স্থানীয়-ব্যবসা-বাণিজ্য
এখন দেশেই বিশ্বমানের প্রসাধনী তৈরি করছে রিমার্ক-হারল্যান
দেশে মানসম্মত কসমেটিকস পণ্য না পাওয়ায় ভোক্তারা বিদেশি পণ্যের দিকে আকৃষ্ট হওয়ার কারণে বিপুল পরিমাণে অর্থ দেশের বাইরে কোম্পানিগুলোর কাছে চলে গিয়েছে। এই পরিস্থিতির পরিবর্তন আনতে দেশেই এখন আন্তর্জাতিক মানের কসমেটিকস পণ্য উৎপাদন শুরু করেছে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান। দেশে নিজস্ব কারখানায় মানসম্মত পণ্য তৈরির ওপর কসমেটিকস পণ্য উৎপাদক প্রতিষ্ঠানদের নজর দিতে হবে বলে মনে করেন স্কিন কেয়ার বিশেষজ্ঞ ও কসমেটিকস পণ্য সংশ্লিষ্টরা।
বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) রাজধানীর কারওয়ানবাজারে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও এসোসিয়েশন অব স্কিনকেয়ার অ্যান্ড বিউটি প্রোডাক্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অব বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ ট্যাগযুক্ত পণ্যের মান’বিষয়ক সেমিনারে এসব কথা বলেন তারা।
বক্তারা বলেন, দেশে দীর্ঘদিন ধরে কসমেটিকস পণ্য উৎপাদিত হলেও মানোন্নয়নে কখনোই গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। এতে ভোক্তাস্বাস্থ্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এসব বিষয়ে নীতিনির্ধারণী পর্যায়েও তেমন কোনো গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। এই সুবাদে বিপুল অংকের টাকা চলে গেছে বিদেশে।
নানা চ্যালেঞ্জ ও প্রতিকূল পরিবেশ মোকাবিলা করে এগুতে হচ্ছে উল্লেখ করে কসমেটিক পণ্য উৎপাদক ব্যবসায়ীরা জানান, দেরিতে হলেও আন্তর্জাতিক পণ্য উৎপাদন শুরু করেছে দেশীয় কিছু প্রতিষ্ঠান। সর্বাধুনিক প্রযুক্তির মিশেলে এসব প্রতিষ্ঠানের পণ্যগুলো স্থানীয় বাজারে আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে। নিজস্ব কারখানায় মানসম্মত পণ্য বাজারজাতকরণে এরই মধ্যে তারা সাড়াও ফেলেছে বেশ। তাদের মধ্যে অন্যতম শীর্ষ কোম্পানি রিমার্ক এলএলসি ইউএসএ-এর এফিলিয়েটেড ব্র্যান্ডগুলো সর্বাধুনিক প্রযুক্তির মিশেলে সর্বোৎকৃষ্ট পণ্য উৎপাদনে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে।
তারা অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করা কোম্পানিগুলো পণ্যের চমকপ্রদ বিজ্ঞাপন তৈরি, সম্প্রচার এবং মার্কেটিং খাতে বিনিয়োগ করে বাজার সম্প্রসারণে যতটা উদ্যোগী, পণ্যের মান বাড়াতে ঠিক ততটা পিছিয়ে।
কয়েকটি নতুন কোম্পানি দেশে আন্তর্জাতিক মানের প্যাকেজিং সম্বলিত পণ্য উৎপাদনে এগিয়ে এসেছে বলে আশা প্রকাশ করেন তারা।
সেমিনারে বলা হয়, ভোক্তাদের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ায় সাম্প্রতিক বছরগুলোয় বাংলাদেশের ফাস্ট মুভিং কনজিউমার গুডস ইন্ট্রাস্ট্রি (এফএমসিজিআই) সেক্টরের আকার উল্লেখযোগ্য হারে বড় হয়েছে, যা একে দ্রুত বর্ধনশীল শিল্পগুলোর মধ্যেও একটি করে তুলেছে। বর্তমানে এ বাজারের আকার প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার হলেও ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বের নবম বৃহত্তম ভোক্তা বাজার হয়ে উঠবে। রাজস্ব খাতে এটি প্রত্যাশিত, ২০২৭ সালের মধ্যে এ খাতে প্রবৃদ্ধি হবে ১৬ শতাংশেরও বেশি।
খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কোন কোন কোম্পানি তথাকথিত ইস্টইন্ডিয়া কোম্পানির মতো করে বাংলাদেশের বাজার থেকে শুধু মুনাফাই লুটেছে। কিন্তু ক্রেতাস্বার্থ বিবেচনায় নেয়নি। ফলে দেশের মানুষ বিদেশে থেকে কসমেটিকস ও খাত সংশ্লিষ্ট পণ্যগুলো নিয়ে আসেন। কারণ তারা মনে করেন, বিদেশি পণ্য এ দেশে উৎপাদিত পণ্যের চাইতে উন্নত।
