সংস্কার
ভারতের উচিৎ নিজেদের সংস্কারের চিন্তা-ভাবনা করা: সমন্বয়ক নুসরাত
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নুসরাত তাবাসসুম বলেছেন, ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক স্বামী-স্ত্রীর মতো নয়, বরং প্রতিবেশীসুলভ। তাই তাদের আচরণ সেইভাবে হওয়া উচিত। এই বিষয়টি যদি বিজেপি সরকার বারবার এড়িয়ে যায় তাহলে বলতে হয়, ভারতেরও সময় এসেছে নতুন করে বিষয়গুলো নিয়ে ভাবার। এখন তাদের নিজেদের সংস্কারের চিন্তা-ভাবনা করা উচিৎ।
সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় চুয়াডাঙ্গায় বিজয় মেলায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
আরও পড়ুন: সরকারি চাকরিতে প্রবেশের সময়সীমা নিয়ে সিদ্ধান্ত ৭ দিনের মধ্যে: আন্দোলনকারীদের সমন্বয়ক
মেলার আয়োজন নিয়ে তিনি বলেন, খুব সুন্দরভাবে চুয়াডাঙ্গায় বিজয় মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বিজয় দিবসের আমেজ মেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। চুয়াডাঙ্গায় এসে আমার মনে হচ্ছে, নিজের বাড়িতেই আছি।
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসনের উদ্যেগে জেলা শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে এ মেলা অনুষ্ঠিত হয়।
সমন্বয়ক ছাড়াও এ সময় উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম, পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চুয়াডাঙ্গা জেলার সভাপতি আসলাম অর্ক, সাধারণ সম্পাদক সাফফাতুল ইসলাম, মুখ্য সংগঠক সজিবুল ইসলাম ও জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা।
৫ দিন আগে
সংস্কারের কথা বলে নির্বাচন পেছানো বুদ্ধিমানের কাজ হবে না: মোশাররফ
সংস্কারের কথা বলে নির্বাচন পেছানো বুদ্ধিমানের কাজ হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন।
তিনি বলেন, সন্দেহ করছি- একটি মহল চেষ্টা করছে সংস্কারের নামে নির্বাচন বিলম্ব করতে। অতি দ্রুত সংস্কার করে নির্বাচনি রোডম্যাপ দিতে হবে। নির্বাচন যত বিলম্ব হবে বাংলাদেশে তত নানা রকম ষড়যন্ত্র হবে।
মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সকালে রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্ততা বিষয়ক কুমিল্লা বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কর্মশালায় তিনি এ কথা বলেন।
বিএনপি কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম ভুইয়ার সভাপতিত্বে প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তারেক রহমান।
বিএনপির এই নেতা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারকে দিয়ে দেশের সম্পূর্ণ সংস্কার সম্ভব নয়। রাষ্ট্রের পূর্ণাঙ্গ সরকারের জন্য একটি দলীয় সরকার প্রয়োজন।
আরও পড়ুন: সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা ব্যর্থ, ভারতবিরোধী অবস্থানে বিএনপি
তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচন দিয়ে একটি দলীয় সরকার গঠন সারা বাংলাদেশের মানুষের দাবি বলে জানান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য।
এই কর্মশালা পরিচালনা করেন বিএনপির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন। অংশ নেন শিল্প বিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ, ত্রান ও পুনর্বাসন সম্পাদক হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াছিনসহ কুমিল্লা ছয়টি জেলা বিএনপি, মহানগর, পৌরসভর শীর্ষ নেতারা।
কর্মশালায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক ডা. মওদুদ আলমগীর পাভেল, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা ড. মাহাদী আমিন, প্রশিক্ষণ সম্পাদক রেহানা আক্তার বানু, ত্রাণ ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক নেওয়াজ হালিমা আরলি, গণশিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মোস্তাক মিয়া, বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুর সাত্তার পাটোয়ারী ও কৃষক দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবা হাবিব।
আরও পড়ুন: ভারতীয় হাইকমিশন অভিমুখে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল
১ সপ্তাহ আগে
নির্বাচনের আগে বড় ধরনের সংস্কারের কথা পুনর্ব্যক্ত করলেন ড. ইউনূস
প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, জুলাই-আগস্টের ছাত্র আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ছিল সংস্কার এবং তার সরকার একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের আগে বড় ধরনের সংস্কার বাস্তবায়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
