বিজ্ঞান-এবং-উদ্ভাবন
টেশিসকে ডিজিটাল হাবে পরিণত করতে সরকার বদ্ধপরিকর: মোস্তাফা জব্বার
ডাক ও টেলিযোগাযোযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন টেলিফোন শিল্প সংস্থাকে (টেশিস) গুণগত মানের ডিজিটাল যন্ত্র উৎপাদনের হাব হিসেবে গড়ে তুলতে সরকার বদ্ধপরিকর।
বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তর মিলনায়তনে আয়োজিত ‘টেশিসের ভৌত অবকাঠামো আধুনিকায়ন, নতুন ডিজিটাল ডিভাইস উৎপাদন ও সংযোজন প্লান্ট স্থাপন এবং বিদ্যমান প্লান্টসমূহের উৎপাদন–সংযোজন সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণের সমন্বিত সম্ভাব্যতা’ সমীক্ষার খসড়া প্রতিবেদন সংক্রান্ত কর্মশালায় মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
আরও পড়ুন: প্রচলিত গণমাধ্যমের বিদ্যমান ধারা ভবিষ্যতে সম্পূর্ণরূপে বদলে যাবে: মোস্তাফা জব্বার
তিনি বলেন, বিদ্যমান অবকাঠামো এবং ডিভাইস উৎপাদনের প্লান্টসমূহের আধুনিকায়নের পাশাপাশি স্মার্ট ফোন, কম্পিউটার, ল্যাপটপ, সিমকার্ড, ব্যাটারি সেল (লিথিয়াম-আয়ন) চার্জার, পাওয়ার ব্যাংক, রাউটার ও আইওটি, রোবটিক্স ডিভাইস উৎপাদনে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের কাজ চলছে।
মন্ত্রী টেলিফোন শিল্প সংস্থাকে স্মার্ট বাংলাদেশের উপযোগী ডিজিটাল যন্ত্র উৎপাদনে সক্ষম প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে বলেন, শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের অভিযাত্রা শুরু হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী দিনে বইয়ের পরিবর্তে শিক্ষার্থীদের হাতে ট্যাব কিংবা ল্যাপটপ দিতে হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের হাতে ল্যাপটপ পৌঁছে দিতে ২০১৫ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশ টাস্কফোর্স বৈঠকে টেশিসকে শক্তিশালী করার অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন। সে লক্ষ্য বাস্তবায়নে টেশিসকে পুরোপুরি প্রস্তুত করার কাজ আমরা শুরু করেছি।
তিনি আরও বলেন টেশিসকে লাভজনক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করাই একমাত্র লক্ষ্য নয়, এর সাথে আবেগ জড়িয়ে আছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এই প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা করেন। টেশিসকে শক্তিশালী করার দায়িত্ব গ্রহণের জন্য আমাকেই বলা হয়েছিল। এটা আমার আবেগের জায়গা।
আরও পড়ুন: আমরা ডাকঘর ডিজিটাল করার কাজ শুরু করেছি: মোস্তাফা জব্বার
স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, দক্ষ জনবল ও প্রয়োজনীয় অবকাঠামো থাকা সত্ত্বেও টেলিফোন শিল্প সংস্থাকে লাগসই ডিজিটাল যন্ত্র উৎপাদন ও সংযোগের জন্য নির্ভরযোগ্য করে গড়ে তোলা যাবে না তা হতে দিতে পারি না।
সমীক্ষার খসড়া প্রতিবেদনের ওপর তার বিভিন্ন পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন মন্ত্রী। তিনি টেশিসকে লাভজনক ডিজিটাল যন্ত্র উৎপাদক প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে তুলতে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা ও তার প্রতিকারের উপায়সহ বিভিন্ন কারিগরি বিষয় চূড়ান্ত সমীক্ষা প্রতিবেদনে স্পষ্ট করার পরামর্শ ব্যক্ত করেন। সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের মতামতসহ কারিগরি বিভিন্ন বিষয় সন্নিবেশিত করে সম্ভাব্য স্বল্প সময়ের মধ্যে এটি চূড়ান্ত খসড়া প্রস্তুত করার জন্য তিনি নির্দেশ দেন।
অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এ, কে, এম, আমিরুল ইসলাম, জিনাত আরা ও মোহাম্মদ রেজাউল করিম, টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
ইসরো চন্দ্রযান-৩: ভারতের চন্দ্র বিজয়ে নারী বিজ্ঞানীদের সাফল্য
শুধুমাত্র কায়িক শ্রমে গড়া অবকাঠামোতে নয়; নারীদের মস্তিষ্ক প্রসূত সভ্যতা বিকাশেরও সাক্ষী হয়ে আছে চির পরিবর্তনশীল মহাকাল। বিশেষ করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে তাদের অবদান যেমন ভেদ করেছে সুগভীর পাতাল, তেমনি ছাড়িয়ে গেছে আকাশের মেঘের স্তর। মহাকাশের শূন্যতাকে প্রথম নারীর অস্তিত্বে সমৃদ্ধ করেছিলেন ভ্যালেন্তিনা তেরেস্কোভা। তার পথ ধরে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মহাকাশ গবেষণায় নারীদের সম্পৃক্ততা বেড়েছে দ্রুতগতিতে। এমনকি এই সাফল্যের আলোর মশাল জ্বলে উঠেছে ভারতীয় উপমহাদেশেও। গত ২৩ আগস্ট ভারতের চন্দ্র বিজয়ে নারী বিজ্ঞানীদের সাফল্য যেন তারই এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। চলুন, জেনে নেই সেই যুগান্তকারী অভিযানের ঘটনা। সেইসঙ্গে পরিচিত হওয়া যাক ভারতের চন্দ্রযান-৩ মিশনের নেপথ্যে থাকা নারী মহাকাশ বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীদের সঙ্গে।
