ইউরোপ
ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে ব্রিটেনের প্রতি লন্ডনের মেয়রের আহ্বান
ফিলিস্তিনকে অবিলম্বে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে ব্রিটেনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন লন্ডনের মেয়র সাদিক খান। যা ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকটের মধ্যে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমারের ওপর চাপ আরও বাড়িয়েছে।
বুধবার (২৩ জুলাই) সামাজিক মাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে সাদিক খান গাজা পরিস্থিতিকে অত্যন্ত মর্মান্তিক হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি বলেন, ‘গাজায় বর্তমানে ক্ষুধার্ত শিশুরা ধ্বংসস্তূপের মধ্যে খাবার খুঁজছে। এদিকে, খাবারের সন্ধানে বের হওয়া মানুষদের নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করছে ইসরায়েলি সেনারা।’
পোস্টে তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়—যার মধ্যে আমাদের সরকারও রয়েছে—ইসরায়েলি সরকারকে এই নৃশংস ও অযৌক্তিক হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করতে এবং জরুরি মানবিক সহায়তা ঢুকতে দেওয়ার বিষয়ে আরও কঠোর চাপ দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এমন ন্যাক্কারজনক হত্যাযজ্ঞ কোনোভাবেই যুক্তিযুক্ত করার সুযোগ নেই।’
লন্ডনের মেয়র বলেন, ‘যুক্তরাজ্যকে অবিলম্বে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিতে হবে। যদি ফিলিস্তিন নামে কোনও রাষ্ট্রই না থাকে, তাহলে দ্বিরাষ্ট্রীয় সমাধানের কোনো ভিত্তি নেই।’
পড়ুন: ‘গাজায় বোমার চেয়ে বিধ্বংসী হয়ে উঠেছে ক্ষুধা’
সাদিক খানের এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এলো, যখন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টারমারের নেতৃত্বে নিজ দল লেবার পার্টির ভেতর থেকেই চাপ বাড়ছে। দলটির একাধিক সিনিয়র মন্ত্রী ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়ার মাধ্যমে ইসরায়েলের ওপর চাপ বাড়াতে এবং বেসামরিক প্রাণহানি ঠেকাতে আন্তর্জাতিক উদ্যোগে নেতৃত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
ব্রিটিশ পার্লামেন্টে দেওয়া এক ভাষণে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ওয়েস স্ট্রিটিংও একই সুরে বলেন, ‘আমাদের ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়া উচিত। ইসরায়েল যে আত্মরক্ষার কথা বলে, সে বৈধ আত্মরক্ষার সীমা বহু আগেই ছাড়িয়ে গেছে।’
এদিকে, ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস, সেভ দ্য চিলড্রেন, অক্সফামসহ ১১১টি মানবিক সংস্থা এক বিবৃতিতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ‘ক্ষুধাস্ত্র’ ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছে, যা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।’
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি বলেন, ‘ক্ষুধার্ত বেসামরিক মানুষদের গুলি করে হত্যা করার দৃশ্য দেখে আমি হতভম্ব, বেদনায় ভারাক্রান্ত।’ সম্প্রতি তিনি জানান, যুক্তরাজ্য দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান নিশ্চিত করতে ভূমিকা পালন করবে।
১৫৮ দিন আগে
ক্রুসহ ৪৯ যাত্রী নিয়ে রুশ বিমান নিখোঁজ
রাশিয়ার সুদূর পূর্বাঞ্চলের আমুর এলাকা থেকে একটি যাত্রীবাহী বিমান নিখোঁজ হয়েছে। বিমানটিতে ছয়জন ক্রুসহ ৪৯ জনের মতো যাত্রী ছিলেন। আঞ্চলিক গভর্নরের বরাতে ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান এমন খবর দিয়েছে।
স্থানীয় জরুরি সেবা বিষয়কমন্ত্রী বলেন, সাইবেরিয়াভিত্তিক আনগারা নামের একটি এয়ারলাইন বিমানটি পরিচালন করতো। এটির নাম এএন-২৪। কিন্তু আমুরের তিয়ান্দা শহরের আসার সময় এটি রাডারের পর্দা থেকে হারিয়ে যায়।
চীনের সীমান্তবর্তী অঞ্চল আমুরের গভর্নর ভাসিলি অর্লভ বলেন, বিমানটিতে ৪৩ যাত্রী ছিলেন, যাদের মধ্যে পাঁচটি শিশুও রয়েছে। এছাড়াও ছয় ক্রু সদস্য ছিলেন আকাশযানটিতে।
পড়ুন: ‘গাজায় বোমার চেয়ে বিধ্বংসী হয়ে উঠেছে ক্ষুধা’
টেলিগ্রামে দেওয়া এক বার্তায় তিনি বলেন, বিমানটির খোঁজে প্রয়োজনীয় সব বাহিনী নিয়োগ করা হয়েছে। যন্ত্রপাতিও প্রস্তুত রয়েছে।
জরুরি সেবা বিভাগের বরাতে রুশ বার্তা সংস্থা ইন্টারফ্যাক্স জানিয়েছে, খাবারোভস্ক-ব্লাগোভেশচেনস্ক-তিয়ান্দা রুটে একটি এএন-২৪ যাত্রীবাহিনী বিমান উড়ছিল।
কিন্তু চূড়ান্ত গন্তব্যে পৌঁছানোর আগেই নিরাপত্তা তল্লাশি অতিক্রম করতে এটি ব্যর্থ হয়েছে। বিমানটির সঙ্গে এখন কোনো যোগাযোগ নেই।
