সংস্কার
নিম্ন আয়ের মানুষের ওপর পরোক্ষ করের বোঝা কমাতে সংস্কার আবশ্যক: বক্তারা
নিম্ন আয়ের গোষ্ঠীর জন্য পরোক্ষ করের বোঝার কারণে বাংলাদেশে আয় বৈষম্য বাড়ছে, অন্যদিকে ধনী ব্যক্তিরা তাদের আয় ও সম্পদের তুলনায় কম পরিশোধ করছে।
বুধবার রাজধানীর ব্র্যাক ইনে আয়োজিত ‘বৈষম্য মোকাবিলা এবং রাজস্ব বৃদ্ধিতে প্রত্যক্ষ করের ব্যবহার’ শীর্ষক নীতিগত সংলাপে বক্তারা এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: নতুন রাজনৈতিক জোটের ‘জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট’ আত্মপ্রকাশ
রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্ট (র্যাপিড) এর চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুর রাজ্জাক এ বিষয়ে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
সংলাপে বক্তব্য দেন, এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ আবদুল মজিদ, বিসিএস (ট্যাক্স) একাডেমির মহাপরিচালক এম এম ফজলুল হক, ঢাবির অধ্যাপক ড. আবু ইউসুফ, অর্থ বিভাগের (বাজেট) যুগ্ম সচিব ড. মোহাম্মদ আবু ইউসুফ, ইআরডি যুগ্ম সচিব মো. আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
র্যাপিডের চেয়ারম্যান ড. রাজ্জাক মূল প্রবন্ধে ব্যাখ্যা করেন যে একটি অন্যায্য কর ব্যবস্থার কারণে উৎপাদন, কৃষি ও অন্যান্য খাতে প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও সমাজে আয় বৈষম্য বাড়ছে।
দেশের প্রতি দৃঢ় অঙ্গীকার নিয়ে কর ব্যবস্থার সংস্কার না হলে এই আয় বৈষম্য আরও বাড়বে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি আরও বলেন, ‘বিশ্বের অন্যান্য অনেক অর্থনীতি ক্ষুদ্র জিডিপির সঙ্গে তুলনা করলে দেখা যায়, বাংলাদেশ তার রাজস্বের মাত্র ৩৫ শতাংশ আয় করে প্রত্যক্ষ কর থেকে। যার ৬৫ শতাংশ অপ্রত্যক্ষ কর। অন্যান্য দেশের মতো দেশের (বাংলাদেশ) অর্থনীতির আয়তন বিবেচনা করে এটি সরাসরি কর থেকে ৭০ শতাংশ রাজস্ব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।’
ড. রাজ্জাক বলেন, সম্প্রতি এনবিআর মোট রাজস্বের প্রত্যক্ষ করের অংশ ৩৫ থেকে ৭০ শতাংশে উন্নীত করার ঘোষণা দিয়েছে। যা একটি স্বাগত উদ্যোগ এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি চালিত করবে এবং জনসেবা প্রদানে সরকারের প্রয়োজনীয় সক্ষমতা জোরদার করবে।
তবে লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে নির্ধারিত সময়ের চেয়ে অনেক পিছিয়ে রয়েছে বলে জানান তিনি।
আবদুল মজিদ বলেন, এনবিআরকে সরকারি সংস্থা নয়, রাষ্ট্রীয় সংস্থা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তাই এনবিআরকে সরকারের ওপর নির্ভরশীল হওয়া উচিত নয়। বরং, এটি রাষ্ট্রের পক্ষে একটি স্বাধীনভাবে পরিচালিত হওয়া উচিত।’
তিনি কর ব্যবস্থা ও এনবিআর সংস্কার করে রাজস্ব আহরণ বাড়াতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার ওপর জোর দেন।
আরও পড়ুন: নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি শুরু করেছে টিসিবি
বাংলাদেশ রেলওয়ে: ঢেলে সাজানোর বিস্তর পরিকল্পনা সরকারের
যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের জন্য রেলওয়ে খাতটিকে সবচেয়ে নিরাপদ, আরামদায়ক, সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করা হয় বলে সরকার দেশের রেলওয়ে নেটওয়ার্ককে উন্নত করার জন্য ব্যাপক পদক্ষেপ নিয়েছে।
একটি সরকারি নথি অনুসারে, রেলওয়ে খাতের গুরুত্ব বিবেচনা করে সরকার একটি সমন্বিত উন্নয়ন নিশ্চিত করতে বেশ কয়েকটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে চায়।