চন্দ্রযান-৩ উপাখ্যান
নাসার ভারতীয় সংস্করণ ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন; সংক্ষেপে আইএসআরও বা ইসরো। চাঁদের পৃষ্ঠে অবতরণ করে সেখানকার প্রকৃতি পর্যালোচনার উদ্দেশ্য নিয়ে এরা শুরু করেছিলো চন্দ্রযান নামের প্রজেক্টটি। পর পর দুটি অভিযান ব্যর্থ হওয়ার পর চন্দ্রযান-৩ গত ২৩ আগস্ট নিরাপদে অবতরণ করতে সক্ষম হয় চন্দ্রপৃষ্ঠে।
যাত্রা শুরু হয়েছিলো ১৪ জুলাই; সর্বজনীন সমন্বিত সময় বা কোঅর্ডিনেটেড ইউনিভার্সাল টাইম (ইউটিসি) অনুযায়ী সময় ৯ টা ৫ মিনিট। রকেটের উৎক্ষেপণ হয় ভারতের অন্ধ্র প্রদেশের শ্রীহরিকোটায় সতীশ ধাওয়ান স্পেস সেন্টারের দ্বিতীয় লঞ্চ প্যাড থেকে।টানা কয়েকবার চেষ্টার পর ৫ আগস্ট চাঁদের কক্ষপথে ঢুকতে সক্ষম হয় মহাকাশযান চন্দ্রযান-৩।
পুরো মহাকাশযানটি মূলত ল্যান্ডার, রোভার ও প্রোপালশান মডিউল- এই তিন ভাগে বিভক্ত। ল্যান্ডারের কাজ হলো যানটিকে নিরাপদে অবতরণ করানো। এর নাম দেওয়া হয়েছে বিক্রম। অবতরণের জন্য এর নিবেদিত চারটি পায়ে রয়েছে চারটি শক্তিশালী ইঞ্জিন। অন্যদিকে, রোভার হচ্ছে ছয় চাকার একটি গাড়ি, যার উদ্দেশ্য পুরো যানটিকে নিয়ে নির্বিঘ্নে চন্দ্রপৃষ্ঠে ঘুরে বেড়ানো। এই অংশের নাম হচ্ছে প্রজ্ঞা।আর এই বিক্রম ও প্রজ্ঞাকে চাঁদের কক্ষপথে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব হচ্ছে প্রোপালশান মডিউলের। ১৭ আগস্ট এই দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করে বিক্রম ও প্রজ্ঞা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় প্রোপালশান মডিউল।
২৩ আগস্ট কক্ষপথের একদম শেষ বিন্দুর কাছাকাছি আসার সঙ্গে সঙ্গে একসাথে গর্জে উঠে বিক্রমের চারটি ইঞ্জিন। এরপর ঠিক সাড়ে ১১ মিনিট পর বিক্রম নেমে আসে চাঁদের ভূপৃষ্ঠ থেকে ৭.২ কিলোমিটার উচ্চতায়। এ অবস্থায় প্রায় ১০ সেকেন্ড ভেসে থেকে এটি ভূপৃষ্ঠের সঙ্গে উল্লম্ব দিকে ঘুরে যায়। কিছুক্ষণ পর নেমে যায় আরও প্রায় ১৫০ মিটার। এই উচ্চতায় থেকেই বিশ্ববাসীর স্তম্ভিত দৃষ্টির সামনে প্রায় ৩০ সেকেন্ড ঘুরে বেড়ায় বিক্রম ও প্রজ্ঞা। অতঃপর ইউটিসি সময় ঠিক ১২ টা ৩২ মিনিটে চাঁদের মাটি স্পর্শ করে ভারতের চন্দ্রযান-৩।
আরও পড়ুন: চাঁদে ভারতের চন্দ্রযানের সফল অবতরণ উপলক্ষে নরেন্দ্র মোদিকে শেখ হাসিনার অভিনন্দন
চন্দ্রযান-৩-এর অভিযানের নেপথ্যে থাকা নারী বিজ্ঞানীরা
ইসরো চন্দ্রযান-৩ কে পরিচালনায় সরাসরি কাজ করেছেন প্রায় ৫৪ জন নারী প্রকৌশলী ও বিজ্ঞানী। তাদের মধ্যে থেকে যাদের নাম ওতপ্রোতভাবে এই চন্দ্রাভিযানের সঙ্গে জড়িয়ে আছে তারা হলেন:
ঋতু কাড়িধাল শ্রীভাস্তাভ
৪৮ বছর বয়সী ঋতু কাড়িধাল ভারতবাসীর কাছে পরিচিত ‘রকেট উইমেন’ হিসেবে। ইসরোর সঙ্গে তার সম্পৃক্ততা ১৯৯৭ সাল থেকে। সেই থেকে তিনি মার্স অরবিটার মিশন (এমওএম) বা মম ও চন্দ্রযান প্রকল্পে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এসেছেন। তিনি মম মিশনের ডেপুটি অপারেশন্স ডিরেক্টরও ছিলেন।
মুথাইয়া বনিতা
এই ৫৯ বছর বয়সী ইলেকট্রনিক্স সিস্টেম প্রকৌশলী নেতৃত্ব দিয়েছেন ইসরোর বিভিন্ন উপগ্রহের প্রকল্পগুলোতে। তিনি ইসরোর চন্দ্রযান-২-এর প্রকল্প পরিচালক ছিলেন।
ইসরোর সঙ্গে তার শুরুটা ছিল শুধুমাত্র হার্ডওয়্যার নিরীক্ষণ কাজের মধ্য দিয়ে। পরবর্তীতে তিনি ইসরো স্যাটেলাইট সেন্টারের ডিজিটাল সিস্টেম গ্রুপে টেলিমেট্রি এবং টেলিকমান্ড বিভাগের পরিচালক পদে অধীষ্ঠিত হন। ২০১৩-এর সফল মঙ্গলযান মিশনেও যুক্ত ছিলেন তিনি।
তিনিই ছিলেন ইসরোতে আন্তঃগ্রহ মিশনে নেতৃত্ব দেওয়া প্রথম নারী। চন্দ্রযান-২ মিশনের সহযোগী পরিচালক থেকে তাকে প্রকল্প পরিচালক পদে উন্নীত করা হয়েছিলো। এর মাধ্যমে তিনি ইসরোর প্রথম নারী প্রকল্প পরিচালক হওয়ার সম্মান অর্জন করেন।
আরও পড়ুন: অগমেন্টেড রিয়েলিটি প্রযুক্তির ‘ভিশন প্রো’ হেডসেট নিয়ে এলো অ্যাপল
বনিতা ২০০৬ সালে অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটি অব ইন্ডিয়ার সেরা নারী বিজ্ঞানীর পুরস্কার পেয়েছিলেন।
মিশন মঙ্গল ছিল ইসরোর অন্যতম সেরা সাফল্য। এর মাধ্যমে ভারত চতুর্থ দেশ হিসেবে মঙ্গল গ্রহে অবতরণের মর্যাদা লাভ করে।
সেই ধারাবাহিকতায় ঋতু কাড়িধাল মিশন ডিরেক্টর হিসেবে চন্দ্রযান-২-এর মিশনের তত্ত্বাবধান করেন।
কাড়িধাল ২০০৭ সালে ভারতের রাষ্ট্রপতি এ.পি.জে. আব্দুল কালামের কাছ থেকে ইসরোর তরুণ বিজ্ঞানীর পুরস্কার পান।
কল্পনা কালাহাস্তি
ইসরোর সঙ্গে ৪৩ বছর বয়সী এই মহাকাশ প্রকৌশলীর যাত্রা শুরু হয় ২০০৩ সাল থেকে। তার দায়িত্ব ছিল স্যাটেলাইটের অবস্থান সুনির্দিষ্ট করার জন্য প্রপালশান সিস্টেম তৈরি করা। এছাড়াও তার বিশেষত্ব ছিল পৃথিবীর পরিষ্কার ছবি তোলার জন্য উন্নত ইমেজিং সরঞ্জামের নকশা প্রণয়নে। তিনি ধীরে ধীরে মম এবং চন্দ্রযান-২-এর মত যুগান্তকারী প্রকল্পগুলোর অংশ হয়ে ওঠেন।
