এশিয়া
পাকিস্তানে হামলায় শতাধিক ‘সন্ত্রাসবাদী’ নিহতের দাবি ভারতের
পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মির ও দেশটির অন্যান্য অংশে সাম্প্রতিক সেনা অভিযানে শীর্ষস্থানীয় নেতাসহ শতাধিক ‘সন্ত্রাসবাদী’ নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে ভারত।
রবিবার (১১ মে) দিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য দিয়েছেন ভারতের সামরিক কার্যক্রমের মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজীব ঘাই।
তিনি জানান, পাকিস্তানের ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে ভারতীয় বাহিনী। হামলার লক্ষ্যবস্তুর মধ্যে লস্কর-ই-তৈয়বার ঘাঁটিও ছিল বলে উল্লেখ করেন তিনি।
লস্কর-ই-তৈয়বা নামক সংগঠনটি ভারত সরকার জঙ্গি সংগঠন হিসেবে গণ্য করে এবং দেশটির অভ্যন্তরে ও কাশ্মিরে একাধিক হামলার জন্য এদেরকেই দায়ী মনে করে।
রাজিব ঘাই আরও বলেন, ‘আমরা তাদের (লস্কর-ই-তৈয়বার সদস্য) পুরোপুরি অপ্রস্তুত অবস্থায় ধরেছিলাম।’
সাম্প্রতিক সময়ে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চলমান এই উত্তেজনা গত কয়েক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। গত ২২ এপ্রিল ভারত অধিকৃত কাশ্মীরে হামলা চালিয়ে ২৬ পর্যটককে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করেই মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়ায় চিরবৈরি এই দুই প্রতিবেশি দেশ।
এই হত্যাকাণ্ডের জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে ভারত। তবে ইসলামাবাদ তা অস্বীকার করেছে। পরবর্তীতে দুপক্ষই একে অপরের কূটনীতিক ও নাগরিকদের নিজেদের দেশ থেকে বহিষ্কার করেছে। পাশাপাশি সীমান্ত ও আকাশপথ বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দেয়।
এরপরই গত ৬ মে দিবাগত রাতে পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত। এতে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যেতে শুরু করলে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় শনিবার (১০ মে) যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ভারত-পাকিস্তান।
যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী, উভয় দেশ স্থল, জল এবং আকাশপথে সব ধরনের সামরিক তৎপরতা বন্ধ করতে রাজি হয়।
আরও পড়ুন: পাল্টাপাল্টি যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ ভারত-পাকিস্তানের
ভিন্ন ভিন্ন হতাহতের সংখ্যা
ঘাই জানান, গত কয়েকদিনে এলওসি বা নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর লড়াইয়ে অন্তত ৩৫-৪০ জন পাকিস্তানি সেনা নিহত হয়েছেন, পাশাপাশি ভারতের পাঁচজন সেনাও প্রাণ হারিয়েছেন।
অন্যদিকে, পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার দাবি করেন, তাদের পাল্টা হামলায় ৪০-৫০ জন ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছেন।
ভারতের এয়ার মার্শাল এ.কে. ভারতী জানান, পাকিস্তান থেকে আসা একাধিক ড্রোন অনুপ্রবেশ ব্যর্থ করা হয়েছে। পাশাপাশি পাকিস্তানি বিমান ঘাঁটিতে আরও বিমান হামলা চালানো হয়েছে।
তবে পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার পাকিস্তানের দাবির বিষয়টি তিনি নিশ্চিত করেননি। তাছাড়া, ভারতীয় বাহিনীও কয়েকটি পাকিস্তানি বিমান ভূপাতিত করেছে বলে জানান তিনি, যদিও তার বক্তব্যের সপক্ষে কোনো প্রমাণ দেখাননি।
বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) জানিয়েছে , তারা কোন পক্ষের দাবিই স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেনি।
এদিকে, যুদ্ধবিরতির পরও কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আবার সহিংসতা শুরুর খবর পাওয়া গেছে। কাশ্মির ও ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে নতুন করে গোলাগুলি ও ড্রোন দেখা গেছে বলে এপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। গতকাল সংঘর্ষ কিছুটা কমে আসলেও স্থানীয়দের মনে আতঙ্ক রয়ে গেছে। ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের পুঞ্চ জেলার এক শিক্ষার্থী সোসান জেহরা বলেন, ‘পুরো এলাকা বিশৃঙ্খলার মধ্যে ছিল। শেল পড়তেই মানুষ দৌড়ে পালাচ্ছিল।’
পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণাধীন নীলম উপত্যকার বাসিন্দা মোহাম্মদ জাহিদ হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘যুদ্ধবিরতির পর আমরা আশাবাদী ছিলাম, কিন্তু এখন আবার অনিশ্চয়তা শুরু হয়েছে।’
কূটনৈতিক ও আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া
শনিবার নিজের সামাজিকমাধ্যম ট্রুথে দেওয়া এক পোস্টে ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। পরে উভয় দেশই বিষয়টি নিশ্চিত করে।
তবে পাকিস্তান এই মধ্যস্থতার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানালেও ভারত এ বিষয়ে নীরব থাকে।
এ ছাড়া, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস যুদ্ধবিরতিকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘এটি দীর্ঘমেয়াদী শান্তি ও মূল সমস্যাগুলোর সমাধানের পথ খুলে দিতে পারে।’
এদিকে, পরে পরিস্থিতি মূল্যায়নের জন্য রবিবার উচ্চপর্যায়ের একটি বৈঠক করেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অন্যদিকে, উভয় দেশের শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তারা আজ (সোমবার) সরাসরি বৈঠকে বসবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: যুদ্ধবিরতিতে সম্মত ভারত-পাকিস্তান: ট্রাম্প
গত কয়েক দিন ধরে নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর গোলাগুলিতে লিপ্ত ভারত-পাকিস্তান। হামলার জন্য একে অপরকে দোষারোপ করে আসছে। আবার দুই দেশেরই দাবি, প্রতিপক্ষের হামলা প্রতিরোধেই গুলি চালিয়েছে তারা। এমনকি যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন নিয়েও পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করে চলেছে চিরবৈরি এই দুই প্রতিবেশি দেশ।
কাশ্মির নিয়ে এই ভারত-পাকিস্তানের এই বিরোধ বহু পুরনো। উভয় দেশই পুরো কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণ চায়। এরই মধ্যে অঞ্চলটি নিয়ে দুবার যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে দেশ দুটির মধ্যে। এখনও এই অঞ্চল নিয়ে তীব্র সংঘাত চলছে।
৯ ঘণ্টা আগে
পাল্টাপাল্টি যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ ভারত-পাকিস্তানের
পাল্টাপাল্টি যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে দক্ষিণ এশিয়ার পরমাণু শক্তিধর দুই প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তান। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় দীর্ঘ আলোচনার পর শনিবার (১০ মে) যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকর হয়েছে।
