ইউরোপ
সুইডেনে কোরআন পোড়ানোয় যুবককে গুলি করে হত্যা
সুইডেনে পবিত্র কোরআন শরীফের কপি পুড়িয়ে বিতর্ক ও সহিংস বিক্ষোভকে উসকে দেওয়া ৩৮ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে।
স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, বুধবার (২৯ জানুয়ারি) রাতে স্টকহোমের সোদারতালজে একটি অ্যাপার্টমেন্টে সালওয়ান মোমিকাকে হত্যা করা হয়েছে।
২০২৩ সালে স্টকহোম সেন্ট্রাল মসজিদের বাইরে ইসলামের পবিত্র গ্রন্থ কুরআন শরীফে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পর ব্যাপক অস্থিরতা দেখা দেয়।
স্টকহোম পুলিশ নিশ্চিত করেছে, ৪০ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে রাতে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। তবে এই ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। স্থানীয় সময় বুধবার রাত ১১টা ১১ মিনিটে হোভসজোর একটি অ্যাপার্টমেন্টে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে নিলে বৃহস্পতিবার সকালে তাকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
আরও পড়ুন: ফিলিপাইনে ৭ সন্দেহভাজন অপরাধীকে গুলি করে হত্যা
স্থানীয় প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুলিবর্ষণের সময় মোমিকা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লাইভ সম্প্রচারে ছিলেন।
মূলত ইরাকের বাসিন্দা এবং সুইডেনে বসবাসকারী মোমিকার বিরুদ্ধে ২০২৩ সালে একাধিক ঘটনার জন্য ‘একটি জাতিগত গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে আন্দোলনের’ অভিযোগ আনা হয়েছিল। বৃহস্পতিবার এ বিষয়ে আদালতের রায় হওয়ার কথা থাকলেও কর্তৃপক্ষ তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করার পর তা স্থগিত করেছে।
সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী উলফ ক্রিস্টারসন বলেছেন, নিরাপত্তা বাহিনীগুলো বিদেশি সংস্থাগুলোর সঙ্গে সম্ভাব্য যোগসূত্রের বিষয়ে তদন্তদ করছে।
মোমিকার ইসলাম বিরোধী বিক্ষোভ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোতে প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে। এর ফলে বাগদাদে সুইডিশ দূতাবাসের বাইরে বিক্ষোভও হয়। এমনকি সুইডেনের রাষ্ট্রদূতকে বহিষ্কারের ঘটনাও ঘটে।
যদিও সুইডিশ কর্তৃপক্ষ বাক স্বাধীনতা আইনে মোমিকার কুরআন পোড়ানোর প্রতিবাদের অনুমতি দিয়েছিল। পরে সরকার নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে এই জাতীয় বিক্ষোভ সীমাবদ্ধ করতে আইন পর্যালোচনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল।
আরও পড়ুন: আফগানিস্তানে একই পরিবারের ১০ জনকে গুলি করে হত্যা
১ ঘণ্টা আগে
অবশেষে পদত্যাগ করলেন টিউলিপ সিদ্দিক
ক্রমাগত চাপ ও বিতর্কের মুখে অবশেষে পদত্যাগ করেছেন যুক্তরাজ্যের ট্রেজারি মিনিস্টার টিউলিপ সিদ্দিক (৪২)। গণঅভ্যুত্থানের মুখে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই ভাগনি মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) রাতে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।শেখ হাসিনার সঙ্গে আর্থিক সম্পর্ক নিয়ে গেল কয়েক সপ্তাহ ধরেই তিনি যুক্তরাজ্যে খবরের শিরোনাম হয়ে আসছিলেন। তবে তিনি পদত্যাগ করলেও ভুল কিছু করেননি বলে দাবি করেন।গেল সপ্তাহে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেন, ‘টিউলিপের ওপর তার পূর্ণ আস্থা আছে।’ তবে দুই মাসের মধ্যে সরকারের দ্বিতীয় কোনো মন্ত্রীর পদত্যাগের ঘটনা কিয়ার স্টারমারের জন্য বড় ধাক্কা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে।