ইউএস-ও-কানাডা
নিলামে ৬২ লাখ ডলারে বিক্রি হলো সেই কলা
জনপ্রিয়তার পারদ চড়াতে চড়াতে তা এবার আকাশে তুললেন প্রখ্যাত ইতালীয় শিল্পী মাউরিৎসিও কাত্তেলান। ২০১৯ সালে শিল্পাঙ্গনে একটি কলা নিয়ে এসে হইচই ফেলে দিয়েছিলেন তিনি, এবার সেই ‘কলা শিল্প’ বিক্রি হলো আকাশছোঁয়া মূল্যে।
শিল্প হলেও তা আসলে একটি কলাই; হ্যাঁ, যে কলা আমরা খেয়ে থাকি। কিন্তু তাই বলে একটি কলা ৬২ লাখ ডলারে বিক্রি হবে? অথচ হয়েছে তা-ই।
স্থানীয় সময় বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্কের সদেবিজ-এর নিলামে কলার ওই শিল্পকর্মটি বিক্রি হয়েছে ৬.২ মিলিয়ন ডলারে। নিলাম শুরু হওয়ার পাঁচ মিনিটের মধ্যে ছয় প্রতিদ্বন্দ্বীকে পেছনে ফেলে সেটি কিনে নেন চীনা বংশোদ্ভূত ক্রিপ্টো উদ্যোক্তা জাস্টিন সান।
এই শিল্পকর্মটি মূলত ২০১৯ সালের কনসেপ্ট আর্টওয়ার্ক। ‘কমেডিয়ান’ নামের এই শিল্পের স্রষ্টা মাউরিৎসিও কাত্তেলান। এটি মূলত ডাক্ট টেপ দিয়ে দেয়ালে আটকে রাখা একটি কলা, শিল্পীর নির্দেশনা অনুযায়ী যা প্রতিস্থাপনযোগ্য।
সে বছর আর্ট বাসেল মায়ামি বিচ প্রদর্শনীতে প্রথম ‘কমেডিয়ান’-এর প্রদর্শনী হয়। এরপর আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে উঠে আসেন কাত্তেলান ও তার এই শিল্পকর্ম।
শিল্পপ্রেমীদের কাছে শিল্পের চিরাচরিত মাপকাঠি নিয়ে প্রশ্ন তুলে দেয় ‘কমেডিয়ান’। এর পক্ষে-বিপক্ষে ওঠে আলোচনার ঝড়। প্রথম কলাটি শত শত দর্শকের সামনে দেয়াল থেকে তুলে খেয়ে ফেলেন পারফর্ম্যান্স আর্টিস্ট ডেভিড ডাটুনা। এরপর তা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসে।
ডাটুনা অবশ্য পরে দাবি করেন, কলা খাওয়ার কাজটি তার নিজস্ব আর্টিস্টিক পারফরম্যান্স ছিল। কোনো ধরনের উগ্রতা প্রদর্শনের ইচ্ছায় তিনি কাজটি করেননি।
পরে ফের আরেকটি কলা সেখানে সাঁটানো হলে সেটি দেখতে এত লোকের ভীড় হয় যে একপর্যায়ে মায়ামির প্রদর্শনী থেকে ‘কমেডিয়ান’ সরিয়ে নেওয়া হয়। তবে তার আগেই সেখানে ১ লাখ ২০ হাজার থেকে দেড় লাখ ডলারের মধ্যে এর তিনটি সংস্করণ বিক্রি হয়।
১ দিন আগে
ধনকুবের গৌতম আদানির বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ যুক্তরাষ্ট্রের
ভারতের ধনকুবের গৌতম আদানি বিশ্বের একজন শীর্ষ ব্যবসায়ী। উপমহাদেশে কোম্পানির বিশাল সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্পটি ঘুষ প্রদানের মাধ্যমে সহজতর করার বিষয়টি গোপন করে তিনি বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। আদানিকে এমন অভিযোগে অভিযুক্ত করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
৬২ বছর বয়সী গৌতম আদানির বিরুদ্ধে বুধবার (২১ নভেম্বর) সিকিউরিটিজ জালিয়াতি এবং ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছে। এই মামলায় আদানি গ্রিন এনার্জি লিমিটেড এবং অন্য একটি সংস্থা ভারত সরকারের কাছে ১২ গিগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ বিক্রি করার জন্য একটি লাভজনক ব্যবস্থায় জড়িত। যা লাখ লাখ বাড়ি এবং ব্যবসার আলো জ্বালানোর জন্য যথেষ্ট।
আরও পড়ুন: নগদ অর্থ সংকটের মধ্যেই আদানি পাওয়ারের সঙ্গে চুক্তি পুনর্বিবেচনার আহ্বান
অভিযোগপত্রে আদানি ও তার সহ-আসামিরা চুক্তির দুটি পক্ষের ভূমিকা পালন করে।
ওয়াল স্ট্রিটের বিনিয়োগকারীরা গত পাঁচ বছরে এই প্রকল্পে কয়েক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছেন। অথচ ভারতে তারা শত শত কোটি ডলার মূল্যের চুক্তি ও অর্থায়ন সুরক্ষিত করতে সরকারি কর্মকর্তাদের প্রায় ২৬৫ মিলিয়ন ডলার ঘুষ দিচ্ছেন বা দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন।
ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাটর্নি জেনারেল লিসা মিলার বলেন, ‘আদানি ও তার সহ-আসামিরা মার্কিন বিনিয়োগকারীদের অর্থায়নে দুর্নীতি ও জালিয়াতির মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় জ্বালানি সরবরাহের বিশাল চুক্তি অর্জন ও অর্থায়ন করতে চেয়েছিলেন।’
মার্কিন অ্যাটর্নি ব্রেওন পিস বলেছেন, অভিযুক্তরা ‘একটি ব্যাপক পরিকল্পনা করেছে’ এবং ‘আমাদের আর্থিক বাজারের অখণ্ডতার ব্যয়ে নিজেদেরকে সমৃদ্ধ করার চেষ্টা করেছে।’
একটি সমান্তরাল নাগরিক পদক্ষেপে, মার্কিন সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আদানি এবং দুই সহ-আসামির বিরুদ্ধে মার্কিন সিকিউরিটিজ আইনের জালিয়াতি বিরোধী বিধান লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছে। আর্থিক জরিমানা এবং অন্যান্য নিষেধাজ্ঞা চেয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