রবিবার (৮ ডিসেম্বর) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের উপদেষ্টা এবং ইউএনডিপির সাবেক প্রধান লর্ড মার্ক মালক-ব্রাউনের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এ অঙ্গীকার পূনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
এক ঘণ্টার এ বৈঠকে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান, উন্নয়নমূলক বিষয়াদি, অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার উদ্যোগ, ছাত্র আন্দোলনের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণা, স্বাস্থ্যসেবা, সামাজিক ব্যবসা ও ক্ষুদ্রঋণসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
আরও পড়ুন: আমরা সবাই বাংলাদেশি: ধর্মীয় নেতাদের ড. ইউনূস
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কার প্রক্রিয়ার সহায়ক হিসেবে কাজ করবে। শেখ হাসিনার একনায়কতন্ত্রের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত প্রধান প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুনর্গঠন করতে এ পর্যন্ত ১৫টি সংস্কার কমিশন প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
বাংলাদেশের ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব গ্রহণের জন্য এ সময় অধ্যাপক ইউনূসকে ধন্যবাদ জানান লর্ড মালক-ব্রাউন।
বাংলাদেশি জনগণের কল্যাণে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে পারলে তিনি আনন্দিত হবেন বলে জানান।
লর্ড মালক-ব্রাউনের সমর্থনের জন্য ড. ইউনূস তাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, জনগণের প্রত্যাশা মেটানো সরকারের অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ।
এ সময় উন্নয়নকর্মী মার্থা চেন, ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ ও জ্যেষ্ঠ সচিব লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: সার্ক পুনরুজ্জীবিত হলে মানুষ সুফল পাবে: প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস
১ সপ্তাহ আগে
১২ বছর ধরে সংস্কার হয়নি কুমিল্লার দুলালপুর-বালিনা সড়ক
সাম্প্রতিক বন্যায় কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার দুলালপুর-বালিনা সড়কের বিভিন্ন অংশে ছোট-বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। বেশ কয়েকটি স্থানে সড়ক ভেঙে খাল ও পুকুরে বিলীন হওয়ায় এ সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় বাসিন্দারা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার দুলালপুর ইউনিয়নের দুলালপুর-বালিনা সড়কটি পাশের দেবিদ্বার উপজেলার সংযোগ সড়ক। উপজেলা সদরের সঙ্গে দুলালপুর ও শিদলাই ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষের যোগাযোগের মাধ্যম এ সড়ক। প্রায় ২ কিলোমিটার দীর্ঘ এই গুরুত্বপূর্ণ ইটের সলিংয়ের সড়কটির সমস্ত জায়গাজুড়ে খানাখন্দ, ছোট-বড় গর্ত অতিক্রম করেই ১০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ এ দুই উপজেলার ১০ গ্রামের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। তবে এবারের বন্যার পানিতে সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। দীর্ঘ ১২ বছরেও এ সড়ক মেরামতে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি বলে জানান স্থানীয়রা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কটির পাশে দুটি বড় পুকুর রয়েছে। এসব পুকুরের নিজস্ব কোনো পাড় নেই। সড়কটিকে পুকুরের পাড় হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। যার ফলে এবারের বন্যায় সড়ক ভেঙে পুকুরে বিলীন হয়ে যাওয়ায় এ সড়কটি যানবাহন চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় বাসিন্দাদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, এই দুই কিলোমিটার সড়ক আগে থেকেই সংস্কারের অভাবে খানাখন্দ ও ছোট-বড় গর্ত হয়ে ছিল। গেল বন্যায় সড়কটি আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যার ফলে পোমকাড়া, পূর্ব পোমকাড়া, পশ্চিম পোমকাড়া, বেড়াখলা, বালিনা, দুলালপুর,সিঙ্গারচাড়া ও দেবিদ্বার উপজেলার ফাতেহাবাদ, সুবিল, ১০ গ্রামসহ বিভিন্ন গ্রামের কয়েক হাজার মানুষকে কয়েক বছর ধরে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বন্যার পর এ দুর্ভোগ আরও বেড়ে যাওয়ায় চরম বিপাকে পড়েছেন স্থানীয়রা।
২ সপ্তাহ আগে
বিদ্যুৎ খাতে সংস্কার হলে বছরে ১২০ কোটি ডলার সাশ্রয় করতে পারে পিডিবি