এ সমস্ত কার্যক্রম অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার (২০২১-২০২৫) অধীনে করা হবে, যা পরবর্তী পাঁচ বছরে গড়ে আট দশমিক ৫১ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। পরিকল্পনাটি সময়সীমার শেষে দারিদ্র্যের হার ১৫ দশমিক ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে।
অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার অধীনে ৭৯৮ দশমিক ০৯ কিলোমিটার নতুন রেললাইন নির্মাণ, বিদ্যমান রেললাইনের বিপরীতে ৮৯৭ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ/ডাবল রেললাইন এবং ৮৪৬ দশমিক ৫১ কিলোমিটার রেলওয়ে নেটওয়ার্কের সংস্কারের জন্য ব্যাপক পদক্ষেপ নেয়া হবে।
এর মধ্যে ৯টি গুরুত্বপূর্ণ রেলওয়ে সেতু নির্মাণ এবং লেভেল ক্রসিং গেট, দেশীয় কনটেইনার ডিপো নির্মাণ, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ আউটলেটগুলোর নির্মাণ ও আধুনিকীকরণসহ অন্যান্য অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্প অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
আরও পড়ুন: বুধবার থেকে সব আসনে যাত্রী নিয়ে চলবে ট্রেন: বাংলাদেশ রেলওয়ে
নথিতে বলা হয়েছে যে অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার অধীনে ১৬০টি লোকোমোটিভ, এক হাজার ৭০৪টি যাত্রীবাহী কোচ, আধুনিক রক্ষণাবেক্ষণ সরঞ্জাম, ২২২টি স্টেশনে সিগনাল সিস্টেমের উন্নতি এবং রেলওয়ে ব্যবস্থাপনাকে শক্তিশালী করা হবে।
এদিকে, সরকার বাংলাদেশ রেলওয়ের ৩০ বছর মেয়াদী সংশোধিত মহাপরিকল্পনা (২০১৬-২০৪৫) বাস্তবায়ন করছে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, রেলওয়ে নেটওয়ার্কের আওতায় ঢাকাকে কক্সবাজার, মোংলা সমুদ্রবন্দর, টুঙ্গিপাড়া, বরিশাল, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত করার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত উদ্যোগগুলো হল- ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ে ও আঞ্চলিক রেলওয়ে নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করা এবং আধুনিক কমিউটার ট্রেন পরিষেবা চালু করে নিকটবর্তী শহরতলির সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোকে সংযুক্ত করা।
১৯৬০ এর দশকে শুরু হওয়া ট্রান্স-এশিয়ান রেলওয়ে নেটওয়ার্ক আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ এক লাখ ১৪ হাজার কিলোমিটার রেলপথ নিয়ে গঠিত। এটির লক্ষ্য হচ্ছে ইএসসিএপি (ইকোনমিক অ্যান্ড সোশ্যাল কমিউনিকেশন ফর এশিয়া অ্যাড দ্য প্যাসিফিক) অঞ্চল এবং এশিয়া ও ইউরোপের মধ্যে পণ্য ও যাত্রীদের জন্য কার্যকর রেল পরিবহন পরিষেবা প্রদান করা।
এই মহাপরিকল্পনার আওতায় ছয়টি ধাপে ২৩০টি প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। যাতে খরচ হবে পাঁচ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা।
নথিতে বলা হয়েছে, পদ্মা বহুমুখী রেল সংযোগ প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৫৮ শতাংশ এবং যমুনা নদীর ওপর ডাবল ট্র্যাক ডুয়েল গেজ রেল সেতু নির্মাণ কাজের সার্বিক অগ্রগতি ৪০ শতাংশ।
আরও পড়ুন: চট্টগ্রামে রেলওয়ের ৪ নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য বরখাস্ত
এতে আরও বলা হয়, দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত এবং রামু থেকে মিয়ানমার সীমান্তবর্তী গুনদুম পর্যন্ত সিঙ্গেল লাইন ডুয়েলগেজ ট্র্যাকের ৭১ শতাংশ নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে।
এ ছাড়া খুলনা-মোংলা রেলপথ প্রকল্পের প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
এতে উল্লেখ আছে, রূপসা রেলসেতুর নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ।