দুটি মামলাই ব্রুকলিনের ফেডারেল আদালতে দায়ের করা হয়।
আরও পড়ুন: আদানির সময়সীমা নিয়ে আমরা খুবই মর্মাহত: প্রেস সচিব
আদানির সঙ্গে আসামিদের মধ্যে রয়েছেন তার ভাগ্নে ও আদানি গ্রিন এনার্জির বোর্ডের নির্বাহী পরিচালক সাগর আদানি এবং ২০২০ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত সংস্থার প্রধান নির্বাহী হিসেবে কাজ করা এবং বর্তমান বোর্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিনীত জেইন।
অনলাইন আদালতের রেকর্ডে আদানির পক্ষে কথা বলতে পারেন এমন কোনো আইনজীবীর তালিকা নেই। এ বিষয়ে মন্তব্য চেয়ে একটি ই-মেইল করা হয় তার গোষ্ঠী আদানি গ্রুপকে। তার সঙ্গের আসামিদের প্রতিনিধিত্বকারী আইনজীবীদের কাছেও ইমেল পাঠানো হয়েছিল। সাগর আদানির আইনজীবী শন হেকার এই মন্তব্য প্রত্যাখ্যান করেছেন। বাকিরা তাৎক্ষণিকভাবে কোনো প্রতিক্রিয়া জানাননি।
এসইসির এনফোর্সমেন্ট ডিভিশনের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক সঞ্জয় ওয়াধওয়া বলেছেন, গৌতম ও সাগর আদানির বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে যে তারা বিনিয়োগকারীদের তাদের কোম্পানির বন্ড কিনতে প্ররোচিত করেছেন এই বলে যে, ‘আদানি গ্রিনের শুধু একটি শক্তিশালী ঘুষ বিরোধী শাখা আছে তা নয়, বরং কোম্পানির উচ্চ পর্যায়ের ব্যবস্থাপকও ঘুষ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয় না এবং দেবে না।’
বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ ভারতের ক্ষমতাধর কোম্পানি আদানি। নব্বইয়ের দশকে কয়লার ব্যবসায় নিজের ভাগ্য গড়ে তোলেন তিনি। প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরি থেকে শুরু করে রাস্তাঘাট তৈরি, রান্নার তেল বিক্রিসহ ভারতীয়দের জীবনের অনেক দিককে জড়িত করে আদানি গ্রুপ বড় হয়েছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, আদানি গ্রুপ নবায়ণযোগ্য শক্তিতে বড় পদক্ষেপ নিয়েছে, টেকসই প্রবৃদ্ধির দর্শনকে গ্রহণ করেছে। যা তার স্লোগানে প্রতিফলিত হয়েছে: ‘ভালোর সঙ্গে বৃদ্ধি’।
আরও পড়ুন: আদানির কাছ থেকে বিদ্যুৎ ক্রয়ের সব চুক্তি বাতিল চেয়ে রিট
দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তামিলনাড়ুতে বিশ্বের বৃহত্তম সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর মধ্যে একটি সহ কোম্পানির ২০ গিগাওয়াটের একটি ক্লিন এনার্জি পোর্টফোলিও রয়েছে। আদানি গ্রুপ ২০৩০ সালের মধ্যে মহাকাশে দেশের বৃহত্তম ভূমিকা পালনকারী হওয়ার লক্ষের কথা জানিয়েছে। ২০২২ সালে গৌতম আদানি বলেন, ২০৩২ সালের মধ্যে ক্লিন এনার্জি প্রকল্পে ৭০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে তার প্রতিষ্ঠান।
গত বছর যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি আর্থিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান আদানি ও তার কোম্পানির বিরুদ্ধে 'নির্লজ্জ শেয়ার কেলেঙ্কারি' ও 'আর্থিক জালিয়াতির' অভিযোগ আনে। আদানি গ্রুপ এই দাবিগুলোকে ‘ষড়যন্ত্রমূলক ভুল তথ্য, পচা, ভিত্তিহীন এবং অসম্মানজনক অভিযোগের বিদ্বেষপূর্ণ সংমিশ্রণ’ বলে অভিহিত করেছে।
প্রশ্নবিদ্ধ ফার্মটি একটি খুচরা বিক্রেতা হিসাবে পরিচিত। ব্যবসায়ীদের জন্য একটি ওয়াল স্ট্রিট শব্দ যা মূলত নির্দিষ্ট শেয়ারের দর পতনের উপর বাজি ধরেছিল এবং এটি আদানি গ্রুপের সঙ্গে সম্পর্কিত এই জাতীয় বিনিয়োগ করেছিল। ফলস্বরূপ কোম্পানির শেয়ার কমে যায় এবং আগস্টে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ ফার্মটি আরও দুর্নীতির অভিযোগ আরোপ করলে আবারও শেয়ার কমে যায়।
জেইন গত বছর অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসকে (এপি) বলেছিলেন যে হিন্ডেনবার্গের অভিযোগগুলো তার চলমান প্রকল্পগুলোতে খুব কম প্রভাব ফেলেছে। যার মধ্যে উত্তর-পশ্চিম ভারতের খাভদা গ্রামে ২০ গিগাওয়াট সৌর ও বায়ু বিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ রয়েছে।
প্রসিকিউটররা অভিযোগ করেছেন যে আদানি এবং তার সঙ্গের আসামিরা ২০২০ বা ২০২১ সালে জাতীয় সরকারের সোলার এনার্জি করপোরেশন অব ইন্ডিয়ার জন্য উৎপাদন করার জন্য আদানি গ্রিন এবং অন্য একটি সংস্থার চুক্তির অধীনে থাকা জ্বালানির চাহিদা গ্যারান্টি দেওয়ার জন্য ঘুষের পরিকল্পনা শুরু করেছিলেন।
আদানি গ্রিন এবং অন্যান্য সংস্থার উচ্চ মূল্য ভারতের রাষ্ট্র পরিচালিত বিদ্যুৎ পরিবেশকদের বন্ধ করে দিয়েছে, যারা জাতীয় সরকারের কাছ থেকে বিদ্যুৎ কিনে এবং এটি বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সরবরাহ করেছিল। কিন্তু প্রকল্পটি সার্থক করতে এবং বেশি লাভ ধরে রাখতে কোম্পানিগুলোর এসব চুক্তির প্রয়োজন ছিল। তাই তারা সেগুলো সম্পন্ন করার জন্য ঘুষের প্রস্তাব দিয়েছিল বলে জানান প্রসিকিউটররা।