আরও পড়ুন: যুক্তরাজ্যে শ্যাডো ইকোনমিক সেক্রেটারি হলেন টিউলিপ সিদ্দিকগেল বছরের জুলাইয়ে সাধারণ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে লেবার পার্টি ক্ষমতার আসার পর কিয়ার স্টারমারের জনপ্রিয়তায়ও ধস নেমেছে।ট্রেজারি মিনিস্টার হিসেবে অর্থপাচারের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ নেওয়ার দায়িত্ব ছিল টিউলিপের। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, তার অর্থনৈতিক বিষয়াদি নিয়ে তদন্তে যদিও কোনো আচরণবিধি লঙ্ঘনের প্রমাণ মেলেনি, কিন্তু তার অবস্থানের কারণে সরকারি কাজ থেকে মনোযোগ বিক্ষিপ্ত হতে পারে। আর এ কারণেই মন্ত্রীত্বের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।তাৎক্ষণিকভাবে দেশটির পেনশন বিষয়ক মন্ত্রী এমা রেনল্ডসকে তার স্থলাভিষিক্ত করা হয়েছে। ২০০৯ সাল থেকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন শেখ হাসিনা। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে অর্থ পাচার ও দুর্নীতির বিভিন্ন অভিযোগে তদন্ত চলছে।বাংলাদেশের অবকাঠামো খাত থেকে অর্থ পাচারে শেখ হাসিনার পরিবার জড়িত কিনা, সেই তদন্তের মধ্যেই গেল ডিসেম্বরে টিউলিপের নাম উঠে আসে। ওই অভিযোগ তদন্ত করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।২০১৩ সালে শেখ হাসিনার মস্কো সফরে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তার বৈঠকের সময় টিউলিপ সিদ্দিকও উপস্থিত ছিলেন। তার ওই ছবি এ সময় ফলাও করে প্রচার করে বেশ কয়েকটি ব্রিটিশ গণমাধ্যম।টিউলিপ সিদ্দিককে বরখাস্ত করতে যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বেশ কয়েকজন বিরোধী দলীয় নেতা। বিষয়টি নিয়ে যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন গণমাধ্যমে নিয়মিত খবর, সম্পাদকীয় প্রকাশিত হতে থাকে।এর মধ্যে শেখ হাসিনার সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকজন ব্যক্তির সম্পত্তি টিউলিপের ব্যবহার করা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।এই প্রেক্ষাপটে টিউলিপ তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তের অনুরোধ জানিয়ে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা (ইন্ডিপেনডেন্ট অ্যাডভাইজার অন মিনিস্ট্রিয়াল স্ট্যান্ডার্ডস) লাউরি ম্যাগনাসের কাছে চিঠি (রেফারেল) লিখেছিলেন। মন্ত্রীদের আচার-আচরণ, নীতিনৈতিকতা বিষয়ে ম্যাগনাস যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীকে উপদেশ দিয়ে থাকেন। ওই তদন্ত চলার মধ্যেই পদত্যাগ করলেন টিউলিপ সিদ্দিক।
২ সপ্তাহ আগে
পূর্ণ স্বাধীনতা চায় গ্রিনল্যান্ড
যুক্তরাষ্ট্র বা ডেনমার্ক, কারও অধীনে থাকতে চায় না গ্রিনল্যান্ড। সংকটকালীন এই সময়ে নিজেদের পূর্ণ স্বাধীনতা দাবি করেছেন গ্রিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মেত এজেদ।
সম্প্রতি ডেনিশ সরকারের সঙ্গে এক সম্মিলিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি তোলেন এজেদ।
ডেনমার্কের স্বায়ত্ত্বশাসিত দ্বীপভূমি গ্রিনল্যান্ড বহুদিন ধরে নিজেদের স্বাধীনতার দাবি তুলে আসছে। যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গ্রিনল্যান্ড কেনার ইচ্ছা প্রকাশের পর থেকে নতুন করে ফের নিজেদের স্বাধীনতার দাবি তুলল অঞ্চলটির অধিবাসীরা।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়া প্রসঙ্গে গ্রিনল্যান্ডের অধিবাসীরা জানান, ইউরোপীয় ফ্রি শিক্ষা ও চিকিৎসার সুবিধা পান তারা। আমেরিকা যত শক্তিশালীই হোক নাগরিক সুবিধার দিক থেকে তারা ইউরোপের তুলনায় নিঃসন্দেহে পেছনে। তাই আর যা-ই হোক নাগরিক সুবিধা হারাতে চান না দ্বীপটির অধিবাসীরা।