সরকার ফরিদপুরের ভাঙা থেকে পায়রা বন্দর হয়ে বরিশাল ও পটুয়াখালী হয়ে পায়রা বন্দরকে পদ্মা রেলপথের সঙ্গে যুক্ত করার জন্য রেললাইন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে।
নথি অনুসারে, ৪৭ হাজার ৭০৩ টি পদের সংশোধিত জনবল কাঠামোর অনুমোদন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে, যা রেলওয়ের পরিষেবার মান বাড়াবে।
আরও পড়ুন: রেলের অব্যবস্থাপনার বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে ৭ দিন সময় পেল রেলওয়ে
মার্কিন প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে র্যাবের সংস্কার শুরু হতে পারে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) বিষয়ে মার্কিন প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে সংস্কার শুরু করা যেতে পারে।
রবিবার রাজধানীর একটি হোটেলে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আপনি যে সংস্কারের কথা বলেন- আমরা সব সময় করে যাচ্ছি। আমরা সবকিছু আধুনিকায়ন করছি। যা করা দরকার আমরা তা করছি।’
‘র্যাব একটি বিশেষ বাহিনী; আমরা মাঝে মাঝে তাদের বিশেষ কাজ দেই। র্যাব তার নীতি অনুযায়ী কাজ করে।
আরও পড়ুন: সাংবাদিক, পুলিশ ও আমাদের মতো বিত্তবানরাও মাদক সাপ্লাই করেন: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
মন্ত্রী আরও বলেন, শাস্তিযোগ্য অপরাধ করলে র্যাব বা পুলিশ কেউই রেহাই পায় না। ‘অনেক পুলিশ ও র্যাব সদস্য কারাগারে। আমরা কাউকে ছাড় দিচ্ছি না।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা মার্কিন প্রতিবেদনের ওপর নজর রাখছি। কোনো ভুল থাকলে অবশ্যই দেখব।’
গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বলেন, র্যাবের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে তাদের অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি। জবাবদিহিতা ও সংস্কার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
এদিকে শনিবার র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সদ্য-নিযুক্ত মহাপরিচালক এম খুরশিদ হোসেন বলেছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জঙ্গিবাদ ও গুরুতর অপরাধ মোকাবিলায় কৃতিত্ব অর্জনকারী বিশেষ বাহিনী র্যাবের সংস্কারের প্রশ্নই আসে না।
ধানমন্ডি-৩২-এ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদনকালে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমরা এমন কিছু করছি না যার জন্য সংস্কার প্রয়োজন। আমরা আমাদের জন্য নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী কাজ করছি। আমরা আইন লঙ্ঘন করে কিছু করি না। সেক্ষেত্রে সংস্কারের প্রশ্নই আসে না’।
তিনি বলেন, নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে এবং সরকার সরকারি পর্যায়ে এর জবাব দেয়া হয়েছে এটা (আমাদের জন্য) কোনো চ্যালেঞ্জ নয়। বিশেষ বাহিনী আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও মাদক মোকাবিলা করে তাদের ভূমিকা অব্যাহত রাখবে।
আরও পড়ুন: রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরানোর চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
সরকার বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একার পক্ষে সমাজকে মাদকমুক্ত করা সম্ভব নয়: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
পুরান ঢাকাকে পুনঃ উন্নয়নের উদ্যোগ রাজউকের
এমন এক পুরান ঢাকার কথা ভাবুন যেখানে চওড়া সড়ক, কম যানজট, বিশুদ্ধ পানি, নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ রয়েছে। ঠিক এ কাজটিই করতে যাচ্ছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। পুরানো এই শহরে সংস্কার কাজ শুরু করার পরিকল্পনা নিয়েছে রাজউক।