সেমিনারে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কাজী মুহাম্মদ মোজাম্মেল হক বলেন, বাজার নিম্নমানের কসমেটিকস পণ্যে সয়লাব হলে তা মানুষের জীবনে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হবে। ভুয়া পণ্য ব্যবহার করে অনেকে এরই মধ্যে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। ব্যয়বহুল চিকিৎসার জন্য পরিবারেও দিন দিন আর্থিক সংকট বাড়ছে। এজন্য দেশে বিশ্বমানের কসমেটিকস ও হোমকেয়ার পণ্য উৎপাদনের বিকল্প নেই। এতে দেশের মানুষের কর্মসংস্থানও বাড়বে। রিমার্ক-হারল্যানসহ যে বড় প্রতিষ্ঠানগুলো মানুষকে গুণগত মান বজায় রেখে অথেনটিক পণ্য দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, ভোক্তা অধিদপ্তরও তাদের পাশে থাকবে।
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. মুহম্মদ মাহবুব আলী বলেন, দেশে প্রসাধনী ও ব্যক্তিগত যত্নের সামগ্রীর বার্ষিক বাজার এখন প্রায় ৯০৯ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। আশা করা হচ্ছে যে ২০২৭ এ ৮ দশমিক ১ শতাংশ হারে বাড়বে। তবে বাংলাদেশের প্রসাধনী খাত ব্যাপকভাবে আমদানির ওপর নির্ভরশীল। প্রসাধনী রাসায়নিকের ৯০ শতাংশই আমদানিনির্ভর। বিশেষত, মোট আমদানিকৃত কসমেটিক পণ্যের প্রায় ৪১ শতাংশ ভারত থেকে আসে।
এ অবস্থার পরিবর্তনে মানসম্মত দেশি পণ্য উৎপাদন ও বাজারজাতের কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করেন তিনি।
স্কিন কেয়ার, কসমেটিকস ও হোম কেয়ার খাতে রিমার্ক-হারল্যানের মতো দেশীয় কোম্পানি এগিয়ে আসায় তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর পরিচালক ইসহাকুল হোসেন সুইট বলেন, এ প্রতিষ্ঠানগুলো মানসম্মত অথেনটিক পণ্য উৎপাদন করায় ক্রেতাদের মাঝে দেশি পণ্য ব্যবহারে আগ্রহও বাড়ছে।
ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস ফোরাম অব বাংলাদেশের (আইবিএফবি) সহসভাপতি এম এস সিদ্দিকী মনে করেন, দেশীয় শিল্পের প্রসারে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তা দেওয়া প্রয়োজন। কারণ আমদানি নির্ভরশীলতা কমাতে দেশের কোম্পানিগুলোকে এগিয়ে নেওয়ার বিকল্প নেই। যেসব প্রতিষ্ঠান দেশে আন্তর্জাতিক মানের পণ্য উৎপাদন করছে, তারা যেন বিশেষ নীতিসহায়তা পান, তাও নিশ্চিত করতে হবে। তাহলে দেশীয় শিল্পের প্রসারে আগ্রহী হয়ে অনেকে এগিয়ে আসবেন।
সেমিনারে বিএসটিআইর উপপরিচালক মোরশেদা বেগম বলেন, পণ্যের মান নিশ্চিত হওয়ার পর যেন বাজারজাত হয় সেজন্য কাজ করছে বিএসটিআই। এছাড়াও নতুন পণ্যের বাজারজাতকরণের আগে পণ্য ও মোড়কসহ সব বিষয়ের মান নিয়ে কাজ করছি। আমরা রপ্তানিযোগ্য পণ্যের মান নিশ্চিতকরণে জোর দিচ্ছি।
সামগ্রিক উৎপাদনের ৩০ শতাংশ পণ্য বিএসটিআই মান সনদের আওতায় আনতে পেরেছে বলে জানান মোরশেদা বেগম।
চিত্রনায়ক মামনুন হাসান ইমন জানান, দীর্ঘদিন ধরে দেশে মানসম্মত পণ্য উৎপাদিত না হওয়ায় বিদেশি পণ্যের প্রতি মানুষের দুর্বলতা ছিল। এছাড়া বড় কোম্পানিগুলো দক্ষ মার্কেটিং ও সেলস পার্সনদের নিয়োগে বেশি গুরুত্ব দিলেও পণ্যের মানোন্নয়নে কোনো ভ্রুক্ষেপ ছিল না। চটকদার বিজ্ঞাপন তৈরি, প্রচার ও পণ্য বিক্রিতেই সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ করেছে। গবেষণা ও কারখানা ব্যবস্থাপনাসহ মৌলিক জায়গাগুলোয় তেমন কোনো বিনিয়োগ হয়নি। এটি প্রকারান্তরে ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারণার শামিল।
তিনি আরও বলেন, দেশে এখন মানসম্মত পণ্য উৎপাদিত হচ্ছে, তার প্রতি ক্রেতাদের আগ্রহও বাড়ছে। সুতরাং দেশে উৎপাদিত গুণগত মানের পণ্যের প্রতি মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস যেন বাড়ে সে উদ্যোগ সরকারকে নিতে হবে। দেশে উৎপাদিত মানসম্মত ও অথেনটিক পণ্য ব্যবহারে মানুষের মাঝে আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। মানুষ এখন দেশি পণ্য ব্যবহার করতে চায়।
এক্ষেত্রে রিমার্ক-হারল্যানসহ দেশীয় কিছু কোম্পানি এগিয়ে আসায় তাদের উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান ইমন।