ডেনিশরা এতদিন গ্রিনল্যান্ড এবং এর সংস্কৃতিকে বৈষম্যের চোখে দেখেছে। এমনকি ডেনিশ চিকিৎসক দিয়ে গ্রিনল্যান্ডের নারীদের অজ্ঞাতসারে বন্ধ্যা করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। তবে এবার নিজেদের সার্বভৌমত্ব দাবি করেছে সেখানকার অধিবাসীরা।
কোন প্রক্রিয়ায় গ্রিনল্যান্ড স্বাধীনতা পাবে সে ব্যাপারে ধারণাও দিয়েছেন এজেদ। গ্রিনল্যান্ডের মানুষের ওপর সিদ্ধান্ত ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। গণভোটের মাধ্যমে দেশটির স্বাধীনতা প্রসঙ্গে আসতে পারে বলে মত তার।
এদিকে, ট্রাম্প গ্রিনল্যান্ডে নিজের সমর্থন বাড়াতে ঘুষ দিয়ে আমেরিকার পক্ষে স্লোগান দেওয়াচ্ছে— এমন অভিযোগ তুলেছে কয়েকটি রুশ মিডিয়া। মাত্র ৫৬ হাজার মানুষের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দ্বীপের ভবিষ্যৎ।
তবে অনেকেই বলছেন, এ যাত্রায় ট্রাম্পের উসকানিতে গ্রিনল্যান্ড স্বাধীন হয়ে গেলে সেটি হবে মন্দের ভালো।
২ সপ্তাহ আগে
ঘরের বাইরে ধূমপান নিষিদ্ধ করল মিলান
শহরের জনস্বাস্থ্য ও বাতাসের মান উন্নয়নের লক্ষ্যে তামাকজাত দ্রব্য সেবনে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে ইতালির মিলান পৌর কর্তৃপক্ষ।
বুধবার (১ জানুয়ারি) থেকে শহরটির বিভিন্ন স্কয়ার, সড়ক ও পার্কিং এলাকাসহ সব উন্মুক্ত স্থানে ধূমপানে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে পৌর কর্তৃপক্ষ বলেছে, ধূমপান করতে হলে একেবারেই নির্জন, লোকসমাগম নেই এবং জনসাধারণের সংস্পর্শ থেকে অন্তত ১০ মিটার দূরে- এমন স্থানে করতে হবে।
নতুন ঘোষণায় মূলত ধূমপান নিয়ে আগের দেওয়া নিষেধাজ্ঞার আওতা সম্প্রসারণ করেছে কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়ুন: ধূমপানে মানুষের কর্মক্ষমতা কমে যায়: এ মালিক
২০২১ সালে প্রথম ঘরোয়া জনসমাগমের স্থানের (ইনডোর পাবলিক প্লেস) পাশাপাশি ট্রানজিট স্টপ, পার্ক, কবরস্থান ও খেলাধুলার জায়গার মতো উন্মুক্ত স্থানে ধূমপান নিষিদ্ধ করে কর্তৃপক্ষ। এবার তার পরিসর আরও বাড়ল।
এ বিষয়ে এক বিবৃতিতে মিলানের সিটি কাউন্সিলর এলেনা গ্রান্দি বলেছেন, এই পদক্ষেপের ফলে নাগরিকদের ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যের পাশাপাশি শহরের জনস্বাস্থ্যেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
তিনি বলেন, আমি জানি, এই পদক্ষেপটির বাস্তবায়ন সহজ হবে না। রাতারাতিও এটি বাস্তবায়ন করা যাবে না। তবে (শহরের) সত্যিকারের সাংস্কৃতিক পরিবর্তনে যে এটি সহায়ক হবে, এ বিষয়ে আমি নিশ্চিত।
তামাকজাত পণ্যের ওপর এই বিধিনিষেধ আরোপ করা হলেও ইলেক্ট্রনিক সিগারেটের মতো পণ্যসামগ্রী এই নিষেধাজ্ঞার আওতায় পড়বে না।
৪ সপ্তাহ আগে
গ্রিস উপকূলে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের স্পিডবোট ডুবে নিহত ৮
গ্রিসের পূর্বাঞ্চলীয় রোডস দ্বীপে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বহনকারী একটি স্পিডবোট ডুবে আটজন নিহত হয়েছেন।
দেশটির কোস্টগার্ড জানিয়েছে, স্পিডবোটটি কোস্টগার্ডের একটি টহল জাহাজকে ফাঁকি দিতে ‘বিপজ্জনক কৌশল’ অবলম্বন করতে গেলে সাগরে ডুবে যায়। এ ঘটনায় ১৮ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে।