তবে রবিবার (১১ মে) ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের শ্রীনগর ও জম্মুতে বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণের খবর পাওয়া গেছে। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রির দাবি, ‘পাকিস্তান বারবার যুদ্ধবিরতির চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। তারা হামলা চালিয়েছে, পরে ভারতীয় সেনারা তার জবাব দিয়েছে।’
নয়াদিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘চুক্তি লঙ্ঘনের এই কার্যকলাপগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া ও পরিস্থিতির মোকাবেলায় যথাযথ গুরুত্ব ও দায়িত্বশীলতা প্রদর্শন করার জন্য আমরা পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানাই।’
অন্যদিকে, পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে ভারতের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ করা হয়েছে। বিবৃতিতে জানানো হয়, ‘ভারতের সঙ্গে স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতি চুক্তি বাস্তবায়নে তারা ‘পূর্ণ নিষ্ঠার সঙ্গে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’।
আরও পড়ুন: পাল্টা আঘাত না এলে বৈরিতা বাড়াতে চায় না ভারত-পাকিস্তান
সাম্প্রতিক সময়ে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চলমান এই উত্তেজনা গত কয়েক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ। গত ২২ এপ্রিল ভারত অধিকৃত কাশ্মীরে হামলা চালিয়ে ২৬ পর্যটককে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করেই মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়ায় চিরবৈরি এই দুই প্রতিবেশি দেশ।
এই হত্যাকাণ্ডের জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে ভারত। তবে ইসলামাবাদ তা অস্বীকার করেছে। পরবর্তীতে দুপক্ষই একে অপরের কূটনীতিক ও নাগরিকদের নিজেদের দেশ থেকে বহিষ্কার করেছে। পাশাপাশি সীমান্ত ও আকাশপথ বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দেয়।
এরপরই গত ৬ মে দিবাগত রাতে পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত। এতে পাকিস্তানে অন্তত ৩৬ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে জানায় দেশটির সরকার। আবার পাকিস্তানও পাল্টা অভিযান ঘোষণা করে। পাকিস্তানের হামলায় ২১ ভারতীয় নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে ভারত সরকার।
এতে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যেতে শুরু করলে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয় ভারত-পাকিস্তান।
শনিবার নিজের সামাজিকমাধ্যম ট্রুথে দেওয়া এক পোস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় রাতে দীর্ঘ আলোচনার পর তারা যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছেন। আমি আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি যে, পূর্ণাঙ্গ ও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে ভারত-পাকিস্তান।’
পরে যুদ্ধবিরতির বিষয়টি নিশ্চিত করেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার। প্রায় তিন ডজন দেশের কূটনৈতিক সহায়তায় এই চুক্তি সম্ভব হয়েছে বলে জানান তিনি।
পরে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রী এস. জয়শঙ্করও চুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, উভয়পক্ষই শত্রুতা বন্ধ করতে সম্মত হয়েছে। পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের দৃঢ় অবস্থানের কথাও পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফও একে বৃহত্তর স্থিতিশীলতার পথে একটি পদক্ষেপ হিসেবে বর্ণনা করেন। এর আগে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও জানান, নিরপেক্ষ জায়গা থেকে এক গুচ্ছ বিস্তৃত বিষয়ে আলোচনা শুরু করতে রাজি হয়েছে দুই দেশ।
আরও পড়ুন: যুদ্ধবিরতিতে সম্মত ভারত-পাকিস্তান: ট্রাম্প
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও পাকিস্তানের শাহবাজ শরিফসহ দুই দেশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে গেল ৪৮ ঘণ্টা বৈঠক করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স ও মার্কো রুবিও।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস এবং যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার যুদ্ধবিরতিকে স্বাগত জানিয়ে আশা প্রকাশ করেন যে, এটি দীর্ঘমেয়াদে বজায় থাকবে।
সূত্র: বিবিসি
১ দিন আগে
পাল্টা আঘাত না এলে বৈরিতা বাড়াতে চায় না ভারত-পাকিস্তান
প্রতিবেশী দেশ থেকে প্রতিশোধ না এলে বৈরিতা বাড়াবে না বলে জানিয়েছে ভারত ও পাকিস্তান। এর আগে দুই দেশই পরস্পরের ভূখণ্ডে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে বলে দাবি করেছে। গত মাসে কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ পর্যটক নিহত হওয়ার পর এটি ছিল দুপক্ষের মধ্যে সবচেয়ে বড় পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দার বলেন, ‘ভারত যদি আর কোনো হামলা না চালায়, তাহলে উত্তেজনা প্রশমনের কথা ভাববে তার দেশ। তবে ভারত যদি কোনো ধরনের হামলা চালায়, তাহলে আমরা তার জবাব দেব।’
পাকিস্তানের জিও নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমরা জবাব দিয়েছি। কারণ আমাদের ধৈর্যের সীমা শেষ হয়ে গেছে। যদি তারা এখানে থামে, তাহলে আমরাও থেমে যাওয়ার কথা ভাবব।’
দিল্লিতে এক সাক্ষাৎকারে ভারতীয় উইং কমান্ডার ভূমিকা সিং বলেন, ‘তার দেশ উত্তেজনা প্রশমনে অঙ্গীকারাবদ্ধ, যদি পাকিস্তানের তরফ থেকে কোনো ধরনের প্রতিশোধ না আসে।’
আরও পড়ুন: পাকিস্তানের তিন বিমানঘাঁটিতে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার অভিযোগ
‘তবে সীমান্ত এলাকায় পাকিস্তানের স্থলবাহিনীকে অগ্রসর হতে দেখা গেছে। একটি হামলা নতুন করে উত্তেজনা বাড়ানোর আভাস দিচ্ছে,’ বলেন তিনি।
ভারত-পাকিস্তানকে উত্তেজনা কমানোর আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ। শনিবার ভারতীয় কর্মকর্তা ও পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও।
উত্তেজনা প্রশমনের উপায় খুঁজে বের করতে দুপক্ষকে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। ভবিষ্যতে সংঘাত এড়াতে গঠনমূলক আলোচনা শুরু করতে যুক্তরাষ্ট্র সহায়তা করবে বলেও তিনি প্রস্তাব দিয়েছেন।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেছেন, ‘ভারতকে আমরা উপযুক্ত জবাব দিয়েছি। আমাদের নিরপরাধ নাগরিকদের রক্তের প্রতিশোধ নিয়েছি।’ যদিও বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে ভারত।
