদীভাঙন ও জলাবদ্ধতার অনেকাংশেই কমে আসবে। এছাড়া কাজ যেন গুনগত মান ঠিক রেখে হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। কাজের ব্যাপারে কোনো প্রকার গাফিলতি, অনিয়ম ও দুর্নীতি সহ্য করা হবে না।
এনামুল হক শামীম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী প্রজন্ম নিয়ে ভাবেন, সেজন্য তিনি আগামীর বাসযোগ্য বিশ্বমানের সুবিধা সম্বলিত বাংলাদেশ গড়তে চান। এজন্য তিনি দূরদর্শী পদক্ষেপ নেন। সেজন্য তিনি ডেল্টাপ্লান-২১০০ বাস্তবায়নেরও ঘোষণা দিয়েছেন। আর এই মহাপরিকল্পনার সিংহভাগ কাজই পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করবে।
এ মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে সারাদেশে নদী ভাঙন ও জলাবদ্ধতার কোনো সমস্যাই থাকবে না। এই মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে।
উপমন্ত্রী বলেন, সারাদেশে স্থায়ী প্রকল্প নেয়া হচ্ছে, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বাংলাদেশের মানুষ অনেকাংশে জলাবদ্ধতা ও নদী ভাঙন থেকে রক্ষা পাবে। আর এর সুফল কয়েক বছরের মধ্যে মিলবে। প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে ভাঙন রোধে স্থায়ী প্রকল্প করা হচ্ছে। উপকূল অঞ্চলে প্রতিটি বাঁধ প্রশস্ত ও উঁচু করা হচ্ছে, বনায়ন করা হচ্ছে।
আর এসব স্থায়ী প্রকল্পে নদী খনন বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে এবং তা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য জনবলও বাড়ানো হয়েছে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রামে বঙ্গবন্ধু শিল্পনগরী, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে দিয়ে বঙ্গবন্ধু টানেল, কোরিয়ান ইপিজেড, চায়না ইকোনমিক জোন, মহেশখালী ইকোনমিক জোন, মহেশখালীতে এলএনজি টার্মিনাল, মহেশখালীতে গভীর সমুদ্রবন্দর, মহেশখালী কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ, চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত বিশ্বমানের রেল সড়ক ও রেল স্টেশন হচ্ছে। এছাড়া তিনি চট্টগ্রামের উন্নয়নে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করে যাচ্ছেন।
এসময় পানি উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী শিবেন্দু খাস্তগীর, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খ ম জুলফিকার সহ নির্বাহী প্রকৌশলী ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: মেঘনা সেতু হলে অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে: পানিসম্পদ উপমন্ত্রী
বিএনপি দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত: পানিসম্পদ উপমন্ত্রী
১ বছর আগে
কুড়িগ্রামে ধরলার ভাঙন মুখে তিন শতাধিক পরিবার
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের চর গোরকমন্ডল গ্রামে ধরলা নদীর তীব্র ভাঙন দেখা দেয়ায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন ধরলা পাড়ের শতশত পরিবার।
গত আড়াই মাসে ধরলার ভাঙনে নদী নিকটবর্তী ওই গ্রামের ফসলি জমি, বাঁশঝাড়, গাছপালার বাগানসহ চলাচলের একমাত্র সড়কের প্রায় ৩০০ মিটার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ফলে ভাঙন হুমকির মুখে পড়েছে ওই গ্রামের তিন শতাধিক পরিবার। দ্রুত ভাঙন রোধের ব্যবস্থা না নিলে চর গোরকমন্ডলের পুরো গ্রাম নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।