প্রসিকিউটররা আরও জানান, আসামিরা সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া শুরু করার পর ২০২১ ও ২০২২ সালে ভারতের পাঁচটি রাজ্য বা অঞ্চলের বিদ্যুৎ বিতরণকারীরা তাদের জ্বালানি কেনার জন্য চুক্তি করে। এক বিবৃতিতে আদানির কোম্পানি চুক্তিগুলোকে ‘বিশ্বের বৃহত্তম’ বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি হিসেবে ঘোষণা করেছে।
একই সময়ে, প্রসিকিউটররা বলেছিলেন, আদানি এবং জেইন বিশ্বব্যাপী বিনিয়োগকারীদের কাছে সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে আদানি গ্রিন ঘুষের সঙ্গে জড়িত ছিল না এবং কখনও জড়িত হবে না।
প্রসিকিউটররা বলেন, এই দাবিগুলো তাদের প্রকল্পটির জন্য কয়েক বিলিয়ন ডলার অর্থায়ন সুরক্ষিত করতে সক্ষম করেছিল যা জড়িত ‘সত্যিকারের ঝুঁকির জন্য দায়ী নয়’।আরও পড়ুন: আদানির সঙ্গে বিদ্যুৎ চুক্তি খতিয়ে দেখতে কমিটি গঠনের আদেশ হাইকোর্টের
১ দিন আগে
যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিমে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় বোম্ব
চলতি সপ্তাহেই যুক্তরাষ্ট্রের পশ্চিম উপকূলে আঘাত হানতে চলেছে ক্যাটাগরি-৫ মাত্রার শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘বোম্ব’। হারিকেনে রূপ নিয়ে এটি সমতলে এটি বন্যা এবং পর্বতমালায় ব্যাপক তুষারপাত ঘটাতে পারে বলে জানিয়েছে ওয়েদার নেশন টিভি।
খবরে বলা হয়েছে, এই মধ্য-অক্ষাংশীয় ঝড়টি মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার মধ্যে আঘাত হানতে পারে। ওয়াশিংটন থেকে ওরেগন রাজ্য এবং উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ার লাখ লাখ বাসিন্দা এই ঘূর্ণিঝড়ে প্রভাবিত হতে পারেন।
ক্যালিফোর্নিয়া উপকূলের কিছু এলাকায় ক্যাটাগরি-৪ মাত্রার ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব দেখা যেতে পারে।
ঝড়ো বাতাসের কারণে যুক্তরাষ্ট্রের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও উত্তর ক্যালিফোর্নিয়ায় ভারী বৃষ্টি, বড় বড় ঢেউ সৃষ্টির পাশাপাশি জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
৩ দিন আগে
ট্রাম্পের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে মাস্কের দ্বারস্থ ইরান
যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে উত্তেজনা কমানো ও সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে এবার মার্কিন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ও ধনকুবের ইলন মাস্কের সঙ্গে দেখা করেছেন ইরানের কর্মকর্তারা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, জাতিসংঘে ইরানের রাষ্ট্রদূত আমির সাঈদ ইরাভানি সোমবার নিউইয়র্কে মাস্কের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, আলোচনায় ইরানের পরমাণু কর্মসূচি, মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ইসরায়েলবিরোধী গোষ্ঠীগুলোর প্রতি দেশটির সমর্থন এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের সম্ভাবনার মতো গুরুত্বপূর্ণ বেশকিছু বিষয়ে উঠে আসে।
তবে বৈঠকে দুপক্ষের মধ্যে কোনো বিষয়ে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত হয়নি জানিয়ে তিনি বলেন, ইরানের পক্ষ থেকেই মাস্কের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল।
ট্রাম্পের ট্রানজিশন টিম এই বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেনি, আবার অস্বীকারও করেনি। ইরানের জাতিসংঘ মিশনও এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
নতুন প্রশাসনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে সিনেটর মার্কো রুবিও এবং জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসেবে রিপাবলিকান নেতা মাইক ওয়াল্টজসহ পররাষ্ট্রনীতির গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোতে কঠিন ব্যক্তিত্বের নাম ঘোষণা করার পরপরই এ ধরনের পদক্ষেপ নিল ইরান।
আরও পড়ুন: দ্বিতীয় প্রশাসন গঠনে ট্রাম্পের ব্যাপক পরিকল্পনা
যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচনের আগে ট্রাম্পের বিরোধিতা করে ইরান। এখন তিনিই নির্বাচিত হওয়ায় ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে উত্তেজনা বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রথম মেয়াদে ট্রাম্প প্রশাসনই ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি বাতিল করে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করে। পাশাপাশি প্রয়াত জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার নির্দেশ দেয়।