ভারতের উসকানির জবাবে তার দেশ ধৈর্যের পরিচয় দিয়েছে বলেও দাবি করেনে শাহবাজ শরিফ। বলেন, ‘রাতে বিমান ঘাঁটি ও অন্যান্য স্থানে ভারত ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর পরে তার জবাব দিয়েছে পাকিস্তান।’
তবে ভারতের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যেই পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেন, ‘বর্তমানে পরমাণু অস্ত্র ব্যবহারের শঙ্কা নেই। কিন্তু যদি তেমন কোনো পরিস্থিতি তৈরি হয়, তাহলে এখন যারা চেয়ে চেয়ে দেখছেন, তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।’
আরও পড়ুন: ভারত-পাকিস্তান সংঘাত: ৩ রুটে ফ্লাইটের সময়সূচি পরিবর্তন বিমানের
জিও নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বকে বলতে চাই, এটি কেবল এই অঞ্চলের মধ্যেই আটকে থাকবে না; এটি হবে ব্যাপক ধ্বংসাত্মক। ভারত যে পরিস্থিতি তৈরি করছে, তাতে আমাদের বিকল্পগুলো কমছে।’
এ সময় পরমাণু অস্ত্রের দেখভাল করা ন্যাশনাল কমান্ড অথরিটির কোনো বৈঠক ডাকা হয়নি বলেও দাবি করেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
২ দিন আগে
পাকিস্তানের তিন বিমানঘাঁটিতে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার অভিযোগ
পাকিস্তানের তিনটি বিমানঘাঁটিতে ভারত ক্ষেপণাস্ত্র চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ। যদিও বেশিরভাগ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিহত করা হয়েছে বলে দাবি করেছে দেশটি। এছাড়া, জবাবে তারাও পাল্টা হামলা শুরু করেছে বলে জানানো হয়েছে।
স্থানীয় সময় শনিবার (১০ মে) ভারত ওই হামলা চালিয়েছে বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ।
বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) খবরে বলা হয়েছে, ভারতের হামলার জবাবে দেশটির বিভিন্ন লক্ষ্যবস্তুতে ফাতেহ নামের মাঝারি পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়ার কথা জানিয়েছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী।
আহমদ শরীফ জানান, পাকিস্তানের বিমানবাহিনী নিরাপদ আছে। তাছাড়া কিছু ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র পাঞ্জাবসহ তাদেরই দেশের অভ্যন্তরে আছড়ে পড়েছে। ভারতের এই হামলাকে তিনি ‘চরম উসকানিমূলক কাজ’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।
এদিকে, পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ও সেনাবাহিনীর জনসংযোগ বিভাগের (আইএসপিআর) ডন এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ভারতের বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণ শুরু হয়েছে। পাল্টা এই অভিযানের নাম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন বুনিয়ান-উন মারসুস’।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ দেশটির পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির তত্ত্বাবধায়নকারী জাতীয় কমান্ড অথরিটির জরুরি বৈঠক ডেকেছেন বলে জানিয়েছে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সম্প্রচারমাধ্যম।
আরও পড়ুন: সীমান্তে আবারও ভারত-পাকিস্তানের গোলাগুলি, নিহত ৫
এর আগে আহমদ শরীফ জানান, শনিবার ভারতের ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রগুলো রাজধানী ইসলামাবাদ-সংলগ্ন একটি বিমানঘাঁটি, চকওয়ালের মুরিদ ঘাঁটি ও পূর্ব পাঞ্জাবের রফিকি ঘাঁটিতে আঘাত হেনেছে। কিছু ক্ষেপণাস্ত্র আফগানিস্তানেও পড়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘আদমপুর থেকে ছয়টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে ভারত। একটি আদমপুরেই পড়েছে, বাকিগুলো ভারতের পাঞ্জাবের অমৃতসরে আছড়ে পড়ে।’
পাকিস্তানের পাল্টা হামলার পর ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের শ্রীনগর, জম্মু ও উধমপুরে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। জেট বিমানের শব্দ ও বিমানবন্দর-সংলগ্ন এলাকায় বিকট বিস্ফোরণের আওয়াজে আতঙ্কিত হওয়ার কথা জানান তারা।
ভারতের সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা শেশ পাল বৈদ বলেন, ‘সাম্প্রতিক বিস্ফোরণগুলো আগের ড্রোন হামলা থেকে ভিন্ন ছিল। এগুলো সামরিক স্থাপনায় আঘাত হেনেছে বলে মনে হচ্ছে।’
তবে ভারতের প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই হামলার ব্যাপারে এখনও আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য দেয়নি। অন্যদিকে, পাকিস্তান থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী, ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পরও দেশটির প্রধান শহরগুলোতে জীবনযাত্রা মোটামুটি স্বাভাবিক রয়েছে। অবশ্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে সব বিমানবন্দর বন্ধ রেখেছে দেশটির সরকার।
এদিকে, পাল্টা হামলা চালানোয় সেনাবাহিনীকে সমর্থন জানিয়েছে পাকিস্তানের সাধারণ মানুষ। লাহোর, মুলতান, পেশোয়ার ও করাচিতে জনতাকে সেনাবাহিনীর পক্ষে স্লোগান দিতে দেখা গেছে।
লাহোরের বাসিন্দা মোহাম্মদ আশরাফ বলেন, ‘আমরা খুশি, কারণ আমাদের বাহিনী অবশেষে জবাব দিয়েছে।’ মুলতানের আরেক বাসিন্দা মোহাম্মদ রিজওয়ান সেনাবাহিনীকে ‘দেশের রক্ষাকর্তা’ হিসেবে আখ্যা দেন।
আরও পড়ুন: এবার ভারতের ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি পাকিস্তানের
অন্যদিকে, পাকিস্তান সীমান্ত ও কাশ্মীর-সংলগ্ন এলাকায় ২৬টি স্থানে ড্রোন দেখা গেছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। সেগুলোর গতিবিধি নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে বলেও জানিয়েছে তারা।
গত মাসে ভারত অধিকৃত কাশ্মীরে হামলা চালিয়ে ২৬ পর্যটককে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। এই হত্যাকাণ্ডের জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে ভারত। তবে ইসলামাবাদ তা অস্বীকার করেছে। এ ঘটনার পর দুদেশের সম্পর্কে নতুন করে অবনতি হয়েছে। পরবর্তীতে দুপক্ষই একে অপরের কূটনীতিক ও নাগরিকদের নিজেদের দেশ থেকে বহিষ্কার করেছে। পাশাপাশি সীমান্ত ও আকাশপথ বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
এরপরই গত ৬ মে দিবাগত রাতে পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত। এতে পাকিস্তানে অন্তত ৩১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে জানায় দেশটির সরকার। এর মধ্যে ২৬ জন ক্ষেপণাস্ত্রে, আর পাঁচজন গোলার আঘাতে নিহত হন বলে জানা গেছে। জবাবে পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করার দাবি করে পাকিস্তান।