চর গোরকমন্ডল এলাকার বাসিন্দা আমীর আলী (৪২) ও জাহাঙ্গীর আলম (৩৭) জানান, বর্ষা মৌসুমের শুরু থেকে এই এলাকায় ধরলা নদীর ভাঙন শুরু হয়েছে। গত দুই মাসে প্রায় শতাধিক বিঘা আবাদী জমি, গাছপালার বাগান ও বাঁশঝাড় নদী গিলে খেয়েছে। আর গত এক সপ্তাহে আমাদের চলাচলের একমাত্র সড়কটিও নদীতে চলে গেল। এভাবে ভাঙতে থাকলে কয়েক দিনের মধ্যে ভিটা-বাড়িও নদীতে চলে যাবে।
আরও পড়ুন: তিস্তা-ধরলা পাড়ে ভাঙন, সরকারি ভাতার বদলে বাঁধ চায় এলাকাবাসী
চর গোরকমন্ডল ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আয়াজ উদ্দিন বলেন, আমার এই গ্রামে প্রায় সাড়ে তিনশ পরিবার বসবাস করে। তাছাড়া এ গ্রামে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দুইটি মাদরাসা, চারটি মসজিদ, একটি সরকারি আবাসন প্রকল্পসহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে ১০টি পরিবার ধরলার ভাঙনে ঘরবাড়ি ভেঙে নিয়ে অন্য জায়গায় আশ্রয় নিয়েছে। এছাড়াও কয়েকটি পরিবার অন্য জায়গায় যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন প্রতিরোধের ব্যবস্থা না নিলে নদীর তীরবর্তী চর গোরকমন্ডল গ্রামটি হয়তো অল্প কিছুদিনের মধ্যেই উপজেলার মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে পারে।
এ প্রসঙ্গে নাওডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাছেন আলী জানান, চর গোরকমন্ডল এলাকার নদী ভাঙন উদ্বেগজনক। ভাঙন প্রতিরোধে ইউনিয়ন পরিষদের প্যাডে আবেদন করে সংসদ সদস্যের সুপারিশসহ কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডে পাঠানো হয়েছে। এর প্রেক্ষিতে পানি উন্নয়ন বোর্ড মাত্র দুইশত জিও ব্যাগ প্রদান করেছে। যা দিয়ে ভাঙন প্রতিরোধ করা সম্ভব হয়নি।
আরও পড়ুন: পানিবন্দি ২ লাখ মানুষ, কুড়িগ্রামে বাড়ছে ব্রহ্মপুত্র ও ধরলা নদীর পানি
তিনি চর গোরকমন্ডল গ্রামটি ধরলার ভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ধরলা তিস্তাসহ যে সকল এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে আমরা সেইসব এলাকা পরিদর্শনসহ নদী ভাঙন প্রতিরোধে ব্যবস্থা করছি। জিও ব্যাগ ফেলে নদী ভাঙন প্রতিরোধের কাজ চলমানও রয়েছে।
আরও পড়ুন: কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র-ধরলা নদীর পানি বাড়ছে, নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত
২ বছর আগে
বন্যা ও নদীভাঙন মোকাবিলায় ১৮০৩ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন একনেকে
পাবনা, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল ও মানিকগঞ্জে বন্যা ও নদীভাঙনের কারণে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি কমাতে এক হাজার ৮০৩ কোটি টাকার একটিসহ মোট ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।
মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ার শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এক সভায় এসব প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি এ সভায় যোগ দেন এবং মন্ত্রী ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা রাজধানীর এনইসি সম্মেলন কক্ষ থেকে যোগ দেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে বলেন, ‘আজকের সভায় পাঁচটি সংশোধিতসহ মোট ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এসব প্রকল্পের মোট আনুমানিক ব্যয় চার হাজার ৬২১ দশমিক ৩৪ কোটি টাকা। এসব খরচের মধ্যে সরকারি তহবিল থেকে তিন হাজার ৫৫ দশমিক ২১ কোটি টাকা ও বাকি এক হাজার ৫৬৬ দশমিক ১৩ কোটি টাকা আসবে বিদেশি উৎস থেকে।’
