আফ্রিকা
এইডসে আক্রান্ত হয়ে প্রতি বছর নাইজেরিয়ায় মারা যাচ্ছে ১৫ হাজার মানুষ
আফ্রিকার সবচেয়ে জনবহুল দেশ নাইজেরিয়ায় প্রাণঘাতী এইডস রোগের বিস্তার রোধে সরকারের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও প্রতি বছর এই রোগে আক্রান্ত হয়ে অন্তত ১৫ হাজার মানুষের মৃত্যু হচ্ছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দেশটির ন্যাশনাল এজেন্সি ফর দ্য কন্ট্রোল অব এইডসের (এনএসিএ) প্রধান টেমিটোপ ইলোরি।
নাইজেরিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় ওগুন রাজ্যের রাজধানী আবেকুতায় একটি অ্যাডভোকেসি ও সংবেদনশীলতা কর্মসূচি চলাকালে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, চলতি বছর এ পর্যন্ত এইডসের ২২ হাজারের বেশি নতুন কেস শনাক্ত করা হয়েছে।
শুধু ২০২৩ সালেই দেশটিতে ৭৫ হাজার নতুন এইচআইভি আক্রান্ত রোগী শনাক্ত এবং এতে ৪৫ হাজার মৃত্যু রেকর্ড করা হয় বলে জানান তিনি।
দেশটিতে সংক্রমণের হার ক্রমেই বাড়ছে উল্লেখ করে ইলোরি বলেন, দেশে বর্তমানে শূন্য থেকে ১৪ বছর বয়সী প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার শিশু রয়েছে, যারা এইচআইভিতে আক্রান্ত ।
এই কর্মকর্তা বলেন, মায়ের কাছ থেকে সন্তানের শরীরে এই রোগের সংক্রমণ প্রতিরোধে হিমশিম খাচ্ছে নাইজেরিয়া। এ বিষয়ে সরকারের কার্যক্রমের ত্রুটি রয়েছে উল্লেখ করে বিষয়টি নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।
৫ দিন আগে
মিশরে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১২
মিশরের রাজধানী কায়রোর উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় পোর্ট সাঈদ প্রদেশে বুধবার এক সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ১২ জন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত পাঁচজন।
মিশরের রাষ্ট্র পরিচালিত আখবার এল-ইয়োম নিউজ ওয়েবসাইটের প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, পোর্ট সাইদের একটি মহাসড়কে একটি ভারী ট্রাক, একটি বাস ও আরও তিনটি গাড়ির সংঘর্ষে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
দুর্ঘটনার খবর পেয়েই অ্যাম্বুলেন্স ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। আহতদের নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
প্রসঙ্গত, রাস্তার বেহাল দশা, দ্রুতগতিতে গাড়ি চালানো ও ট্রাফিক আইনের শিথিল প্রয়োগের কারণে মিশরে প্রতি বছর সড়ক দুর্ঘটনায় হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটে।
সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে গত কয়েক বছর ধরে সড়ক যোগাযোগ নেটওয়ার্কের উন্নয়ন করছে মিশর।
মিশরের সরকারি পরিসংখ্যান সংস্থা সিএপিএমএএস মে মাসে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, ২০২২ সালে দেশটিতে সড়ক দুর্ঘটনায় মোট ৭ হাজার ৭৬২ জনের মৃত্যু হয়। এরপর ২০২৩ সালে তা কমে ৫ হাজার ৮৬১ জনে দাঁড়িয়েছে।
৬ দিন আগে
দক্ষিণ আফ্রিকায় খনি ধসে আটকা পড়েছে ৪ হাজার অবৈধ শ্রমিক
ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে দক্ষিণ আফ্রিকার উত্তর-পশ্চিমের স্টিলফন্টেইন প্রদেশের একটি অব্যবহৃত খনিতে অন্তত চার হাজার অবৈধ খনি শ্রমিক আটকা পড়ে আছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে স্টিলফন্টেইনের প্রাদেশিক পুলিশ জানিয়েছে, বৃষ্টির কারণে উদ্ধার অভিযান বর্তমানে স্থগিত রয়েছে।
আবহাওয়া পরিষ্কার হলে উদ্ধার তৎপরতা আবার শুরু হবে বলে জানিয়েছেন স্টিলফন্টেইনের প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র সাবাতা মোকগওয়াবোন।
মোকগওয়াবোন জানান, গত ২ নভেম্বর এ দুর্ঘটনা ঘটলে প্রাথমিকভাবে অর্ধশতাধিক শ্রমিক মার্গারেট শ্যাফ্ট নামের খনিটি থেকে নিরাপদে বের হয়ে আসতে সক্ষম হয়। তবে মাটির নিচে এখনও অন্তত চার হাজার শ্রমিক আটকা রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা ঘটনাস্থল পর্যবেক্ষণে রেখেছি। প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে, ফলে অভিযান আপাতত বন্ধ রাখতে হয়েছে।’
আরও পড়ুন: দক্ষিণ আফ্রিকায় বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত ১৭
তিনি জানান, মঙ্গলবার উদ্ধারকারী দলের কয়েকজন সদস্য দড়ি ব্যবহার করে খনির ভেতরে প্রবেশ করেন। সেখানে তারা কয়েক হাজার খনি শ্রমিক এবং বেশ কয়েকজনের লাশ দেখতে পান। আটকে পড়া খনি শ্রমিকদের খাবার ও পনীয় জল সরবরাহ করেন তারা। ঘটনাস্থলে পুলিশ ও স্বাস্থ্যকর্মীরাও উপস্থিত রয়েছেন।
খনিটি থেকে বের হয়ে আসা ৫৫ জন শ্রমিকদের সবাই অভিবাসন আইন লঙ্ঘন করে দেশটিতে আছে জানিয়ে মোকগওয়াবোন বলেন, অবৈধ অভিবাসন ও অবৈধ খনি কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত থাকায় তাদের সবাইকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, সোনার লোভে দক্ষিণ আফ্রিকার দক্ষিণ-পশ্চিম, গাউটেং ও ফ্রি স্টেটের মতো প্রদেশগুলোতে অব্যবহৃত ও বন্ধ সোনার খনিতে অবৈধভাবে খোড়াখুড়ি অব্যহত রেখেছে অনেকে। এদের বেশিরভাগই লেসোথো ও জিম্বাবুয়ের নাগরিক। অবৈধ খনি শ্রমিকদের বিরুদ্ধে বেশ কিছুদিন ধরে অভিযান চালাচ্ছে দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ইতোমধ্যে হাজার হাজার লোককে গ্রেপ্তার করেছে তারা।
৬ দিন আগে
ক্যামেরুনে ভূমিধসে নিহত ১১
ক্যামেরুনের পশ্চিমাঞ্চলে ভারী বর্ষণের কারণে সৃষ্ট ভূমিধসে অন্তত ১১ জন নিহত হয়েছে। মঙ্গলবার এ ভূমিধসের পর বহু নিখোঁজদের মধ্যে থেকে এখন পর্যন্ত ১১ জনকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
ওইদিন ডিসচ্যাং শহরের কাছে লা ফালাইসে একটি খাড়া পাহাড়ের গায়ের সড়ক ধরে তিনটি যাত্রীবাহী বাস নিচে পড়ে যাওয়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার দিন প্রাথমিকভাবে চারজনের লাশ উদ্ধার করেন উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা।
এ বিষয়ে দেশটির পশ্চিমাঞ্চলের গভর্নর অগাস্টিন ফনকা আওয়া বলেন, শুক্রবার আরও সাতটি লাশ উদ্ধারের পর নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১১ জনে দাঁড়িয়েছে। উদ্ধার হওয়া লাশগুলোতে পচন ধরেছে। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও অর্ধশতাধিক মানুষ আটকে রয়েছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সম্প্রতি প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে মধ্য আফ্রিকার দেশ ক্যামেরুনের কিছু অংশে ব্যাপক বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনা ঘটছে। দেশটির বাণিজ্যিক কেন্দ্র দৌয়ালার সঙ্গে ওই অঞ্চলের সংযোগকারী খাড়া সড়ক দিয়ে আঁকাবাঁকা পথে ভূমিধসের ঝুঁকি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে চলাফেরা করছেন আশপাশের বাসিন্দারা।