পুনঃ উন্নয়নের অংশ হিসাবে প্রাথমিকভাবে সাতটি স্থান নির্ধারণ করেছে রাজউক। শিগগিরই এসব স্থানে ফিজিবিলিটি স্টাডি (সম্ভাব্যতা যাচাই) শুরু হবে।
পুরান ঢাকার ইসলামুর, চকবাজার, বংশাল, মৌলভীবাজার, হাজারীবাগ ট্যানারি এলাকা, কামরাঙ্গীরচর ও সোয়ারিঘাট এই সাত স্থানে কাজ শুরু হবে।
পুরান ঢাকা অপরিকল্পিত শহর হওয়ায় বিভিন্ন সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। এর কারণ শহরটি সরু সড়ক, ঘনবসতিপূর্ণ আবাস, অপরিকল্পিত দালানসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত। সেজন্য এখানে বসবাস করা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।
জরাজীর্ণ ভবন, সংকীর্ণ সড়ক, ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যুৎ সংযোগ, অপর্যাপ্ত পানি সরবরাহ ব্যবস্থা, উন্মুক্ত স্থানের ঘাটতি, ত্রুটিপূর্ণ ড্রেনেজ ব্যবস্থা, উচ্চ ঘনত্ব, নিম্নমানের জীবনযাপন, ভূমিকম্প ও অগ্নি দুর্ঘটনার ঝুঁকি রয়েছে।
বর্তমানে পুরান ঢাকায় নাগরিক সুবিধা বলতে কিছুই নেই, ফলে পুরান ঢাকাতে আধুনিক শহরে রুপান্তর করতে রাজউক রিডেভেলপমেন্ট করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।
রাজউক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিয়া ইউএনবিকে বলেন, ‘পুরান ঢাকাকে আধুনিক সুযোগ সুবিধা দিয়ে রিডেভেলপমেন্টের কাজ করতে ইতোমধ্যে জাপান, চায়নাসহ বেশ কয়েকটি দাতা সংস্থার সাথে বৈঠক হয়েছে। এ বিষয়ে শিগগিরই সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। খুব কম সুদে এই কাজটি করা হবে।’
রাজউক প্রধান নগর পরিকল্পনাবিদ ও ড্যাপের প্রকল্প পরিচালক আশরাফুল ইসলাম ইউএনবিকে জানান, পুরান ঢাকার ইসলামুর, চকবাজার, বংশাল, মৌলভীবাজার, হাজারীবাগ ট্যানারি এলাকা, কামরাঙ্গীরচর ও সোয়ারিঘাট এই সাতটি স্থানে আগে ফিজিবিলিটি স্টাডি করা হবে। তারপর পাইলটিং হিসাবে শুরুতে দুয়েকটি স্থানে কাজ শুরু করা হবে। তারপর বাকি গুলো শুরু হবে।
আরও পড়ুন: অরক্ষিত রেলক্রসিং অধিকাংশ রেল দুর্ঘটনার জন্য দায়ী
সুনামগঞ্জে লেগুনা মালিক সমিতির উদ্যোগে সড়ক সংস্কার
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার কান্দাপাড়া-জয়শ্রী সড়ক সংস্কারের কাজ শুরু করেছে স্থানীয় লেগুনা মালিক সমিতি। সপ্তাহখানেক ধরে সমিতির লোকজন নিজস্ব অর্থায়নে সড়কের সংস্কার কাজ করছে।
আগামী কিছু দিনের মধ্যে ধর্মপাশা থেকে জয়শ্রী পর্যন্ত লেগুনা চলাচল শুরু হবে। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে রুরাল ট্রান্সপোর্ট ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট (আরটিআইপি) প্রকল্পের আওতায় ২০০৭ সালে ২১ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০ কিলোমিটার ও পরবর্তীতে ১৩ কোটি ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে ৫.১ কিলোমিটার সড়কের কাজ করা হয়।
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে আঞ্জু হত্যা: ৫ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল
নির্মাণ কাজে অনিয়ম ও নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করায় এ সড়কের কান্দাপাড়া থেকে জয়শ্রী পর্যন্ত সাত কিলোমিটারের মধ্যে প্রায় চার কিলোমিটারই পুরোপুরি অকেজো হয়ে পড়েছে। ফলে জয়শ্রী ইউনিয়নবাসীসহ সুখাইড় রাজাপুর উত্তর, জামালগঞ্জ, তাহিরপুর ও সুনামগঞ্জগামী যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