দ্বীপের উত্তর-পূর্বে আফানতু বিচের রিসোর্ট এলাকার কাছে কোস্টগার্ডের তিনটি জাহাজ ও একটি হেলিকপ্টারে উদ্ধারকর্মীরা কাজ করছেন। এ ঘটনায় আরও কেউ নিখোঁজ রয়েছেন কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
জীবিতদের মধ্যে আটজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।তুরস্ক উপকূলের কাছে অবস্থিত বেশ কয়েকটি বড় গ্রিক দ্বীপের মধ্যে পূর্ব ভূমধ্যসাগরে একটি ব্যস্ত অবৈধ চোরাচালান রুটে পড়েছে রোডস।
আরও পড়ুন: জিবুতির উপকূলে লোহিত সাগরে নৌকাডুবিতে ৪৫ অভিবাসনপ্রত্যাশীর মৃত্যু
মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় গ্রিসে অবৈধ অভিবাসনপ্রত্যাশীদের আগমন বাড়ার আশঙ্কার মধ্যে গত সপ্তাহে অভিবাসীদের নিয়ে এটি দ্বিতীয় প্রাণহানির ঘটনা।
সপ্তাহের শেষ দিনে ক্রিট দ্বীপের দক্ষিণে একটি নৌকা আংশিকভাবে ডুবে যাওয়ার ঘটনায় ৮ অভিবাসনপ্রত্যাশী নিহত হন। ওই ঘটনায় আরও বেশ কয়েকজন এখনও নিখোঁজ রয়েছে বলে ধারণা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের।
দেশটির সরকারি তথ্য অনুযায়ী, এ বছর গ্রিসে অবৈধভাবে ভ্রমণকারী অভিবাসীর সংখ্যা ৬০ হাজার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে, যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি সিরীয়রা। তারপর রয়েছে আফগানিস্তান, মিসর, ইরিত্রিয়া ও ফিলিস্তিনের নাগরিক।
১ মাস আগে
ফ্রাঁসোয়া বায়রুকে ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা
দেশজুড়ে কয়েকদিনের রাজনৈতিক অচলাবস্থার পর অবশেষে নতুন প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করেছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁ। দেশটির পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মধ্যপন্থী রাজনীতিক ফ্রাঁসোয়া বায়রুর নাম ঘোষণা করেছেন তিনি।
ফ্রান্সের পার্লামেন্টে ঐতিহাসিক অনাস্থা ভোটে গত ৪ ডিসেম্বর ক্ষমতাচ্যুত হন প্রধানমন্ত্রী মিশেল বার্নিয়ার। পরের দিন জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে মাক্রোঁ নতুন প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করবেন বলে আশা করা হয়েছিল, কিন্তু সেদিন তিনি তা করেননি। এরপর মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) দলের নেতাদের বৈঠকে নতুন প্রধানমন্ত্রীর নাম ঘোষণা করতে তাকে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেওয়া হয়।
তবে সেই সময়সীমাও অতিক্রান্ত হলে আজ (শুক্রবার) নতুন প্রধানমন্ত্রীর নামের ঘোষণা আসতে পারে বলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়। অবশেষে সেই খবর সত্যি করে ফ্রাঁসোয়া বায়রুকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বেছে নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট।
মাক্রোঁর ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত ৭৩ বছর বয়সী বায়রু মধ্যপন্থী জোটের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। গত কয়েক দশক ধরে ফরাসি রাজনীতিতে তিনি সুপরিচিত নাম। তিনি দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের একজন মেয়র এবং মধ্যপন্থী ডেমোক্র্যাটিক মুভমেন্ট (মোডেম) দলের শীর্ষ নেতা। ২০০৭ সালে তিনি নিজেই দলটি প্রতিষ্ঠা করেন।
১৯৯৩ থেকে ১৯৯৭ সালের মধ্যে রক্ষণশীল সরকারের শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালে ফরাসি জনগণের কাছে পরিচিত হয়ে ওঠেন এই রাজনীতিক। এরপর ২০০২, ২০০৭ ও ২০১২ সালে তিনবার দেশটির প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ছিলেন তিনি।