১ সপ্তাহ আগে
ত্রিপোলিতে ভবন ধসে ৭ অভিবাসী নিহত
লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলিতে একটি আবাসিক ভবন ধসে পড়ে সাতজন আফ্রিকান অভিবাসী নিহত হয়েছেন। এছাড়া এ দুর্ঘটনায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
স্থানীয় সময় শুক্রবার রাজধানীর পশ্চিমে জানজোর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)।
আইওএমের এক বিবৃতিতে জানানো হয়, ‘একটি তিনতলা ভবনে বেশকিছু সংখ্যক আফ্রিকান অভিবাসী বসবাস করছিলেন। গত রাতে ওই ভবব ধসে পড়ে। এতে নারী ও শিশুসহ ৭ জন নিহত হন এবং বেশ কয়েকজনকে উদ্ধার করা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: লিবিয়া থেকে দেশে ফিরেছেন ১৫৭ বাংলাদেশি
বিবৃতিতে নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে আইওএম।
সংস্থাটি জানায়, তারা ভুক্তভোগী অভিবাসীদের সহায়তা করতে প্রস্তুত। এছাড়া উদ্ধার অভিযানে কর্তৃপক্ষকেও সহায়তা করবে। ভবন ধসের কারণ অনুসন্ধানে এখনও তদন্ত চলছে।
আরও পড়ুন: লিবিয়া থেকে দেশে ফিরলেন ১৫০ অনিয়মিত বাংলাদেশি
১ সপ্তাহ আগে
নাইজেরিয়ায় চলতি বছর বন্যায় ৩২১ প্রাণহানি
নাইজেরিয়ায় চলতি বছর বন্যায় অন্তত ৩২১ জন নিহত ও ৭ লাখ ৪০ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।
রাজধানী আবুজায় বৃহস্পতিবার দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আনামব্রার গভর্নর চুকউমা সলুডো সাংবাদিকদের বলেন, আফ্রিকার সবচেয়ে জনবহুল দেশটিতে দীর্ঘ বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট বন্যায় আহত হয়েছে আরও প্রায় ২ হাজার ৮৫৪ জন।
ইকোনমিক কাউন্সিলের বৈঠকের ব্রিফিংয়ের উদ্ধৃতি দিয়ে সলুডো বলেন, ‘বন্যার কারণে দেশ একটি জাতীয় জরুরি অবস্থার মুখোমুখি হয়েছে। বৃষ্টিপাতের ফলে ব্যাপক বাস্তুচ্যুতি, প্রাণহানি এবং ঘরবাড়ি ও জীবিকা ধ্বংস হয়েছে।’
আরও পড়ুন: নাইজেরিয়ায় গির্জায় হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহতের আশঙ্কা
তিনি বলেন, নাইজেরিয়ার ৩৬টি রাজ্যের মধ্যে ৩৪টিই বন্যার কবলে পড়েছে এবং দেশের ৭৭৪টি স্থানীয় সরকার এলাকার মধ্যে ২১৭টি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভয়াবহ বন্যায় কমপক্ষে ৭ লাখ ৪০ হাজার ৭৪৩ জন মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং ২ লাখ ৮১ হাজার ঘরবাড়ি ও ২ লাখ ৫৮ হাজার চাষযোগ্য কৃষিজমি ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জাতীয় দুর্যোগের প্রতিক্রিয়া হিসাবে অর্থনৈতিক কাউন্সিল বন্যার ধ্বংসাত্মক প্রভাব প্রশমিত করার জন্য স্থানীয় জলপথ ও বাঁধগুলোর অবস্থার একটি বিস্তৃত অখণ্ডতা পর্যালোচনা করার নির্দেশ দিয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নৌপথ ড্রেজিংয়ের ব্যাপক কর্মসূচির প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। যেসব গভর্নর তাদের রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি ও ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রতিবেদন জমা দেননি, তাদেরও অবিলম্বে তা করার আহ্বান জানিয়েছে কাউন্সিল।’