এদিকে, নির্বাচনি প্রচার চলাকালে ট্রাম্পকে হত্যা করতে ইরান থেকে ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল বলে তথ্য প্রকাশ করেছে মার্কিন বিচার বিভাগ। এই অপরাধে এক ব্যক্তিকে অভিযুক্তও করা হয়েছে যার দাবি, ইরানের এক সরকারি কর্মকর্তা ট্রাম্পকে হত্যার করতে তাকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন।
এই ‘ষড়যন্ত্রকে’ ট্রাম্পসহ মার্কিন সরকারি কর্মকর্তাদের লক্ষ্যবস্তু করতে ইরানের চলমান প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে বর্ণনা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কর্মকর্তারা। উদাহরণস্বরূপ তারা বলেছেন, গত গ্রীষ্মেও আমেরিকান কর্মকর্তাদের হত্যার উদ্দেশ্যে ইরানের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত এক পাকিস্তানি ব্যক্তির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনে মার্কিন বিচার বিভাগ।অবশ্য মার্কিনীদের এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের খবরে বলা হয়েছে, ১৪ অক্টোবর এক লিখিত বার্তায় বাইডেন প্রশাসনকে ইরান জানায় যে তারা ট্রাম্পকে হত্যার চেষ্টা করবে না।
ট্রাম্পকে হত্যার চেষ্টা যুদ্ধ হিসেবে গণ্য করা হবে বলে এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে যে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল, এটি তারই প্রতিক্রিয়া ছিল বলে জানায় ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।
আরও পড়ুন: চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক রক্ষায় তিন নীতি সমুন্নত রাখার আহ্বান
এ বিষয়ে জানতে ইরানের জাতিসংঘ মিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা ‘দুই দেশের মধ্যে আনুষ্ঠানিক বার্তা বিনিময়ের’ বিষয়ে কোনো বিবৃতি দেওয়া হয় না বলে জানায়।
পরে মিশনের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘শহীদ জেনালের সোলাইমানিকে হত্যার বিচার করার অঙ্গীকার করেছে ইরান। তবে অবশ্যই তা আন্তর্জাতিক আইন মেনে বিচারিক উপায়ে সম্পন্ন করা হবে।’
রাষ্ট্রের সব বিষয়ে চূড়ান্ত মতামত দেওয়ার অধিকারী ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বারবার ট্রাম্পের প্রতি বিরক্তি প্রকাশ করলেও আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তি পেতে ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনার দরজা খোলা রেখেছেন ইরানের নতুন সংস্কারবাদী প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান।
৬ দিন আগে
হোয়াইট হাউজের সর্বকনিষ্ঠ প্রেস সেক্রেটারি হচ্ছেন লেভিট
দ্বিতীয় মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার আগে নতুন করে প্রশাসন সাজাচ্ছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। পরবর্তী প্রশাসনে হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি হিসেবে তিনি বেছে নিয়েছেন ২৭ বছর বয়সী ক্যারোলিন লেভিটকে।
অ্যাসোসিয়েট প্রেসের খবরে বলা হয়, স্থানীয় সময় শুক্রবার হোয়াইট হাউসের নতুন প্রেস সেক্রেটারি হিসেবে নিজের প্রচার শিবিরের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিটের নাম ঘোষণা করেন ট্রাম্প। এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে হোয়াইট হাউজের সর্বকনিষ্ঠ প্রেস সেক্রেটারি হতে চলেছেন লেভিট।
এতদিন পর্যন্ত এই রেকর্ডটি ছিল রোনাল্ড জিগলারের দখলে। ১৯৬৯ সালে ২৯ বছর বয়সে রিচার্ড নিক্সনের প্রেস সেক্রেটারির দায়িত্ব গ্রহণ করেন জিগলার।
ক্যারোলিনকে প্রেস সেক্রেটারি নিয়োগের বিষয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘আমার ঐতিহাসিক প্রচারণায় জাতীয় প্রেস সচিব হিসেবে সে অসাধারণ কাজ করেছে। ফলে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি হিসেবে আনন্দের সঙ্গে আমি তার নাম ঘোষণা করছি।’
তিনি বলেন, ‘ক্যারোলিন স্মার্ট, কঠোর পরিশ্রমী এবং তার যোগাযোগ দক্ষতা অত্যন্ত সাবলীল। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, নিজের কাজে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করে সে আমেরিকার জনগণের কাছে সঠিক বার্তা পৌঁছে দিতে সহায়তা করবে।’
আস্থা রাখায় ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়ে এক্সে লেভিট লিখেছেন, ‘আমি বিনীত ও সম্মানিত বোধ করছি। চলুন আমেরিকাকে আবার মহান রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলি।’