আবার জম্মুসহ একাধিক শহরে পাকিস্তানি ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হুমকি প্রতিহত করার দাবি করে ভারত। যদিও এসব দাবি অস্বীকার করেছে পাকিস্তান। তাছাড়া লাহোরের কাছে পাকিস্তানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা লক্ষ্যবস্তু করার দাবিও করেছে ভারত, যদিও এসব তথ্য যাচাই হয়নি।
চলমান এই পরিস্থিতিতে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার স্বার্থে উভয় পক্ষকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়েছে জি৭ জোটভুক্ত দেশগুলো। এ ছাড়াও উত্তেজনা কমাতে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে অবিলম্বে সংলাপ শুরু হওয়া জরুরি বলে বিবৃতি দিয়েছে কানাডা।
এ ছাড়াও ভারত-পাকিস্তানের মধ্যেকার উত্তেজনা নিরসনের জন্য উভয় দেশের সঙ্গে ফোনালাপ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। বর্তমান উত্তেজনা কমাতে ও ভবিষ্যৎ সংঘাত এড়াতে উভয় পক্ষকে গঠনমূলক সংলাপের প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।
হোয়াইট হাউস থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস. জয়শঙ্করের সঙ্গে রুবিওর ফোনালাপে এ প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এ সময় ভারত-পাকিস্তানের চলমান সংঘাত নিয়ে তিনি আমেরিকার উদ্বেগের কথাও জানিয়েছেন।
২ দিন আগে
সীমান্তে আবারও ভারত-পাকিস্তানের গোলাগুলি, নিহত ৫
পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। বৃহস্পতিবার (৮ মে) দিবাগত রাতে দুদেশের সেনাদের মধ্যে তীব্র গোলাগুলি হয়েছে। এতে অন্তত ৫ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
পাকিস্তান নিয়ন্ত্রীত কাশ্মীরের স্থানীয় পুলিশ কর্মকর্তা আদিল আহমেদ বলেছেন, ‘কাশ্মীরকে বিভক্তকারী এলওসি লাইনের (লাইন অব কন্ট্রোল) নিকটবর্তী গ্রামগুলোতে ভারতের হামলায় কমপক্ষে ১২ জন আহত ও অন্তত ৪ জন বেসমাররিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।’
সেখানকার চাকোতি সেক্টরের নিকটবর্তী এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ শাকিল বলেন, ‘আমরা লাইন অব কন্টোলে গোলাগুলি শুনতে অভ্যস্ত। কিন্তু গতকাল রাতের পরিস্থিতি অন্য দিনের মতো ছিল না।’
জনজীবনে দুর্ভোগ
চলমান উত্তেজনার কারণে দুদেশের মানুষের স্বাভাবিক জনজীবন ব্যহত হচ্ছে। অ্যাসোসিয়েট প্রেসের (এপি) এক ফটোগ্রাফারেরর তথ্যমতে, ভারতের দক্ষিণ ধর্মশালায় একটি ক্রিকেট ম্যাচ চলাকালে জনসাধারণের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। হামলার আশঙ্কায় ম্যাচটি বাতিল করে স্টেডিয়ামে উপস্থিত প্রায় ১০ হাজার দর্শককে তাৎক্ষণিকভাবে সরিয়ে নেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: এবার ভারতের ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি পাকিস্তানের
দুই দেশের এই উত্তেজনার কারণে সংঘাত বাড়ার আশঙ্কায় ভারতের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের রাজ্য- পাঞ্জাব, রাজস্থান ও ভারত নিয়ন্ত্রীত কাশ্মীরের স্কুলগুলোতে ইতোমধ্যেই ২ দিনের ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
বিমান চলাচলে বিঘ্ন
উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে বিমান চলাচলেও প্রভাব পড়েছে। ভারতের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের রাজ্যগুলোর ২৪টি বিমানবন্ধরের কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে ভারতের বেসামরিক বিমান মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে তথ্য নিশ্চিত করে।
একই ধরনের সমস্যায় পড়েছে পাকিস্তানের বিমান খাতও। দেশটির প্রধান চারটি বিমানবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় অনেক ফ্লাইট বিলম্ব বা বাতিল হয়েছে। এতে আটকা পড়েছেন শত শত যাত্রী।
পাকিস্তানে বেসামরিক বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা পাকিস্তান সিভিল এভিয়েশন অথরিটি (পিএএ) বৃহস্পতিবার সকালে করাচি, লাহোর, ইসলামাবাদ ও শিয়ালকোট বিমানবন্দরের ফ্লাইট কার্যক্রম সাময়িক ভাবে স্থগিত করে। পরে এই স্থগিতাদেশ সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বাড়ানো হয়। যদিও নির্ধারিত সময়ের আগেই দেশটির প্রধান চার বিমানবন্দরের ফ্লাইট কার্যক্রম চালু হয়।
পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স (পিআইএ) জানিয়েছে, বর্তমানে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নিরাপত্তাজনিত কারণে দেশের অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচলে বিঘ্ন ঘটেছে।
এ বিষয়ে পিআইএর এক মুখপাত্র বলেন, ‘বিমান ও যাত্রীদের নিরাপত্তার কারণে আমরা কিছু রুটে বিমান চলাচল সাময়িকভাবে সীমিত করেছি। পাশাপাশি নির্ধারিত কিছু ফ্লাইট বাতিলও করা হয়েছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান
এদিকে, পরমাণু শক্তিধর দুই প্রতিবেশির মধ্যকার যুদ্ধ পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বলেছেন, ‘ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার সম্ভাব্য যুদ্ধ আমাদের চিন্তার বিষয় নয়।’
আরও পড়ুন: ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলায় শিশুসহ ৩১ পাকিস্তানি নিহত
ফক্স নিউজকে দেওয়া ওই সাক্ষাৎকারে ভ্যান্স আরও বলেন, ‘আমরা (আমেরিকা) ভারত-পকিস্তানকে উত্তেজনা কমাতে উৎসাহিত করতে পারি। কিন্তু এমন কোনো যুদ্ধে আমরা জড়াতে যাচ্ছি না, যা মূলত আমাদের কোনো ব্যাপার নয় এবং যেটি আমেরিকার নিয়ন্ত্রণের বাইরে।’
৩ দিন আগে
এবার ভারতের ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি পাকিস্তানের
পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের লাহোরে একটি ভারতীয় ড্রোন ভূপাতিত করার দাবি করেছে পাকিস্তানের বিমানবাহিনী। এছাড়াও দেশটিতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ক্ষেপনাস্ত্র হামলার পর থেকে পাঁচটি যুদ্ধবিমানও ভূপাতিত করার দাবি করেছে পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) ভোরে ভারত সীমান্ত থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার (১৬ মাইল) দূরে অবস্থিত লাহোরের ওয়ালটন বিমানবন্দরে ড্রোনটি ভূপাতিত করার কথা জানিয়েছে স্থানীয় পুলিশ।
স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে এপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাঞ্জাবের অন্যান্য শহরে আরও দুটি ভারতীয় ড্রোন ভূপাতিত করা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পাকিস্তানের বিমানবাহিনী গুলি করে একটি ছোট ভারতীয় ড্রোন নামিয়েছে।