২ সপ্তাহ আগে
কঙ্গোয় সামরিক হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে আরোহীদের সবাই নিহত
কঙ্গোর রাজধানী কিনশাসায় বুধবার একটি সামরিক হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে সব আরোহীর মৃত্যু হয়েছে।
কিনশাসার সামরিক সূত্র জানিয়েছে, কঙ্গোর সশস্ত্র বাহিনীর (এফএআরডিসি) হেলিকপ্টারটি স্থানীয় সময় বুধবার সকাল ১১টার দিকে কিনশাসার দ্বিতীয় বিমানবন্দর এনদোলোর রানওয়েতে বিধ্বস্ত হয়।
এ ঘটনায় হেলিকপ্টারের পাইলট, কো-পাইলট ও টেকনিশিয়ান ও ক্রু- সবাই নিহত হয়েছেন বলে সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম।
ঘটনাস্থল থেকে দুই ক্রু সদস্যকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান বলে জানিয়েছে সূত্র।
আরও পড়ুন: কঙ্গোয় মাঙ্কিপক্সে ৫৭০ জনের মৃত্যু
কঙ্গোর অফিশিয়াল মিডিয়া আউটলেট কঙ্গোলিজ প্রেস এজেন্সিকে এফএআরডিসির কমান্ডার জেনারেল ফে এনগামা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বারুম্বু কমিউনের মেয়র ক্রিস্টোফ লোমামি দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, দুর্ঘটনার কারণ এখনও জানা যায়নি।
৩ সপ্তাহ আগে
সুদানের পূর্বাঞ্চলে আধাসামরিক বাহিনীর হামলায় নিহত ১২০: জাতিসংঘ
সুদানের পূর্ব-মধ্যাঞ্চলের একটি শহরে আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের যোদ্ধাদের কয়েকদিনের হামলায় ১২০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে চিকিৎসকদের একটি গ্রুপ ও জাতিসংঘ।
সুদানের সামরিক বাহিনীর কাছে একের পর এক বিপর্যয়ের শিকার হওয়ার পর এটি ছিল গোষ্ঠীটির সর্বশেষ হামলা। দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা এই যুদ্ধ আফ্রিকার দেশটিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। লাখ লাখ জনগণকে বাস্তুচ্যুত করেছে এবং দেশটিকে একটি পূর্ণাঙ্গ দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিয়েছে।
আরএসএফ যোদ্ধারা গত ২০-২৫ অক্টোবরের মধ্যে গেজিরা প্রদেশের পূর্ব ও উত্তরাঞ্চলের গ্রাম ও শহরগুলোতে তাণ্ডব চালান। তারা বেসামরিক নাগরিকদের ওপর গুলি চালান এবং নারীদের ওপর যৌন নির্যাতন চালান। এছাড়া তারা খোলা বাজারসহ ব্যক্তিগত ও সরকারি সম্পত্তি লুটপাট করেছে।
ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশনের ট্র্যাকিং ম্যাট্রিক্সের রবিবারের তথ্য অনুযায়ী, গত সপ্তাহে তাম্বুল শহর এবং পূর্ব ও উত্তর গেজিরার অন্যান্য গ্রামের ৪৬ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
আইওএমের মহাপরিচালক অ্যামি পোপ আগামী সপ্তাহে সুদান সফরের আগে অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) বলেন, ‘গেজিরা প্রদেশে হত্যাকাণ্ড এবং ভয়াবহ মানবাধিকার লঙ্ঘন সুদানের জনগণের উপর এই সংঘাতের অগ্রহণযোগ্য মানবিক ক্ষতিকে আরও তীব্র করে তুলেছে।’
সংঘাত বন্ধে সমন্বিত আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, 'নষ্ট করার সময় নেই। লাখ লাখ মানুষের জীবন বিপন্ন হয়ে পড়েছে।’