নিউ হ্যাম্পশায়ারের বাসিন্দা লেভিটকে কট্টর ও সবসময় প্রস্তুত এক রাজনৈতিক মুখপাত্র হিসাবে বিবেচনা করা হয়। সরাসরি ও টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে বিভিন্ন সময় রিপাবলিকানদের নিয়ে আক্রমণাত্মক প্রশ্নে তাকে সবসময় দ্রুত ও উপযুক্ত জবাব দিতে দেখা যায়।
নিউ হ্যাম্পশায়ারের ক্যাথলিক কলেজ সেন্ট অ্যানসেলম কলেজে যোগাযোগ ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করেছেন লেভিট।
পড়াশোনা চলাকালেই তিনি ফক্স নিউজে এবং ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে হোয়াইট হাউস প্রেস অফিসে ইন্টার্ন করেন। এরপর ২০১৯ সালে স্নাতক সম্পন্ন করার পরপরই হোয়াইট হাউজের প্রেস অফিসে কাজ নেন তিনি। হোয়াইট হাউজে প্রথমে তিনি ‘প্রেসিডেনশিয়াল রাইটার’ এবং পরে সহকারী প্রেস সেক্রেটারি হিসেবে কাজ করেন।
হোয়াইট হাউজ ছাড়ার পর লেভিট রিপাবলিকান দলের জ্যেষ্ঠ কংগ্রেসওম্যান এলিস স্টেফানিকের যোগাযোগ পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তারপর এ বছরের জানুয়ারিতে ট্রাম্পের প্রচার শিবিরের প্রেস সেক্রেটারি হিসেবে যোগ দেন তিনি।
৬ দিন আগে
ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার আগ পর্যন্ত ইউক্রেনকে সমর্থন অব্যহত রাখবে যুক্তরাষ্ট্র
কিয়েভে রাশিয়ার অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার পর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বলেছেন, প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার প্রশাসনের শেষ মাসগুলোতে ইউক্রেনে মার্কিন সামরিক সহায়তা জোরদার করতে চান।
ন্যাটো সদর দপ্তরে মিত্র দেশগুলোর দূত ও ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের আগে বুধবার ব্লিঙ্কেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘ইউক্রেন যাতে রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কার্যকরভাবে আত্মরক্ষা করতে পারে তা নিশ্চিত করতে আমরা যা করে চলেছি, তা অব্যাহত থাকবে।
রুশ বাহিনীর পাশাপাশি ইউক্রেনে উত্তর কোরিয়ার সেনা পাঠানোর বিষয়ে ব্লিঙ্কেন বলেন, ‘এর কড়া জবাব দেওয়া হবে।’
যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া ও ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থার সমীক্ষা বলছে, ইউক্রেনে উত্তর কোরিয়ার ১২ হাজার সেনা পাঠানো হয়েছে। এই সেনাদের বেশিরভাগই রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে মোতায়েন করা হবে বলে আশা করা হয়েছিল।’
এদিকে, ৭৩ দিনের মধ্যে কিয়েভে প্রথমবারের মতো ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া।
এ বিষয়ে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলদিমির জেলেনস্কি বলেছেন, ‘ইউক্রেনীয়দের যুদ্ধ চালিয়ে যেতে নিরুৎসাহিত করার প্রয়াসে রাশিয়া হামলা জোরদার করছে।’
আগামী বছরের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প দায়িত্ব নেয়ার পর ওয়াশিংটন ইউক্রেনের বিষয়ে নিজেদের যুদ্ধনীতিতে পরিবর্তন আনতে পারে বলে সংশয় দেখা দিয়েছে।
কিয়েভকে কয়েক বিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তা দেওয়ায় বাইডেন প্রশাসনের সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প। পাশাপাশি দ্রুত সংঘাতের অবসান ঘটানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।
তবে ইউক্রেনের আন্তর্জাতিক সমর্থকদের আশঙ্কা, তাড়াহুড়া করে যেকোনো সমঝোতা হলে লাভবান হবেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।
১ সপ্তাহ আগে
চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক রক্ষায় তিন নীতি সমুন্নত রাখার আহ্বান
ডোনাল্ড ট্রাম্প ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক রক্ষার ক্ষেত্রে তিনটি নীতি সমুন্নত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন দেশটিতে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত শি ফেং। ফেংয়ের প্রস্তাবিত নীতি তিনটি হলো- পারস্পরিক শ্রদ্ধা, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও পারস্পরিক লাভজনক সহযোগিতা।
চীন-যুক্তরাষ্ট্র কূটনৈতিক সম্পর্কের ৪৫তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে চীনের পূর্বাঞ্চলীয় শহর সাংহাইয়ে এক নৈশভোজের আয়োজন করে যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য পরিষদ। অনুষ্ঠানে ভিডিও বক্তব্যে এ আহ্বান জানান ফেং।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘গত কয়েক দশক ধরে চলা চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক নতুন যুগে প্রবেশের জন্য এই নীতিগুলো সঠিক পথের নির্দেশনা দেয়।’