১৫৮ দিন আগে
রোমে গ্যাস স্টেশনে ভয়াবহ বিস্ফোরণ, আহত অন্তত ২৯
ইতালির রাজধানী রোমের একটি গ্যাস স্টেশনে ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এতে, অন্তত ২৯ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
মার্কিন দৈনিক দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের খবর অনুযায়ী, শুক্রবার (৪ জুলাই) শহরের পূর্বাঞ্চলের ওই গ্যাস স্টেশনে রাখা জ্বালানির ট্যাংক বিস্ফোরিত হয়।
এদিকে, বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, বিস্ফোরণে ১০ পুলিশ কর্মকর্তা এবং একজন অগ্নিনির্বাপক কর্মীসহ কমপক্ষে ২৭ জন আহত হয়েছেন।
স্থানীয়রা জানান, পুরো রোম শহর জুড়ে বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়।
রোম পুলিশ জানায়, রোমের স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ১৫ মিনিটের দিকে এই বিস্ফোরণ ঘটে। ওই স্টেশনে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস (এলপিজি) বিক্রি করা হতো।
আরও পড়ুন: আফগানিস্তানের তালেবান সরকারকে প্রথম দেশ হিসেবে স্বীকৃতি রাশিয়ার
বিস্ফোরণের পরের মুহূর্তে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, বিস্ফোরণের প্রচণ্ডতায় দেয়ালের প্লাস্টার ছিটকে শত শত গজ দূর পর্যন্ত গিয়ে পড়েছে। আরেকটি ভিডিওতে পাশের একটি ভবনের বাসিন্দা জানালার কাচ ভেঙে পড়ার দৃশ্য এবং একটি দরজার ফ্রেম আলগা হয়ে যাওয়ার ঘটনা তুলে ধরেন।
ইতালির ফায়ার সার্ভিসের মুখপাত্র লুকা কারি বলেন, বিস্ফোরণের আগে সেখানে আরেকটি ট্রাক দুর্ঘটনার শিকার হয়। ওই ঘটনার পরই ফায়ার সার্ভিস কর্মী ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন। ঠিক তখনই বিস্ফোরণটি ঘটে।
তিনি আরও জানান, ‘ঠিক কী কারণে বিস্ফোরণ হয়েছে—তা এখনও জানা যায়নি। তবে বিস্ফোরণের পর স্টেশনের পেছনের একটি পার্কিং লটে আগুন ধরে যায়। সেখানে জব্দ করা গাড়ি রাখা ছিল।
ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি ও রোমের মেয়র রবার্তো গুয়ালতিরি জানান, তারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন।
প্রধানমন্ত্রী মেলোনি আহতদের প্রতি সমবেদনা জানান এবং দুর্গত এলাকা নিরাপদ করতে কাজ করা উদ্ধারকর্মীদের ধন্যবাদ জানান।
১৭৭ দিন আগে
স্ত্রীর ‘চড় থাপ্পড়’ খেলেন, না মজা করলেন প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ!
বিদেশের মাটিতে ফরাসি ফার্স্ট লেডি ব্রিজিটের আক্রমণের শিকার হয়েছেন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। এমন একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। পরে সোমবার অবশ্য ঘটনাটির ব্যাখ্যা দিয়েছেন ম্যাক্রোঁ। বলেছেন, তারা মজা করছিলেন।
চলতি সপ্তাহে তারা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সফর শুরু করে ভিয়েতনামে বিমান থেকে নামার সময় ঘটনাটি ঘটে। ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, স্ত্রী ব্রিজিট দুই হাত দিয়ে ম্যাক্রোঁর মুখ ধরে ধাক্কা দিচ্ছেন, ম্যাক্রোঁ মুখ সরিয়ে নিচ্ছেন। আর মুহূর্তেই ফ্রান্সের খবরের শিরোনাম হয়ে যায় এটি। বিমানের খোলা দরজায় ধারণা করা ওই ভিডিওতে গণমাধ্যম প্রযু্ক্তি ব্যবহার করে বোঝার চেষ্টা করছিল যে, তারা আসলে কথোপকথন করছিলেন।
ঘটনাটি নিয়ে দৈনিক লে প্যারিসিয়েন সংবাদপত্রের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত একটি খবরের শিরোনাম ছিল ‘থাপ্পড় না ঝগড়া’? ভিয়েতনামে ম্যাক্রোঁ ও তার স্ত্রী ব্রিজিটের বিমান থেকে নামার ওই ঘটনার ছবিটি ব্যাপক মন্তব্য কুড়ায়।
ম্যাক্রোঁ পরে সাংবাদিকদের বলেন, তারা ২০০৭ সালে বিয়ে করেছেন। যে স্কুলে তারা পরিচিত হয়েছিলেন তারা সেখানে শিক্ষিকা ও ছাত্র ছিলেন। তারা কেবল মজার ছলে ঠাট্টা-মশকরা করছিলেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা ঝগড়া করিনি, মজা করেছি।’ ঘটনাটিকে এক ধরনের অতিরঞ্জিত করা হচ্ছে বলেও দাবি করেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট।
আরও পড়ুন: দ্বিতীয় মেয়াদে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন ম্যাক্রোঁ
২১৬ দিন আগে
ইসরায়েলের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বাণিজ্য আলোচনা স্থগিত
গাজায় চলমান সহিংসতা বন্ধে অধিকৃত পশ্চিম তীরে বসতি স্থাপনে ইসরায়েলি সেটেলারদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পাশাপাশি ইসরায়েলের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য আলোচনা স্থগিত করেছে যুক্তরাজ্য। একই সঙ্গে এক দিনেরও কম সময়ের মধ্যে গাজায় চলমান ইসরায়েলের নতুন সামরিক অভিযান বন্ধ করা না হলে আরও ‘কঠোর পদক্ষেপ’ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে যুক্তরাজ্য।