কান্দাপাড়া থেকে জয়শ্রী বাজার পর্যন্ত সড়কের মাটি হাওরে বিলীন হয়ে গেছে। ব্লকগুলো এলোমেলোভাবে পড়ে আছে। সড়কের চারটির সেতুর উভয়পাশ থেকে মাটি সরে গেছে। জয়শ্রী বাজার সংলগ্ন সেতুটি পুরোপুরি ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এর মধ্যে কান্দাপাড়া ঢালা ও তার অদূরে পূর্ব দিকের সেতুর উভয়পাশে মাটি ফেলে কোনো রকমে চলাচলের ব্যবস্থা করে যাচ্ছে লেগুনা মালিক সমিতি।
লেগুনা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম বলেন, ‘বিকল্প সড়ক না থাকায় প্রত্যেক বছরই নিজস্ব অর্থায়নে আমরা সড়ক সংস্কার কাজ করে লেগুনা চালাই। সড়কটির বেহাল দশার কারণে বৈশাখে কৃষকেরা ধান বাজারজাত করতে পারেনা। আমরা দুইবার সড়ক সংস্কারের জন্য সরকারি টাকা পেয়েছি। আমাদের লেগুনা চালানোর স্বার্থে লাখ টাকার ওপরে খরচ করে সড়কটি সংস্কার করতে হয়। সড়কটি সংস্কার করতে ২০-২৫ দিন সময় লাগে। আমরা সরকারি সহযোগিতা কামনা করি।’
এ বিষয়ে উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী মো. আরিফ উল্লাহ খান বলেন, ‘এ সড়ক মেরামতের জন্য প্রাক্কলন পাঠানো হয়েছে। লেগুনা মালিক সমিতি প্রতি বছরই সড়কে কাজ করে। আমাদের কাছে তারা সাহায্য চেয়েছে। কাজের মান ভালো হলে আমরা বিষয়টি দেখবো।’
আরও পড়ুন: সুনামগঞ্জে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ৩ বন্ধু নিহত
চাঁদাবাজির প্রতিবাদে সুনামগঞ্জে বাস ধর্মঘট
বাউফল পৌরশহরে ২০কিলোমিটার সড়কে ভোগান্তি
পটুয়াখালীর বাউফল পৌরসভা প্রথম শ্রেণির হলেও সড়কের অবস্থা দেখে তা মনে হয় না। শহরের আওতাধীন প্রায় ২০ কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশা। এক পশলা বৃষ্টি হলে পানি জমে যায়। দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় সড়কগুলো চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। শহরের প্রায় ৬৫ শতাংশ সড়কের অবস্থাই এমন। সড়কগুলো দ্রুত সংস্কারের দাবি স্থানীয়দের।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, পৌরসভার ভেতরে শেরেই বাংলা সড়ক, মুসলিম পাড়া-পৌর ভবন- হোসনাবাদ সড়ক, ফুলতলা সড়ক, গোলাবাড়ি ব্রিজ-পালপাড়া সড়ক, মহিলা কালেজ- সাবেক সাংসদ শহিদুল ইসলামের বাসভবন সড়ক, বকুলতলা সড়ক, গার্লস স্কুল রোড সংযোগ পৌরভবন সড়ক, কাগজিরপুল-হোসনাবাদ সড়ক ও ডা. মোমেন সড়কসহ শহরের অধিকাংশ সড়কের বেহাল দশা। প্রায় ২০ কিলোমিটার সড়কের কার্পেটিং উঠে গেছে। বৃষ্টি হলেই পানি জমে থাকে। পথচারী ও যানবাহন চলাচলে ব্যাপক ভোগান্তির সৃষ্টি হচ্ছে। এতে করে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা।
আরও পড়ুন: দেবে গেছে কুষ্টিয়া ঈশ্বরদী মহাসড়ক, জনদুর্ভোগ চরমে
পৌর বাসিন্দা মো. সোহাগ, রাকিব ও শামিম বলেন, ‘আমাদের দরকার একটু ভালো রাস্তাঘাট। আমরা একটু শান্তিতে চলাফেরা করতে চাই। বৃষ্টি হলেই রাস্তা দিয়ে চলাচল করা যায় না। পৌরসভার ভিতরে বসবাস করেও যদি ভালো রাস্তা দিয়ে চলাচল না করতে পারি তাহলে পৌরসভা দিয়ে কি হবে।’
পৌর আওয়ামীলীগ সভাপতি মো. ইব্রাহিম ফারুক বলেন, বাউফল পৌরসভা কাগজে কলমে প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হলেও সকল সুযোগ-সুবিধা থেকে পৌরবাসী বঞ্চিত। জননেত্রী শেখ হাসিনার আমলে সারাদেশে ব্যাপক উন্নয়ন হলেও বাউফল পৌরসভায় কোন উন্নয়ন হয়নি। যা শহরের রাস্তাঘাট দেখলেই বোঝা যায়।
আরও পড়ুন: ঢাকা সিলেট মহাসড়ক ছয় লেনে ১৫ হাজার ১৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী
সড়কগুলোর বেহাল দশার কথা স্বীকার করে পৌরসভার প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আতিকুর রহমান বলেন, ‘রাস্তা গুলো সংস্কারের জন্য উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। টেন্ডার প্রক্রিয়াধীন চলছে।’