প্রসাধনী খাতের বাণিজ্য সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব স্কিন কেয়ার অ্যান্ড বিউটি প্রোডাক্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দীন বলেন, বাংলাদেশ কনজিউমার গুডস খাতে বড় বাজার হলেও পণ্য বিক্রেতাদের আন্তর্জাতিক মানের বিষয়টি আমলে নিতে দেখা যায়নি। মানহীন ও ভেজাল পণ্য কিনে ক্রেতারা প্রতারিত হতেন। দীর্ঘদিন পর হলেও ভোক্তা অধিকার ভেজাল রোধে কাজ করছে। ফলে মানুষের মাঝে সচেতনতা বেড়েছে। চাহিদা তৈরি হয়েছে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির পণ্যের।
বেশ কিছু কোম্পানি এখন উন্নত ফর্মুলেশন-গবেষণা খাতে ব্যাপক বিনিয়োগে এগিয়ে এসেছে বলে জানান তিনি।
স্কিন কেয়ার বিশেষজ্ঞ ডা. শারমিনা হক মনে করেন, নকল ও ভেজাল পণ্য ব্যবহার করে মানুষ স্কিন ক্যান্সারসহ নানা জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এ থেকে বাঁচার একমাত্র উপায় মানসম্পন্ন পণ্য ব্যবহার করা। রিমার্ক ব্যাপক গবেষণার মাধ্যমে, মানুষের জীবনমান উন্নয়নে যেসব পণ্য বাজারে আনছে, আশা করি দেশের মানুষ সর্বাধুনিক প্রযুক্তির এসব পণ্য ব্যবহার করে উপকৃত হবেন।
সেমিনারে ড. সাকুন মাংগুত বলেন, বাংলাদেশে পণ্য নয় প্রযুক্তিগত উন্নয়নের দিকে বেশি নজর দেওয়া উচিত। বাংলাদেশে উৎপাদিত পণ্যের আস্থা অর্জনে গবেষণায় জোর দিতে হবে।
দেশি ব্র্যান্ডগুলোকে উন্নত করে ভোক্তার আস্থা অর্জনের জন্য দীর্ঘমেয়াদী গবেষণা, পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করতে পরামর্শ দেন তিনি।
বাজার অস্থিরতার মধ্যেই বিএসইসি চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি বিনিয়োগকারীদের
পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।
বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারের দাম কমে যাওয়ায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ব্যাপক হতাশা দেখা দিয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে বিএসইসি চেয়ারম্যানের ব্যর্থতার জন্য বাজার অস্থিতিশীল হয়েছে বলে অনেকেই তাকে দোষারোপ করছেন।
আরও পড়ুন: বেসরকারি ব্যাংকের তারল্য সংকট নিরসনের আশ্বাস দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর: আব্দুল আউয়াল মিন্টু
বিক্ষোভকারীরা অনিয়ম তদন্তের জন্য ব্যাংকিং খাতের মতো একটি টাস্কফোর্স গঠনের দাবি জানান।
বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) সকালে মতিঝিলের ডিএসইর পুরাতন ভবনের সামনে সমাবেশ করেন তারা।
মাকসুদের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভকারীরা মতিঝিল থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মিছিল করে বিএসইসির প্রধান কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
বুধবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বিনিয়োগকারীরা ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) সামনে জড়ো হয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে চাপে ফেলতে 'লংমার্চ' কর্মসূচি ঘোষণা করেন।
এর আগে পুরাতন ডিএসই ভবনের সামনে বাংলাদেশ পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সদস্যরা মানববন্ধন করে বাজার নিয়ন্ত্রকের প্রতি ক্রমবর্ধমান হতাশার কথা তুলে ধরেন।
আরও পড়ুন: সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি কমে ৯.৯২ শতাংশ
সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি কমে ৯.৯২ শতাংশ
আগের মাসের তুলনায় সেপ্টেম্বরে সাধারণ পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট ভিত্তিতে মুদ্রাস্ফীতির হার কমে দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৯২ শতাংশে। আগস্টে এ হার ছিল ১০ দশমিক ৪৯ শতাংশ।
এ সময় খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত উভয় ক্ষেত্রেই মূল্যস্ফীতি কমেছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস)।