তবে ড্রোনটি সশস্ত্র ছিল কি না, সেটি তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
তবে এই ঘটনার সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে এপি। ভারত থেকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।
আরও পড়ুন: ভারতীয় ড্রোন ভূপাতিত করল পাকিস্তান সেনাবাহিনী
পাঞ্জাবের চকওয়াল জেলার পুলিশ প্রধান গুলাম মুহিউদ্দিন জানান, ওই এলাকার কৃষিজমিতে একটি ড্রোন আছড়ে পড়ে। তবে এতে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
তবে ড্রোনটির ভারতের কিনা এ বিষয়ে কিছু জানায়নি তিনি। গুলাম মুহিউদ্দিন বলেন, কর্তৃপক্ষ একটি ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ জব্দ করেছে এবং ড্রোনটির উৎস ও উদ্দেশ্য নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।
পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলা নিয়ে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই মঙ্গলবার (৬ মে) দিবাগত রাতে পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত।
এ ঘটনাকে ‘যুদ্ধের শামিল’ ও ‘আগ্রাসন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে পাকিস্তান। দেশটির সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ বলেন, ‘পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর ও পাঞ্জাব প্রদেশের পূর্বাঞ্চলে আঘাত হেনেছে ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র।’ তবে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি, ‘ভারতের বিরুদ্ধে হামলার পরিকল্পনা হচ্ছে, এমন অন্তত ৯টি স্থানে আঘাত হানা হয়েছে।’
আহমেদ শরিফ বলেন, ‘ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলায় পাকিস্তানে অন্তত ৩১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। এরমধ্যে ২৬ জন ক্ষেপণাস্ত্রে, আর পাঁচজন গোলার আঘাতে নিহত হন।’
এদিকে, এবার এ হামলার জবাব দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে পাকিস্তান। এ হামলায় নিহতদের প্রতিশোধ নেবে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। তবে কোথায় ও কীভাবে হামলা চালানো হবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য দেননি তিনি।
আরও পড়ুন: ভারত-পাকিস্তান হামলা: পরিস্থিতির অবনতি চায় না বাংলাদেশ
এছাড়া অধিকৃত কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর ভারতীয় সেনাদের ওপর পাল্টা হামলার কথা জানিয়েছে পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ। এই পরিস্থিতিতে কাশ্মীর সীমান্তের কর্মকর্তা ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, রাতভর হাজার হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে রাত কাটিয়েছেন।
এদিকে চলমান উত্তেজনার মধ্যে কাশ্মীর সীমান্ত থেকে হাজার হাজার মানুষকে সরিয়ে নিতে শুরু করেছে ভারত। ইউরি ও পুঞ্চের মতো সীমান্ত শহরের কিছু মানুষ স্বেচ্ছায়ই নিজেদের ঘর ছেড়ে চলে গেছেন বলে জানিয়েছেন ওই এলাকার পুলিশ ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা।
৪ দিন আগে
ভারতকে হামলার জবাব দেওয়ার অঙ্গীকার পাকিস্তানের, বেড়েছে যুদ্ধের শঙ্কা
পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলা নিয়ে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই পাকিস্তানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত। এবার এ হামলার জবাব দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে পাকিস্তান। এতে প্রতিবেশি দেশদুটির মধ্যে পূর্ণমাত্রার যুদ্ধের আশঙ্কা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ হামলার ঘটনাকে ‘যুদ্ধের শামিল’ বলে আখ্যায়িত করেছে পাকিস্তান। এছাড়া ভারতের কয়েকটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করে ভারতকে হামলার পরিণতি নিয়ে সতর্ক করেছে প্রতিবেশি পাকিস্তান।
দেশটির সেনাবাহিনী জানিয়েছে, পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর ও পাঞ্জাব প্রদেশের পূর্বাঞ্চলে আঘাত হেনেছে ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র। ওই হামলার নারী ও শিশুসহ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেন তারা।
অন্যদিকে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি, ‘ভারতের বিরুদ্ধে হামলার পরিকল্পনা হচ্ছে, এমন অন্তত ৯টি স্থানে আঘাত হানা হয়েছে।’ মার্কিন সংবাদসংস্থা এসোসিয়েটেড প্রেসের (এপি) খবরে এমন বলার হয়েছে।
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ বলেন, ‘ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলায় পাকিস্তানে অন্তত ৩১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। এরমধ্যে ২৬ জন ক্ষেপণাস্ত্রে, আর পাঁচজন গোলার আঘাতে নিহত হন।’
আরও পড়ুন: ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা নিয়ে বিশ্ব সম্প্রদায়ের কে কী বলল
এদিকে পাকিস্তানও এ হামলায় নিহতদের প্রতিশোধ নেবে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। তবে কোথায় ও কীভাবে হামলা চালানো হবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য দেননি তিনি।
টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘আমার প্রিয় পাকিস্তানি জনগণ, আমাদের সেনাবাহিনী ও জনগণ সবসময় আপনাদের নিরাপত্তার জন্য ঐক্যবদ্ধ থাকবে। আমরা অবশ্যই ভারতের বিরুদ্ধে দাঁড়াব এবং বিজয়ী হব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সত্যের পক্ষে লড়ছি, তাই আশা করি আল্লাহ সবসময় আমাদের সঙ্গে থাকবেন।’
প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ জানান, পাকিস্তানের সেনাবাহিনী পাঁচটি ভারতীয় জেট বিমান ভূপাতিত করেছে, যেগুলো ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের পরেও ভারতের আকাশসীমায় ছিল।
তবে এ বিষয়ে ভারতের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। যদিও পুলিশ ও স্থানীয়দের বরাতে ভারতের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় তিনটি বিমান পড়ার কথা জানা গেছে।
এদিকে, হামলা ও পাল্টা হামলার এই হুমকির মধ্যে ২০১৯ সালের উত্তেজনাকর পরিস্থিতির পর বর্তমানে আবারও যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে পারমাণবিক শক্তিধর এই দেশদুটি। ওই বছর কাশ্মীরে আত্মঘাতী গাড়ি বোমা হামলায় ৪০ জন ভারতীয় সেনা নিহত হয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: ভারত-পাকিস্তান হামলা: ‘দায়িত্বপূর্ণ সমাধান’ খুঁজতে যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বান