পরে ২০১৭ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় মাক্রোঁকে সমর্থকন দেন বায়রু। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে মাক্রোঁ তাকে ফ্রান্সের বিচারমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিলেও পরবর্তী সময়ে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের তহবিল তছরুপের অভিযোগে মোডেমের বিরুদ্ধে তদন্তের মধ্যে তিনি পদত্যাগ করেন।
আরও পড়ুন: অনাস্থা ভোটে ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতাচ্যুত
চলতি বছর প্যারিসের একটি আদালত ওই মামলায় মোডেমের ৮ কর্মকর্তাকে দোষী সাব্যস্ত ও দলটিকে জরিমানা করলেও বায়রুকে নির্দোষ সাব্যস্ত করে অব্যাহতি দেয়।
দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত তিনজন প্রধানমন্ত্রী পেয়েছেন মাক্রোঁ। বাইরু হতে যাচ্ছেন তার চতুর্থ প্রধানমন্ত্রী।
চলতি গ্রীষ্মে আগাম নির্বাচনের ঘোষণা দেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট। তারপর থেকেই দেশটির রাজনৈকিক অঙ্গনে অস্থিরতার সৃষ্টি হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে বায়রুর রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেস (এপি) জানিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে বায়রুর কাজ হবে একটি নতুন সরকার গঠন করা। নতুন মন্ত্রী নির্বাচনে আগামী দিনগুলোতে তিনি বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
তবে এই কাজ বায়রুর জন্য মোটেও সহজ হবে না। কারণ ফ্রান্সে সর্বশেষ সংসদীয় নির্বাচনে কোনো দলের একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকায় একটি ঝুলন্ত সংসদ গঠিত হয়। সেখানে মাক্রোঁর মধ্যপন্থী জোটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নেই। ফলে সরকার গঠনে বাম ও ডান উভয় পক্ষের মধ্যপন্থী নেতাদের ওপর তার নির্ভর করতে হবে। এমনকি, রক্ষণশীল নেতাদের কেউ কেউ নতুন সরকারের অংশ হতে পারে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
১ মাস আগে
নটরডেমে ফিরছে যিশু খ্রিষ্টের ‘কাঁটার মুকুট’
২০১৯ সালের বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ডের পাঁচ বছর পর ফ্রান্সের বিখ্যাত নটরডেম ক্যাথেড্রালে আবারও ফিরছে যিশু খ্রিষ্টের ‘কাঁটার মুকুট’।
শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) সোনায় মোড়ানো গাছের শাখার ওই মুকুটটি ফিরছে তার পুরনো ঠিকানায়।
এ উপলক্ষে ক্যাথেড্রালে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন প্যারিসের আর্চবিশপ। ক্যাথেড্রালের পুনরুদ্ধার যাত্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবে চিহ্নিত করা এই অনুষ্ঠানে পবিত্র সেপালচারের অশ্বারোহী নাইট ও ডেমরাও উপস্থিত থাকবেন।
দশম শতাব্দীতে কনস্টান্টিনোপোলে স্থানান্তরিত হওয়ার আগে পঞ্চম শতাব্দীতে জেরুজালেমের তীর্থযাত্রীরা এই ঐতিহাসিক নিদর্শনটির কথা প্রথম উল্লেখ করেন। এরপর ১২৩৯ সালে এটি অধিগ্রহণ করেন ফ্রান্সের রাজা নবম লুই। তিনি এটি প্যারিসে নিয়ে আসেন এবং সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে সান্তে-চাপেল কমিশন করার আগে নটরডেমে রাখেন। পরে তা আবার নটরডেমে ফেরত পাঠানো হয়।
২০১৯ সালের ১৫ এপ্রিল নটরডেমে আগুন লাগলে অন্যান্য প্রাচীন নিদর্শনের পাশাপাশি এটিও একটি সিল করা বাক্সে সংরক্ষণ করা ছিল। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের তৎপরতায় এটি গ্রাস করার আগেই আগুন নির্বাপিত হয়।