আরও পড়ুন: ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি হবে ১০.১ শতাংশ: এডিবির পূর্বাভাস
বিবিএসের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, খাদ্য মূল্যস্ফীতি সেপ্টেম্বরে কমে দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ৪০ শতাংশে। আগস্টে এ হার ছিল ১১ দশমিক ৩৬ শতাংশ। অন্যদিকে সেপ্টেম্বরে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতির হার আরও কমে ৯ দশমিক ৫০ শতাংশে নেমে এসেছে; যা একই বছরের আগস্টে ছিল ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
শহর ও গ্রাম উভয় অঞ্চলেই সাধারণ পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতির হার গত মাসে কমেছে।
সেপ্টেম্বরে গ্রামাঞ্চলে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ দশমিক ১৫ শতাংশ; যা আগস্টে ছিল ১০ দশমিক ৯৫ শতাংশ।
অন্যদিকে সেপ্টেম্বরে শহরাঞ্চলে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৯ দশমিক ৮৩ শতাংশ, যা আগস্টে ছিল ১০ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ।
সেপ্টেম্বরে মজুরি হার সূচক ছিল ঊর্ধ্বমুখী। আগস্টে এর হার ৭ দশমিক ৯৬ শতাংশ। সেপ্টেম্বরে সেখান থেকে বেড়ে ৮ দশমিক শূন্য ১ শতাংশে পৌঁছেছে।
আরও পড়ুন: মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে আবারও মূল নীতি হার বাড়ালো বাংলাদেশ ব্যাংক
আগস্টে মূল্যস্ফীতি কমেছে ১.১৭ শতাংশ: বিবিএস
বেসরকারি ব্যাংকের তারল্য সংকট নিরসনের আশ্বাস দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর: আব্দুল আউয়াল মিন্টু
বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আব্দুল আউয়াল মিন্টু বলেছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর চলমান তারল্য সংকট স্বল্প সময়ের মধ্যে সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘ব্যাংকিং খাতে নানা সমস্যা রয়েছে। এসব বিষয়ে আমরা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে আলোচনা করেছি এবং সহযোগিতা চেয়েছি। ব্যাংকগুলো যাতে সুষ্ঠুভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে সেজন্য গভর্নর আমাদের সম্ভাব্য সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।’
বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে বৈঠক শেষে ব্যাংকিং খাতের বর্তমান সংকট নিয়ে কথা বলেন মিন্টু।
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সাবেক সভাপতি ও ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের (এনবিএল) চেয়ারম্যান মিন্টু কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তারল্য সহায়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।
তিনি বলেন, ‘ব্যাংকিং আইনি কাঠামোর মধ্যে থেকে যতটা সম্ভব তারল্য সহায়তা প্রয়োজন। বাংলাদেশ ব্যাংক এই সহায়তা দিলে ডিসেম্বরের মধ্যে আমাদের তারল্য সমস্যার সমাধান হওয়ার কথা।’
আরও পড়ুন: ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি হবে ১০.১ শতাংশ: এডিবির পূর্বাভাস
ব্যাংকগুলোর সামনে কী ধরনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে জানতে চাইলে মিন্টু স্বীকার করেন, এনবিএলসহ অনেক প্রতিষ্ঠান খেলাপি ঋণ ও নগদ প্রবাহ সমস্যায় হিমশিম খাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘অন্যান্য ব্যাংকও যে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে, এনবিএলেরও একই সমস্যা রয়েছে।’
মিন্টু আইনি পদক্ষেপের মাধ্যমে খেলাপি ঋণ আদায়ে এনবিএলের কৌশল তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘এনবিএলের খেলাপি ঋণ আদায়ে আদালতে যাওয়াসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব।’