মঙ্গলবার (৬ মে) দিবাগত রাতে ভারত হামলার চালানোর পর কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) বরাবর ভারতীয় সেনাদের ওপর পাল্টা হামলার কথা জানিয়েছে পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ। এতে উভয় পক্ষ থেকেই হতাহতের খবর পাওয়া গেছে বলে এপির খবরে বলা হয়েছে।
হামলার পর ইসলামাবাদের সব সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীদের সব ধরনের ছুটি বাতিল ঘোষণা করেছেন পাকিস্তানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মুস্তাফা কামাল। একইসঙ্গে অবিলম্বে কাজে যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাদের। এছাড়া সংকট মোকাবিলায় জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার চলমান উত্তেজনায় আন্তর্জাতিক উদ্বেগও ক্রমেই বাড়ছে। দক্ষিণ এশিয়ায় দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় ‘দায়িত্বশীল সমাধানের’ পথ খুঁজে বের করতে দেশদুটিকে আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
হোয়াইট হাউসে এক বক্তব্যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, ‘আমি উভয় পক্ষকে ভালোভাবেই চিনি। আমি চাই তারা বিষয়টি মীমাংসা করুক, তারা থামুক। আমি যদি কোনোভাবে সহায়তা করতে পারি, তাহলে অবশ্যই করব।’
এছাড়া মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, ‘ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার এই উত্তেজনা একটি চলমান পরিস্থিতি। আমরা এখনও বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।’
এ বিষয়ে দক্ষিণ এশিয়ার পারমাণবিক শক্তিধর দেশদুটির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র একাধিক পর্যায়ে যোগাযোগ করে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলায় শিশুসহ ৩১ পাকিস্তানি নিহত
ট্রাম্পের বক্তব্যের পুনরাবৃত্তি করে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, ‘আমি আশা করি দ্রুতই এই সহিংসতা শেষ হবে এবং একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য কাজ করে যাবে যুক্তরাষ্ট্র।’
এছাড়া, দুই দেশকে সংযত থাকার আহ্বান জানিয়ছে যুক্তরাজ্যও। সংঘাত পরিহার করে কূটনৈতিক সমাধানের পথে আগানোর আহ্বান জানানো হয়েছে।
বুধবার ( ৭ মে) এক বিবৃতিতে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি বলেন, ‘ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার বর্তমান উত্তেজনা গুরুতর উদ্বেগের বিষয়। উভয় দেশের সঙ্গেই যুক্তরাজ্যের ঘনিষ্ঠ ও বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। আমি তাদের বলে দিতে চাই, যদি এই উত্তেজনা আরও বাড়ে, তাহলে কেউই বিজয়ী হবে না।’
গত ২২শে এপ্রিল ভারত-শাসিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর দুই দেশের মধ্যে কয়েকদিন ধরে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই এ হামলা চালানো হলো। শুরু থেকেই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে আসছিল ভারত। যদিও পাকিস্থান এ অভিযোগ অস্বীকার করে আসছিল।
ভারতের দাবি, এই হামলার দায় স্বীকার করা ‘কাশ্মীর রেজিস্ট্যান্স’ নামক জঙ্গি গোষ্ঠীটি নিষিদ্ধ লস্কর-ই-তৈয়বার সঙ্গে যুক্ত। এই গোষ্ঠীটি পাকিস্তানের মদদপুষ্ট বলে দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ করে আসছে ভারত। তবে পাকিস্তান এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
পেহেলগামে হামলার পর উভয় দেশ একে অপরের কূটনীতিক ও নাগরিকদের বহিষ্কার করেছে, সীমান্ত বন্ধ করেছে এবং আকাশপথ স্থগিত করেছে। পাকিস্তানের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ এক পানি বণ্টন চুক্তিও স্থগিত করেছে ভারত।
৪ দিন আগে
ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা নিয়ে বিশ্ব সম্প্রদায়ের কে কী বলল
পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়ায় ভারতীয় সেনাবাহিনী পাকিস্তানের বেশ কয়েকটি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে। এ নিয়ে প্রতিবেশি দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে।
এ ঘটনাকে ‘যুদ্ধের শামিল’ ও ‘আগ্রাসন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে পাকিস্তান। যেকোনো সময় হামলার জবাব দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ। তিনি বলেছেন, ‘কোথায় ও কীভাবে জবাব দেব, সেটি একান্তই আমাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত।’
অন্যদিকে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি, ‘ভারতের বিরুদ্ধে হামলার পরিকল্পনা হচ্ছে, এমন অন্তত ৯টি স্থানে আঘাত হানা হয়েছে।’
এমন বাস্তবতায় দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। মঙ্গলবার (৬ মে) দিবাগত রাতে ভারতের হামলার মধ্য দিয়ে উত্তপ্ত হয়ে ওঠা এই পরিস্থিতিতে উভয় পক্ষকেই সংযম প্রদর্শনের জন্য আহ্বান জানিয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও আন্তর্জাতিক সংগঠন।
‘দায়িত্বপূর্ণ সমাধান’ খোঁজার আহ্বান যুক্তরাষ্ট্রের
পরিস্থিতির যাতে আরও অবনতি না হয়, সে লক্ষ্যে এবং দক্ষিণ এশিয়ায় দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় ‘দায়িত্বপূর্ণ সমাধানের’ পথ খুঁজে বের করতে ভারত ও পাকিস্তানকে আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৬ মে) ওয়াশিংটন ডিসিতে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, ‘ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার এই উত্তেজনা একটি চলমান পরিস্থিতি। আমরা এখনও বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।’
এ বিষয়ে দক্ষিণ এশিয়ার পরমাণু শক্তিধর দেশদুটির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র একাধিক পর্যায়ে যোগাযোগ করে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।
ব্রুস বলেন, ‘এই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র কেবল দর্শকের ভূমিকা পালন করছে না, আমরা সক্রিয়ভাবে দুই পক্ষের সঙ্গে যুক্ত আছি। অত্যন্ত স্পর্শকাতর এই পরিস্থিতির মধ্যেও চলমান বিভিন্ন ঘটনার বিষয়ে অবগত রয়েছি।’
এর আগে, হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ভারতের এই হামলাকে লজ্জাজনক উল্লেখ করে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘এটি সত্যিই দুঃখজনক। আমি শুধু চাই, দ্রুত এই সংকটের অবসান ঘটুক।’
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এক এক্স পোস্টে লিখেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের মন্তব্যের সঙ্গে তিনি একমত। তিনিও দ্রুত এই সংকটের অবসান কামনা করেন।
পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ সমাধানের পথ বের করতে ভারত ও পাকিস্তানের নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখার কথাও বলেছেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার দায়িত্ব সামলানো রুবিও।
সর্বোচ্চ সংযমের আহ্বান জাতিসংঘের
ভারত-পাকিস্তানের এই সামরিক উত্তেজনা নিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে তার মুখপাত্র বলেন, ‘নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি) ও আন্তর্জাতিক সীমান্ত পেরিয়ে ভারতের সামরিক অভিযান নিয়ে (জাতিসংঘ) মহাসচিব অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।’
তিনি উভয় দেশকে সর্বোচ্চ সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছেন। গুতেরেসের ভাষ্যে, ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কোনো সামরিক সংঘাত হলে তার ভার বিশ্ব বহন করতে পারবে না।
কূটনৈতিক উপায়ে উত্তেজনা নিরসন সম্ভব: রাশিয়া
ভারত-পাকিস্তান ইস্যুতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে রাশিয়া। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, ভারত ও পাকিস্তানে সামরিক সংঘাত বৃদ্ধিতে রাশিয়া উদ্বিগ্ন। পরিস্থিতির যাতে আরও অবনতি না হয়, সে জন্য দুই পক্ষকেই সংযম দেখানোর অনুরোধ করছি।
বিবৃতিতে রাশিয়া আশা প্রকাশ করেছে যে, শান্তিপূর্ণ ও কূটনৈতিক উপায়ে উত্তেজনা নিরসন করা সম্ভব।
উত্তেজনা প্রশমনে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব চীনের
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘ভারত ও পাকিস্তান এমন প্রতিবেশী, যাদের চাইলেও আলাদা করা যায় না। তারা চীনেরও প্রতিবেশী।’
‘তাই শান্তি ও স্থিতিশীলতায় অগ্রাধিকার দিয়ে দুপক্ষকেই আমরা শান্ত ও সংযত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি। পাশাপাশি (চলমান) পরিস্থিতি আরও জটিল করে তোলে, এমন পদক্ষেপ নেওয়া থেকে বিরত থাকতে উভয় দেশকে আহ্বান জানাচ্ছি।’
এছাড়া দুই দেশের মধ্যকার এই উত্তেজনা কমাতে প্রয়োজনে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাবও দিয়েছে চীন।
এ বিষয়ে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান বলেছেন, ‘ভারত-পাকিস্তানের বর্তমান উত্তেজনা কমাতে গঠনমূলক ভূমিকা রাখতে চায় চীন। এ ক্ষেত্রে আমরা আান্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করতে ইচ্ছুক।’
শান্তি স্থাপনে দুই দেশকেই সহযোগিতা করতে চায় যুক্তরাজ্য
চলমান উত্তেজনা প্রশমনে ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশকেই যুক্তরাজ্য সহযোগিতা করতে চায় বলে জানিয়েছেন দেশটির বাণিজ্যমন্ত্রী জোনাথন রেনল্ডস।
এ বিষয়ে বিবিসি রেডিওকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, ‘আমাদের বার্তা হলো, আমরা দুই দেশেরই বন্ধু ও অংশীদার। ফলে উভয় দেশকেই সহযোগিতা করতে আমরা প্রস্তুত।’
‘আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা, সংলাপ, উত্তেজনা প্রশমনে ভারত-পাকিস্তান উভয় দেশেরই যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে এবং এসব বিষয়ে সহযোগিতা লাগলে তা করার ইচ্ছা আমাদের আছে।’
পূর্ণাঙ্গ সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা জাপানের
পাকিস্তানে ভারতের অপারেশন সিঁদুর পরিচালনার ঘটনায় পরিস্থিতি আরও অবনতি হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে জাপান।
পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির মুখ্য মন্ত্রিপরিষদ সচিব ইয়োশিমাসা হায়াশি এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরে সংঘটিত সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় কঠোর নিন্দা জানায় জাপান। এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে আমরা কোনোভাবেই সমর্থন করি না।’
‘ওই ঘটনার পর সৃষ্ট বর্তমান পরিস্থিতি পাল্টাপাল্টি প্রতিশোধমূলক হামলার দিকে গড়াতে পারে এবং তা পূর্ণ মাত্রার সামরিক সংঘাতে রূপ নেওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে আমরা ভারত ও পাকিস্তানের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, তারা যেন সংযম প্রদর্শন করে এবং সংলাপের মাধ্যমে পরিস্থিতি স্থিতিশীল করে।’
সংযম দেখানোর আহ্বান ফ্রান্সেরও
ভারত ও পাকিস্তানকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে ফ্রান্সও। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-নোয়েল বারো বলেছেন, ‘সন্ত্রাসী হামলা থেকে নিজেদের রক্ষা করতে ভারতের অভিপ্রায়ের বিষয়টি আমরা বুঝি। তবে উত্তেজনা যাতে আর না বাড়ে এবং নিজ নিজ দেশের বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষায় ভারত ও পাকিস্তান উভয়কেই সংযম অনুশীলন করার আহ্বান জানাই।’
দেশটির টিএফ১ টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই আহ্বান জানান।
এ সময় ভারত ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলবেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দুই দেশের কারোরই যে দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতের দিকে যাওয়ার ইচ্ছা আছে, তা আমার মনে হয় না।’
শান্তি ও সংযমের আহ্বান বাংলাদেশের
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ। বুধবার (৭ এপ্রিল) এক সংক্ষিপ্ত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দুই দেশকে শান্ত থাকার পাশাপাশি সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার উদ্ভূত পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ সরকার।’
‘আঞ্চলিক শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের স্বার্থে বাংলাদেশ আশাবাদী যে, কূটনৈতিকভাবে এই উত্তেজনা নিরসন হবে এবং শান্তি ফিরে আসবে, যা দক্ষিণ এশিয়ার মানুষের কল্যাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
মঙ্গলবার (৬ মে) দিবাগত রাতে অপারেশন সিঁদুর নামে পাকিস্তান ও পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের বেশ কয়েকটি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত। এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩১ জনে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে ২৬ জন ক্ষেপণাস্ত্র এবং পাঁচজন গোলার আঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ।
সীমান্তে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর পাল্টা গোলায় ৭ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন ভারতীয় পুলিশ ও চিকিৎসকরা।
৫ দিন আগে
ভারত-পাকিস্তান হামলা: ‘দায়িত্বপূর্ণ সমাধান’ খুঁজতে যুক্তরাষ্ট্রের আহ্বান