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) বিদ্যুৎ খাতে সংস্কারের মাধ্যমে বাংলাদেশের বছরে ১২০ কোটি ডলার বা ১৩ হাজার ৮০০ কোটি টাকা সাশ্রয় করতে পারে বলে জানিয়েছে ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনমিক্স অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল অ্যানালাইসিস (আইইএফএ)।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) আইইএফএ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে। বর্তমানে সরকারি ভর্তুকির মাধ্যমে পিডিবির এই ক্ষতিপূরণ করা হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিল্প-কারখানার ব্যবহৃত অর্ধেক ক্যাপটিভ জেনারেটরের বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে স্থানান্তর, ৩ হাজার মেগাওয়াট নবায়নযোগ্য জ্বালানি সংযোজন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের তুলনায় লোডশেডিং ৫ শতাংশে নামিয়ে আনা এবং ট্রান্সমিশন ও ডিস্ট্রিবিউশন লস ৮ শতাংশে সীমাবদ্ধ করার মাধ্যমে এই সাশ্রয় অর্জন সম্ভব।
২০১৯-২০ অর্থবছর থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছর পর্যন্ত পিডিবির মোট বার্ষিক ব্যয় ২.৬ গুণ বেড়েছে, যেখানে আয় বৃদ্ধি পেয়েছে মাত্র ১.৮ গুণ। ফলে, অর্থনীতিকে সচল রাখতে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে সরকারকে মোট ১ লাখ ২৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকা (১০.৬৪ বিলিয়ন ডলার) ভর্তুকি দিতে হয়েছে। এরপরও পিডিবির ২৩ হাজার ৬৪২ কোটি টাকা (১.৯৯ বিলিয়ন ডলার) ক্ষতি হয়েছে।
শুধু ২০২৩-২৪ অর্থবছরেই পিডিবিকে ৩৮ হাজার ২৮৯ কোটি টাকা (৩.২২ বিলিয়ন ডলার) ভর্তুকি দিয়েছে সরকার।
আরও পড়ুন: শীতকাল শুরু, দিন-রাতে বাড়বে আরও ঠান্ডা
ভর্তুকির বোঝা কমাতে শিল্প-কারখানাগুলোকে সম্পূর্ণরূপে জাতীয় গ্রিডের ওপর নির্ভরশীল করার পরামর্শ দিয়েছে আইইএফএ।
আইইএফএ বাংলাদেশের জ্বালানি-বিষয়ক প্রধান বিশ্লেষক শফিকুল আলম বলেন, ‘৬১.৩ শতাংশ রিজার্ভ মার্জিন নিয়ে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাতে অতিরিক্ত উৎপাদন সক্ষমতার (ওভার ক্যাপাসিটি) মতো সমস্যা রয়েছে যা পিডিবির ভর্তুকির বোঝা বাড়াচ্ছে। ফলে বিদ্যুতের দাম বারবার সমন্বয় করার পরও বড় অঙ্কের রাজস্ব ঘাটতি এবং ভর্তুকির বোঝা ভবিষ্যতেও থাকবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।’
তিনি বলেন, বিদ্যুৎ খাত সংস্কারে জ্বালানি সাশ্রয় বিবেচনা করে বিদ্যুতের চাহিদা পূর্বাভাসের পদ্ধতি উন্নত করা, জীবাশ্ম জ্বালানি-ভিত্তিক নতুন বিদ্যুৎকেন্দ্রে বিনিয়োগ সীমিত করা, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার বৃদ্ধি, শিল্প-কারখানাগুলোকে গ্রিড বিদ্যুতের দিকে স্থানান্তর, লোডশেডিং হ্রাস ও বিদ্যুৎ গ্রিড আধুনিকায়নের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
পাশাপাশি বয়লারের মতো গ্যাসচালিত যন্ত্রপাতি ধীরে ধীরে বৈদ্যুতিক সিস্টেমে স্থানান্তরেরও প্রস্তাব করেছে সংস্থাটি। এর ফলে অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিক্রির মাধ্যমে পিডিবির আয় বাড়বে বলে জানিয়েছেন শফিকুল আলম।
সংস্কারের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে প্রতিবেদনে ২০২৫ সাল থেকে জ্বালানি সাশ্রয় এবং চাহিদা স্থানান্তরের বিষয়গুলি বিবেচনা করে বিদ্যুতের চাহিদা পূর্বাভাস তৈরির জন্য সরকারকে আহ্বান জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: গোয়াইনঘাটের সালুটিকর-কচুয়ারপার সড়কে অন্তহীন দুর্ভোগে মানুষ
২ সপ্তাহ আগে
হয়রানি কমাতে অনলাইন কর পদ্ধতি সংস্কারের পরিকল্পনা এনবিআরের
করদাতাদের হয়রানি কমাতে এবং জাতীয় কোষাগারে রাজস্ব আদায় বাড়াতে বেশ কিছু উদ্যোগ বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন পরিবর্তনগুলোর মধ্যে রয়েছে অনলাইনে কর্পোরেট ট্যাক্স ফাইলিং, আয়কর আইনজীবীদের জন্য একটি অনলাইন ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেওয়ার ব্যবস্থা এবং সকল করদাতাদের আয়কর রিটার্ন দাখিলের জন্য একটি বিশেষভাবে প্রস্তুত অ্যাপ।
বর্তমানে আয়কর আইনজীবীরা ম্যানুয়ালি তাদের গ্রাহকদের আয়কর রিটার্ন জমা দিচ্ছেন। কিন্তু করদাতাদের হয়রানি কমাতে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলে গুরুত্ব দিয়েছে এনবিআর। কিন্তু এই পরিবর্তন আয়কর আইনজীবীদের জন্য সমস্যা তৈরি করে।
স্বতন্ত্র আয়করদাতাকে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের জন্য এনবিআর নির্ধারিত ওয়েবসাইটে একটি হিসাব খুলতে হবে।
এ জন্য সেই ব্যক্তির(করদাতার) বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের একটি সিমকার্ড লাগবে। তবে এটি ট্যাক্স আইনজীবীদের তাদের ক্লায়েন্টদের পক্ষে আয়কর রিটার্ন জমা দিতে সমস্যা সৃষ্টি করে।