সুদ মওকুফের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মিন্টু বলেন, বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংক সুদ মওকুফ করেছে, কিন্তু আমরা সম্ভাব্য এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের কথাও বলেছি। ব্যাংকিং প্রবিধান মেনেই যে কোনো রেজোলিউশন করা হবে।’
আরও পড়ুন: বিএনপির আব্দুল আউয়াল মিন্টুর হাইকোর্টে আগাম জামিন
২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি হবে ১০.১ শতাংশ: এডিবির পূর্বাভাস
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) তাদের সর্বশেষ পূর্বাভাসে বলেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি বেড়ে ১০ দশমিক ১ শতাংশ হবে। এই পূর্বাভাস এপ্রিলে দেওয়া পূর্বাভাসের চেয়ে ৩ দশমিক ১ শতাংশ বেশি।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) সম্প্রতি প্রকাশিত তথ্যে দেখা যাচ্ছে, ২০২৪ সালের আগস্টে সাধারণ মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ১০ দশমিক ৪৯ শতাংশে, যা জুলাইয়ে ছিল ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ। তুলনামূলকভাবে দেখা যায়, ২০২৩ সালের আগস্টে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৯২ শতাংশ, ২০২২ সালের আগস্টে ৯ দশমিক ৫২ শতাংশ এবং ২০২১ সালের আগস্টে ছিল ৫ দশমিক ৫৪ শতাংশ।
এডিবির পূর্বাভাসে মূল্যস্ফীতির অনুমেয় বৃদ্ধির জন্য চলমান সরবরাহ বিঘ্ন এবং মুদ্রার অবমূল্যায়নের ফলে উচ্চ আমদানি ব্যয়কে দায়ী করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক ঋণদাতা সংস্থাটি আশা করছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের শেষ নাগাদ মূল্যস্ফীতি দুই অঙ্কে থাকবে।
আরও পড়ুন: ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস ৫.১ শতাংশে নামাল এডিবি
গণঅভ্যুত্থানের পর গত ৫ আগস্ট ক্ষমতাচ্যুত সরকার ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৭ শতাংশে উন্নীত হওয়ার পর চলতি অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৬ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল। এসব প্রচেষ্টা সত্ত্বেও ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথমার্ধে খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের দাম মূল্যস্ফীতিকে ঊর্ধ্বমুখী করে তুলেছে, যা সরবরাহ শৃঙ্খলের সমস্যা এবং আমদানি ব্যয় বৃদ্ধির কারণে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়িয়েছে।
এডিবির মতে, এই কারণগুলো গত দুই বছর ধরে ক্রমাগত মুদ্রাস্ফীতির চাপের মুখোমুখি হওয়া ভোক্তাদের উপর চাপ অব্যাহত রাখবে। এই সময়ের মধ্যে মুদ্রাস্ফীতি ৯ শতাংশের উপরে রয়েছে, যা পরিবারের বাজেটকে প্রভাবিত করেছে এবং জীবনযাত্রার ব্যয় বাড়িয়েছে।
এডিবির সতর্ক দৃষ্টিভঙ্গি সত্ত্বেও আশা করা হচ্ছে, ২০২৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে মূল্যস্ফীতি কমে আসতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, ২০২৫ সালের মার্চ-এপ্রিলের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৬-৭ শতাংশে নেমে আসবে।
আরও পড়ুন: জাতীয় অভিযোজন পরিকল্পনাসহ জলবায়ু কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহায়তা করবে এডিবি: উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে আবারও মূল নীতি হার বাড়ালো বাংলাদেশ ব্যাংক
মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে মূল নীতি হার (রেপো রেট) ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) এ সংক্রান্ত একটি পরিপত্র জারি করেছে কেন্দ্রীয় কার্যালয়। এটি ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হবে।
আরও পড়ুন: 'গ্লোবাল ইয়ুথ ফাইন্যান্সিয়াল ইনক্লুশন অ্যাওয়ার্ড-২০২৪' পেল বাংলাদেশ ব্যাংক
কেন্দ্রীয় ব্যাংক একই সময়ে স্ট্যান্ডিং ল্যান্ডিং ফ্যাসিলিটি (এসএলএফ) এবং স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটি (এসডিএফ) যথাক্রমে ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ১১ শতাংশ এবং ৮ শতাংশ করেছে।