২০১৯ সালে তাকে চন্দ্রযান-৩ মিশনের ডেপুটি প্রজেক্ট ডিরেক্টর হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। তিনি বিক্রমের সিস্টেমের নকশা তৈরি ও এর কর্মকাণ্ড সুস্পষ্ট করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন।
আরও পড়ুন: মোবাইল ফোন হ্যাকিং প্রতিরোধে করণীয়
জলজ খাদ্য, সম্পদ ও সম্প্রদায়ের কোভিড-১৯ এর প্রভাব নিরূপণে শাবিপ্রবির গবেষণা বিশ্বে মডেল
সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) গবেষণায় বাংলাদেশে জলজ খাদ্য ব্যবস্থা, জলজ সম্পদ ও সম্প্রদায়ের কোভিড-১৯ এর প্রভাব নিরূপণ বিষয়টি উঠে এসেছে। গবেষণাটি শুধু বাংলাদেশ নয় বিশ্বব্যাপী একটি মডেল হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে যা যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত ‘মেরিন পলিসি’ জার্নালে প্রকাশিত হয়। প্রকাশনার মাত্র এক বছরেরও কম সময়ে গবেষণাটি ১০০ এর অধিক গবেষণা প্রবন্ধে উদ্বৃত (সাইট) করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শামসুল হক প্রধান ও ড. মো. আশরাফুজ্জামানের তত্ত্বাবধানে পিএইচডি গবেষক আতিকুর রহমান সানী গবেষণা কার্যক্রমটি পরিচালনা করেন।
গবেষণাপত্র সূত্রে জানা যায়, কোভিড-১৯ একটি বড় বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সংকট, যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে মারাত্মক খাদ্য সংকট দেখা দিতে পারে। যদিও বেশ কিছু বৈজ্ঞানিক গবেষণায় বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এর সম্ভাব্য প্রভাবকে বিভিন্ন সেক্টরে কিভাবে সমাধান করা যায় তা আলোচনা করেছে, তবে এখানে জলজ সম্পদ ও সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্পর্কিত সমস্যা এবং খাদ্য সংকট অনুপস্থিত ছিল।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণে
এ রকম এক বাস্তবতাকে মাথায় রেখে, এই গবেষণায় জলজ খাদ্য খাত এবং নির্ভরশীল জনসংখ্যার সঙ্গে ছোট আকারের মৎস্য চাষের ওপর এর প্রভাবকে সংযুক্ত করে বিদ্যমান পরিস্থিতি এবং কোভিড-১৯ এর চ্যালেঞ্জগুলো নিরূপণ করে তা সমাধানের ব্যবধান পূরণ করার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়।
পিএইচডি গবেষক আতিকুর রহমান সানী জানান, কোভিড-১৯ ওভারভিউ; একইসঙ্গে জলজ ইকোসিস্টেম, ক্ষুদ্র আকারের মৎস্য চাষ, জলজ খাদ্য উৎপাদন, চাহিদা ও সরবরাহের সঙ্গে এর সংযোগ বিশ্লেষণ করে গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়।
তিনি জানান, কোভিড-১৯ এর প্রভাব কিভাবে অনুভূত হয়েছিল এবং কিভাবে তারা জলজ খাদ্য ব্যবস্থা এবং ছোট আকারের মৎস্য চাষকে প্রভাবিত করেছে সে বিষয়ে অনুসন্ধান করতে গিয়ে জলজ সম্পদের ওপর নির্ভরশীল সম্প্রদায়গুলোর মতামতের ভিত্তিতে বিভিন্ন বিধ্বংসী প্রভাবের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে গবেষণাটিতে।
তিনি জানান, আকস্মিক অসুস্থতা, আয় কমে যাওয়া, উৎপাদন ও ইনপুট সংগ্রহ শুরু করতে জটিলতা, শ্রম সংকট, পরিবহন বিমূর্ততা, খাদ্য সরবরাহে জটিলতা, দুর্বল মূল্য শৃঙ্খল, নিম্ন ভোক্তা চাহিদা, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি, পাওনাদারের চাপকে প্রাথমিকভাবে প্রভাবিতকারী চালক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
সার্বিক বিষয়ে অধ্যাপক ড. শামসুল হক প্রধান বলেন, জলজ সম্পদের ওপর নির্ভরশীল ব্যক্তিরা মনে করেন যে সরকারের গৃহীত ব্যবস্থাগুলো স্বাস্থ্য এবং খাদ্য নিরাপত্তা উভয় সুরক্ষার ওপর ভিত্তি করে হওয়া উচিত। বিকল্প আয় সৃষ্টির সুযোগ, রেশনিং ব্যবস্থা, প্রশিক্ষণ ও প্রেরণামূলক কর্মসূচি পরিস্থিতির উন্নতি ঘটাতে পারে। তাই, গবেষণাটিতে জলজ খাদ্য খাত এবং ছোট আকারের মৎস্য চাষের ওপর মহামারির প্রভাব প্রশমিত করার জন্য নীতি নির্ধারকদের দ্বারা গৃহীত নীতিগুলোরও অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবিতে ঢাবির বিজ্ঞান ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
শাবিপ্রবির প্রথম নারী কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আমিনা পারভীন
চীন ২০৩০ সালের আগে চাঁদে মহাকাশচারী স্থাপনে স্পেস স্টেশনের নতুন ক্রু চালু করেছে
চীন মঙ্গলবার তার প্রদক্ষিণকারী মহাকাশ স্টেশনের জন্য দশকের শেষের আগে চাঁদে নভোচারীদের রাখার লক্ষ্যে তিন জন পরিবহনে সক্ষম নতুন একটি ক্রু চালু করেছে।
শেনজু-১৬ নামের মহাকাশযানটি স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার পর একটি লং মার্চ ২-এফ রকেটের সাহায্যে উত্তর-পশ্চিম চীনের গোবি মরুভূমির প্রান্তে অবস্থিত জিউকুয়ান উৎক্ষেপণ কেন্দ্র থেকে যাত্রা করে।