আরও পড়ুন: চসিকের উন্নয়নে একনেকে ২৪৯০ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন
এক হাজার ৮০৩ দশমিক ০৬ কোটি টাকার বন্যা ও নদীভাঙন ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা বিনিয়োগ কর্মসূচি (প্রকল্প-২) সম্পর্কে তিনি বলেন, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
পরিকল্পনা কমিশনের প্রকল্প তথ্যপত্র অনুযায়ী, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) থেকে ঋণ হিসেবে এক হাজার ৩২৯ দশমিক ৭৭ কোটি টাকা এবং নেদারল্যান্ডস সরকারের প্রকল্প সহায়তা হিসেবে ১৫১ দশমিক ৫৬ কোটি টাকা আসবে। এছাড়া বাকি অর্থ আসবে সরকারি তহবিল থেকে।
পাবনা, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল ও মানিকগঞ্জ জেলার বেড়া, শাহজাদপুর, বেলকুচি, চৌহালী, টাঙ্গাইল সদর, নাগরপুর, দৌলতপুর, হরিরামপুর ও শিবালয় উপজেলায় এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।
প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্যের মধ্যে রয়েছে যমুনা ও পদ্মা নদীর আশপাশে বসবাসকারী মানুষজনের জীবন-জীবিকার উন্নয়ন; কাঠামোগত পরিবর্তনের মাধ্যমে বন্যা ও নদী তীর ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন; প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং নদীভাঙন হ্রাস করা।
প্রকল্পের প্রধান কাজের মধ্যে রয়েছে ৩০ কিলোমিটার নদী তীর সুরক্ষা, সাত দশমিক ৯ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ, ৪০ কিলোমিটার অভিযোজন কাজ, ছয় কিলোমিটার জরুরি কাজ ও তিন কিলোমিটার বাঁধ ব্যবস্থাপনা।
আরও পড়ুন: ডিজিটাল অর্থনীতি গড়তে একনেকে ২৫৪২ কোটি টাকার প্রকল্প অনুমোদন
সিলেটের চার লেন প্রকল্প একনেকে অনুমোদন
২ বছর আগে
দেশের প্রথম ভাসমান মসজিদ ও সাতক্ষীরার একজন ইমামের গল্প
ভাসমান মসজিদ! বিশ্বজুড়ে এরকম স্থাপনার ধারণাটা নতুন নয়। সর্বপ্রথম এরকম মসজিদের কথা শোনা যায় সৌদি আরবে ১৯৮৫ সালে। ভাসমান মসজিদ-এর স্বর্গ হলো দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার দেশ মালয়শিয়া। এবার বাংলাদেশেও নির্মিত হলো ভাসমান মসজিদ। মুসলিম বিশ্বে ভাসমান মসজিদ সভ্যতার নতুনত্ব ও আভিজাত্যের রূপরেখা বহন করলেও বাংলাদেশের ক্ষেত্রে পটভূমিটা একটু ভিন্ন। গত ৫ অক্টোবর মঙ্গলবার সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার অন্তর্গত প্রতাপনগর ইউনিয়নে উদ্বোধন করা হয় বাংলাদেশের প্রথম ভাসমান মসজিদ মসজিদে নূহ (আ.)।
আজকের ফিচারটিতে মূলত এই মসজিদটির উপরই আলোকপাত করা হয়েছে।
সাতক্ষীরা’র ভাসমান মসজিদ-এর পটভূমি
পরপর দু’বছর আম্ফান ও ইয়াস ঘূর্ণিঝড়ের প্রতাপের শিকার প্রতাপনগর এলাকাটি এখনো কপোতাক্ষ ও খোলপেটুয়া নদীর জোয়ার-ভাটা থেকে মুক্ত হতে পারেনি। আজও সমগ্র এলাকাটি পানিতে নিমজ্জিত থাকায় এলাকাবাসীদের অধিকাংশ নিত্য নৈমিত্তিক কর্মকাণ্ড নৌকাতে সারতে হয়।
সেই ইয়াস ও আম্ফানের তাণ্ডবে বন্যতলা এলাকার বেড়িবাঁধ ভেঙে খোলপেটুয়া নদীভাঙনে হাওলাদার বাড়ি এলাকায় অবস্থিত বাইতুন নাজাদ জামে মসজিদটি মূল স্থলভাগ থেকে আলাদা হয়ে পড়ে। এতে করে স্থানীয় মুসল্লিরা মসজিদে যেয়ে নামায আদায়ে চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়ে যান।