মঙ্গলবার (২০ মে) যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমনসে এই ঘোষণা দেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি।
তিনি বলেন, ‘গাজা ও অধিকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েল যেসব কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে, সেগুলো গুরুতর ও অগ্রহণযোগ্য। এ পরিস্থিতিতে তাদের সঙ্গে বিদ্যমান বাণিজ্য চুক্তি এগিয়ে নেওয়ার আলোচনার কোনো সুযোগ নেই।’
এর আগে, গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশে প্রায় তিন মাস ধরে চলা অবরোধের কারণে দুর্ভিক্ষের শঙ্কা তৈরি হলে তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে যুক্তরাজ্য। সোমবার (১৯ মে) সীমিত পরিসরে শিশুখাদ্যসহ জরুরি পণ্য গাজায় প্রবেশ করতে দেয় ইসরায়েল। এক যৌথ বিবৃতিতে ওই সহায়তাকে ‘একদম অপ্রতুল’ বলে সমালোচনা করে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও কানাডা।
সম্প্রতি জাতিসংঘসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো গাজায় দুর্ভিক্ষ ও মানবিক বিপর্যয়ের হুঁশিয়ারি দিলে মিত্রদেশগুলো থেকে ইসরায়েলের ওপর চাপ আসতে শুরু করে। এমনকি তাদের পরম মিত্র যুক্তরাষ্ট্রও গাজায় খাদ্যসংকট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
আরও পড়ুন: টানা তিনমাস পর গাজায় প্রবেশ করল মানবিক সহায়তা
ইসরায়েলের এ ধরনের কার্যকলাপের সমালোচনা করে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এভাবে ত্রাণ আটকে রাখা, যুদ্ধ ছড়িয়ে দেওয়া, বন্ধু ও অংশীদারদের উদ্বেগ অগ্রাহ্য করা অমার্জনীয়। এই ধরনের কার্যকলাপ বন্ধ হতেই হবে।’ ইতিহাস ইসরায়েলের বিচার করবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
পাশাপাশি ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত সিপি হোতোভেলিকেও তলব করে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সে সময় গাজায় ১১ সপ্তাহ ধরে চলা ত্রাণ অবরোধকে ‘নিষ্ঠুর ও ক্ষমার অযোগ্য’ বলে নিন্দা জানান যুক্তরাজ্যের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক মন্ত্রী হ্যামিশ ফ্যালকোনার।
অন্যদিকে, গাজায় চলমান যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ইসরায়েলের সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়ন্ত্রণকারী চুক্তি পর্যালোচনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান কাইয়া কাল্লাস।
তিনি বলেন, ‘ইইউয়ের বেশিরভাগ দেশই গাজার জনগণের এই কষ্ট আর দেখতে চায় না।’ অবশ্য এ বিষয়টি নিয়ে সুস্পষ্ট করে কিছু বলেননি তিনি।
এদিকে, ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ল্যামি জানান, তিন ব্যক্তি, দুটি অবৈধ বসতি ও দুটি সহিংসতা-সমর্থনকারী সংগঠনের ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে যুক্তরাজ্য। এ ছাড়া, এই অবৈধ বসতিগুলো ইসরায়েল সরকারের সরাসরি সমর্থনেই পশ্চিম তীরে ছড়িয়ে পড়ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য সফর শেষ হতেই গাজা, ইয়েমেনে ইসরায়েলের হামলা জোরাদার
তবে এই নিষেধাজ্ঞাকে ‘অযৌক্তিক ও দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করেছেন ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওরেন মারমোরস্টাইন। তার দাবি, ‘যুক্তরাজ্য এসব বাহানা দিচ্ছে, আসলে তারা মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা এগিয়ে নিতে চাচ্ছিল না।’
ব্রিটিশ পার্লামেন্টে প্রতিক্রিয়া ও স্টারমারের অবস্থান
হাউস অব কমনসে ডেভিড ল্যামির বক্তব্যকে অনেকেই স্বাগত জানিয়েছেন। পাশাপাশি ইসরায়েলের ওপর আরও কঠোর পদক্ষেপের আহ্বান জানিয়েছেন অনেকে। এর মধ্যে রয়েছে— ইসরায়েলের বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তাবের মতো বিষয়।
তাছাড়া, ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডকে ‘গণহত্যা’ হিসেবে চিহ্নিত করার দাবি জানিয়েছেন ব্রিটিশ পার্লামেন্টের কয়েকজন সদস্য। তবে ল্যামি একে ‘চরমপন্থা’ ও ‘দানবীয়’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
অবশ্য ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নেওয়া যুক্তরাজ্যের এই পদক্ষেপকে হামাসের প্রতি পক্ষপাত বলেও সমালোচনা করেছেন কয়েকজন সংসদ সদস্য। তার জবাবে ল্যামি বলেন, যারা যুদ্ধ হাজার হাজার শিশুকে হত্যা করেছে, তাদের বিরোধিতা করা মানে হামাসকে পুরস্কৃত করা নয়।’