আগামী ১০ জানুয়ারি থেকে গুড ফ্রাইডে (১৮ এপ্রিল) পর্যন্ত প্রতি শুক্রবার জনসাধারণের শ্রদ্ধার জন্য মুকুটটি প্রদর্শিত হবে। তারপর থেকে প্রতি মাসের প্রথম শুক্রবার সেটি নিয়মিত প্রদর্শিত হবে।
১ মাস আগে
আসাদের পতন: সিরীয়দের এখনই আশ্রয় দেবে না ইউরোপের একাধিক দেশ
বাশার আল আসাদের পতনের পর সিরিয়ায় অস্পষ্ট রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে দেশটির নাগরিকদের আশ্রয়ের আবেদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছে জার্মানিসহ একাধিক ইউরোপীয় দেশ।
এ বিষয়ে সোমবার জার্মানির অভিবাসন ও রিফিউজি বিষয়ক দপ্তর জানিয়েছে, (সিরিয়া থেকে) ৪৭ হাজারের বেশি (আশ্রয়ের) আবেদন এসেছে, যেগুলো অনুমোদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়েছে। তবে দেশটির পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলে আবেদনগুলো পুনর্মূল্যায়ন করে ফের সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
জার্মানির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জোনিয়া কক বলেছেন, (বিদেশিদের) আশ্রয় দেওয়ার বিষয়ে প্রতিটি ঘটনা আলাদাভাবে বিবেচনা করা হয়। সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে আবেদনকারীর দেশের পরিস্থিতিও মূল্যায়ন করা হয়ে থাকে। সিরিয়ার বর্তমান অবস্থার মতো পরিস্থিতি যদি অস্পষ্ট হয়, সেক্ষেত্রে অন্যান্য দেশের আবেদনগুলো অগ্রাধিকার পায়।
জার্মান কর্মকর্তারা বলছেন, আসাদের পতন ২০১০ দশকের মাঝামাঝি সময় থেকে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জার্মানিতে আশ্রয় নেওয়া সিরীয়দের ওপর কী প্রভাব ফেলবে, তা বলার সময় এখনও আসেনি।
জার্মানির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, চলতি বছরের ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত দেশটিতে ৯ লাখ ৭৪ হাজার ১৩৬ জন সিরীয় নাগরিক রয়েছেন। তাদের বেশিরভাগেরই কোনো না কোনো শরণার্থী বা অন্য ধরনের সুরক্ষিত মর্যাদা রয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নান্সি ফায়েজার বলেছেন, (আসাদ ক্ষমতায়) ফিরে আসবেন কিনা, সে সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করা এখনই সম্ভব নয় এবং এই ধরনের অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে এটি অনুমান করাও ঠিক হবে না।
আরও পড়ুন: দেশ ছেড়েছেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আসাদ
এদিকে, জার্মানির প্রতিবেশী দেশ অস্ট্রিয়ার চ্যান্সেলর কার্ল নেহামারও দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে সিরীয়দের আশ্রয় আবেদনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখতে বলেছেন।
দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলেকজান্ডার শালেনবেয়ার্গ বলেন, ‘আশ্রয় ও পরিবারের পুনর্মিলন কার্যক্রম স্থগিত করতে প্রথমে সত্য প্রতিষ্ঠা করা গুরুত্বপূর্ণ। (সিরিয়ায়) পরিস্থিতি শান্ত হওয়া পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করতে হবে, যাতে আমরা দেখতে পারি কী ঘটছে এবং পরবর্তীতে এর কী প্রভাব পড়ে।
সিরিয়া থেকে পাওয়া আশ্রয় আবেদনগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত স্থগিতের কথা জানিয়েছে সুইডেনও। দেশটির অভিবাস সংস্থা বলেছে, আবেদনকারীদের নিরাপত্তা চাওয়ার কারণগুলো এই মুহূর্তে মূল্যায়ন করা সম্ভব নয়।
এই বিরতি কতদিনের জন্য, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট করে কিছু বলা হয়নি। তবে ২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালেবানের ক্ষমতায় ফিরে আসার সময়ও একই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছে তারা।