‘আশা করছি, একটি স্থিতিশীল, দৃঢ় ও টেকসই পথে এই সম্পর্ককে এগিয়ে নিতে চীনের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবে যুক্তরাষ্ট্র।’
চীনকে কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখলে তা কেবল ভূ-রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ ও ক্রমবর্ধমান হুমকির দিকেই দুই দেশকে পরিচালিত করবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
উল্লিখিত তিন নীতি এবং এক চীন নীতির প্রতি দুই দেশেরই শ্রদ্ধাশীল থাকা উচিৎ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এক্ষেত্রে তাইওয়ান ইস্যুটি হচ্ছে সর্বপ্রথম রেড সিগনাল, চীনের সঙ্গে (কৌশলগত) সম্পর্কে থেকে কোনোভাবেই যা যুক্তরাষ্ট্রের অতিক্রম করা উচিত নয়।’
কোনো চ্যালেঞ্জই চীনের উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করতে পারবে না জানিয়ে ফেং বলেন, ‘চীনকে ঘিরে নিয়ন্ত্রণ বা দমন করার যেকোনো প্রচেষ্টা আত্মঘাতী হবে। জাতীয় সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের স্বার্থ রক্ষায় চীনের জনগণের ইচ্ছা এবং সামর্থ্যকে কারও অবমূল্যায়ন করা উচিত নয়।’
বিশ্বের বৃহত্তম উন্নয়নশীল ও উন্নত দেশ হিসেবে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র যৌথভাবে বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে বলে বিশ্বাস করেন তিনি।
ফেংয়ের ভাষ্যে, ‘শুল্ক, বাণিজ্য, প্রযুক্তি বা শিল্পক্ষেত্রে দুই দেশের প্রতিদ্বন্দ্বিতা কোনো পক্ষকেই বিজয়ী করবে না। স্বার্থপর মনোভাব আমাদের কেবল পেছনেই টেনে ধরে রাখে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যার মূল্য দিতে হয়।’
‘মার্কিন কোম্পানিগুলোর আরও বেশি বিনিয়োগকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি উভয় দেশ ও গোটা বিশ্বের কল্যাণে জলবায়ু পরিবর্তন ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৃহত্তর পরিসরে সংলাপ ও সহযোগিতার প্রত্যাশা করে চীন।’
১ সপ্তাহ আগে
দ্বিতীয় প্রশাসন গঠনে ট্রাম্পের ব্যাপক পরিকল্পনা
দ্বিতীয় প্রশাসনের বিষয়ে ব্যাপক পদক্ষেপের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
আমেরিকার প্রেসিডেন্ট প্রায়ই বিশদ বিবরণ এড়িয়ে যান, তবে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে নীতি ঘোষণা এবং লিখিত বিবৃতির মাধ্যমে তিনি একটি বিস্তৃত এজেন্ডা তুলে ধরেছেন। এটি কর ও বিধিনিষেধসহ সাংস্কৃতিক বিষয়ে প্রচলিত রক্ষণশীল পন্থার সঙ্গে বাণিজ্যে আরও জনমুখী দৃষ্টিভঙ্গি এবং আমেরিকার আন্তর্জাতিক ভূমিকার পরিবর্তনের সঙ্গে একীভূত করেছে।
ট্রাম্পের এজেন্ডা নাগরিক অধিকারের বিষয়ে ফেডারেল সরকারের প্রচেষ্টা কমাবে এবং রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা প্রসারিত করবে।
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক কী কী প্রস্তাব দিয়েছেন ট্রাম্প:
ইমিগ্রেশন
২০১৬ সালের প্রচারের “বিল্ড দ্য ওয়াল” স্লোগানটি এখন ‘ইতিহাসে বৃহত্তম গণ-নির্বাসন কর্মসূচি’ তৈরির পরিকল্পনায় পরিণত হয়েছে। ট্রাম্প এই প্রয়াসে ন্যাশনাল গার্ড এবং স্থানীয় পুলিশ বাহিনীকে ক্ষমতায়িত করার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে তিনি এই কর্মসূচি কীভাবে পরিচালিত হবে সে বিষয়ে তিনি কিছুই উল্লেখ করেননি। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে শুধু অবৈধভাবে অবস্থানকারীদের তিনি কীভাবে টার্গেট করবেন সেই বিষয়ে বিস্তারিত কিছু উল্লেখ করেননি।
সম্ভাব্য প্রবেশকারীদের জন্য “ইডিয়োলজিক্যাল স্ক্রিনিং” প্রয়োগের প্রস্তাব দিয়েছেন এবং জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব প্রদান প্রক্রিয়া বন্ধ করার কথা বলেছেন (যার জন্য প্রায় নিশ্চিতভাবেই সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন হবে)।
প্রথম প্রশাসনিক মেয়াদের মতো “রিমেইন ইন মেক্সিকো” নীতি পুনরায় চালুর ঘোষণা দিয়েছেন। এছাড়াও, জনস্বাস্থ্যের কারণ দেখিয়ে অভিবাসীদের সীমিত করা এবং নির্দিষ্ট সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশগুলির নাগরিকদের প্রবেশ কঠোরভাবে সীমিত বা নিষিদ্ধ করার কথাও বলেছেন। সব মিলিয়ে এই পদ্ধতি শুধু অবৈধ অভিবাসন বন্ধ করবে না, বরং সামগ্রিকভাবে অভিবাসন হ্রাস করবে।
গর্ভপাত
ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদে গর্ভপাতকে অগ্রাধিকার না দেওয়ার কথা বলেছেন, যদিও তিনি গর্ভপাতের ক্ষেত্রে নারীদের ফেডারেল অধিকার বাতিল করে এটি রাজ্য সরকারের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন।
ট্রাম্পের অনুরোধে, কয়েক দশকের মধ্যে প্রথমবারের মতো রিপাবলিকান পার্টির প্ল্যাটফর্মে জাতীয় পর্যায়ে গর্ভপাত নিষিদ্ধের কথা উল্লেখ করা হয়নি। ট্রাম্পের মতে, ফেডারেল স্তরে রো ভি ওয়েড বাতিল করাই যথেষ্ট। গত মাসে নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম ট্রুথ সোশ্যালে তিনি জানান, গর্ভপাত নিষিদ্ধ করার ফেডারেল আইন তার টেবিলে পৌঁছালে তিনি ভেটো দেবেন।
কর
ট্রাম্পের কর নীতি সাধারণভাবে করপোরেশন এবং ধনী আমেরিকানদের পক্ষে। এর প্রধান কারণ ২০১৭ সালের তার কর সংস্কারের প্রতিশ্রুতি বজায় রাখা, যার মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন রয়েছে। যেমন-করপোরেট আয়ের কর হার ২১% থেকে কমিয়ে ১৫% করা। এর মধ্যে রয়েছে ধনী আমেরিকানদের উপর ডেমোক্র্যাটিক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আয়কর বৃদ্ধি ফিরিয়ে আনা এবং জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় জ্বালানি ব্যবস্থার অর্থায়নে মুদ্রাস্ফীতি হ্রাস আইনের শুল্ক বাতিল করা।
এই নীতিগুলো সত্ত্বেও, ট্রাম্প শ্রমজীবী এবং মধ্যবিত্ত আমেরিকানদের জন্য নতুন প্রস্তাবগুলোতে আরও জোর দিয়েছেন। অর্জিত টিপস, সামাজিক সুরক্ষা মজুরি এবং ওভারটাইম মজুরিকে আয়কর থেকে ছাড় দেওয়ার দেওয়ার বিষয়ে জোর দিয়েছেন।
শুল্ক ও বাণিজ্য
আন্তর্জাতিক বাণিজ্য নিয়ে ট্রাম্পের অবস্থান হলো, বিশ্ববাজারকে মার্কিন স্বার্থের জন্য ক্ষতিকর মনে না করা। তিনি বিদেশি পণ্যের উপর ১০ শতাংশ থেকে ২০ শতাংশ শুল্ক প্রস্তাব করেছেন - এবং কিছু বক্তৃতায় আরও বেশি শতাংশের কথা উল্লেখ করেছেন।
তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চীনাদের "যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো" কেনা বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
ডিইআই, এলজিবিটিকিউ এবং নাগরিক অধিকার
ট্রাম্প সমাজে বৈচিত্র্য এবং এলজিবিটিকিউ নাগরিকদের জন্য আইনগত সুরক্ষার প্রতি গুরুত্ব কমানোর আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিতে বৈচিত্র্য, সাম্য ও অন্তর্ভুক্তির (ডিইআই) প্রোগ্রামগুলো বন্ধ করার কথা বলেছেন এবং এক্ষেত্রে ফেডারেল তহবিলকে একটি টুল হিসেবে ব্যবহার করার প্রস্তাব দিয়েছেন।
২ সপ্তাহ আগে
৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প
রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দ্বিতীয় মেয়াদে বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। চার বছর আগে নির্বাচনে পরাজয় মেনে নিতে অস্বীকার করে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিলে সহিংস বিদ্রোহের সূত্রপাত করেছিলেন তিনি। গুরুতর অভিযোগে দোষী সাব্যস্তও হয়েছিলেন এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট।
দুটি হত্যাচেষ্টার হাত থেকেও বেঁচে গিয়েছেন ট্রাম্প। এবারের নির্বাচনে উইসকনসিনে জয়ের মাধ্যমে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট পদে জয়ী হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ২৭০টি ইলেকটোরাল ভোট পাস করেছেন।
আরও পড়ুন: ট্রাম্পকে বিশ্বনেতাদের অভিনন্দন
রিপাবলিকানরা পশ্চিম ভার্জিনিয়া এবং ওহাইওতে আসন দখলের মাধ্যমে সিনেটের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করেছে। শীর্ষ হাউস দৌড়গুলো নিউ ইয়র্ক এবং ক্যালিফোর্নিয়ায় কেন্দ্রিক। ডেমোক্র্যাটরা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে রিপাবলিকানরা আশ্চর্যজনক জয় পেয়েছে। এমনকি ১০টি বা তারও বেশি আসনের কয়েকটি উদ্ধারের চেষ্টা করছে।
মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের নিয়ন্ত্রণ এখনও হাতছাড়া
রিপাবলিকানরা হোয়াইট হাউস ও সিনেট দখল করলেও প্রতিনিধি পরিষদে এখনো অনেক লড়াই করতে হবে।
প্রায় ৬০টি হাউস নির্বাচন এখনও অমীমাংসিত থাকায় যে কোনো দল চেম্বারের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারে। ডেমোক্র্যাটদের কাছে প্রতিনিধি পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠতাই ওয়াশিংটনে আধিপত্য বিস্তার এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের ক্ষমতার ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপের শেষ ভরসা। তারপরও রিপাবলিকানরা প্রতিনিধি পরিষদে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলে তারা আরও সহজে ট্রাম্পের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হবে। এর মধ্যে রয়েছে কর ছাড়ের মেয়াদ বাড়ানো, কঠোর সীমান্ত ব্যবস্থায় অর্থায়ন এবং ফেডারেল সরকারের কিছু অংশ ভেঙে ফেলা।