সুদানে জাতিসংঘের মানবিক ত্রাণ সমন্বয়কারী ক্লেমেন্টাইন এনকোয়েতা-সালামি শনিবার এক বিবৃতিতে বলেন, 'এগুলো নৃশংস অপরাধ। নারী, শিশু এবং সবচেয়ে অরক্ষিত লোকেরা এমন একটি সংঘাতের ধকল বহন করছে; যা ইতোমধ্যে বহু জীবন কেড়ে নিয়েছে।’
তিনি বলেন, ২০০০ সালের গোড়ার দিকে দারফুর গণহত্যার সময় ধর্ষণ, যৌন সহিংসতা ও গণহত্যাসহ যে ভয়াবহতা সংঘটিত হয়েছিল তার সঙ্গে এই হামলার মিল রয়েছে।
জানজাভিদ নামে পরিচিত আরব মিলিশিয়া থেকে আরএসএফ সৃষ্টি হয়েছিল। সুদানের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ওমর আল-বশির দারফুরের মধ্য বা পূর্ব আফ্রিকান হিসেবে চিহ্নিত জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে এসব বিদ্রোহীদের একত্রিত করেছিলেন। এ সময় জানজাভিদের বিরুদ্ধে গণহত্যা, ধর্ষণ ও অন্যান্য নৃশংসতার অভিযোগ আনা হয় এবং দারফুর গণহত্যার সমার্থক হয়ে ওঠে। জানজাভিদ গ্রুপগুলো এখনো আরএসএফকে সহায়তা করছে।
আরও পড়ুন: সুদানে মসজিদে বিমান হামলায় নিহত ৩১
সুদানিজ ডক্টরস ইউনিয়ন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সারিহা শহরে কমপক্ষে ১২৪ জন নিহত ও ২০০ জন আহত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামগুলোতে ত্রাণ সংস্থাগুলো যাতে মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারে, সেজন্য 'নিরাপদ করিডোর' খোলার জন্য আরএসএফকে চাপ দিতে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, 'আহতদের সাহায্য করা বা চিকিৎসার জন্য তাদের সরিয়ে নেওয়ার কোনো উপায় নেই।’
অনলাইনে বেশকিছু ফুটেজ ছড়িয়ে পড়েছে। এর কিছু আরএসএফ যোদ্ধারা নিজেরাই শেয়ার করেছে। সেসব ফুটেজে দেখা গেছে, আধাসামরিক গোষ্ঠীর সদস্যরা বন্দিদের ওপর নির্যাতন করছে। একটি ভিডিওতে দেখা যায়, সামরিক ইউনিফর্ম পরা এক ব্যক্তি এক বৃদ্ধের চিবুক ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছেন এবং পেছনে অন্য সশস্ত্র ব্যক্তিরা স্লোগান দিচ্ছেন।
ওই ভিডিওতে করা মন্তব্যে আরএসএফ তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি।
আরএসএফের বিরুদ্ধে গ্রামগুলোতে হামলা চালিয়ে বেসামরিকদের ওপর গুলি চালানোর পাশাপাশি 'বিপুল সংখ্যক বাসিন্দার' সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার অভিযোগ করেছে গণতন্ত্রপন্থি দল ও গোষ্ঠীগুলোর জোট কোঅর্ডিনেশন অব সিভিলিয়ান ডেমোক্রেটিক ফোর্সেস।
এক বিবৃতিতে জোটটি 'এই ব্যাপক লঙ্ঘনের জন্য আরএসএফকে দায়ী' করেছে এবং প্রস্তুতকারীদের জবাবদিহির আওতায় আনার আহ্বান জানিয়েছে।
সামরিক বাহিনী সফলভাবে আরএসএফের দখলে থাকা এলাকাগুলো পুনরুদ্ধার করার পর গেজিরায় এ হামলা চালানো হলো।
সেপ্টেম্বরে সেনাবাহিনী রাজধানী খার্তুম ও এর আশপাশের এলাকায় ব্যাপক অভিযান শুরু করে এবং আরএসএফের কাছ থেকে বিশাল এলাকা পুনরুদ্ধার করে। এ ছাড়া চলতি মাসের শুরুর দিকে তারা গেজিরা প্রদেশের কৌশলগত পার্বত্য এলাকা জেবেল মোয়া এবং গেজিরা ও নিকটবর্তী সিন্নার প্রদেশের নিয়ন্ত্রণ দখল করে আরএসএফ বাহিনীকে হটিয়ে দেয়।