চীনের প্রথম বেসামরিক মহাকাশচারী সহ ক্রুরা, এখন তিনজনের সঙ্গে টিয়ানগং স্টেশনে সংক্ষিপ্তভাবে ওভারল্যাপ করবে, যারা তাদের ছয় মাসের মিশন শেষ করার পরে পৃথিবীতে ফিরে আসবে।
আরও পড়ুন: মহাকাশ থেকে পৃথিবীতে ফিরলেন ৪ নভোচারী
নভেম্বরে স্টেশনে একটি তৃতীয় মডিউল যুক্ত করা হয়েছিল, এবং সোমবার মহাকাশ কর্মসূচির কর্মকর্তারা বলেছিলেন যে তাদের ২০৩০ সালের আগে চাঁদে একটি ক্রু মিশন চালু করার পাশাপাশি এটিকে প্রসারিত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
ক্ষমতাসীন কমিউনিস্ট পার্টির সামরিক শাখা পিপলস লিবারেশন আর্মির সঙ্গে চীনা মহাকাশ কর্মসূচির ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের বিষয়ে মার্কিন উদ্বেগের কারণে চীন আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকে বাদ দেওয়ার পরে তার নিজস্ব মহাকাশ স্টেশন তৈরি করেছিল।
২০০৩ সালে চীনের প্রথম মনুষ্যবাহী মহাকাশ মিশন এটিকে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পর তৃতীয় দেশ হিসেবে তার নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় মহাকাশে পাঠায়।
এই সর্বশেষ মিশনে, বেইজিংয়ের শীর্ষ মহাকাশ গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক পেলোড বিশেষজ্ঞ গুই হাইচাও, মহাকাশে চারবার ভ্রমণকারী মিশন কমান্ডার মেজর জেনারেল জিং হাইপেং, এবং মহাকাশযান প্রকৌশলী ঝু ইয়াংঝু যোগ দেবেন।
আরও পড়ুন: মহাকাশ স্টেশনে ৬ মাস অবস্থানের পর ফিরলেন ৩ চীনা নভোচারী
নিউরালিংক: ইলন মাস্কের ব্রেইন-চিপ কোম্পানির মানবদেহে পরীক্ষায় যুক্তরাষ্ট্রের অনুমোদন
ইলন মাস্কের ব্রেইন-চিপ ফার্ম জানিয়েছে, তারা মানুষের ওপর প্রথম পরীক্ষা চালানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (এফডিএ) কাছ থেকে অনুমোদন পেয়েছে।
নিউরালিংক ইমপ্লান্ট কোম্পানি কম্পিউটারের সঙ্গে মস্তিষ্ককে সংযুক্ত করে মানুষের দৃষ্টি ও গতিশীলতা পুনরুদ্ধার করতে সহায়তা করতে চায়।
এতে বলা হয়, অংশগ্রহণকারীদের নিয়োগ শুরু করার তাৎক্ষণিক কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই। পরীক্ষা শুরু করার জন্য ইলন মাস্কের পূর্বের উচ্চাকাঙ্ক্ষা ব্যর্থ হয়েছিল।
এফডিএ জানিয়েছে, তারা নিউরালিংকের ঘোষণাকে স্বীকৃতি দিয়েছে।
আরও পড়ুন: চ্যাটজিপিটির বিকল্প 'ট্রুথজিপিটি' তৈরির পরিকল্পনা ইলন মাস্কের
গত মার্চে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, এফডিএ'র অনুমোদন পাওয়ার জন্য নিউরালিংকের একটি প্রস্তাব নিরাপত্তাজনিত কারণে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানিয়েছে, নিউরালিংক পক্ষাঘাত ও অন্ধত্বের মতো অবস্থার চিকিৎসার জন্য এবং কিছু প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কম্পিউটার ও মোবাইল প্রযুক্তি ব্যবহার করতে সহায়তা করার জন্য মাইক্রো চিপগুলো ব্যবহার করার আশা করে।
বানরের ওপর পরীক্ষা করা চিপগুলো মস্তিষ্কে উৎপাদিত সংকেত ব্যাখ্যা করতে এবং ব্লুটুথের মাধ্যমে ডিভাইসে তথ্য পাঠাতে ডিজাইন করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে নিউরালিংকের মস্তিষ্কের ইমপ্লান্ট ব্যাপকভাবে উপলব্ধ হতে হলে প্রযুক্তিগত ও নৈতিক চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে উঠতে ব্যাপক পরীক্ষার প্রয়োজন হবে।
আরও পড়ুন: টেসলার রোবট ‘অপটিমাস’ দেখালেন ইলন মাস্ক
সমুদ্র অর্থনীতিতে সম্পদ ব্যবস্থাপনার ওপর এখনই জোর দেওয়া উচিত
সমুদ্র অর্থনীতিতে সম্পদ ব্যবস্থাপনার ওপর এখনই জোর দেওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহকারী অধ্যাপক ড. সুব্রত সরকার।
তিনি জানান, বর্তমান বিশ্বে জনসংখ্যা বাড়ছে। ২০৩৭ সাল নাগাদ বিশ্বে জনসংখ্যা হবে ৯ বিলিয়ন। আর এই বহুল জনসংখ্যার খাদ্য ও কর্মসংস্থানের জন্য আমাদের সমুদ্রের ওপর অনেকাংশে নির্ভর করতে হবে। আমরা যদি প্রতিনিয়ত এই সমুদ্র সম্পদ নিতেই থাকি। তাহলে একসময় আমাদের এই সম্পদের মজুদ ফুরিয়ে যাবে।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে সমুদ্র অর্থনীতির গুরুত্ব ও করণীয় নিয়ে বার্তাসংস্থা ইউএনবির সঙ্গে কথা বলেন ড. সুব্রত সরকার।
তিনি বলেন, সমুদ্র সম্পদকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আমরা রাখতে চাই, তাহলে আমাদের ব্যবস্থাপনা ঠিক রাখতে হবে। সমুদ্র অর্থনীতিতে বাংলাদেশ কাজ করে যাচ্ছে। এই উপমহাদেশে সমুদ্রের গুরুত্ব পেয়েছে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি সমুদ্র পথে আসার প্রাক্কালে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সমুদ্রের বিষয়টি মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমানা জয়ের পর গুরুত্ব পায়।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবিতে ঢাবির বিজ্ঞান ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