এনবিআরের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, রাজস্ব আদায়কারী কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে এবং বিষয়টি সমাধানে কাজ করছে।
আরও পড়ুন: শেয়ার বাজারে মূলধনি মুনাফার ওপর কর কমিয়েছে এনবিআর
তিনি বলেন, 'কর আইনজীবী ও করদাতাদের সমস্যা সমাধানে আমরা খুবই আন্তরিক।’
সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান বলেন, রাজস্ব আদায়কারী কর্তৃপক্ষ এমন একটি ব্যবস্থা তৈরির জন্য কাজ করছে যেখানে আয়কর আইনজীবীরা তাদের নিজস্ব আইডি এবং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে আয়কর রিটার্ন জমা দিতে পারবেন।
তিনি বলেন, ‘এর মাধ্যমে আয়কর আইনজীবীরা তাদের কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে পারবেন।’
ইতোমধ্যে ঢাকা উত্তর, ঢাকা দক্ষিণ, গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন এবং বেসরকারি খাতের আয়কর সার্কেলের আওতাধীন সরকারি চাকরিজীবীদের অনলাইনে আয়কর রিটার্ন (ই-রিটার্ন) দাখিল বাধ্যতামূলক করার নির্দেশনা জারি করেছে এনবিআর।
সব তফসিলি ব্যাংক, সব মোবাইল টেলিকম সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান এবং কিছু বহুজাতিক কোম্পানি যথাক্রমে ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেড, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশ কোম্পানি লিমিটেড, ম্যারিকো বাংলাদেশ লিমিটেড, বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেড, বাটা সু কোম্পানি (বাংলাদেশ) লিমিটেড, নেসলে বাংলাদেশ পিএলসির কর্মরত কর্মকর্তা/কর্মচারীদের অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
চলতি বছরের ৯ সেপ্টেম্বর থেকে করদাতাদের জন্য অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: অনলাইনে কর দিতে ১০ লাখ করদাতা নিবন্ধন করেছেন: এনবিআর
এ পদ্ধতি থেকে করদাতারা ইন্টারনেট ব্যাংকিং, কার্ড পেমেন্ট (ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড) ও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে কর পরিশোধ এবং দাখিলকৃত রিটার্নের কপি, রশিদ, আয়কর সনদ, টিআইএন সনদের কপি ডাউনলোড ও প্রিন্ট করার সুবিধা পেতে পারেন। এ ছাড়া যে কেউ বিগত বছরের জন্য দাখিল করা ই-রিটার্ন ডাউনলোড ও প্রিন্ট করতে পারবেন।
ই-রিটার্নে দাখিলের করতে সফল নিবন্ধনের জন্য প্রত্যেক করদাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের সঙ্গে নিবন্ধিত একটি বায়োমেট্রিক সিম প্রয়োজন।
করপোরেট ট্যাক্স রিটার্ন দাখিলের ক্ষেত্রে বর্তমানে ট্যাক্স রিটার্ন দাখিলের সময় বিভিন্ন ধরনের কাগজপত্রের প্রয়োজন হয়।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, করপোরেট করদাতারা যাতে সব প্রক্রিয়া অনুসরণ করে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারেন সেজন্য তার প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
তিনি বলেন, 'কিছুটা সময় লাগবে, এ বছর যদি আমরা সেটা করতে না পারি, তাহলে আমরা শতভাগ নিশ্চিত যে আগামী বছরের মধ্যে এটা হয়ে যাবে, যেখানে করপোরেট করদাতারা অনলাইনে রিটার্ন জমা দিতে পারবেন।’
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ১০০তম দিন উপলক্ষে গত মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের ওপর গুরুত্বারোপ করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ।
আগামী বছর থেকে আয়কর রিটার্নের জন্য একটি অ্যাপ চালুর পরিকল্পনাও করছে এনবিআর। আব্দুর রহমান খান বলেন, 'বিশেষভাবে প্রস্তুত অ্যাপের মাধ্যমে করদাতারা এ কাজ করতে পারবেন।’
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, চলমান অনলাইন পদ্ধতিতে এসব বিষয় চালু করার পর এনবিআর সব করদাতার জন্য অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিলের উদ্যোগ নেবে। ‘কিছু ব্যতিক্রমও থাকতে পারে।’
আরও পড়ুন: ২০২৬ সালের মধ্যে ৬০টি শুল্ক লাইন যৌক্তিক করবে এনবিআর
৪ সপ্তাহ আগে
এক বছরের মধ্যে নির্বাচন চান ৬১.১% মানুষ, সব সংস্কার শেষে ৬৫.৯% : ভয়েস অব আমেরিকার জরিপ
সম্প্রতি সারা দেশে পরিচালিত ভয়েস অব আমেরিকার এক জরিপে দেখা গেছে বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ ৬১ দশমিক ১ শতাংশ মানুষ মনে করেন এক বছরের মধ্যে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত। আর সবগুলো সংস্কার করার পরই নির্বাচন আয়োজন করার পক্ষে মত দিয়েছেন ৩১ দশমিক ৯ শতাংশ মানুষ।