এদিকে, গাজায় শিশুদের দুর্ভোগকে ‘সম্পূর্ণরূপে অসহনীয়’ বলে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। পাশাপাশি যুদ্ধবিরতির আহ্বানও পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
স্টারমার বলেন, ‘আমি প্রকাশ্যে বলতে চাই, আমরা ইসরায়েলের এই সহিংসতা বৃদ্ধিতে আতঙ্কিত।’
সোমবার গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ পরিচালনা ও পশ্চিম তীরের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে যৌথ বিবৃতি দেন কিয়ার স্টারমার, ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাক্রোঁ ও কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি। ইসরায়েলের এমন পদক্ষেপের জন্য নিষেধাজ্ঞার মতো কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তারা। পাশাপাশি গাজা উপত্যকায় নির্মম হামলা বন্ধ করার জন্য ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানান।
আরও পড়ুন: গাজায় রাতভর ইসরায়েলি হামলায় সাংবাদিকসহ নিহত ৮২
এ বিবৃতির নিন্দা জানিয়ে একে ‘৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ওপর গণহত্যামূলক হামলার জন্য এক বিশাল পুরস্কার’ বলে তিরস্কার করেছে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
তবে স্টারমার বলেন, হামাসের হাতে থাকা জিম্মিদের মুক্ত করার একমাত্র উপায় হলো যুদ্ধবিরতি।
তার ভাষ্যে, ‘গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবাহ বাড়াতে হবে, কারণ ইসরায়েল যে পরিমাণ ত্রাণ ঢুকতে দিচ্ছে তা একেবারেই অপর্যাপ্ত। এই যুদ্ধ অনেক বেশি দীর্ঘস্থায়ী হয়েছে। আমরা গাজার মানুষদের না খেয়ে মারা যেতে দিতে পারি না।’
ইসরায়েল যে সীমিত ত্রাণ গাজায় প্রবেশ করতে দিয়েছে, তাকে ক্ষুধার্ত, তৃষ্ণার্ত প্রায় ২০ লাখ গাজাবাসীর জন্য ‘জলাশয়ে একটি বিন্দুর মতো’ বলে অভিহিত করেছেন জাতিসংঘের মানবিক সহায়তা প্রধান টম ফ্লেচার।
ফ্রান্স-ইসরায়েল সম্পর্কের টানাপোড়েন
এদিকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের আগ্রাসনকে ঘিরে ফ্রান্স-ইসরায়েল সম্পর্কের টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে। গত বছরের অক্টোবর মাসে এক রেডিও সাক্ষাৎকারে গাজায় ব্যবহারের জন্য অস্ত্র সরবরাহ বন্ধের আহ্বান জানান ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট। তাছাড়া, ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা কোম্পানিগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের চেষ্টা করে ফ্রান্স। এ নিয়ে দুই দেশের সম্পর্কে উত্তেজনা দেখা দেয়। এ আহ্বানের কড়া সমালোচনা করেন নেতানিয়াহু।
সম্প্রতি, গাজায় খাদ্যসংকটকে কেন্দ্র করে আবারও ইসরায়েলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ফ্রান্স।
২২২ দিন আগে
যুক্তরাজ্যের সাবেক সামরিক ঘাঁটিতে আগুনে নিহত ৩
যুক্তরাজ্যের একটি সাবেক সামরিক ঘাঁটিতে আগুনে তিনজন নিহত হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ২ জন অগ্নিনির্বাপক কর্মী ও একজন বেসামরিক নাগরিক রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) অক্সফোর্ডের কাছে বাইসেস্টারে প্রাক্তন রয়েল এয়ার ফোর্স ঘাঁটির একটি বড় গুদামে এই অগ্নিকাণ্ড হয় বলে জানিয়েছে দেশটির কর্মকর্তারা।
শুক্রবার (১৬ মে) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিমান ও মোটর স্পোর্টসের ইতিহাস স্মরণে ব্যবহৃত একটি প্রাক্তন ব্রিটিশ সামরিক ঘাঁটিতে অগ্নিকাণ্ডে দুইজন দমকল কর্মী ও একজন বেসামরিক লোক নিহত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: মুন্সীগঞ্জে আগুনে শতাধিক দোকান ভস্মীভূত
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অগ্নিকাণ্ডে বিশাল ধোঁয়ার কুণ্ডলী কয়েক মাইল দূর থেকে দেখা গেছে। বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পেয়েছিলেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার এক্সে এক পোস্টে বলেন, ‘আমাদের অগ্নিনির্বাপক কর্মীদের সাহসিকতা আশ্চর্যজনক। আশা করি যারা হাসপাতালে আছেন তারা সম্পূর্ণ ওদ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন।’
অক্সফোর্ডশায়ার কাউন্টি কাউন্সিল জানিয়েছে, অগ্নিকাণ্ডে গুরুতর আহত আরও দুইজন অগ্নিনির্বাপক কর্মীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অক্সফোর্ডশায়ার কাউন্টি কাউন্সিল জানিয়েছে, আরও দুইজন অগ্নিনির্বাপক কর্মী গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
শুক্রবার সকালে কর্মীরা আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে।