যমুনার পানি প্রবেশ: হারানো যৌবন ফিরে পেল কাটাখালি
দীর্ঘ প্রায় পাঁচ যুগ পর সিরাজগঞ্জ শহরের কাটাখালিতে যমুনার পানি প্রবেশ করায় হারানো যৌবন এখন ফিরে পাচ্ছে কাটাখালি। বিকাল হলেই এখন অনেকেই ভিড় জমায় কাটাখালির চিত্র দেখতে।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী (হেড কোয়ার্টার) জাকির হোসেন জানান, বিপুল অংকের টাকা ব্যয়ে দেশের ৬৪ জেলার ছোট নদী-খাল-বিল পুনঃখনন প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। এ প্রকল্পের আওতায় সিরাজগঞ্জ জেলা শহরের কাটাখালি পুনঃখনন ও সংস্কারের কাজও এগিয়ে চলেছে। কয়েকদিন ধরে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে যমুনার পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে যমুনা নদীর পানি ইছামতি ও ফুলজোড় নদীতে গড়েছে এবং বাঐতারা স্লুইচগেটে বন্যার পানি কাটাখালিতে প্রবেশ করছে। এ পানি প্রবেশ করায় কাটাখালির ময়লা আবর্জনাও চলে যাচ্ছে যমুনায়।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জের যমুনায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত, নিম্নাঞ্চল বন্যাকবলিত
জানা গেছে, ব্রিটিশ আমলে ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারের জন্য এ খালটি খনন করে যমুনা নদীর সাথে সংযোগ করা হয়। সিরাজগঞ্জ শহরের মাঝখানে কাটাখালির উপর ৪৫ হাজার টাকা ব্যয়ে ১৮৮২ সালে নির্মিত হয় একটি দৃষ্টিনন্দন ব্রীজ। ১৮০ ফুট লম্বা আর ১৬ ফুট চওড়া এ ব্রীজটির অন্যতম বৈশিষ্ট হলো এটির কোন পিলার (খুঁটি) নেই। স্টুয়ার্ট হার্টল্যান্ড নামের ব্রিটিশ ইঞ্জিনিয়ারের তৈরি এ পিলারবিহীন ব্রীজটির নামকরণ করা হয় ইলিয়ট ব্রীজ। ১৯৬২ সাল থেকে এ খালটির বাঐতারা প্রান্তের স্লুইচগেটের মুখ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যায়। এ কারণে ময়লা-আবর্জনায় পরিণত হয় শহরের মধ্য দিয়ে বয়ে চলা এ খাল। এ কাটাখালি কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হলেও সফলতায় আসেনি।
আরও পড়ুন: সিরাজগঞ্জে যমুনায় ভয়াবহ ভাঙন, অর্ধশত ঘরবাড়ি বিলীন
অবশেষে ২০১৯ সাল থেকে স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড ওই প্রকল্পের আওতায় কাটাখালির পুনরায় খনন কাজ শুরু করে। প্রায় ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ২২ কিলোমিটার এ খাল পুনরায় খনন শুরু করা হয়েছে। যমুনা নদীর উৎস মুখ সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বাঐতারা স্লুইচগেট থেকে শহরের মিরপুর, রেলওয়ে কলোনী বড়বাজার হয়ে সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের পাশ দিয়ে জানপুর, বাহিরগোলা এবং চন্দ্রকোণা হয়ে কালিঞ্জার ভেতর দিয়ে ইছামতি নদী পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার এ খাল খনন কাজ শুরু করা হয়েছে। ইতোমধ্যেই কাটাখালির সিংহভাগ কাজ শেষ হয়েছে।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, কাটাখালিতে যমুনার পানি প্রবেশ করায় শহরের ময়লা-আবর্জনা ও দুর্গন্ধ কমে যাচ্ছে এবং এ স্বচ্ছ পানিতে বিভিন্ন প্রজাতীর মাছ ছাড়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: যমুনার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত, সিরাজগঞ্জের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
এছাড়া কাটাখালির উভয়পাড় সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য বিভিন্ন ধরনের কাজ করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
সংস্কারের পর কেমন রূপে ফিরবে টিএসসি?