জরিপে দেখা যায়, ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ লোক চান দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে নির্বাচন আর ৮ দশমিক ৬ শতাংশ নির্বাচন চান ১৮ মাসের মধ্যে। সবচেয়ে কম ৫ দশমিক ৮ শতাংশ জনগণ চার বছর বা তার চেয়ে বেশি সময় পর আগামী জাতীয় নির্বাচন হওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন।
কত দ্রুত নির্বাচন হওয়া উচিত এ ব্যাপারে কিছু জানেন না বলেছেন ৪ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ আর নির্বাচন কবে হওয়া উচিত সম্পর্কে কিছু বলতে চাননি ১ দশমিক ১ শতাংশ।
গত ৫ অগাস্ট ছাত্রদের নেতৃত্বে একটি গণঅভ্যুত্থানে বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অগাস্টের ৮ তারিখ ডক্টর মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে একটি অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের শাসনভার গ্রহণ করে।
অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর কেমন আছে বাংলাদেশ, এ নিয়ে কী ভাবছেন দেশের নাগরিকরা, এ বিষয়ে অক্টোবরের ১৩ থেকে ২৭ তারিখ, ভয়েস অব আমেরিকা দেশব্যাপী একটি জরিপ করে।
জরিপটি ভয়েস অব আমেরিকা বাংলার এডিটোরিয়াল নির্দেশনা অনুযায়ী পরিচালনা করে গবেষণা ও জরিপ প্রতিষ্ঠান ওআরজি-কোয়েস্ট রিসার্চ লিমিটেড।
ভয়েস অব আমেরিকার ঠিক করে দেওয়া সুনির্দিষ্ট (ক্লোজ এন্ড) প্রশ্নমালার উপর ভিত্তি করে কম্পিউটার এসিস্টেড টেলিফোন ইন্টারভিউইং এর মাধ্যমে দেশের আটটি বিভাগে ১৮ বছর বা এর চেয়ে বেশি বয়সী এক হাজার মানুষের মধ্যে জরিপটি পরিচালিত হয়।
জরিপটি করা হয়, র্যান্ডম ডিজিটাল ডায়ালিং পদ্ধতিতে। বাংলাদেশ টেলিকম্যুনিকেশন রেগুলেটরি কমিশনের সর্বশেষ প্রকাশিত (২০১৭) অফিসিয়াল টেলিফোনে প্ল্যান থেকে বাংলাদেশের মোবাইল নম্বরগুলোর সম্ভাব্য সবধরণের কম্বিনেশন থেকে করা ওআরজি-কোয়েস্ট রিসার্চ লিমিটেড-এর নিজস্ব ডেটা-বেইজ থেকে জরিপটির স্যাম্পল নেওয়া হয়েছে। একটি আর-বেইজড প্রোগ্রাম ব্যবহার করে সিম্পল র্যান্ডম স্যাম্পলিং (এসআরএস) এর মাধ্যমে জরিপটির নমুনা বাছাই করা হয়েছে।
জরিপ পরিচালনা কাজে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মীদের মাধ্যমে ওআরজি-কোয়েস্ট রিসার্চ লিমিটেড-এর ঢাকা অফিসের কল সেন্টার থেকে জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ফোন করা হয়।
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন জরিপটিতে মার্জিন অফ এরর ৩ দশমিক ১ শতাংশ। জরিপটির উত্তরদাতারা প্রায় একমাস আগে যেহেতু তাদের মতামত জানিয়েছেন তাই এখন জরিপটি করলে এর ফলাফল অনেকক্ষেত্রেই ভিন্ন হতে পারে।
এই জরিপের ফলাফল নিয়ে আগামী কয়েকদিন কয়েক পর্বে প্রতিবেদন প্রকাশ করতে যাচ্ছে ভয়েস অব আমেরিকা। আজ থাকছে এর প্রথম পর্ব।
জরিপে অংশ নেওয়া শহরের জনগণের ৬০ দশমিক ৪ শতাংশ ও গ্রামে বাস করেন তাদের ৬১ দশমিক ৪ শতাংশ আগামী এক বছরের মধ্যে পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন চান। জরিপে অংশগ্রণকারী পুরুষদের ৫৭ দশমিক ৩ শতাংশ ও নারীদের মধ্যে ৬৫ শতাংশ নির্বাচন চান এক বছরের মধ্যে।
তরুণদের মধ্যে (১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সী) ৬২ দশমিক ৪ শতাংশ এক বছরের মধ্যে আগামী নির্বাচন চান আর ৩৫ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সের যারা জরিপে অংশ নিয়েছেন তাদের মধ্যে এক বছরের মধ্যে আগামী জাতীয় নির্বাচন চান ৫৯ দশমিক ৮ শতাংশ।
শহরাঞ্চলের ১৮ দশমিক ৯ শতাংশ ও গ্রামীণ এলাকার ১৮ দশমিক ৬ শতাংশ জরিপে অংশগ্রহণকারী চান আগামী দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে নির্বাচন। দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে মত দিয়েছেন জরিপে অংশ নেওয়া পুরুষদের ২০ দশমিক ৩ শতাংশ ও নারীদের ১৭ দশমিক ১ শতাংশ। ১৮ থেকে ৩৪ বছরের তরুণদের ১৫ দশমিক ২ ও ৩৫ ও তার চেয়ে বেশি বয়সের জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ২২ দশমিক ৪ শতাংশ মনে করেন দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে আগামী নির্বাচন হওয়া উচিত।
১৮ মাসের মধ্যে আগামী নির্বাচন করার পক্ষে মত দিয়েছেন শহরের ১০ দশমিক ৩, গ্রামের ৮, পুরুষদের ১২ নারীদের ৫ দশমিক ২, তরুণদের (১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সী) ৮ দশমিক ৬ এবং ৩৫ বছর বা এর থেকে বেশি বয়সীদের মধ্যে ৮ দশমিক ৬ শতাংশ অংশগ্রহণকারী।
চার বছর বা তার চেয়ে বেশি সময় পর নির্বাচন অনুষ্ঠানের পক্ষে মত দিয়েছেন, শহরের ৬ দশমিক ২, গ্রামের ৫ দশমিক ৭, পুরুষদের ৬ দশমিক ৯, নারীদের ৪ দশমিক ৮, তরুণদের (১৮ থেকে ৩৪ বছর বয়সী) ৭ দশমিক ৬,৩৫ বছর বা এর থেকে বেশি বয়সীদের ৪ শতাংশ মানুষ।
অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের শাসনভার গ্রহণের পর থেকেই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি-সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল একটি যৌক্তিক সময়ের মধ্যে দ্রুত আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের রোডম্যাপ প্রকাশের দাবি জানিয়ে আসছে।
কিন্তু, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে এখনো নির্বাচনের ব্যাপারে কোনো রোডম্যাপ ঘোষণা করা হয়নি। তাদের বক্তব্য, একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো করার পরই আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রায়োরিটি 'সংস্কার'।
এদিকে আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী ছাত্রদের প্লাটফর্ম বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন বলছে রাষ্ট্র সংস্কার এর কাজগুলো শেষ হবার আগে নির্বাচন হলে আবার নতুন করে তাদের ভাষায় 'ফ্যাসিবাদের' আবির্ভাব ঘটবে। তারা বলছে, কেবল একটি নির্বাচন করার জন্য ২৪-এর গণঅভ্যুত্থান হয়নি।
সেপ্টেবরের ২৩ তারিখ (২৪ তারিখ প্রকাশিত) বাংলাদেশের সেনাপ্রধান রয়টার্সের সাথে এক সাক্ষাৎকারে জানান, আগামী ১৮ মাসের মধ্যে যাতে নির্বাচন হতে পারে, সেজন্য গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারগুলো সম্পন্ন করতে এই সরকারকে সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ডক্টর ইউনূসকে ভয়েস অব আমেরিকাতে দেওয়া তার এক এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদই নির্বাচনের তারিখ জানাবে।
ডক্টর ইউনূস এখনো নির্বাচনের কোনো রোডম্যাপ ঘোষণা না করলেও অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে ১৭ নভেম্বর তিনি বলেছেন, নির্বাচনি সংস্কারের সিদ্ধান্ত হয়ে গেলে খুব দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপও (রূপরেখা) পাওয়া যাবে। প্রয়োজনীয় কিছু অত্যাবশ্যকীয় সংস্কারের কাজ শেষ করেই নির্বাচনের আয়োজন করা হবে। অবশ্য সংস্কারের জন্য নির্বাচন কয়েক মাস বিলম্বিতও করা যেতে পারে।
ভয়েস অফ আমেরিকা বাংলার জনমত জরিপে তাই সংস্কার ও নির্বাচনের রোডম্যাপ এই বিষয় দুটিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
সব সংস্কার শেষ করে নির্বাচন চান ৬৫ দশমিক ৯ শতাংশ
বেশির ভাগ মানুষ (৬৫ দশমিক ৯ শতাংশ) মনে করেন, অন্তর্বর্তী সরকার যা যা সংস্কার করা প্রয়োজন মনে করবে তার সবগুলো করার পরই নির্বাচন আয়োজন করা উচিত আর শুধুমাত্র নির্বাচন সংক্রান্ত জরুরি সংস্কারগুলো শেষ করে নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে মত ৩১ দশমিক ৯ শতাংশ উত্তরদাতার।
আগামী প্রতিবেদনে যা থাকছে
ভয়েস অব আমেরিকা বাংলা পরবর্তী প্রতিবেদনে জরিপের আরও বিস্তারিত ফলাফল প্রকাশ করার পরিকল্পনা করছে, যা বাংলাদেশের শাসন, সংস্কার এবং নির্বাচন সম্পর্কে জনসাধারণের মনোভাবের উপর আরও আলোকপাত করবে।
৪ সপ্তাহ আগে
সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া, যা দোকানে কিনতে পাওয়া যায় না: স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং ভূমি উপদেষ্টা এ. এফ. হাসান আরিফ বলেছেন, সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। এটি কোনো প্যাকেটজাত পণ্য না যে দোকানে কিনতে পাওয়া যাবে।
তিনি বলেন, যে চলমান প্রক্রিয়ার চাকাটিকে চালু রাখতে গেলে পারষ্পরিক সম্পর্ক মজবুত করে গড়ে তুলতে হবে।
বুধবার (৬ নভেম্বর) স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে জেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদের সামগ্রিক কার্যক্রমে গতিশীলতা আনয়নের লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: ট্রাম্পকে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূসের অভিনন্দন
স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে শুরু করে সিটি করপোরেশন, জেলা, উপজেলা এবং পৌরসভাসহ কোনো স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানেই যেন সরকারি সেবা বিতরণে ব্যত্যয় না ঘটে এ বিষয়ে আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। প্রয়োজনে স্থানীয় সরকারের প্রতিটি স্তরে চেইন অব সুপারভিশন প্রতিষ্ঠা করতে হবে। যাতে প্রতিটি কর্মকর্তা তার পরবর্তী ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নজরদারিতে থাকতে পারে।