পলিসি রেট বাড়লে ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়া ব্যয়বহুল হয়ে উঠবে। জনগণকে ব্যয় সংকোচন ও চাহিদা কমাতে বাধ্য করবে। এর ফলে পরবর্তীতে মুদ্রাস্ফীতি হ্রাস পাবে।
গত ২৫ অগস্ট পলিসি রেট ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে ৯ শতাংশ করে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
মাস তিনেক আগে গত ৮ মে শেষবার পলিসি রেট ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে সাড়ে ৮ শতাংশ করেছিল বিগত সরকার।
সে সময় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) পরামর্শের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মূল্যস্ফীতি কমার কোনো লক্ষণ না থাকায় সুদের হার বাড়ানো হয়, যা গত বছরের মার্চ থেকে ৯ শতাংশের বেশি ছিল।
আরও পড়ুন: বিলাসবহুল পণ্য আমদানিতে শতভাগ নগদ মার্জিন নির্ধারণ করল বাংলাদেশ ব্যাংক
১২ মাস পর ২০২৩-২৪ অর্থবছরে গড় মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৭৩ শতাংশে। গত জুলাইয়ে ভোক্তা মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১১ দশমিক ৬৬ শতাংশ, যা ২০১০-১১ অর্থবছরের পর সর্বোচ্চ। ফলে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা আরও খারাপ হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর ২০২৫ সালের মার্চ বা এপ্রিলের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৬-৭ শতাংশের মধ্যে রাখার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন।
আরও পড়ুন: নগদ অর্থ উত্তোলনের সীমা তুলে নিল বাংলাদেশ ব্যাংক
বেতন-ভাতার দাবিতে গাজীপুরে ৩ কারখানার শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ
বেতন ভাতাসহ বিভিন্ন দাবিতে এক ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করেছেন গাজীপুরের তিনটি কারখানার শ্রমকিরা।
এ সময় ঢাকা-ময়মনসিংহ ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়। খবর পেয়ে যৌথবাহিনী সদস্যরা শ্রমিকদের সড়ক থেকে সরিয়ে দিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করেন।
সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকালে গাজীপুরের সদর উপজেলার বাঘের বাজার এলাকায় গোল্ডেন রিফিট গার্মেন্টস লিমিটেড গার্মেন্টস কারখানার শ্রমিকরা কাজে যোগ না দিয়ে হাজিরা বোনাস বৃদ্ধির দাবিসহ
১২ দফা দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেন। পরে কারখানা কর্তৃপক্ষ তাদের হাজিরা বোনাস, টিফিন বিল, নাইট বিলসহ ৮টি দাবি মেনে নেয়।
গাজীপুর ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের বাঘের বাজার জোনের পরিদর্শক সুমন মিয়া জানান, শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধ করলে যানজটের সৃষ্টি হয়। কারখানা কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে আবারও শ্রমিক বিক্ষোভ, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ
এছাড়া কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাকে সকালে কোকোলা ফুড প্রোডাক্টস নামে একটি খাদ্য উৎপাদন কারখানার শ্রমিকরা কারখানার সামনে অবস্থান নেন। কারখানার শ্রমিকদের হাজিরা বোনাস, বাৎসরিক ছুটিসহ ১২ দফা দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কারখানা কর্তৃপক্ষ গতকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য এই কারখানাটি বন্ধ ঘোষণা করে।
এরপর আজ সকালে শ্রমিকরা কারখানার সামনে অবস্থান করে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক কিছু সময় অবরোধ করেন। একপর্যায়ে কিছু শ্রমিক বন্ধ কারখানার ভেতরে জোর করে প্রবেশ করে ভাঙচুর চালান।
খবর পেয়ে যৌথবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের ধাওয়া করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনেন। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগে তিনজনকে আটক করেন তারা।