অক্টোবরে আরএসএফের একজন শীর্ষ কমান্ডার, গেজিরার ডি ফ্যাক্টো শাসক আবু আকলাহ কেইকেল পক্ষত্যাগ করেন এবং সেনাবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করেন।
একটি স্থানীয় প্রতিবেদনে বলা হয়, এর ফলে আরএসএফ যোদ্ধারা কেইকেলের অনুগত হিসেবে পরিচিত গেজিরার গ্রাম ও শহরগুলোতে হামলা চালায়।
২০২৩ সালের এপ্রিলে খার্তুমে সামরিক বাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে সুদানে যুদ্ধ শুরু হয়।
এই যুদ্ধ গণহত্যা এবং জাতিগতভাবে উসকানি দিয়ে হত্যাকাণ্ড হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো বলছে, এসব কর্মকাণ্ড যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের শামিল। বিশেষ করে দারফুরের পশ্চিমাঞ্চলে, যেখানে আরএসএফের নৃশংস আক্রমণ চলছে।
সংঘর্ষ শুরু হওয়ার পর থেকে পর্যবেক্ষণকারী গোষ্ঠী আর্মড কনফ্লিক্ট লোকেশন অ্যান্ড ইভেন্ট ডেটা অনুসারে, সংঘাতে এখন পর্যন্ত ২৪ হাজারেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে।
আরও পড়ুন: সুদানে সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনীর সংঘর্ষে নিহত ১১
৩ সপ্তাহ আগে
সুদানে মসজিদে বিমান হামলায় নিহত ৩১
সুদানের মধ্যাঞ্চলের গেজিরা রাজ্যের রাজধানী ওয়াদ মাদানির একটি মসজিদে বিমান হামলায় অন্তত ৩১ জন নিহত হয়েছেন।
এক বিবৃতিতে ওয়াদ মাদানি প্রতিরোধ কমিটি জানিয়েছে, রোববার সন্ধ্যায় নামাজের পর আল-ইমততিদাদ এলাকার শেখ আল জেইলি মসজিদ ও এর আশপাশের এলাকায় যুদ্ধবিমান থেকে বিস্ফোরক ব্যারেল ফেলে বোমা হামলা চালানো হয়।
এ ঘটনায় আরও অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে। তবে হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
তবে ঘটনাটি নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনো পক্ষ থেকে মন্তব্য আসেনি।
২০২৩ সালের ডিসেম্বরে সুদানের সশস্ত্র বাহিনী (এসএএফ) ওয়াদ মাদানি থেকে সরে যাওয়ার পর আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ) গেজিরা রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ নেয়।
২০২৩ সালের এপ্রিলের মাঝামাঝি সময় থেকে এসএএফ ও আরএসএফের মধ্যে প্রাণঘাতী সংঘর্ষে বিধ্বস্ত সুদান।
১৪ অক্টোবর আর্মড কনফ্লিক্ট লোকেশন অ্যান্ড ইভেন্ট ডেটা প্রজেক্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই সংঘর্ষে এ পর্যন্ত ২৪ হাজার ৮৫০ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে।
৪ সপ্তাহ আগে
সোমালিয়ার রাজধানীতে আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিহত ৭
সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিশুতে এক আত্মঘাতী বোমা হামলায় পুলিশ কর্মকর্তাসহ সাতজন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও ছয়জন।
বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) মোগাদিশুর একটি ব্যস্ত মোড়ে অবস্থিত একটি পুলিশ অ্যাকাডেমির সামনে এ ঘটনা ঘটে।
এ হামলার দায় স্বীকার করেছে জঙ্গিগোষ্ঠী আল-শাবাব। মোগাদিশুর হামার জাজাব জেলার পুলিশ অ্যাকাডেমিতে হামলার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে এই আত্মঘাতী হামলা চালানো হয়েছে বলে গোষ্ঠীটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।
১ মাস আগে