আর্থিক বিষয়ে স্বচ্ছতা আনয়ন প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে বিশেষভাবে জোর দিতে হবে। সংস্কার প্রক্রিয়ায় আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে হবে। ১৬ বছর ধরে চলমান দুর্নীতিকে প্রতিহত করতে হবে। আর্থিক বিষয়ে দুর্নীতি প্রতিরোধে সবাইকে কঠোর হতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের মনে রাখতে হবে দীর্ঘদিন ধরে চলমান একটি অপব্যবস্থাকে চিরতরে সরিয়ে দেওয়ার জন্য ছাত্র-জনতা আন্দোলন করে জীবন দিয়েছে। তাদের এই আত্মত্যাগকে ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না।
স্থানীয় সরকার বিভাগ সচিব মো. নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত সচিব এ. কে. এম. তারিকুল আলম ও সকল জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ এবং পৌরসভার প্রশাসকরা অনলাইনে সংযুক্ত ছিলেন।
আরও পড়ুন: নদী-খাল দখলদারদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপের এখনই সময়: পরিবেশ উপদেষ্টা
আমন মৌসুমের ধান-চালের মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে: বাণিজ্য উপদেষ্টা
১ মাস আগে
জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন করবে এমন সংস্কার চায় বিএনপি: তারেক রহমান
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বিএনপি এমন রাষ্ট্রীয় সংস্কার চায়, যা দেশের কোটি কোটি মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন এবং তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে।
লন্ডন থেকে এক সমাবেশে ভার্চুয়ালি দেওয়া বক্তব্যে তিনি আরও বলেন, জাতি এখনও এক সংকটময় সময় পার করছে, কারণ ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী সরকারের অশুভ প্রেতাত্মারা এখনও দেশের বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র করছে।
তারেক বলেন, 'আমরা অনেকেই এখন সংস্কারের কথা শুনি, অনেকে বিভিন্ন সংস্কারের কথা বলছেন। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন এবং এই দেশকে বদলে দিতে বিএনপিই প্রথম সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছিল।’
তিনি বলেন, আমাদের দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ২০১৭ সালে বিএনপির ভিশন-২০৩০ সনদ ঘোষণা করে রাষ্ট্রীয় সংস্কারের রূপরেখা দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: তারেক রহমানের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা হাইকোর্টে বাতিল
তারেক রহমান বলেন, পরে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের যুগপৎ আন্দোলনে যোগ দেওয়া গণতান্ত্রিক দলগুলোর সঙ্গে পরামর্শ করে রাষ্ট্রীয় সংস্কারের জন্য ৩১ দফা রূপরেখা দিয়ে বিএনপি ২০২৩ সালেও সংস্কার প্রস্তাব উপস্থাপন করেছিল।
তিনি বলেন, ‘এসব সংস্কারের মূল উদ্দেশ্য কী? এটা কি শুধুই সংবিধানের কয়েক লাইন পরিবর্তনের জন্য? অবশ্যই, দেশ পরিচালনায় পরিবর্তিত সময় এবং বর্তমান বিশ্বব্যবস্থার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার জন্য সংস্কার প্রয়োজন। কিন্তু একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমি মনে করি, দেশের কোটি কোটি সাধারণ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা এবং দেশে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সংস্কার হওয়া উচিত।’
একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে বিএনপির এই নেতা মনে করেন, সংবিধানের শুধু কয়েকটি লাইন পরিবর্তন করাই সংস্কার নয়।
বিএনপির প্রয়াত মন্ত্রী ও স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলামের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) যশোর টাউন হল মাঠে এ সমাবেশের আয়োজন করে বিএনপি।
তারেক রহমান বলেন, বিএনপির ৩১ দফা রাষ্ট্রীয় সংস্কার প্রস্তাবে সুস্পষ্টভাবে দেশের গুণগত পরিবর্তন নিশ্চিত করতে এবং জনগণের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার কার্যক্রমের রূপরেখা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে আমি এক বাক্যে সংস্কারের কথা বলছি, যা মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করবে, বেকারদের কর্মসংস্থান আনবে, নারীর স্বাধীনতা ও অধিকার নিশ্চিত করবে, জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে, আমাদের সন্তানদের উন্নত শিক্ষা নিশ্চিত করবে এবং জনগণকে ন্যূনতম স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করবে।’
তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচারী সরকারের পতনের পরও দেশ এখনো সংকটময় সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘স্বৈরাচারী সরকারের পতন ও তার প্রধান দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলেও তাদের প্রেতাত্মারা রয়ে গেছে সমাজে, প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায়। সেখান থেকে এখনো নানা ষড়যন্ত্রের বীজ বপনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আমি এটাকে ক্রান্তিলিক সময় বলছি।’