বর্তমানে সরকার ব্লু ইকোনোমি এর ওপর জোর দিচ্ছে। বাংলাদেশে ব্লু ইকোনোমির ক্ষেত্রে ফিসারিজ সার্ভে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। অতীতে এই ফিসারিজ সার্ভের জটিলতা থাকলেও বর্তমানে সরকার ফিসারিজ সার্ভে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। এছাড়া সরকার এখন সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদের উন্নয়নে মৎস্য চাষে গুরুত্ব আরোপ করেছে। বর্তমানে আমাদের মৎস্য আহরণ উপকূলের ৪০ মিটার গভীরতা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ। ৪০ মিটারের বাইরেও মৎস্য আহরণে সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা টুনা মাছ সম্পর্কে অনেকেই জানি। আমাদের সাগর অংশে টুনা মাছ ওইভাবে ধরা পড়েনি। সরকারের পদক্ষেপ অনুযায়ী সরকারিভাবে টুনা মাছ ধরা হবে। আর অন্যরা যাতে টুনা মাছ ধরার জন্য আগ্রহী হয় সরকার সেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রাইভেট সেক্টর যেনো সমুদ্র অর্থনীতির অংশ হিসেবে আনা যায় সরকার এজন্য কাজ করছে।
সুব্রত সরকার জানান, সমুদ্র অর্থনীতিতে বর্তমানে সি-উইড বিশাল একটি অংশ। বাংলাদেশে বর্তমানে সি-উইড চাষের সম্ভাবনার ক্ষেত্রে বড় পরিসরে এগিয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে বাণিজ্যিক আকারে এই সমুদ্রসম্পদ সি-উইড উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তিনি জানান, সমুদ্র সম্পদ সংরক্ষণে ইতোমধ্যে বাংলাদেশ তিনটি মেরিন প্রটেক্টেড এরিয়া এবং একটি মেরিন রিজার্ভ ঘোষণা করেছে। মেরিন প্রটেক্টেড এরিয়া ছাড়াও সমুদ্র অর্থনীতিতে ট্যুরিজমের চাহিদা দিনে দিনে বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও এই বৃদ্ধির বিষয়টি লক্ষণীয়। সরকারের এইদিকে বিশেষ নজর দেখা যাচ্ছে।
সমুদ্রসম্পদ ব্যবস্থাপনার কথা জানিয়ে সুব্রত সরকার বলেন, চলতি বছরের ১২ মার্চ থেকে ২৩মার্চ পর্যন্ত যুক্তরাজ্যের সমুদ্র বিষয়ক সংস্থা পোগো এবং শাবিপ্রবির সমুদ্রবিজ্ঞান বিভাগের যৌথ উদ্যোগে জাপানভিত্তিক সংস্থা নিপ্পন ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহযোগিতায়, জাতিসংঘের সমুদ্র দশক (২০২১-২০৩০) প্রোগ্রাম ও ভারতের জাতীয় সমুদ্র তথ্যসেবা কেন্দ্রের সহযোগিতায় প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে ১৭টি দেশ হতে ১৫০টি এর মধ্যে টপ ২২জনকে ট্রেনিং প্রদান করা হয়। যেখানে সমুদ্র অর্থনীতিতে সমুদ্রসম্পদের
ব্যবস্থাপনার দিকগুলোকে মূল বিষয় হিসেবে তুলে ধরা হয়। সমুদ্র সম্পদের সঠিক ব্যবহার, সুনীল অর্থনীতির ক্রমবিকাশ, সমুদ্র ব্যবস্থাপনা ইত্যাদি বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া এখন জরুরি। সমুদ্রবিজ্ঞান বিষয়ক বিভিন্ন সংস্থা এর যেমন জোর দিচ্ছে। বাংলাদেশ সরকারের বর্তমান কর্মতৎপরতায় সমুদ্র অর্থনীতি আরও বেশি এগিয়ে যাবে বলেও জানান তিনি।
আরও পড়ুন: শাবিপ্রবির প্রথম নারী কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আমিনা পারভীন
রাশিয়ার থ্রিডি-প্রিন্টেড রকেট উৎক্ষেপণের পরপরই ব্যর্থ!
প্রায় সম্পূর্ণরূপে থ্রিডি-প্রিন্টেড যন্ত্রাংশ দিয়ে তৈরি রকেট টেরান-১ বুধবার রাতে উৎক্ষেপণ করা হয়। তবে তিনবারের চেষ্টায় উৎক্ষেপণ সফল হলেও কক্ষপথে পৌঁছাতে পারেনি রকেটটি।
রকেটির নির্মাতা প্রতিষ্ঠান রিলেটিভিটি স্পেস জানিয়েছে, ছয় বছর আগে তৈরি কোম্পানির প্রথম মেটাল থ্রিডি প্রিন্ট ছাড়া পরীক্ষামূলক এই ফ্লাইটে আর কিছুই ছিল না।
উদ্ভাবনকারীরা রকেটটিকে ১২৫ মাইল উঁচু কক্ষপথে স্থাপন করতে চেয়েছিল, তবে পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে পৌঁছানোর আগেই রকেটের ওপরের অংশে আগুন ধরে যায়।
জানা যায়, কেপ ক্যানাভেরাল স্পেস ফোর্স স্টেশন থেকে উৎক্ষেপণ করার পর প্রথম ধাপে রকেটটি ঠিকঠাকই কাজ করেছে এবং পরিকল্পনা অনুযায়ী আলাদা হয়ে গেছে। কিন্তু এরপরই ওপরের অংশে আগুন জ্বলে উঠতে দেখা যায় এবং তারপর বন্ধ হয়ে আটলান্টিকে ধসে পড়ে।
আরও পড়ুন: ‘ইমিউনোলজিক্যাল মেমরি’ নিয়ন্ত্রণে ইমিউন সিস্টেমকে রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাহায্য করে: গবেষণা
এ বিষয়ে রিলেটিভিটি স্পেসের টেস্ট ও লঞ্চ টেকনিক্যাল প্রোগ্রাম ম্যানেজার আরওয়া তিজানি ক্যালি বলেন, ‘কেউ কখনো থ্রিডি প্রিন্টেড রকেট পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে পাঠানোর চেষ্টা করেনি। আমরা হয়তো পুরোপুরি সফল হইনি, তবে প্রমাণ করতে পেরেছি যে থ্রিডি প্রিন্টেড রকেট ওড়ানো সম্ভব।’
১১০-ফুট (৩৩-মিটার) রকেটের বেশিরভাগ ইঞ্জিনসহ, ক্যালিফোর্নিয়ার লং বিচে কোম্পানির বিশাল থ্রিডি প্রিন্টার থেকে বানানো হয়েছে।
রিলেটিভিটি স্পেস বলেছে যে থ্রিডি-প্রিন্টেড ধাতব অংশগুলো দিয়ে টেরান-১ রকেটের ৮৫ শতাংশ তৈরি হয়েছে। রকেটের বড় সংস্করণে আরও বেশি কিছু থাকবে এবং একাধিক ফ্লাইটের জন্য বারবার ব্যবহার করা হবে।