২২৬ দিন আগে
যুদ্ধবিরতি আলোচনার জন্য তুরস্কে জেলেনস্কি, যাননি পুতিন
রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চলমান যুদ্ধের অবসানে কূটনৈতিক উদ্যোগের অংশ হিসেবে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগানের সঙ্গে বৈঠক করতে তুরস্কের রাজধানী ইস্তাম্বুলে গেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সরাসরি শান্তি আলোচনা থেকে সরে যাওয়ার পর—তা পুনরায় শুরুর উদ্যোগের অংশ হিসেবে জেলেনস্কি এই সফর করছেন।
জেলেনস্কি বলেন, তিনি ইস্তাম্বুলে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে সরাসরি শান্তি আলোচনায় যোগ দিতে প্রস্তুত।
বুধবার(১৪ মে) জেলেনস্কি বলেন, ‘শান্তি আলোচনার জন্য রাশিয়া থেকে কে আসবেন—তা দেখার জন্য আমি অপেক্ষা করছি। এরপর আমি সিদ্ধান্ত নেব—ইউক্রেনের কি পদক্ষেপ নেওয়া উচিৎ। এখন পর্যন্ত গণমাধ্যমের বরাতে তাদের কাছ থেকে পাওয়া ইঙ্গিতগুলো বিশ্বসযোগ্য নয়।’
তবে ক্রেমলিন ঘোষণা করেছে, বৃহস্পতিবার ইস্তাম্বুলের শান্তি আলোচনায় রাশিয়ার প্রতিনিধি দলের সঙ্গে প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন যোগ দেবেন না। তবে, রাশিয়ার প্রতিনিধিত্ব করবেন দেশটির প্রেসিডেন্টের সহকারী ভ্লাদিমির মেডিনস্কি।
আরও পড়ুন: ইউক্রেনে ৭২ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা রাশিয়ার
আনাতোলিয়ায় ন্যাটোর অনানুষ্ঠানিক একটি বৈঠকে তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান বলেন, ‘ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত আলোচনা আশা করি আমাদের একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে।’
এরআগে ২০২২ সালের মার্চে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সরাসরি আলোচনা হয়েছিল। ওই বৈঠকে উভয়পক্ষ যুদ্ধ বন্ধে একমত হতে পারেননি।
এবারের শান্তি আলোচনায় পুতিনের যোগ না দেওয়াতে পশ্চিমারা তার ব্যাপক সমালোচনা করছেন। ক্রেমলিন সত্যিই ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান প্রচেষ্টায় আগ্রহী নয় বলেও প্রশ্ন তুলছেন তারা।
২২৭ দিন আগে
আজই শোনা যেতে পারে নতুন পোপের নাম: গিওভান্নি বাতিস্তা
আজ সন্ধ্যায় নতুন পোপ নির্বাচিত হতে পারেন বলে জানিয়েছেন কলেজ অব কার্ডিনালের ডিন গিওভান্নি বাতিস্তা রে।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) ইতালীয় সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমি আশা করছি, আজ সন্ধ্যায় যখন আমি রোমে ফিরব, ততক্ষণে সিস্টিন চ্যাপেলের চিমনি দিয়ে সাদা ধোঁয়া বের হওয়া শুরু হবে।’
সকালে একবার কার্ডিনালরা ভোট দিয়েছেন। কিন্তু তাতে কোনো সিদ্ধান্ত আসেনি। দুপুরের আগে কালো ধোঁয়া বের হতে দেখা গেছে চিমনি দিয়ে।আরও পড়ুন: পোপ ফ্রান্সিসের উত্তরসূরি নির্বাচন করা হবে যেভাবে
গিওভান্নি বাতিস্তা রের বয়স এখন ৯১ বছর। পোপ হওয়ার জন্য আশি বছরের কম বয়স হতে হবে। যে কারণে তিনি কার্ডিনালের কনক্লেভে অংশ নিতে পারেননি। পোপ হওয়ার যোগ্য ১৩৩ কার্ডিনালকে নিয়ে গঠিত কলেজ অব কার্ডিনালস।
কোনো ধরনের মনোযোগ নষ্ট হওয়া ছাড়াই যাতে প্রার্থনা ও ধ্যান করতে পারেন, পাশাপাশি পোপ নির্বাচনে ভোট দিতে পারেন, সে কারণে ভ্যাটিকানের ভেতরে কার্ডিনালদের আলাদা করে রাখা হয়েছে।
নতুন পোপ নির্বাচিত হওয়ার জন্য দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাগবে। পোপ নির্বাচিত হওয়ার আগ পর্যন্ত সকাল ও বিকালে নিয়মিত ভোট হবে।
ভোট হওয়ার পর একটি বিশেষ স্টোভে ব্যালট পুড়িয়ে দেওয়া হয়। কালো ধোঁয়া বের হওয়ার অর্থ হচ্ছে এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত আসেনি, অর্থা পোপ নির্বাচিত হননি। আর সাদা ধোঁয়া বের হলে বুঝতে হবে নতুন পোপ নির্বাচিত হয়েছেন।
পোপ নির্বাচনের ক্ষেত্রে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রার্থী নেই। তবে বেশ কয়েকজন কার্ডিনাল আছেন, যারা পোপ হওয়ার যোগ্যতা রাখেন।
তাদের মধ্যে আছেন, কনক্লেভের দেখভাল করা কার্ডিনাল পিয়াত্রিও প্যারোলিন, এশিয়ান ফ্রান্সিসখ্যাত কার্ডিনাল লুইস তাগলা, কঙ্গোর রক্ষণশীল কার্ডিনাল ফ্রিডোলিন এমবোঙ্গো বেসুঙ্গু ও ইতালীয় পিয়ারবাতিস্তা পিজ্জাবালা।
এদিকে নতুন পোপের নাম শোনার জন্য অধীর হয়ে অপেক্ষা করতে দেখা গেছে অনেককেই। রোমের বাসিন্দা প্রিসিলা পার্লান্তি বলেন, ‘এই অপেক্ষা অসাধারণ।’
২৩৪ দিন আগে
মার্কিন বিজ্ঞানীদের টানতে প্রণোদনা ঘোষণা করতে যাচ্ছে ইউরোপ