টিএসসি নামে অধিক পরিচিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৬১ সালে। এবছর ঢাবির শতবর্ষপূর্তী উপলক্ষে টিএসসির মূল স্থাপনা ঠিক রেখে নতুনভাবে সংস্কার করা হবে।
ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গণপূর্ত অধিদপ্তরের তৈরি নতুন নকশার প্রাথমিক অনুমোদন দিয়েছে। যদিও এর কাজ শুরু হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমোদনের পর।
উল্লেখ্য, এর আগে গণপূর্ত অধিদপ্তর পুরো টিএসসি ভেঙে নতুনভাবে করার পরিকল্পনা করেছিল। কিন্তু এই নিয়ে বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দিলে সেই পরিকল্পনা বাদ দেয়া হয়।
এরপর কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় গণপূর্ত অধিদপ্তর মূল স্থাপনা ঠিক রেখে সংস্কারের নতুন নকশা তৈরি করে, যা উভয় পক্ষের বেশ কয়েকটি সভার মাধ্যমে গৃহীত হয়।
গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী ঢাকা মেডিকেল কলেজ, টিএসসি এবং শাহবাগের পাবলিক লাইব্রেরি সংস্কারের পরিকল্পনার কথা জানান।
তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ল আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় এবং আমরা টিএসসিকে আধুনিক ভাবে তৈরি করতে চাই।’
দেখতে কেমন হবে নতুন টিএসসি ভবন?
নতুন খসড়া নকশা অনুযায়ী, টিএসসির মূল স্থাপনা ঠিক রেখে পূর্বের সুইমিং পুলের জায়গা দশতলা নতুন একটি ভবন তৈরি করা হবে।
টিএসসির ভারপ্রাপ্ত পরিচালক সৈয়দ আলী আকবর ইউএনবিকে বলেন, ‘বর্তমান স্থাপনার সাথে সামঞ্জস্য রেখে নতুন স্থাপনাটি তৈরি করা হবে। টিএসসি-ভিত্তিক সংগঠনগুলো জন্য আধুনিক প্রযুক্তিসহ আলাদা রুমের ব্যবস্থা, রিহার্সালের জন্য আলাদা জায়গা, ইনডোর খেলার সুবিধা, আলাদা ক্যাফেটেরিয়া, দু’টি অডিটোরিয়াম, ব্যায়ামাগার, শিক্ষকদের লাউঞ্জ, দুই-তলা গাড়ি পার্কিং এর ব্যবস্থাসহ আরও নানান উন্নত সুবিধা এই ভবনটিতে রাখা হচ্ছে।’
তিনি জানান, নতুন ভবনের প্রবেশ গেইট হবে টিএসসির পশ্চিম দিক দিয়ে। এছাড়া নির্মাণ কাজ শুরু হবে টিএসসির পেছন দিক থেকে, যেখানে পুরনো সুইমিং পুলের অবস্থান।
তিনি আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল শাখা এই নতুন নকশা বা কাজের সাথে জড়িত নয়। প্রধানমন্ত্রী যেমন নির্দেশনা দিবেন, সেইভাবে কাজ করবে গণপূর্ত অধিদপ্তর।
গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রধান স্থপতি মীর মনজুরুর রহমান বলেন, ‘ঢাবির চাহিদামতো আমরা নতুন নির্মিতব্য এই ভবনে সকল সুবিধা যোগ করেছি। দু’টি সম্মেলন কক্ষ, লেকচার হলসহ অন্যান্য সুবিধা সম্বলিত নতুন ভবনের নকশায় সন্তুষ্ট বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।’
তিনি জানান, পুরনো স্থাপনাটুকুতে শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় সংস্কার কাজ করা হবে।
এর আগে গত বছরের ১৮ অক্টোবর টিএসসি পরিচালক ঢাবির প্রকৌশল বিভাগের কাছে চাহিদাপত্র জমা দেন, যা পরবর্তীতে গণপূর্ত অধিদপ্তরে পাঠানো হয়।
ঢাবির উপ-উপাচর্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মুহাম্মদ সামাদ ইউএনবিকে বলেন, ‘নতুন নকশা অত্যন্ত গ্রহণযোগ্য। গণপূর্ত অধিদপ্তরের মাধ্যমে এই নকশা প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে। তার অনুমতি পাওয়ার পরপর ই কাজ শুরু করা হবে।’