অন্যান্য মহাকাশ সংস্থাগুলোও থ্রিডি-প্রিন্টিংয়ের ওপর নির্ভর করে, তবে টুকরোগুলো তাদের রকেটের খুব ছোট একটি অংশ তৈরি করে।
২০১৫ সালে দুজন তরুণ মহাকাশ প্রকৌশলী রিলেটিভিটি স্পেস তৈরি করে।
আরও পড়ুন: মহাকাশযান গ্রহাণুর কক্ষপথ পরিবর্তন করতে সফল হয়েছে: নাসা
নাসার স্পেসএক্স মিশনের নভোচারীরা পৃথিবীতে ফিরছেন
‘ইমিউনোলজিক্যাল মেমরি’ নিয়ন্ত্রণে ইমিউন সিস্টেমকে রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাহায্য করে: গবেষণা
দীর্ঘদিন ধরে গবেষকরা ক্যান্সার ও প্রদাহজনিত ব্যাধির মতো বিভিন্ন অসুস্থতার সময় মানবদেহে সংঘটিত প্রতিরোধী প্রতিক্রিয়া বোঝার জন্য কাজ করেছেন।
ইউনিভার্সিটি অব মিসৌরি স্কুল অব মেডিসিনের একজন সহযোগী অধ্যাপক এমা টেক্সেইরো ও তার গ্রুপ সম্প্রতি কীভাবে ইমিউনোলজিক্যাল মেমরি তৈরি ও বজায় রাখা হয় এবং ইমিউনোলজিক্যাল মেমরি গঠনে প্রদাহ যে ভূমিকা পালন করে তা পরীক্ষা করেছেন। ইমিউনোলজিক্যাল মেমরি শরীরের রোগ প্রতিরোধক ব্যবস্থাপনা সংক্রমণের বা টিকা দেয়ার পরে ধরে রাখে এবং পুনরায় সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
ইউনিভার্সিটি অব মিসৌরি ক্যাম্পাসে নেক্সটজেন প্রিসিশন হেলথ ইনস্টিটিউটের একজন কর্মকর্তা টেক্সেইরো বলেন, ‘আমাদের রোগ প্রতিরোধক ব্যবস্থাপনা রোগ থেকে আমাদের রক্ষা করে। কিন্তু এটি একটি খুব জটিল সিস্টেম যেখানে অনেক মিথস্ক্রিয়া ঘটছে এবং যদি বিষয়গুলো অনিয়ন্ত্রিত হয় তবে এটি আসলে রোগ সৃষ্টিতে ভূমিকা পালন করতে পারে।’তিনি আরও বলেন, ‘সুতরাং, আমাদের গবেষণাটি আরও ভালভাবে বোঝার ক্ষেত্রে দৃষ্টি নিবদ্ধ করে যে বিশেষত টি-কোষগুলোর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পর্যবেক্ষণ করে কীভাবে এই রোগ প্রতিরোধক প্রতিক্রিয়াগুলো তৈরি ও নিয়ন্ত্রণ করা যায়। টি-কোষ শরীরকে সংক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে এবং ক্যান্সার আক্রমণে ভূমিকা রাখতে পারে।’
আরও পড়ুন: ১১০ মিলিয়ন বছর বয়সী ডাইনোসরের জীবাশ্ম বলবে তাদের গল্প!
একটি মাউস মডেল ব্যবহার করে গবেষকরা প্যাথোজেনিক ব্যাকটেরিয়াগুলির বিভিন্ন স্ট্রেন তৈরি করেছেন যা টি-কোষের ভেতরে ইন্টারফেরন জিন বা স্টিং বা প্রোটিনের উদ্দীপকের মাধ্যমে প্রদাহের মাত্রা বাড়িয়ে তোলে। যদিও অনেক বিজ্ঞানী অনুমান করেছিলেন যে প্রদাহের এই বৃদ্ধির ফলে একটি শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ প্রতিক্রিয়া হবে এবং তাই আরও শক্তিশালী ইমিউনোলজিক্যাল মেমরি দেখা যায়, তবে টেক্সেইরো ও তার দল এর বিপরীত বিষয় খুঁজে পেয়েছে। আর তা হল- ইমিউনোলজিক্যাল মেমরির কমে যাওয়ার ঘটনা ঘটে।
টেক্সেইরো বলেন, ‘এই ক্ষেত্রের কিছু বিজ্ঞানী বিশ্বাস করেন যে ক্যান্সারের ভ্যাকসিন বা ইমিউনোথেরাপির উন্নতির জন্য ‘স্টিং’ অ্যাক্টিভেশন লক্ষ্য করা যেতে পারে, তাই অনাকাঙ্ক্ষিত পরিণতি বা ক্ষতিকারক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার সম্ভাবনা কমাতে খেলার সময় সমস্ত মিথস্ক্রিয়ার পদ্ধতি সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা অর্জন করা গুরুত্বপূর্ণ।’
আরও পড়ুন: বাঘ তাড়াবে আলোকরশ্মি!
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আরও ভালভাবে বুঝতে চাই কীভাবে ইমিউনোলজিক্যাল মেমরি নিয়ন্ত্রণ করা যায়; যার সম্ভাব্য ভ্যাকসিন বা ইমিউনোথেরাপির প্রভাব রয়েছে, যা টি-কোষকে এমনভাবে চালিত করে যে এর থেকে আশা করি- দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতিশক্তি বাড়ায়। তাই আমাদের শরীর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রোগ থেকে রক্ষা পায়।’
যদিও তার গবেষণা প্রকৃতিতে মৌলিক, টেক্সেইরোর অনুসন্ধানগুলো ক্যান্সার, ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (সিওপিডি), শৈশবকালে সূচনার সঙ্গে স্টিং-সম্পর্কিত ভাস্কুলোপ্যাথি (এসএভিআই), হাঁপানি এবং অন্যান্য দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহজনক উপসর্গের রোগীদের সাহায্য করার জন্য আরও কার্যকর চিকিৎসার বিকাশে অবদান রাখার সম্ভাবনা রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘জ্ঞানের অন্বেষণই একজন বিজ্ঞানী হিসেবে আমার কৌতূহলকে তাড়িত করে। সঠিক দিকে যাওয়ার ক্ষেত্রে এই গবেষণাটি ছোট একটি পদক্ষেপ এবং আমি এর অংশ হতে পেরে গর্বিত৷’
ভারতীয় গণমাধ্যম এএনআই জানিয়েছে, সম্প্রতি বিষয়টি সম্পর্কিত একটি গবেষণা প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেসে (পিএনএএস) প্রকাশিত হয়েছে।
আরও পড়ুন: নাসার স্পেসএক্স মিশনের নভোচারীরা পৃথিবীতে ফিরছেন
১১০ মিলিয়ন বছর বয়সী ডাইনোসরের জীবাশ্ম বলবে তাদের গল্প!