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নানা বিতর্কিত পদক্ষেপে ক্ষতিগ্রস্ত বিজ্ঞানীদের ইউরোপে নিয়ে যেতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে ফ্রান্স ও ইউরোপীয় কমিশন (ইইউ)। তাদের ইউরোপে থিতু করতে প্রণোদনা ঘোষণা করতে যাচ্ছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমান্যুয়েল ম্যাঁখো ও ইইউ প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন দার লিয়েন।
স্থানীয় সময় সোমবার (৫ মে) সকালে প্যারিসের সোরবোন বিশ্ববিদ্যালয়ে ইউরোপীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃবৃন্দ ও গবেষকদের সঙ্গে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এই প্রণোদনার ঘোষণা দেওয়ার কথা রয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলোর তহবিল কাঁটছাটসহ মার্কিন প্রশাসনের আরোপিত বেশ কিছু নীতির ফলে নিজেদের কাজের ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কিত দেশটির অনেক গবেষক। সেসব মার্কিন গবেষকদেরই ইউরোপে আমন্ত্রণ জানাতেই ইউরোপীয় কমিশনার ও একাডেমিকদের মিলিত উদ্যোগে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলা হয়, একাডেমিক স্বাধীনতা হুমকির মুখে থাকায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। ইউরোপকে একটি আকর্ষণীয় মহাদেশ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে এই বিবৃতিতে।
দেশটির এক কর্মকর্তা বলেন, ‘ইউরোপ এমন একটি জায়গা, যেখানে গবেষণার স্বাধীনতা রয়েছে, কোনো বিষয়ই এখানে নিষিদ্ধ নয়।’
ফ্রান্স ও ইউরোপের এই উদ্যোগ গবেষণার স্বাধীনতার নিশ্চয়তা দেবে বলে মনে করেন তিনি। সোমবারে আয়োজিত ‘চুজ ইউরোপ ফর সায়েন্স’ শীর্ষক অনুষ্ঠানটিতে স্বাস্থ্য (সংক্রামক রোগ), জলবায়ু গবেষণা এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিষয়ক বিজ্ঞানীদের আকৃষ্ট করতে ফ্রান্স বিশেষভাবে আগ্রহী বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: গবেষণায় ট্রাম্পের তহবিল বন্ধের প্রতিবাদে বিজ্ঞানীদের বিক্ষোভ এর আগে, এ বিষয়ে ইউরোপীয় কমিশনকে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়ে চিঠি দেয় ১৩টি ইউরোপীয় দেশ। পরে এপ্রিল মাসে ফ্রান্স নিজস্ব উদ্যোগে চুজ ফ্রান্স ফর সায়েন্স চালু করা হয়। এই উদ্যোগের আওতায় আন্তর্জাতিক গবেষকদের জন্য আবেদন প্ল্যাটফর্ম চালু করা হয়।
ফরাসি গবেষণা মন্ত্রণালয় জানায়, কিছু বিদেশি গবেষক ইতোমধ্যেই ফ্রান্সে এসে দেশটির অবকাঠামোর সঙ্গে পরিচিত হচ্ছেন এবং তারা তহবিল ও প্ল্যাটফর্মের অপেক্ষায় আছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে হুমকির মুখে রয়েছেন এমন ও বিদেশে ফরাসি গবেষকদের আকৃষ্ট করতে নতুন একটি কর্মসূচি চালু করেছে ফ্রান্সের শীর্ষ গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর ন্যাচারাল রিসোর্স স্টাডিজ (সিএনআরএস)।
সিএনআরএসের প্রেসিডেন্ট আঁতোয়ান পেতি বলেন, ‘ট্রাম্পের আমেরিকায় যেসব গবেষকরা নিজেদের সন্তানদের বড় করতে চান না, তাদের ফিরিয়ে আনতে এই কর্মসূচি চালু করা হয়েছে।’
এদিকে, মার্চে চালু হওয়া এক্স-মার্সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সেইফ প্লেস ফর সায়েন্স’ কর্মসূচির অধীনে জুন মাসে প্রথম বিদেশি গবেষকরা সেখানে যোগ দেবেন।
মার্চ মাসে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে লেখা এক চিঠিতে ফ্রান্সের উচ্চশিক্ষা ও গবেষণামন্ত্রী ফিলিপ বাতিস্তে বলেন, ‘অনেক নামকরা গবেষক এরইমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। আমরা স্বাভাবিকভাবেই তাদের মধ্যে কিছু সংখ্যককে স্বাগত জানাতে চাই।’
তবে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বে যুক্তরাষ্ট্রে গবেষণায় বিনিয়োগ বহু বছর ধরেই ইউরোপের চেয়ে বেশি। দশকের পর দশক ধরে ইউরোপের বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা কেন্দ্রগুলো বিনিয়োগের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পেছনে রয়েছে।
তাছাড়া তুলনামূলকভাবে কম বেতন ও অনিরাপদ চুক্তির মতো সমস্যাগুলো নিয়ে প্রায়শই অভিযোগ জানিয়ে আসছে ফরাসি গবেষকরা। গড় হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকদের চেয়ে কম বেতন পান ফরাসি গবেষকরা।
আরও পড়ুন: চাঁদের দূরবর্তী অংশের অজানা তথ্য দিলেন বিজ্ঞানীরা
গবেষণা প্রতিষ্ঠানে ভালো চুক্তি, উন্নত বেতন কাঠামো ও সার্বিকভাবে আরও বেশি অর্থায়নের দাবি জানিয়ে আসছে ফ্রান্সের বিভিন্ন শ্রমিক ইউনিয়ন।