নতুন ভবন সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন মাহির কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলেন বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক-সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের কেন্দ হলে টিএসসি। যখন এটি তৈরি করা হয়েছিল তখন শিক্ষার্থী ছিল বর্তমানের তুলনায় অনেক কম। বর্তমানে নতুন ভবন তৈরির পরিকল্পনাটি একটি মহৎ উদ্যোগ।’
তবে টিএসসি বর্তমান সৌন্দর্য্য অক্ষুন্ন রাখার ব্যাপারে ঢাবি কর্তৃপক্ষকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান মাহি।
আরও পড়ুন: টিএসসি সম্প্রসারণ: শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মতামত চেয়েছে ঢাবি কর্তৃপক্ষ
বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী এবং সমাজতান্ত্রিক বাম ছাত্র জোটের সভাপতি সালমান সিদিক্কি বলেন, ‘টিএসসিতে আধুনিক সুযোগ সুবিধার প্রয়োজন রয়েছে। আমরা আধুনিকায়নের বিপক্ষে না। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে খেয়াল রাখতে হবে যেন ঢাবির ইতিহাস এবং সৌন্দর্য বিনষ্ট না হয়।’
এই বাম ছাত্র নেতা আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক সমস্যাসহ আরও বিভিন্ন সমস্যা রয়েছে। কর্তৃপক্ষের উচিৎ আগে সেসকল বিষয় নিয়ে কাজ করা।
এক নজরে টিএসসি
টিএসসিকে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং আধুনিক স্থাপত্যশিল্পের অন্যতম নিদর্শন হিসেবে বিবেচনা করা।
গ্রিক স্থপতি কনস্ট্যান্টিন ডক্সিয়াডেস ষাটের দশকের শুরুতে টিএসসির নকশা করেছিলেন। পরবর্তীতে ষাটের দশকের শেষ দিকে তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের তথাকথিত উন্নয়নের দশকের (১৯৫৮-৬৮) অংশ হিসেবে এর নির্মাণ সম্পন্ন করা হয়।
ডক্সিয়াডিস টিএসসির নকশা করার ক্ষেত্রে এ দেশের সংস্কৃতি ও আবহাওয়ার বিষয়টি মাথায় রেখেছিলেন। গম্বুজ আকৃতির এই টিএসসি কমপ্লেক্স সারা ঢাকা শহরের মধ্যেই এক অন্যন্য স্থাপনা হিসেবে বিবেচিত হয়। এখানেই প্রতিদিন হাজার হাজার শিক্ষার্থী প্রতিদিন পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।
এর আগেও বেশ কয়েকবার টিএসসির সংস্কার কাজের উদ্যোগ নেয়া হলেও সমালোচনার কারণে তা বন্ধ হয়ে যায়। তবে মূল স্থাপনা ঠিক রেখে টিএসসি সংস্কার ও নতুন ভবন নির্মাণ প্রকল্প এখনও আলোর মুখ দেখতে পায়নি।
থমকে গেছে যশোরের সুলতানি আমলের মসজিদের সংস্কার কাজ
যশোরের চৌগাছায় সুলতানি আমলের একটি মসজিদ কালের সাক্ষী হয়ে আজও দাঁড়িয়ে আছে। ঐতিহাসিক প্রাচীন এই মসজিদে এখন আর সেভাবে সুলতানি আমলের স্থাপত্য শিল্প দেখা না গেলেও স্থানীয়রাসহ দূর-দূরান্ত থেকে মুসল্লিরা সেখানে নামাজ আদায়ে ছুটে আসেন। অনেকে আবার আসেন বিভিন্ন মানত করতে, নিয়ে যান গায়েবি পাথরে মাখা পানি আর তেল।
লুই আই কানের নকশা মেনেই সংসদ ভবনের সংস্কার হবে: স্পিকার
জাতীয় সংসদ ভবনের স্থাপত্যশৈলী আকর্ষণীয় ও দৃষ্টিনন্দিত উল্লেখ করে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, সংসদ ভবনের সার্বিক রক্ষণাবেক্ষণ, সংস্কারের ক্ষেত্রে সে কারণে অধিক যত্নশীল হতে হবে। এসময় লুই আই কানের মূল নকশা অনুসরণ করার উপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।