দক্ষিণ এশিয়ায় দীর্ঘমেয়াদি শান্তি ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় ‘দায়িত্বশীল সমাধানের’ পথ খুঁজে বের করতে ভারত ও পাকিস্তানকে আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৬ মে) ওয়াশিংটন ডিসিতে নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ট্যামি ব্রুস বলেন, ‘ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার এই উত্তেজনা একটি চলমান পরিস্থিতি। আমরা এখনও বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি।’
এ বিষয়ে দক্ষিণ এশিয়ার পারমাণবিক শক্তিধর দেশদুটির সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র একাধিক পর্যায়ে যোগাযোগ করে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।
ব্রুস বলেন, ‘এই বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র কেবল দর্শকের ভূমিকা পালন করছে না, আমরা সক্রিয়ভাবে দুই পক্ষের সঙ্গে যুক্ত আছি। অত্যন্ত সংবেদনশীল এই পরিস্থিতির মধ্যেও চলমান বিভিন্ন ঘটনার বিষয়ে অবগত রয়েছি।’
এর আগে, মঙ্গলবার (৬ মে) দিবাগত রাতে পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার প্রতিক্রিয়ায় ভারতীয় সেনাবাহিনী পাকিস্তানের অন্তত ছয়টি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়।
এ ঘটনাকে ‘যুদ্ধের শামিল’ ও ‘আগ্রাসন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে পাকিস্তান। দেশটির সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ বলেন, ‘পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর ও পাঞ্জাব প্রদেশের পূর্বাঞ্চলে আঘাত হেনেছে ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র।’
অন্যদিকে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি, ‘ভারতের বিরুদ্ধে হামলার পরিকল্পনা হচ্ছে, এমন অন্তত ৯টি স্থানে আঘাত হানা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলায় শিশুসহ ৩১ পাকিস্তানি নিহত
আহমেদ শরিফ বলেন, ‘ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলায় পাকিস্তানে অন্তত ৩১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ২৬ জন ক্ষেপণাস্ত্রে, আর পাঁচজন গোলার আঘাতে নিহত হন।’
যেকোনো সময় হামলার জবাব দেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর এই মুখপাত্র। তিনি বলেন, ‘কোথায় ও কীভাবে জবাব দেব, সেটি একান্তই আমাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত।’
ভারতের দাবি, গত মাসে ভারতশাসিত কাশ্মীরে পর্যটকদের হত্যায় যোগসাজশ থাকা জঙ্গিদের ব্যবহার করা অবকাঠামোতে হামলা চালিয়েছে তারা।
ভারতের হামলার জবাবে কয়েকটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করেছে পাকিস্তান। এর মধ্যে দুটি বিমান ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে গিয়ে পড়েছে।
পাকিস্তানের গোলায় সাত বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে ভারতীয় পুলিশ ও চিকিৎসকরা। এ ছাড়াও ৩৫ জন আহত হয়েছেন বলেও জানিয়েছেন তারা।
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত ১৩
৫ দিন আগে
ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলায় শিশুসহ ৩১ পাকিস্তানি নিহত
পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত বেড়ে ২৬ জনে দাঁড়িয়েছে। এ হামলায় একটি শিশুরও প্রাণহানি ঘটেছে। এছাড়া ভারতীয় গোলায় আরও পাঁচ পাকিস্তানি নিহত হয়েছেন।
এ ঘটনাকে ‘যুদ্ধের শামিল’ ও ‘আগ্রাসন’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে পাকিস্তান। দেশটির সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ বলেন, ‘পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর ও পাঞ্জাব প্রদেশের পূর্বাঞ্চলে আঘাত হেনেছে ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র।’ তবে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবি, ‘ভারতের বিরুদ্ধে হামলার পরিকল্পনা হচ্ছে, এমন অন্তত ৯টি স্থানে আঘাত হানা হয়েছে।’
আহমেদ শরিফ বলেন, ‘ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলায় পাকিস্তানে অন্তত ৩১ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। এরমধ্যে ২৬ জন ক্ষেপণাস্ত্রে, আর পাঁচজন গোলার আঘাতে নিহত হন।’
যেকোনো সময় হামলার জবাব দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর এই মুখপাত্র। তিনি বলেন, ‘কোথায় ও কীভাবে জবাব দেব, সেটা একান্তই আমাদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত।’
আরও পড়ুন: পাকিস্তানে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত ১৩
ভারত বলছে, ‘গেল মাসে ভারতশাসিত কাশ্মীরে পর্যটকদের হত্যায় যোগসাজশ থাকা জঙ্গিদের ব্যবহার করা অবকাঠামোতে হামলা চালিয়েছে তারা।’ জবাবে কয়েকটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করেছে পাকিস্তান। এরমধ্যে দুটি বিমান ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে গিয়ে পড়েছে।
পাকিস্তানের গোলায় সাত বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে ভারতীয় পুলিশ ও চিকিৎসকরা। এছাড়াও ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তারা।
গেল মাসে ভারত অধিকৃত কাশ্মীরে হামলা চালিয়ে ২৬ পর্যটককে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। এই হত্যাকাণ্ডের জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করেছে ভারত। তবে ইসলামাবাদ তা অস্বীকার করেছে। এ ঘটনার পর দুদেশের সম্পর্ক নতুন করে তলানিতে চলে যায়। পরবর্তীতে দুপক্ষই প্রতিবেশী দেশের কূটনীতিক ও নাগরিকদের বহিষ্কারে করেছে, সীমান্ত এবং আকাশপথ বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বলেছেন, ‘ভারত যে যুদ্ধ পরিস্থিতি চাপিয়ে দিয়েছে, তার সমুচিত জবাব দেওয়ার অধিকার পাকিস্তানের আছে। এই হামলার কঠিন জবাব দেওয়া হবে।’
এই হামলাকে ‘নিবৃত্তিমূলক’ বলে আখ্যায়িত করেছেন ভারতীয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বিক্রম মিসরি। নয়াদিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘তার দেশের কাছে মনে হয়েছে, এই হামলা চালানোর মধ্যদিয়ে নিবৃত্তিমূলক পদক্ষেপ নিতে হবে। কারণ নিজভূখণ্ডে সন্ত্রাসী অবকাঠামোর বিরুদ্ধে চোখেপড়ার মতো কোনো পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে পাকিস্তান।’
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, ‘তিনটি রাফায়েল পাঁচটি ভারতীয় যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছে। ভারতীয় আগ্রাসনের জবাব দেওয়া হচ্ছে।’
৫ দিন আগে