জার্মানির আসন্ন চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মেরৎসে গত মাসে বলেন, ‘আমেরিকান সরকার বর্তমানে দেশটির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওপর বলপ্রয়োগ করছে, যার ফলে এখন যুক্তরাষ্ট্রের গবেষকেরা ইউরোপের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। এটি আমাদের জন্য একটি বিশাল সুযোগ।’
২৩৮ দিন আগে
ইউরোপে টিকে থাকার লড়াইয়ে সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা, সংকটে বহুত্ববাদ
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বেশিরভাগ দেশের সরকার মুক্তগণমাধ্যম চর্চায় বাধা সৃষ্টি করছে, গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে দুর্বল করে তুলছে। এতে ইউরোপে গণমাধ্যমের বহুত্ববাদ ও স্বাধীনতা আশঙ্কাজনকভাবে হ্রাস পেতে শুরু করেছে। এমনকি কিছুক্ষেত্রে গণমাধ্যমের অস্তিত্বই সংকটে পড়েছে। সম্প্রতি ইউরোপের মানবাধিকার সংস্থা সিভিল লিবার্টিজ ইউনিয়নের (লিবার্টিজ) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
লিবার্টিজের প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, গণমাধ্যমগুলোর মালিকানা পুঞ্জিভূত হয়ে অল্পসংখ্যক মানুষের হাতে চলে যাওয়ার কারণে এ সংকট শুরু হয়েছে। এতে ইউরোপের বেশিরভাগ দেশে—এমনকি যেসব দেশের গণমাধ্যম বাক-স্বাধীনতার চর্চার জন্য ঐতিহাসিকভাবে পরিচিত ছিল, সেখানেও গণমাধ্যমের কণ্ঠস্বর ক্ষীণ হয়ে আসতে শুরু করেছে।
সম্প্রতি ২১টি দেশ থেকে ৪৩টি মানবাধিকার সংস্থার সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে ইইউয়ের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সম্পর্কিত এই প্রতিবেদনটি প্রস্তুত করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কারোপে ইইউ প্রধানের নিন্দা
প্রতিবেদনের তথ্যমতে, মালিকানায় স্বচ্ছতার অভাব, সরকারের সৃষ্ট চাপ ও সাংবাদিকের প্রতি নানারকম হুমকির কারণে প্রতিনিয়তই গণমাধ্যমগুলো স্বাধীনতা হারাচ্ছে। এসব কারণে ইইউয়ের দেশগুলোর গণমাধ্যমের বহুত্ববাদ অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে।
এ বিষয়ে প্রতিবেদনটির প্রধান সম্পাদক জনাথান ডে বলেছেন,‘গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের মধ্যে দিয়ে সরকার দেশে আইনের শাসন ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দুর্বল করার প্রক্রিয়া শুরু করে থাকে। তাই এ পরিস্থিতি মোটেই বিস্ময়কর নয়।’
ইউরোপের গণমাধ্যমের স্বাধীনতার সুরক্ষার জন্য প্রণীত ‘ইউরোপীয়ান গণমাধ্যম স্বাধীনতা আইন (ইএমএফএ)’ কার্যকর হওয়ার আগেই মুখ থুবড়ে পড়েছে বলে মন্তব্য করেন জনাথান। তিনি বলেন, ‘এই আইনের সফল বাস্তবায়নের ওপর অনেক দেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা সুরক্ষায় সফলতা বা ব্যর্থতা নির্ভর করবে।’
গণমাধ্যম বহুত্ববাদ আসলে কি?
গণমাধ্যম বহুত্ববাদ বলতে আসলে এই ক্ষেত্রে বৈচিত্র্য থাকা বোঝায়। ইউনেস্কোর তথ্যমতে, কোনো দেশে গণমাধ্যম বহুত্ববাদ আছে বলতে বুঝতে হবে, সেখানকার জনগণের কাছে অনেকগুলো বিকল্প মাধ্যম আছে।
আরও পড়ুন: জুলাই অভ্যুত্থানে আক্রান্তদের সহায়তায় ২০ লাখ ইউরো দেবে ইইউ
সংস্থাটির ভাষ্যে, গণমাধ্যম বহুত্ববাদ বলতে এমন একটি অবস্থা বোঝায় যেখানে সরকারি, বেসরকারি কিংবা ব্যক্তিগত মালিকানার গণমাধ্যম থাকবে, পাশাপাশি প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মাধ্যম থাকবে, রেডিও থাকবে, ইন্টারনেটভিত্তিক মাধ্যমসহ অনেক ধরনের বিকল্প থাকবে। সেখানে ভিন্ন ভিন্ন কণ্ঠস্বর তৈরি হবে। সবমিলিয়ে একটি বৈচিত্রপূর্ণ গণমাধ্যম ব্যবস্থা বিদ্যমান থাকবে।
এদিকে, ইউরোপের বেশকিছু দেশের গণমাধ্যমগুলোর মালিকানা অল্পসংখ্যক ধনীর হাতে কেন্দ্রীভূত হয়ে যাচ্ছে বলে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। বিশেষত ক্রোয়েশিয়া, ফ্রান্স, হাঙ্গেরি, নেদারল্যান্ড, স্লোভেনিয়া, স্পেন ও সুইডেনের গণমাধ্যমগুলোর মালিকানা গুটিকয়েক ধনকুবেরের হাতেই সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে।
দেশেগুলোর গণমাধ্যমের মালিকানা নিয়ে স্বচ্ছতা না থাকায় এই সমস্যা আরও তীব্র হয়েছে বলে মনে করেন জনাথান। যেকারণে চলতি বছরের আগস্টের আগেই ইএমএফএর অধীনে জনসাধারণের উদ্দেশ্যে প্রকাশযোগ্য তথ্যসমূহ প্রকাশ করতে বলা হলেও বেশিরভাগ দেশই তা করতে পারেনি।
সাংবাদিক ও সংবাদ উৎসের নিরাপত্তা, গণমাধ্যমের নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর স্বাধীনতা ও মালিকানার ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাধ্যতামূলক ইএমএফএ আইন প্রণয়ণ করা হয়েছে। তবে এই আইনটির পুরোপুরি বাস্তবায়নে বেশিরভাগ দেশ অনিচ্ছুক না হলে বলতে হবে তারা অপ্রস্তুত— মন্তব্য করেন জনাথান ডে।
কোন দেশের কি অবস্থা?