তারপরও হাউস নিয়ন্ত্রণের সিদ্ধান্ত নিতে কিছুটা সময় লাগতে পারে। হাউসের মূল দৌড়ের সংখ্যায় এখন পর্যন্ত কোনো দলই নির্ভরযোগ্য সুবিধা করতে পারেনি। ক্যালিফোর্নিয়ায় ধীরগতির অনেকগুলো সহ সারা দেশে কঠোর প্রতিযোগিতা রয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশকে সবার আগে রাখতে হবে: নির্বাচনের রাতের ভাষণে ট্রাম্প
জয়ের পথে ট্রাম্প, সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পুনরুদ্ধার
২ সপ্তাহ আগে
ট্রাম্পকে বিশ্বনেতাদের অভিনন্দন
হোয়াইট হাউসে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনকে 'ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তন' আখ্যা দিয়ে আগাম অভিনন্দন জানিয়েছেন বিশ্ব নেতারা। আনুষ্ঠানিক ফলাফল এখনো ঘোষণা না হলেও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মার্কিন এই নির্বাচনটি ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবান প্রথমে ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন।
এক্স-এ লেখা এক পোস্টে জেলেনস্কি তাদের সাম্প্রতিক আলোচনার কথা স্মরণ করে ট্রাম্পের প্রতি উষ্ণ বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘গত সেপ্টেম্বরে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে আমার দারুণ বৈঠক হয়েছে। সেসময় আমরা ইউক্রেন-যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত অংশীদারিত্ব, বিজয় পরিকল্পনা এবং ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার আগ্রাসন বন্ধের উপায় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে।’
আরও পড়ুন: জয়ের পথে ট্রাম্প, সিনেটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পুনরুদ্ধার
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুও এক্স-এ একটি উদযাপনমূলক বার্তা পোস্ট করেছেন, ট্রাম্পের প্রত্যাশিত বিজয় সম্পর্কে তার খুশির কথা উল্লেখ করেছে লিখেছেন, ‘প্রিয় ডোনাল্ড এবং মেলানিয়া ট্রাম্প, ইতিহাসের সর্বশ্রেষ্ঠ প্রত্যাবর্তনের জন্য অভিনন্দন! হোয়াইট হাউজে আপনার ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তন আমেরিকার জন্য একটি নতুন সূচনা এবং ইসরায়েল ও আমেরিকার মধ্যে মহান মৈত্রীর প্রতি একটি শক্তিশালী পুনর্ব্যক্ত এনে দেবে। এ এক বিশাল বিজয়!'
ডানপন্থী অবস্থানের জন্য পরিচিত হাঙ্গেরির ভিক্টর অরবান এটিকে ‘মার্কিন রাজনৈতিক ইতিহাসের সবচেয়ে বড় প্রত্যাবর্তন’ বলে অভিহিত করেছেন। অরবান তার পোস্টে যোগ করেছেন, 'অভিনন্দন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।’ বিশ্বের জন্য একটি অতি প্রয়োজনীয় বিজয়!
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ফরাসি ও ইংরেজি উভয় ভাষাতেই অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, 'অভিনন্দন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আবার একসঙ্গে কাজ করার ওপর জোর দিয়ে তিনি এক্সে লিখেছেন, পারস্পরিক বিশ্বাস সম্মান ও উচ্চাকাঙ্ক্ষা নিয়ে আরও শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য আমরা চার বছর ধরে একসঙ্গে কাজ করার জন্য প্রস্তুত।’
সম্প্রতি যুক্তরাজ্য সরকারের দায়িত্ব নেওয়া লেবার পার্টি থেকে নবনির্বাচিত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেইর স্টারমার, ট্রাম্পকে শুভেচ্ছা জানিয়ে টুইট করেছেন। তিনি লিখেছেন- 'নির্বাচনে ঐতিহাসিক জয়ের জন্য নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিনন্দন। সামনের বছরগুলোতে আমি আপনাদের সঙ্গে কাজ করতে চাই।’
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও পুনরায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। মোদী লেখেন, ' নির্বাচনে ঐতিহাসিক জয়ের জন্য বন্ধু ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আন্তরিক অভিনন্দন। আপনি আপনার আগের মেয়াদের সাফল্যের উপর ভিত্তি করে জয় পেয়েছেন। আমি ভারত-মার্কিন বিস্তৃত বৈশ্বিক এবং কৌশলগত অংশীদারিত্বকে আরও জোরদার করতে আমাদের সহযোগিতা নবায়নের অপেক্ষায় রয়েছি। আসুন আমরা একসঙ্গে আমাদের জনগণের উন্নতির জন্য এবং বিশ্ব শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির জন্য কাজ করি।’
আরও পড়ুন: দেশকে সবার আগে রাখতে হবে: নির্বাচনের রাতের ভাষণে ট্রাম্প
২ সপ্তাহ আগে