কিছু বছর আগের কথা। কানাডার পশ্চিমাংশে এক খনিতে অন্যান্য দিনের মতোই খনন কাজ চলছিল। একদল খনি শ্রমিক এমন কিছু একটার সঙ্গে হোঁচট খেয়ে বসেন যা মোটামুটি সাম্প্রতিক স্মরণকালের সেরা আবিষ্কার হয়ে দাঁড়ায়। আর হবে না-ই বা কেন! বস্তুটি এ যাবৎকালের সবচেয়ে অক্ষত ডাইনোসরের জীবাশ্ম।
কানাডার আলবার্টা থেকে ১৭ মাইল উত্তরে একটি খনি প্রকল্পে পাওয়া যায় ‘নোডোসর’। এক সময় পৃথিবীর বুকে বিচরণ করা এই তৃণভোজীর জীবাশ্ম ১৮ ফুট লম্বা এবং ওজন প্রায় তিন হাজার পাউন্ড। নিশ্চয় বিস্ময়কর!
আরও পড়ুন: জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বিশ্ব নেতাদের সতর্ক করলো ডাইনোসর!
বাঘ তাড়াবে আলোকরশ্মি!
দীর্ঘদিন ধরেই বাঘ আতঙ্কে রয়েছে সুরন্দরবন সংলগ্ন গ্রামবাসী। সুন্দরবন ছেড়ে বিশেষ করে রাতে মাঝে মধ্যেই লোকালয়ে ঢুকে একের পর এক গ্রাম ঘুরে বেড়াচ্ছে। হামলা চালাচ্ছে গ্রামবাসী ও গবাদী পশুর ওপর। গ্রামবাসীর পাল্টা হামলায় বাঘও প্রাণ হারাচ্ছে।
সুন্দরবন সংলগ্ন গ্রামে বাঘ-মানুষের দ্বন্দ্ব অনেক দিনের। এ অবস্থায় বাগেরহাটের একদল ক্ষুদে বিজ্ঞানী বাঘসহ যে কোন বন্যপ্রাণী সনাক্তকরণের জন্য এক ধরনের আলোক রশ্মি উদ্ভাবন করেছে। রাতে বাঘ বাড়িতে ঢুকলে ইনফ্রারেড আলোর রশ্মির মাধ্যমে শনাক্ত করা যাবে এবং এক ধরনের শব্দ বেজে উঠবে। আবার রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে উচ্চক্ষমতা সম্পূর্ণ আলো এবং শব্দ সৃষ্টি করে ওই বাঘকে লোকালয় থেকে ফিরিয়ে দেয়া যাবে। বাগেরহাট জেলার চিতলমারী উপজেলার কালিদাস বড়াল স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ের পাঁচ ক্ষুদে বিজ্ঞানী এই উদ্ভাবন করেছে। বাগেরহাট জেলা পরিষদ অডিটোরিয়াম চত্বরে দুই দিনব্যাপী ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলায় তারা এই উদ্ভাবনী প্রদর্শন করেছে। এমন উদ্ভাবনী দেখতে শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে নানা বয়সের বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের ভিড় লেগে ছিল।
আরও পড়ুন: নাসার স্পেসএক্স মিশনের নভোচারীরা পৃথিবীতে ফিরছেন
ক্ষুদে ওই বিজ্ঞানীরা বলছে, বাঘ রক্ষা এবং একইসঙ্গে গ্রামবাসীকে বন্যপ্রাণী থেকে রক্ষা করতে তাদের এই উদ্ভাবন। এই আলোক রশ্মি বন্যপ্রাণী বা পরিবেশের কোন ধরনের ক্ষতি করবে না বলেও তারা জানায়।
সুন্দরবন বিভাগ বলছে, ক্ষুদে বিজ্ঞানীদের বাঘ শনাক্তকরণের এই উদ্ভাবন নিয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ চাওয়া হবে। বিশেষজ্ঞরা মতামত দিলে বাস্তবায়নের বিষয় পরামর্শ দেয়া যেতে পারে।
রাতে বাঘসহ বন্য প্রাণী সনাক্তকরণের উদ্ভাবক এই পাঁচ ক্ষুদে বিজ্ঞানী হচ্ছে- মো. ফারদ্বীন খান, প্রিতিরাজ বিশ্বাস, রজত মন্ডল, সুদিপ্ত মন্ডল ও ইব্রাহিম। এরা সবাই জেলার চিতলমারী উপজেলার কালিদাস বড়াল স্মৃতি মহাবিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র।
ক্ষুদে বিজ্ঞানী মো. ফারদ্বীন খান জানায়, বিভিন্ন সময় বাঘ সুন্দরবন ছেড়ে বনসংলগ্ন লোকালয়ে প্রবেশ করছে। বাঘ গ্রামবাসীর ওপর হামলা করে। তেমনি গ্রামবাসীর হামলায় বাঘ নিহত হচ্ছে। গণমাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে এমন সংবাদ দেখার পর বাঘ এবং গ্রামবাসীকে রক্ষার জন্য সে ভাবতে থাকে। এরপর তারা পাঁচ সহপাঠী মিলে নানা চেষ্টা করে বাঘসহ সব ধরনের বন্যপ্রাণী সনাক্তকরণের জন্য এই আলোক রশ্মি উদ্ভাবন করতে সক্ষম হয়েছে। বন্যপ্রাণী থেকে নিরাপত্তার জন্য তারা সেমি স্মার্ট হাউজ তৈরি করে প্রদর্শন করেছে। তারা উদ্ভাবন করে দেখিয়ে দিয়েছে যে, রাতে বাঘ বা যে কোন ধরনে বণ্যপ্রাণী বাড়িতে প্রবেশ করলে ইনফ্রারেড আলোর রশ্মির মাধ্যমে শনাক্ত করা যাবে এবং একধরনের শব্দ বেজে উঠবে। আবার রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে উচ্চক্ষমতা সম্পূর্ণ আলো এবং শব্দ সৃষ্টি করে ওই বাঘকে লোকালয় থেকে ফিরিয়ে দেয়া যাবে।
মো. ফারদ্বীন খানের তথ্য মতে, এই উদ্ভাবনের জন্য তারা যা যা ব্যবহার করছে তার মধ্যে রয়েছে- একটি এলইডি আর সেন্সর, একটি ৯ ভোল্টের ব্যাটারি, ১০০ কে রেজিস্টার, একটি বার্জার (শব্দ তৈরির জন্য), লেজার লাইট, ব্যাটারি চার্জের বিদ্যুৎ অথবা সৌর বিদ্যুৎ এবং তিন ইঞ্চি ব্যাসার্ধের চারটি গোলীয় দর্পণ (কাঁচ)। এই সব উপাদান ব্যবহার করে লেজারের মাধ্যমে আলোক রশ্মি তৈরি করেছে তারা।