ফ্রান্সের ধনকুবের ভিনসেন্ট বোলোরের হাশেত গ্রুপসহ বেশকিছু প্রকাশনা সংস্থাকে অধিগ্রহণের ঘটনা উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটিতে গণমাধ্যমের বহুত্ববাদ উল্লেখযোগ্যভাবে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।
ইতালিতেও অনেকটা একইরকম পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলে প্রতিবেদনে দেখা গেছে। দেশটির কট্টর ডানপন্থি লেগা পার্টির এমপি অ্যান্তোনিও আঙ্গেলুচির ‘আঙ্গেলুচি গ্রুপ’ সম্প্রতি দেশটির প্রথমসারির সংবাদসংস্থা এজিআইকে অধিগ্রহণের পরিকল্পনা করছে। যদিও ইতোমধ্যে ৩টি ইতালিয়ান পত্রিকার মালিকানা রয়েছে তার।
এদিকে সুইডেনের গণমাধ্যমগুলোর ৪৩ শতাংশের মালিকানা রয়েছে বোনিয়ার ব্যবসায়ী গ্রুপের অধীনে। এছাড়া নেদারল্যান্ডের আরটিএল নেদারল্যান্ড ও টালফা নেটওয়াকের হাতেই দেশটির ৭৫ শতাংশের বেশি টেলিভিশন নেটওয়ার্কের মালিকানা কুক্ষিগত রয়েছে।
জার্মানিতেও গণমাধ্যমের বহুত্ববাদ হুমকির মুখে পড়েছে। দেশটিতে বেশিরভাগ সংবাদমাধ্যমের ডিজিটালাইজেশন করা হয়েছে। দেশটিতে পত্রিকার কাটতি ব্যাপকভাবে কমে গেছে। অনেক সংবাদপত্র বন্ধ হয়ে গেছে।
হাঙ্গেরিতে গণমাধ্যমের মালিকানা পুঞ্জিভূতকরণ ও রাষ্ট্রীয় মাধ্যমগুলার আধিপত্য বিস্তার সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর ওরবানের ঘনিষ্ঠ সেন্ট্রাল ইউরোপীয়ান প্রেস অ্যান্ড মিডিয়া ফাউন্ডেশনের (কেসমা) মালিকানায় কয়েকশত গণমাধ্যম রয়েছে।
দেশটিতে প্রধানমন্ত্রীর ঘনিষ্ট অলিগার্করা ২০১০ সাল থেকে বিভিন্ন মাধ্যমগুলো ক্রয় করে কেসমাতে দান করা শুরু করে। ফলে ২০১৮ সালের মধ্যেই দেশটির মিডিয়া ব্যবস্থা সরকার নিয়ন্ত্রিত হয়ে পড়ে।
হাঙ্গেরির ছাড়াও বুলগেরিয়া, গ্রিস, ক্রোয়েশিয়া ও ইতালির সরকারও বিভিন্নভাবে গণমাধ্যমের ওপর প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করে থাকে। রাষ্ট্র সমর্থিত মাধ্যমগুলোকে পৃষ্ঠপোষকতা করে, রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে যাওয়া বিজ্ঞাপনের বরাদ্দের বণ্টনে বৈষম্যসহ নানাভাবে দেশগুলোর সরকার গণমাধ্যম স্বাধীনতা হরণের চেষ্টা চালায় বলে লিবার্টিজের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশে স্বচ্ছ, অংশগ্রহণমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন সংস্কারে সমর্থন ইইউ'র
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হাঙ্গেরির গণমাধ্যম পুরোপুরিভাবে সরকাররে মুখপাত্র হয়ে উঠেছে। একই পথে এগোচ্ছে স্লোভাকিয়ায়ও। দেশটির নতুন আইনে সম্পাদকীয় স্বাধীনতার সুরক্ষা বাতিল করা হয়েছে।
এ ছাড়াও গত বছরে ফ্রান্স, জার্মানি, গ্রিস, হাঙ্গেরি এবং স্পেনে সাংবাদিকরা বিদ্বেষমূলক বক্তব্য, শারীরিক হামলাসহ পুলিশি সহিংসতার শিকার হয়েছেন। কিছু দেশে নারী সাংবাদিকদের অন্যায়ভাবে সমস্যায় ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে।
পাশাপাশি স্ট্র্যাটেজিক লিটিগেশন অ্যাগেইনস্ট পাবলিক পার্টিসিপেশন আইনটির অপব্যবহার করে ইউরোপের কমপক্ষে এক ডজন দেশে সাংবাদিকদের জন্য অস্তিত্বহীনতার ঝুঁকি তৈরি করেছে বলে প্রতিবেদনের অনুসন্ধানে পাওয়া গেছে।
বুলগেরিয়া, জার্মানি, গ্রিস, মাল্টা, নেদারল্যান্ডস এবং স্পেনসহ বেশ কয়েকটি দেশে সরকারি কর্মকর্তারা তথ্যপ্রাপ্তি অনুরোধ প্রত্যাখ্যান বা বাধা দিয়ে সাংবাদিকদের কাজে বাধা দিয়েছেন বলেও প্রতিবেদনে জানা গেছে।
২৪৩ দিন আগে