বিশেষ করে জাতির এই দুঃসময়ে তরিকুল ইসলামের মতো একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের অনুপস্থিতির অনুভূতিও ব্যক্ত করেন তারেক।
তারেক বলেন, ‘তরিকুল ইসলামের মতো এখন যদি কেউ বেঁচে থাকতেন, তাহলে তিনি আমাকে মূল্যবান ও গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিতে পারতেন, যা দেশ ও দল উভয়ের কল্যাণে অবদান রাখত।’
আরও পড়ুন: সাংবিধানিক বিষয়ে তাড়াহুড়ো করা উচিৎ নয়: অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে তারেক
১ মাস আগে
প্রয়োজনীয় সংস্কার এবং অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন করতে হবে
‘সংস্কার ও টেকসই উন্নয়নের সমন্বয়ে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে অংশ নিয়ে আলোচকরা বলেছেন, প্রয়োজনীয় সংস্কার ও অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন করতে হবে। দুর্নীতি অনিয়ম দূর করে জনবান্ধব উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের তাগিদ দেন তারা।
শনিবার (২ নভেম্বর) ‘সংস্কার ও টেকসই উন্নয়নের সমন্বয়ে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে অংশ নিয়ে আলোচকরা এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম ও চাইনিজ এন্টারপ্রাইজেস অ্যাসোসিয়েশন ইন বাংলাদেশ যৌথভাবে এ সেমিনার আয়োজন করে।
সেমিনারে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, রেলওয়ে মন্ত্রণালয় এবং বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোহাম্মদ ফাওজুল কবির খান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: মার্কিন নির্বাচনের ফলাফল ঢাকা-ওয়াশিংটন সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে না: প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব
বিএসআরএসফ’র সাধারণ সম্পাদক মাসউদুল হকের সঞ্চালনায় সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন- বিএসআরএফ সভাপতি ফসিহ উদ্দীন মাহতাব।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন- নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. এ. কে. এম. আতিকুর রহমান।
এসময় উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, ভবিষ্যৎ এ প্রকল্প গ্রহণ করার আগে প্রকল্পের সম্ভাব্যতা সমীক্ষা প্রতিবেদন ভালোভাবে যাচাই বাছাই করা হবে। কোনো দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। জনবান্ধব প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে। দুর্নীতি কমিয়ে উন্নয়নকে জনগণের প্রয়োজনের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে কাজ করে যাচ্ছি।
উপদেষ্টা বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন করতেই এ সরকার কাজ করছে। বিশাল ঋণের বোঝা রেখে গেছে এ সরকারের ওপর। যা অন্তবর্তী সরকারের জন্য অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। দুর্নীতির অবকাঠামো সম্পূর্ণভাবে ভেঙে ফেলেছি। আমরা দুর্নীতি যতটা সম্ভব কমিয়ে সংস্কার করব।
তিনি বলেন, হাজার কোটি টাকা খরচ করে একটি প্রকল্প সম্পন্ন হয়। এটা ব্যক্তিগত টাকা নয়, জনগণের টাকা। এটা মাথায় রাখা উচিত। এ সরকারের কাছে জনপ্রত্যাশা আকাশচুম্বী। সবাই ভাবেন আমাদের কাছে জাদুর কাঠি আছে। আসলে কিছু নেই আমাদের কাছে। ব্যাংকে টাকা নেই। রাজনীতিবিদরা উসখুস করছেন কবে ক্ষমতায় আসবেন। আমরাও চাই নিজেদের কাজে ফিরে যাই।
ফাওজুল কবির বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে দুর্নীতি, গ্যাস বিদ্যুতের দাম নিয়ে ক্ষুদ্ধ মানুষ। আমরা এখানে একটা কাজ করেছি, দুর্নীতির কাঠামো ভেঙে দিয়েছি। বিইআরসির আগের কাজ ফিরিয়ে দিয়েছি। ঢাকা মেট্রোতে সাবেক সচিব হতে হবে বলে যে বিধান ছিল, সে নিয়ম বাদ দিয়েছি। যার অভিজ্ঞতা আছে তিনিই এখানে কাজ করতে পারবেন। আবার পাওয়ার গ্রিডে বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এভাবে আমরা কাঠামোগত পরিবর্তন করতে শুরু করেছি।
আলোচনায় অংশ নেন মো. সারদার শাহদাত আলী, ড. মো. শামসুল হক, ড. শর্মিন্দ নীলর্মি, ড. খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, মেহেদী এইচ ইমন, উমামা ফাতেমা ও মো. মাহিন সরকার।
আরও পড়ুন: সাফজয়ী ফুটবলারদের দাবিগুলো লিখে জানাতে বললেন প্রধান উপদেষ্টা
আগামী ২ বছরে সরকারি খাতে ৫ লাখ কর্মসংস্থান হবে: উপদেষ্টা আসিফ
১ মাস আগে