অন্যদিকে, গাজীপুর মহানগরের টঙ্গীতে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন। সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় টঙ্গীর খাঁ পাড়া এলাকায় সিজন্স ড্রেসেস লিমিটেডের শ্রমিকেরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন।
জানা যায়, গাজীপুর মহানগরীর টঙ্গীর পশ্চিম থানাধীন খাঁ পাড়া এলাকায় অবস্থিত সিজন্স ড্রেসেস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা সকাল ৭টায় কারখানার সামনে গিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে শ্রমিকরা সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জুলাই ও আগস্ট মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন।
এ বিষয়ে গাজীপুর শিল্প পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোশাররফ হোসেন বলেন, শ্রমিকদের সঙ্গে মালিকপক্ষের যোগাযোগের চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন: গাজীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেছে শ্রমিকরা
দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতের ‘বিশেষ অনুরোধে’ ইলিশ রপ্তানির অনুমতি: মৎস্য উপদেষ্টা
দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতের ‘বিশেষ অনুরোধে’ বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে এক সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
উপদেষ্টা বলেন, 'বাণিজ্য মন্ত্রণালয় স্বাধীনভাবে এটা (রপ্তানির অনুমোদন) দিয়েছে। তারা একটা অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে দিয়েছে। ভারতের দুর্গাপূজা উপলক্ষে বিশেষ অনুরোধ ছিল। সে অনুযায়ী তারা করেছে। তাদের তো আমি জোর করতে পারি না।'
আরও পড়ুন: সীমান্ত দিয়ে ভারতে পাচারের সময় ৮৮৫ কেজি ইলিশ জব্দ
তিনি জানান, গতকাল যেটা করেছে সেটা বাণিজ্য মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিয়েছে। অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে এটি বাণিজ্য মন্ত্রণালয় দিয়েছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কোনো সম্পর্ক নেই। আমাদের এখনো সেই কমিটমেন্টটা আগের মতোই আছে, বাংলাদেশের মানুষের ইলিশ প্রাপ্যতা ওযন নিশ্চিত করতে পারি আমরা।
দাম বাড়লে রপ্তানি নিরুৎসাহিত করবেন কি না- সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা বলেন, যদি দাম বাড়ে সে বাড়ার বিষয়ে অবশ্যই আমাদের ব্যবস্থা নিতে হবে।
আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রপ্তানি বন্ধের দায়িত্ব তো আমার না। আমি আহ্বান জানাতে পারি কিন্তু বন্ধ করতে পারি না।
রপ্তানি বা আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আছে বলেও এসময় মন্তব্য করেন তিনি।
আরও পড়ুন: ভারতে ৩০০০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন
বাংলাদেশে বিদ্যুৎ খাত ও সামাজিক ব্যবসায় বিনিয়োগ বাড়াতে আগ্রহী সামিট গ্রুপ: আজিজ খান
সিঙ্গাপুরভিত্তিক বিদ্যুৎ কোম্পানি সামিট ইন্টারন্যাশনাল পাওয়ার লিমিটেড বাংলাদেশে, বিশেষ করে বিদ্যুৎ খাতে এবং সামাজিক ব্যবসায় তাদের বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানোর অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছে।
প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসকে লেখা এক চিঠিতে সম্প্রতি দেশের জ্বালানি খাতে বিদ্যমান অবদান এবং ভবিষ্যৎ বিনিয়োগের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে প্রতিষ্ঠানটি।
সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আজিজ খান শুক্রবার টেলিফোনে ইউএনবিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, 'দারিদ্র্য ও বেকারত্ব দূরীকরণে আরও বিনিয়োগ করতে এবং অবদান রাখতে আমরা একটি অনুকূল ব্যবসায়িক পরিবেশ চাই।’
বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী সামিট গ্রুপ দেশের প্রায় ২০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন করে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ পাওয়ায় অধ্যাপক ইউনূসকে অভিনন্দন জানান আজিজ খান। গ্রামীণ ব্যাংকের মাধ্যমে ক্ষুদ্রঋণ প্রদানে ইউনূসের দর্শনের প্রশংসা করে তিনি বলেন, গ্রামীণ ব্যাংক অত্যন্ত দরিদ্রদের আর্থিক খাতে অন্তর্ভুক্তিকরণের পথ সুগম করেছে এবং 'থ্রি জিরো' লক্ষ্যের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ সামাজিক ব্যবসার প্রসার ঘটিয়েছে।
খান বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার দর্শনে অনুপ্রাণিত হয়ে আমরা বাংলাদেশে ও সামাজিক ব্যবসায় বিনিয়োগ বাড়াতে আগ্রহী। আমাদের লক্ষ্য আরও বেশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং দারিদ্র্য বিমোচনে সহায়তা করা।’
বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সামিট পাওয়ার ইন্টারন্যাশনালের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
আরও পড়ুন: সামিট গ্রুপ আরেকটি এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনের অনুমোদন পেল
‘নেট জিরোর দিকে দেশের যাত্রাকে সমর্থন করতে, আমরা আগামী পাঁচ বছরে প্রায় ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আকৃষ্ট করতে আন্তর্জাতিক অংশীদার ও ঋণদাতাদের সঙ্গে সহযোগিতা করার পরিকল্পনা করছি। জাপানি, আমেরিকান, ড্যানিশ ও ভারতীয় সহযোগীদের অংশীদারিত্বে ফ্লোটিং স্টোরেজ রিগ্যাসিফিকেশন ইউনিট (এফএসআরইউ), অনশোর এলএনজি টার্মিনাল এবং বায়ু ও সৌর শক্তির মতো পুনর্নবায়নযোগ্য শক্তি উদ্যোগের মতো প্রকল্পগুলোতে আমাদের নজর থাকবে।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম বিদেশি বিনিয়োগকারী হিসাবে, অতি প্রয়োজনীয় বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে বাতিঘর হিসেবে কাজ করে সামিট।
ইউএনবির হাতে আসা ওই চিঠিতে শীর্ষ সম্মেলনের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের কথাও তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) থেকে বিলম্বিত অর্থ প্রদান, বাংলাদেশি টাকার তীব্র অবমূল্যায়ন, উচ্চ সুদের হার, ব্যাংকিং খাতে তারল্য সংকট এবং কিছু কোম্পানির স্থাপনায় সাম্প্রতিক হামলা।
সামিটের চিঠিতে বিদ্যুৎ প্রকল্পে ক্যাপাসিটি পেমেন্ট নিয়ে ভুল ধারণার বিষয়টিও তুলে ধরা হয়েছে এবং বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যমে ভুল প্রতিবেদন বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে বলে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে।
এসব ভুল বোঝাবুঝি মোকাবিলা করে সত্য উদঘাটনে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সিআইডি, বাংলাদেশ ব্যাংক, বিডা, বিডিএ, আরইবি, পেট্রোবাংলাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংস্থাটি।
আরও পড়ুন: মহেশখালীতে নতুন এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের অনুমোদন পেল সামিট গ্রুপ
খোলা বাজারে কমেছে ডলারের দাম
চাহিদার চেয়ে সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় বাংলাদেশের খোলা বাজারে কমেছে মার্কিন ডলারের দাম।
বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনকারী ব্যবসায়ী ও মানি চেঞ্জারদের মতে, বর্তমানে খোলা বাজারে ডলার বিক্রি হচ্ছে ১২১ থেকে ১২২ টাকায়, যা তিন সপ্তাহ আগেও ছিল ১২৫ টাকা।
গত ৫ আগস্ট দেশটিতে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর বিদেশ ভ্রমণের চাহিদা কমে যাওয়া এবং খোলাবাজারে ডলারের প্রবাহ বেড়ে যাওয়ায় ডলারের বিনিময় হার নিম্নমুখী হয়েছে।
সাধারণত ভ্রমণকারীরা খোলা বাজার থেকে বৈদেশিক মুদ্রা কিনে থাকে। তাদের চাহিদা কমে যাওয়ায় ডলারের দামও কমতির দিকে।