এছাড়া, সিরীয়দের বিষয়ে ফিনল্যান্ডও তাদের সিদ্ধান্ত স্থগিত রাখার কথা জানিয়েছে।
এ বিষয়ে ফিনল্যান্ডের সরকারি চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দেশটির অভিবাসন পরিষেবার আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বিভাগের পরিচালক আন্টি লেহটিনেন বলেছেন, এ (সিরীয়দের) বিষয়ে আবার কবে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করা হবে, তা এখনও ঠিক হয়নি।
একই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে নরওয়ের অভিবাসন অধিদপ্তর বলেছে, পরবর্তী নোটিশ না দেওয়া পর্যন্ত তারা সিরিয়া থেকে আসা আশ্রয়ের আবেদন স্থগিত রেখেছে।
এ ছাড়াও, জার্মানির কার্যক্রম পদাঙ্ক অনুসরণ করার কথা বিবেচনা করছে বলে জানিয়েছে ফ্রান্স।
দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, আমরা সিরিয়া থেকে আসা আশ্রয়ের আবেদনগুলো স্থগিতের বিষয়ে কাজ করছি। আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এ বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্তে পৌঁছাব।
ফ্রান্সে সিরিয়ার নাগরিকদের ৪৫০টি আবেদন বিচারাধীন রয়েছে বলেও জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
১ মাস আগে
ইতালিতে তেলের ডিপো বিস্ফোরণে নিহত বেড়ে ৪
ইতালির তুস্কানি অঞ্চলের একটি জ্বালানি তেলের ডিপোতে ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর মঙ্গলবার আরও দুটি লাশ উদ্ধার করেছেন উদ্ধারকারীরা। এ নিয়ে এই দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে চারজনে দাঁড়াল।
ফ্লোরেন্সের উত্তরে ইএনআইয়ের একটি তেলের ডিপোতে সোমবার বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরনের পর বাতাসে ধোঁয়ার কুণ্ডলী এমনভাবে ছড়িয়ে পড়ে যে কয়েক মাইল দূর থেকে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বড় ধরনের বিস্ফোরণ ও কম্পন অনুভূত হয়েছে।
বিস্ফোরণে একটি ভবন ধসে পড়ে, যেখানে একটি অফিস ছিল। ভবনটির একজন এখনও নিখোঁজ রয়েছেন। এছাড়া আরও ১৪ জন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলে জানিয়েছেন তুস্কানির গভর্নর ইউজেনিও জিয়ানি।
বিস্ফোরণের পর স্থানীয় বাসিন্দাদের ঘরের জানালা বন্ধ রাখার পরামর্শ দেয় প্রশাসন। চারদিক ধোঁয়ায় ঢেকে যাওয়ায় আঞ্চলিক ট্রেন চলাচলও সাময়িকভাবে বিঘ্নিত হয়।
কালেনসানো শহরের ডিপোতে বিস্ফোরণের কারণ তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে ক্ষতিগ্রস্ত ইএনআই তেল কোম্পানি।
১ মাস আগে
রাশিয়ার হামলায় ইউক্রেনে নিহত ১২, আহত ৩৯
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলায় অন্তত ১২ জন নিহত ও ৩৯ জন আহত হয়েছে।
দেশটির জরুরি সেবা বিভাগ জানিয়েছে, কেবল দক্ষিণাঞ্চলীয় জাপোরিঝঝিয়া শহরেই গাইডেড বোমা হামলায় ১০ জন নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছে। হামলায় ২৫০ বর্গমিটার এলাকাজুড়ে আগুন ছড়িয়ে পড়ে, যাতে ছয়টি গাড়িতে আগুন ধরে যায়। অবশ্য পরে তা নিভিয়ে ফেলা হয়।
অপরদিকে, ইউক্রেনের মধ্যাঞ্চলীয় ক্রিভি রিহ শহরে একটি বেসামরিক প্রশাসনিক ভবনে একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানলে দুজন নিহত ও ১৯ জন আহত হয় বলে জানিয়েছেন শহরটির প্রতিরক্ষা কাউন্সিলের প্রধান ওলেকজান্ডার ভিলকুল।
ভিলকুল বলেন, হামলায় ছয়টি আবাসিক ভবন, পাঁচটি ব্যক্তিগত বাড়ি ও বেশ কয়েকটি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
১ মাস আগে