এই উদ্ভাবনী প্রদর্শন করতে তাদের সর্বমোট ব্যয় হয়েছে সাড়ে ৬শ’ টাকা। বনসংলগ্ন গ্রামে অল্প খরচে তাদের এই উদ্ভাবনী ব্যবহার করতে কয়েক হাজার টাকা ব্যয় হবে। বাঘ এবং মানুষ রক্ষা করতে ক্ষুদে বিজ্ঞানীরা তাদের এই উদ্ভবনী সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে চায়।
সরকারি সহযোগিতা এবং অর্থনৈতিক সহায়তা এবং মানুষের প্রয়োজন হলে সুন্দরবন এলাকায় তাদের উদ্ভাবনী কার্যকারিতা তারা দেখাতে পারে বলে ফারদ্বীন জানায়।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান, এ ধরনের উদ্ভাবনী ভাল উদ্যোগ। তবে এই আলোকরশ্মি বাঘের জন্য পরিবেশ বান্ধব কি না জানতে হবে। লেজারের আলোক রশ্মির কারণে বাঘ বা অন্য বন্যপ্রাণীর কোন ক্ষতি হতে পারে কিনা জানা দরকার। এই উদ্ভাবনী নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মতামত চাওয়া যেতে পারে।
ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলার স্টল পরিদর্শন শেষে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান জানান, যে কোন ভাল উদ্ভাবন সমাজের উপকারে আসে। ক্ষুদে বিজ্ঞানীরা রাতে বাঘসহ যে কোন ধরনের বন্যপ্রাণী সনাক্তকরণের জন্য যে উদ্ভাবন করেছে তা প্রশাংসার দাবি রাখে। এর সম্ভব্যতা যাচাই এবং মাঠ পর্যায়ে এর অর্থনৈতিক ব্যয়ের বিষয়টি বিবেচনায় আনতে হবে।
কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, তাদের কাছে বাঘ সনাক্তকরণের জন্য শিক্ষার্থীদের ওই উদ্ভাবনী ভাল লেগেছে। যে কোন মানুষ তার বাড়িতে এই উদ্ভাবন ব্যবহার করতে পারে।
শনিবার বাগেরহাট জেলা পরিষদ অডিটোরিয়াম চত্বরে দুই দিনব্যাপী ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান। মেলায় জেলার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তর ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান মিলে মোট ৫৫টি প্রতিষ্ঠান ৩৭টি স্টলে তাদের উদ্ভাবনী প্রদর্শন করে। রবিবার এই মেলা শেষ হয়েছে।
বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. হাফিজ আল-আসাদ জানান, ডিজিটাল উদ্ভাবনী এই মেলা মানুষের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। মেলায় ভূমি অফিসের স্টলে রবিবার ছয়জন ভূমির মালিক অনলাইনে তাদের জমির খাজনা বাবদ ২০ হাজার ১৩২ টাকা পরিশোধ করেছেন।
সুন্দরবন সংলগ্ন বাগেরহাট জেলার শরণখোলা উপজেলার পশ্চিম ধানসাগর গ্রামের আমিন চৌকিদার জানান, প্রায় প্রতিবছর দুই থেকে তিন বার সুন্দরবন ছেড়ে ভোলা নদ পাড়ি দিয়ে বাঘ তাদের বাড়িতে ঢুকে পড়ে। গত বছর চারবার বাঘ তার বাড়ির ভিতরে চলে আসে। বাঘের ডাক শুনে তাদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়। বাঘের ভয়ে তাদের নির্ঘুম রাত কাটে। অনেক সময় বাঘ তাদের গরু-ছাগল খেয়ে ফেলে। মানুষের ওপর হামলাও করে। বাঘের হাত থেকে রক্ষা পেতে গ্রামবাসী পাল্টা হামলা করে। অনেক সময় বাঘ গ্রামবাসীর হাতে প্রাণ হারায়। এ ধরনের উদ্ভাবন খুশির খবর বলে মনে করেন আমিন চৌকিদার।
জানা গেছে, সুন্দরবনের মোট আয়াতন ছয় হাজার ১৭ বর্গ কিলোমিটার। এর মধ্যে স্থলভাগের পরিমাণ চার হাজার ১৪৩ বর্গ কিলোমিটার। বর্তমানে সুন্দরবনের মোট আয়াতনের অর্ধেকেরও বেশি এলাকা সংরক্ষিত বনাঞ্চল। আর গোটা সুন্দরবন জুড়েই রয়েল বেঙ্গল টাইগার কম বেশি বিচারণ করে থাকে। নদী-খাল ভরাট হয়ে যাওয়ায় মাঝে মাঝে মধ্যে বাঘ বনসংলগ্ন লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। তৈরি হয় বাঘে মানুষে দ্বন্দ্ব। অনেক সময় গ্রামবাসীর হামলায় বাঘ প্রাণ হারাচ্ছে।
সর্বশেষ ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে ক্যামেরা ট্র্যাপিংয়ের মাধ্যমে জরিপে সুন্দরবনে বাংলাদেশ অংশে বাঘের সংখ্যা ১১৪টি নির্ধারণ করা হয়। নতুন করে বাঘের সংখ্যা নির্ধারণ করতে শিগগিরই সুন্দরবনে বাঘ গণনা শুরু হবে বলে বন বিভাগ জানায়।
বন বিভাগের তথ্য মতে, ২০০১ সাল থেকে ২০২২ সালের এ পর্যন্ত সুন্দরবন পূর্ব বিভাগে নানাভাবে ২৮টি বাঘের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে দুস্কৃতিকারীদের হাতে ১৪টি, লোকালয়ে জনতার হাতে গণপিটুনিতে পাঁচটি,স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে আটটি এবং ঘুর্ণিঝড় সিডরে একটি বাঘ মারা গেছে। চামড়া উদ্ধার করা হয়েছে ১৯টি।
আরও পড়ুন: মহাকাশযান গ্রহাণুর কক্ষপথ পরিবর্তন করতে সফল হয়েছে: নাসা
দুবাইয়ে চালকবিহীন বৈদ্যুতিক উড়ুক্কু গাড়ি চালাল চীনা প্রতিষ্ঠান