পড়ুন: বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট করার নিয়ম: প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও খরচ
এরই মাঝে মসজিদের ইমাম হাফেজ মঈনুর রহমান প্রতিদিন সাঁতরে যেয়ে পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের আযান দিতেন ও নামায পড়তেন। মাঝে মধ্যে নৌকা পেলে পানিপথটুকু পার হতে সুবিধা হতো। কিন্তু অধিকাংশ সময়েই তাকে সাঁতরে যেতে হতো এবং কখনো কখনো চার ওয়াক্ত নামায তাকে একাই পড়তে হতো।
জোয়ারে ভিটে বাড়ি সব হারিয়ে বাবা-মা, স্ত্রী ও দুই মেয়ে নিয়ে ইমাম মঈনুর রহমান এখন মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এর মধ্যেও বিধ্বস্ত প্রায় মসজিদটির কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে প্রাণপন চেষ্টা করে গেছেন। মাঝে মধ্যে মসজিদে পানি উঠে গেলে মসজিদের ছাদেই রাত কাটাতেন তিনি।
২০২১ এর সেপ্টেম্বর সেই পানিবন্দি মসজিদ থেকে ইমাম সাহেবের সাঁতরে আসার দৃশ্যটি ভিডিও করেন সাতক্ষীরা কলেজের প্রভাষক ইদ্রিস আলী ও তাঁর ছাত্র একটি মানবকল্যাণ ফাউন্ডেশন ডু-সামথিং-এর স্বেচ্ছাসেবক সাইদুল। ভিডিওটি কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।
পরবর্তীতে ডু-সামথিং-এর পক্ষ থেকে ইমামের জন্য নগদ পাঁচ হাজার টাকাসহ মসজিদে যাওয়ার জন্য একটি নৌকা দেয়া হয়।
আরও পড়ুন: ২০০ কেজি সোনায় কারুকার্যমণ্ডিত হতে যাচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় পবিত্র কোরআন
৩ বছর আগে
নদীভাঙন: সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর তীরে সহস্রাধিক পরিবারের মানবেতর জীবনযাপন
সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীর বিভিন্ন স্থানে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন ও বন্যাজনিত কারণে অন্যত্র সরিয়ে নেয়া সহস্রাধিক পরিবার এখন মানবেতর জীবন যাপন করছে।
৪ বছর আগে
কুড়িগ্রামে তিস্তা নদীর ভাঙন রোধে স্থায়ী পদক্ষেপের দাবিতে মানববন্ধন
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নে তিস্তা নদীর ভাঙন রোধে বুড়িরহাট ও গাবুর হেলান স্পার ভাঙন রোধে স্থায়ী পদক্ষেপের দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।
৪ বছর আগে
চাঁদপুরে উদ্বোধনের আগেই নদীগর্ভে নতুন স্কুল
পদ্মার ভাঙনে অবশেষে বিলীন হয়ে গেল চাঁদপুর সদরের রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নে সদ্য নির্মিত রাজরাজেশ্বর ওমর আলী হাই স্কুল। এটি একই সাথে ছিল ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র।
৪ বছর আগে
শেরপুরে মৃগী নদীর ভাঙনের কবলে প্রাথমিক বিদ্যালয়
শেরপুরে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের শাখা মৃগী নদীর ভাঙনের কবলে পড়েছে নকলার ঐতিহ্যবাহী নারায়নখোলা দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
৪ বছর আগে
চিলমারীর আমতলা চরে শিক্ষাবঞ্চিত ২ শতাধিক শিক্ষার্থী
ভাঙছে চর, গড়ছে চর, ছিন্নভিন্ন হচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম, বাদ যাচ্ছে না শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও। ভাঙনের খেলায় চলছে মানুষের দৌড়ের খেলা, দিশেহারা হয়ে পড়েছে চরাঞ্চলের শিক্ষার্থীরা।
৫ বছর আগে